আমার একলা আকাশ পর্ব-০৭

0
461

#আমার_একলা_আকাশ🍁🍁
#সুমাইয়া_সুলতানা_সুমী(Writer)
#৭_পর্ব
,
,,পরদিন হসপিটালে,,,

আসতে পারি??(ডাক্তার আজিজ এর কেবিনের সামনে দাড়িয়ে বলল মেঘ)

আজিজ তখন নার্স এর সঙ্গে প্রেমলীলায় ব্যাস্তছিলো মেঘ এর ডাকে নিজেকে ঠিক ঠাক করে নিলো আজিজ।

হুম আসো (অনেকটা গম্ভীর সরে)

মেঘ আর মেহরাব দরজা ঠেলে ভিতরে আসলো ওদের আসা দেখে নার্সটি বার হয়ে চলে গেলো।

বলো কি বলবে??(আজিজ)

কিছু প্রশ্ন করবো তার ঠিক ঠিক উত্তর দিবেন এই আর কি(মেহরাব)

তুমি কি আমাকে অর্ডার করছো??(আজিজ)

মনে করেন তাই,, যা যা জিগাস করবো তার ঠিক ঠিক উত্তর দেন (মেহরাব)

কি তোমাদের এতো বড় সাহস তুমি কি জানো আমি চাইলে এখনি তোমার চাকরি খেয়ে নিতে পারি (রেগে বলল আজিজ)

কেনো বাড়ি থেকে খাবার খেয়ে আসেননি?? তাই বুঝি এখন আমাদের চাকরি খাওয়ার কথা ভাবছেন (মেঘ)

আহ মেঘ এতো কথার দরকার কি,, আমরা যে কাজে এসেছি সেই কাজটা করি। এবার বলুন আক্কাস চৌধুরী এখানে কেনো এসেছিলো(মেহরাব)

তোমাদের এতো বড় সাহস দাঁড়াও আমি এখনি তোমাদের ব্যবস্হা করছি(এই বলে আজিজ কাউকে ফোন করতে যাবে তখনি মেঘ বলল)

না না ডাক্তার এই ভুলটা মোটেও করবেন না তাহলে কিন্তু আপনার এই সুন্দর ভিডিও টা আমি সবাইকে দেখিয়ে দেবো(মেঘ ওর ফোনে একটা ভিডিও অন করে দিলো যেখানে নার্স আর ডাক্তার খুবি ঘনিষ্ঠ অবস্থায় আছে)

এটা (আজিজ ভয়ে ভয়ে বলল)

হুম এটা যদি নিজের প্রেমের ভিডিও টা কাউকে দেখাতে না চান তাহলে আমাদের প্রশ্নের উত্তর টা দেন,,, না হলে ভিডিও টা ভাইরাল হয়ে যাবে তখন দেখবো কে কার চাকরি খাই।(মেঘ)

আ,,,আমি স,,সত্যি বলছি আমি কিছু জানি না (ভয়ে ভয়ে বলল আজিজ)

মেঘ ওনি কিছু জানেন না তুই ভিডিও টা এফবিতে দিয়ে দে, কেমন(মেহরাব)

ওকে বস (মেঘ)

না না বলছি বলছি।

এই তো লাইনে এসেছে তো বলুন।

আসোলে আক্কাস চৌধুরী ওনার ভাতিজি কে দেখতে এসেছিলো,, ও এই হসপিটালে আছে তো তাই(আজিজ)

কিহ?? কিন্তু আমার জানা মতে তো ওনার একটা মাএ ভাতিজী আর সে হলো মায়া যে এখন দুনিয়াতে নেই (মেহরাব)

আমি ওতো কিছু জানিনা ওনি এই জন্যই এখানে এসেছিলো।

ওনার ভাতিজীর নাম কি?? (মেঘ)

মাহি(আজিজ)

কিহ?? এটা কীভাবে সম্ভব,, (অবাক হয়ে বলল মেহরাব)

মাহি যদি আক্কাস চৌধুরী ভাতিজি হয় তাহলে আকাশ এর সাথে মাহির কি সম্পর্ক?? (মেঘ)

আকাশ হলো আক্কাস চৌধুরী এর ছেলে,, ব্যাস এইটুকুই আমি আর এর বেশি জানিনা প্লিজ তুমি এই ভিডিও টা ডিলিট করে দাও(আজিজ)

এসব কি হচ্ছে আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না,, মায়া তো বলেছিলো ওর কোনো বোন নেই তাহলে এই মাহি কে?? আর হঠাৎ করে আকাশই বা কোথা থেকে উদয় হলো মায়া তো ওর কোনো চাচাতো ভাই এর কথা বলেনি।আর মাহি তো একদম সুস্হ তার পরেও ওকে কেনো এখানে রাখা হয়েছে?? উফফ এতো এতো প্রশ্ন কিন্তু একটার ও উত্তর নেই কোথায় পাবো উত্তর (মেহরাব)

আমিও তো কিছু বুঝতে পারছি না এসব কি হচ্ছে, , (মেঘ)

আচ্ছা এটা বলুন যে ওই আকাশ না কি ও আবার কবে আসবে এখানে (মেহরাব)

ওনি আমায় ফোন করে বলেছিলো যে আজকে বিকেলের দিকে আসবে,, মাহির খবর নিতে (ভয়ে ভয়ে বলল আজিজ)

এই তো পেয়ে গেছি,, মেঘ আায় আমার সাথে কথা আছে (এই বলে মেহরাব চলে গেলো,, মেঘও যাচ্ছিলো তখনি আজিজ বলল)

আমার ভিডিও টা ডিলিট করবে না??

