আকাশ জুড়ে তারার মেলা পর্ব ১৩ ও শেষ

#আকাশ_জুড়ে_তারার_মেলা
#পর্ব_১৩
#লেখিকা_N_K_Orni

নির্জন নেহাকে নিয়ে বেশ কিছুটা দূরে চলে এলো। নেহা এবার ওকে জিজ্ঞাসা করল,

— ভাইয়া আপনি আমাকে এখানে কেন নিয়ে এলেন?

— আসলে তোমার কাছে কিছু শোনার আছে নাবিলার ব্যাপারে। আচ্ছা নাবিলার কি কোনো বয়ফ্রেন্ড আছে? আসলে বিয়েতে প্রথমে ওর অনেক আপত্তি ছিল। আর বিয়ের তারিখও পিছিয়ে দিতে বলেছিল। এজন্য শুনছি।

— এসব কথা আপনাদের আরও আগে শোনা উচিত ছিল। এখন শুনে কি বা করবেন? আজকে তো ওর বিয়ে আর একটু পরে হয়তো বিয়েটাও হয়ে যাবে। এখন এসব কথা শুনলেই বা কি হবে?

— আমি আগে এই কথা শুনিনি কারণ বাবা যদি জানতে পারেন যে ওর বয়ফ্রেন্ড আছে তাহলে তিনি ওইদিনই ওর বিয়ে দিয়ে দিবেন। এজন্য কেউই এসব শুনিনি। আর আজকে শুনছি অন্য কারণে। ওর যদি কোনো বয়ফ্রেন্ড থাকে তাহলে ওকে বুঝিয়ে বলো যে বিয়েটা মেনে নিতে আর সেই ছেলের কথা ভুলে যেতে। তোমরা ওর ফ্রেন্ড তাই তোমরা বোঝালে ও ঠিক বুঝবে।

যেহেতু নাবিলা সবার সাথে টাইমপাস করে তাই সে আর এটাকে রিলেশনের মধ্যে ধরল না। সে বলে উঠল,

— ওর কোনো বয়ফ্রেন্ড নেই।

নেহার কথা শুনে নির্জনের মুখে হাসি ফুটে উঠল।

— ওহ। আর তোমার?

বলেই নির্জন নেহার দিকে তাকাল।

— তোমার কোনো বয়ফ্রেন্ড নেই?

নেহা কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বলে উঠল,

— না, আমারও নেই।

নেহার কথা শুনে নির্জন মুচকি হাসল। তানিশা একা একা হাঁটছে আর বারবার ঘড়ি দেখছে। নেহা এখনো আসছে না দেখে সে বেশ বিরক্ত হচ্ছে। সে আশেপাশে তাকিয়ে বিরবির করে বলল,

— ধুর! এই নেহা আসে না কেন? নির্জন ভাইয়ার সাথে এতো কি কথা বলে? আমি একা একা আর কতক্ষণ হাঁটবো? একা একা হাঁটতে কারো ভালো লাগে নাকি?

তানিশা বিরক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে রইল। কিছুক্ষণ পর নেহা ওর কাছে ফিরে এলো। তানিশা ওর দিকে তাকিয়ে ভ্রু কুচকে বলে উঠল,

— কিরে এতোক্ষণ নির্জন ভাইয়ার সাথে কি এতো কথা বললি?

— তেমন কিছুই না। ওই নাবিলার বিষয়ে একটু কথা বলছিলেন।

— ওহ।

নাবিলার বিয়ে শেষ হওয়ার পর তানিশা তার বাসায় চলে গেল। সে বাসায় যেতেই তিনা এসে দরজা খুলে দিল। তিনা ওর দিকে তাকিয়ে বলে উঠল,

— আপু তুই তো তোর বান্ধবীর বিয়েতে গেলি। আমার ফ্রেন্ডরা যে কবে বিয়ে করবে?

তানিশা ভেতরে ঢুকতে ঢুকতে বলল,

— তোর ফ্রেন্ডদের এখনো বিয়ের বয়স হয়নি। তাই তোকে আরও এক দুই বছর অপেক্ষা করতে হবে।

তিনা ছোট ছোট চোখে ওর দিকে তাকিয়ে বলে উঠল,

— কিন্তু আমার দুই ক্লাসমেটের এক বছর আগেই বিয়ে হয়ে গেছে।

— তাহলে তুইও বিয়ে করে ফেল।

— সেটা হচ্ছে না। আগে তোর বিয়ে হবে তারপর আমার।

তানিশা ওর দিকে একবার তাকিয়ে ওর রুমে চলে এলো। রুমে এসে তানিশা জামাকাপড় বদলে ফ্রেশ হয়ে এসে ঘুমিয়ে পড়ল। সন্ধ্যার পর সে ঘুম থেকে উঠল। সে হাত মুখ ধুয়ে এসে বারান্দায় চলে গেল। সে বারান্দায় বসে আছে হঠাৎ তার ফোনে একটা কল এলো। তানিশা ফোনের দিকে তাকিয়ে দেখল অচেনা নম্বর থেকে কল এসেছে। তারপর সে ফোনটা ধরে কানের কাছে নিতেই ফোনের অপর পাশ থেকে কেউ একজন বলে উঠল,

— তুমি তানিশা, তাই না?

