#আবেগময়_সম্পর্ক
#১৩তম_পর্ব
#লেখিনীতে_মৃদু_সুপ্রিয়া
মেহুলের মাথায় বন্দুক তাক করে একজন লোক। তার পাশে আরো একজন ছিল। মেহুল লোকটিকে বলে, “কেন করছেন এরকম? কি চান আপনারা?”
পাশের লোকটি বলল, “বেশি কথা না চুপচাপ আমাদের সাথে চল। আমাদের কথামতো না চললে এই বন্দুক থেকে গু*লি বের হয়ে যাবে। সেটা মনে রাখিস।”
মেহুল আর কিছু বলার সুযোগ পেল না। লোকগুলো তাকে নিজেদের সাথে নিয়ে যেতে লাগল। মেহুলকে একটি অন্ধকার ঘরে ঢুকিয়ে দিলো তারা। মেহুল কিছু বুঝে ওঠার আগেই দরজা বন্ধ করে দিয়ে চলে গেল। মেহুল নিজের ফোন বের করল। দূর্ভাগ্যবশত ফোনে চার্জ ছিল না। মেহুলের এখন হা হুতাশ করা ছাড়া আর কোন উপায় ছিল না। এমন সময় মেহুল একটি বাচ্চার কান্নার আওয়াজ শুনতে পারল। মেহুল অন্ধকারে কান্নার আওয়াজ অনুসরণ করেই এগিয়ে যেতে লাগল। বাচ্চাটির কাছে গিয়ে বুঝল এটা রায়ানের গলা। মেহুল রায়ানকে বলে, “ভয় পেও না রায়ান। তোমার নতুন মা এসে গেছে। আমি তোমাকে এখান থেকে রক্ষা করে নিয়ে যাবো।”
মেহুলের গলার স্বর কানে যেতেই রায়ানের কান্না থেমে যায়। রায়ান ভরসা পায় মেহুলের উপস্থিতিতে। রায়ান বলে, “নতুন মা আমাকে এখান থেকে নিয়ে চলো। এখানকার লোকরা খুব পচা। আমাকে অনেক ভয় দেখিয়েছে।”
মেহুলের মাথায় একটা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছিল। তাই সে রায়ানকে প্রশ্নটা করেই ফেলে, “আচ্ছা রায়ান তুমি এখানে এলে কিভাবে? মানে কে এখানে তোমায় নিয়ে এসেছে?”
রায়ান উত্তরে বলল, “আমার স্কুল যখন ছুটি হয় তখন আমি গেটেই দাঁড়িয়ে ছিলাম। তখন একটা আঙ্কেল এসে আমায় বলে, ‘আমি তোমার বাবার বন্ধু। তোমাকে নিয়ে যেতে এসেছি।’ আমি তখন লোকটার কথায় বিশ্বাস করে তার সাথে চলে আসি। কিন্তু ঐ পচা লোকটা আমাকে এখানে এনে বন্দি করে রাখে।”
রায়ানের কথা শুনে মেহুল স্পষ্টভাবে বুঝতে পারে কিভাবে তাকে অপহরণ করা হয়েছে। মেহুল বলে, “এটা তোমার একদম করা উচিৎ হয়নি রায়ান। এভাবে অচেনা-অজানা একজন লোককে বিশ্বাস করা উচিৎ নয়। তোমার এই বিষয়ে সাবধান থাকা দরকার ছিল।”
রায়ানও নিজের ভুলটা বুঝতে পেরে বলে, “তুমি ঠিক বলেছ নতুন মা৷ এভাবে অচেনা মানুষকে বিশ্বাস করা আমার উচিৎ হয়নি। কিন্তু এখন কি করবো আমরা? আমার এখানে খুব ভয় লাগছে। আমাকে এখান থেকে নিয়ে চলো না।”
মেহুল যদিও নিজেই ভেবে পাচ্ছিল না কি করবে। কি ভাবে এই স্থান থেকে মুক্তি পাবে। কিন্তু সে রায়ানকে এগুলো বলতে চাইছিল না। কারণ রায়ান ছোট মানুষ। এমনিতেই অনেক ভয় পেয়ে আছে। তাই মেহুল বলে, “কোন চিন্তা নেই। আমরা এখান থেকে বেরোতে পারব। শুধু আমার উপর একটু ভরসা রাখো।”
রায়ান একটু শান্ত হয়। মেহুল ভাবতে থাকে কিভাবে এই সমস্যা থেকে মুক্তি লাভ করবে তারা।
❤️
অন্তর চৌধুরী ঘড়ির দিকে তাকিয়ে বলে, “রাত ১২ টা বেজে গেছে। মেহুল রাত ৮ টায় বেরিয়ে গেছে। এখনো তো তার আসার কোন নামগন্ধ পাচ্ছি না। সে কি আদৌ আসবে? নাকি আমাকে মিথ্যা আশা দিয়ে চলে গেছে?”
