#এক_খণ্ড_কালো_মেঘ
#পর্ব_১৩
#নিশাত_জাহান_নিশি
অয়ন্তীর নিঁখোজের খবরটা পেয়ে-ই অনিক তার সমস্ত কাজকর্ম ছেড়ে ঢাকায় ছুটে এসেছে। সেও নিজের মত করে অয়ন্তীকে পাগলের মত খুঁজে বেড়াচ্ছে। আলিজাকে নানানভাবে জেরা করছে। ভার্সিটিতে অয়ন্তীকে কেউ বিরক্ত করত কীনা বা অয়ন্তী কারো সাথে কোনো সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিল কীনা সব খবরাখবর সে এই মাঝরাতে এসে আলিজার কাছ থেকে নিচ্ছে। ঘুম টুম যেন সব হারাম হয়ে গেছে তার!
আলিজার সাথে কথাবার্তা শেষ করে অনিক যেইনা হম্বিতম্বি হয়ে বাড়ি থেকে বের হতে যাবে ঠিক তক্ষণি কোনোভাবে তার চোখ পড়ল ড্রয়িংরুমের পূর্ব-পার্শ্বে থাকা রাফায়াতের ছোট্টো রুমটির দিকে! খোলা দরোজা। ভেতর থেকে পুরুষালী কণ্ঠের সুমধুর গান ভেসে আসছে! এই মাঝরাতে আবার কে গান গাইছে? কার মনে এত সুখ, এত রঙ? তীব্র কৌতূহল নিয়ে অনিক তার শার্টের কলার ঝেড়ে যেইনা খোলা দরোজা ডিঙিয়ে রুমের ভেতর প্রবেশ করল অমনি সে দেখতে পেল একজন সুঠাম দেহের অধিকারী পুরুষ তার ঠিক উল্টোদিক ফিরে দাঁড়িয়ে আছে। শূন্য আকাশের দিকে মুখ তার। ড্রিম লাইটের আধো আলোতে তার পেছনের দিকটা অনিক তার আবছা নয়নে দেখতে পারছে। উন্মুক্ত ছেলেটির শরীর। মুখ থেকে উচ্চারিত হচ্ছে ফরফর করে ইংরেজি গান! যে গানের অর্থ সে সঠিক ধরতে পারছেনা। কণ্ঠটা যদিও তার পূর্ব পরিচিত বলে মনে হচ্ছে তবে ছেলেটি কে? তা সে এখনো অবধি আন্দাজ করতে পারছেনা! কৌতূহল তার ক্রমাগত বৃদ্ধি পেতে লাগল। এইদিকে আলিজার বুকের ভেতরে সাইক্লোন বইতে লাগল! শুধু আলিজা-ই নয় বরং তার পরিবারের সবার মনে তীব্র ভয়-ভীতি কাজ করতে লাগল। সবার ভয় রাফায়াতকে নিয়ে। অনিক না আবার কোনোভাবে রাফায়াতকে দেখে ফেলে! অনিক সম্পর্কে তাদের সবার কম-বেশি ধারণা আছে। কতটা মা’স্তা’ন টাইপের এই ছেলে! তার উপর অনিক বর্তমানে চট্টগ্রামে থাকছে। রাফায়াতের বাড়িও চট্টগ্রাম! কোনোভাবে যদি তাদের কানেকশান থেকে থাকে বা দুজন দুজনকে আগে থেকে চিনে থাকে তাহলে তো রাফায়াতের জন্য তা হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়াবে! এই মুহূর্তে তাদের ঠিক কী করণীয় আদোতেই বুঝতে পারছেনা তারা!
কিছু জানার বা দেখার আগ্রহ বেশিক্ষণ ছাপিয়ে রাখতে পারলনা অনিক। পা বাড়িয়ে সে যেইনা ছেলেটির কাছাকাছি যাওয়ার চেষ্টা করল অমনি পেছন থেকে আরিফ এসে অনিকের নাম ধরে ডেকে উঠল! তার উদ্দেশ্য-ই যেন ছিল অনিককে তার লক্ষ্য থেকে আটকে দেওয়া! কার্য উদ্ধার হতেই সে উত্তেজিত গলায় অনিককে ডেকে বলল,
“অনিক ভাই অনিক ভাই। আমরা হয়তো অয়ন্তী ভাবির খোঁজ পেয়ে গেছি!”
