এখনো ভালোবাসি পর্ব ৮

“এখনো_ভালোবাসি”
|ইয়াসমিন তানিয়া|
|পর্ব-৮|

অফিসের কেবিনের চেয়ারটিতে হেলান দিয়ে বসে আছে আয়ন।ক্লান্ত শরীরে চোখদুটোও যন্ত্রণা করছে আজ।কাজের চাপের জন্য আয়ন নিজের দিকেও তাকানোর সময় পায়নি কখনো।
জীবনের লক্ষ্য গুলো হাসিল করার এক অসীম খেলায় নেমেছে আয়ন।যেখানে হাজারো প্রতিযোগীতা থাকা সত্যেও আয়নকে কেউ হারাতে পারছে না।

“কিন্তু বলে না প্রত্যকটি মানুষের একটি দূর্বল পয়েন্ট থাকে।আর আয়নের সেই দূর্বল পয়েন্ট হচ্ছে প্রিয়ু।
জীবনে এই একটি জায়গায় আয়ন যেনো প্রচণ্ড অসহায় হয়ে পরে।বিজনেস জগতে সবাইকে টক্কর দিয়ে ধাপেধাপে উঠে আসা আয়ন মাহবুভ এই অবুঝ মেয়েটির মনে নিজের ভালোবাসার ফুল কেনো ফুটাতে ব্যর্থ তার হিসেব মিলাতেই পারেনি কখনো আয়ন।
কি নেই আয়নের,আছে টাকা,আছে প্রাচুর্য, সৌন্দর্য। তাহলে কেনো প্রিয়ু আয়নকে ভালোবাসতে পারে না এমন প্রশ্ন বার বার মনে আসে।”

–না মাথাটা আজ আর কাজ করবে না।জানালার পাশে দাঁড়িয়ে কিছুক্ষণ রাতের ব্যস্ত শহরটাকে দেখতে লাগলো আয়ন।প্রিয়ুর সাথে রাগারাগি করার পর থেকে কোনও কাজেই মন দিতে পারছে না।মনটা ভীষন ছটফট করছে প্রিয়ুর একবিন্দু ভালোবাসার জন্য।আয়ন জানে না ওর কপালে কখনো এই মেয়েটির ভালোবাসা জুটবে কিনা,তবুও যে এই মন ভালোবেসে যাবে এই মেয়েটিকে।কাছে পেতে চায় একান্ত করে।
দীর্ঘ একটা শ্বাস ছেড়ে গলার টাইটা এবার আলগা করে,সোফায় শরীরটা এলিয়ে দিলো।কিছুক্ষণ চোখ বন্ধ করে নিজেকে একটু শান্ত করতে চাইছে আয়ন।কিন্তু এবারও ব্যর্থ। তাই ফোনটা হাতে নিয়ে দিনেশকে কল করলো।
হ্যালো দিনেশ।

“হে বল আয়ন। কি খবর।দুদিন হলো তোর কোনও দেখা নেই।নতুন বউ পেয়ে মনে হয় পুরাতন বন্ধুকে ভুলে গিয়েছিস।”
-তোর ফালতু কথা বন্ধ করবি।
“আরে কি হলো।এতো রাগ কেনো সাহেবের।প্রিয়ু আবার কিছু করেছে।”

–সে আবার নতুন কি?আমাকে কষ্ট দিতে হয়তো ওর খুব ভালোলাগে।আচ্ছা ওসব বাদ দিয়ে শোন,আমি ক্লাবে যাচ্ছি, তুইও চলে আস।আর হে আমি কোনও এক্সকিউজ শুনতে চাই না আজ।প্লিজ!
বায় বলেই আয়ন ফোনটা কেটে দিয়ে কোটটা হাতে নিয়ে বের হয়ে গেলো।

