আবছায়া
writer::প্রিয়া
৬
থাপ্পড়ের শব্দ খুব জোড়েই হয়েছে ক্যাম্পাসে থাকা সবাই অবাক হয়ে থাকিয়ে আছে।
আইজানকে থাপ্পড় মারে কে এই মেয়ে।আইজান মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে।
ইনায়া রাগে কাঁপছে।ওর বান্ধবী অরিত্রি ওকে টেনে নিয়ে বেড়িয়ে গেলো।
আইজানের সাথের ছেলেরা বললো।
-ভাই মেয়েটার হাত ভেঙ্গে দেই।
‘তোর সাহস কম না তুই ইনয়ার হাত ভেঙ্গে দিবি।
-ভাই ভুল হয়ে গেছে মেয়েটা আপনাকে থাপ্পড় মারলো।
‘মেয়েটা না ও হচ্ছে তোদের ভাবি।
-সত্যি উনি ভাবি ভুল হয়ে গেছে ভাই মাফ করে দিবেন।
পরেরদিন কলেজে যাইনি ইনায়া অরিত্রি নিষেধ করেছে।
বাসায় বসে বসে বোরিং হচ্ছে তাই ছাদে গেলো ফুল গাছে পানি দিচ্ছিলো।
হঠাৎ নিচে চোখ যেতেই দেখে আইজান দাঁড়িয়ে।
আইজান কে দেখে ইনায়া ভয় পেয়ে যায়।
বাড়ি পর্যন্ত চলে এসেছে না জানি কি বিপদ হয়।
ছুটে রুমে চলে গেলো ইনায়া ভয়ে ওর কান্না পাচ্ছে,অরিত্রি কে ফোন দিলো।
-দোস্ত বাঁচা আমাকে।
‘কি হয়েছে তোর।
-দোস্ত আইজান আমার বাসার নিচে।
‘কি বলিস ভগবান কি বিপদ আসলো।
-কি করবো আমি।
‘ভয় পাসনা কাল গিয়ে আইজান কে সরি বলে দেখবি যদি কাজ হয়।
-কখনোই না ওই গুন্ডাকে আমি সরি বলবো না।
‘তোকে আমি মেরে তক্তা বানিয়ে দিবো কি দরকার থাপ্পড় মারার।
-উফফ মাথা ঠিক ছিলো না।
‘এখন মাথা ঠিক তাই সরি বলবি
-উফফ।
পরেরদিন কলেজ গেইটে দাঁড়িয়ে আছে ইনায়া অরিত্রির অপেক্ষা করছে।
আশেপাশের সবাই যেনো এলিয়েন দেখার মতো তাকিয়ে আছে।
কেউ কেউ হাসছে,কেউ কেউ ফিসফিস করছে। লজ্জায় জড়োসড়ো হয়ে একপাশে দাঁড়িয়ে আছে ইনায়া।
কয়েকটা ছেলে ওর গাঁ ঘেঁষে পাশ দিয়ে গিয়ে বলছে।
-ছোট ক্লাসের ভাইয়ের সাথে প্রেম করতে মজা লাগে আমাদের চান্স দিতে পারোনা।
কি বলছে এই ছেলেগুলো আজব।
এরমধ্যে অরিত্রি চলে আসে।
দুজনেই কলেজে প্রবেশ করলো।কলেজে এসে যেনো মস্ত ভুল হয়ে গেছে যার যা মুখে আসছে তাই বলছে।
-দেখছিস অরিত্রি তুই বলেছিলি এই গুন্ডার কাছে মাফ চাওয়ার জন্য এবার দেখলি তো কি হলো।
‘শেষ পর্যন্ত ও তোকে প্রেমিকা বানিয়ে দিলো।
-চল আজ আর ক্লাস করবো না বাড়ি যাবো।
মাঠের কাছে আসতেই দেখতেই পেলো আইজান কয়েকটা ছেলেকে নিয়ে মাঠে বসে আছে।
দ্রুত সেখান থেকে চলে যেতে চাইলে একটা ছেলেকে আইজান কে ডাক দিলো।
-ভাই ওই দেখেন ভাবি।
আইজান চশমা খুলে ইনায়ার দিকে তাকায়।