মুহূর্তের মধ্যেই অনিক পিছু ঘুরে তাকালো। দ্রুত পায়ে হেঁটে এসে আরিফের মুখোমুখি দাঁড়ালো। তীব্র অস্থিরতা নিয়ে আরিফকে ঝাঁকিয়ে বলল,,
“কোথায় অয়ন্তী বল?”
“নিচে চলুন। পরে বলছি।”
হুট করেই অনিকের মনে সন্দেহের সৃষ্টি হলো! ভ্রু যুগল ঈষৎ কুঁচকে সে আরিফের দিকে সন্দেহজনক দৃষ্টি নিক্ষেপ করল। চোয়াল শক্ত করে বলল,,
“তুই তো আমার শত্রু ছিলি তাইনা? হুট করেই আমার সাথে এত ভাব জমাতে এলি কেন হ্যাঁ? কারণ কী?”
থতমত খেয়ে গেল আরিফ! তবুও সন্তপর্ণে পরিস্থিতি সামলে নেওয়ার শতভাগ চেষ্টা করল। বিচলিত না হয়ে বরং স্পষ্ট গলায় বলল,,
“কী যে বলেন না ভাই? আমাদের মধ্যে যতই শত্রুতা থাকুক না কেন একই এলাকার ভাই ব্রাদার তো আমরা নাকি? এখন যেমন আপনার বিপদে আমি পাশে এসে দাঁড়িয়েছি তদ্রুপ আমার বিপদেও তো আপনি পাশে এসে দাঁড়াবেন তাইনা? আরিফ স্বার্থ ছাড়া কোনো কাজ করেনা ভাই। ভেবে নিন এর পেছনেও আমার স্বার্থ আছে!”
আরিফের মুখের কথা বিশ্বাস করতে বাধ্য হলো অনিক! বিশ্বাস করবে-ই বা না কেন? আরিফ যেভাবে ভোলাভালা কণ্ঠে হৃদয় নিংড়ানো সমস্ত অনুভূতি মাখিয়ে কথাগুলো বলছিল সেই জায়গায় যেকোনো কেউ এক কথাতেই তার মুখের কথা বিশ্বাস করতে বাধ্য! আরিফের বাঁ কাঁধে ভরসার হাত রাখল অনিক! আরিফকে নিয়ে বাড়ির সদর দরোজার দিকে অগ্রসর হলো। অমনি মাথা ঘুরিয়ে পেছনে তাকালো আরিফ। ভয়ে সিঁটিয়ে থাকা আলিজার দিকে বাঁকা চাহনিতে তাকালো। শার্টের কলারটা খানিক উঁচিয়ে বেশ ভাব নিয়ে তার ক্ষমতা দেখালো! স্বস্তির শ্বাস ফেলল আলিজা! বুকে হাত রেখে মাথা নুয়ালো। বিড়বিড় করে বলল,,
“ভাগ্যিস! ঠিক সময়ে আরিফটা এসেছিল!”
বাড়ির প্রত্যেককে এক এক করে যার যার রুমে পাঠিয়ে দিলো আলিজা! ধীর পায়ে হেঁটে সে একাই রাফায়াতের রুমে প্রবেশ করল। অন্ধকারে দাঁড়িয়ে রাফায়াত কেমন যেনো পৈশাচিক হাসি হাসছে। একাধারে সিগারেট টেনে-ই চলছে! উন্মাদ হওয়া গলায় বলছে,,
“তোর খেলা শেষ হয়ে আসছে অনিক! ইউ আর ফিনিশড অনিক! ইউ আর টোটালী ফিনিশড!”
অবাক হলো আলিজা! শুধু অবাক নয় খুব বেশি অবাক হলো। রাফায়াতের দিকে দ্রুত পায়ে এগিয়ে গেল সে। সন্দিহান গলায় প্রশ্ন ছুড়ল,,
“আপনি অনিক ভাইকে চিনেন রাফায়াত ভাই?”
