#অবন্তর_আসক্তি
#পর্ব_১৫
#শারমিন_আক্তার_বর্ষা
________
আচমকা রুমে চলে আসায় ভয় পেয়ে যাই আমি, বৃষ্টি, রিমা ও রিয়া। চারজনে থতমত খেয়ে উঠে বসি। সামনে দাঁড়িয়ে থাকা দজ্জাল কুটনা ছেলেটার দিকে সরু দৃষ্টিতে তাকালাম।
একটু ভালো করে তাকিয়ে দেখি সে কানে হ্যাডফোন গুজে রেখেছে অতএব সে গান শুনছে। ভাবতেই হাফ ছেড়ে বাঁচলাম। কুটনা ছেলে টা যদি ভুনাক্ষণেও কিছু শুনে নিতো তাহলে তার মাইক মার্কা গলা দিয়ে চেঁচিয়ে সকলকে জানিয়ে দিতো, ‘ বর্ষা প্রেম করে ওরে কেউ লাভ লেটার দিছে। ‘
আর ওর ফেস এতটাই ইনোসেন্ট যার জন্য যে কেউ ওর কথা বিশ্বাস করে নেয়। তাছাড়া মিনমিনে বজ্জাত ছেলে, সর্বদা নিজের করা অন্যায় গুলো পাশে থাকা ব্যক্তির উপর চাপিয়ে দিয়ে সে পালায়। তার ভাগের বকা নির্দোষ ব্যক্তি টাকে হজম করতে হয়। অতিরিক্ত চালাক তবে আমাদের সাথে কখনো লাগতে আসে না। আমাদের চারজনের সাথে একবার লাগতে এসে ছিল। ভুলিয়ে ভালিয়ে জনমানবশূন্য রাস্তায় নিয়ে যাই পেছনে এক পাগলা কুকুর লেলিয়ে দেই। কুকুরের দৌঁড়ানি খাওয়ার পর থেকে আমাদের সাথে লড়াই করা ছেড়ে দিয়েছে। তবে কথায় আছে না, বাঘ বুড়ো হয়ে গেলেও থাবা মারা ভুলে না।
ঠিক তেমনই ওর অবস্থা আমাদের পরিবারের ১৪তম বিচ্ছু একটা, সকলের আদরের হলেও আমাদের মতো আরও কয়েকজন আছে যারা ওর কৃতকর্মের সাথে পূর্ব পরিচিত৷ বয়স ওর মাত্র ১৪ বছর ক্লাস সেভেনে পড়ে তাতেই যা বজ্জাত বলার বাহিরে বাড়ির সাথে সাথে স্কুলের ছাত্র ছাত্রী স্যার ম্যাডাম সকলে ওর প্রতি বিরক্ত শুধু ওর দুষ্টামির জন্য, নিজেকে বলিউডের সালমান খান মনে করে সে। অলওয়েস একটা কালো সানগ্লাস শার্টের পেছনে কলারে জুলিয়ে রাখে। আর কথায় কথায় স্টাইল মেরে ঠোঁট জোড়া বাকা করে বলবে, ‘ আমার সাথে পার্ট নিয়ো না মাম্মা। আমি কি জিনিস বুঝাইলে মাথায় চুল থাকবো না। ‘
আমাকেও একদিন বলেছিলো ঠাসস করে থাবড়া লাগিয়ে দিয়েছিলাম। এক হাত দিয়ে গাল গষতে গষতে বলে উঠে, ‘ কামডা তুমি ভালা করলা না মাইয়া জীবনেও তোমার বিয়া হইতো না। ‘
কথাটা কান অব্ধি আসতেই পেছনে ঘুরে দাঁড়াই কোমড়ে দুই হাত ধরে চেপে ধরে ভ্রু কুঁচকাই। আমার চোখ দেখেই সে অন্য দিকে ছুটে পালায়। কুকুরের দৌঁড়ানি খাওয়ার পর থেকে শুধু একটা সুযোগ খুঁজে বেড়াচ্ছে আমাদের চারজনকে শায়েস্তা করার কিন্তু তেমন কিছুই আজ পর্যন্ত তার হাতে লাগেনি।
কিন্তু সে হাল ছাড়েনি, আমাদের চারজনের উপর তার দৃষ্টি অধ্যায়রত চোখ নয় জেনো সিসি ক্যামেরা। তীক্ষ্ণ দৃষ্টি নিক্ষেপ করে আমাদের চারজনকে পর্যবেক্ষণ করছিলো। রাগী দৃষ্টিতে তাকালে ডোন্ট কেয়ার এটিটিউট দেখিয়ে চলে যায়।
তার যাওয়ার পর চারজনে এক সিরিয়ালে বিছানায় শুয়ে পরলাম। বার বার ঘুরে ফিরে একটা প্রসংজ্ঞেই এসে আমরা থামবি। চিরকুট টা কে দিয়েছে? রিয়া ফট করে বলে বসল,