ইনায়া দ্রুত হাটছে আইজান পিছন থেকে।
-সুইটহার্ট এতো রাগ ভালো না।সামান্য একটা ভুলের জন্য এতো রাগ করবে।
ইনায়া বুঝতে পারলো না আইজান কি বলছে আবার আইজান বললো।
-মাত্র ২০মিনিট ওয়াটিং পেয়ে এই অবস্থা থাপ্পড় পর্যন্ত মারলে প্লিজ এবার তো মাফ করো।
মাঠের মধ্যে থাকা সবাই আইজানের কথা শুনে হাসছে।
ইনায়া এবার বেশ বুঝতে পারলো আইজান ওকে অপদস্থ করার জন্য এসব করছে।
কিছু বলার জন্য পিছন ফিরে তাকাতেই দেখে আইজান একদম ওর কাছে চলে আসছে।
-কেনো করছেন এসব।
আইজান ওর কোনো কথাই শুনলো না।
আইজান ইনায়ার হাত মুষ্টিবদ্ধ করলো ইনায়া ছুটানোর জন্য ঝটপট করছে।
আইজান বেশ জোড়েই ধরেছে ইনায়া ছুটাতে পারছে না।
-চুপচাপ হাত ধরে গেইটের বাহির পর্যন্ত যাবে।না হলে খুব খারাপও হয়ে যাবে।
ইনায়া আবার ও হাত ছুটাতে চাইলে খুব ব্যথা পায় হাতে।
গেইটের বাহিরে আসতেই ইনায়ার হাত ছেড়ে দেয় আইজান।
-ক্লাস না করে চলে যাচ্ছো কেনো।
‘আপনার যন্ত্রণায় আমার পড়ালেখা শেষ হয়ে গেলো।
-শেষ হবে কেনো বরং ভালো হবে আমার জি এফের অভিনয় করে যাও।
এরপর আর ১৫দিন কলেজে যায়নি ইনায়া।
বাড়িতে ছাদে উঠলেই আইজানকে দেখতে পায়।তাই ছাদে উঠা ছেড়ে দিয়েছে।
সকালে আনায়া রুমে আসতে ইনায়ার ধ্যান ভাঙ্গে।
-আপু আইজান ভাইয়া এসেছেন।
‘আজ এতো সকালে কেনো।
-তোকে নিয়ে শপিং করতে যাবেন।
‘বাবা,ভাইয়ারা কোথায়।
-ওরা পারমিশন দিয়েছে তুই রেডি হয়ে আয়।
ইনায়া ড্রেস পরে বাইরে আসলো।ড্রইংরুমে বসে চা খাচ্ছে আইজান পাশে আর কেউ নেই।
-তুমি আসবে বললে না তো
‘ভাবলাম এসে সারপ্রাইজ দেই।
-তুমি শপিং করে নিতে আমার যাওয়ার দরকার কি।
‘আমার প্রথম বিয়ে এইটা বউয়ের পছন্দ মতো সব কেনাকাটা করবো।
-প্রথম বিয়ে মানে আরো করার ইচ্ছে আছে না কি।
‘কি যে বলো একজন কে পেতে কতো কষ্ট করতে হচ্ছে আর দরকার নেই বাবা।
-আচ্ছা তাহলে চলুন এবার।
:আনায়া কে সাথে নিয়ে চলো বাচ্চা মেয়ে ওর ও হয়তো বোনের বিয়ের শপিং করার ইচ্ছে করতে পারে।
-দাঁড়াও আনু কে ডাকছি।
আনু আনু।
‘হ্যাঁ আপু বল।
-চল না আমাদের সাথে।
‘আমি।
-হ্যাঁ চল চল প্লিজ।
:৫ মিনিট আমি আসছি।
মা-ইনায়া তুই যাবি যা আনায়া যাবেনা।
-ও গেলে কি হবে মা।
‘এতোকিছু বলতে পারবো না আনায়া যাবে না ব্যস।
আনায়া মন খারাপ করে রুমে চলে গেলো।
আইজান বেড়িয়ে গেলো সাথে ইনায়া ও।
চলবে