#আমার_তোমাকে_প্রয়োজন💖
#Writer_Tanisha_Akter_Tisha
#Part_20
কপি নিষিদ্ধ ❌
ঐশী ড্রেসিং টেবিলের সামনে বসে মেকআপ রিমোভার দিয়ে মুখের মেকআপ তুলছে,আহাদ বেডে বসে আয়নায় তাকিয়ে তা দেখছে,ঐশী মেকআপ তুলে চুলের ক্লিপ খুলে কাবার্ড থেকে ড্রেস নিয়ে ওয়াশরুমে চলে যায়,কিছুক্ষণ পর ড্রেস চেঞ্জ করে ড্রেসিংটেবিলের সামনে বসে মেডিসিনের বক্স থেকে অয়েনমেন্ট বের করে হাতের ক্ষ’তে লাগায়,এতোখন ফুল সিল্ভস জামা পড়া ছিল তাই ওর হাতের ক্ষ’ত করো চোখে পড়েনি।
ঐশী অয়েন্টমেন্ট হাতে নিয়ে বসে আছে পিঠের ক্ষ’তগুলোতে কিভাবে অয়েন্টমেন্ট লাগাবে বুঝতে পারছে না।
আহাদ ঐশীর কাছে এসে ওর হাত থেকে অয়েন্টমেন্টটা নিয়ে বলে,
দাও আমি পিঠে অয়েন্টমেন্ট লাগিয়ে দেই।
নিজে আ’ঘা’ত করে নিজেই মলম লাগাতে চাইছেন।
আহাদ ঐশীর কথার উওরে কিছু না বলে ওর হাত ধরে বেডে বসিয়ে দেয়,পিঠের ক্ষ’তে অয়েন্টমেন্ট লাগানোর জন্য আহাদ ড্রেসের চেইনে হাত দিতেই ঐশী হাত ধরে ফেলে,আহাদ ঐশীর হাত থেকে নিজের হাত ছাড়িয়ে মৃদু স্বরে বলে,”আমার অধিকার আছে।”
কেন যেন আহাদের কথার উওরে ঐশী কিছু বলতে পারলো না।
আহাদ ঐশীর ড্রেসের চেইন খুলে আলতো হাতে ক্ষ’ত স্থানে অয়েন্টমেন্ট লাগিয়ে দিচ্ছে।
আহাদের স্পর্শে শিহরণ আর ক্ষ’ত স্থানে মলম লাগাতে জ্বলে উঠা দুটো মিলে এক অদ্ভুত অনুভূতি সৃষ্টি হলো,
ঐশী চোখ বন্ধ করে সেই অদ্ভুত অনুভূতিটা অনুভব করলো।
আহাদ অয়েন্টমেন্ট লাগিয়ে ড্রেসের চেইন লাগিয়ে দেয়,
ঐশী আহাদের কাছ থেকে সরে আসে,আহাদ ঐশীর পা ধরতে নিলে ঐশী পা সরিয়ে বলে,
কি করছেন পায়ে হাত দিচ্ছেন কেন?
অয়েন্টমেন্ট লাগাতে হবে তো।
লাগবে না আমি পারবো।
ক্ষ’ত যখন আমি তৈরি করছি তখন সেই ক্ষ’ত নাহয় আমিই সারিয়ে তুলি।
আহাদ ঐশীর পা ধরে পায়ের ক্ষ’তে আলতো হাতে অয়েন্টমেন্ট লাগিয়ে দিচ্ছি,ঐশী একমনে আহাদের দিকে তাকিয়ে আছে।
আহাদ ঐশীর দিকে তাকাতেই দেখতে পায় ঐশী ওর দিকে তাকিয়ে আছে,
জান এভাবে তাকিয়ে থেকো না প্রেমে পড়ে যাবে।
আহাদের কথায় ঐশীর ঘোর কাটে।
আহাদ কাবার্ড থেকে রেপিং পেপারে মোড়ানো দুটো বক্স নিয়ে আসে,বক্স দুটো ঐশীর হাতে দিয়ে বলে,
তোমার জন্য।
আমার জন্য!
হুম,বাসর রাতে নাকি বউকে কিছু না কিছু দিতে হয় তাই আমি আমার বউয়ের জন্য এগুলো এনেছি।
আহাদের মুখে “বউ” ডাক শুনে ঐশীর মনে অন্যরকম ভালো লাগা কাজ করে।
এতে কি আছে?