“দিনেশ ক্লাবে এসে দেখে আয়ন বসে আছে গ্লাস হাতে নিয়ে হয়তো কিছু একটা ভাবছে।
আয়ন ড্রিংকস করছে না।সে অভ্যাস অনেক আগেই ছেড়ে দিয়েছে।তাও প্রিয়ুর কারণে।প্রিয়ু এসব একদম পছন্দ করে না।একদিন বন্ধুদের সাথে পার্টিতে ড্রিংকস করে প্রিয়ুর সাথে দেখা করতে গিয়েছিলো আয়ন।প্রিয়ু আয়নকে ড্রাংক অবস্থায় দেখেই মুখের উপর দরজা লাগিয়ে দেয়।ঘরেও ডুকতে দেয়না।সেদিনের পর থেকে আয়ন আর ড্রিংকস ছুঁয়েও দেখেনি।
হঠাৎ দিনেশের ডাকে স্বম্ভিত ফিরে পায়।”

–কি রে শ্যালা।বিয়ে করে দেখি দেবদাস হয়ে গিয়েছিস।গ্লাশ হাতে নিয়ে কি ভাবছিস।দিনেশও একটা চেয়ার টেনে আয়নের পাশে এসে বসে পড়লো।

স্লো মিউজিক চলছে,পরিবেশটা আজ ধারুন ক্লাবের।তাইতো দিনেশ আর আয়ন প্রায়ই আসে নিজের কাজের সব ক্লান্তগুলো দূর করতে এখানে ।
–কি হলো কথা বলবি না।

“আয়ন আর কিছুই বলতে পারলো না গলাটা ধরে আসলো,তাই হাতের সামনে রাখা গ্লাশটা একঢোকে শেষ করে টেবিলে রাখলো।”
–প্রিয়ু আজ আবার কি করেছে।(দিনেশ)
“রোহান”।
সেই ছেলেটা।
“হুম।ওর জন্যই তো সব।আমার প্রিয়ু আমার থেকে দূরে চলে যাওয়ার কারণও তো ওই রোহান।আর ওর হঠাৎ করে চলে যাওয়ার পিছনে হয়তো আমি আছি এখন প্রিয়ু তাই ভাবে।তাইতে আমাকে এতো ঘৃর্ণা করে।বিয়ের দুদিন যেতে না যেতেই ডিভোর্স চাইছে।মুক্তি চায় আমার কাছ থেকে।
তুই বল এসব শুনেও কিভাবে শান্ত থাকি।আমার ভালোবাসা কেনো ওর চোখে পড়ে না।আমার কষ্ট,আমার যন্ত্রনা কেনো ও অনুভোব করতে পারেনা।ওর একটু ভালোবাসা পাওয়ার জন্য আমার ছটফটানি কেনো ও দেখতে পায়না।বলতে পারবি দিনেশ কেনো?
কি করলে ওই মেয়েটিও আমাকে ভালোবাসি বলবে।এখন তো মনে হয় এই জীবনে এই চারটি শব্দ কোনও দিন শুনতেও পারবো না ওর মুখ থেকে।জানিস দিনেশ ওর এই অবহেলা, ঘৃর্ণা সবই আমার বুকে তীরের মতো গাথে।প্রচণ্ড ব্যথা হয় রে।মরে যেতে মন চায়।”

—দিনেশ চুপ হয়ে আয়নের কথাগুলো শুনছে,কি বলে আয়নকে সান্তনা দেবে দিনেশের সত্যিই জানা নেই।অন্য কিছু হলে দিনেশ ছিনিয়ে নিয়ে আনতো আয়নের কষ্ট দূর করার জন্য।কিন্তু ভালোবাসা!ভালোবাসা জোড় করে হয়না।এটা দিনেশের থেকে বেশি কেউ জানে না।তবুও আয়নের কষ্ট ওর সহ্য হয়না,আর আয়নের কষ্টটা ওর চোখে মুখে স্পষ্ট ফুটে উঠছে আজ।দিনেশ কিছু একটা ভেবে,
একটু সময় দে ওকে।দেখবি আস্তে আস্তে ও সব ভুলে গিয়ে তোকে আপন করে নিবে।

