#কাছে_দূরে ♥️
#moumita_mehra
#পর্ব___১৬
মুখের উপর বারবার কারোর গরম নিঃশ্বাস আচড়ে পড়তেই ঘুম ভেঙে গেলো হীরের। রাতের মতোই কিছু ঘটার পূর্বাভাস পেতে মনের মধ্যে উঁকি মারল একরাশ ভয়। তবে ভয় পেয়ে হীর চোখ খুলল না। তার উপর হামলা করার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া মানুষটার সাথে আজ সেই লড়বে। সেই পরাজয় করবে হামলাকারীকে। কারন মারপিট করে নিজেকে প্রটেক্ট করার কৌশল সেও তো কিছু কম রপ্ত করেনি! হীর মনে মনে ছক কষল হামলাকারীকে কি করে পরাস্ত করবে। সেই অনুযায়ী কাজে লেগে পড়ার প্রথম ধাপ হলো আচমকা চোখ খুলে হামলাকারীর দিকে বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে তাকে ভড়কে দেওয়া। যেমন ভাবা তেমন কাজ। হীর আচমকাই চোখ খুলে সামনের মানুষটার দিকে বড় বড় চোখ করে তাকাতে ভড়কে গেলো মানুষটা। আকস্মিক হীর চোখ খুলে তাকে এভাবে দেখবে ভাবতে পারেনি সে। হীরের বড় বড় চাহনি থেকে নিজেকে আড়াল করবে ভেবেই দূরে সরে যাচ্ছিলো। কিন্তু বেশিদূর যাওয়ার আগেই হীর শুইয়ে থাকা অবস্থাতেই তার শার্টের কলার্ট চেপে ধরে নিজের মুখোমুখি নিয়ে এলো। এর পরের ধাপ খুব সম্ভবত তাকে নীচে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়ে তার উপর চড়াও হওয়া ছিল। আর তারপর হাতের কাছে যা পাবে সেটা দিয়ে তার মাথার মধ্যে বারি বসাবে। কিন্তু এমন আর কিছুই করতে সক্ষম হলো না হীর। তার আগেই বোধগম্য হলো হামলাকারী ভেবে যাকে সে মারবে ভেবেছে সে আর কেউ নয়, স্বয়ং সাদমান সাবাব! ভয়ে হীরের বুকের ভেতরটা চিৎকার পেড়ে উঠতেই মুখ থেকে চাপা আর্তনাদ করার মতো শব্দ বের হলো। যে হাতে সাবাবের কলার্ট চেপে ধরেছিলো সে হাত গুটিয়ে নিয়ে এখন নিজের মুখ আড়াল করল সে। হীরের এহেম সব কান্ডে সাবাব এখনও বোকার মতো তাকিয়ে আছে হীরের দিকে। এই এক্ষনি যা ঘটল এখানে তা এখনও সে তার মগজ ধারন করতে পারল না। হীর নিজেকে আড়াল করে ফেলেছে দেখতেই যেন চেতন ফিরল তার। হীরের কাছ থেকে লাফ দিয়ে উঠে দাঁড়ালো সে। নিজের শার্টের কলার্ট টেনে ঠিক করতে করতে গলা খাঁকারি দিলো! হীর এখনও মুখে হাত চেপে নিজেকে আড়াল করে রেখেছে। সাবাব আঁড়চোখে বারবার দেখছে হীরকে। হীরের নড়াচড়া না দেখে সাবাব আবারও গলা খাঁকারি দিলো। হীর এবার নড়েচড়ে উঠে মুখ থেকে হাত সরালো। তাকিয়ে দেখল সাবাব তার থেকে এক হাত দূরত্ব নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। তাই সেও সহজ হতে চেষ্টা করল। কাচুমাচু করে বলল,
—-” আ,,মি ভেবে,,ছিলাম আবার বুঝি কেউ এট্যাক করছে আমার উপর।”
হীরের কথা শুনে সাবাব চোখ জোড়া চড়কগাছে চড়িয়ে বলল,
—-” হোয়াট! লাইক সিরিয়াসলি? যখন তোর উপর এট্যাক হয় তখন তো কিছুই করতে পারিসনা শুধু চেঁচানো ছাড়া! আর এখন আমাকে তুই এট্যাককারী ভেবে উল্টে আমার উপরই এট্যাক করে দিলি? মাই গুডনেস!”