নিজের নাম শুনে তানিশা ভাবল হয়তো তার পরিচিত বা অল্প পরিচিত কেউ।

— তানিশার নাম্বারে কল দিয়ে বলেন যে আমি তানিশা কিনা?

— না তুমি অন্যকেউও হতে পারো। এটা যে তানিশার নাম্বার সেটা তো আমি নিশ্চিত না। তাই জিজ্ঞাসা করে নিলাম।

— ওহ। তা আপনি কে? আমরা কি একে অপরকে চিনি?

— আমি তোমাকে চিনি। কিন্তু তুমি আমাকে চিনো না।

— আমি যেহেতু আপনাকে চিনি না, তাহলে আপনি আমাকে দিছেন কেন? আপনি অপরিচিত কারো সাথে কথা বলি না।

— তো এখন আমরা পরিচিত হয়ে নেই।

— আমি আগ্রহী নই।

— কিন্তু আমি তো আগ্রহী। আমার সাথে কথা বলতে সমস্যা কোথায় তোমার?

— অনেক সমস্যা। এতো মানুষ থাকতে কেন আপনি আমার সাথে পরিচিত হতে চান?

— আচ্ছা সত্যি কথাটা বলি তাহলে। আসলে আমি ঘুরিয়ে পেচিয়ে কথা বলতে পছন্দ করি না। আমি তোমাকে ভালোবাসি। তাই তোমার বিষয়ে খোঁজখবর নিয়েছি। আর আজকে তোমার ফোন নাম্বার জোগাড় করেছি। তাই আর দেরী না করে আজকেই কল দিয়েছি।

— তো আমি কি করব?

— আমি তোমাকে আই লাভ ইউ বলেছি। তা তোমার কোনো রিয়েকশন নেই? বয়ফ্রেন্ড আছে তোমার?

— না। কারণ আমি কারো সাথে রিলেশনে জড়াতে চাই না। তাই আপনার ক্ষেত্রেও একি উত্তর।

— বিয়ে তো নিশ্চয়ই করবে? আমি তোমাকে বিয়ে করতে চাই।

— এভাবে বললেই হয়ে যায় না। আর আমি আপনাকে চিনি না জানি না বিয়ে করে ফেলব। এসব বলে কোনো লাভ নেই। আমার বাবা আমাকে যার সাথে বিয়ে দিবে আমি তাকেই বিয়ে করব।

— তোমার বাবার পছন্দ করা ছেলেও তো তোমার অচেনাই হবে।

— তাতে কি? সে তো আর খারাপ হবে না। আমার বাবা আমার জন্য নিশ্চয়ই ভালোটাই ঠিক করবেন।

— তার মানে তুমি বলতে চাইছো আমি খারাপ?

— উহু! আমি সেটা বলিনি। কিন্তু আপনি ভালো না খারাপ সেটা তো আর আমি জানিনা।

— আচ্ছা।

তানিশা আর কিছু বলতে যাবে তার আগেই অপর পাশের ব্যক্তি কল কেটে দিল। তানিশা ফোনের দিকে তাকিয়ে বলে উঠল,

— এইসব অদ্ভূত লোকজন কেন আমাকেই কল দেয়?

বলেই সে ওখান থেকে উঠে রুমে চলে গেল। পরদিন সকালে তানিশা কলেজে গেল। নিজের রুমে দাঁড়িয়ে অফিসে যাওয়ার জন্য তৈরি হচ্ছে ইফাদ। একটু পরে ফাহিম তার দরজায় নক করল।

— আসব?

ইফাদ একবার দরজার দিকে তাকালো তারপর বলে উঠল,

— হুম এসো।

ফাহিম ভেতরে আসতেই ইফাদ বলে উঠল,

— ফাহিম আজকে কোনো মিটিং রেখো না। আর যদি থাকে তাহলে সেটা বাদ দিয়ে দেও। আজকে বিকালে একটা গুরুত্বপূর্ণ কাজ আছে। আর সেখানে তুমিও আমার সাথে যাবে।

— স্যার আমি একটু হলেও বুঝতে পেরেছি। আপনি নিশ্চয়ই তানিশা ম্যামের সাথে দেখা করতে যাবেন।

ইফাদ হালকা হেসে বলল,

— না। ওর বাসায় বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে যাব।

— এতো তাড়াতাড়ি!

