কাজের মেয়ে যখন আদরের বউ
পর্ব :, ৯ +১০
#writer: DaRun NayEm (Rejon)
কথাটা শেষ না করেই সামনে তাকিয়ে দেখি জান্নাত স্যার মাযায় হাত দিয়ে রাগী চেহারা নিয়ে দরজায় হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে..
– স্যার আপনি ❓( ফোন কেটে দিয়ে)
– কার সাথে কথা বলছিলে ❓
– আমার এক বন্ধু সাথে।
– কে তোমার বন্ধু ❓তোমার বন্ধুটা হয়তো খুব চুমুচুমি দিতে পছন্দ করে।
– আরে আমার এক আছে না মিম। ওর সাথেই কথা বললাম।
– মিমের নাম্বারটা দাও তো ❓
– আপনি মিমের নাম্বার দিয়ে কি করবেন ❓( কিছুটা নিজেকে হারিয়ে ফেলে)
– সেটা আমার ব্যাপার। তোমাকে দিতে বলেছি দাও।
– আমি কি নাম্বার দিতে বাধ্য ❓
– তুমি হয়তো ভুলে যাচ্ছো আমি তোমার বস।আর তুমি আমার পি.এ। আমি এখন থেকে তোমাকে যেভাবে যেই অবস্থায় রাখব তুমি সেই অবস্থায় থাকবে। যখন যেটা হুকুম করব তখন সেটা অক্ষরে অক্ষরে পালন করতে হবে। ( কড়া গলায়)
– স্যরি স্যার।
– মিমের নাম্বারটা দাও ❓( কিছুটা রাগী কন্ঠে)
– মিমের নাম্বার আমার কাছে নেয় তো।
– মানে ❓( উঁচু গলায়)
– ফাজলামির পাত্র মনে হয় আমায় ❓তাইলে কার সাথে কথা বলছিলে ❓( ধমকের সুরে)
– আসলে স্যার মিম নামে এই পৃথিবীতে আমার কোন দিন ফ্রেন্ড ছিলও না আর কোন দিন হবেও না।
– তাইলে এতো চুমাচুমি দিল কে ❓
– ডানা ।
– তোমার লজ্জা করে নাহ তুমি পরকিয়া করছো।
– কিভাবে পরকিয়া করলাম ❓( জিজ্ঞাসুনু দৃষ্টিতে)
– নিজের বউ কে রেখে রাস্তার একটা বাজে কাজের মেয়ের সাথে প্রেম করছো। তোমার দৃষ্টি শক্তি এতো নিচে কেন ❓লাস্ট পর্যন্ত রাস্তার পতিতার সাথে……………………
– ইউ………………….. ( হাত উঁচু করে থাপ্পড় দেওয়ার ভঙ্গিতে হাত বাড়িয়ে ফিরিয়ে আনলাম)
– তোমার কত্ত বড় সাহস তুমি আমায় আঘাত হানতে চাও। তোমার সাহসের প্রসংশা করতে হয়। তুমি কি জানো আমি যত অন্যায় করেছি সব গুলো আমার বাবা মা মেনে নিয়েছে। আমি শত অন্যায় করলেও আমার বাবা মা কখনও আমাকে তুমি থেকে তুই বলেনি আর তুমি আমার গাঁয়ে হাত তুলতে চাও।
– প্লিজ স্যরি স্যার। আসলে স্যার ডানাকে নিয়ে কেউ বললে আমার মাথা ঠিক থাকে না। মাথায় আগুন ধরে যায়।
– ডানাকে এতো ভালবাস ❓
– হুমম।
– আর আমাকে ❓
( কথাটা বলেই আমার দিকে আগাতে থাকে আর আমি পেছাতে থাকি )
– আপনাকে আমি যথেষ্ট সম্মান করি। ( পেছাতে পেছাতে)
– আর আমার ভালবাসা ❓( আগাতে আগাতে)
– হুমম ভালবাসি তো স্যার হিসাবে ।
– আর প্রেমিকা হিসাবে ❓
– প্রেমিকা হিসাবে ভাল বাসা দেওয়া আমার পক্ষে সম্ভব না।
– কিন্তু আমি আদায় করে নিব।
