#আমার_তোমাকে_প্রয়োজন💖
#Writer_Tanisha_Akter_Tisha
#Part_30
কপি নিষিদ্ধ ❌
ঐশী আহাদের কাছে এসে আহাদের মাথার পেছনে হাত দিয়ে চুলে হাত ডুবিয়ে পা একটু উঁচু করে আহাদের ঠোঁটের ভাজে ঠোঁট ডুবিয়ে দেয়।
ঐশী আহাদের কাছ থেকে সরে এসে আহাদের হাত ধরে ছাদের সুইমিংপুলটার কাছে নিয়ে যায়,পানির উপর ফুলের পাপড়ি গুলো ভাসছে,চাঁদের আলো পানিতে পড়ায় পানিটা আরো বেশি সুন্দর লাগছে।
ওরা দুজন পানিতে পা ডুবিয়ে বসে।
ঐশী আহাদের কাঁধে মাথা রেখে মৃদু স্বরে বলে,
“ভালোবাসি আহাদ আপনাকে অনেক বেশি ভালোবাসি দু দুবার আপনার প্রেমে পড়লাম।
আহাদ আপনি কি জা’দু করলেন জানি না,
আপনাকে ভালোবাসতে বা’ধ্য করে ফেললেন,সবাই ঠিকই বলে মানুষ পেছনে যেতে যেতে একদম কাছে চলে আসে,আমি আপনার থেকে দূরে সরতে সরতে একদম কাছে চলে এসেছি।
আমিও আপনার প্রতি আস’ক্ত হয়ে গেছি।
সেদিন আপনার পছন্দের কালো রঙের থ্রি পিস পড়ে ফুরফুরে মেজাজে আপনার অফিসে গিয়েছিলাম সেখানে যেয়ে জানতে পারি আপনি অফিসে নেই আপনি আপনার সিক্রেট হাউসে আছেন,শাহীন ভাইয়া সেদিন আমায় আপনার সিক্রেট হাউসে নিয়ে গিয়েছিল
সেখানে যেয়ে এতো এতো গার্ড দেখে আমার কেমন যেন লাগে আমার মনে প্রশ্ন জাগে “একটা বাড়িতে এতো গার্ডের কি প্রয়োজন?”
সেখানকার একজন গার্ড আমাকে একটা রুমের সামনে দাঁড় করিয়ে চলে যায় আমিও নক না করে রুমে প্রবেশ করি,সেদিন আপনার ভ’য়ং’ক’র রুপ আমি স’হ্য করতে পারিনি।
আপনার জন্য যে কতো কেঁদেছি তা বলে বুঝাতে পারবো না,আপনার সাথে একটিবার কথা বলার জন্য ম’রিয়া হয়ে উঠেছিলাম,কিন্তু আমার ভয় হতো যদি আমাকে আবারো আপনার সেই ভ’য়ং’ক’র রুপ দেখতে হয়,আমি আপনার ভ’য়ং’ক’র রুপকে অনেক ভয় পাই,
আমার সেই দৃশ্য মনে করলে এখনো ভয় লাগে।
ভেবেছিলাম হয়তো আপনি আমাকে ভুলে যাবেন কিন্তু আপনি পূনরায় আমার জীবনে প্রবেশ করলেন।
আপনাকে ঘৃ’ণা করতে চেয়েও পারিনি কেন যেন পারিনি,ঘৃণা করতে যেয়ে আমি আরো একবার আপনার প্রেমে পড়ে গেলাম,আপনার থেকে দূরে সরে যাওয়ার চেষ্টা করলাম কিন্তু পারলাম না সেই ঘুরে ফিরে আপনার কাছেই ফিরে আসতে হলো আপনাকেই ভালোবাসতে হলে,পালানোর চেষ্টা করলাম কিন্তু আপনি ঠিক আপনার বুকের পিঞ্জিরায় আমার ব’ন্দী করলেন,আপনাকে ভালোবাসতে বা’ধ্য করলেন।
ভালোবাসি আহাদ।
আপনাকে অনেক বেশি ভালোবাসি।
আগে আপনার মা’ফি’য়া রুপকে আমি ভয় পেতাম কিন্তু এখন আমার আর ভয় করে না আমি এ সত্যটা মেনে নিয়েছি আপনার মা’ফি’য়া রুপটা মেনে নিয়েছি আপনার অনিশ্চিত জীবনের সাথে আমি স্বইচ্ছায় জড়িয়েছি,কথা দিলাম শেষ নিশ্বাস পর্যন্ত আপনার পাশে থাকবো আপনাকে ভালোবাসবো।
আহাদ #আমার_আপনাকে_প্রয়োজন।
জীবনে চলার পথে আপনাকে প্রয়োজন,সুখের দিনে আপনাকে প্রয়োজন,বিষাদের প্রহরে আপনাকে প্রয়োজন,বেঁচে থাকার জন্য আপনাকে প্রয়োজন,
মৃ’ত্যু’র সময়ও #আমার_আপনাকে_প্রয়োজন।”
হঠাৎ বর্ষণ শুরু হয়,আহাদ ঐশী ভিজি যায়,আহাদ ঐশীর খুব কাছে এসে একহাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে,
“জান তোমার মনে আছে আমি তোমায় বলেছিলাম আমি মানুষ খু’ন করি কিন্তু কাদের খু’ন করি তা কি জানো,জান আমি কখনো কোনো নিষ্পাপ মানুষকে মা’রি’নি,এ হাতে কোনো নিষ্পাপের র’ক্ত ঝড়েনি।
আমি যাদের মে’রেছি তারা সবাই অ’বৈ’ধ কাজের সাথে জড়িত ছিল,নারী পা’চা’রকা’রী,শিশু পা’চার’কা’রী,
ড্রা’স ডি’লা’র ছিল,আমি সব খারাপ মানুষদের
মে’রে’ছি,আমি জানি আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া ঠিক না কাউকে হ’ত্যা করা ঠিক না কিন্তু কিছু কিছু সময় বা’ধ্য হয়ে এসব করতে হয়।