“এতো বছরেও যেহেতু করতে পারেনি,এখন কিভাবে করবে।”
–ভালোবেসে।
“মানে”।
–প্রিয়ুকে এতোটাই ভালোবাসাদে,জাতে করে ও ওর অতিতের সব কিছু ভুলে যায়।এতো বছর দাবিয়ে রাখা সব অনুভূতিগুলো প্রকাশ কর ওর কাছে একসাথে।প্রেমের নেশা বড় নেশা।সেই নেশায় ওকে জরিয়ে ফেল।দেখবি একদিন প্রিয়ুও তোর নেশায় মগ্ন হয়ে যাবে।তোর ভালোবাসার চাদর নিজের ইচ্ছায় জড়িয়ে নিবে।ওকে প্রতিটি মুহুর্তে বুঝিয়ে যে,তুই ওর জন্য কি অনুভোব করিস।ওকে বুঝিয়ে দে ওর ঘৃর্ণার চেয়ে বেশি গভীরতা তোর ভালোবাসায়।আর তা কোনো দিনও কম হবে না।
জানিস তো পৃথিবীতে ভালোবাসার চেয়ে দামি কোনও ঔষুধ নেই।আর প্রমিকের চেয়ে ভালো কোনও ডাক্তার নেই।তাই ওর মনের রোগ সরাবার দায়িত্ব নিয়ে নে।

“আয়ন দিনেশ এর কথাগুলে খুব মনোযোগ দিয়ে শুনলো।হাতের সামনে রাখা সপ্ট ড্রিংকস এর গ্লাশটা এক ঢোকে খেয়ে টেবিলে রাখলো।তারপর দিনেশকে আচানক জরিয়ে ধরে থ্যাংকস বলে টেবিলে পরে থাকা গাড়ীর চাবিটি নিয়ে বের হয়ে যায়।
মনের মধ্যে আজ আবার ভালোলাগা শুরু হলো আয়নের।ওর ভেতরের সব ঝটলাগুলো যেনো দিনেশ মুহুর্তে খুলে ফেলেদিলো।দিনেশ ঠিকই বলেছে, ভালোবাসা দিয়েই প্রিয়ুকে আমি আমার করে নেবো।ওর নিশ্বাসের সাথে এমন ভাবে মিশে যাবো জাতে করে ও ইচ্ছা করেও আমাকে ছেড়ে যেতে না পারে।অতিতের সব ভুল বুঝাবুঝি গুলো আর আমি আমাদের বর্তমানে আসতে দেবো না।এসব ভাবতে ভাবতেই আয়ন কখন বাড়ীর সামনে এসে পড়লো বুঝতেও পারেনি।

বাড়ীতে এসেই আয়ন আগে বাবা মার রুমে গিয়ে তাদের সাথে দেখা করে সোজা নিজের রুমে চলে গেলো।”
__________

রাত ১১টায় আয়ন রুমে এসে দেখে প্রিয়ু বাচ্চাদের মতো গুটিসুটি মেরে শুয়ে আছে।কাপড় পরে ঘুমাতে পারে না বলে প্লাজো আর একটা টি শার্ট পরে ঘুমিয়েছে আজ।এগুলো আয়নই এনে রেখেছিলো প্রিয়ুর জন্য।ওর দারকারি সব জিনিস আগে থেকেই এই রুমে রেখে দিয়েছিলো আয়ন।
আয়ন একটু মুচকি হেসে ফ্রেস হতে চলে গেলো।আজও একটা টাউজার পরে খালি গায়ে প্রিয়ুর পাশে শুয়ে পড়লো।

