কি ছিলে আমার পর্ব -১১

#কি_ছিলে_আমার
-রূবাইবা মেহউইশ
পর্ব-১১

কুয়াশায় জমেছে গাছের ফাঁক-ফোঁকর, রাস্তার বাতির নিচ আর ঘুলঘুলির ফাঁকে। রাত পাহারায় থাকা জোনাকিরা একটু একটু করে পথ ভ্র-ষ্ট হয়ে ছড়িয়ে আছে মৈত্রীদের বাড়ির পেছনের লেবু বাগানে। ছাঁদ জুড়ে বসেছে আনন্দের মেলা। সেই মেলাতে ছুটোছুটি করছে মিশু, শিপলু আর ময়ূখ। মাদুর পেতে একপাশে বসে আছে বাড়ির বড়রা আর তাদের মুখোমুখি ইরশাদ আর মৈত্রী দাঁড়িয়ে কাঠ কয়লার তাপে গ্রিল চিকেন তৈরি করছে। হাসি হাসি মুখে বাড়ির প্রতিটা মানুষ গল্পে মশগুল শুধু ঠোঁট চওড়া হয়নি মৈত্রীর। অনুভূতিহীন, নির্লিপ্ততায় ঘেরা লাগছে তাকে বরাবরের মতই। ইরশাদ প্রতিটা লেগ পিসে ওয়েল ব্রাশ করতে করতে মৈত্রীকে বলছে শিকের ওপর ঠিকটাক করে রাখতে। মৈত্রীও শুনে তাই করছে কিন্তু কতক্ষণ! যে অনুভূতি তার চোখে মুখে ছাপ ফেলে না সেই অনুভূতি তার ভেতরের সবটা উ-ত্তা-ল ঢেউয়ের মত ত-লিয়ে দিচ্ছে। কতক্ষণ পারবে সে স্বাভাবিক থাকতে! পারবে না বোধহয় আর এই লেগপিস গুলোতে হাত দেওয়ার সময় অজান্তেই ইরশাদের আঙ্গুল ছুঁয়ে গেছে মৈত্রীকে। সেই একটুখানি ছুঁয়ে যাওয়া তাকে কাঁপিয়ে দিয়েছে ভেতর থেকে যা ধীরে ধীরে স্পষ্ট হয়ে আসছে তার আঙ্গুলের কম্পনের মাধ্যমে। সবার আজ গল্পের মূল বিষয়বস্তু ছেলে মেয়েদের বিয়ে। তার মধ্যেও আবার প্রধান কেন্দ্র বিন্দু রয়েছে আর সেটা ইরশাদ। ঘুরেফিরে সবাই তাকাচ্ছে ইরশাদের দিকে আর একের পর এক প্রশংসা সাজিয়ে বলছে তার বউয়ের ভাগ্য খুব ভালো। শিপলুর মা তো বলেই ফেলল, আন্টি মেয়েটেয়ে দেখছেন না কেন ইরশাদের জন্য ও তো সব দিক থেকেই এখন উপযুক্ত। ইরিন তাকালেন ছেলের দিকে একবার তারপরই হেসে বললেন, “খুঁজো তো মা একটা ভালো মেয়ে। প্রাণচঞ্চল, একটু গল্পমুখর, হাস্যজ্জ্বল হলেই হবে আর শিক্ষা দীক্ষায় ইন্টার, অনার্স যেন ছেলের সাথে তাল মেলাতে পারে। আমারও আজকাল ঘরে সঙ্গী প্রয়োজন একজন।”

ইরিন কেমন একটা চা-পা শ্বাস ফেললেন কথাটা বলেই। ময়ূখ খুব হুড়োহুড়ি করছিলো মিশু, শিপলুর সাথে। আম্মার কথা শুনে সে চেঁচিয়ে বলল, ” ভাইকে কি দরকার আম্মা আমি তো কবে থেকেই বলছি বিয়েটা করিয়ে দাও। আমিও তো বুঝি তুমি এখন নাতি-নাতনির জন্য হা-পি-ত্যেশ করো।”