মুহূর্তের মধ্যেই সিগারেটটি হাত থেকে ছুড়ে ফেলল রাফায়াত! ঘটনার আকস্মিকতায় সে প্রসঙ্গ পাল্টে নেওয়ার শতভাগ চেষ্টা করল। আলিজার দিকে তাকিয়ে ঝেড়ে কেশে বলল,,
“এসব নিয়ে পরে কথা হবে আলিজা। নাও আই নিড টু স্লিপ।”
রাফায়াতের কথা মেনে নিলো আলিজা। মাথায় শত শত প্রশ্নের ঝুঁড়ি নিয়ে সে রাফায়াতের রুম পরিত্যাগ করল। আলিজা রুম থেকে বের হতেই রাফায়াত ঠাস করে রুমের দরোজাটি লাগিয়ে দিলো! ভয়ে আঁতকে উঠল আলিজা। বুকে থু থু ছিটিয়ে দৌঁড়ে সে তার রুমের দিকে অগ্রসর হলো। রুমে প্রবেশ করেই সে কান্নায় ভেঙে পড়ল! অয়ন্তী কোথায় যেতে পারে বা কোথায় থাকতে পারে এই ভেবে তার কষ্টের পরিমাণটা যেন বেগতিক বাড়তে লাগল!
কিয়ৎক্ষণ পর বাড়ির সবাই ঘুমিয়ে পড়তে-ই রান্নাঘর থেকে চুপিচুপি খাবার নিয়ে রাফায়াত বাড়ি থেকে আবারও বের হয়ে গেল! ভোরের আনাগোনা তখন ধীর গতিতে শুরু হতে লাগল। এখন থেকে রাফায়াতের মোট তিনটি দিকেই ব্যালেন্স রাখতে হবে। প্রথমত, অয়ন্তীর কাছাকাছি থাকা। দ্বিতীয়ত, ঢাকা থেকেও চট্টগ্রামের খবর রাখা। তৃতীয়ত, সময় মতো আলিজাদের বাড়িতেও উপস্থিত থাকা। যেন কেউ কিছু সন্দেহ করতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখা!
,
,
হাঁটুতে মাথা রেখে এখনো পূর্বের ন্যায় কেঁদে চলছে অয়ন্তী! ভয়ে, আতঙ্কে, যথেষ্ট খাবার এবং ঘুমের অভাবে তার দিন-দুনিয়া নিরান্দন ঠেকছে। তার উপর স্যাতঁস্যাতে অন্ধকার রুম। ওয়াশরুমের খুবই বিচ্ছিরি অবস্থা। টয়লেট পেলেও যাওয়ার মত কোনো উপায় নেই! ভাগ্যের এই নির্মম পরিহাসে তার মরি মরি অবস্থা। রাফায়াতের প্রতি তীব্র ক্ষোভ জমাট বাঁধতে লাগল তার মনে। সামনে পেলে এক্ষুণি রাফায়াতকে খাবলে খুবলে খাবে এই দুঃসাধ্য ভাবনা-ই তার মস্তিষ্কে চেপে বসল! অমনি অয়ন্তী খেয়াল করল খাটটা কেমন যেন নড়ছে। এক মুহূর্ত পর পর কেঁপে কেঁপে উঠছে। বুঝতে বেশি বেগ পেতে হলোনা কারো ফোন সাইলেন্ট মোডে বাজছে। তার মানে রাফায়াত কী ভুলে তার ফোনটা এখানে ছেড়ে চলে গেছে? আশার আলো যেন খুঁজে পেল অয়ন্তী! ঝট করে সে হাঁটু থেকে মাথাটা তুলল। হাতড়ে তার পাশ থেকে বাজতে থাকা ফোনটির স্ক্রীনে তাকালো। অশ্রুসিক্ত অসম্ভব ফোলা ফোলা চোখে সে স্ক্রীণে ভাসতে থাকা সেভ করা নাম্বারটি স্পষ্টভাবে দেখতে পারছিল না! চোখে প্রচণ্ড জ্বালা করছিল। চট জলিদ কলটি কেটে সে অনিকের নাম্বারে কল করার মত দুঃসাহসিক সিদ্ধান্ত নিলো। তবে অতি উত্তেজনায় কলটি কাটতে গিয়ে হঠাৎ রিসিভ হয়ে গেল! অমনি হেঁচকি তুলে কাঁদতে থাকা একটি মেয়ের কণ্ঠস্বর তার কর্ণকুহরে প্রতিধ্বনিত হলো! ভরাট গলায় নিদারুন কাকুতি মিনতি করে মেয়েটি বলল,,
“আমাকে মাফ করে দাওনা রাফায়াত প্লিজ। আমি যা করেছি ভুল করেছি। চরম ভুল করেছি। তোমার সাথে সম্পর্কে থাকার পরেও আমি অন্য কারো সাথে গভীর সম্পর্কে জড়িয়েছি! বিশ্বাস করো আমি জড়াতে চাইনি তার সাথে। কথায় আছেনা? দুষ্টু লোকের মিষ্টি কথা? আমি তার মিষ্টি কথাতেই জড়িয়ে পড়েছিলাম রাফায়াত। এবারের মত আমাকে ক্ষমা করে দাও প্লিজ। তুমি আমাকে ক্ষমা না করলে কিন্তু আমি সত্যি বলছি সু’ই’সা’ই”ড করব!”