—আয়ন শুয়ে শুয়ে ভাবছে প্রিয়ুকে জাগাবে কিনা।খুব মন চাইছে আজ আয়নের প্রিয়ুর সাথে খুনশুটির প্রেম করতে।আগের প্রিয়ুকে আয়ন খুব করে মিস করছে।পরক্ষনে দুষ্টমি চিন্তা মাথায় এলো আয়নের।একটুতো জ্বালানো যায়ই।আমার ভেতরে দহন লাগিয়ে খুব শান্তির ঘুম হচ্ছে তাই না।কিন্তু সোনা আমার এই দহনে যে তোকেও পুড়তে হবে।আয়ন একটু বাকা হেসে,
প্রিয়ুর দিকে ঘুরে প্রিয়ুর টিশার্টের ভেতরে হাতটি ঢুকিয়ে উন্মুক্ত পেটটাতে হালকা চেপে ধরলো।

“মুহুর্তে প্রিয়ুর ঘুম উড়ে গেলো।প্রিয়ু কিছু বুঝে উঠার আগেই

–হাতটি আস্তে আস্তে পেট বেয়ে উপরের দিকে উঠতে নিলে,প্রিয়ু খপ করে হাতটি ধরে ফেলে।ঘাড়টা ঘুড়িয়ে অগ্নি দৃষ্টিতে আয়নের দিকে তাকায়।মনে হয় এখনি আয়নকে প্রিয়ু জ্বালিয়ে দেবে।
সমস্যা কি।যখন তখন টাচ করেন কেনো আপনি।

“আয়ন মুখটা বাচ্চাদের মতো করে,নাতো কোনও সমস্যা নেই।আর আমিতো আমার বউকে টাচ করছি,তাহলে তোর এতো জ্বলছে কেনো।”

–জ্বলছে কেনো মানে,তোমার হাতটা আমার পেটে কি করে।

“সেটা আমি কি করে বলবো।এটা হাতকে জিঙ্গেস কর।একদম কন্ট্রোললেস হয়ে পড়ছে দিন দিন।এমনেই তুই সামনে থাকলে আমার মাথা নষ্ট হয়ে যায়,তার উপর এমন গেন্জি পড়ায় তোকেতো তামিল ফিল্মের নায়িকাদের মতো লাগছে।উফ!তাহলে বল কন্ট্রোলে কিভাবে রাখবো হাতকে।ব্যাচারা হাত আজ একটু বেশি দুষ্টমিতে আছে বলেই প্রিয়ুর খোলা পেটে একটা চিমটি দিয়ে দিলো আয়ন।”

–প্রিয়ু আ আ করে শব্দ করে উঠলো।রেগে হাতটা ঝাপটা দিয়ে সরিয়ে দিলো।হাত আরেক বার এখানে আসলে ভেঙ্গে পকেটে ভরিয়ে দেবো।তখন দেখবোনি সমস্যা হয় কিনা।”

“প্রিয়ুর কথা শুনে আয়ন টান দিয়ে প্রিয়ুকে নিজের উপরে নিয়ে আসে।আর প্রিয়ুর টিশার্টের ভেতর নিজের দুহাত ডুকিয়ে পিঠে স্লাইড করতে থাকে শ্লোলি।
এক হাত ভাঙ্গবি কেনো,নে দুহাতই এখন কন্ট্রোললেস হয়ে গিয়েছে।দুটো হাতই ভেঙ্গে দে।আই হেব নো প্রোবলেম।”

–আয়নের এমন কান্ডে প্রিয়ু ফ্রিজ হয়ে গেলো।না চাওয়া সত্যেও প্রিয়ুর ঘন নিশ্বাসগুলো আচড়ে পড়ছে আয়নের মুখে।কেমন ঘোর ঘোর লাগছে আজ প্রিয়ুর।আয়নের চোখের নেশাও যেনো পড়ে যাচ্ছে আজ।”

–হঠাৎ প্রিয়ুর চুলটা এক হাতে আকড়ে ধরে ঠোঁট দুটো নিয়ে নিলো আয়ন নিজের ঠোঁটের আয়ত্তে।পরম ভালোবাসায় শুষে নিচ্ছে প্রিয়ুর ঠোঁটের মিষ্টি স্বাদ।
আজ প্রিয়ুরও যেনো কি হলো,আয়নের ছোঁয়ায় কেমন নেশা ধরে গিয়েছে।পারছে না আয়নকে বাধা দিতে।আবেশে চোখ দুটো বন্ধ করে,আয়নের খোলা বুকে ঘামছি দিয়ে ধরে।এতে করে প্রিয়ুর নখে আয়ন একটু ব্যাথা পেলেও কোনো রিয়েক্ট করেনা।ও তো চায় প্রিয়ু ভালোবেসে এমন হাজারো আঘাত ওকে করুক।প্রত্যেকটা আঘাতকে আয়ন পরম যত্নে গ্রহণ করে নিবে।