অন্তর চৌধুরীর এমন কথা বাড়ির লোকের চিন্তা আরো বাড়িয়ে দেয়। আমিনা আক্তার বলেন, “এত রাত অব্দি বাড়ির বউ বাড়ির বাইরে। আমার এখন খুব ভয় করছে। মেয়েটার কোন বিপদ-আপদ হলো নাতো?”
আকাশেরও খুব দুশ্চিন্তা হচ্ছিল। আকাশ বলে, “আমি মেহুলকে অনেকবার কল করেছি। কিন্তু ওর ফোন বন্ধ দেখাচ্ছে। এখন কি করা যায়?”
আশিক বলে, “এভাবে হাত গুটিয়ে বসে থেকে অন্তত কোন লাভ নেই। আমাদের কিছু একটা করতে হবে। যা করার খুব তাড়াতাড়ি করতে হবে। যাতে বড় কোন বিপদ হয়ে যাওয়ার আগেই কোন স্টেপ নিতে পারি। ভাবি তো আমাদের কাউকে সাথে না নিয়ে একাই বেরিয়ে গেল৷ আমাদের কোন কথাও শুনল না। এখন দেখি আমি যাই ভাবিকে খুঁজতে। দেখি খুঁজে পাই কিনা।”
আশিক যেতে চাইলে আকাশও বলে, “চল আমিও যাব তোর সাথে।”
অন্তর চৌধুরী তাদের মাঝ খানে বলে,“একদম না। তুমি এই ভুল করার চেষ্টা করবে না। তুমি আমার সন্দেহের তালিকায় সবার আগে রয়েছ। তোমাকে এভাবে আমি যেতে দিতে পারি না। কে বলতে পারে, এসব তোমাদের সাজানো নাটক নয়? তোমরাই হয়তো এসব নাটক সাজিয়েছ পালিয়ে যাওয়ার জন্য।”
আকাশ রাগান্বিত হয় এবং বলে, “আমার স্ত্রী এত রাতে নিখোঁজ আর আমি হাত পা গুটিয়ে বসে থাকব? তুমি আমাকে আর বাধা দিতে পারো না। আমি তোমার কোন কথা শুনব না।”
কথাটা বলে অন্তর চৌধুরীকে ধাক্কা দিয়ে চলে যায় আকাশ। অন্তর সেদিকে তাকিয়ে বলতে থাকে, “অনেক বড় ভুল করলে তুমি আকাশ খান। এর পরিণাম তোমাকে ভোগ করতেই হবে।”
আকাশ ও আশিক একসাথে বেরিয়ে আসে বাড়ি থেকে। আশেপাশে বিভিন্ন যায়গায় তারা মেহুলের খোঁজ করতে থাকে কিন্তু মেহুলের কোন খোঁজ পায়না। আশিক নিজের চেনা পরিচিত এক দোকানদারকে মেহুলের ছবি দেখিয়ে তার কথা জিজ্ঞাসা করলে লোকটি বলে, “আমি তো এই মহিলাকে দেখেছি। আমাদের দুলালের ট্যাক্সিতে করে কোথাও যেন গিয়েছিল। যাওয়ার সময় খুব চিন্তিত লাগছিল। মনে হয় খুব তাড়ায় ছিল।”