খুলেই দেখো।
ঐশী রেপিং খুলতেই বুঝতে পারে এগুলোতে অর্নামেন্ট আছে,ঐশী একটা বক্স খুলে দেখে ওটাতে রিং আর অন্যটাতে ব্রেসলেট আছে।
আমি পরিয়ে দেই?
ঐশী মাথা নাড়ায়।
আহাদ ঐশীর অনামিকা আঙ্গুলে রিং পরিয়ে সেই হাতে ব্রেসলেট পরাতে পরাতে বলে,
জান এই দুটো জিনিস কখনো হাত থেকে খুলবে না প্লিজ এটা আমার রিকুয়েষ্ট।
আচ্ছা।
পছন্দ হয়েছে।
হুম পছন্দ হয়েছে।
আহাদ বক্স আর পেপার গুলো বেড থেকে সরিয়ে বালিশ ঠিক করে দেয়,
জান শুয়ে পড়ো,আমি লাইট অফ করে দিচ্ছি।
আহাদের কথা মতো ঐশী শুয়ে পড়ে,আহাদ লাইট অফ করে ঐশী গায়ে কাথা দিয়ে ঐশীর পাশে হেলান দিয়ে বসে ফোন দেখতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে।
ফোনের আবছা আলোয় আহাদের মুখশ্রীতে তাকিয়ে আছে ঐশী,কেন যেন আহাদকে এভাবে লুকিয়ে দেখতে ভালো লাগছে।
আহাদের মনে হচ্ছে ঐশী ওর দিকে তাকিয়ে আছে,
আহাদ ফোন থেকে চোখ সরাতেই ঐশী চোখ বন্ধ করে ঘুমানোর ভান করে,আহাদ বুঝতে পারে ঐশী ওকে লুকিয়ে লুকিয়ে দেখছে,আহাদ মুচকি হেসে ঐশীর কপালে ঠোঁট ছুঁইয়ে পুনরায় ফোন দেখায় ব্যস্ত হয়ে পড়ে,আহাদকে লুকিয়ে দেখতে দেখতে একটা পর্যায় ঐশীর চোখে ঘুম চলে আসে।
সকালে,
পর্দার ফাক দিয়ে আলোর রশ্মি চোখে পড়তেই ঐশীর ঘুম ভেঙে যায়,ঐশী চোখ মেলে নিজেকে আহাদের বাহুডোরে আবিষ্কার করে,ঐশী আহাদের একদম কাছাকাছি,ও আজ প্রথম আহাদকে ঘুমন্ত অবস্থায় দেখলো,ঘুমালে ওনাকে কতো কিউট লাগে,
কে বলবে ইনি ব’জ্জা’ত মা’ফি’য়া।
ঐশী নিজের অজান্তেই আহাদের কপালে ভালোবাসার পরশ একেঁ দেয়।
আহাদের আরো একটু কাছে যেয়ে আহাদকে জড়িয়ে ধরে চোখ বন্ধ করে।
আহাদ চোখ মেলে তাকায়,আহাদ সজাগ ছিল,ঐশীকে চোখ মেলতে দেখে ও চোখ বন্ধ করে ঘুমানোর ভান করে,ঐশীর কাজে আহাদ মুচকি হেসে মনে মনে ভাবে,
তবে কি তুমিও আমাকে ভালোবাসতে শুরু করেছো?
__
এর মাঝে বেশ কয়েক দিন কেটে গেছে,
ঐশী এখন সম্পূর্ণ সুস্থ,এ কদিন আহাদ ওর খুব যত্ন করেছে,আহাদের যত্নেই ঐশী এতো তারাতাড়ি সুস্থ হতে পেরেছে,ঐশীও আহাদের প্রতি দূর্বল হয়ে পড়েছে,
আহাদের ভালোবাসা কেয়ারিং ওকে আহাদের প্রতি দূর্বল হ’তে বাধ্য করেছে,ঐশী এখন আহাদের সাথে মানিয়ে নেওয়া চেষ্টা করছে,ওদের সম্পর্কটাকে মেনে নেওয়ার চেষ্টা করছে।
আহাদ এখন ঐশীকে রুমে ব’ন্ধী করে রাখে না পাখির মতো সারা বাড়ি ঘুরে বেড়াতে দেয়,মাঝে মাঝে ঐশীকে ঘুরতে নিয়ে যায়,ঐশী আবার ভার্সিটিতে যাওয়া শুরু করেছে,ও এখন অর্নাস দ্বিতীয় বর্ষের ছাএী,আহাদ প্রতিদিন ওকে ভার্সিটিতে দিয়ে আসে আবার নিয়েও আসে,আহাদ ঐশীকে ব’ন্ধী জীবন থেকে মুক্তি দিয়ে দিয়েছে।
“আচ্ছা আমার কি আহাদকে মেনে নেওয়া উচিত,
এ সম্পর্কটাকে মেনে নেওয়া উচিত,তাকে কি একটা সুযোগ দেওয়া উচিত,তাকে কি আরো একবার ভালোবাসা উচিত?”