‘ আমার মনে হচ্ছে এটা অভ্র ভাইয়া দিয়েছে। ‘
ফোঁস করে উঠল রিমা বিছানার উপর বসে পরল আঁড়চোখে তাকিয়ে বলল, ‘ তোর এটা মনে হওয়ার কারণ কি? ‘
বৃষ্টি ভাবান্তর হয়ে শুয়ে থেকে বলল, ‘ আমারও একই কথা মনে হচ্ছে। কারণ চিরকুট বর্ষা পায়নি আগে অভ্র ভাইয়াই পেয়েছিল। ‘
রিমা থাবা মেরে আমার হাত থেকে চিরকুট টা নিয়ে নিলো তারপর চিরকুটের গায়ে লেখাটা আমাদের দিকে তাক করে বলল, ‘ এটা অভ্র ভাইয়ার লেখা না। আমি ভাইয়ার হ্যান্ড রাইটিং দেখেছি। এটা কিছুতেই উনার লেখা না। হতেই তো পারে সকালে যার বাইকে করে বর্ষা এসেছিল এটা তার দেওয়া। ‘
ভুল বসত ভুল জায়গায় ভুল কথা বলে ফেলেছে রিমা। ওর একটা ভুল কথার জন্য এখন আমাকে হাজার টা উল্টা পাল্টা আউল ফাউল প্রশ্নের সম্মুখিন হতে হবে। একদম যা তা অবস্থা। আমি নির্বাক ও নির্বাক্য হয়ে তাকিয়ে আছি বৃষ্টি ও রিয়ার মুখের দিকে ওরা ওদের মতো প্রশ্নের পর প্রশ্ন জুড়ে দিচ্ছে। কোন ছেলে? কার বাইকে করে এসেছি? আগে কেনো বলিনি? ইটিশ পিটিশ চলে কি না এইসব প্রশ্ন করে আমার কান জ্বালা পালা করে দেয়।
ডিনারের নির্দিষ্ট সময় রাত নয়টা। নয়টা বাজার পাঁচ থেকে দশ মিনিট আগে পরিবারের সকলকে ডাইনিং টেবিলে এসে উপস্থিত হতে হবে৷ লেট হলে রাতে খাওয়া বন্ধ।
বসেছিলাম চেয়ার টেনে। টেবিলের বিপরীতে সামনাসামনি বসেছে অভ্র ভাইয়া। এখন আমি পরে যাই দ্বিধাদ্বন্দে খেতে পারছি না বার বার তার দিকেই নজর যাচ্ছে আর তার করা কিছুক্ষণ আগের কান্ড গুলো চোখে ভেসে ভেসে উঠছে।
তার কোনো দিকে কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই, সে তার মতো ডান হাত দিয়ে গিলছে। বা হাত দিয়ে ফোন স্ক্রল করছে। আমি এখানে আর এক মিনিট ও বসে থাকতে পারবো না। প্লেট হাতে নিয়ে নিলাম চেয়ার ঠেলে উঠে দাঁড়িয়ে প্লেটের সাইডে কিছু তরকারি নিয়ে রুমের উদ্দেশ্য হাঁটা দিলাম। অবশ্য দাদা জান আটকিয়ে ছিল, সবাইকে রেখে খাবার নিয়ে রুমে কেন যাচ্ছি। বলার জন্য কোনো কিছুই পাইনি মুখে যা আসছে তাই বলে দেই,
‘ অনেক পড়া বাকি, রুমে বসে খাবো আর পড়বো। ‘
বলে হাঁটতে থাকি। আমার উত্তর শুনে সকলেই চোখাচোখি করছে। আড়চোখে আমার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আবারও খাওয়ায় মন দেয়। আমি রুমে এসে বিছানার উপর খাবার প্লেট রেখে ফোনটা হাতে নেই। ফোনের ওয়াই-ফাই কানেকশন অন করে হোয়াটসএ্যাপে ঢুকি। আমাদের গ্রুপে এসে গ্রুপ কল দেই। গ্রুপের নাম ‘ বিচ্ছু বাহিনি ‘
একে একে কলে জয়েন্ট হয় সকলে, সবার আগে কলে আসে মাহিরা, তারপর নিঝুম সব শেষে আহিতা শুধু নেই মুরাদ। সে লাইনেই নেই, রিয়া নিচে সকলের সাথে খাচ্ছে আর নয়তো দু’জনে একসাথে আমার ফোনেই কথা বলতাম। আমি খেতে খেতে ওদেরকে চিরকুটের কথা জানাই। ওরা শুনে অধিক পরিমাণে বিচলিত হয়ে উঠে। এক বিশাল আকাশ জমাট আগ্রহ নিয়ে সকলে বলে, ‘ চিরকুট টা কাল কলেজে নিয়ে আসবি। ‘