আকাশ বলে, “কে এই দুলাল? আমাকে তার সন্ধান দিন।”
“দুলাল তো আমাদের এলাকারই ছেলে। ঐ তো ঐ যে ট্যাক্সিটা দেখতে পাচ্ছেন ঐটাই দুলালের।”
আকাশ আর আশিক দেরি করল না। দ্রুত দুলালের ট্যাক্সির সামনে চলে গেলো। দুলালকে মেহুলের ছবি দেখিয়ে বলল, “এই মহিলাকে কোথায় নামিয়ে এসেছ তুমি? সত্যি করে বল।”
দুলাল প্রাথমিক ভাবে খুব ভয় পেয়ে যায়। তাই আমতা আমতা করে বলে, “আমি চিনি না এনাকে।”
আশিক তখন রেগে দুলালকে একটা ঘু*ষি দিয়ে বলে, “একদম মিথ্যা কথা বলবে না। আমরা সব জানি। ভালোয় ভালোয় সত্য কথা বলো নাহলে তোমাকে আমরা পুলিশে দেবো।”
দুলাল এবার অনেক বেশি ভয় পেয়ে যায়। তাই সে বলে, “আপনারা আমার ট্যাক্সিতে উঠুন। আমি আপনাদের সেই স্থানে পৌঁছে দিচ্ছি যেখানে এই ম্যাড্যামকে নামিয়ে দিয়ে এসেছি।”
দুলালের কথা শুনে আকাশ ও আশিক তার ট্যাক্সিতে উঠে পড়ে। দুলাল ট্যাক্সি চালানো শুরু করে। আকাশ মনে মনে বলে, “তুমি আর কোন চিন্তা করো না মেহুল। আমি আসছি তোমাকে বাঁচানোর জন্য।”
অন্যদিকে মেহুল রায়ানকে নিজের কোলে নিয়ে বসে আছে। সে শুধু একটা সুযোগ খুঁজতে থাকে কিভাবে এই স্থান থেকে বেরোনো যায়। একটু পর সুযোগ পেয়ে যায়। একজন লোক খাবার নিয়ে ভেতরে ঢোকে। যেই না তাদের সামনে খাবার রাখে সেই সময় মেহুল লোকটির যায়গামত লাথি মেরে রায়ানকে কোলে নিয়ে দেয় এক ছুট। লোকটি মাটিতে লুটিয়ে চিৎকার করে তার সহযোগীকে ডাকে। তার সহযোগী মেহুল ও রায়ানের পেছনে তাড়া করে। মেহুল প্রাণপনে ছুটতে থাকে। কেননা তার উদ্দ্যেশ্য যে করেই হোক এখান থেকে পালিয়ে যাওয়া।
মেহুল ছুটতে ছুটতে হঠাৎ একটা যায়গায় পা আটকে পড়ে যায়। রায়ানকে শক্ত করে আগলে রাখে মেহুল। এমন সময় পেছন থেকে লোকটা এসে বলে, “কি ভেবেছিলি খুব সহজেই পালিয়ে যেতে পারবি?”