বারান্দা দাঁড়িয়ে কথা গুলো ভাবছে ঐশী।
আহাদ অফিস থেকে এসে ঐশীকে রুমে দেখতে না পেয়ে বারান্দায় যায় ঐশীকে দেখে জড়িয়ে ধরে মৃদু স্বরে বলে,
জান প্যাকিং করো।
কেন?
হানিমুনে যাবো।
কি!
এক্চুয়েলি হানিমুনের কোনো প্লান ছিল,কাজের জন্য আমাকে বগুড়ায় ৩ দিনের জন্য যেতে হবে,আমি না গেলে হবে না আর তোমাকে এখানে রেখে গেলে আমার মন তো তোমার কাছেই পড়ে থাকবে কাজ করতেই পারবো না,তাই ভাবলাম কাজের কাজও হবো,
তোমাকে নিয়ে ঘুরাও হবে,যাও জান প্যাকিং করো আমাদের একটু পর বের হতে হবে।
ঠিক আছে।
আর হ্যাঁ সব শাড়ী নিবে তোমাকে শাড়ীতে বেশি সুন্দর লাগে।
আচ্ছা।
ঐশী রুমে যেয়ে ছোট লাগেজটা বের করে ওর আর আহাদের জামা কাপড় গোছাতে শুরু করে।
আহাদের ফোন আসাতে ও কথা বলতে বলতে রুম থেকে বের হয়।
ঐশী প্যাকিং করে রেডি হয়ে নেয় আহাদের কথা মতো শাড়ী পড়ে,ঐশী আকাশী আর সাদার কম্বিনেশনের শাড়ী পড়েছে।
আহাদ রুমে এসে রেডি হয়ে নেয়।
ঐশী হাতে চুড়ি পড়তে পড়তে বলে,
আমাকে কেমন লাগছে?
আহাদ ঘড়ি পড়তে পড়তে বলে,
অনেক সুন্দর লাগছে।
থ্যাঙ্ক ইউ।
আহাদ ঐশীর কপালে ঠোঁট ছুঁইয়ে হাত ধরে বলে,
চলো।
ওরা বাসা থেকে বের হয়ে গাড়িতে উঠে বসে,
ওদের সাথে সিয়াম আর গার্ডরাও যাবে।
ড্রাইভার গাড়ি স্টার্ট দেয়।
কিছুদূর যেতেই পথে একটা রেস্টুরেন্ট দেখতে পায় ওরা সবাই সেখানেই ডিনার করে।
ডিনার করে পুনরায় গাড়িতে উঠে বসে।
ঐশীর ঘুম পাচ্ছে ও বার বার হাই তুলছে।
জান ঘুম পাচ্ছে?