আমার বেস্টফ্রেন্ড না ওরা ওদের কথা কি আর ফেলা যায়। বলে দিলাম নিয়ে আসবো। ওদের খুশিতে গদগদ অবস্থা। কিছুক্ষণ খেতে খেতেই কলে আড্ডা দিলাম।
হোয়াটসএ্যাপ থেকে বের হয়ে ফেসবুকে ঢুকলাম এতো এতো নোটিফিকেশন আর নিউজ ফিড ফুল মানুষের আজগুবি পোস্টে, কিছুক্ষণ নোটিফিকেশন গুলো চেক দিলাম তারপর দুদিকে মাথা দুলিয়ে বের হলাম। খেতে খেতেই মেসেঞ্জারে ঢুকলাম। বুঝি না এরা সারাদিন কি ফেসবুক আর মোবাইল নিয়েই পরে থাকে নাকি? আশ্চর্য্য, একজনেরই ১২/১৪ টা করে মেসেজ দিয়ে রেখেছে কেউ কেউ তো কল ও দিয়েছে। আমি তাদের চিনি না তাই এইসব স্কিপ করে যাই। বেঁছে বেঁছে আমার বন্ধু গুলোর মেসেজের রিপ্লাই দিয়ে আবারও চলে যাই। কারো সাথে ফাউ কথা বলার ইন্টারেস্ট নেই।
ফোন স্ক্রল করতে করতে এদিকে আমার খাওয়া সম্পূর্ণ। এঁটো থালা ও হাত নিয়ে সিঁড়ি দিয়ে নামছিলাম হুট করে সে সামনে এসে দাঁড়ালো। তারও খাওয়া শেষ তাই উনি তার রুমের দিকে যাচ্ছিলেন। মোট কথা হলো, সে আমার সামনে এসে পরেছে? নাকি, আমি উনার সামনে এসে পরেছি?
অবান্তর চিন্ডা ভাবনা থেকে সজ্ঞানে ফিরে আসলাম তার ধমকে,
‘ সামনে থেকে সরবি নাকি ধরে আছাড় মারবো? ‘
তার কথা শুনে রাগ লাগল। আমার মতো এত বড় মেয়েকে সে নাকি আছাড় মারবে? বজ্জাত জানি কোথাকার? ‘
মনে মনে বলে এক পাশ হয়ে দাঁড়ালাম। সে হনহনিয়ে উপরে উঠে গেলো। আমিও মুখ ভেংচি দিয়ে নিচে যেতে লাগলাম।
রাত এখন পনে একটা, চোখ জোড়ায় ঘুম নেমে আসছে। কিন্তু ঘুমালে চলবে না আমার যে অনেক পড়া বাকি। কিন্তু অবাধ্য চোখজোড়া নিজে থেকেই বন্ধ হয়ে আসছে। কিছুটা চেয়ার থেকে হেলে দুলে পরলাম। আমার বা পাশের দিকে। তখনই একটা শক্তপোক্ত পুরুষালি হাত আমাকে কভার করে নেয়। পরতে দেয় না আগলে নেয় আমাকে। আমি জোরপূর্বক চোখ জোড়া খুলে তাকে দেখার চেষ্টা করি৷ কিন্তু ঘুম জুড়ানো চোখ যে মেলতে পারা দূষকর। চোখের পাপড়ির ঝলকে আবছা আবছা দেখছি।
তারপর আর কিছু জানি না। সকালে ঘুম ভাঙে আম্মুর চেঁচামেচি তে রুমের মধ্যে এসেই চেচাচ্ছে। কলেজের জন্য লেইট হয়ে যাচ্ছে শুনে লাফিয়ে উঠে বসলাম। তখনই চোখ পরল আমার গায়ের উপর। আমার যত দূর মনে পরছে আমি পড়ছিলাম। তারপর কি এমন হলো যা আমার মনে আসছে না। তাছাড়া সব থেকে বড় প্রশ্ন আমি খাটে কিভাবে আসলাম? ভূতে কোলে করে নিয়ে আসেনি তো? ধ্যাত মাথাটা এবার বোধ-হয় আমার গেছে। কি সব কথা ভাবছি আমি? তাহলে আমাকে বিছানায় কে নিয়ে আসল? রিমা, রিয়া, উঁহু কিছুতেই না। ওরা আমাকে পাজাকোলে করে বিছানার ধারে নিয়ে আসার আগে চার পাঁচ বার ফালিয়ে দিবে। ওরা কোনো ভাবেই নয়। তাহলে কে?