মেহুল হাত মুঠো করে হাতে ধুলা নেয়। তারপর সেগুলো লোকটির চোখে ছু*ড়ে দিয়ে আবার উঠে দৌড় দেয়। মেহুল রায়ানকে নিয়ে সামনে এগিয়ে যাচ্ছিল এমন সময় কেউ একজন এসে তার সামনে দাঁড়ায়। রায়ানের দিকে বন্দুক তাক করে বলে, “বাচ্চাটাকে আমার কাছে দিয়ে দাও। নাহলে কিন্তু আমি গু*লি চালিয়ে দেব।”
মেহুল কি করবে বুঝতে পারে না। আর কোন উপায় খুঁজে না পেয়ে রায়ানকে লোকটির কোলে দিয়ে দেয়। চোখের নিমেষেই লোকটি একটি গাড়িতে করে রায়ানকে নিয়ে গায়েব হয়ে যায়। মেহুল গাড়িটির পেছনে দৌড়ানোর বৃথা চেষ্টা করে।
#চলবে#আবেগময়_সম্পর্ক
#১৪তম_পর্ব
#লেখিনীতে_মৃদু_সুপ্রিয়া
মেহুল হতাশ হয়ে যায়। এতকিছু করেও সে রায়ানকে রক্ষা করতে পারল না৷ হতাশ হয়ে রাস্তার মধ্যেই বসে কাদতে থাকে সে। এমন সময় আকাশ ও আশিকের আগমন ঘটে সেখানে৷ তারা ট্যাক্সি চালকের সাহায্যে এখানে আসতে পেরেছে।
মেহুলকে রাস্তা থেকে টেনে তোলে আকাশ। মেহুল আবেগ প্রবণ হয়ে আকাশকে জড়িয়ে ধরে। আকাশকে জড়িয়ে ধরা অবস্থাতেই বলে, “আমি পারলাম না রায়ানকে বাঁচাতে। ঐ শয়তান গুলো রায়ানকে নিয়ে গেল।”
আকাশ মেহুলকে ভরসা দেয়। মেহুলকে আশ্বাস দিয়ে বলে, “তুমি একদম চিন্তা করো না। আমরা রায়ানকে ফিরিয়ে আনবোই। এখন বাড়ি চলো।”
আকাশের কথায় মেহুল ভরসা পায়৷ তাই সে চলে আসে বাড়িতে। আকাশ ও মেহুলকে একা বাড়িতে ফিরতে দেখেই অন্তর চৌধুরী তাদের সামনে এসে বলে, “একা এসেছ কেন তোমরা? রায়ান কোথায়? আমার ভাগ্নেকে তার মানে ফিরিয়ে আনতে পারো নি তোমরা। আমি আগেই জানতাম তোমরা আমায় মিথ্যা আশ্বাস দিচ্ছ। ঠিক আছে, এবার আমি অন্য উপায়ে সব কিছু সামনে আনব। এক্ষুনি আমি পুলিশকে ফোন করছি৷ তারপর তারাই যা করার করবে।”
মেহুল বলে, “বিশ্বাস করুন, আমি রায়ানকে প্রায় উদ্ধার করেই আনছিলাম। কিন্তু মাঝপথে কেউ একজন আমার মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে ওকে নিয়ে চলে গেল।”
“এসব নাটক অন্য কোথাও গিয়ে করো। আমার সামনে এসব নাটক করে কোন লাভ নেই। আমি খুব ভালো করেই জানি আকাশ রয়েছে এসবের পেছনে। এখন তো এর প্রমাণও আমার হাতে আছে।”
আশিক বলে, “কি প্রমাণ আছে তোমার হাতে বলো? আমাদেরও দেখার সুযোগ করে দেও সেই প্রমাণ।”
অন্তর চৌধুরী বলে, “সেই প্রমাণ নাহয় আমি পুলিশকেই দেবো। তারপর তারা যা করার করবে।”
অন্তর চৌধুরী পুলিশকে ফোন করে। আশিক আকাশের কাছে এসে বলে, “ভাইয়া আমার মনে হয় এই অন্তর চৌধুরী বেশ ভালোই ষড়যন্ত্র করেছে আমাদের বিরুদ্ধে। তুমি এখানে থাকলে সেটা তোমার নিরাপত্তার জন্য হুমকি হবে। তার থেকে ভালো তুমি কিছু দিন আত্মগোপনে থাকো।এরমধ্যে আমরা ঠিকই রায়ানকে খুঁজে বের করব।”