“কিছুক্ষণ পর আয়ন নিজেই প্রিয়ুকে ছেড়ে দেয়।কপালে কপাল রেখে,তুই যতোই আমাকে ঘৃর্ণা করবি,আমি ততোই তোকে ভালোবাসবো।তুই ক্লান্ত হয়ে পড়বি,আমাকে ঘৃর্ণা করতে করতে।কিন্তু আমি শান্ত মনে তখনও তোকে ভালোবেসে যাবো।পারবি না তুই আমার ভালোবাসার বাঁধন ছিড়ে যেতে প্রিয়ু।”
–প্রিয়ু আয়নের চোখে তাকিয়ে আছে,পারছে না আয়নকে কিছু বলতে আজ।নিজের মনেই বলছে,এই চোখে আমি আগেও তাকিয়েছি,কিন্তু আজ কেনো এমন লাগছে।কেনো আমি দূর্বল হয়ে পড়ছি আয়নদার উপর।কেনো?

“একহাত দিয়ে প্রিয়ুর মাথাটা নিজের খালি বুকের উপর চেপে ধরে আয়ন।ঘুমা সোনা আমি মাথাটা বুলিয়ে দিচ্ছি।এন্ড ডোন্ট ওয়ারি আমি কিছুই করবো না আজ।”

–প্রিয়ু কিছু বলতে চেয়েও বললো না,চুপচাপ আয়নের বুকে মাথা রেখে সেদিনের কথা গুলো ভাবছে,আয়নদার সেদিনের স্পর্শ গুলো ছিলো খুবই অস্বস্তি কর।কিন্তু এখন কেনো অস্বস্তি ফিল করিনা আমি।
আয়নদা ছিলো বলে কি আমি সেদিন ঐ বাজে প্রস্তাবটিতে নির্দ্বিধায় রাজি হয়ে গিয়েছিলাম।
কিন্তু আয়নদার জায়গায় যদি অন্য কেউ থাকতো তাহলেও কি আমি রাজি হতে পারতাম।
এতো মানুষ থাকতে আমি আয়নদাকেই কেনো ভরসা করলাম।এমন হাজারো কেনো মাথায় ঘুড়ছে যার কোনও উত্তর প্রিয়ুর কাছে নেই।ভাবতে ভাবতেই প্রিয়ুর চোখ পড়লো আয়নের লোমশ ভরা প্রশস্ত সাদা বুকটার দিকে।মুহুর্তেই অদ্ভুত ইচ্ছা জাগলো প্রিয়ুর মনে,লোমশ ভরা বুকে নাক ডুবিয়ে আয়নের শরীরের গন্ধ নিতে।ভাবতেই পুরো শরীর কেপে উঠলো প্রিয়ুর।প্রিয়ু বুঝতে পারছে না এমন কেনো হচ্ছে।কিন্তু এতোটুকু বুঝতে পারছে আয়নের প্রতি ওর রাগটা দিনদিন যেনো পানি হয়ে যাচ্ছে।
_____________

ফজরের আযানেই প্রিয়ুর ঘুম ভেঙ্গে গেলো।ঘুম থেকে জেগেও দেখে আয়ন এখনও ওকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে আছে।আয়নকে আস্তে করে সরিয়ে প্রিয়ু উঠতে নিলে,একহাত ধরে টান দেয় আয়ন,আর প্রিয়ু সামলাতে না পেরে আবার আয়নের বুকের উপর গিয়ে পরে।