গভীর চিন্তায় মগ্ন আমি তখন কেউ একজন আমার হাতের উপর চিমটি কাটল। হুঁশশ ফিরে এলো আমার। মুখ দিয়ে অস্ফুটস্বরে বেরিয়ে আসল, ‘ আউচ ‘
পাশ থেকে দুষ্ট হাসি দিয়ে রিয়া বলল, ‘ কি ভাবান্তর রাণী ওই চিঠিবাজের কথা ভাবছো? তা কি কি ভাবছো আমাদের কেও বলো আমরাও শুনি। ‘
আমি ভুগছি বিছানায় কিভাবে আসলাম সেই টেনশনে আর এই মাইয়া বলে কি না চিঠিভাজের কথা ওদের শোনাতাম। কি বলবো আমি নিজেও তো কিছুই জানি না। তাছাড়া কাল রাতের কথা বলা যাবে না। যদি বলি তাহলে সকলের মতো ওরাও আমাকে পাগল বলবে আর নয়তো মাথার সিট গেছে এগুলোই বলবে তাই না বলে চুপ থাকাই শ্রেয়।
আমাকে নিরুত্ত্যর দেখে মুখ ভেংচি কেটে উঠে চলে যায়। আমিও উঠে তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হতে বাথরুমে ঢুকে পরি। কলেজে যাওয়ার জন্য রেডি হওয়ার আগে রুমটাকে গুছিয়ে পরিপাটি করে তারপর রেডি হয়ে রুম থেকে বের হই। আমি আর রিয়া একসাথে ব্রেকফাস্ট কমপ্লিট করে বাড়ি থেকে বের হলাম। কিছুদূর যাওয়ার পর আমতলায় একটা রিক্সায় উঠে বসে ছিল দুজন ছেলে তাদের মধ্যে একজন ছিল ওয়ান এ্যান্ড অনলি খাটাস নাম্বার ওয়ান আদিল।
বলেছিলাম না গত পর্বে আমাদের সিসি ক্যামেরা৷ ওকে দেখেও না দেখার ভান করে পাশ কেটে চলে আসলাম। কিছুটা সামনে যেতে দেখলাম। নিঝুম ও মাহিরা দাঁড়িয়ে আছে। ওদের সাথে একজোট হয়ে কলেজের উদ্দেশ্য পথ চলতে লাগি।
কলেজে এসে জানতে পারি। কলেজে নবিন বরণ উৎসব পালন করা হবে। আর কলেজের কর্তৃপক্ষ থেকে পুরো অনুষ্ঠানের জন্য কয়েকজন ছাত্র ও ছাত্রী সিলেক্ট করা হয়েছে। চারটা দল সিলেক্ট করেছে আর প্রতিটা দলের চার জনের মধ্যে একজন থাকবে দল লিডার। চারটা দলের চারটা দায়িত্ব পালন করতে হবে।
প্রথম দল হচ্ছে অনার্সের সিনিয়র চারজন মেয়ে সিনিয়র আপু। (তাদের কাজ হচ্ছে, অনুষ্ঠানে যারা যারা অংশগ্রহণ করবে তাদেরকে রিহার্সাল দেয়া। তারা জেনো ভালো পারফর্ম করতে পারে। ‘
তারপরের দল হচ্ছে অনার্সের চারজন ছেলে সিনিয়র ভাই। (তাদের দায়িত্ব হচ্ছে সকলের উপর নজর দাঁড়ি করা ও অনুষ্ঠানের সকল গেস্টের সুবিধা অসুবিধা দেখভাল করা।)
তারপর হচ্ছে আমাদের দল, তবে দলের মধ্যে আমার নাম শুনে আমি চমকে উঠি তার উপরে আঁতকে উঠি তখন যখন শুনি দলের লিডার আমি। আমাদের দায়িত্ব নবীন বরন অনুষ্ঠানের আগে পুরো অডিটোরিয়াম সুন্দর করে সাজানোর। আমাদের চারজন ফ্রেন্ড কেই এই দায়িত্ব দিয়েছে। তবে আমি ভাবান্তর ওরা কাম চুন্নি কিচ্ছুটি করবে না। উল্টো কাজ বাড়াবে। এই এত বড় অডিটোরিয়াম আমি একা কিভাবে সাজাবো? উঁহু, এটা আমি পারবো না স্যারকে আমাকে মানা করে দিতে হবে। ‘
মনে মনে ভাবলাম তারপর হেঁটে জাহাঙ্গীর স্যারের সামনে গিয়ে বললাম।
‘ স্যার আমি অডিটোরিয়াম একচুয়ালি। ‘
আমার ভাব ভঙ্গি দেখে স্যার আমাকে থামিয়ে দিয়ে বললেন,