হীরের মুখখানা চুপসে গেলো। ফ্যাকাসে মুখে বলল,
—-” ওদের উপর বিপরীতে কি করে আমি এট্যাক করব? ওরা তো আসেই রাতের বেলা! আর টেকনিক করে আমার রুম অন্ধকার করে দিয়ে তারপর এট্যাক করে! তাহলে তুমি বলো? অন্ধকারে আমি কি করে নিজেকে সেফ করতে পারি? আমার তো অন্ধকারই…”
—-” আচ্ছা, বুঝেছি। আর বলতে হবে না। তবে তোর এই এট্যাকটা কিন্তু মন্দ ছিলো না! মাঝেমধ্যে এরকম একটু সাহস দেখাতে পারলেই ব্যস, অনেক প্রবলেম থেকেই তুই বেঁচে যেতে পারবি।”
হীর ঠোঁটের কোনে হাসির রেখা টানল। সাবাবের কথায় আর কোনো জবাব না দিয়ে একা একাই উঠে বসতে চেষ্টা করল। কিন্তু চেষ্টা সফল হলো না। রাতের শরীরের ব্যাথা এখনও অনেকটাই রয়ে গেছে। দুই বাহুতে টনটনে ব্যাথা করে উঠতেই আবারও শুইয়ে পড়ল সে। গাল ফুলিয়ে নিঃশ্বাস ছেড়ে নিজের ব্যর্থতা প্রকাশ করল। যা দেখে সাবাব দ্রুত পায়ে এগিয়ে এসে হীরকে ধরল। চোখের ইশারায় বোঝালো ‘আমি সাহায্য করছি’। হীর সাবাবের ইশারা বুঝল কি না বোঝা গেলো না। ফ্যালফ্যাল করে সে তাকিয়ে রইল সাবাবের মুখশ্রীতে। সাবাব সংমিশ্রণের একটা শার্ট পড়েছে। ধবধবে সাদা শরীরে বেশ লাগছে তাকে। ভোরের স্বচ্ছ আলোতে চকচক করছে তার মুখ। গাল ভর্তি খোঁচা খোঁচা দাঁড়িতে আরেকটু সৌন্দর্য বাড়িয়ে তুলেছে তার। সাবাব ঝুঁকে যাওয়ার দরুন তার কপালের উপর নেচে খেলে বেড়ানো সিল্ক চুলগুলো এবার একজন আরেকজনকে জড়িয়ে ধরে ঝুঁকে পড়েছে খানিকটা। লালের মধ্যে গাঢ় লাল তার ঠোঁট। কেমন করে যেন একজন আরেকজনকে চেপে ধরে ব্যাথা দিয়েও আনন্দে মেতে উঠছে। হীরের বুকের ভেতরটা মোচড় দিয়ে উঠল। শরীরে এক অদ্ভুত অনুভূতি খেলে গেলো! তার ভীষণ লজ্জা লাগল। চোখ নামিয়ে নিলো সে। বুকের ভেতর কম্পন অনুভব করল। দু’হাতে মুখ ঢেকে লজ্জা ঢাকার তীব্র প্রচেষ্টা চালাতে ইচ্ছে করল। কিন্তু তার কিছুই করা হয়ে উঠল না। বরং কোন এক শক্ত বানীতে নিজের অনুভূতি গুলোকে লুকিয়ে ফেললো। সাবাবের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন করল,
—-” তখন তুমি আমার এতোটা কাছে কি করছিলে?”
হীরের প্রশ্নে সাবাব আকস্মিক কেশে উঠল। হীর আচমকা তাকে এধরনের প্রশ্ন করতে পারে সেটা তার মাথায় আসেনি। আসলে হয়তো আগেভাগে এর উত্তর তৈরি করে রাখা যেতো! সাবাবকে কাশতে দেখে হীর হেসে উঠলো মনেমনে। সাবাব কি জবাব দেয় এখন শুধু তারই প্রতীক্ষা। সাবাব হীরকে বসিয়ে দিয়ে কিছুটা দূরত্ব করে নিলো দু’জনের মাঝে। জিহ্বা দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে নিয়ে বাঁ হাতটা তুলে ঘাড়ে চাপালো। গলা খাঁকারি দিয়েও যখন কোনো উত্তর তৈরি করতে পারল না তখন আবোল তাবোল বকে হঠাৎ বলে উঠলো,
—-” ম,,মা! মা ছিলো না রাতে তোর কাছে? ফজরের আজান হতেই মা চলে গেলো! ত,,তারপর মা নামাজ পড়লো। বাবাকেও নামাজ পড়তে বলল! আর তার,,পর মা আমার রুমে এলো। তারপর আমাকে তোর রুমে এসে বসতে বলল! আমিও এলাম, ব,,বসলাম! আর তারপ…”
হীর ভ্রু নাচিয়ে জিজ্ঞেস করলো,
—-” তারপর?”
