#আমি_সেই_তনু
#১৪পর্ব
#জান্নাত_উল_ফেরদৌস
বাসায় গিয়ে তনু এমন ভাবে সব কিছু দেখছে যেনো নতুন ঢুকেছে!! আকাশ আর আজ বাড়িয়ে কিছু বললো না চুপ চাপ ওপরে চলে গেলো, তনু ঘুরে ঘুরে সব দেখছে।
ওপরে গিয়ে এদিক ওদিক তাকিয়ে আকাশের রুম এ গেছে, আকাশ ল্যাপটপ নিয়ে ব্যাস্ত। তনু কিছু না বলে আলমিরা খুঁজে খুঁজে একটা শাড়ী বের করলো ফ্রেশ হয়ে সেটা ই পড়ল। আকাশ দেখে অবাক চোখে, কিরে একা একা এত সুন্দর শাড়ী পরা শিখলি কি করে!?
তনু হাসি মুখে, না মানে ভাইয়া চেষ্টা করতে করতে হয়ে গেছে।
তনু কে আজ যেনো কেমন লাগছে, আকাশ কে কেনো জানি তনুর প্রতি আজ আকর্ষিত করছে না!! কেমন আকাশের চোখে চোখ রেখে কথা বলছে, লজ্জাবতী তনু কে আর সেই লজ্জাবতী ও লাগছে না।
আকাশ আবার কাজে মণ দিলো। লতিফা ডাকছে ডিনার এর জন্য।
আকাশ আর তনু নেমে এলো, লতিফা খেতে দিচ্ছে । তনুকে খাইয়ে দিতে গেলো। তনু নাক সিটকে বললো, আমি কারোর হতে খাই না!!
আকাশ আর লতিফা চোখ বড় বড় করে তনুর দিকে তাকালো, যে তনুর খালামনির হতে না খেলে খাবার হজম হয় না সেই তনু নাকি তার হাতে খাবে না।
আকাশ ধমকের সুরে, আগে তো খাবার খাইয়ে না দিলে খেতে পারতি না হঠাৎ কি হলো তোর?
তনু : না মানে শরীর টা কেমন যেনো লাগছে , আচ্ছা খালামনি খাইয়ে দাউ। লতিফা কিছু না বলে খাইয়ে দিচ্ছে।
আকাশ: তোকে কাল থেকে নতুন টিচার পড়াতে আসবে ,।
তনু: আচ্ছা কখন থেকে?
আকাশ : সকাল থেকে।
খাওয়া শেষ করে আকাশ রুমে এসে ল্যাপটপ দেখছে। হঠাৎ তনু এসে পেছন থেকে আকাশের কাধে একটা চুমু খায়!! আকাশ অনেক অবাক হচ্ছে, বিকাল থেকে তনুর কোনো আচরণই আকাশের ভালো লাগছে না। কিন্তু মুখে কিছু বলছে না।
তনু: you are so handsome, im in love with you ভাইয়া।
আকাশ: আমিও তো তোকে ভালবাসি, তোর মুখে এই কথা টা সোনার জন্য কত অপেক্ষা করেছি আমি জানিস?
তনু আকাশের ল্যাপটপ সরিয়ে নিজে নিজে আকাশের শার্ট এর বোতাম খুলছে!! আকাশ এবার সত্যি ভীষণ অবাক হচ্ছে, কাল রাতে যেই মেয়ে ভয়ে বার বার ঘেমে যাচ্ছিল আজ নাকি নিজে থেকে ই…
আকাশ: তোর ভয় লাগছে না ?
তনু: কিসের ভয় ? তোমার মত এমন একটা সুদর্শন পুরুষ মানুষ দেখলে কোন মেয়ে ঠিক থাকতে পারে বলো তো ?
তনুর কথা আকাশের অত পছন্দ হলো না!!
আকাশ কিছু বলতে যাবে তখনই তনু আকাশের ঠোঁটে মুখ ডুবাল।
আকাশের আজ কেনো জানি তনুর কাছে আসতে গা ঘিন ঘিন করছে !! তবুও অত না ভেবে তনু কে রিপ্লাই দিলো আকাশ ।
তনু : আজ থেকে তুমি শুধু ই আমার আকাশ!!
ঘন্টা খানেক পর তনু আকাশ ক্লান্ত হয়ে শুয়ে আছে , আকাশ কত হয়ে তনুর মুখের তিল টা দেখছে। কেমন যেনো লালচে রঙের লাগছে আজ। আকাশ হাত দিয়ে তনুর তিল টা স্পর্শ করতে ই তনু আতকে উঠলো । যেনো তিল টা কোনো ভাবে বানানো হয়েছে!!
আকাশ : কি হয়েছে?