‘ চিন্তা করো না, আমি জানি তোমার বন্ধু গুলো কেমন। তাই নিশ্চিন্তে থাকো তোমাকে তোমার কাজে সাহায্য করবে আমার ছেলে নিদ্রিক। সে আজই প্রথম কলেজে এসেছে। আর সে চায় এখানে সকলের হাতে হাতে সাহায্য করতে। তাছাড়া নিদ্রিক নিজে থেকেই ইচ্ছা পোষণ করেছে সে তোমাদের সাথে অডিটোরিয়াম সাজাবে। ‘
‘ তাহলে স্যার আপনার ছেলে নিদ্রিক ভাইয়াকে আমরা কিভাবে চিনবো? ‘ জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে প্রশ্ন ছুঁড়লাম।
জাহাঙ্গীর স্যার কিছু বলতে গিয়েও থেমে গেলেন। তার দৃষ্টি সামনের দিকে সে সেদিকে তাকিয়ে থেকে মিহিকন্ঠে বলল,
‘ ওই তো নেভি ব্লু কালারের শার্ট পরে আসছে। ওটাই আমার ছেলে নিদ্রিক। ‘
স্যারের কথা অনুযায়ী তার দৃষ্টি ফলো করে পেছনে তাকালাম নেভি ব্লু শার্ট টা কে দেখতে।
পেছনে তাকাতেই সর্বপ্রথম তার দিকেই নজর পরে আমার। নেভি ব্লু কালারের শার্ট, হাতা কনুই পর্যন্ত ফোল্ড করা, বুকের দিক দিয়ে দুইটা গোতাম খোলা। শার্ট ইন করে পরেছে। বা হাতে এশ কালারের লেদার জ্যাকেট ঝুলানো। বা হাতে ঝুলিয়ে রেখেছে৷ চুলগুলো কোঁকড়ানো, চোখ দুটো বিড়ালের চোখ। তবে চোখের গভীরতা অনেক। জ্যাকেটের তোল থেকে সোনালী কালারের ঘড়িটা বারবার উঁকি দিয়ে বের হয়ে আসছে। কালো শু জুতা পরেছে। মুখে তার এক চিলতে তৃপ্তিময় হাসি গায়ের রং শ্যামবর্ণ। তবে তাকে দেখতে অপরূপ সুন্দর লাগছে। এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে বর্ষা তার দৃষ্টি ও মস্তিষ্ক তাকে জানান দিচ্ছে সে ছেলে টা কে কোথাও দেখেছে। কিন্তু কোথায়? উঁহু, এত বড় ভুল হতে পারে না। নিশ্চয়ই দেখেছে কিন্তু কোথায়?
বর্ষা ঘোরের মধ্যে আছে ছেলেটা হেঁটে এসে বর্ষার সামনে দাঁড়িয়ে এক হাত বাড়িয়ে দিয়ে বলল,
‘ হাই! আ’ম আদ্রিক। ‘
বর্ষা ছেলেটার পায়ের নখ থেকে মাথার চুল পর্যন্ত চোখ বুলিয়ে চিন্তিত স্বরে প্রশ্ন সূচক ভাবে তাকিয়ে বলে উঠে,
‘ ডু উই নো ইচ আদার? ‘
বর্ষার বোকা কথা শুনে সশব্দে হেঁসে উঠে আগন্তুক। তাকে হাসতে দেখে মুখ খানি চুপসে যায় বর্ষার। সে ইনোসেন্ট ফেস বানিয়ে তাকিয়ে রয়।
আগন্তক হাসি থামিয়ে চিল মুডে বলল,
‘ কাম অন, বর্ষা। কাল দেখা হলো আর আজ ভুলেও গেলে নট ফেয়ার। ‘
শেষটুকু অভিমানী স্বরে বলল আদ্রিক।
বর্ষার এখনও মনে পরছে না। সে গভীর ভাবে ভাবনায় ব্যস্ত হয়ে উঠে কোথায় দেখেছে। তার আগে ছেলেটা বর্ষার ভাবলেশহীন বুঝে বলে উঠে,
‘ দাঁড়াও দাঁড়াও! থামো আর ভাবতে হবে না। শান্ত হও, কিছুক্ষণ পর আমিই বলে দিবো মনে করিয়ে দিবো ম্যাডাম আমাদের কোথায় দেখা হয়েছিল। এখন চিল মারো আর বন্ধুদের সাথে গিয়ে আড্ডা দাও আমি খানিক ক্ষণ বাদ তোমার Doubt ক্লিয়ার করে দিবো। আসছি আমি অপেক্ষা কোরো। ‘
বলে সে ফোন কানে লাগিয়ে চলে যায়। নিষ্পলক ভাবে তার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে একটা কথাই ভাবছে, ‘ কোথায় দেখা হয়েছিল? ‘
বিচ্ছু বাহিনির সকলে এসে বর্ষাকে টিটকারি মেরে বলে উঠে, ‘ কি রে প্রেমে ট্রেমে পরলি নাকি রে? ‘