আমরা যদি খারাপ লোকটাকে শে’ষ না করি তবে সে সবাইকে শে’ষ করে দিবে,শতশত নিরীহ মানুষের জীবন ধ্বং’স করে দিবে,কিন্তু জান বিশ্বাস করো আমি কখনো কোনো নিষ্পাপ ব্যক্তিকে আ’ঘা’ত করিনি।”
আমি আপনাকে বিশ্বাস করি।
আহাদ ঐশীকে বুকের মাঝে জড়িয়ে ধরে,
‘জান আমি কখনো ভাবিনি তুমি আমায় ভালোবাসবে,
কখনো তোমার মুখে ভালোবাসি শুনবো,জান আজ আমি অনেক খুশি আজকের দিনটা আমার সারাজীবন মনে থাকবে থ্যাঙ্ক ইউ জান থ্যাঙ্ক ইউ সো মাচ।
ভালোবাসি তোমায় ভিষণ ভালোবাসি।”
আমিও আপনাকে ভিষণ ভালোবাসি।
ঐশী আহাদের গালে আলতো ভাবে ঠোঁট ছোঁয়ায়।
ঐশীর দিকে চোখ তুলে তাকাতেই আহাদের নে’শা ধরে যায় ভেজা শাড়ীতে ঐশীকে আবেদনময়ী লাগছে,
অদৃশ্য কিছু আহাদকে ঐশীর দিকে ক্রমশ টানছে,
ঐশী আহাদের চোখের দিকে তাকায় ঐশী আহাদের চোখ অন্যরকম নে’শা দেখতে পারছে এ চোখের অর্থ সে বুঝে,ঐশী আহাদের দিকে বেশিক্ষণ তাকিয়ে থাকতে পারলো না আবেশে চোখ বন্ধ করে নিলো,
ঐশীকে চোখ বন্ধ করতে দেখে আহাদ ঐশী ঠোঁটের ভাজে ঠোঁট ডুবিয়ে দেয়,ঐশী আহাদের ডাকে সাড়া না দিয়ে থাকতে পারলো না।
বেশ কিছুক্ষণ পর আহাদ ঐশীকে ছেড়ে দেয়।
আহাদের কাছ থেকে ছাড়া পেয়ে ঐশী দ্রুত উঠে দাঁড়ায় চলে যেতে নিলে আহাদ ওর হাত ধরে ফেলে ঐশী থেমে যায়,ঐশী থেমে থেমে নিশ্বাস নিচ্ছে,
ঐশীর এভাবে থেমে থেমে নিশ্বাস নেওয়াটা আহাদকে ঐশীর দিকে ক্রমশ টানছে,আহাদ ঐশীর হাত ধরে হেঁচকা টান দিয়ে নিজের সাথে মিশিয়ে নেয় ঐশীর হাত ধরে ঘুরিয়ে ঐশীকে জড়িয়ে ধরে ঘাড়ে মুখ গুঁজে দেয়,
আহাদের স্পর্শে ঐশী কেঁপে উঠে।
বৃষ্টি মাএা দিগুণ বেড়ে গেছে এতো বৃষ্টিতে দাঁড়িয়ে থাকাটা সম্ভব হচ্ছে না।
আহাদ এবার ঐশীকে কোলে তুলে নেয়,ঐশী আহাদের গলা জড়িয়ে ধরে আহাদ ছাদ থেকে নামার জন্য পা বাড়ায়।
আহাদ রুমে এসে ঐশীকে বিছানায় শুইয়ে দেয় ঐশী উঠতে নিলে আহাদ ঐশীর দু হাত বিছানার সাথে চেপে ধরে গলায় মুখ ডুবিয়ে দেয়।
আহাদ ঐশীর ঠোঁটে,উন্মুক্ত ঘাড়ে,পিঠে,গলায় ঠোঁট ছোঁয়াচ্ছে,ঐশীও তা আবেশে গ্রহণ করছে।
রাত যত গভীর হচ্ছে আহাদ ঐশীর নিশ্বাসও ততই গভীর হচ্ছে।
_
পর্দার ফাঁক দিয়ে আলোকরশ্মি চোখ পড়তেই ঘুম ভে’ঙে যায় ঐশীর,চোখ খুলে নিজেকে আহাদের বাহুডোরে আবিষ্কার করে,আহাদ নিশ্চিন্তে ঘুমাচ্ছে,
ঐশী আহাদের ঘুমন্ত মুখশ্রীতে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রয় রাতের দৃশ্য চোখে ভাসতেই ঐশী মুচকি হেসে আহাদের কাছ থেকে সরে আসে,আস্তে করে আহাদের কপালে ঠোঁট ছুঁইয়ে গায়ে চাদর জড়িয়ে বিছানা থেকে নেমে দাঁড়ায়,কাবার্ডের কাছে যেয়ে কাবার্ড থেকে জামা নিয়ে ওয়াশরুমে চলে যায়,কিছুক্ষণ পর ঐশী গোসল করে ওয়াশরুম থেকে বের হয়,আহাদকে ঘুমিয়ে থাকতে দেখে ঐশী জানালার পর্দা সরিয়ে দেয়,সূর্যের আলো আহাদের চোখে মুখে পড়ে,চোখে আলো পড়ায় আহাদের ঘুম ভে’ঙে যায় আহাদ চোখ মেলে ঐশীকে নিজের সামনে কিছুটা ঝুঁকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে।
জান পর্দা সরালে কেন খুব ঘুম পাচ্ছে ঘুমাতে দাও।
আর ঘুমাতে হবে না উঠুন এমনিতেই অনেক লেট হয়ে গেছে।
আহাদ কিছু বলার আগেই ঐশীর গলার দা’গটার উপর ওর চোখ পড়ে আর ও বুঝে দা’গটা কিভাবে হয়েছে।
এই কি হলো তাড়াতাড়ি উঠুন।
কথাটা বলে ঐশী চলে যেতে নিলে আহাদ ওর হাত ধরে হেঁচকা টান দিয়ে নিজের উপর ফেলে দেয়,ঐশী উঠতে নিলে ঐশীকে দু হাত দিয়ে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে।
ঐশীকে চুপচাপ শুয়ে থাকতে দেখে আহাদ বলে,
কি হলো আজ ছাড়ুন ছাড়ুন বলছো না কেন?