— হ্যাঁ। কালকে ওর সাথে কথা বলে যা বুঝলাম তাতে এটা করাই ভালো হবে।

— আচ্ছা। আন্টিকে নিয়ে যাবেন না? উনি কি এই বিষয়ে জানেন?

— মাকে আমি আগেই জানিয়ে দিয়েছি। কিন্তু আজকে মাকে সাথে নিয়ে যাব না। আমি আগে ওনাদের সাথে কথা বলে দেখি। তারপর মাকে নিয়ে যাওয়া যাবে। আগে থেকে কিছু ভাবাই ভালো না।

— ওহ। তাহলে স্যার আমি আসি। আপনি তৈরি হয়ে আসেন।

বলেই ফাহিম চলে গেল। ইফাদও তৈরি হয়ে বেরিয়ে গেল।

————

সন্ধ্যায় ইফাদ তার রুম অন্ধকার করে বসে আছে। তানিশার বাসা থেকে আসার পর থেকে সে রুমে এসে দরজা লাগিয়ে দিয়ে রুম অন্ধকার করে বসে আছে। এখনো জামাকাপড়ও বদলায়নি। সে বারবার একটু আগে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো নিয়েই ভাবছে।
বিকালে ইফাদ তানিশার বাবার কাছে যায় বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে। প্রথমদিকে সব ঠিকই ছিল। এক পর্যায় তানিশার বাবা বলে উঠলেন,

— তোমার বাবা মা কি করেন?

ইফাদ হালকা হেসে বলল,

— আমার মা আমার নানার পারিবারিক ব্যবসা দেখতেন। আমি পড়ালেখা শেষ করে এখন ওটাই দেখাশোনা করছি। তাই মা এখন বাসায়ই থাকেন। আর আমার.. আমার বাবা নেই। আমার মা সিঙ্গেল মাদার। বাবা আর মায়ের অনেক আগেই বিয়ে হয়ে গেছে।

ইফাদের কথা শুনে আজাদ সাহেব কিছুক্ষণ চুপ করে থাকলেন। তারপর বলে উঠলেন,

— দেখো ইফাদ তুমি অনেক ভালো ছেলে। তোমার আর্থিক অবস্থাও আমাদের থেকে অনেক ভালো। কিন্তু আমি তোমার সাথে আমার মেয়ের বিয়ে দিতে পারব না।

— কারণ কি জানতে পারি আঙ্কেল?

— আমি যদি তোমার সাথে আমার মেয়ের বিয়ে দেই তাহলে তুমি যে আমার মেয়েকে মাঝপথে ছেড়ে চলে যাবে না এর কি নিশ্চয়তা আছে? তোমার বাবা যেভাবে তোমার মাকে ছেড়ে চলে গেছেন তুমিও তো সেভাবে আমার মেয়েকে ছেড়ে চলে যেতে পারো?

— কিন্তু আমার বাবা যেটা করেছে সেটা আমি কেন করতে যাব? একজনের ভুলের জন্য কেন আমি এসব ভোগ করব?

— সেটা আমি জানিনা। কিন্তু আমি তোমার সাথে আমার মেয়ের বিয়ে দিব না। তুমি বরং অন্য কাউকে খুঁজে নেও।

— আপনি আমার কথাটা শোনেন। আমি…

— আমি তোমার আর কোনো কথা শুনতে চাই না। আমি আমার মতামত বলে দিয়েছি। এবার তুমি তোমার যা ইচ্ছা তাই করো।

বলেই আজাদ সাহেব ওখান থেকে উঠে চলে গেলেন। একটু আগের কথা ভাবতেই ইফাদের আবার রাগ উঠে গেল। সে উঠে গিয়ে সামনে থাকা টেবিলে জোরে একটা লা*থি দিল। নিজের রুমের বারান্দায় উদাস হয়ে বসে আছে তানিশা। সে ভাবতে পারেনি ফোনের সেই ব্যক্তি সরাসরি তার বাসায় বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে আসবে। আর তার বাবাও যে এমন একটা কারণে না করে দিবে সে সেটাও ভাবেনি। তাই এসবের জন্য সে বারবার নিজেকেই দায়ী করছে। তানিশা একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে রুমে চলে গেল।

পরদিন সকালে তানিশা কলেজে যাওয়ার জন্য বাসা থেকে বের হলো। সে তার বাড়ির পরের রাস্তায় আসতেই তার সামনে ইফাদ এসে দাঁড়াল। তানিশা তাকে দেখে ভ্রু কুচকে বলে উঠল,

— আপনি এখানে কেন এসেছেন? বাবা তো কালকেই বলে দিয়েছেন সব।

— তানিশা তুমিও কি ওই কারণেই আমাকে…

— না। বাবার আপনাকে পছন্দ না বলেই আমি আপনাকে বিয়ে করতে পারব না। আমি আপনাকে আগেই বলে দিয়েছি যে বাবা আমাকে যেখানে বিয়ে দিবেন আমি সেখানেই বিয়ে করব।

— আমি তোমাকে ভালোবাসি তানিশা। আমি তোমাকে কখনোই ছেড়ে যাব না। বাবার ভুলের শাস্তি আমাকে কেন দিচ্ছো?

