কলেজের বড় আপু
.
Sumon Al-Farabi
৮ম পর্ব
.
নীলাদ্রি রাগ করে বাইরে যাওয়ার একটু পরেই আবার রুমে আসলো। এসে চুপচাপ বসে আছে ।
– কি হলো
– কিছু না
– এমন ফুলস্টপ হয়ে গেলেন কেন
– এমনি ।
– কার কাছে বিচার দিলেন ?
– দেই নি ।
– কেন?
– আমার ইচ্ছে তাই । এতে তোর কি
– আমার কিছুই না
– আমি এই বাড়িতে আছি বেশ কিছু দিন হচ্ছে
– হুম ।
– তুই একদিন ও এই আলমারি টা খুললি না কেন ?
– মানে আলমারি খুলিস না কেন ?
– ওটার দরকার পরে না তাই খোলা হয় না।
– এই রুমে তো আমারও ভাগ আছে
– কি হইছে বলেন তো আপনার ? এসব কথা বলছেন কেন?
– কিছু হয় নি আমার
– আপনি কি অসুস্থ
– না।
– তো
– আমি এই আলমারি র চাবি চাই ।
– কি করবেন
– দিবি কি না বল
– ওটার চাবি দেওয়া যাবে না । আর ওটাতে কিছু নেই তো।
– তারমানে তুই দিবি না
– না।
– থাক তুই তোর আলমারি নিয়ে
আবার বাইরে চলে গেল । কিছু বুঝলাম না এই আসলো আবার চলে গেল ।
যাক ভালো হইছে । আমি একটু পড়ি । কিন্তু ভাবার বিষয় হলো উনি হঠাৎ করে এই আলমারি খুলতে বললো কেন ?
আর আমি আলমারি টা খুললাম না কেন? কিছুই তো নাই আলমারিতে। দূর এসব আলতু ফালতু কথা ভেবে সময় নষ্ট করছি কেন???
আবার পড়ায় মনোনিবেশ করলাম।
একটু পরে পাড়ার এক বড় ভাই ফোন করলো
– হ্যালো
– সুমন কই তুমি
– বাসায় পড়ছি
– ওহহ। কাল পাশের পাড়ার সাথে খেলা আছে ।
– ওহহ।
– আজ সবাইকে একটু প্রাকটিসে আসতে বলো
– আচ্ছা ।
– তুমি ও আসিও।
– ঠিক আছে ভাইয়া
– আচ্ছা বাই।
তাড়াতাড়ি করে একটু পড়লাম । এরপর সবাইকে ফোন করে মাঠে ডাকলাম। আমিও তাড়াতাড়ি গেলাম । ক্রিকেট খেলা আমার সব থেকে বেশি ফেভারিট ।
মাঠে গেলাম । গিয়ে সবাই মিলে প্রাকটিস করছি । বেশ কিছুক্ষণ পর দেখি নীলাদ্রি আর একটা ছেলে রাস্তা দিয়ে হেটে বেড়াচ্ছে ।
কিন্তু আমি তো ওকে বাসায় রেখে আসছি । হয়তো আমি বের হবার পর বের হইছে।
আচ্ছা আমার এমন কষ্ট হচ্ছে কেন? ও ঘুরছে ঘুরুক না। তাতে আমার কি ? আমি কি ওর প্রতি আসক্ত হয়ে গেলাম? না না এটা হতে পারে না । যদি আসক্ত হই তবে শুধু কষ্ট পেতে হবে ।
দূর ভালো লাগে না । আর মাঠে না থেকে চলে আসলাম বাসায়। বাসায় এসে সোজা রুমে চলে আসলাম ।
ফ্রেশ হয়ে টেবিলে পড়তে বসলাম। কিন্তু বারবার ঐ কথা মাথায় আসছে ।
অনেক কষ্টে মাথা থেকে বাজে চিন্তা দূর করলাম যদিও পুরো টা হয় নি।
– কি রে সারাদিন পড়া ছাড়া আর কোনো কাজ নাই ?
– আপনার মতো তো আমার কোনো বন্ধু নাই তাই পড়ি
– মানে
– কিছু না
– ওহহ। তুই নিলয় এর কথা বলছিস?
– আমি কারো কথা কেন বলতে যাবো
– তুই ওর কথাই বলছিস। কারণ তখন দেখলাম তো বল টুকুস টুকুস করছিস।
– হুম ।
– ওখানে সবাই কি করলি
– প্রাকটিস
– কিসের জন্য
– কাল খেলা আছে
– কার সাথে
– পাশের পাড়ার ছেলেদের সাথে
– খেলতে গিয়ে কি করবি সিয়র হারবি
– কে বলছে
– আমি বলছি
– শকুন খেতে পাবে না বলে দোয়া করবে আর সবগুলো গরু মরে যাবে?