আমি এখন এই জান্নাত স্যারের থেকে পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছি দেওয়ালের সাথে। দেওয়ালের সাথে আর সম্পুর্ণ বডি আটকানো।
আর জান্নাত স্যার আমার গায়ের সাথে লেপ্টে আছে।
– এখন কোথায় পালাবে ❓
– স্যার দেখেন এসব ঠিক না।
– আমি আমার ভালবাসা আদায় করে নিব।
– তাই বলে এভাবে জোর করে।
– দরকার পড়লে তাই করব।
জান্নাত স্যার আমার গায়ের সাথে লেপ্টে থাকায় আমার কেমনে জানি অস্থিরতা তৈরি হচ্ছে।
এভাবে থাকায় দুজনেরই নিশ্বাস ভারী হতে উপক্রম হচ্ছে। একজনের নিশ্বাস অন্যজন শুনতে পাচ্ছি।
-প্লিজ স্যার পাগলামো বাদ দেন।
– আমি আমার অধিকার আদায় করছি।
কথাটা বলেই জান্নাত স্যার তাঁর হালকা গাঢ় লাল রঙের এক জোড়া ঠোঁট নিয়ে আমার ঠোঁটের উপর আঘাত হানতে চাচ্ছে। বিষয়টা আমার কাছে বিরক্তিকর লাগছে।
জান্নাত স্যারের ঠোঁট এতোটায় কাছে নিয়ে গেল যে এক জনের গরম নিশ্বাস অন্যজনের মুখে পড়ছে। কিছুক্ষন বাদে চারটি ঠোঁটের মিলন ঘটিবে তাঁর আগেই
– আশরাফ স্যার আপনি এখানে । ( আশরাফ জান্নাতের বাবা)
কথাটা বলতেই দুজন যে যার অবস্থানে চলে গেলাম। তারপর জান্নাত স্যার চারিদিকে তাকিয়ে কাউকে দেখতে না পেয়ে রাগী চেহারা নিয়ে তাকিয়ে আছে।
রাগী চেহারাটা নিমিষেই হাসিতে পরিণত হয়।
– ফাজিল একটা ।
– কিভাবে ফাজিল ❓
– এই যে আমার ভালবাসাটা আদায় করতে দিলে না।
– আসলে স্যার আমার লিপিস্টিক খাওয়ার অভ্যাস নেয় তো যার ফলে নিতে পারছিলাম না।
– এখন থেকে লিবিস্টিক খেতে অভ্যাস করতে হবে।
– ওকে স্যার এখন থেকে ডানার লিপিস্টিক নিয়মিত খাব।
– কি বল বিড়বিড় করে ❓
– কিছুনা
– আমি আবার যে কোন সময় আমার অধিকার আদায় করতে আসব।
কথাটা বলেই আমার কেবিন ত্যাগ করলেন জান্নাত স্যার।
এর মাঝে ডানা অনেকবার ফোন করেছে। আমি ডানাকে মেসেজ দিয়ে বললাম আমি একটু অফিসের কাজ নিয়ে ঝামেলার মধ্যে আছি। তোমায় বাসায় এসে সব বলব ।
।।
।।
।।
অফিস টাইম শেষ করে সন্ধ্যার দিকে বাসায় ফিরব কিন্তু নিয়মিত সম্যাসা রিক্সা সিএনজি কিছুই পাচ্ছি না।
কতক্ষণ পড়ে দেখলাম জান্নাত স্যার তাঁর নিজ্বব গাড়ি নিয়ে বের হচ্ছেন।
আমি স্যারের গাড়ি দেখে উল্টো দিকে মুখ করে দাড়িয়ে রইলাম যাতে আমায় দেখিতে না পায়।
– জান্নাত স্যার দেখলাম আমার কাছে এসেই গাড়ি দাঁড় করালেন ।
– এই হবু বর ❓
আমি স্যারের কথা শুনে সামান্য বিস্ময় হলাম।
আমি পিছন ফিরে তাকিয়ে দেখি স্যার গাড়ির জানালা নামিয়ে কথা বলছে।
– হুমম স্যার হলেন।
– বাসায় যাবে না❓ বাসায় লেট করে গেলে তো আবার আমার শ্বশুর শ্বাশুড়ি টেনশন করবে।
– স্যার আমি যেতে পারব।
