“এখনো_ভালোবাসি”
|ইয়াসমিন তানিয়া|
|পর্ব-৫|
কয়েক মাস হলো,প্রিয়ুর কলেজ লাইফ শুরু হলো।আর
এবারও আয়নের কারনে প্রিয়ু নিজের পছন্দের কলেজে ভর্তি হতে পারেনি।আয়ন প্রিয়ুকে এমন কলেজে যেতে দিবে না,যেখানে ছেলে মেয়ে একসাথে পড়ে।তাই প্রিয়ুকে মহিলা কলেজে ভর্তি হতে হলো।আর এতে প্রিয়ু ভীষন রেগে ছিলো আয়নের উপর।
–কিশোরী বয়সটা এমনই,বাধা মানতে ভালো লাগে না।প্রিয়ুরও আয়নের এতো আদেশ নিশেধ মানতে ভালো লাগতো না।তবুও আয়নের কথাগুলো মানতে বাধ্য হতো বা আয়ন প্রিয়ুকে বাধ্য করতো।এই লোকটার সাথে প্রিয়ু কিছুতেই পেরে উঠতে পারত না।
“প্রিয়ু জানে আয়নের অনেক রাগ,আর রাগলে নাকি অনেকটা হিংস্র হয়ে যায়।কন্ট্রোল করা মুশকিল। কিন্তু প্রিয়ুর স্বচোখে কখনো দেখা হয়নি।”
-আর আয়নও কখনো প্রিয়ুর সামনে তার এই রুপটা প্রকাশ করতো না।আয়নের ধারনা প্রিয়ু তার এই রুপটা দেখলে হয়তো ভয়ে আগের মতো আয়নের সাথে এমন বন্ধুসুলভ আচরন করবে না।প্রিয়ুর এই চঞ্চলতাই আয়নের ভেতরে দাগ করেছে,যা আয়ন হারাতে চায় না।
–কিন্তু দূর্ভাগ্য ক্রমে প্রিয়ু আয়নের সেই রুপটা দেখে ফেলে।সেদিনের কথা প্রিয়ুর আজও মনে আছে,কোচিং থেকে বাসায় আসার সময় অনেকটা লেট হয়ে যায়।তার উপর সারাদিন বৃষ্টি হবার কারনে রাস্তাটাও অনেকটা জনমানব শুন্য হয়ে গিয়েছে।গাড়ী না পাওয়ায়, দাঁড়িয়ে না থেকে হেটে যাবার সিদ্ধান্ত নেয় প্রিয়ু।
‘কিছুটা দূর যাওয়ার পর রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা কয়েক জন ছেলেকে দেখতে পায় প্রিয়ু।ওদের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় প্রিয়ুকে দেখে ওরা কিছু বেড কমেন্ট করে।ওদের বিহেভ দেখে প্রিয়ু বুঝতে পারে,এরা সবাই নেশা করে আছে।তাই প্রিয়ুও কিছু না বলে মাথা নিচু করে চলে যেতে নেয়।
কিন্ত হঠাৎ এদের মধ্যে কোনও একজন প্রিয়ুর হাত ধরে ফেলে।প্রিয়ু ভয়ে তাদের দিকে তাকায়।নিজের হাতটা ছুটানোর চেস্টা করতেই, ছেলেটি হাতটা আরো শক্ত করে ধরে।প্রিয়ু আশেপাশে তাকিয়ে ভয়ে এবার কেঁদেই দেয়।
আমার হাত ধরেছেন কেনো,প্লিজ ছাড়ুন।’
–প্রিয়ুর কথা শুনে পাশে দাঁড়ানো আরো তিনটি ছেলেও দাঁত কেলিয়ে হাসতে লাগে।
“প্রিয়ুর এখন নিজের কপাল নিজেরি চাপরাতে মন চাইছে,আয়নদা বার বার বলে দিয়েছিলো লেট হলে জাতে ওকে ফোন দিই,কেনো যে পন্ডিতি করে একা একা যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম।আয়নদার কথা খুব মনে পড়ছে এখন।
প্রিয়ু আবারও মিনতি করলো।কিন্ত নেশাগ্রস্ত এই মানুষগুলোকে দেখেই প্রিয়ু বুঝতে পারলো আজ আর ও বাঁচাতে পারবে না এদের হাত থেকে।”
–ভাই,মালটা কিন্তু জোশ!আজ আর অন্য নেশা লাগবো না।এটারি ভাগ কইরা নি আমরা কি কন।
আমার হাত ধরা ছেলেটি এসব বলেই আমার দিকে বিশ্রী চোখে তাকিয়ে আছে।
“আর আমি তার হাত থেকে ছুটার চেস্টা ছেড়ে চিৎকার করতে লাগলাম।আশেপাশের দোকানগুলোও বন্ধ।আবাশিক এলাকা বলে,লোকজনও তেমন নেই,হয়তো তাই প্রিয়ুর চিৎকার কারো কানে যাচ্ছে না।
-প্রিয়ুর চিৎকার বন্ধ করার জন্য ছেলেটি প্রিয়ুর মুখ চেপে ধরে,প্রিয়ু প্রাণপণ দিয়ে চেস্টা করছে ছুটতে আর নিজেকে বাঁচাতে।কিন্তু পারছে না।তখনি তাদের মুখে একটি শব্দ শুনে প্রিয়ু ভয়ে আতকে উঠলো।
গ্যাং রেপ!