তাদের দিকে ক্রোধিত চোখে তাকালে তারা থতমত খেয়ে চুপ হয়ে যায়।
সকলে একসাথে এক টেবিলে বসে গোল মিটিং করছি কিভাবে ও কোন দিক দিয়ে আগে সাজানো শুরু করবো। তখনই জুনিয়র আশা মেয়েটা এসে আমার পাশে দাঁড়িয়ে বলল, ‘ বর্ষা আপু তোমার সাথে দেখা করার জন্য কলেজ ক্যাম্পাসে কেউ একজন দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছে। ‘
তারপরের ঘটনা উপরে উপলব্ধি করেছি।
*
গালে টনটন ব্যাথা করছে। মুরাদ ঠান্ডা 7আপ এর বোতল আমার দিকে এগিয়ে দিয়ে বলল,
‘ নে বোতলা টা গালের সাথে চেপে ধর। জ্বালা ব্যাথা, ও দাগ তিনটাই কমবে। ‘
ওর মুখের দিকে তাকাতেই রাগে অগ্নী বর্ণ হয়ে যাচ্ছি। ওর জন্যই তো ভুল বুঝে মারল৷ দাঁতে দাঁত চেপে দাঁত কটমট করে ওর হাত থেকে বোতল টা নিয়ে গালের সাথে চেপে ধরি। এখনো আমি নির্বাক্য ওদিকে ওরা হিস্টোরি জানার জন্য বিচলিত হয়ে উঠেছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে হবে তার জন্য কি করা উচিত? মনে মনে ভাবছে, তখনি পেছন থেকে পুরুষালী কন্ঠ ভেসে আসলো সে বলল,
‘ আন্ডা তোমায় মেরে করে দিবো ঠান্ডা ‘
কষ্টের মধ্যেও সশব্দে হেঁসে ফেলি আমরা সকলে। সে-ও হাসতে হাসতে এসে বসল আমাদের পাশে আর শীতলাকন্ঠে বলল,
‘ পৃথিবীতে কিছু মানুষ এমন আছে যাদের চোখে উল্লাস ও ঠোঁটে হাসিই মানায়। তাদের কান্না মোটেও সোভা দেয় না। সর্বদা চেষ্টা করবে হাসার। কারণ সকলে তোমাকে কাঁদাতে পারবে কিন্তু হাতে গুনা কয়েকজনও হাসাতে পারবে না। তাই কখনো নিজেকে দূর্বল করে কারো সামনে কাঁদবে না। নিজেকে শক্ত প্রমাণ করো দেখবে কেউ আর কাঁদাতে পারবে না। চোখের অশ্রুকণা অনেক দামি। যার তার জন্য ক্ষয় করো না। সব সময় সব পরিস্থিতিতে নিজেকে মানিয়ে নিতে শিখো। যে যেমন তার সাথে তেমন টাই করতে হবে। কেউ আঘাত করলে তাকে প্রথম বারেই পাল্টা আঘাত করো না প্রথম বার বুঝাও দ্বিতীয় বার সুযোগ দাও কিন্তু তৃতীয় বার তাকে বুঝিয়ে দাও তুমি কম নও, দূর্বল নও। তৃতীয় বারও যদি তুমি ছাড় দাও তাহলে সে তোমাকে দূর্বল ভেবে সর্বক্ষণ মাটির সাথে পিষে ফেলতে চাইবে। কিন্তু তুমি তা করতে দিতে পারো না। তোমাকে নিজেকে বাঁচাতে হলে প্রতিবাদ করতেই হবে। ‘
আদ্রিকের কথাগুলো মনমুগ্ধকর। তার কথায় জেনো নেশা কাজ করে। মুগ্ধ হয়ে সবগুলো কথা মনোযোগ দিয়ে শুনছিল সকলে আদ্রিকের কথা শেষ হলে।
বর্ষা জ্ঞানহীন মস্তিষ্কে বলে ফেলল,
‘ আপনি তো দারুণ কথা বলেন। ‘
উপস্থিত সকলে বিস্ময় নিয়ে তাকালো বর্ষার দিকে। বর্ষা মুখ ফসকে কি বলে ফেলেছে বুঝতে পেরে দুই হাত ধরে মুখ চেপে ধরে। সাথে সাথে চেয়ার থেকে সরে টেবিলের নিচে মুখ লুকায় লজ্জায়।
আদ্রিক মৃদু হেঁসে সেও ঝুঁকে টেবিলের নিচে তাকালো। আদ্রিক ফিক করে হাসি দিয়ে উঠে। বর্ষা আরও লজ্জায় পরে যায়। আদ্রিক হাল্কা কাশি দিয়ে গলা ঝেড়ে নিয়ে বলল,
‘ হইছে ম্যাডাম! আপনাকে আর লজ্জা পেতে হবে না উপরে উঠে আসুন। ‘
#চলবে?