ভিষণ ঘুম পাচ্ছে।
তো ঘুমিয়ে পড়ো।
গাড়িতে ঘুমিয়ে শান্তি আছে নাকি,কিছুক্ষণ পর পর ঝাঁকি লাগবে আর ঘুমটা ভেঙে যাবে।
ঝাঁকি লাগবে না তুমি ঘুমাও।
আহাদ ঐশীর মাথা নিজের কাঁধের উপর রেখে এক পাশ দিয়ে জড়িয়ে ধরে,চোখে ঘুম থাকায় ঐশীও ঘুমিয়ে পড়ে।
গাড়ি আস্তে চালাবে ঝাঁকিতে যেন তোমার ম্যামের ঘুম না ভেঙে যায়।
ওকে স্যার।
আহাদ ঐশীর দিকে একবার তাকিয়ে পকেট থেকে ফোন বের করে ফোন দেখায় ব্যস্ত হয়ে পড়ে।
#আমার_তোমাকে_প্রয়োজন💖
#Writer_Tanisha_Akter_Tisha
#Part_21
কপি নিষিদ্ধ ❌
ঢাকা থেকে বগুড়ায় আসতে ওদের ৮ ঘন্টা লাগে।
ওরা রাত এগারোটায় রওনা দিয়েছে আর সকাল ছয়টায় এখানে এসে পৌঁছিয়েছে।
আগে থেকেই হোটেল বুক করা ছিল,
ওরা যেয়ে হোটলে উঠে।
ঐশী রুমে এসে বিছানায় শুইয়ে পড়ে।
জান আগে ফ্রেস হয়ে কিছু খেয়ে তারপর ঘুমাও।
ঐশী ঘুম ঘুম কন্ঠে বলে,
না আমার অনেক ঘুম পাচ্ছে।
আহাদ ঐশীর চুল গুলো ঠিক করতে করতে বলে,
জান কিছু খেয়ে ঘুমাও।
না আহাদ আমার ঘুম পাচ্ছে আমি ঘুমাবো।
বলতে বলতে ঐশী ঘুমিয়ে পড়ে।
হায়রে এ মেয়ের ঘুম পেলে দিন দুনিয়া কিছু চিনে না।
আহাদ ঐশীর কপালে ঠোঁট ছুঁইয়ে বলে,
“আমার ঘুম পা’গ’লি”।
আহাদ ঐশীর গায়ে কাথা দিয়ে উঠে ফ্রেস হয়ে ড্রেস চেঞ্জ করে রুম থেকে বের হয়।
দশটার দিকে হোটেলের পাশের রেস্টুরেন্টে আহাদদের মিটিং আছে।
আহাদ নিচে এসে সিয়ামের সাথে নাস্তা করে আর মিটিংয়ের ব্যাপারে কথা বলে।
নাস্তা শেষ করে আহাদ রুমে আসে,ঐশী তখনও ঘুমাচ্ছিলো,আহাদ ওর ফাইল বের করে চেক করছে।
সাড়ে ৯ টার দিকে ঐশীর ঘুম ভাঙে,ঐশী পাশ ফিরে দেখে আহাদ ওর পাশে বসে ল্যাপটপে কাজ করছে।
গুড মর্নিং জান।
গুড মর্নি।
ঘুম ভালো হয়েছে?
ভিষণ ভালো,এখন নিজেকে ফুরফুরা লাগছে।
আচ্ছা তুমি ফ্রেস হয়ে আসো আমি খাবার অর্ডার করি।
আচ্ছা।
ঐশী বিছানা ছেড়ে উঠে লাগেজ থেকে শাড়ী নিয়ে ওয়াশরুমে চলে যায়।
ফ্রেস হয়ে ড্রেস চেঞ্জ করে বের হয়ে দেখে সার্ভেন্ট নাস্তা দিয়ে গেছে,ঐশীর চুলে টাওয়াল পেচানো দেখে আহাদ ওকে বিছানায় বসিয়ে চুল থেকে টাওয়াল খুলে চুল মুছে দিচ্ছে,চুল মোছা শেষে আহাদ টাওয়াল বারান্দায় মেলে দিয়ে আসে।
জান আমাকে এখন বাহিরে যেতে হবে,তুমি নাস্তা করো,
ঠিক আছে।
আচ্ছা।
আহাদ ঐশীর কপালে ঠোঁট ছুঁইয়ে “বায়” বলে চলে যায়।
ঐশী রিমোট দিয়ে টিভি অন করে ও টিভি দেখছে আর নাস্তা করছে।
আহাদ সিয়াম হোটেল থেকে বের হয়ে পাশের রেস্টুরেন্টে চলে যায়,ক্লাইন্ট ওদের জন্য ওয়েট করছিলো ওরা আসতেই মিটিং শুরু করা হয়।
___
ঠিক বলছিস তো?
হ্যাঁ স্যার আমি সত্যি কথা বলছি,কিছুক্ষণ আগেই আমাদের লোক জানিয়েছে কয়েক ঘন্টা আগে বিজনেসের কাজে আহাদ শেখ আর উনার স্ত্রী বগুড়ার এসেছে।
বাহ সাথে বউকেও নিয়ে এসেছে,শুনো আমার কথা
……… বুঝেছো?