— আমি এ বিষয়ে কিছুই বলতে পারব না।

বলেই তানিশা ওখান থেকে চলে গেল। আর ইফাদ ওর যাওয়ার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল। আজাদ সাহেব ওনার রুমে বসে আছেন। তখন মিসেস তাসনীম ওনার কাছে এসে বলে উঠলেন,

— কালকের ছেলেটা তো ভালোই ছিল। তাহলে কেন ওকে না করে দিলে?

— যা করেছি আমি ভালোই করেছি। ওই ছেলেটার মা ডিভোর্সি, তার বাবা নেই। ওই রকম পরিবারে আমি আমার মেয়েকে দিব না।

আজাদ সাহেবের কথা শুনে মিসেস তাসনীম মুখ বাঁকিয়ে মনে মনে বললেন,

— হুহ! ছেলেটার অনেক টাকা আছে। ওখানে তানিশা ভালোই থাকত। এই লোকের যত সমস্যা। ডিভোর্সি তো কি হয়েছে?

— আমি কি আর এমনি এমনি বলছি? মেয়ের তো বিয়ের বয়স হয়েছে। এখন তো বিয়ে দিতেই হবে।

— হ্যাঁ দিতে হবে কিন্তু ওই রকম পরিবারে না।

মিসেস তাসনীম কিছুক্ষণ ভেবে বলে উঠলেন,

— আচ্ছা আমার এক বান্ধবীর ছেলে আছে। তারও বিয়ের বয়স হয়েছে। ছেলেটা কিন্তু ভালোই। আর তার পরিবারও তোমার মনের মতোই।

আজাদ সাহেব কিছুক্ষণ ভেবে বলে উঠলেন,

— আচ্ছা তাহলে কালকে ওনাদের আসতে বলো। কথা বলে দেখি ওনারা কেমন?

— আচ্ছা।

মিসেস তাসনীম মনে মনে বললেন,

— যাক এর কথায় তো রাজি হলো। রিফারা অনেক বড়োলোক। ওই ছেলেটার মতো না হলেও মোটামুটি অনেক টাকাই আছে।

এসব ভেবে তিনি মনে মনে হাসলেন। পরদিন বিকালে মিসেস তাসনীমের বান্ধবী তার পরিবার নিয়ে তানিশাদের বাসায় এলো। ওনার ছেলে রোহানকে আজাদ সাহেবের বেশ পছন্দ হয়ে গেল। তিনি রোহানের সাথে তানিশার বিয়ে দিবেন বলে ঠিক করলেন। সন্ধ্যার পর রোহান ও তার পরিবার চলে গেল। পরদিন সকালে তানিশা কলেজে যাওয়ার জন্য বের হলে সে আবারও ইফাদের মুখোমুখি হলো। ইফাদ তানিশাকে দেখে বলে উঠল

— তানিশা তুমি প্লিজ তোমার বাবাকে বোঝাও। আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি। আমি কখনো তোমাকে ছেড়ে যাব না।

— আমার বাবা রোহান নামের একজনের সাথে আমার বিয়ে ঠিক করেছেন। আপনার জন্য ভালো হবে আপনি আমাকে ভুলে যান।

বলেই তানিশা ফোন বের করে তাকে রোহানের ছবি দেখালো। ইফাদ তানিশার সাথে কিছুক্ষণ কথা বলে অফিসে চলে গেল। প্রতিদিন তানিশার জন্য অপেক্ষা করায় এখন আর সে আগের মতো ঠিক সময়ে অফিসে আসতে পারে না। ইফাদ ওখানে গিয়ে ফাহিমকে ডেকে রোহানের বিষয়ে খোঁজ নিতে বলল। ইফাদ এতো তাড়াতাড়ি ভেঙে পড়তে চায় না। তাই সে এভাবে প্রতিদিন তানিশার জন্য অপেক্ষা করে। কিন্তু তানিশা প্রত্যেক বারের মতোই তাকে একি কথা বলে।

এদিকে ইফাদের এই অবস্থা ইফাদের মা মিসেস আরিয়া একদমই মেনে নিতে পারছেন না। তাই একদিন তিনি ঠিক করলেন তিনি তানিশার বাসায় গিয়ে তার বাবার সাথে কথা বলবেন। তিনি সেদিন বিকালে তানিশার বাসায় গেলেন। আজাদ সাহেব ওনাকে একই কথা বললেন যেগুলো তিনি ইফাদকে বলেছিলেন। অনেক রিকুয়েস্ট করার পরও তিনি ওনাকে না করে দিলেন। মিসেস আরিয়া হতাশ হয়ে বাসায় ফিরে এলেন। আজাদ সাহেবের কথায় তিনি ভালো করেই বুঝতে পারলেন যে ওনার ডিভোর্সি হওয়ার জন্যই আজাদ সাহেব এই প্রস্তাবটা না করে দিয়েছেন।
#আকাশ_জুড়ে_তারার_মেলা
#শেষ_পর্ব
#লেখিকা_N_K_Orni