আশিকের কথায় মোটেও রাজি হয়না আকাশ। সে আপত্তি জানিয়ে বলে, “মোটেও আমি এমন করবো না। আমি কোন অপরাধ করেছি নাকি যে এভাবে পালিয়ে বেড়াব? আমার কোন ভয় নেই৷”
মেহুল তাদের পাশে আসে। তাদের সব কথোপকথন শুনেছে মেহুল। সেও আকাশের সাথে একমত জানিয়ে বলে, “এখন যদি আকাশ পালিয়ে যায় তাহলে পুলিশ ওকেই অপরাধী ভাববে৷ তাই এমন কিছু করার দরকার নেই। আমি জানি, যারা ন্যায়ের পথে,সত্যের পথে থাকে তাদের ক্ষতি করা এত সহজ নয়। আর আকাশ কোন অন্যায় তো করেনি। তাই ঐ অন্তর চৌধুরী যতোই চেষ্টা করুক কোন লাভ হবে না। জয় সব সময় সত্য এরই হয়।”
আশিক আর কিছু বলতে পারল না। অন্তর চৌধুরী কল করে পুলিশকে ডাকল। পুলিশ বাড়িতে আসামাত্রই অন্তর চৌধুরী তাদের উদ্দ্যেশ্য করে বলল, “স্যার, এই লোকটাই আমার ভাগ্নেকে কিডন্যাপ করেছে। ওকে এরেস্ট করে বেধম ধোলাই দিন। দেখবেন সব সত্য ও সামনে বলে দেবে বাধ্য হয়ে।”
মেহুল চিৎকার করে বলে, “আপনারা কোন প্রমাণ ছাড়া এভাবে আমার স্বামীকে গ্রেফতার করতে পারেন না।”
অন্তর চৌধুরী বলে, “আমার কাছে আছে প্রমাণ। আমি যথা সময়ে পুলিশকে দেব সেগুলো।”
অন্তর চৌধুরী একজন বড় বিজনেস ম্যান। তাই তার অনেক প্রভাব রয়েছে। তাছাড়া পুলিশের উপর মহল থেকে আদেশ আছে। তাই পুলিশ সদস্যরা আকাশের হাতে হাতকড়া পরায়। গ্রেফতার করে নেয় তাকে। এরপর তাকে নিয়ে যেতে চায়। আমিনা আক্তার পুলিশের কাছে অনুরোধ করে বলে, “দয়া করে আমার ছেলেটাকে এভাবে নিয়ে যাবেন না। আমার ছেলে কোন অন্যায় করে নি। ঐ রায়ান ওর নিজের ছেলে না হলেও ওকে এতদিন নিজের সন্তানের মতোই মানুষ করেছে। ওর কোন ক্ষতি করতে পারে না আকাশ।”
পুলিশ কারো কোন কথা শুনল না। আকাশকে গ্রেফতার করে নিয়ে গেল। মেহুল শেষবারের মতো আকাশের সামনে এসে বলল, “তুমি কোন চিন্তা করো না। আমি তোমাকে উদ্ধার করে আনবোই। এটা আমার প্রতিজ্ঞা। যা অবশ্যই পূরণ করব।”
আকাশকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়ার পর আশিক মেহুলের সামনে এসে বলে, “এখন আমাদের কি করা উচিৎ ভাবি?”
মেহুল বলে, “আমার তো ঐ অন্তর চৌধুরীর উপরেই সন্দেহ হয়। মনে হচ্ছে সেই করাচ্ছে এসব।”
আশিক বলে, “যদি এমন হয়ে থাকে তাহলে তার সত্য জানতে আমাদের বেশি সময় লাগবে না। কারণ তার উপর গোয়েন্দাগিরি করার জন্য আমি অলরেডি একজনকে পাঠিয়েছি।”
মেহুল বুঝতে পারে না কিছুই। না বুঝতে পেরে আশিককে প্রশ্ন করে, “গোয়েন্দা মানে তুমি কি বলতে চাইছ?”