জ্বী স্যার।
যাও।
লোকটা চলে যায়।
জারিফ শয়তানি হাসি দিয়ে হাতের বলটা ঘোরাতে ঘোরাতে বলে,
আহাদ সেদিন তো তোমার বউকে বাঁচিয়ে ফেলেছিলে কিন্তু এখন কি করে বাঁচাবে,তোমাকে এই জারিফের কাছে আসতেই হবে,আমার পায়ের তোলায় পড়তেই হবে,এবার আমি আমার প্রতি’শো’ধ নিতে পারবো,
তোমার বউকে মে’রে আমি আমার ভাইয়ের মৃ’ত্যু’র প্রতি’শো’ধ নিবো,তুমিও বুঝবে কাছের মানুষ হারালে কতো কষ্ট হয়।
___
মিটিং শেষ করে আহাদ হোটেলে ফিরে আসে,আহাদ আগেই কল দিয়ে ঐশীকে রেডি হতে বলেছিলো,ঐশী রেডি হয়ে আহাদের জন্য ওয়েট করছিলো,আহাদ রুমে এসে ফ্রেস হয়ে ঐশীকে নিয়ে বের হয়,ওরা হোটেলের বাহির এসে গাড়িতে উঠে বসে,এখন ওরা মহাস্থানগড় যাবে,ড্রাইভার গাড়ি স্টার্ট দেয়,বেশ কিছুক্ষণ পর ওরা ওদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষে পৌঁছে যায়।
মহাস্থানগড় বাংলাদেশের একটি অন্যতম প্রাচীন পুরাকীর্তি,পূর্বে এর নাম ছিল পুণ্ড্রবর্ধন বা পুণ্ড্রনগর। এক সময় মহাস্থানগড় বাংলার রাজধানী ছিল,এখানে মৌর্য,গুপ্ত,পাল,সেন সাম্রাজ্যের প্রচুর নিদর্শন পাওয়া গিয়েছে,এর অবস্থান বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ উপজেলায়,বগুড়া শহর থেকে প্রায় ১০ কি.মি উত্তরে মহাস্থান গড় অবস্থিত।
ওরা মহাস্থানগড় ঘুরে ঘুরে দেখে,সেখানে ছবি তুলে,
মহাস্থানগড়ের ইতিহাস সম্পর্কে জানে।
সেখান থেকে ওরা গোকুল মেধ যায়।
এই জায়গায়টাকে বেহুলার বাসর ঘরও বলা হয়।
গোকুল মেধ বগুড়া সদর থানার অন্তর্গত গোকুল গ্রামে খননকৃত একটি প্রত্নস্থল,স্থানীয়ভাবে এটি বেহুলার বাসর ঘর নামেই অধিক পরিচিত,তবে আদতে এটি বেহুলার বাসর ঘর নয়,একটি প্রাচীন বৌদ্ধ মঠ। অনেকে একে লক্ষ্মীন্দরের মেধও বলে থাকে,এটি বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের অন্তর্ভুক্ত অন্যতম প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান।
এখানেও ওরা একসাথে ছবি তুলে,জায়গাটা ঘুরে ঘুরে দেখে এবং এর ইতিহাস সম্পর্কে জানে।
ওরা ঘুরে ফিরে বাহিরের থেকে ডিনার করে ৯ টার দিকে হোটেলে ফিরে আসে।
ঐশী আহাদের পাশে বসে ফোন স্ক্রল করছিল,
আহাদ ঐশীর দিকে তাকিয়ে আছে।
এভাবে কি দেখছেন?
আমার বউকে দেখি।
এতো দেখার কি আছে?
দেখতে ভালো।
এতো দেখতে হবে না।
আমার বউ আমি দেখবো এতে কার কি।
ঐশী আহাদের সাথে আর কথা না বাড়িয়ে ফোন দেখায় মন দেয়।
আহাদ ঐশীর কাছে এসে একটু সুইট করে বলে,
জান।
হুম বলুন।
শুনো না।
হ্যাঁ বলুন।
আচ্ছা আমরা এখানে কেনো এসেছি?
আপনার বিজনেস মিটিংয়ের জন্য।
আর।
বিজনেসের কাজেই তো এসেছি আর কি।
ঐশী আহাদের থেকে চোখ সরিয়ে ফোনের উপর চোখ পড়তেই ঐশী বুঝতে পারে আহাদ কি বলতে চাইছে,
ঐশী ঢোগ গিলে আহাদের দিকে তাকায়,আহাদ ভ্রু নাচায়,ঐশী হাসার চেষ্টা করে বেড থেকে নামতে নিলে আহাদ ওর হাত ধরে হেঁচকা টান দিয়ে বেডে ফেলে দিয়ে ওর দু হাত বেডের সাথে চেপে ধরে,ঐশী নড়তে পারে না।
পালাচ্ছো কেন?
কোথায় পালাচ্ছি?
তোৎলাচ্ছো কেন?
কোথায় তোৎলাচ্ছি?