–টিভিতে,সংবাদ পত্রে যে নামটি শুনলেই প্রিয়ুর আত্মা কেঁপে উঠতো,আজ তার সাথেই এমন ঘটনা ঘটবে তা কল্পনায়ও করেনি।কাল হয়তো প্রিয়ুর নিজের নামটাও পত্রিকায় বড় বড় অক্ষরে লিখা থাকবে তবে তা দেখতে প্রিয়ু হয়তো বেঁচে থাকবে না।এসব ভাবতেই প্রিয়ুর চোখ দিয়ে পানি জরছে,আর ভীষণ ভাবে আয়নের কথা মনে পড়ছে।চিৎকার করে ডাকতে মন চাইছে,আয়নদা প্লিজ সেভ মি।কিন্তু আফসোস এই নিরব রাস্তায় প্রিয়ুর চাপা আর্তনাদ শুনার মতে কেউ নেই।তাহলে আয়ন কিভাবে শুনবে।
“ছেলেগুলো প্রিয়ুর মুখ চেপে,পাশের এক ঝোপের মধ্যে নিয়ে যেতে নিলো।কিন্তু হঠাৎ গাড়ীর ফ্লাশলাইট এসে তাদের চোখের উপর পরলো।লাইটের আলোতে কেউ চোখ খুলতে পারছে না।তখনি গাড়ীর লাইটের সামনে একটি ছায়ামূর্তি দেখতে পেলো যা ক্রমশ তাদের দিকে আসছে।
আসতে আসতে যখন একদম সামনে এলো,প্রিয়ু মনে হয় প্রাণ ফিরে পেলো এই মানুষটি কে দেখে।কারন এটা আর কেউ আয়ন।মুহুর্তের মধ্যে আরো কিছু গাড়ী এসে পরলো।গাড়ী থেকে কিছু লোক বের হয়ে চারপাশ গিরে দাঁড়ালো।
এতো লোক দেখে ছেলেগুলো ভয় পেয়ে গেলো।আর প্রিয়ুর মুখটা ছেড়ে দিলো।ছাড়া পেয়ে প্রিয়ু দৌঁড়ে আয়নের বুকে ঝাঁপিয়ে পরে।শক্ত করে আয়নকে জরিয়ে ধরে ফুফিয়ে কাঁদতে থাকে।”
–আয়ন রেগে আছে, ভয়ংকর ভাবে।শান্ত চেয়ারটা লাল হয়ে গিয়েছে।ছেলেগুলো পালাতে নিলে আয়নের ইশারায় তার গার্ডরা ধরে ফেলে।আয়ন প্রিয়ুকে নিজের থেকে ছাড়িয়ে শুধু একবার নিচ থেকে উপর পর্যন্ত চোখ বুলায়।আর এতে আয়ন প্রিয়ুর দু জায়গায় ক্ষতো দেখতে পায়।প্রিয়ুর হাতটা তুলে দেখে আঙ্গুলের ছাপ বসে আছে,সাথে দাগটা কেমন নীলচে হয়ে গিয়েছে।এবার নিজের দুহাত দিয়ে প্রিয়ুর মুখটা তুলে।প্রিয়ু এখনো কেঁদে কেঁদে ভাসিয়ে দিচ্ছে।
কিন্তু আয়নের আপাততো প্রিয়ুর কান্নার দিকে কোনও মনোযোগ নেই।সে দেখছে প্রিয়ুর মুখেও আঙ্গুলের দাগ বসে গেছে।ফর্সা মুখটা লালচে হয়ে গেছে।কান্না করতে করতে প্রিয়ু আয়নের দিকে তাকায়,আর তাকিয়েই প্রিয়ু ভয় পেয়ে যায়।
-ফর্সা মুখটা লাল হয়ে আছে,চোখগুলো দিয়ে যেনো আগুন ঝড়ছে।মাথার দুপাশের রগগুলো ফুলে আছে,প্রিয়ু বুঝতে পারছে ওর আয়নদা ভীষন রেগে আছে।আর এই রাগ নিয়েই প্রিয়ুকে খুব সুক্ষ্মভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।কিন্তু প্রিয়ু আজ এই রাগী আয়নকে দেখে ভয় পেয়ে সরে জেতে নিলো।
‘কিন্তু আয়ন প্রিয়ুকে নিজের সাথে শক্ত করে জরিয়ে ধরে।’