মিসেস আরিয়া ওখান থেকে ফিরে বাসায় চলে গেলেন। ইফাদ তখন অফিসে ছিল তাই সে জানত না যে তার মা তানিশার বাসায় গিয়েছিল। ইফাদ অফিস থেকে বাসায় ফিরে জানতে পারল যে মিসেস আরিয়া ওখানে গিয়েছিলেন। তখন ইফাদ ওনার রুমে গেল। মিসেস আরিয়া ইফাদকে ওনার রুমে দেখে উঠে বসে বললেন,

— তুই এখন? কিছু বলবি?

— মা তুমি কেন ওদের বাসায় গিয়েছিলে? আমি এইদিকটা সব সামলে নিতাম। তোমার যাওয়ার কোনো দরকার ছিল না।

— তুই এতো কষ্ট পাচ্ছিস, আমি না যে কি করে পারি? যতই হোক, এসব আমার জন্যই হচ্ছে।

— মোটেই না। এসব কিছুই তোমার জন্য হচ্ছে না। আর তুমি ওখানে যাবে না।

মিসেস আরিয়া হালকা হেসে বললেন,

— আচ্ছা ঠিক আছে যাব না। কিন্তু তুই কি করবি? আমি তোকে এভাবে কষ্ট পেতে দেখতে পারছি না।

— আমি একটা না একটা ব্যবস্থা ঠিক করব। তুমি এই বিষয় নিয়ে একটুও চিন্তা করো না। আর এসবের জন্য একদম নিজেকে দোষ দিবে না।

— আচ্ছা।

— মা আমি একটু আগে অফিস থেকে আসছি। এসেই তোমার কাছে এসেছি। আমি বরং রুমে গিয়ে জামাকাপড় বদলে নেই।

মিসেস আরিয়া মাথা নাড়িয়ে বললেন,

— আচ্ছা যা।

ইফাদ ওখান থেকে বেরিয়ে রুমে চলে এলো। সে রুমে এসে রাগ করে বিছানায় বসে পড়ল।

— সব ওই লোকটার জন্য হচ্ছে। দোষ করেছে ওই লোকটা আর শাস্তি পাচ্ছি আমরা। ওই লোকের জন্য আজকে মাকেও কথা শুনতে হলো। আই হেট হিম। আর তানিশার বাবাও অনেক খারাপ। আমার বাবার ভুলের শাস্তি আমাকে দিচ্ছে। আমার মাকে নিশ্চয়ই উনি অনেক কথা বলেছেন। আমি সেই দিনই বুঝেছিলাম উনি এতো সহজে ছেড়ে দেওয়ার মানুষ না।

রাতে মিসেস আরিয়া নিজের রুমে শুয়ে একমনে ভাবছেন,

— ইফাদ যতই বলুক আমি ভালো করেই জানি এসব আমার জন্যই হচ্ছে। আমি ডিভোর্সি বলেই আমার ছেলে তার ভালোবাসার মানুষকে পাচ্ছে না। আমি জীবনে কি এতো পাপ করেছিলাম যে আমাকে এতো শাস্তি পেতে হচ্ছে? আগে মানুষের কাছে আমি কথা শুনতাম। আর এখন আমার ছেকেও শুনতে হচ্ছে। আমি তো ইচ্ছা করে ডিভোর্সি হইনি।

এসব ভাবতে ভাবতে মিসেস আরিয়ার চোখ দিয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়ল। পরদিন সকালে ইফাদ ঘুম থেকে উঠে ওয়াশরুমে চলে গেল। সে ওখান থেকে বের হওয়ার একটু পর একজন এসে দরজায় নক করল। ইফাদ দরজা খুলতেই সামনে থাকা মেয়েটি বলে উঠল,

— স্যার ম্যাম প্রতিদিন এই সময়ে ব্রেকফাস্ট বানিয়ে সাজাতে থাকেন। কিন্তু আজকে তিনি এখনো ওঠেননি আর ওনার দরজাও বন্ধ। আমি সকাল থেকে বেশ কয়েকবার ওনার দরজায় নক করেছি। কিন্তু উনি দরজা খোলেননি।