“সময় হলে তোমরা সবাই সব জানতে পারবে। এখন শুধু এটুকুই জেনে রেখো। আমি একটা ব্যবস্থা করে রেখেছি।”
❤️
অন্তর চৌধুরী তার এক উর্ধতন পুলিশ কর্মকর্তা বন্ধুর একাউন্টে অনেক টাকা পাঠিয়ে দেয়। তারপর তাকে ফোন করে বলে, “তোকে অনেক ধন্যবাদ আমাকে এত সাহায্য করার জন্য। এখন শুধু দেখিস যাতে ঐ আকাশ সহজে জেল থেকে বেরোতে না পারে।”
অন্তর চৌধুরীর সেই বন্ধু বলে, “ধন্যবাদ দেওয়ার কিছু নেই। টাকার জন্য আমি সবকিছু করতে পারি। তোর কাজ হয়ে যাবে।”
অন্তর চৌধুরী ফোন কে*টে দিয়ে বলে, “এই বার আমার প্ল্যান একদম সঠিক কাজে লেগেছে। আমাকে তো এতকিছু করতেই হতো না যদি না বাবা তার অর্ধেক সম্পত্তি নিজের মেয়ের স্বামী আর নাতির নামে লিখে দিয়ে না যেত। আমি তো প্রথমে অন্তরাকে নিজের পথের কাঁটা ভেবেছিলাম। তাই তাকে উপড়েও ফেলেছিলাম। তখন ভেবেছিলাম সব হয়তো ঠিক হয়ে যাবে। কারণ আমি ভেবেছিলাম বাবা হয়তো তার অর্ধেক সম্পত্তি অন্তরার নামে লিখে দিয়েছে। কিন্তু পরে জানতে পারলাম অন্তরার নামে না তার স্বামী ও সন্তানের নামে লিখে দিয়েছে। তখন থেকে নানাভাবে চেষ্টা করেছি সম্পত্তি হাতানোর কিন্তু সফল হইনি। অবশেষে ঐ মেহুলের সাথে আকাশের বিয়ে ঠিক করলাম। ভাবলাম ওকে ভয় দেখিয়ে ওর দ্বারাই নিজের স্বার্থ হাসিল করব। কিন্তু সেটা তো হলো না। উলটো ঐ মেহুল আমার বিপক্ষেই চলে গেল। এখন আমি একদম সঠিক স্টেপ নিয়েছি। এবার দেখি তোমরা কি করে আমার বিরুদ্ধে লড়াই করো।”
অন্তর চৌধুরী হা হা করে হাসতে থাকে। একটু দূরে দাঁড়িয়ে কেউ তার সম্পূর্ণ কথা রেকর্ড করে নেয়। তারপর যে কথাগুলো রেকর্ড করেছিল সে বলে, “তোমাকে ফাসানোর যথেষ্ট উপায় আমার হাতে এখন এসে গেছে অন্তর চৌধুরী। তুমি অনেক কিছুই করেছ। এখন দেখ আমি কি করি।”
কথাগুলো বলে সে দূরে সরে আসে। অন্তর চৌধুরী বুঝতে পারে কেউ তার উপর নজর রাখছে। তার কথাগুলো রেকর্ড করতেও সে দেখে নেয়। তাই সে দৌড়ে রেকর্ড কারীকে ফলো করতে থাকে। রেকর্ড কারী কালো হুডি ও মাস্ক পড়ে ছিল। অন্তর চৌধুরী একপর্যায়ে তাকে ধরে ফেলে। এরপর তার মুখের মাস্ক সরিয়ে দেয়। মাস্ক সরিয়ে মেহুলের বোন তথা নিজের গার্লফ্রেন্ড পিহুকে দেখে হতবাক হয়ে যায়। পিহুকে উদ্দ্যেশ্যে করে বলে, “তোমার এত সাহস আমার সাথে থেকে আমার বিরুদ্ধেই ষড়যন্ত্র করো। এখন দেখ আমি তোমার কি অবস্থা করি। তোমার এমন হাল করব যে ভবিষ্যতে কেউ আমার সাথে লাগতে আসার আগে দশবার ভাববে।”
কথাটা বলেই পিহুকে টানতে টানতে একটি নির্জন স্থানে নিয়ে যায় অন্তর। তারপর পিহুকে রে*প করে এরপর একের পর এক ছু*রি চালায় পিহুর বুকে। একপর্যায়ে পিহু নিস্তেজ হয়ে যায়।
#চলবে