–গার্ডদের ইশারা করার সাথে সাথে ছেলেগুলোকে বেদম মারধর করে।ওদের আকুতি প্রিয়ুর কানে আসে।কিন্তু প্রিয়ু কিছুই দেখতে পায় না।কারন আয়ন প্রিয়ুর মাথাটা নিজের বুকের সাথে চেপে ধরে রেখেছে।আয়নের হ্রদপিন্ডের ধুপধুপ শব্দটি খুব দ্রুতো চলাচল করছে।প্রিয়ু বুঝতে পারছে না এটা স্বাভাবিক কিনা।
কিন্তু প্রিয়ু এখন আর এসব নিতে পারছে না,শরীর কেমন নিস্তেজ লাগছে।মনে হয় এখনি পরে যাবে।আয়ন বুঝতে পেরে প্রিয়ুকে তড়িৎ গতিতে কোলে তুলে নিয়ে গাড়ীতে বসিয়ে দিয়ে গাড়ীটা লক করে দেয়।
“এবার আয়ন নিজেই শার্টের হাতা ফোল্ডার করে ছেলেগুলোর সামনে যেতে লাগে।ওর একটা বডিগার্ড কে হাত দিয়ে কি যেনো ইশারা করলো,সাথে সাথে বডিগার্ড টি গাড়ী থেকে ওটা এনে আয়নের হাতে দিলো।”
–প্রিয়ু গাড়ীতে বসেই চোখ বুঝে রেখেছিলো,কিন্তু কারো ভয়ংকর চিৎকারে প্রিয়ু আতকে উঠে।গাড়ীতে বসেই সামনের আয়না ভেদ করে প্রিয়ু যা দেখলো,তাতে প্রিয়ুর এই মুহুর্তে অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার কথা।কারন
আয়নের বডিগার্ডরা ছেলেগুলোকে ধরে রেখেছে।আর যে ছেলেটি প্রিয়ুর হাত ধরেছিলো আয়ন হাতুড়ি দিয়ে তার হাতটা থেঁতলে দিচ্ছে।আর তাতে ছেলেটির রক্ত আয়নের শার্টে ছিটকে কিছুটা পরেছে।
“সাহস কি করে হলো তোদের, আমার জিনিস ধরার।আমার জিনিসের উপর নযর দেওয়ার।এই হাত দিয়ে স্পর্শ করেছিলি না ওকে।আজকের পর আর পারবি না।আমি যার আশেপাশে কাউকে সহ্য করিনা,তোরা ওরই দিকে চোখ তুলে তাকালি।আয়নের কথায় ছেলেগুলো ভয়ে কাঁপছে। আর বার বার ক্ষমা চাইছে।কিন্তু আয়ন কাউকে ক্ষমা করার মাধ্যে নেই এখন।”
–প্রিয়ুর যেনো বিশ্বাস হচ্ছে না।এটা কোন আয়নকে ও দেখছে,এটতা হিংস্রতা।আজ প্রিয়ু সত্যিই আয়নকে ভয় পাচ্ছে, প্রিয়ুর যথারীতি কাপাকাপি শুরু হয়ে গিয়েছে।আয়ন নিজের কাজ সেরে গাড়ীতে এসে প্রিয়ুকে ভয়ে কাপতে দেখে বুঝে গেছে।যে রুপটি আয়ন এতোদিন প্রিয়ুকে দেখতে দেইনি,তা আজ প্রিয়ু দেখে ফেলেছে।তাইতে আজ প্রিয়ুর চোখে আয়ন শুধু ভয় আর ভয় দেখছে।
আয়ন কিছু না বলে গাড়ীতে বসে,প্রিয়ুকে টেনে নিজের কাছে এনে শক্ত করে জরিয়ে ধরে।কপালে একটা ডিপলি কিস করে প্রিয়ুকে শান্ত করার চেস্টা করে।
প্রিয়ু রিলেক্স সোনা।এতো ভয় পেলে কিভাবে হবে।ওরা তোর সাথে যা করেছে তার তুলনায় খুব কম শাস্তি দিয়েছি।ভেবে দেখ আমি সময় মতো না আসলে,কি হতো।আজতো আমি তোকে হারিয়েই ফেলতাম।আর তোকে হারিয়ে আমি কি নিয়ে বাঁচতাম।তাই ওদের শাস্তি ওরা পেয়েছে।লক্ষীটি এবার শান্ত হো।