বলে কি কোনো লাভ হয় আপনি বলেও তো ছাড়েন না তাই আজ কিছু বলিনি।
বাহ তুমি তো বেশ বুদ্ধিমতী।
দেখতে হবে না বউটা কার।
আহাদ একহাত দিয়ে ঐশীর কোমড় জড়িয়ে ধরে আর অন্যহাত ঐশীর হাত বিছানার সাথে চেপে ধরে ঐশীর ঠোঁটের ভাজে ঠোঁট ডুবিয়ে দেয়।
__
ঐশী ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে চুল আঁচড়াচ্ছে আর আহাদ খাটের ওপর বসে আয়নায় ঐশীকে দেখছে,কিন্তু এভাবে দেখলে কি আর মন ভরে তাই আহাদ বসা থেকে উঠে ঐশীর কাছে এসে ঐশীকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে চুলের মাঝে মুখ ডুবিয়ে দেয়।
এই জান চুলে কি দাও চুলে এতো পা’গ’ল করার ঘ্রাণ কেন?
কি দিব আর স্যাম্পু আর কন্ডিশনার দেই,এই অনেক হয়েছে এবার গোসল করে অফিসে যান।
আজ যাবো না।
কেন আজ না আপনার একটা মিটিং আছে?
বউয়ের জন্য সব মিটিং ক্যান্সাল করে দিবো।
বউ কি বলেছে নাকি,উফফ যান না।
ওহহো জান তোমার জন্য শান্তি মতো রোমান্সও করতে পারি না,আচ্ছা চলো গোসল করে আসি।
কিন্তু আমি তো গোসল করেছি।
কেন গোসল করলে আমি কি তোমাকে গোসল করতে বলেছিলাম,আমি কিছু জানি না তোমাকে আমার সাথে গোসল করতেই হবে।
বলেই আহাদ ঐশীকে কোলে তুলে নেয়।
আহহা নামান।
ঐশীর কথা শুনে কে আহাদ ওকে কোলে তুলে ওয়াশরুমে চলে যায়,পা দিয়ে দরজা ভিড়িয়ে ঐশীকে কোল থেকে নামিয়ে ঝর্ণা ছেড়ে দেয়।
ঝর্ণার পানিতে দুজন ভিজে যাচ্ছে ঐশী দরজা খুলে চলে যেতে নিলে আহাদ ঐশীকে দরজার সাথে আটকে দরজার ছিটকিনি লাগিয়ে দেয়।
আহাদ দরজায় হাত রেখে ঐশীকে ওর হাতের মাঝে আটকে ফেলে,ঐশী কিছু বলবে তার পূর্বেই আহাদ ঐশীর গলায় মুখ ডুবিয়ে ছোট ছোট চুমুর বর্ষণ শুরু করে ঐশী আহাদের পিঠ খামচে ধরে।
#চলবে#আমার_তোমাকে_প্রয়োজন💖
#Writer_Tanisha_Akter_Tisha
#Part_31
কপি নিষিদ্ধ ❌
রাত ৯ টায়,
ঐশী রুমে বসে পড়ছিলো কাল ওর লাস্ট পরীক্ষা ওর এই সাবজেক্টটা কঠিন মনে হয়,ঐশী কপালে দু আঙুল ঠেকিয়ে পড়ছে,ওর পড়ার মাঝে আহাদ হন্তদন্ত হয়ে রুমে এসে পা’গ’লের মতো কিছু খুজতে লাগলো,
ওকে এভাবে হন্তদন্ত হয়ে কিছু খুজতে দেখে ঐশী আহাদের কাছে এসে বলে,
কি হয়েছে আহাদ এভাবে কি খুঁজছেন?
আমার মেডিসিন কোথায়?
মেডিসিন,কিসের মেডিসিন?