ময়ূখের কথা শুনে সবাই হেসে উঠলো একসাথে আর ইরিন চোখ রা-ঙিয়ে তাকালেন।

“ওরে ফা-জি-ল আগে কিছু একটা কর তবে না বউ আনব তোর। পরের মেয়েকে খাওয়াবি এখনই বিয়ে করে? আমি বাপু আমার স্বামীর টাকায় তোদের বউ বাচ্চা পালবো না।” কপট রা-গের ভঙ্গিতে বললেন ইরিন। ময়ূখ দমে যাওয়ার নয় তাই সেও আবার বলল, “তোমার পালতে হবে না বাবা ঠিকই আমার বউ বাচ্চা পালবে শখে তাইনা বাবা!” ফখরুল সাহেব ময়ূখের সাথে তাল মিলিয়ে প্রথমে হ্যাঁ বলে পরে বললেন, না বাপু চিফ মিনিস্টারকে ক্ষে-পিয়ে চ্যালার কথা শুনব না৷ তুই বাবা তোর কাজকর্মে মন দে তবেই বউ পাবি।

আড্ডার আসর জমে উঠেছে ময়ূখের হু-ল্লো-ড়ে। সবসময় না হাসা ইরশাদ আজ প্রাণ খুলে হাসছে প্রতিটা মুহুর্ত। আর তারই পাশে দাঁড়িয়ে কখনো লু-কি-য়ে কখনোবা সরাসরি সেই হাসিতে হারিয়ে যাচ্ছে মৈত্রী৷ অ-গ্নিরঙে র-ঞ্জি-ত হয়ে হচ্ছে , মাঝে- মাঝে ধোঁয়ায় ঝাপসা হয়ে বড় রহস্যময় লাগছিলো ইরশাদের মুখটা। অলৌকিক কোন শক্তি আজ মৈত্রীকে বড় ক-ড়া নেশায় মাতিয়ে দিচ্ছিলো সেদিকে তাকিয়ে থাকতে। অপরদিকে বাচ্চাদের সাথে খু-ন-সুটিতে মেতে থাকা ময়ূখ ছাঁদের অন্ধকারের থেকে লক্ষ্য করছিলো মৈত্রীকে। নিজের মনকে সে সর্বদাই বে-হায়া, বে-শর-ম আর নির্লজ্জ বলেই জানে। এই মনটা তার কথায় কথায় সুন্দরী মেয়েতে গ-লে যায় বলেও তার ধারণা কিন্তু আজ সেই মনটা তাকে বড় ধ-ম-কে উঠলো এই বলে, “তুই বেহায়া শুধু এই একজনাতেই হবি। যা তুই এতদিন দেখিয়েছিস সবটাই ছিল মেকি আসল তো শুধুই এই মৈত্রী। ময়ূখের মৈত্রী ছাড়া আর কিছুই আসল নয় কেন বুঝতে পারছিস না!”
রাতের আকাশে আজ অর্ধচাঁদ আর মেঘের আড়ালে লুকিয়ে আছে চাঁদের আলো। শীতগন্ধি বাতাসে হাসনাহেনার তীব্র সুবাস আর ঝিঁঝির ডাক রাতের এই সময়টা বড় মোহনীয় করে তুলছিল কিন্তু সেই মোহমত্ততায় ঠিকঠাক মেতে উঠতে পারছিল না ইরশাদ। থেকে থেকে আজ আবার মনে পড়ছে তার ক্যাম্পাসের সেই রাত। সে রাতেও এমন হিম হাওয়ায় গন্ধরাজের ঘ্রাণ আর সায়রার খোঁপার বেলীতে নে-শাগ্র-স্ত হয়ে উঠেছিলো ইরশাদ। ভেবেছিলো সেই নে-শাতেই সে সায়রাকে তার অর্ধাঙ্গিনী করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করবে এক দল বন্ধু বান্ধবের সামনে। সেদিনও জ্ব-লছিলো এমন কাঠ কয়লায় মাংস আর শেষ মুহূর্তে জ্ব-লে-ছিলো ইরশাদ নিজেও। স্বপ্নাতুর চোখে ঢেলে দিয়েছিল মেয়েটা গরম সীসা। চাইলেও আর ভোলা সম্ভব নয় সে রাত, সেই ধোঁকা। গুণে গুণে পাঁচটা বছরের সুখানুভূতি , আমৃত্যু যন্ত্রণায় বদলে দিয়ে গেছে সে। রাত বাড়ছে সবাই উল্লাসে মেতে উঠে চিকেন, নানে ব্যস্ত হয়ে পড়লো। মৈত্রীর নজর জোড়া এবার আর কোন অ-লৌকিক, অ-পার্থিব কোন আনন্দ টের পাচ্ছে না তবে রহস্যে ডু-ব-তে লাগল ইরশাদের চোখের অনুজ্জ্বল দৃষ্টিতে। লোকটা সদা না হাসলেও তার চক্ষুকোটরে স্নিগ্ধতা বিরাজমান থাকে। কিন্তু এই মুহুর্তে সে দৃষ্টি বড় আবছা মনে হচ্ছে তার। সবাই খাওয়ার ফাঁকে এটা সেটা নিয়ে কথা বলেই চলছিলো। ময়ূখেরও কথা থেমে নেই তবে তার চক্ষুও ব্যস্ত। মৈত্রীকে খুব ভালো করে লক্ষ্য করাটাই তার ভেতরের আচমকা এক ভী-তি সৃষ্টি করল। সে যা ভাবছে তা কি সত্যি! বড়দের কথার মধ্যে এবার মৈত্রীর বিয়ের আলোচনাও শামিল হলো। শিপলুর মা অরুণিমা বলল, “মৈত্রীর জন্য আর কোন সমন্ধ দেখছেন না আঙ্কেল?”