নাহ , থাক আমার কাছে আমি যত্ন করে রেখে দেবো,, আর আপনি যা তেরা যদি আমাদের আরো কোনো খবর জানা লাগে তখন এইটা দিয়ে আপনার মুখ খুলাবো,, ততদিন এটা আমার কাছেই থাক (এই বলে মেঘ চলে গেলো)

,,,,,শোন মেঘ আমি একটু বাড়িতে যাবো শাওয়ার নিতে হবে অনেক অস্থির লাগছে,, চারপাশে কি হচ্ছে কিছুই বুঝতে পারছি না,, তুই বরং এখানে থাক আর আকাশ আসলে আমায় খবর দিবি ওকে (মেহরাব)

তা নাহয় দিবো আচ্ছা একবার মাহির কাছে জিগাস করলে কেমন হয় ও তো কিছু হলেও জানবে তাই না??(মেঘ)

হুম কথাটা মন্দ বলিসনি, আচ্ছা আমি এখন যাচ্ছি ওর কাছে না হয় জিগেস করে নেবো তুই থাক (এই বলে মেহরাব বাড়ির দিকে গেলো)

,,,,বাড়িতে মাহি,,,,

এভাবে একটা বাড়িতে কোনো কাজ না করে হাত পা গুটিয়ে বসে থাকবো কীভাবে, ভালো লাগছে না,, আচ্ছা যদি সব গুলো রুম গুজগাছ করি তাহলেই তো সময় চলে যাবে,, হুম তাই করি।

যে ভাবা সেই কাজ মাহি উড়না কমরে গুজে ও যে রুমে থাকে সে রুম টা সুন্দর করে গুছিয়ে ফেললো,, এবার বাকি ওনার রুম কিন্তু ওনি তো ওনার রুমে যেতে নিষেধ করেছে,, তাতে কি এখন তো ওনি নেই আমি ঝট করে গিয়ে ফট করে গুছিয়েই চলে আসবো আর তাছাড়া ওনি তো রাতে আসবেন আর এখন তো কেবল দুপুর হতে চলল, যাই।

যেই ভাবা সেই কাজ মেহরাব এর রুমে গিয়ে প্রথমে বিছানাটা গুছালো তারপর টেবিল টা আলনা টাও, শেষে আলনার পাশে ছোট্ট একটা আলমারি আছে মাহি ভাবলো ওটাও গুছানো যাক,, আলমারিটা খুলে জামা গুলো সব বার করে বিছানায় রেখে প্রথমে আলমারি টা মুছলো তারপর আবার একে একে সব ভাজ করে আলমারীর মধ্যে রাখলো, রেখে আলমারি টা যেই বন্ধ করতে যাবে তখনি দেখলো আলমারীর মধ্যে একটা ড্রয়ার।

আরে এটা কি দেখিতো,,, ড্রয়ার খুলে দেখলো কিছু জমানো টাকা আর একটা ডাইরি রাখা।

আরে ব্যাস এটাতো দেখছি একটা ডাইরি দেখিতো কি লেখা আছে, এই বলে যেই ডাইরিটা খুলতে যাবে তখনি আবার নিজেই নিজেকে বলল।

না মাহি এটা ঠিক না, এভাবে কারো প্যারসোনাল জিনিস দেখা ঠিক না,, তবে আমি তো একটু খানি দেখবো দেখেই রেখে দেবো ওনি জানতেও পারবে না,, এই বলে ডাইরিটা যেই খুলবে তখনি কেউ একজন মাহির গালে ঠাস করে একটা চড় দিয়ে ওর হাত থেকে ডাইরিটা কেরে নিলো।

মাহি গালে হাত দিয়ে কেঁদে বলল।

আ,,আসোলে,, আ,,আমি

চুপ (চিৎকার করে) আপনার সাহস হয় কি করে আমার রুমে এসে আমারি জিনিসে হাত দেওয়ার ।

আমি আমি।

কি আমি আমি থাকতে দিয়েছি বলে এতো সাহস বেড়ে গেছে,, এখনি বেরিয়ে যান আমার বাড়ি থেকে, আউট( ফ্ল্যাটে ঢুকে নিজের রুমে এসেই দেখলাম মেয়েটা মায়ার দেওয়া ডাইরিটা হাতে নিয়ে পড়ার চেষ্টা করছে, এমনিতেই মাথা গরম ছিলো তারপর এটা দেখে আর নিজেকে ঠিক রাখতে পারলাম না,, পেয়েছি কি ওনি এতো সাহস কি করে হলো ওনার,, ভেবেছিলাম মেঘ এর বলা কথা মতো ওনাকে জিগেস করবো কিন্তু এটা দেখার পর আর কিছুতেই মাথা ঠিক রাখতে পারলাম না)

মেহরাব এর কথা শুনে মাহি গালে হাত দিয়েই আস্তে করে রুম থেকে বেরিয়ে চলে গেলো।মেহরাব ও শাওয়ার এ গেলো। বেশ কিছুক্ষণ পর ওয়াশরুম থেকে বার হলো মেহরাব মাথাটা একটু ঠান্ডা হয়েছে,, ওনাকে এভাবে বলা ঠিক হয়নি একটা সরি বলা দরকার।

মনে মনে এটা বলে মেহরাব রুম থেকে বেরিয়ে সারা বাড়ি খুঁজলো কিন্তু মাহিকে কোথাও পেলো না,, তারমানে মেয়েটা সত্যি চলে গেছে??

যাক ভালোই হয়েছে,, একটা ঝামেলা দূর হয়েছে। (এটা বলে মেহরাব বিছানায় গিয়ে বসল।)

চলবে,,,,,,?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here