আহাদ রেগে চেচিয়ে বলে,
এখানেই তো আমার মেডিসিনের বক্সটা ছিল,এখান থেকে মেডিসিনের বক্স কে সরিয়েছে।
আহাদের চেঁচানোতে ঐশী ভয় পেয়ে যায়,ও দ্রুত অন্য ড্রয়ার থেকে মেডিসিনের বক্সটা নিয়ে এসে আহাদের হাতে দেয়,আহাদ দ্রুত ওর মেডিসিনটা নিয়ে মুখে পুরে নেয়,ঐশী আহাদকে পানির গ্লাসটা এগিয়ে দেয়,আহাদ ঐশীর হাত থেকে পানি নিয়ে খেয়ে নেয়।
বেশ কিছুক্ষণ পর আহাদ শান্ত হয়।
আহাদকে শান্ত হতে দেখে ঐশী আহাদের পাশে বসে আহাদের গালে হাত রেখে বলে,
রেগে ছিলেন?
আহাদ মাথা নাড়ায়।
রাগ কমেছে?
আহাদ আবারও মাথা নাড়ায়।
কিসের জন্য এতো রেগেছিলেন?
কিছু না।
কথাটা বলেই মেডিসিনটা নিয়ে আহাদ রুম থেকে চলে যায়।
ঐশী আহাদের যাওয়ার পানে তাকিয়ে রয়।
১ টায় আহাদ বাসায় ফিরে আসে রুমে এসে দেখে ঐশী বিছানায় বসে সামনের দিকে তাকিয়ে আছে।
আহাদ যে এসেছে তা ঐশী বেশ বুঝতে পেরেছ ঐশী আয়নায় তাকাতেই আহাদকে দেখতে পায় আহাদের সাদা শার্টে র’ক্তে’র দাগও ওর চোখে পড়ে ঐশী বুঝে যায় আহাদ কোথা থেকে এসেছে আর এই র’ক্তই বা কিসের।
আহাদ ঐশীর সাথে কথা না বলে কাবার্ড থেকে জামা নিয়ে ওয়াশরুমে চলে যায়,গোসল করে ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে ঐশীকে বিছানার ওপর খাবার নিয়ে বসে থাকতে দেখে।
ঐশী আহাদকে ওয়াশরুম থেকে বের হতে দেখে আহাদের কাছে যেয়ে আহাদকে বিছানায় বসিয়ে আহাদের মাথা মুছে দিচ্ছে,আজ ঐশী চুপচাপ
নিজের কাজ করছে।
যে মানুষটা আমি আসলেই কথার ঝুড়ি নিয়ে বসে সে আজ চুপ করে আছে।
আহাদ ঐশীকে চুপ করে থাকতে দেখে বলে,
ঘুমাওনি কেন?
আপনার জন্য অপেক্ষা করছিলাম।
ঐশী আহাদের সামনে বসে খাবারের প্লেটটা হাতে তুলে খাবার মেখে আহাদের মুখের সামনে তুলে ধরে আহাদ বিনা বাক্যে খেয়ে নেয়।
তুমি খেয়েছো?
নাহ।
খাবে না?
নাহ।
কেন?
খেতে ইচ্ছে করছে না।
ঠিক আছে তাহলে আমিও খাবো।
বাচ্চাদের মতো করবেন না আমার খেতে ইচ্ছে হলে আমি ঠিক খেয়ে নিবো।
ঐশী আহাদকে খাবার খাইয়ে এঁটো বাসন নিয়ে রান্নাঘরে চলে যায়।
ঐশী রুমে এসে বিছানা গুছিয়ে বালিশ ঠিক করে লাইট অফ করে শুয়ে পড়ে,আহাদ ঐশীর দিকে ঘুরে ঐশীকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে ঐশী এতে বাঁধা দেয় না,
আহাদ ঐশীর কাঁধে থুতনি রেখে বলে,
কি হয়েছে জান আজ আমার সাথে ঠিক মতো কথা বললে না কেন,রাতে খেলেও না,জান কি হয়েছে তোমার?
কিছু না।
আমার সাথে রাগ করেছো?
নাহ,কাল আমার পরীক্ষা আমার খুব ঘুম পেয়েছে, আমি ঘুমাবো।
কাল পরীক্ষা শুনে আহাদ আর ঐশীকে কিছু বললো না ওভাবেই ঐশীর ঘাড়ে মুখ ডুবিয়ে শুয়ে রইলো।
ভার্সিটির ক্যান্টিনে কপালে দু আঙুল ঠেকিয়ে বসে আছে ঐশী টেনশনে ওর মাথা ফে’টে যাচ্ছে,রোজা ওর জন্য কফি নিয়ে আসে।
এই নে কফি।
হুম।
অর্ধেক কফি শেষ করে রোজা বলে,
মাথা ব্যাথা কমেছে?
হুম কিছুটা।
ওরা কফিটা শেষ করে গাড়িতে উঠে বসে।
রুমে এসে ঐশী ফ্রেস হয়ে নেয়,আহাদও বাসায় চলে আসে।
জান আমার জামাকাপড় গুছিয়ে দাও তো।
জামাকাপড় গুছাবো!
হুম আমাকে ৭ দিনের জন্য ঢাকার বাহিরে যেতে হবে।
ওহ আচ্ছা।
একটু থেমে ঐশী বলে,
আহাদ একটা কথা বলি?
আহাদ ঐশীর কোমড় জড়িয়ে ধরে বলে,
হ্যাঁ জান বলো।
আপনি কিসের মেডিসিন খান?