অয়ন্তী তাজ্জব বনে গেল! মুখে হাত দিয়ে সে থম মেরে বসে রইল। মেয়ের কণ্ঠটি তার বড্ড চেনা চেনা লাগছিল। এর আগেও স্বরটি কোথাও শুনেছে এমনটা মনে হচ্ছে। কান থেকে ফোনটি সরিয়ে এনে সে স্ক্রীণের দিকে এবার ভালো করে তাকাতেই আকস্মিকভাবে রুমের দরোজা খুলে রাফায়াতের আগমন ঘটল। সঙ্গে সঙ্গেই হাত থেকে ফোনটি ছিটকে পড়ে গেল অয়ন্তীর! প্রিয়া ঐ প্রান্ত থেকে হরদমে হ্যালো হ্যালো করতে লাগল। কী হয়েছে রাফায়াত? কিছু বলছ না কেন? কেবল এই কথাগুলোই মৃদু আওয়াজে আওড়াতে লাগল। রুমে দ্বিতীয় কারো উপস্থিতি পাওয়া মাত্রই অয়ন্তীর বুক ধড়ফড় করতে লাগল। কেমন যেন পালপিটিশান হতে লাগল।
ইতোমধ্যেই হাতে থাকা মাঝারি আকৃতির চার্জ লাইটটি জ্বালিয়ে দিলো রাফায়াত। অমনি সে দেখতে পেল অয়ন্তী ভয়ে থরথর করে কাঁপছে! দেখেই বুঝা যাচ্ছে কিছু একটা অনর্থ করেছে সে! নতুবা আকস্মিক কারো আগমনে ভীষণ ভয় পেয়ে গেছে। খাবারের বক্সটি একপাশে রেখে রাফায়াত দৌঁড়ে এলো অয়ন্তীর কাছে। অমনি তার শ্রবণশক্তিতে প্রিয়ার ক্রন্দনরত কণ্ঠস্বরটি ভেসে এলো। পাশে তাকিয়ে দেখল তার ফোনের স্ক্রীণ জ্বলছে! ফোনের ঐ প্রান্ত থেকে প্রিয়া এক নাগাড়ে হ্যালো হ্যালো করছে। দাঁত গিজগিজিয়ে উঠল রাফায়াত। প্রথমে তার ফোনটি হাতে তুলে নিলো। ঝট করে ফোনটি কেটে দিলো সে! তাড়াহুড়ো করে প্যান্টের পকেট থেকে একটি নতুন সিম কার্ড হাতে নিলো। পুরাতন সিমটি খুলে নতুন সিমটি ফোনে ইন করল। পাওয়ার অন করে স্বস্তির শ্বাস ফেলল। হাতে থাকা পুরোনো সিমটি সে মুহূর্তের মধ্যেই দুমড়ে মুচড়ে ভেঙে দিলো। মুখের দিকে তাকানো যাচ্ছেনা তার। হিংস্র বাঘের ন্যায় রাগে গর্জন করে উঠছে। কেমন যেন গোঙিয়ে গোঙিয়ে উঠছে!