কথাটা মুজিব সাহেবের উদ্দেশ্যে ছিল। তিনি রুটি ছিঁড়ে মুখে পুরতে গিয়ে থামলেন। একপলক মেয়ের দিকে তাকিয়ে বড় উ-দা-স স্বরে বললেন, “সম্ভব নয় মা৷ প্রথমবারই গ-ল-দ করেছি এখন তার মামা -খালা মিলে স-ত-র্কবার্তা দিয়েছে যেন আমি কিছু না করি। তার মামা নিজেই ঢাকায় পাত্র দেখছে। উনার পছন্দমত হলে আমাকে জানাবে।”

“এ কেমন কথা মুজিব ভাই!” ইরিন বিষ্ময়ে জানতে চাইলেন। মুজিব সাহেব এবার লম্বা একটা নিঃশ্বাস টেনে বললেন, “হ্যাঁ ভাবি। আমি নিজ থেকে কিছু করলে আবারও স-ম্প-র্কের মাঝে রা-জনীতি ঢোকাবে। এই করেই তো আমার শান্তি নিয়ে নিলো কতগুলো বছর ধরে৷”

ময়ূখ অবাক হয়ে কথাটা শুনে জিজ্ঞেস করলো মৈত্রীর নানী বাড়ি কোথায় আর মামার পরিচয়। মুজিব সাহেব মৈত্রীর মামার পরিচয় দিতেই ময়ূখ কিছু একটা ভাবল তারপরই বলল, “আঙ্কেল আপনি পাত্র পছন্দ করুন তারপরের ব্যপার আমি দেখছি। চোখ কান খুলে আশপাশেই খোঁজা শুরু করে দিন ভালো পাত্র হাতের মুঠোয় পেয়ে যেতে পারেন।”

ময়ূখের শেষ কথাটা কি মজার ছ-লে ছিল নাকি সিরিয়াসলি ছিল তা যেন কারোই বো-ধগম্য হলো না। ইরশাদ ভাবলো ময়ূখ নিজের কথা বলছে, ইরিনও বুঝলেন ছেলে তার নিজেকেই উদ্দেশ্য করছে। মুজিব সাহেব ভাবলেন অন্যকিছু। তাঁর মনে হলো একটু আগে ইরশাদের বিয়ের কথা হলো ছেলেটা কি তবে তার ভাইয়ের কথা বোঝালো! রাতের আঁধারে মিশে থাকে প্রকৃতির হাজারো র-হ-স্য। কিছু রহস্য চক্ষু গোচর হওয়ার মত তো কিছু অদৃশ্য। মুজিব রহমানের বাড়ির ছাঁদের আজকের রাতের৷ আঁধারটাও তেমনই র-হ-স্যেঘেরা এক ক্ষণ তৈরি করেছে। আড্ডায় মজে থাকা মানুষগুলো শীত উদযাপনের উদ্দেশ্যেই তো আজ ছাঁদে এসে জমায়েত হয়েছিল। ইরশাদ সেই উদযাপনে দ্বিগুণ জৌলস আনার প্র-য়াসেই ময়ূখকে ইশারা করল গান গাইতে৷ গান মানেই ময়ূখের প্রাণ। এতে কখনো সে না বোধক জবাব দেয় না কাউকে। ইরশাদের ইশারা পেয়েই সে নিচে গিয়ে তার গিটার আনলো। সবাই মাদুরে যখন গোল হয়ে বসা তখন সে ইরশাদকে একটুখানি সরিয়ে তার পাশে বসে পড়ল। উপস্থিত প্রত্যেকেরই মনযোগ এখন তার দিকে৷ কয়েক সেকেন্ড এমনিতেই তার টেনে এলোমেলো শুরু তুলল। মনে করার চেষ্টা করলো কোন গানটা তার ঠিক গাইতে ইচ্ছে করছে। খুঁজে পেলো না মনপছন্দ কোন গান তখন ইরশাদই তাকে নাম বাতলে দিল, ” ভিনদেশী তারা গাইতে পারিস।”

