আমার একলা আকাশ পর্ব-০৮ এবং শেষ পর্ব

0
867

#আমার_একলা_আকাশ🍁🍁
#সুমাইয়া_সুলতানা_সুমী(writer)
#৮_পর্ব(শেষ পর্ব)
,
বিছানার উপর বসে থাকতে থাকতে ওভাবেই ঘুমিয়ে পড়ে মেহরাব বিকেলের দিকে মেঘের ফোন এ ঘুম ভাঙ্গে ওর।

কিরে শাওয়ার নেওয়ার কথা বলে গেলি তো গেলি আসার নামে খোঁজ নেই যলদি আয়, আকাশ এসেছে এসে ডাক্তার আজিজ এর উপর চেঁচামেচি করছে। (মেঘ)

আমি এক্ষুনি আসছি,, তুই আকাশ এর উপর নজর রাখ দেখবি কোথাও চলে না যায়।

এই বলে মেহরাব ফোনটা রেখে তারাতারি করে রেডি হয়ে বেরিয়ে পড়ে।

,,,,,,হসপিটালে,,,,,

কিরে আছে??

হুম আছে,, মেঘ আর মেহরাব কথা বলছিলো তখনি আকাশ আজিজ এর কেবিন থেকে বেরিয়ে সোজা গাড়িতে গিয়ে বসল।মেঘ আর মেহরাব ও যলদি করে মেঘের বাইক গিয়ে বসে আকাশ এর গাড়িকে ফলো করতে লাগল।

আকাশ গাড়ি নিয়ে বড় একটা বাড়ির সামনে এসে থামল,, তারপর গাড়ি থেকে নেমে বাড়ির ভিতর চলে গেলো,, মেঘ আর মেহরাব ও বাইক দাঁড় করিয়ে ওরাও আকাশ এর পিছু পিছু বাড়ির ভিতর চলে গেলো।

কি হয়েছে বাবা এতো যলদি আসতে বললে কেনো??(আকাশ)

সামনে তাকিয়ে দাখ(আক্কাস)

আক্কাস এর কথা মতো আকাশ সামনে তাকিয়ে দেখলো মাহিকে একটা চেয়ারের সাথে বেঁধে রাখা হয়েছে আর মাহি অঙ্গান হয়ে আছে।

আরে ব্যাস শিকার তো দেখছি একদম হাতে মুঠোও তা তুমি ওকে কোথায় পেলে??(আকাশ)

রাস্তায়।

মেহরাব মাহি এখানে কেনো?? ও না তোর কাছে ছিলো তাহলে ও এখানে আসলো কীভাবে??(মেঘ ফিসফিস করে বলল)

আসোলে আজকে সকালে (তারপর সকালের সব কিছু মেঘকে বলল)

এটা তুই একদম ঠিক করিসনি মেহরাব , কিন্তু ওরা তো মাহির কাকা আর ভাই তাহলে ওরা ওকে এভাবে বেঁধে রেখেছে কেনো(মেঘ)

আমি কি জানি,, দেখ কি বলো।

আক্কাস এক গ্লাস পানি মাহির মুখে ছুঁড়ে মারলো আর মাহি ধরফরিয়ে উঠল।উঠে দেখলো যে ওর হাত পা বাঁধা তাই আক্কাস কে বলল।

কাকু আমাকে এভাবে বেঁধে রেখেছো কেনো?? আমার খুব কষ্ট হচ্ছে আর মাথা টাও কেমন বেথ্যা করছে প্লিজ খুলে দেন (মাহি)

দেবো মামনি আগে এই কাগজে একটা সই করে দাও (আক্কাস)

এটা কিসের কাগজ?? আর এতে কি আছে??

এতে লেখা আছে যে তুই নিজে সঙ্গানে তোর নামে থাকা সব সম্পত্তি আমাদের নামে করে দিচ্ছিস(আকাশ)

কিহ?? আমার সম্পত্তি???

হুম তোর,,, এতোদিন ভালো হওয়ার অনেক নাটক করেছি আর না, এবার ভালোই ভালোই সই টা করেদে (আকাশ)

তোমরা কি সব বলছো আমি কিছুই বুঝতে পারছি না। (মাহি)

আরে মামনি এতো হাইপার হওয়ার কোনো দরকার নেই, আমি তোমাকে সবটা বলছি। (আক্কাস)

মেঘ তুই পুলিশকে কল কর আর আমি এই সব কিছু ভিডিও করছি,, পরে কাজে লাগবে(মেহরাব)

ওকে।

শোনো তাহলে,, তোমার মা বাবা কে আমিই মেরেছি,, গাড়ি এক্সিডেন্ট করিয়ে।

কিহ??(জোরে বলে উঠল মাহি)