—” হ,,হ্যাঁ তারপর… তারপর আস,,লে আমি…”
” স্যার আসবো?”
দরজায় কেউ নক করতে সাবাব থেমে গেলো। দু’জনে একবার মুখ চাওয়াচাওয়ি করে মুখ উঁচিয়ে তাকালো সেদিকে। কিরন দাঁড়িয়ে আছে। সাথে মাহদী,আভিক আর ইভানও আছে। তাদের দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে সাবাব যেন দম ছেড়ে বাঁচল। হীর তাদের তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে দেখল। ছেলে গুলো সাবাবের বন্ধু এখনও অব্দি সেটাই জানে হীর। কিন্তু আজ তাদের সকলের ড্রেসআপ যেন একই রকম বলে বোধ হচ্ছে। কিরন আজ নার্সের বেশে নেই। আর্মিদের মতো পোষাক তার। কিন্তু কেন? তাহলে কি শিরিনের এহেম কাজের জন্য কিরনকেও বাদ দিয়ে দেওয়া হয়েছে? বাদ দিলেও কিরন এই ধরনের পোষাকে কেন আসবে? তাও পুরো ইউনিফর্ম নয়। উপরে নেভি ব্লু শার্ট। দেখতে বেশ স্মার্ট লাগছে কিরনকে। অনেকটা বিদেশি টাইপ।
—-” হ্যাঁ এসো।”
সাবাবের অনুমতি পেয়ে এক এক করে সবাই ভেতরে প্রবেশ করল। আর সেই একই সাথে সবাই সাবাবকে স্যালুট করে হীরকে এক এক করে গুড মর্নিং উইস করলো। হীরের বোকার রাজ্যে তলিয়ে যেতে তাদের সাবাবকে স্যালুট করা অব্দিই যথেষ্ট ছিলো। হীর হা করে সাবাবের দিকে তাকাতেই সাবাব তাদের উদ্দেশ্যে বলল,
—-” এনি আপডেট?”
কিরন হ্যাঁ সূচক মাথা নেড়ে বলল,
—-” ইয়েস স্যার।”
মাহদী আর ইভান ফাইল বের করে বলল,
—-” স্যার, শিরিনের সকল ডিটেইলস এখানে আছে।”
সাবাব উঠে দাঁড়ালো। সবাইকে নীচে যেতে ইশারা করে বলল,
—-” তোমরা নীচে গিয়ে অপেক্ষা করো আমি এক্ষনি আসছি।”
সবাই পূনরায় একই ভাবে স্যালুট করে ‘সিওর স্যার’ বলে বেরিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে হাঁটা ধরল। হীর নিজের বিস্ময় আর চেপে রাখতে না পেরেই বলে উঠলো,
—-” এক মিনিট।”
সবাই দাঁড়িয়ে পড়ল। হীরের দিকে সবাই প্রশ্নবিদ্ধ মুখ করে তাকানোর মাঝে সাবাব বলে উঠলো,
—-” কিছু বলবি?”
হীর বিস্ময় নিয়ে বলে উঠলো,
—-” উনারা বার বার তোমাকে স্যালুট কেন করছে ভাইয়া? উনারা না তোমার ফ্রেন্ড? তাহলে স্যালুট কেন করবে? আ,,আর কিরন! কিরন তো নার্স! তাহলে ও কেন এমন ড্রেসআপে আছে? আর সবার মতো ওঁ বা কেন তোমায় স্যালুট করছে?”
হীরের কথা শুনে সবাই মুখ চাওয়াচাওয়ি করল। সাবাব কিরনের দিকে তাকাতে কিরন মিষ্টি হেসে হীরের উদ্দেশ্যে বলল,
—-” উনারা কেউ স্যারের ফ্রেন্ড নয় ম্যাম! আর আমিও নার্স নই! আমরা সবাই ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাদমান সাবাবের টিম মেম্বার। সিক্রেট, টিম মেম্বার।”
—-” হোয়াট!”