মেয়েটির কথা শুনে ইফাদ ছুটে তার মায়ের রুমে গেল। সে তার মায়ের রুমের দরজায় কয়েকবার জোরে জোরে নক করল সাথে তাকে কয়েকবার ডাকও দিল। কিন্তু তিনি দরজা খুললেন না। ইফাদ আর উপায় না পেয়ে দরজা ভেঙে ফেলল। ইফাদ দরজা খুলে দেখল তার মা শুয়ে আছেন। ইফাদ ওনার কাছে গিয়ে ওনাকে বেশ কয়েকবার ডাকল কিন্তু উনি কোনো সাড়া দিলেন না। ফাহিম গিয়ে দ্রুত ডাক্তারকে কল দিল। সেই মেয়েটি মিসেস আরিয়াকে চেক করে বলল যে উনি মারা গেছেন। ইফাদ তার কথায় বিশ্বাস করল না।

এরপর ডাক্তার এসেও একি কথা বললেন। ইফাদ তার মায়ের মৃত্যুর কথা শুনে স্তব্ধ হয়ে গেল। তার মা ছাড়া তার আর কেউ নেই। এখন সেই মাও তাকে ছেড়ে চলে গেল। ফাহিম অনেক কষ্টে ইফাদকে সামলালো। দেখতে দেখতে তিন মাস চলে গেল। ইফাদ তার মায়ের মৃত্যুতে অনেক কষ্ট পেয়েছিল। তারপর থেকে সে আর তানিশার জন্য তার বাসার সামনে অপেক্ষা করেনি। হঠাৎ একদিন ইফাদের কাছে খবর এলো আজাদ সাহেবের অফিসে তাকে নিয়ে কিছু ঝামেলা হওয়ায় তিনি এসব নিতে না পেরে হার্ট অ্যাটাক করেছেন। আগে থেকেই তার হার্টে সমস্যা ছিল যার কারণে এতে তার অনেক সমস্যা হয়। ইফাদ এসব জানতে এই সুযোগটা কাজে লাগাল। সে মিসেস তাসনীমকে টাকা অফার করল সাথে আজাদ সাহেবের চিকিৎসার খরচও দিতে চাইল। মিসেস তাসনীমও তার কথায় রাজি হয়ে গেল আর তানিশাকে ওকে বিয়ে করার জন্য চাপ দিল।

বর্তমান

তানিশা ঘুম থেকে উঠে দেখল ইফাদ রুমে নেই। সে ওয়াশরুম চেক করল কিন্তু ইফাদকে সেখানেও পেল না। তারপর সে বারান্দায় গেলে ওখানে ইফাদকে দেখতে পেল। কাল রাতে বাইরে থেকে আসার পর ইফাদ ওখানেই ঘুমিয়ে পড়েছিল। ওকে ঘুমাতে দেখে তানিশা ওকে না ডেকেই চলে আসতে গেল। কিন্তু তখনই সে টেবিলের সাথে পায়ে হালকা ধাক্কা খেল। যার কারণে ইফাদ উঠে গেল। ইফাদ ওকে ওখানে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে বলে উঠল,

— তুমি এখানে?

তানিশা মাথা নিচু করে বলে উঠল,

— কালকের জন্য আমি সরি।

তানিশার কথা শুনে ইফাদ হালকা হেসে বলল,

— সমস্যা নেই। আমি এখন আর তোমার উপর রাগ করে নেই।

— জানি তারপর বললাম। কালকে আমি আপনাকে একটু বেশিই বলেছিলাম। আসলে আমার মাথার ঠিক না। আমার জায়গায় আপনি থাকলেও হয়তো এই কাজই করতেন। যার জন্য আপনার বাবা মা আপনার থেকে দূরে সরে গেছে তাকে নিশ্চয়ই আপনি ক্ষমা করবেন।

— কিন্তু আমি তো তোমাকে দোষই দিচ্ছি না, সেখানে ক্ষমা তো অনেক দূরের বিষয়।

তানিশা অবাক হয়ে বলে উঠল,

— মানে?

— মানে কিছুই না। আমিও আমার খুবই মূল্যবান কিছু হারিয়ে ফেলেছি। কিন্তু আমি এর জন্য তোমাকে দোষ দেইনি।

— কি হারিয়ে ফেলেছেন আপনি?

ইফাদ কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বলে উঠল,

— আমার মা। ওইদিন তোমাদের বাসা থেকে ফেরার পর রাতেই মা মারা যান।

ইফাদের কথা শুনে তানিশার বুকটা ধক করে উঠল। সে ভাবতেও পারেনি এমন কিছু একটা হয়েছে। ইফাদ একবার ওর দিকে তাকিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেল। তানিশা ওখানেই স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে রইল। সে মনে মনে ভাবতে লাগল,

— এজন্যই এ বাসায় আসার পর থেকে আমি ইফাদের মাকে দেখতে পাইনি। নিজেকে খুব অপরাধী লাগছে। ওনার মা আমাদের জন্যই মারা গেছেন আর ইফাদ আমাকে এর জন্য একটুও দোষ দিল না। আর আমি ওকে কালকে এতোগুলো কথা বললাম যেখানে বাবা শুধুমাত্র আমার উপর রাগ করে চলে গেছে বলে। আমি এখন ইফাদের সামনে গিয়ে দাঁড়াব কীভাবে? বাবার কথার কারণেই উনি মারা গেছেন।