– তুমি হয়তো আবার ভুলে যাচ্ছো………………………
– স্যরি স্যার আমি তো ভুলেই গিয়েছিলাম আমি আপনার এখন থেকে পোষা কুকুর। আপনি যেটা বলবেন সেটাই করতে হবে।
– এভাবে বলছো কেন ❓
– তাইলে কিভাবে বলব ❓
– তুমি এখন রিক্সা পাবে না জন্যে অফিসে অনেক কাজ রয়েছে তা সত্ত্বেও তোমাকে নামিয়ে দিতে চলে আসলাম।আর তুমি এসব কি বলছ।
– স্যরি স্যার। ভুল হয়ে গিয়েছে।
– গাড়িতে উঠো।
।।
গাড়িতে চলে আসলাম। গাড়ি চলছে তার নিজ্বব গতিতে।
কতক্ষণ পড়ে জান্নাত স্যার এমন একটা বিষয় করল যেটাতে আমি কোন ভাবেই প্রস্তুত ছিলাম না।
।
চলবে
কাজের মেয়ে যখন আদরের বউ
পর্ব : ১০।
#writer: DaRun NayEm (Rejon)
স্যরি স্যার। ভুল হয়ে গিয়েছে।
– গাড়িতে উঠো।
।।
গাড়িতে চলে আসলাম। গাড়ি চলছে তার নিজ্বব গতিতে।
কতক্ষণ পড়ে জান্নাত স্যার এমন একটা বিষয় করল যেটাতে আমি কোন ভাবেই প্রস্তুত ছিলাম না।
গাড়িটা ব্রেক করে সামান্য একটি লিপ কিস দিল। আমি বিষয়টা অনুভব করতে পারিনি আসলে এমনটা হবে।
– কি করলেন এটা ❓
– আমি আবার কখন কি করলাম। ( না জানার ভান করে)
– বিষয়টা কিন্তু সম্পূর্ণ বাড়াবাড়ি।
– কোন বিষয়টার কথা বলছো।
– এই যে কিস।
– এটা আমার অধিকার তাই করলাম।
– কীসের অধিকার ❓
– আমি আমার হাজবেন্ড কে কিস করতেই পারি।
– প্লিজ আমারা এই বিষয় টা নিয়ে আর কথা না বলি।
( রেজন জানে কথা বলে কিছুই হবে না।এর আগেও অনেক বলেছে কিন্তু কিছুতেই কিছু হয় না। )
– হুমম বাবু।
– আবার।
– কি আবার ❓
– স্যরি বাবা আপনার যা ইচ্ছা হয় বলেন।
– এই তো লক্ষি সোনা।
সারা পথই আজাইরা কথা বলতে বলতে আমার কান ঝালাপালা করে ফেলেছে। আমি এক পর্যায়ে ক্লান্ত হয়ে পড়লাম।
।।
কতক্ষণ পড়ে বাসার সামনে চলে আসলাম । বাসায় এসেই কিছুটা সময় রেস্ট নেওয়ার প্রস্তুতি গ্রহণ করলাম।
কিছুসময় পড়ে ডানা রুমে উপস্থিত হলো ।
– এই তোমাকে এমন দেখাচ্ছে কেন ❓
– কেমন দেখাচ্ছে ❓
– তুমি হয়তো কোন বিষয় নিয়ে আপসেট।
– না কিছু না।
– তাইলে ফ্রেশ না হয়ে এভাবে শুয়ে আছো। যাও ফ্রেশ হয়ে আসো।
– আমি ডানার কথা শুনে উঠে বসলাম। বসে ডানাকে টেনে কাছে নিয়ে আসলাম। ডানা আমার বুকে মাথা গুজে আছে। আমি ডানার মাথায় হাত বোলাচ্ছি। ডানার চুল গুলো হাতে নিয়ে খেলা করছি। আর আনমনে ভাবছি মেয়েটি এতো ভাল কেন। একটা সুন্দর মনের মানুষ সাথী হিসেবে পাব ভাবতেই কেমনে জানি লজ্জা লাগছে। আচমকাই ডানা বুক থেকে মাথা উত্তেলন করে রাগী লুকে তাকিয়ে আছে।
– কি হলো (অবাক দৃষ্টিতে)
– তোমার ঠোঁটে লিবিস্টিক কেন ❓
– লিবিস্টিক মানে ❓
– তাইলে ওইটা কি ❓( ঠোঁটের দিকে ইশারা দিয়ে)