মৈত্রীর দিকে এবার আঁড়চোখে তাকালো ময়ূখ। চিলেকোঠার বাতির আলোটা মৈত্রীর পুরো মুখটাতে পড়ছে না বলে একপাশই দেখতে পেল সে৷ বুঝে উঠতে পারলো না মেয়েটির দৃষ্টি কোথায় সেই দৃষ্টিতে এই মুহুর্তে কি ভাসছে! নিজেই তাই চোখ বুঁজে কল্পনায় তুলে নিলো মেয়েটির নির্জিব দৃষ্টি। মনে পড়ে কালকের সেই অ-প্রস্তুত সাক্ষাৎ। ময়ূখ ঢাকা থেকে ফিরেছে খুব ভোরে। রাতের আধঘুমন্ত দেহটা ক্লা-ন্তিতে বড় বেসামাল লাগছিলো তার। ঘরের দরজায় দাঁড়িয়ে কলিংবেল বাজানোর সময় সে হাতের ব্যাগটা দ-প করে ছেড়েছিল হাত থেকে তখনই টের পেল কেউ এসে দাঁড়িয়েছে পাশে। এবল তারই ভু-লের জন্য ব্যাগটা পড়েছে সেই মানুষটির পায়ের ওপর। কি আশ্চর্যজনক ঘটনা, মানুষটি পায়ের আঙ্গুলে ব্যাগের চাপ খেয়েও একটু আহ্ বলে আ-র্ত-নাদ করেনি। কুঁচকে উঠেনি তার বর্গাকৃতির কপালের চামড়াটা আর না ছোট-বড় হয়েছে তার চোখ। ময়ূখ কাঁচুমাচু করে ব্যাগ তুলে যখন স্য-রি বলল মেয়েটি তখন তাকিয়েছিল অচেনা পথিকের মতন যেন হঠাৎ তাদের দেখা হলো। স্মরণীয় থাকার মত কোন মুহূর্ত নয় তবুও স্মরণে বড্ড তো-লপা-ড় করছে ময়ূখকে এই চিমটি খানেক সময়। মুহূর্তটুকুর স্মৃতিচারণ করতে করতেই সে সুর তুলল, মুখ খুলল, আমার ভিনদেশী তারা, একা রাতেরই আকাশে

তুমি বাজালে একতারা, আমার চিলেকোঠার পাশে।

ঠিক সন্ধ্যে নামার মুখে; তোমার নাম ধরে কেউ ডাকে…..