#অবন্তর_আসক্তি
#পর্ব_১৬
#শারমিন_আক্তার_বর্ষা
________
এক্ষুনি সূর্য অস্ত যাবে যাবে সূর্য পশ্চিম আকাশে ঢলে পড়েছে। সকলে কাজ করতে করতে ক্লান্ত হয়ে টেবিল জুড়ে বসে পরেছি। স্যার বলেছিলেন আজ থেকেই আমাদেরকে কাজ শুরু করতে দুইদিন পরই অনুষ্ঠান হাতে গুনা আর এক দিন রয়েছে এরই মধ্যে এত বড় অডিটোরিয়াম সাজাতে হবে, সাদা ও নীল বেলুন মুখ দিয়ে হাওয়া দিয়ে ফুলিয়ে গাল ব্যাথা করে ফেলেছে আমার বিচ্ছু বাহিনি। এদিকে আমি আর আদ্রিক একসাথে হাতে হাতে অন্য দিক টা সাজাতে ব্যস্ত এর মধ্যে আমাদের কারো সাথে তেমন কথা হয়নি। তখন লজ্জায় টেবিলের নিচ থেকে বের হয়ে চলে যাই। অডিটোরিয়াম এর উল্টো পিঠে সেথায় গিয়ে বেলুনে হাত রাখি আমার পেছনে আমার সেনা বাহিনি হাজির হয়। তখন থেকেই কাজ শুরু করে দেই। কাজের মধ্যে এতটাই মগ্ন হয়ে পরি সময়ের একদমই খেয়াল ছিল না। যখন হাঁপিয়ে গেলাম তখন একে একে এসে টেবিল ঘিরে চেয়ার টেনে বসে পরি।
মাহিরা আমতা আমতা করে বলল,’ ভাইয়া আপনাকে তো ঠিক চিনলাম না। এর আগে কলেজে আগে কখনো দেখেনি। যদি পরিচয় টা দেন তাহলে ভালো হয়। তাছাড়া আপনি আমাদের কাজে এত সাহায্য করেছেন। ‘
বর্ষা বিরসমুখে বলল,’ জাহাঙ্গীর স্যারের ছেলে। ‘
রিয়া ঝাঁঝের সাথে বলে,’ গোপাল দাদুর ছেলে? এত হ্যান্ডসা..সা ‘
বলতে গিয়ে থতমত খেয়ে যায়। সামনে বসে থাকা ছেলেটার তীক্ষ্ণ দৃষ্টি দেখে। মনে মনে শুকনো ঢোক গিলে কথা ঘুরিয়ে বলল,’ বলতে চাচ্ছিলাম আর কি? ওই স্যা স্যার স্যার কি জেনো নাম। কিরে বলনা? ‘
বলে মাহিরার পিঠে ঘুষি মারে, মাহিরা পিঠ বাঁকা করে নেয়। পিঠে এক হাত দিয়ে মুখ দিয়ে অস্ফুটস্বর বের করছে। তা দেখে মুখ টিপে টিপে হাসছে নিঝুম ও মুরাদ। তারা কেন বাকি থাকবে? তাদের ও পিঠে বসিয়ে দিল দুই ঘাঁ। তারাও এখন পিঠ বাকা করে বসে আছে। মুরাদ কান্না জড়িত কন্ঠে বলল,’ আমার লগে এইডি তোলা ঠিক কলোস না। সব সময় আমারেই পাস বলির পাঁঠা। ‘
এবার নিঝুম মুরাদের পিঠে কিল বসিয়ে দিয়ে বলল, ‘ সালা ঠিক করে কথা বল। এইসব কেমন ভাষা? ‘
মুরাদ ইনোসেন্ট ফেস বানিয়ে ন্যাকা কন্ঠে বলল,’ তোদের লগে থাকমুই না। তোরা ছেড়ি জাতই ভালা না। ‘
ওদের জগড়া দেখে সশব্দে হেঁসে উঠে আদ্রিক। হাসির শব্দে তারা ভদ্র হয়ে যে যার মতো বসে পরে।
আদ্রিক মৃদু হেঁসে বলল,’ বর্ষা তো বললোই আমি তোমাদের স্যারের ছেলে। তা বাদেও আমার আরও একটা পরিচয় আছে। সেটা না হয় এখন না বলাই থাক। আর যদি জানতে চাও আমার নাম, সেটা এখন বলা যাবে, আমার নাম হচ্ছে ‘ নিদ্রিক অভয়ব আদ্রিক ‘ ফ্যামিলি তে সকলে অভয়ব বলে, ফ্রেন্ড সার্কেলে সকলে আদ্রিক বলে। একমাত্র আব্বু মানে তোমাদের স্যার শুধু নিদ্রিক বলে ডাকে।
নিঝুম ফোঁস করে বলে উঠল,’ এতগুলো নাম আপনার একার দুনিয়ার সকল নাম আপনি একাই নিয়ে নিলেন? ‘
নিঝুমের টিটকারি মারা কথা শুনে সশব্দে হেঁসে উঠল বর্ষা। এবার সকলে তার দিকে সরু দৃষ্টিতে তাকালো। চোখ জোড়া ছোটো-ছোটো করে উঠে দাঁড়িয়ে বর্ষা বলল,’ সন্ধ্যা হয়ে আসছে আমাকে আর রিয়াকে বাড়ি পৌঁছাতে হবে আমরা এখন আসছি। তাছাড়া জানিস ই তো আমাদের লেট করে গেলে হাজার টা প্রশ্নের সম্মুখিন হতে হয়। তাই আমরা উঠছি কাল দেখা হবে সাথে বাকি অডিটোরিয়াম সাজাতে হবে। কালকেই শেষ করতে হবে। ‘