হঠাৎ আমার মনে পড়ে গেল যে জান্নাত তো আমায় লিপ কিস করেছিল যার ফলে হয়তো লিবিস্টক লেগে আছে। আমিতো গিয়েছিলাম না পরিষ্কার করতে। আর এখন পরিষ্কার করি তাইলে ডানা খুব বাজে ব্যাবহার করবে। ডানাকে এখন কি বলব তাইলে। আল্লাহ প্লিজ হেল্প মি। এবারের মতো বাঁচিয়ে নাও প্লিজ ।
– কি হলো ❓
– আসলে বাজারে একটা চকলেট পাওয়া যায় যেটা খেলে ঠোঁট লাল বর্ন ধারণ করে। ( মিথ্যা কথা)
– আমার বিশ্বাস হয় না।
– তাইলে তুমি ছুয়ে দেখ এটা লিবিস্টিক নাকি চকলেটের কারনে বর্ন।
– আমি আমার নিজের ঠোঁট দিয়ে ছুয়ে দেখতে চাই ওইটা লিবিস্টিক নাকি অন্য কিছু।
– তোমার যেমনটা ইচ্ছা। তোমার খুব লাভ গো তোমার এক ডিলে দুই পাখি মারা হবে।
– কিভাবে ❓
– চুমুর স্বাদও মেটাতে পারবে আবার লিবিস্টিক ও পরীক্ষা করতে পারবে।
– আর তুমি চুমুর স্বাদ পাবে না। ❓
– না।
– আমি দুইটার একটাও করব না।
– কেন ❓
– এমনই।
– প্লিজ দাও।
– পারব না।
– প্লিজ প্লিজ প্লিজ।
– কেউ দেখে ফেলবে❓
– কে দেখে ফেলবে ❓এখানে তো কেউই নেই ❓
– পাঠক পাঠিকারা সবাই দেখার জন্য চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে।
– প্লিজ পাঠক পাঠিকারা আপনারা একটু চোখ বন্ধ করেন আমরা কাজটা ছেড়ে ফেলি তাঁর পর চোখ খুলবেন ।
– সবাই চোখ বন্ধ করেছে এবার দাও।
– ওকে দিতেছি।
ডানা আস্তে আস্তে আমার দিকে আগাচ্ছে তাঁর ঠোঁট দুটি নিয়ে আমিও আমার ঠোঁট আগাচ্ছি ডানার দিকে।
কতক্ষণ পড়ে আমাদের গোপন কাজ শেষ হয়ে গেল। কাউকে জানতে দিলাম না আমরা কি করলাম। কারণ সবাই চোখ বন্ধ করেছিল।
– তো কি বুঝলে লিবিস্টিক নাকি…………………………
– এক ডিলে শুধু একটাই পাখি মারতে পারছি গো।
– কোন পাখিটা মারতে পারলে ❓
– শুধু চুমুর স্বাদ টাই গ্রহণ করেছি।
– তাইলে এখন অন্য পাখি টা মারো।
– না এখন সব পাঠক পাঠিকারা তাকিয়ে রয়েছে আজকে আর হবে না।
– ওকে বাবু।
– আচ্ছা বাবা কোথায় গো ❓
– বাবাতো বাহিরে গিয়েছে।
– আর আম্মু ❓
– সাদিয়াকে সাথে নিয়ে পাশের বাসায় গিয়েছে। এখনই হয়তো চলে আসবে।
– তাঁর মানে বাসা ফাঁকা ❓
– তাইলে তো খুব রোমাঞ্চ করা যাবে। চলো রোমাঞ্চ করি।
– শখ কত ❓
– উহুহুহুহু ।
– বিয়ের আগে এসব হবে না।
– প্লিজ ।
– হবে না।
– একটু তো বুকের উপর মাথা রেখে থাকতে পার। ( অভিমানের সুর)
– যাহ ফাজিল।
– একটু মাথা রাখ না।
– ওকে।
আমি বালিসে হেলান দিয়ে শুয়ে আছি আর ডানা বুকে মাথা রেখে শুয়ে আছে।
– এই ডানা ❓
– হুমম বল সোনা পাখি।
– যদি হারিয়ে যায়।
– মারা যাব।
কতক্ষণ কথা বলছি হটাৎ কারো কন্ঠে কিছু কথা শুনতে পেলাম।
– আপনাদের শুটিং কি শেষ হয়েছে ❓
।
চলবে