—-” ইয়েস ম্যাম।”
হীর করুন চাহনিতে সাবাবের দিকে তাকালো। জড়ানো গলায় বলল,
—-” তুমি এটা কি করলে ভাইয়া? অবশেষে কি না এই প্রফেশন চুজ করলে? ইউ নো দ্যাট ভেরি ওয়েল, শত্রুরা বাবাকে কতটা নৃশংস ভাবে মেরেছিলো জাস্ট বিকজ অফ দিস প্রফেশন। আ,,আর আজ তুমি একই প্রফে,,শন…”
সাবাব শান্ত দৃষ্টিতে তাকালো হীরের দিকে। হীরের পাশে বসে তাকে সান্ত্বনা দিয়ে বলল,
—-” রিলাক্স হীর। বাবাইয়ের খুনের রহস্য উদঘাটন করতেই আমি এই প্রফেশন বেছে নিয়েছি। আমাকে যে জানতেই হবে, ঐ খুনের পেছনে কার কার হাত ছিলো?”
—-” হ্যাভ ইউ গন ম্যাড! আজ বারোটা বছর হয়ে গেলো বাবার খুনের। এই বারো বছরেও যখন কেউ বাবার মৃত্যুর রহস্যের সমাধান করতে পারেনি, আজ বারো বছর বাদে তুমি কি করে রহস্যের সমাধান বের করবে?”
—-” ইউ নো হোয়াট? বাবাই আমার আইডল! বাবাইকে আমি আমার নিজের বাবার থেকেও বেশি ভালোবাসতাম! আর আমার সবচেয়ে প্রিয় মানুষটার নির্মম হত্যাকাণ্ডের রহস্য আমি খুঁজব না? এটা অসম্ভব হীর। জাস্ট অসম্ভব!”
—-” তুমি পাগলামো করছো!”
—-” হয়তো করছি! বাট এই প্রফেশন থেকে আমি কিছুতেই সরো আসব না।”
—-” কিন্তু…”
—-” অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমি মোকাবেলা করবোই! আর বাবাইয়ের মৃত্যু রহস্যেরও উদঘাটন করব।”
কথাটা বলেই উঠে চলে গেলো সাবাব। আর তার পেছন পেছন ছুটল বাকিরাও। হীর করুন চোখে তাকিয়ে আছে তাদের যাওয়ার পানে। তার বাবা-মায়ের মৃত্যু রহস্য উদঘাটন করতে গিয়ে সাবাব আর তাকেও কি একই ভাবে মরতে হবে? আবারও কি পুনরাবৃত্তি ঘটবে রিয়াদ আর কনিকার মৃত্যুর রহস্যের। শত্রুরা কি সেই উল্লাসে মেতে উঠেছে? হীরের ভয় হলো! সবটা আবারও শেষ হয়ে যাবে না তো?
______________
সাবাবের দিকে একজোড়া ফাইল এগিয়ে দিয়ে মাহদী বলল,
—-” স্যার, শিরিন ঐ হসপিটালে কাজ করছে প্রায় পাঁচ বছর। খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে সে তার কাজে সর্বদা সৎ এবং সবার কাছেই বিশ্বস্ত। তার আগে এরকম কোনো রেকর্ড নেই। তার কথা যাকেই জিজ্ঞেস করা হয়েছে সবাই এই একই ইনফরমেশন দিয়েছে।”
সাবাবের কপালের ভাজ তীক্ষ্ণ হলো। ফাইল ঘাটা বন্ধ করে মাহদীর দিকে একবার দৃষ্টি নিক্ষেপ করল। সাবাবকে বিশ্বাস করাতে মাহদী হ্যাঁ সূচক মাথা নাড়ল। পাশ থেকে আভিক হাতে কলম ঘোরাতে ঘোরাতে বলল,
—-” স্যার, আজ ভোরের দিকে আমি আর কিরন শিরিনের বাসার খোঁজে বের হই। সরু গলিতে একদম শেষ মাথার বস্তিতে শিরিনের বাসা। পরিবার বলতে তার অসুস্থ মা আর পাঁচ বছরের এক ছেলে আছে। শিরিনের স্বামীর কথা জিজ্ঞেস করতে শিরিনের মা বলল, গত পাঁচ বছর আগেই তাদের নাকি ডিভোর্স হয়ে যায়। আর তারপর থেকে শিরিনই পরিবারের হাল ধরে। হসপিটালে সেবিকার কাজ নেয়।”
সাবাব আভিকের কথার মাঝে বলে উঠলো,
—-” শিরিনের স্বামীর সাথে ডিভোর্স হওয়ার রিজন কি ছিলো?”