আরে আগে পুরোটা তো শোনো,,, এখানেই শেষ নয়,,, তোমার বাবা মা কে মেরে ফেলার পর ভেবেছিলাম এই অঢেল সম্পত্তির মালিক আমি হবো,, কিন্তু তোমার বাবা আমার সে পথও বন্ধ করে রেখেছিলো,, কেননা ওনি ওনার সব সম্পত্তি তোমার নামে করে রেখেছিলো,,, তারপর ভাবলাম তোমাকে মারবো কিন্তু দলিলে উল্লেখ ছিলো তুমি যদি কোনো দুর্ঘটনায় মারা যাও তাহলে এই এতো এতো সম্পত্তি সব এতিমখানার নামে চলে যাবে,,, আর তোমাকে যে বিয়ে করবে তার নামে অর্ধেক সম্পত্তি চলে যাবে আর আস্তে আস্তে পুরোটা তার নামে হয়ে যাবে,,, আর তুমি যদি মানসিক ভাবে অসুস্থ হও মানে যদি তোমার এমন অবস্থা হয় যে তুমি কিছু মনে রাখতে পারছো না বা তুমি খুবি অসুস্থ তাহলে তোমার কাছের যে আছে সে তোমার সব সম্পত্তি দেখাশোনা করবে। তখন আমি আমার প্লান চেঞ্জ করলাম ভাবলাম তোমাকে মারবো না, তোমাকে আমার ছেলের সাথে বিয়ে দেবো আকাশ তখন জেলে ছিলো,,, বিয়ের পর সব সম্পত্তি হাতানোর পর তোকে মেরে দেবো,,, কিন্তু তুই কি করলি মেহরাব নামের এক ছেলেকে ভালোবেসে বসলি,, তোর উপর আমি সব সময় নজর ছিলো,, আমি ভেবেছিলাম আবেগের বসে ভালোবেসেছিস কদিন পর ঠিক হয়ে যাবে কিন্তু না তোরা সম্পর্ক টা চালাতেই থাকলি, তারপর আমি তোর বিয়ের কথা বললাম,, কিন্তু তুই কি করলি আমাকে না জানিয়ে ওই মেহরাব কে বিয়ে করে নিলি,, সেদিন আমার খুব রাগ হয়েছিলো তাই জন্যই তো গাড়ি দিয়ে ওই মেহরাব কে মারতে চেয়েছিলাম কিন্তু সেখানেও মেহেরাব বেঁচে গেলো ওর তেমন কোনো কিছু হলো না শুধু মাথায় আঘাত লেগে অঙ্গান হয়ে গেলো,, আর তোর অবস্থা খুবি খারাপ ছিলো মুখটা একেবারে থেতলে গিছিলো রাস্তার সাথে লেগে, মাথায় ও বাজেভাবে আঘাত পেয়েছিলি,, তুই প্রায় মরতে বসেছিলি,, কিন্তু আমি তোকে মরতে দিই কি করে তুই যে আমার সোনার ডিম পারা হাঁস তাই তখনি তোকে ভালো একটা হসপিটালে ভর্তি করায় ওনারা একদিন রেখে তোকে ফেরত দেয় বলে ওনার কিছু করতে পারবে না তোর অবস্থা খুবি খারাপ,, তারপর তোকে সেদিনই ইমার্জেন্সি করে বিদেশ এ নিয়ে বড় হসপিটালে ভর্তি করে দিই,, তোর চেহারা নষ্ট হয়ে গিছিলো তাই তোকে নতুন চেহারা দেওয়া হয়েছিলো আল্লাহর রহমতে তুই বেঁচে গেলেও তোর সৃতি হারিয়ে গিছিলো আর এটাই আমার কাছে সব থেকে বড় সুযোগ, তোকে মায়া থেকে মাহি বানিয়ে দিলাম তুই মেহরাব কেও ভুলে গেলি,। তারপর ভাবলাম তোকে আকাশ এর সাথে বিয়ে দেবো কিন্তু আকাশ মাঝখান থেকে বেঁকে বসল ও নাকি বিয়ে করবে না শুধু ফুরতি করবে,, তাই ভাবলাম তোকে পাগল বানিয়ে তারপর তোর সম্পত্তি হাতাবো তাই জন্যই তো তোকে রোজ রাতে ভয় দেখাতাম,, এমনিতেই তোর মাথায় সম্যসা ছিলো তাই তোকে পাগল বানাতে আমার বেশি কাঠখড় পোড়াতে হয়নি, এই জন্যই তোকে ওই পাগলা গারতে ভর্তি করিয়ে দেই,, কিন্তু তাও তুই সেখান থেকে পালিয়ে গেলি।

এতো কিছু হয়ে গেছে??? আর তুমি কতটা খারাপ কাকু কেউ কীভাবে এমনটা করতে পারে ,, আর আমি মেহরাব কে ভালোবাসতাম?? কিন্তু কে এই মেহরাব।
-আক্কাস এর কথা শুনে মেহরাব পুরা জমে গেছে, ওর মায়া তারমানে মারা যাইনি মাহি হয়ে ওর কাছে ফিরে এসেছে,, মেঘ পুরোটা শোনে চুপ করে আছে। এরি মাঝে পুলিশ আসলো তারপর আক্কাস আর আকাশকে নিয়ে গেলো, প্রমাণ স্বরুপ ভিডিও টা দিলো।

,,,রাতে,,,,

মাহিকে বুকের মাঝে শক্ত করে জাপ্টে ধরে রেখেছে মেহরাব যেনো ছেড়ে দিলেই চলে যাবে।। #আমার_একলা_আকাশ এ এক ফালি পূর্ণিমার চাঁদ হয়ে ফিরে আসার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ জান।

হুম সবি তো বুঝলাম কিন্তু আমার তো কিছুই মনে নেই,,, (মুখ ফুলিয়ে বলল মাহি)

মনে থাকা লাগবে না, আমি আমাকে তোমার সৃতিতে নতুন করে সাজিয়ে নেবো।

তবে, মিস্টার আ্যাবনরমাল ডাক্তার আমি আপনাকে অনেক সুন্দর সুন্দর রান্না করে খাওয়াবো তার বিনিময়ে আপনাকে কিন্তু আমাকে অনেক ভালোবাসতে হবে কি রাজি তো??(মাহি)

হুমম একশো বার রাজি,, কাল থেকে আমরা আবার সবকিছু নতুন করে শুরু করবো।

,,,,,,,,সমাপ্ত,,,,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here