ঐশীর কথা শুনতেই আহাদের হাত আলগা হয়ে যায়।
কি হলো আহাদ বলুন কেন আপনি এতো রেগে যান,
কেন রাগলে এতো হিং’স্র হয়ে উঠেন,কেন রাগলে হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন,আপনি কেন রাগ কন্ট্রোল করতে পারেন না কেনই বা মেডিসিন খেলে আপনার রাগ কমে,এই মেডিসিনের রহস্য কি?
এটা তোমার না জানলেও চলবে।
কিন্তু আহাদ,
ঐশী আমি এ ব্যাপারে আর একটা কথাও শুনতে চাই না।
আহাদ কথাটা বলে রুম থেকে চলে যায়।
ঐশী আহাদের যাওয়ার পানে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলে,
ঐশী ছোট লাগেজটা বের করে আহাদের জামাকাপড় গুছিয়ে দেয়,ঐশীর লাগেজ গুছাতে গুছাতে আহাদ গোসল করে নেয়,আহাদ ড্রেসিংটেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে রেডি হচ্ছে হাতের ঘড়িটা পড়ে গায়ে পারফিউম দিয়ে ড্রয়ার থেকে ওর রি’ভ’ল’বা’রটা বের করে প্যান্টের পকেটে গুঁজে রাখে।
আহাদ ঐশীর কপালের ঠোঁট ছোঁয়ায়।
জান আমি যাচ্ছি তুমি সাবধানে থেকো কোনোকিছু প্রয়োজন হলে সিয়াম কিংবা গার্ডদের বলবে,আমি কল দিলে কল রিসিভ করবে লেট যেন নাহয়।
আচ্ছা।
আসি।
হুম সাবধানে যাবেন পৌঁছে কল দিবেন।
আচ্ছা।
আহাদ লাগেজ নিয়ে রুম থেকে চলে যায়।
ঐশী আহাদের চিন্তায় বিভোর হয়ে আছে,
আহাদ কোন মেডিসিন খায়,কি এমন মেডিসিন যেটা আহাদের রাগ কমায় আদোও কি কোনো মেডিসিন রাগ কমাতে পারে?
মেডিসিনের নামও তো জানি না নাম জানলেও তো কিছু তথ্য পেতাম।
আচ্ছা সিয়াম ভাইয়া তো সবসময় উনার আশেপাশে থাকে উনার সাথে তো ভাইয়ার আরো আগে থেকে পরিচয় ভাইয়া কি এ ব্যাপারে কিছু জানে?
ঐশী সারা রুম পায়চারি করছে আর কথা গুলো ভাবছে।
_
রোজা ওর রুমে বসে টিভি দেখছিল তখনই ওর মা ওকে কল দেয় ও কল রিসিভ করে,
হ্যাঁ আম্মু বলো।
কেমন আছো মা।
আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি তুমি কেমন আছো?
আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি মা।
বাবা কোথায়?
বাহিরে গিয়েছে।
আম্মু কিছু কি বলবে?
হ্যাঁ মা তোমাকে দেখতে ইচ্ছে করছে একটু আসো না।
আচ্ছা আম্মু আমি সিয়ামকে জিজ্ঞেস করে বলছি।
আচ্ছা সিয়ামকেও নিয়ে আসবে।
আচ্ছা।
রোজা কল কেটে সিয়ামকে কল দেয়,
সিয়াম কল রিসিভ করে,
হ্যা প্রিয়তমা বলো।
একটা কথা বলার ছিল।
হ্যাঁ বলো।
আম্মু আমাদের দেখতে চাইছে।
অফিসে তো অনেক চাপ ভাইযাও ঢাকার বাহিরে গিয়েছে আমাকে একা হাতে সব সামলাতে হচ্ছে আমি তো যেতে পারবো না তুমি যেয়ে ঘুরে আসো।
কিন্তু আপনাকে ছাড়া যাবো।
যাও আম্মু যেহেতু তোমাকে দেখতে চাইছে তুমি দেখা করে আসো আর হ্যাঁ কিছু দিন থেকে এসো আম্মু আব্বুর ভালো লাগবে।
আচ্ছা।
রোজা কল কেটে জামাকাপড় গুছিয়ে রেডি হয়ে ঐশীর রুমে আসে,ঐশী ওকে দেখে বলে,
কিরে কোথায় যাচ্ছিস নাকি?
হ্যাঁ আম্মুর কাছে যাচ্ছি তুইও চল আমার সাথে।
নারে তুই যা আমি নাহয় অন্য একদিন যাবো।
আচ্ছা সাবধানে থাকিস।
আচ্ছা তুইও সাবধানে যাস,পৌঁছে কল দিস।
আচ্ছা।
রোজা বাসা থেকে বের হয়ে গাড়িতে উঠে বসে,
ড্রাইভার গাড়ি স্টার্ট দেয়।
রাত ১০ টায় সিয়াম বাসায় আসে ও ফ্রেশ হয়ে নিচে এসে ডাইনিং টেবিলে বসে ঐশী এসে সিয়ামকে খাবার বেড়ে দিয়ে নিজের প্লেটে খাবার তুলে নেয়।
ওরা একসাথে খাবার খেয়ে নেয়।
সিয়াম ওর রুমে বসে ল্যাপটপে কাজ করছিলো হঠাৎ কেউ ওর দরজায় নক করে।
কে?