– মানে?
– শকুনের দোয়ায় গরু মরে না।
– তুই আমায় শকুন বললি?
– আমি কাউকে ইনডিকেট করে বলি নি
– তুই আরও একদিন এই কথা বলছিস
– হয়তো ।
– হয়তো মানে
– মানে বলতেও পারি কিন্তু আমার মনে নাই কারণ আমি এভাবেই কথা বলি।
– ছোটলোক
– আপনার থেকে ৪ ইঞ্চি বেশি আছি
– মজা নিস তুই আমার সাথে
– আপনি কি আমার দুলাভাই
– দূর ।
নীলাদ্রি আম্মুকে ডাকতে ডাকতে বাইরে গেলো। সেদিন আর তেমন করে কথা হয় নি।
পরের দিন ও আমি তেমন একটা কথা বলি নি। জানি কথা বললেই ঝগড়া করবে আর খেলার আগে মুড অফ করতে চাই না ।
খেলতে যাবো এমন সময়
– কই যাস
– খেলতে
– সিয়র হারবি
– তাতে আপনার কি?
– তুই হারলে আমার মজা লাগবে
– তে এতে আমার কি
– দূর । আমিও যাবো
– আপনি তো শুরুতেই অপয়া কথা বললেন আরও আপনাকে নিয়ে যাবো
-আম্মু আম্মু
– কি হইছে
– দেখেন না ও আমায় খেলা দেখতে নিয়ে যা না
– কি রে নিয়ে যা
– ওখানে অনেক মানুষ আসবে
– তো
– উনি তো আবার ওভার সুন্দরী সবাই টিস করবে
– কার সাহস আছে যে ওকে টিস করবে
– কেন? ও কার কে
– ও তোর বউ।
– তাতে কি
– তুই কি ভাবিস আমি কিছু জানি না
-মানে কি জানেন?
– পাড়ার একটা মেয়েকে ঐ পাড়ার একটা ছেলে টিস করছিলো
– তারপর
– তুই কি করছিস?
– আমি পিটাইছি
– তাহলে বল কেউ তোর বউকে টিস করার সাহস পাবে
– যে কেউ হলে আমি একই কাজ করতাম
– হইছে এখন ওকে নিয়ে যা।
– ধূর। আসেন ।
মাঠে গেলাম ।
– এই রবি
– হ্যা ভাইয়া
– ওনারে একটা চেয়ার দে
– কে ভাবি আসছে ? চেয়ার না ভাবি আপনি সোফায় বসেন ।
– না থাক
– আরে আসেন তো। ভাইয়া আমি ভাবি কে নিয়ে গেলাম
– আচ্ছা ।
– আচ্ছা রবি তোমার ভাইয়া কি মারামারি করে?
– কই না তো
– তাহলে যে শুনলাম ও পাশের পাড়ার এক ছেলেকে মারছিলো
– ছেলেটা দোষ করছিলো তাই ।
– ওহ।
– এই রবি মালটা কেরে
– যদি জানতে পারিস কে উনি তবে মা বলতে সময় পাবি না
– আরে যা সুমন গতবার মারছিলো বলে কি এবারও
– হুম । জমের নাম মুখে নিস না।
– মানে
– উনি ভাবি । সুমন ভাইয়ের বউ
– ভয় পাই না কি? তুই কিছু বলিস না ভাই।
– আভ্যাস চেঞ্জ কর
– ওকে ।
– রবি কি বললো ছেলেটা ?
– কিছু না ভাবি।
– ওহহ। সুমন খেলতে পারে ?
– পারে বলেই তো আসছে । আর উনি যেটা পারে না সেটার ধারের কাছেও যায় না। আর উনিই তো দলনেতা।
– ওহহ।।
কিছুক্ষণ পর খেলা শুরু হলো। গত কয়েক বারে ওরা একবারও জিততে পারে নি।
এবারো পারলো না। ট্রফি নিয়ে বাসায় আসলাম। যেকোনো ট্রফি আমার বাসাতেই থাকে।
নীলাদ্রি আমার সাথেই আসলো। আমি এসে আলমারি টা খুললাম খুলে ট্রফিটা রাখলাম ।
– এই দারা ওটা বন্ধ করবি না
– কেন ?