রাফায়াতের এহেন মহা প্রলয়ঙ্কর রূপ দেখে ভয়ে আরও সিঁটিয়ে গেল অয়ন্তী। পুনরায় খাটের কার্ণিশের সাথে সে ঘেঁষে বসল। কান্না চেপে রাখার যথাসাধ্য চেষ্টা করল। অমনি রাফায়াত তার ফোনটি হাত থেকে খাটের উপর রাখল। রগচটা হয়ে ভীতসন্ত্রস্ত অয়ন্তীর দিকে অনেক খানি এগিয়ে গেল। খাটের মাঝ বরাবর সে এত জোরে এক ঘু’ষি মারল যে খাটটি গটগট করে নিচের দিকে তলিয়ে গেল! মাঝখান থেকে পুরোপুরি ভেঙে গেল খাটটি। এমনিতেই প্রথম থেকে নড়বড়ে ছিল খাটটি। এখন তো আধম”রা হয়ে যা ইচ্ছে তা অবস্থা! খাট ভেঙে নিচে পড়ে যাওয়ার পরেও সেদিকে ঘুনাক্ষরেও ধ্যান নেই রাফায়াতের! আতঙ্কে চিৎকার করতে থাকা অয়ন্তীর দিকে সে গরম দৃষ্টি নিক্ষেপ করল। ঝাঁঝালো গলায় প্রশ্ন ছুড়ল,,
“এই? অনিককে আমার নাম্বার থেকে কল করেছিলে তুমি?”
নির্বিকার অয়ন্তী। মুখ চেপে ধরে শুধু অঝরে কাঁদতে ব্যস্ত। দম যেন বন্ধ হয়ে আসার জোগাড় হয়েছে তার! অচিরেই এই দমবন্ধকর পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে চায়। অয়ন্তীর নীরবতা রাফায়াতকে আরও ভীষণভাবে আক্রোশের দিকে ঠেলে দিলো! অয়ন্তীর ডান হাতটি সে শক্তভাবে চেপে ধরতে বাধ্য হলো। গলা উঁচিয়ে বলল,,
“চুপ করে থেকো না অয়ন্তী। যা প্রশ্ন করেছি তার উত্তর দাও।”
“নানানায়ায়ায়া। কককরি নি।”
“মিথ্যে বলছ তুমি হ্যাঁ? মিথ্যে বলছ?”
“সত্যি আমি কল করিনি।”
“যদি কল করেও থাকো। এতে কিন্তু ক্ষতি তোমারই হবে!”
“আমি কল করিনি বললাম তো!”
“পারমিশন ছাড়া কারো ফোনে হাত দিতে নেই জানো না?”
রাফায়াতের কঠিন চোখে বিভীষিকাময় চাহনি অয়ন্তীর! ভেতরের করুণ যন্ত্রণা সে মুখে উচ্চারিত করে বলল,,
“নিজেকে প্রটেক্ট করার জন্যও কি এখন শত্রু পক্ষের থেকে পারমিশন নিতে হবে?”
“তুমি এখন এখানে আছো বলেই বেঁচে আছো, ভালো আছো। অনিকের কাছে থাকলে না? এতক্ষণে তুমি ম’রে যেতে! সুখ সহ্য হচ্ছেনা তাইনা?”
“কীসের সুখ হ্যাঁ? কীসের সুখ? এখানে কী সুখ আছে বলুন? এখানে শুধু ভয় আছে, আতঙ্ক আছে। বেঁচেও ম’রে থাকার মত বিষাক্ত অনুভূতি আছে।”
“একটু সময় দাও সব ঠিক হয়ে যাবে। আমার পারমিশন ছাড়া অনিকের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টাও করবেনা তুমি।”
ইতোমধ্যেই রাফায়াতের নতুন সিম থেকে তার সেল ফোনটি বেজে উঠল। স্ক্রীনের দিকে না তাকিয়ে-ই রাফায়াত তড়িঘড়ি করে ফোনটি কানে তুলল। এই নাম্বারটিতে চঞ্চল এবং আরিফ ছাড়া অন্যকেউ কল করবেনা তা তার আগে থেকেই জানা! অমনি ফোনের ঐ প্রান্ত থেকে বেশ চঞ্চল প্রফুল্ল গলায় বলল,,
“গুড নিউজ আছে বস!’
“কী গুড নিউজ?”
“ইয়াদের জ্ঞান ফিরেছে। তুই এখন নিশ্চিন্তে চট্টগ্রাম ব্যাক করতে পারিস! এলাকা এখন আমাদের।”
#চলবে…?