একটু পরে তানিশা উঠে রুমে চলে গেল। সারাদিন তানিশা ইফাদের বলা ওই কথাগুলো মনে করতে লাগল। দুপুরে ফাহিম বাসায় এলে তানিশার তার থেকে ইফাদের মায়ের মৃত্যুর পুরো ঘটনাটা শুনল। বিকালে তানিশা তৈরি হয়ে তার বাসায় গেল। বাসার দরজায় কলিং বেল দিতেই তার মা এসে দরজা খুলে দিলেন। মিসেস তাসনীম ওকে দেখে অবাক হয়ে বলে উঠল,

— তুই এখন? ভেতরে আয়।

তানিশা ভেতরে ঢুকল। আজাদ সাহেব তানিশাকে দেখে অবাক হয়ে বলে উঠলেন,

— তুই এখানে? আমি জানতাম তুই ফিরে আসবি।

তানিশা কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বলে উঠল,

— না বাবা আমি পুরোপুরি ফিরে আসিনি।

আজাদ সাহেব এবার কড়া গলায় বলে উঠলেন,

— তাহলে তুমি কেন এসেছ? তুমি কি ভেবেছ আমাকে বললেই আমি মেনে নিব। তুমি যা ভাবছ তা কখনোই হবে না। আমি কখনোই ওই ছেলেকে মেনে নেব না।

— জানি মেনে নেবে না। আর কারণ হিসেবে বলবে যে ইফাদের বাবা তার মাকে ছেড়ে চলে গেছিল। তাই ইফাদও আমাকে ছেড়ে চলে যাবে। আচ্ছা ইফাদের বাবার বাবাও কি ওনার স্ত্রীকে ছেড়ে দিয়েছিলেন? তুমি কি এটা খোঁজ নিয়েছ? নাহলে ইফাদের বাবা ওনার মাকে ছেড়ে গিয়েছিলেন তাই উনিও ওনার স্ত্রীকে ছেড়ে দিয়েছেন। এটাই বুঝাচ্ছ তাই না? কিন্তু এসব কিছুই না। তাহলে যেখানে ওনার বাবা একসাথে থাকা সত্ত্বেও উনি ওনার স্ত্রীকে ছেড়ে গিয়েছিলেন, তুমি যার সাথে আমার বিয়ে দিবে তারও নিশ্চয়ই বাবা মা দুজনেই থাকবে সে আমাকে ছেড়ে দিবেনা তার কি নিশ্চয়তা আছে?

আজাদ সাহেব কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বলে উঠলেন,

— তুমি যতই এসব বলো আমি ইফাদকে মেনে নিব না। তাই ভালো হবে এসব বাদ দিয়ে চলে যাও।

— আমি তোমাকে ইফাদকে মেনে নেওয়ার কথা বলতে আসিনি। আমি শুধু তোমাকে তোমার চিন্তাভাবনা বলতে এসেছি। বাবা মায়ের দোষ কেন ছেলেদের উপর দিচ্ছ? তুমি কি জানো তোমার এই সব উল্টাপাল্টা চিন্তাভাবনার কারণে একজন মানুষের প্রাণ চলে গেছে। তুমি কীভাবে সেটা বুঝবে? তুমি তো শুধু নিজের চিন্তাভাবনাকেই সঠিক করো। অন্য কিছু তো তুমি ভাবোই না।

আজাদ সাহেব তানিশার দিকে ভ্রু কুচকে তাকালেন।

— কি অবাক হচ্ছো? ভাবছো তোমার জন্য আবার কার প্রাণ চলে গেল? ওই দিন তোমার সাথে কথা বলে যাওয়ার পর রাতেই ইফাদের মা মারা যান। এসব নিয়ে অতিরিক্ত চিন্তার ফলে তিনি মারা যান। এখন ওনার মৃত্যুর জন্য কে দায়ী? অবশ্যই তুমি আর সেই সাথে আমিও অপরাধী।

তানিশা দম ছেড়ে আবার বলে উঠল,

— সেদিন তুমি বলেছিলে না আমার জন্য তোমার বাড়ির দরজা বন্ধ। তাহলে তুমিও শুনে রাখ। যতদিন না তুমি তোমার চিন্তাভাবনা বদলাবে, মানুষকে তার স্বভাব চরিত্রের দিক দিয়ে বিবেচনা করবে, ততদিন আমিও তোমার সাথে যোগাযোগ করব না।