– আমি দেখবো ওটার ভিতর কি আছে
– কিছু নেই তো
– তবুও দেখবো
– ওকে দেখেন
– তুই র্যকেট এ আন্তঃজেলা চ্যাম্পিয়ন
– ওটা আমার না তো
– এই জন্য আম্মু সকালে বললো বউয়ের প্রতি কি দরদ? বউকে জিতিয়ে দিলো
– আমি তো আপনাকে জিতিয়ে দেই নি। আপনি তো নিজেই ভালো খেলে জিতলেন ।
– হুম তাও ঠিক ।
– হুম
– তাহলে এটা কার
– আমার এক বন্ধু র।
– তোর কাছে কেন
-ও দিছে রাখতে
– এই ল্যাপটপে কি
– কিছু না
– তাহলে এটা এখানে কেন ?
– গরীব মানুষ একটা ল্যাপটপ কিনছি অনেক কষ্ট করে তাই যত্ন করে রাখছি ।
– ল্যাপটপ ও চালাতে জানিস একটু একটু ।
– ওটাই তোর জন্য অনেক ।
– হুম ।
এভাবেই কিছু দিন কেটে গেল । নীলাদ্রি ভার্সিটির ভর্তি হলো। আমারও পরীক্ষা শেষ । আমিও এখন অনেক টাই ফ্রি। তাই আব্বু বলছে রোজ নীলাদ্রি কে দিয়ে আসতে আর নিয়ে আসতে ।
আমিও তাই করি । রোজ অনেক মজা করে ওরা আমি শুধু দূর থেকে দেখি ।
হয়তো আমায় নিয়েই মজা করে ।
– কি রে নীলাদ্রি ওটা সুমন না
– হুম ।
– কলেজে তো ওরে সেই জ্বালাইছি
– হুম ।
– ও এখানে কেন ?
– আমার বডিগার্ড হিসেবে রাখছি ।
– কি বলিস? এতো কিউট ছেলেকে কেউ বডিগার্ড বানায়
– তো
– বর বানায়।
– তুই বানা গিয়ে
– ওকে তোরা থাক আমি একটু কথা বলে আসি
– তোর যা চয়েজ ? এখন যাবি এই ছোটলোক টার সাথে কথা বলতে
– হুম ।
– যা ভাগ।
আমি বাইকের উপর বসে আছি । সেই সময় আসলো
– হাই সুমন ?
– হাই
– তুমি নাকি নীলাদ্রি র বডিগার্ড এর জব নিছো
– কি? বডিগার্ড? ওহহ হ্যা।
– কেন ?
– ফ্রি টাইম তাই ভাবলাম কিছু করি ।
– ওহহ।
– ওর সাথে কি সব সময় থাকতে হয়
– না।
– তবে
– শুধু এখানে আসা আর নিয়ে যাওয়া ।
– তাহলে কাল থেকে তুমি বাকী সময় আমার সাথে কাটাবে
– মানে
– আমিও মাইনে দিবো
– কিন্তু কেন ?
– তোমায় আমার অনেক ভালো লাগে । কিন্তু তুমি আমার ছোট !! তাই তোমার সাথে শুধু ঘুরবো ।
– বাইকে তেল কে ভরবে ?
– আমি
– ( একটু ভেবে দেখলাম ভালোই হয় ) আচ্ছা ঠিক আছে । তবে
– তবে কি?
– কোনো মাইনে দিতে হবে না শুধু পেট্রোল ভরলে হবে
– ওকে । তুমি যেমন চাও।
– হুম
– কাল রেডি হয়ে এসো শপিং এ যাবো
– ওকে ।
– তোমার নাম্বার টা দাও
– ০১৭……..৫৭
– এটা আমার সেভ করো
– আপনার নাম
– নুসরাত । আর আপনি নয় তুমি
– ওকে । তবে নুসরাত নয় নুসু
– তোমার ইচ্ছে
– হুম ।
– তোমার এতো বড় চুল কেন?
– আমার ভালো লাগে
– ওহহ। অনেক কিউট কিন্তু
– জানি
– আমি একটু ধরি
– ওকে ।
আর কিছুক্ষণ গল্প করার পর
– তো বাই। কাল দেখা হবে
– আচ্ছা বাই।
একটু ঘুরে নীলাদ্রি কে বাসাশ আসলাম ।
– ভালোই তো গল্প করিস
– মানে
– নুসরাত এর সাথে কি কথা বললি
– কিছু না
– বল কি বললি
– কেন জ্বলে
– কি? তোর মতো ছোটলোক আমি না।
বাহ ভালো একটা আইডিয়া পাইলাম তো। নুসরাত কে কাজে লাগালো যাবে । এবার বুঝবে বেবী কত ধানে কত চাল…….
………………..
……………….
………………
……………..
…………….
……………
…………..
………….
…………
………..
……….
………
……..
…….
……
…..
….
…
..
.
to be continue