আভিক কিরনের দিকে তাকাতে কিরন বলে উঠলো,
—-” স্যার, পেশায় শিরিনের স্বামী একজন টেক্সি ট্রাইভার ছিলো। সংসারে নাকি বেশ আয়-রোজগারও ছিলো। কিন্তু হঠাৎ করে লোকটা নেশা করতে শুরু করে। আর সেখান থেকেই তাদের দুর্দিন শুরু। রোজ রাতে নেশা করে বাড়িতে ফিরে তাকে নাকি মারধর করত। আমরা প্রথমে ভেবেছিলাম ভদ্রমহিলা শিরিনের নিজের মা! কিন্তু পরে জানতে পারলাম উনি শিরিনের শাশুড়ী।”
—-” তার মানে শিরিন এই পেশায় নিয়মিত নয়?”
ইভান বলল,
—-” ইয়েস স্যার। শিরিনকে আপাতত হসপিটালাইজড করা হয়েছে। তাকে জেরা করার পর সে তাদের মহল্লারই এক পাতি গুন্ডার নাম বলে। সেই তাকে টাকার অফার করে হীরের উপর এট্যাক করতে বলে। ওদের উদ্দেশ্য ছিলো হীরকে কিডন্যাপ করা!”
সাবাব ভাবুক কন্ঠে বলল,
—-” নাম কি ওর?”
—-” রানা। এলাকায় মাস্তান গিরি করেই খ্যাত। ইভটিজিংকের অনেক কেসে ওর নাম পাওয়া যায়। শিরিন জানায়, ওর কাছে নাকি বড়বড় জায়গা থেকেও কল আসে। কাজের অফার পায়। তবে ও নিজে যায় না! লোক পাঠিয়ে কাজ করায়। আর শিরিনকেও সেভাবেই কাজে লাগিয়েছে!”
সাবাবের কপালের ভাজে চিন্তার সুক্ষ্ম ছাপ দেখা গেলো। চিন্তাক্লিষ্ট কন্ঠে বলল,
—-” ওর ব্লাড টেস্ট করানো হয়েছে? ওর শরীরেও কি সেই বিষাক্ত কেমিক্যাল পাওয়া গিয়েছে?”
ইভান না সূচক মাথা নেড়ে বলল,
—-” নো স্যার। শিরিন সম্পূর্ণ ঠিকাছে। ওর শরীরে বিষাক্ত কোনো কেমিক্যাল পাওয়া যায়নি।”
—-” গুড। ওর সিকিউরিটির জন্য লোক ঠিক করো। ও বেঁচে আছে শুনলে ক্রিমিনালরা কিন্তু ওকে শেষ করে ফেলতে উঠেপরে লাগবে।”
—-” ইয়েস স্যার। ওর নিরাপত্তার সকল ব্যবস্থা করা হয়েছে।”
—-” ওকে। কিরন, কাল হঠাৎ তুমি হীরকে একা ছাড়তে গেলে কেন? কোনো সমস্যা হয়েছিলো কি?”
সাবাবের প্রশ্নে অপরাধী দৃষ্টিতে তাকালো কিরন। অপরাধী গলায় বলল,
—-” ইয়েস স্যার। সকাল থেকে আমার শরীরটা হঠাৎ করে খুব খারাপ লাগছিলো। বুঝতে পারছিলাম না কি হয়েছে! কাউকে জানাবো সেটাও আর হয়ে উঠেনি। শিরিন আমার শারীরিক কন্ডিশন লক্ষ করে বলেছিলো আমাকে রেস্ট নিতে। আমাকে ঘরে পাঠিয়ে রেস্ট নিতে বলে বারবার জোরও করছিলো। আমার মাথায় প্রথমে এটা আসেনি যে শিরিন আমার খাবারে কিছু মিশিয়েছে! আসলে, আমার ওর উপর কোনো ভাবেই সন্দেহ হয়নি! তাই আর বুঝতে পারিনি!”
মাহদী ছক কষে মেলাতে মেলাতে বলল,
—-” শিরিনের আগে থেকেই প্ল্যান ছিলো সে এরকম কিছু করবে বলে! তাই তোমাকে ওর রাস্তা থেকে আগে সরিয়ে পরে ওর কাজ করেছে।”
—-” হ্যাঁ!”
সাবাব আবারও ফাইল ঘাঁটায় মনোযোগ দিলো। ফাইল ঘাঁটতে ঘাঁটতে কিরনের উদ্দেশ্যে জিজ্ঞেস করল,
—-” এখন তোমার শরীরের কি অবস্থা? অলগুড?”
কিরন মিষ্টি হেসে জবাব দিলো,
—-” ইয়েস স্যার। অলগুড।”
#চলবে_♥️
[ গল্পের রিচ তো একদমই ডাউন🙂 সেই সাথে কমেন্টও নেই🙂 সব পরিশ্রম সব কষ্ট বৃথা ]