ভাইয়া আমি।
ওহ ভাবি আসুন ভেতরে আসুন।
ঐশী দরজা ঠেলে ভেতরে আসে।
ভাইয়া আপনি কি ব্যাস্ত?
কিছুটা,আপনি কিছু বলবেন?
হ্যাঁ আপনার সাথে কিছু কথা ছিল,একটু সময় হবে?
হ্যাঁ অবশ্যই।
আসুন আমার সাথে।
ঐশী রুম থেকে বের হয়।
সিয়াম ল্যাপটপটা রেখে ঐশীর পিছু পিছু যায়।
ঐশী সিয়াম ছাদে চলে আসে,ওরা চেয়ারে বসে।
ঠান্ডা বাতাস বইছে ঐশী চোখ বন্ধ করে ঠান্ডা বাতাস অনুভব করে।
ভাবি বলুন কি বলবেন।
ভাইয়া আপনি তো অনেক বছর ধরে আহাদের সাথে আছেন তাই না।
জ্বী।
আপনি তো উনার সম্মন্ধে সব কিছু জানেন তাই না।
হ্যাঁ কেন?
ভাইয়া আমি যা জিজ্ঞেস করবো প্লিজ তার সত্যি উওরটা দিবেন আচ্ছা উনি কিসের মেডিসিন খায়,
মেডিসিন খেলে কি রাগ কমে?
ভাবি কথাগুলো আপনি ভাইয়াকে জিজ্ঞেস করেন আমি বলতে পারবো না।
কেন ভাইয়া প্লিজ আমাকে এই মেডিসিনের রহস্য বলেন,আহাদ এতো রেগে যান কেন রাগলে এতো হিং’স্র হয়ে উঠেন কেন,কেন সে হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলে আর কেনই বা মেডিসিনই ওনার রাগ কমাতে পারে।
ভাবি প্লিজ আপনি ভাইয়ার থেকে জেনে নিয়েন।
উনাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম কিন্তু উনি আমার প্রশ্নের উত্তর দেননি,প্লিজ ভাইয়া বলুন না।
ভাবি,
প্লিজ ভাইয়া আমি আপনাকে রিকুয়েষ্ট করছি প্লিজ আমাকে সত্যিটা বলুন,প্লিজ ভাইয়া।
আচ্ছা ঠিক আছে বলছি।
#চলবে#আমার_তোমাকে_প্রয়োজন💖
#Writer_Tanisha_Akter_Tisha
#Part_32
কপি নিষিদ্ধ ❌
আমি ভাইয়াকে ছোট বেলা থেকে চিনি,ভাইয়া আমার থেকে ২ বছরের বড়,আমার বয়স যখন ১ বছর তখন আমার মা মা’রা যায়,আমার বাবা ভাইয়াদের বাসায় ড্রাইভারের কাজ করতো,তো সে সুবাদে আমি প্রায়ই ভাইয়াদের বাসায় যেতাম ভাইয়ার মা অনেক ভালো ছিল,আমার তো মা ছিল না তাই আমি উনাকে মা বলে ডাকতাম উনিও আমায় নিজের ছেলের মতোই ভালোবাসতেন,উনাদের বাসায় গেলে আমাকে গোসল করিয়ে সুন্দর জামা পড়িয়ে দিতেন,ভাইয়াকে আর আমাকে একসাথে বসিয়ে খাইয়ে দিতেন,খাওয়া শেষ করে আমি আর ভাইয়া খেলতাম আর মা আমাদের প্রাণ ভরে দেখতো,মা সবসময় আমাকে তার ছোট ছেলে ভেবে ভালোবাসতো,সব ঠিক ছিল আমরা সবাই সুখেই ছিলাম কিন্তু একদিন,
একদিন কি?
মা মা’রা যায়,সেদিন আমি চিৎকার করে কেঁদেছিলাম বাবাকে জড়িয়ে খুব কেঁদেছিলাম,কাঁদতে কাঁদতে যখন ভাইয়ার দিকে চোখ পড়ে তখন ভাইয়াকে একদম শান্ত হয়ে বসে থাকতে দেখলাম সে যেন পাথর হয়ে গিয়েছিল একটা সময় ভাইয়া জ্ঞান হারিয়ে ফেলে,
আমি মায়ের ক’ব’রে মাটি দিতে পেরেছিলাম কিন্তু ভাইয়া পারেনি,মা মা’রা যাওয়ার ২ দিন পর ভাইয়ার জ্ঞান ফিরে জ্ঞান ফিরতেই ভাইয়া মাকে পা’গ’লের মতো খুঁজতে শুরু করে যখন উনি শুনে মা মা’রা গিয়েছে তখন উনি চিৎকার করে কেঁদে উঠে ঘরের সব কিন্তু ভে’ঙ্গে ফেলে আমরা কেউ তাকে আটকাতে পারেনি কিন্তু ছোট মা মানে ভাইয়ার খালামুনি উনাকে আমরা ছোট মা বলে ডাকি উনি এসেই ভাইয়াকে জড়িয়ে ধরে আর ভাইয়া শান্ত হয়ে যায় একটা সময় ভাইয়া ছোট মাকে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কাঁদতে লাগে।
মা মা’রা যাওয়ার পর ভাইয়া খুব অসুস্থ হয়ে পড়েছিলো ছোটমা ভাইয়াকে ছেড়ে যাওয়ার সাহস পাচ্ছিলো না তাই উনি ভাইয়ার সাথে থেকে যায়,ছোট মার যত্নে ভাইয়া আস্তে আস্তে সুস্থ হতে শুরু করে কিন্তু আমি আমার হাসিখুশি ভাইটাকে হারিয়ে ফেলি,ভাইয়া কেমন যেন চুপচাপ হয়ে যায়,দিন যত যাচ্ছিল ভাইয়াও কঠোর হচ্ছিল,সব কিছু ঠিক থাকলেও বিপ’দ বাধেঁ সেদিন,
বিপ’দ কিসের বিপ’দ!