তনু: কিছু না! আমার ঘুম পাচ্ছে , গুড নাইট।
আকাশ শুয়ে শুয়ে ভাবছে আমি কি কিছু ভুল করলাম!! তনু এমন বিহেভ কেনো করছে…
মনে হচ্ছে এটা আমার তনু না। ভাবতে ভাবতে ই ঘুমিয়ে গেছে আকাশ।
পরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে আকাশ অবাকের ওপর অবাক হচ্ছে অগোছালো তনু আকাশের আগে ঘুম থেকে উঠেছে।আকাশের মনে অনেক প্রশ্ন জাগছে কিন্তু কিছু বললো না ।
সকালে তনুর টিচার পড়াতে গিয়ে নিজে ই অবাক হচ্ছে যেই মেয়ে অঙ্কে টপ করতো সে নাকি অংকের অ ও পারছে না।
টিচার যাওয়ার সময় আকাশের কাছে ও ব্যাপার টা বলে গেলো।
আকাশ মনে মনে ভাবছে সে ও কি কম অবাক হয়েছে!!
সকালে লতিফা তনু কে রোস্ট করে দিয়েছে কিন্তু তনু বললো সে নাকি এটা পছন্দ করে না!!
লতিফা: এটা তো তোর প্রিয় খাবার ছিল!?
তনু : খাবার নিতে নিতে ,আজ ভালো লাগছে না ।
লতিফা আর কিছু বলল না।
আকাশ বুঝতে পারছে এটা ওর তনু না!! কিন্তু প্রমাণ ছাড়া কিচ্ছু করা যাবে না।
আকাশ তনু কে স্কুল এ দিয়ে নিজে অফিসে চলে গেল।
আকাশ অফিসে গিয়ে ভাবছে, কীকরে এসব প্রমাণ করবে।।। ছোটো খালামনি তো বেচেঁ নেই তাহলে কিভাবে!? তনুর বাবা কিন্তু সে তো জেল এ , যা করার তনুর বাবা কে দিয়ে ই করতে হবে।
আকাশ অনেক অনুরোধ অনুনয় বিনয় করে তনুর বাবার ডিএনএ সিম্বল কালেক্ট করেছে ।
আজ যেকোরে ই হোক তনুর শরীর এর উপাদান সংগ্রহ করতে হবে …
সারাদিনের ক্লান্তি শেষে বাসায় এসে বিশ্রাম নিচ্ছে, তনু এসেছে। এমন অশ্লীল পোশাকে আকাশ কখনো ই তনু কে দেখে নি। তবে আর অবাক হলো না কারণ তনু কাল থেকে যা যা করছে সবই অবাক করার মতো বিষয়।
আকাশ ল্যাপটপ রেখে তনুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে….
রুম বাড়ি হয়েছে আকাশ তনুর ভারী নিঃশ্বাসে, এক পর্যায় আকাশ সুযোগ বুঝে তনুর মাথা থেকে একটা চুল ছিঁড়ে নিলো।
তনু ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে, আকাশ তনুর মুখের দিকে খুব বেশি টাকায় না কারণ কেমন কেনো মায়া কাজ করে না আকাশের।
পরদিন সকালে তনু কে স্কুল এ দিয়ে সোজা ওর বন্ধুর চেম্বার এ চলে গেলো। ডিএনএ সিম্বল গুলো দিয়ে আসলো ডক্টর.রবি কে।
সারাদিন অফিস এ ই ছিল পরে তনু কে নিয়ে বাসায় ফিরলো।
লতিফা ও কেমন চুপ চাপ হয়ে গেছে তনু কে যেনো লতিফা ও আজ কাল চিনতে পারে না……
কিন্তু মুখে কিছু বলে না।
পরদিন সকালে রবি ফোন করলো …
রবি: hello। আকাশ, তুই একটু আমার চেম্বারে আয়
আকাশ: okay
গাড়ী নিয়ে বেরিয়ে গেলো রবির চেম্বার এর দিকে।
গিয়ে দেখলো রবি ডিএনএ রিপোর্ট হাতে নিয়ে ই বসে আছে।
আকাশ কিরে রবি রিপোর্ট কি?
রবি: রিপোর্ট পজিটিভ।
আকাশ কেনো অবাকের ওপর অবাক হলো।
আকাশ: তুই কি sure?
রবি: ১০০% রিপোর্ট দেখ।
আকাশ রিপোর্ট হাতে নিয়ে মনে মনে ভাবছে। আকাশের হয়তো কোথাও ভুল হচ্ছে, তনু কেনো অন্য কেউ হতে যাবে। বিয়ে হয়েছে তাই হয়তো নিজেকে পরিবর্তন করার চেষ্টা করছে। আর কিছু না ভেবে রিপোর্ট নিয়ে বেরিয়ে গেলো….
চলবে?