“ইমরান তুমি কি তোমার মাকে একটু বোঝাতে পারো না, কেন সে আমাকে কথায় কথায় ফকিন্নির মেয়ে বলে? এভাবে আমার পক্ষে তোমার সংসারে টিকে থাকা অসম্ভব বলে রাখলাম।” চার বছরের সায়েমকে বই নিয়ে বসিয়েছে সায়রা। ছেলেটাকে আর কিছুদিন পরই স্কুলে দিতে হবে অথচ এখনও তার হাতেখড়ি হলো না শ্বশুড়ির জন্য। একমাত্র নাতি কি আর কারো বাড়িতে থাকে না! তাই বলে আদরে আহ্লাদে তাকে পড়াশোনা থেকে পিছিয়ে রাখবে! প্রতিনিয়ত সায়রার ঝা-মেলা চলে তার শ্বাশুড়ির সাথে কখনো ছেলেকে নিয়ে, কখনো রান্না নিয়ে কখনোবা ইমরানের সাথে ঘুরতে যাওয়া নিয়ে। অর্থেবিত্তে তারা সমৃদ্ধ হলেও ইমরানের মা স্বভাবে বড্ড গোঁয়ার। পুরো বাড়িতে চার জায়ের মধ্যে বড় জায়ের সাথে এসব নিয়ে তার খুব মিল তবে ইরশাদের মা আর অন্তুর মায়ের সাথে মিল নেই তার কিছুতেই। কিন্তু সায়রার প্রতিদিনকার অভিযোগে অ-তিষ্ঠ হয়ে যাচ্ছে ইমরান। আজও অফিস থেকে ফিরে স্ত্রীর সেই অ-ভিযো-গের ঝুলি দেখেই তি-ক্ত হয়ে ধ-ম-ক লাগালো সে। টাইয়ের নট ঢিলে করতে করতেই সে সায়রাকে বলল, “মা কি তোমাকে এমনি এমনি ফ-কি-ন্নি বলে গালি দেয়! এই যে তোমার টিপিক্যাল বউদের মত স্বভাব স্বামী ঘরে ফিরতেই তার মায়ের নামে অভিযোগের পসরা সাজিয়ে বসো এসব তো ছোটলোকি স্বভাবই। তোমার বাড়িতে এসব সাধারণ ব্যাপার হলেও এই বাড়িতে নয় তা কি তুমি এত বছরেও বোঝোনি?”
রূঢ়ভাবে কথাগুলো বলে ইমরান অকস্মাৎ গাল চে-পে ধরলো সায়রার। আজ আবার তার মেজাজ বি-ক্ষি-প্ত হয়ে আছে সন্ধ্যে থেকে। পুরনো বন্ধুদের সাথে একটুখানি আড্ডা জমিয়েছিল অফিসেই। কথায় লথায় পুরনো সব গল্প উঠে এলো আড্ডায় আর তাতে ছিটকে বেরিয়ে এলো ইরশাদ-সায়রার প্রণয়ের গল্পটাও । অতীত পুরনো কাসুন্দি ঘাটলে তা শুধু দুর্গন্ধই ছড়ায় তার প্রমাণ যেন আরও একবার পেয়েছে ইমরান। আর তাই বাড়িতে পা রাখতেই সায়রার মুখের কোন কথায়ই তার সহ্য হচ্ছিলো না। রা-গে, ক্রো-দে সে গাল চেপে ধরল অথচ তার খেয়াল রইলো না বিছানার ওপর ভ-য়া-র্ত চেহারায় তাকিয়ে থাকা ছেলেটার কথা। মুখ চেপে ধরেই সে বলে গেল, “আমাকে ভয় দেখাস সংসার না করার! তুই আমার সংসার করবি নাতো কি ইরশাদের কাছে ফিরে যাবি? তোর কি মনে হয় তোর মত বে*শ্যাকে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য ইরশাদ ম-রে যাচ্ছে? তোকে আজীবন বেঁচে মরে আমারই থাকতে হবে এমনি এমনি তো আর তোর চৌদ্দ গুষ্টিকে পালছি না!”

চার বছরের সায়েম চুপটি করে বাবার আ-চর-ণ দেখছিল এবার তার মায়ের মুখটা দেখে মনে হলো মা খুব ক-ষ্ট পাচ্ছে। মায়ের জন্য ভয়ও হলো তার তাই আত-ংকিত হয়ে কান্না করে দিল। সায়েমের কান্নামাখা কণ্ঠ শুনতেই যেন হুঁশ এলো ইমরানের। সায়রাকে ছেড়ে দিয়ে ছেলেকে কোলে নিতে হাত বাড়াতেই সায়েম সরে গেল৷ ততক্ষণে ইমরানের মাও চলে এসেছেন নাতির কান্না শুনে। মাত্র মিনিট কয়েকের তফাতেই সায়রার সংসার হয়ে উঠলো জ্ব-লন্ত আ-গু-নের শ-শ্মা-নঘর। তবে সায়রা ভাবে এসব তো তার গা সওয়া হয়ে যাওয়ার কথা ছিল এতদিনে। গুণে গুণে পাঁচ বছর তো নেহায়েত কম সময় না তবুও কেন সে সইতে পারছে না!

চলবে
( ভুল- ত্রুটি গুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রইলো)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here