____________
বর্তমান
“দরজা খুলার শব্দে প্রিয়ুর ধ্যান ভেঙ্গে গেলো।নাদিয়া খালা খাবার নিয়ে এসেছে।নাদিয়া আয়নের মায়ের দূর সম্পর্কের বোন।অল্প বয়সে স্বামী হারিয়ে,যাওয়ার মতো জায়গা নেই বলে আয়নের মা নিজের বাড়ী নিয়ে আসেন।আজ ১০ বছর হলো,উনি এই বাড়ীতে।আয়ন নাদিয়াকে নিজের মায়ের মতোই ভালোবাসে।
আর নাদিয়ার যেনো চোখের মনি আয়ন।আয়নের বিরুদ্ধে কিছুই শুনতে পারে না।
কেমন আছো মামনি।”
–প্রিয়ু খালার কোমরটা জরিয়ে কেঁদেই দিলো।আমি ভালো আছি।তুমি কেমন আছো,সেটা বল।
“নাদিয়া প্রিয়ুর মাথায়,হাত বুলিয়ে,আমিতো আগের মতোই আছি,তুই বল।কেনো এমন করলি।কেনো আমার ছেলেটাকে এতো কস্ট দিচ্ছিস।”
–প্রিয়ু কান্না জরিত কন্ঠেই,তোমার ছেলেটা একদম ভালো না,অনেক পঁচা।আমাকে শুধু কস্ট দিতে জানে আর কিছু না।আমার সব কেড়ে নিয়েও শান্তি হয়নি, এখন আবার আমাকে জোর করে বিয়ে করে এনেছে।হয়তো নতুন কোনও শাস্তি দিবে বলে।
“নাদিয়া মায়া থেকে সব শুনেছে,নাদিয়া জানতো,এমনি কিছু একটা হবে।আয়নের রগে রগে চিনা তার।রেগে গেলে আর কোনও কিছু চিন্তা করেনা।এবারও তাই হলো।প্রিয়ুর ওর থেকে দূরে যাওয়াটা একদম সহ্য হয়নি,তাই তো রাগের মাথায় এতো বড় একটা জগন্য কাজ করে ফেলেছে।কিন্তু এখন এসব বলে কোনও লাভ নেই।যা হবার হয়ে গিয়েছে।এখন যেভাবেই হোক এই দুটো ছেলে মেয়ে এক হলেই চলে।না হলে আয়ন দিন দিন প্রিয়ুর অবহেলায় আরো হিংস্র হয়ে যাবে।
নাদিয়া অনেক বুঝিয়ে প্রিয়ুকে জোর করে একটু খাইয়ে চলে গেলো।ক্লান্ত প্রিয়ু সোপায় শুয়ে পরলে,কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘুমিয়ে পরে।”
___________
আয়ন অনেক রাত করেই আজ রুমে এসেছে।আর এসে দেখে প্রিয়ু সোফায় ঘুমিয়ে আছে।শরীরে জরানো এখনো বিয়ের বেনারসি শাড়ীটি।চুলের খোঁপার বেলিফুল গুলো কিছুটা শুকিয়ে গেলোও ঘ্রান যেনো এখনো নাকে ভাসছে আয়নের।মুখটা শুকিয়ে আছে,নিশ্চয়ই মেয়েটা রাতে ঠিকমতো খায়নি।চোখের কোনায় এখনো কিছুটা জল জমে আছে।
“আয়ন হাটু গেড়ে প্রিয়ুর সামনে বসলো,প্রিয়ুর কপালে আলতো করে একটা চুমো দিয়ে দিলো।একদৃষ্টিতে প্রিয়ুর দিকে তাকিয়ে থেকে,