যাওয়ার জন্য পা বাড়ালাম। তখন মাথায় এলো ছেলেটার বলা একটা কি জেনো নাম আদ্রিক না নিদ্রিক নাহহ অভয়ব উফফ ছাতার মাথা একটা হলেই হবে। তার দিকে ঘুরে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলাম। তিনি মুচকি হেঁসে বললেন, ‘ কাল তোমাকে বাইকে করে একটা ছেলে তোমার বাড়িতে নামিয়ে দিয়েছিল। মনে আছে? ওওওহ, থাকার তো কথা। ‘
‘ হ্যাঁ মনে আছে কেনো? ‘ বর্ষা ভ্রু কুঁচকে বলল
‘ চেহারা মনে আছে তার? ‘
‘ আমি তো তার মুখের দিকে তাকাইনি তো চেহারা মনে থাকার কথা প্রশ্নই আসে না। ‘
ছেলেটার মুখ টা সাথে সাথে মলিন হয়ে গেলো। সে বলল, ‘ সেই ছেলেটা আমিই ছিলাম। ‘
বর্ষা হা হয়ে তাকিয়ে রইল। তাইতো চেনা চেনা লাগছিল। আমি দাড়িয়ে থেকেই পেছনে পা বাড়ালাম। আর এক মিনিট ও দাঁড়ানো যাবে না। তাহলে আরও নিজেকে অপদস্ত হতে হবে। কি ভাবছে আমার সম্মন্ধে নিশ্চয়ই ভাবছে আমার ভুলে যাওয়ার রোগ আছে ইয়াক।
দুই বোন হাঁটতে হাঁটতে চলে আসলাম বাড়ি। দাদু ও আম্মু জিজ্ঞেস করে ছিল এত লেইট হয়েছে কেন আজ? আমরাও তাকে অনুষ্ঠান সম্পর্কে বলি আর আমাদের দায়িত্বের কথাও বলি। তারপর তারা আর কিছু বলে না। আমরা রুমে চলে আসি। দু’জনে ফ্রেশ হয়ে বিছানায় গা এলিয়ে দেই। তিন্নি আপু এসে বলে উঠে, ‘ তোদের কে বলে যেতে পারেনি। বৃষ্টি আর রিমা ওদের হোস্টেলে ফেরত চলে গেছে। কিছু দিন পর আবার আসবে। কল দিতে বারণ করেছে ওরা ফ্রী হলে তোদের কে কল দিবে। ‘
বলে আপু চলে গেলো। মুড টাই অফ হয়ে গেলো। তারই মধ্যে আমার হঠাৎ মনে পরল অভ্র ভাইয়ার কথা আমি বিছানা থেকে লাফ দিয়ে উঠে বসে পরলাম। কিছু একটা ভেবে গায়ে ওড়না জড়িয়ে ছুটতে লাগলাম।
হঠাৎ ছুটে এসে দরজার সামনে দরজা ঝাপটে ধরে দাঁড়াই, সে বিছানার উপর ল্যাপটপ নিয়ে বসে আছে৷ আমার উপস্থিতি সে আমার দিকে না তাকিয়েই পেয়েছে। কিন্তু কিভাবে?
সে ল্যাপটপের উপরে দৃষ্টি রেখেই আমার উদ্দেশ্য প্রশ্ন ছুঁড়ল, ‘ তুই এখানে কেন আসছিস? ‘
আমি জড়ানো কন্ঠে বললাম, ‘ কেন আসতে পারি না? ‘
‘ আসতে পারিস তবে দরকার ছাড়া না। ‘
‘ আমি দরকারেই আসছি ‘ দাঁত চেপে ধরে বললাম।
‘ গুড। তা বল কি দরকারে আসছিস? ‘
‘ তুমি আমার কলেজে কেন গিয়েছিলে? ‘
‘ মন চেয়েছিল তাই গিয়েছিলাম। ‘
‘ এটা কেমন কথা? ‘
‘ এটা অভ্রর কথা। এখন বাজে না বকে যা ফোট। বাই দ্য ওয়ে থাপ্পড়ের জন্য সরি। ‘
এখনও তার দৃষ্টি ল্যাপটপের উপরে। আমাকে এভাবে ইগনোর করছে দেখে প্রচুর রাগ হচ্ছে তখনই আমার মাথায় দুষ্ট মিষ্টি একটা বুদ্ধি উদয় হলো।
আমি যাওয়ার জন্য পা বাড়ালাম সাথে সাথে পায়ে পা লেগে সত্যি সত্যি পরে যাওয়ার ভান করে ফ্লোরে পরে গেলাম। জোরে চিৎকার দিয়ে উঠি মুখ দিয়ে অস্ফুটস্বরে বলে ফেলি,’ আল্লাহ গো আমার মাজা বুঝি ভেঙে গেলো গো। ‘
আমার চিৎকার শুনে সে বিস্মিত হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে হন্তদন্ত হয়ে যায়। বিছানা থেকে পা নামাতে নামাতে শাণিতকন্ঠে বলল, ‘ বর্ষা আর ইউ অলরাইট? পরে গেলি কিভাবে? ‘
বিছানা থেকে নেমে কয়েক কদম আসতেই আমি উঠে দাঁড়িয়ে। বলে উঠি, ‘ ওটা ডোপ ছিল৷ ‘
বলেই দিলাম দৌঁড়, সে আমার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইল। ঠোঁট জোড়া বাঁকা করে বলল,’ হাল্কা করে ছ্যাঁকা দিয়ে গেলো। ‘
চলবে?
()