–ঘুম জরানো কন্ঠেই আয়ন বলে,কি হলো কোথায় পালানো হচ্ছে।
“প..পপালালাম কোথায়,আমিতো ওয়াসরুমে যাচ্ছিলাম।আযান দিয়েছে নামাজ পড়তে হবে বলেই
প্রিয়ু আয়ন থেকে নিজেকে ছাড়ানোর চেস্টা করে।”
–কি হলো,এমন সাপের মতো গড়াগড়ি করছিস কেনো।
“আমাকে এভাবে ধরে রেখেছো কেনো।ছাড়ো।”
–আগে গুডমর্নিং কিস দিবি তার পর,ছাড়াছাড়ি।
“কি?? তোমার মাথাটা গেছে মনে হয়।ভাবলে কি করে আমি তোমাকে কিস করবো।কখনো না।”
–আয়ন এবার চোখদুটো খুলে,যেতে চাইলে কিস তো দিতেই হবে ডার্লিং। নো চয়েজ।নামাযের সময় কিন্তু চলে যাচ্ছে।সো ফাস্ট।

“প্রিয়ুও কম ঘাড় ত্যারা না,ও অনেকক্ষণ যাবৎ চেস্টা করেই যাচ্ছে আয়ন থেকে ছুটার।কিন্তু না,ব্যাচারী আয়নের শক্তির সাথে পেরে উঠতে পারছে না।
কি করবে ভাবছে!
উপায় না পেয়ে আস্তে করে আয়নের দুগালে দুটো চুমো দিয়ে আয়নকে রিকোয়েস্ট করে ছাড়তে।”

–আয়নও মুচকি হেসে প্রিয়ুর দিকে তাকিয়ে দেখে,প্রিয়ুর গালদুটো লজ্জায় লাল হয়ে গিয়েছে।এই প্রথম আয়ন প্রিয়ুকে এতো লজ্জা পেতে দেখলো।অসম্ভব সুন্দর লাগছে প্রিয়ুকে আয়নের চোখে।
লজ্জা পেলে কোনও নাড়ীকে যে এতো সুন্দর লাগতে পারে তাতো জানাই ছিলো না আয়নের।আয়নও প্রিয়ুকে আরো একটু কাছে টেনে,রক্তিম সূর্যের ন্যায় লাল হওয়া গালটিতে কিস করে কানের কাছে ফিসফিসিয়ে বলে,
কাল যেনো দিতে এতো লেট না হয়।তাহলে কিন্তু পানিশমেন্টও পেতে হবে সাথে আদরের তোকে।

“প্রিয়ু রেগে আয়নের দিকে বড় বড় চোখ করে তাকায়।প্রিয়ুর এমন তাকানো দেখে আয়ন একটা চোখ টিপ মেরেই প্রিয়ুকে ছেড়ে দেয়।আর প্রিয়ু ছাড়া পাওয়ার সাথে সাথে ওয়াসরুমের দিকে দৌঁড় দেয়।
ব্যাচারী প্রিয়ু আয়নের এমন রুপ এই প্রথম দেখেছে।তাই কিছুটা শোকডও হয়েছে।”

–প্রিয়ু অযু করে নামাযে দাঁড়াতে নিলে,আয়নও পাশে আরো একটি জায়নামাজ বিছিয়ে দাঁড়িয়ে যায়।প্রিয়ু কিছুটা অবাক হয়।কারণ আয়ন বরারবই নামায নিয়ে উদাসীন ছিলো।সেই আয়ন আজ নিজেই এতো সকালে ঘুম থেকে উঠে নামায পড়ছে,ব্যাপারটা প্রিয়ুর সত্যিই ভালো লেগেছে।
নামায শেষ করেই আয়ন প্রিয়ুর কপালে আচানক একটা চুমো দিয়ে আবার ঘুমাতে চলে যায়।
আর প্রিয়ু এখনো শোকড হয়ে দাঁড়িয়ে আয়নের দিকে তাকিয়ে আছে।কি হলো আজ!

চলবে……।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here