আজকের রাতটা কতো না সুন্দর হতো যদি তুই এমন না করতি।কতো স্বপ্ন ছিলো, আমাদের প্রথম রাত নিয়ে।কেনো এমন করলি প্রিয়ু,আমার ভালোবাসার কোন জায়গায়টায় আমি খাদ রেখেছিলাম যা পূর্ন করতে তোকে আরেক জনের কাধের প্রয়োজন হলো।কেনো আমার ভালোবাসার অপমান করলি।এই আয়ন তোকে অন্য কারো সাথে একদমই সহ্য করতে পারবে না।আমি বেঁচে থাকতে তুই অন্য কারো হতেও পারবি না।তুই চাইলেও না।আমার অনেক বড় প্রাপ্তি তুই,হারাতে দিই কি করে বল।আমার জন্যই তোকে আমার কাছে থাকতে হবে।নিজের সুখ চাওয়া যদি স্বার্থপর হয়,তাহলে আমি স্বার্থ পরই হতে চাই।
আয়ন দীর্ঘ একটা শ্বাস ছেড়ে ওয়াশরুমে চলে গেলো,ফ্রেস হয়ে একটা টাউজার পরেই বের হয়ে গেলো।যথারীতি আয়ন রাতে খালিগায়েই ঘুমায়,তাই আজও তাই করবে।
-আয়ন প্রিয়ুকে কোলে করেই বিছায়নায় শুয়ে দিলো।আর তখনি প্রিয়ুর ঘুমটা কিছুটা হালকা হয়ে গেলো।চোখগুলো খুলতে কস্ট হলেও,কারো গরম নিশ্বাস যেনো প্রিয়ুকে ঘুমাতে দিচ্ছে না।অনেক কস্টে চোখদুটো খুলেই চড়কগাছ আয়নকে দেখে।আয়ন একদম ওর কাছে,আর আয়নের ভারী নিশ্বাসই বারি খাচ্ছে প্রিয়ুর মুখে।”
–প্রিয়ু আয়নকে নিজের এতো কাছে দেখে একটু ভরকে যায়।আয়নকে ধাক্কা দিয়ে সরানোর চেস্টা করেও একচুলও সরাতে পারলো না।প্রিয়ু রেগে,তুমি এখানে কি করছো।
“এতোরাতে মানুষ কি করে।”(আয়ন)
–মানুষতো ঘুমায়,তাহলে তুমিও গিয়ে ঘুমাও।আর আমি এখানে কি করছি,আমিতো সোফায় ছিলান।
“আমার এতো বড় বেড থাকতে তুই সোফায় কেনো ঘুমাবি।”(আয়ন)
–তোমার সাথে একরুমে থাকছি বলে কি মনে করো,এক বেডেও ঘুমাবো।অসম্ভব!সরো,আমি উঠবো।
“আয়নের কানে যেনো কথাটা ডুকলোই না।আয়ন প্রিয়ুর গলায় মুখ ডুবিয়ে প্রিয়ুকে জরিয়ে শুয়ে পড়লো।
প্রিয়ুতো আয়নকে ধাক্কাতে লাগলো,সরাবার জন্য।কিন্তু পারছে না।
আয়নের মেঝাজ গরম হয়ে গেলো,মুখটা হালকা উঠিয়ে তুই না ঘুমা কিন্তু আমাকে অন্তত ঘুমাতে দে।সারাদিন তোর মতো আজাইরা থাকিনা।কাজ করতে হয় আমায়,তাই আমার ঘুমানো খুব দরকার।”
–ঘুমান না,মানা করছে কে,কিন্তু আমাকে ছাড়েন।
“দেখ প্রিয়ু জালাবি না,এমন করলে কিন্তু আমি যে নিজেকে কন্ট্রোল করে রেখেছি,তা ভুলে গিয়ে ওটাই করবো,যা এখন করলে তোর ভালো লাগবে না।তাই চুপচাপ ঘুমা আর আমাকেও ঘুমাতেদে।”
–প্রিয়ু ভয় পেয়ে গেলো একটু।কারন আয়ন বলে ছেড়ে দেওয়ার ছেলে না,রাগ উঠলে তা করেই দেখাবে।একদম ঘাড়ত্যারা পারশন।তাই প্রিয়ুও চুপ হয়ে গেলো।আয়নকে এই মুহুর্তে না ক্ষেপানোই ভালো ওর জন্য।
চলবে…..।
❌কপি করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।