বলেই তানিশা এক মূহুর্তও অপেক্ষা না করে ওখান থেকে বেরিয়ে এলো। আজাদ সাহেব ওখানেই স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে রইলেন। তানিশা বাসা থেকে বেরিয়ে রাস্তা দিয়ে হাঁটতে শুরু করল। সে এখনো একটা ঘোরের মধ্যে আছে। সে বারবার নিজেকে দোষ দিচ্ছে। সে মনে করছে তার জন্যই ইফাদের মা মারা গেছেন। এসব ভাবতে ভাবতেই হঠাৎ একটা গাড়ি এসে তানিশাকে ধাক্কা দিয়ে দিল। সে কিছুটা দূরে ছিটকে গিয়ে পড়ল। আশেপাশের কিছু লোকজন তাকে হসপিটালে নিয়ে গেল। তার ফোনে সবার প্রথমে ইফাদেরই নাম্বার ছিল। তাই ওখানের একজন ইফাদকেই কল দিল। ইফাদ সব শুনে দ্রুত সেখানে এলো।

আজাদ সাহেব রুমে বসে একমনে চিন্তা করছেন। তখন ওখানে তিহান এসে বলল,

— বাবা আপু কিন্তু ভুল কিছু বলেনি। এখনো সময় আছে নিজের চিন্তাভাবনা বদলাও আর ওদের মেনে নেও।

বলেই তিহান ওনার রুম থেকে বেরিয়ে গেল। ওখান থেকে বেরিয়ে তিহান মনে মনে ভাবল,

— আপুর মনের অবস্থা ভালো নেই। আমার আপুকে একটা কল দেওয়া উচিত।

তিহান তানিশাকে কল দিলে ওর ফোন ইফাদ ধরল। সে তিহান সবটা খুলে বলল। সব শুনে তিহান দ্রুত তার মায়ের কাছে ছুটে গেল। আজাদ সাহেবও দূর থেকে সব শুনে ফেললেন। তিনি আর মেয়ের উপর রাগ করতে পারলেন না। ওনারা সবাই হসপিটালে গেলেন। ইফাদ তিহান আর তিনার সাথে কথা বলেও আজাদ সাহেবকে পাত্তা দিলেন না। আর মিসেস তাসনীম কেঁদেই যাচ্ছিলেন। ডাক্তার বের হওয়ার পর ইফাদ ওনাকে তানিশার কথা জিজ্ঞাসা করতেই উনি বললেন,

— রোগীর অবস্থা খুব একটা ভালো না। চব্বিশ ঘন্টা না গেলে কিছুই বলতে পারব না। আসলে রোগীর মাথায় লাগার ফলে ব্রেনে কিছুটা প্রভাব পড়েছে।

ডাক্তারের কথা শুনে ইফাদ ধপ করে বসে পড়ল। চব্বিশ ঘন্টা পর তানিশার জ্ঞান ফিরলেও সে খুব একটা সুস্থ হলো না। তানিশার সুস্থ হতে তিনমাস লেগে গেল। এই তিনমাসে ইফাদ তার খুবই যত্ন নিয়েছে, ছোট ছোট বিষয়েও সে অস্থির হয়ে উঠেছে। ইফাদের এই অবস্থা দেখে আজাদ সাহেব বেশ লজ্জিত হয়েছেন তাকে ভুল বোঝার জন্য। তাই তিনি ইফাদের কাছ থেকে পূর্বের ব্যবহারের জন্য ক্ষমাও চেয়েছেন।

তানিশা এখন প্রায় সুস্থ। সে এখন ইফাদের বাসায়ই আছে। তবে ডাক্তার বলেছেন কিছুদিন রেস্টে থাকতে। তানিশা রুমে বসে আছে আর ইফাদ তাকে খাইয়ে দিচ্ছে। ইফাদ তানিশার মুখের সামনে চামচ তুলে ধরে বলে উঠল,

— এখন তো তোমার বাবাও আমাকে মেনে নিয়েছেন। তাহলে তুমি কি আমাকে মেনে নিয়েছ?

তানিশা মুখ বেঁকিয়ে বলল,

— এতো সহজ না। আপনি আমাকে ব্লাক*মেইল করে বিয়ে করেছিলেন। আমি আপনাকে এতো সহজে মেনে নিচ্ছি না।

— এটা ঠিক না।

— এসব বলে লাভ নেই।

ইফাদ এবার খাবারের প্লেটটা পাশে রেখে ওকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরল। তানিশা কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বলে উঠল,

— আপনি আমাকে কখনো ছেড়ে যাবেন না তো ইফাদ?

তানিশার কথা শুনে ইফাদ ওকে ছেড়ে দিল। তারপর ওর কপালে চুমু দিয়ে বলে উঠল,

— কখনোই না। আমি আমার জীবনের শেষ মূহুর্ত পর্যন্ত তোমার সাথে কাটাতে চাই।

বলেই আবার ওকে জড়িয়ে ধরল। এবার তানিশাও ওকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরল।

সমাপ্ত

। )

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here