ভাইয়াকে সং’শো’ধ’নী কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়।
কিহ!
হুম,একদিন আমি স্কুল থেকে সোজা ভাইয়ার বাসায় আসি কিন্তু বাড়িতে ঢুকে দেখি বাড়িতে অনেক পু’লি’শ এসেছে আর মেঝেতে ছোট চাচার লা’শ পড়ে আছে।
লা’শ!
হুম লা’শ,চাচার লা’শের সামনে আঙ্কেল মাথায় হাত দিয়ে বসে ছিল,আর উনার থেকে কিছুটা দূরে ভাইয়া আর ছোটমা দাঁড়িয়ে ছিল,আমার বাবাও সেখানে ছিলো,আমি কিছু বুঝে উঠার আগেই দুটো পু’লি’শ ভাইয়াকে নিয়ে যায়,সবার কথা শুনে বুঝতে পারি পু’লি’শ ভাইয়াকে সং’শো’ধ’নী কে’ন্দ্রে নিয়ে গেছে।
কিন্তু কেন?
এই কেনোর উওর আমি আজ অব্দি জানতে পারিনি,
ভাইয়া কখনোই এ বিষয়ে আমার সাথে কথা বলেনি আমি অনেক বার জানতে চেয়েছি কিন্তু ভাইয়া বরাবরের মতোই চুপ ছিল।
তাহলে আমরা কি করে জানবো,কে বলবে আমাদের?
সিয়াম অনেক ভেবে বলে,
ছোট মা,হ্যাঁ ছোট মা,সেদিনের ঘটনার সম্পর্কে ছোট মা নিশ্চয়ই কিছু জানে আমাদের ছোট মার কাছে যেতে হবে।
ছোট মা কোথায় থাকেন?
চট্টগ্রামে থাকেন।
আচ্ছা ঠিক আছে আমি কালই চট্টগ্রাম যাবো ছোটমার কাছে।
ঠিক আছে কাল নিয়ে যাবো।
না থাক আপনাকে যেতে হবে না।
আপনাকে একা ছাড়লে ভাইয়া আমাকে কে’টে কুঁচি কুঁচি করবে,আমি আপনাকে কাল চট্টগ্রামে নিয়ে যাবো,
এখন যেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন।
সিয়াম ছাদ থেকে নেমে যায়।
ঐশী ছাদে কিছুক্ষণ হাটাহাটি করে রুমে চলে আসে।
ঐশী রুমে এসে বিছানা গুছিয়ে বালিশ ঠিক করে শুয়ে আহাদকে ভিডিও কল দেয়,আহাদ কল রিসিভ করে।
জান কেমন আছো?
আলহামদুলিল্লাহ ভালো,আপনি এখনো ড্রেস চেঞ্জ করেননি?
মাএই কাজ শেষ করে হোটেলে ফিরেছি।
ওহ,ফ্রেশ হয়ে কল দিন।
আচ্ছা।
আহাদ কল কেটে জামা নিয়ে ওয়াশরুমে চলে যায় কিছুক্ষণ পর গোসল করে ওয়াশরুম থেকে বের হয়,
টাওয়ালটা রেখে ঐশীকে কল দেয়,ঐশী সাথে সাথে কল রিসিভ করে যেন ও আহাদের কলেরই অপেক্ষায় ছিলাে।
সরি জান তোমাকে একটু বেশিই অপেক্ষা করতে হলো।
সমস্যা নেই,ডিনার করেছিলেন?
হুম তুমি?
হুম আমি আর ভাইয়া একসাথে ডিনার করেছি।
রোজা বাসায় নেই?
না ও ওর বাসায় গিয়েছে।
ওহ,ওয়েট তোমাকে একটা জিনিস দেখাই।
আহাদ ওর ব্যাগ থেকে এক জোড়া কানের দুল বের করে ঐশীকে দেখায়।
জান ইয়ারিংটা কেমন?
খুব সুন্দর।
হোটেলে আসার সময় ইয়ারিং জোড়ার উপর নজর পড়লো তাই দেরি না করে কিনে ফেললাম,ইয়ারিংটা পড়লে তোমাকে খুব সুন্দর লাগবে।
আহাদের কথায় ঐশী মুচকি হাসে।
জান তোমাকে অনেক মিস করছি।
আমিও আপনাকে অনেক মিস করছি।
মন চাইছে ছুটে তোমার কাছে চলে আসি কিন্তু সেটা তো সম্ভব না।
হুম অনেক সময় পরিস্থিতি আমাদের মাঝে দূরত্ব তৈরি করে দেয়।
হুম তবে সাত দিন পর এ দূরত্ব ঘুচে যাবে আমি তোমার কাছে চলে আসব।
হুম।
আরো কিছুক্ষণ কথা বলে ঐশী কল কেটে দেয়।
সিলিংয়ের দিকে তাকিয়ে ভাবে,
আহাদ আপনার হয়তো বেদনাদায়ক অতীত রয়েছে যেটার সম্পর্কে আপনি আমায় কিছু জানাতে চান না কিন্তু আমি জানবো,কেন আপনাকে সং’শো’ধ’নী কেন্দ্রে যেতে হলো,কে চাচাকে খু’ন করলো,মেডিসিনের রহস্যই বা কি আর কেনই বা বাবার সাথে আপনি ঠিক মতো কথা বলেন না আপনাদের মাঝে কিসের দ্ব’ন্দ্ব,
কিভাবে এই দ্ব’ন্দ্ব তৈরি হলো?