এতো পালাই পালাই করো না তো একটু আদর করতে দাও,এখানে শুধু কাজ করতে নয় হানিমুন করতেও এসেছি।
বলেই আহাদ ঐশীর গলায় মুখ ডুবিয়ে চুমুর বর্ষণ করে,
ঐশী চোখ খিঁচে বন্ধ করে ফেলে।
একটুপর আহাদ ঐশীর গলা থেকে মুখ তুলে ঐশীর দিকে তাকায় ঐশীকে চোখ বন্ধ করে রাখতে দেখে ঐশীর চোখের পাতায় চুমু দেয়,ঐশী চোখ মেলে তাকায়,আহাদ এক হাত দিয়ে ঐশীর কোমড় জড়িয়ে ধরে অন্য হাত দিয়ে ঐশীর গালে হাত দিয়ে ঐশীর একদম কাছে চলে আসে,দুজনের মাঝে কিঞ্চিত পরিমাণ দুরত্বও নেই আহাদকে নিজের এত কাছে দেখে ঐশী চোখ বন্ধ করে ফেলে,আহাদ ঐশীর ঠোঁট জোড়া দখল করে নেয়।
পরবর্তী ২ দিনে ওরা খেরুয়া মসজিদ,রানী ভবানীর বাপের বাড়ি,ভীমের জাঙ্গাল,যোগীর ভবণ,ভাসু বিহার,
মানকালীর কুণ্ড,পরশুরামের প্রাসাদ,বিহার ধাপ,
পো’ড়াদহ মেলা,বগুড়ার এই জায়গায় গুলো ঘুরে দেখেছে।
আজ আহাদের একটা লাস্ট মিটিং আছে আজ কাজ শেষে করে কাল ওরা ঢাকা ব্যাক করবে।
আহাদ ঐশী একসাথে নাস্তা করে নেয়।
আহাদ নাস্তা করে রেডি হয়ে নেয়।
জান।
হুম।
আজ আসতে একটু লেট হবে লাস্ট মিটিং তো তাই একবারে ডিলটা কনফার্ম করে তার পর আসবো,আর রাতেই আমরা ঢাকায় যাওয়ার জন্য রওনা দিবো।
আচ্ছা।
সাবধানে থেকো কোনো কিছু প্রয়োজন হলে গার্ডকে বলবে।
আচ্ছা আপনি নিশ্চিন্তে যান।
আহাদ “বায়” বলে চলে যায়।
দুপুর ২ টার দিকে।
ঐশী ফোন স্ক্রল করছিলো তখন কেউ দরজায় নক করে,ঐশী বিছানা ছেড়ে উঠে দরজা খুলে দেখে একজন লোক দাঁড়িয়ে আছে,উনাকে দেখেই বোঝা যাচ্ছে উনি এই হোটেলে কাজ করে।
জ্বী বলুন।
ম্যাম আপনাকে স্যার নিচে যেতে বলেছেন,উনি আপনার জন্য নিচে ওয়েট করছেন।
আহাদ ডেকেছেন?
জ্বী ম্যাম আপনাকে দ্রুত নিচে যেতে বলেছে।
কথাটা বলে লোকটা চলে যায়।
ঐশী রুমে এসে টেবিল থেকে পার্সটা নিয়ে দরজা খুলে রুম থেকে বের হয়,নিচে নামতেই গার্ড ওর সামনে এসে দাঁড়ায়।
ম্যাম আপনি একা কোথায় যাচ্ছেন?
আপনাদের স্যার ডেকেছেন উনি নাকি বাহিরে আমার জন্য ওয়েট করছেন।
ওহ চলুন আমি আপনাকে এগিয়ে দিয়ে আসি।
না তার দরকার নেই আমি একা যেতে পারবো।
গার্ড কিছু বলার আগেই ঐশী বেরিয়ে যায়।
হোটেল থেকে বের হয়ে আসেপাশে তাকিয়ে কোথাও আহাদকে দেখতে পায় না,এমনকি আহাদের গাড়িও দেখতে পায় না।
ঐশী ভাবে আহাদ হয়তো সামনে কোথাও আছে।
ও কিছুটা সামনে এগিয়ে যায় কিন্তু কোথাও আহাদকে দেখতে পায় না।
আহাদকে দেখতে না পেয়ে ঐশী পার্স থেকে ফোন বের করে আহাদকে কল দিতে নিবে তখনই পেছন থেকে কেউ ওর মুখ চেপে ধরে।
#চলবে
[