আমার সব প্রশ্নের উত্তর একজনই দিতে পারবে আর সে হচ্ছে ছোট মা,আমার প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে কাল যাবো ছোট মার কাছে।
ফোনের শব্দে ঘুম ভেঙে যায় ঐশীর,হালকা ভাবে চোখ খুলে দেখে আহাদ ভিডিও কল দিয়েছে,ঐশী কল রিসিভ করে ফোনটা বালিশের সাথে কাত করে রাখে,
গুড মনিং জান।
ঐশী চোখ বন্ধ করে ঘুম ঘুম কন্ঠে বলে,
গুড মর্নিং।
কি হলো আমার জানটার এখনো ঘুম ভাঙ্গেনি?
আমি থাকলে ঠিক মতো ঘুমাতে পারতে তাহলে এতো বেলা অব্দি ঘুমাতে হতো না।
আপনি না থাকাতে ভালোমতো ঘুমাতে পেরেছি আপনি থাকতে তো আমাকে ঠিক মতো ঘুমাতেই দেন।
কি করি আমি?
আপনি আমাকে জ্বা’লাতন করেন।
আহাদ দাঁত চেপে হেসে বলে,
তাই বুঝি,তো আমি কিভাবে জ্বা’লাতন করি?
আপনি,
কথাটা বলতে যেয়েই ঐশীর হুঁশ আসে ভাগ্যিস হুঁশ এসেছিল নাহলে কি বলতে কি বলে ফেলতো।
কি জান বলো আমি কিভাবে জ্বা’লাতন করি।
উফফ রাখুন তো এসব কথা।
ঐশী কল কেটে দেয় আহাদ হাসতে হাসতে লুটোপুটি খায়।
হাহা আমার বউটা কতো বোকা।
সিয়াম রেডি হয়ে ডাইনিং টেবিলের চেয়ারে বসে পড়ে ঐশী নিচে এসে সিয়ামকে খাবার বেড়ে দিয়ে নিজের প্লেটেও খাবার তুলে নেয়,সিয়াম খেতে খেতে বলে,
ভাবি আমার অফিসে কিছু কাজ আছে আমি সেগুলো করে দুপুরে বাসায় আসবো আপনি রেডি হয়ে থাকবেন আমরা বাসা থেকে সোজা এয়ারপোর্টে যাবো।
আচ্ছা।
সিয়াম নাস্তা করে অফিসে চলে যায়,ঐশী ওর রুমে এসে আহাদকে কল দেয় কিন্তু আহাদের ফোন বিজি বলছে তাই ঐশী আর কল দেয় না কিছুক্ষণ পর আহাদ কল দেয় ঐশী কল রিসিভ করে।
সরি জান একটা ইমপোর্টেন কল এসেছিলো তাই,
আচ্ছা সমস্যা নেই আমি কিছু মনে করিনি,খেয়েছেন কিছু?
হুম,তুমি নাস্তা করেছো?
হুম,হোটেলে নাকি মিটিং এ?
হোটেলে,একটু পর বের হবো।
ওহ,আচ্ছা মিটিং শেষ করে কল দিয়েন।
আচ্ছা।
দুপুরে ঐশী গোসল করে দুপুরের খাবার খেয়ে কিছুক্ষণ বিশ্রাম করে রেডি হয়ে নেয়,ঐশী আজ নীল রংয়ের থ্রি পিস পড়েছে,সাজ বলতে জাস্ট ঠোঁটে লিপস্টিক দিয়েছে আর কিছু না।
ঐশী রুমে বসে সিয়ামের জন্য অপেক্ষা করছে।
সিয়াম ইতোমধ্যে বাসায় এসে পড়েছে ও ওর রুমে রেডি হচ্ছে।
কিছুক্ষণ পর সিয়াম ঐশীর রুমে এসে নক করে বলে,
ভাবি আসেন।
ঐশী ওর ব্যাগটা হাতে তুলে রুম থেকে বের হয়ে বাহির থেকে দরজা লাগিয়ে নিচে চলে আসে,সিয়াম গাড়িতে বসে ঐশীর জন্য ওয়েট করছিলো,ঐশী গাড়িতে উঠে বসতেই ড্রাইভার গাড়ি স্টার্ট দেয়।
বেশ কিছুক্ষণ পর ওরা এয়ারপোর্টে যেয়ে পৌঁছায়,
সেখানে সব ফর্মালিটিস পূরণ করে প্লেনে উঠে বসে।
ঐশী জানালা দিয়ে বাহিরে তাকিয়ে আছে উপর থেকে সব কিছু কতো ছোট এবং সুন্দর লাগছে।
বাহিরের থেকে চোখ সরিয়ে ঐশী চোখ বন্ধ করে,
“হে আল্লাহ অনেক আশা নিয়ে ছোট মার কাছে যাচ্ছি দয়া করে আমায় নিরাশ করিয়েন না।”
#চলবে
[