#কি_ছিলে_আমার -রূবাইবা মেহউইশ পর্ব-২৪ ইরশাদের ফোনে মৈত্রীর নাম মৈত্রী শাহরিয়ার দিয়ে সেভ করা! ব্যাপারটা যেন ময়ূখের জ-খ-মী হৃদয়ে নুন, মরিচের মত লাগলো। একটা কথাই মাথায় এলো , তারা কি তবে আগে থেকেই সম্পর্কে ছিল! মানতে ক-ষ্ট হলো ময়ূখের। ইরশাদ শাহরিয়ার এর ফোনে মৈত্রী নামের পাশে আগে থেকেই শাহরিয়ার যুক্ত৷ এমনি এমনিতেই! কতগুলো দিন বুকের ভেতর এক বদ্ধঘরে মনের অনুভূতিকে চা-পা দিয়ে রেখেছিল কিন্তু আজ যে আর সে সইতে পারছে না। কখন যে ওই মেয়েটা তার ভেতর বাহির সবটা মোহাচ্ছন্ন করেছে বুঝতেই পারেনি। ময়ূখ ফেরেনি আর ইরশাদদের বাড়িতে। নোরাকে ট্যাক্সি করে পাঠিয়ে দিয়ে ময়ূখ সেখান থেকেই ঢাকায় রওনা দিলো৷ নিজেই ইরিনকে ফোন করে বলল কোন এক বন্ধুর বাবা মারা গেছে তাই সে ঢাকা যাচ্ছে। ঘরভর্তি আত্মীয়ের আনাগোনা তারওপর নতুন বউ ঘরে ব্যস্ততায় খুব একটা প্রশ্নোত্তরে গেলেন না ইরিন। তবে মন কেমন অন্য ইশারা দিচ্ছে তার কিছুদিন থেকেই তাই এক ফাঁকে বড় ভাইকে ফোন করে জানালেন কথাটা। ময়ূখের বাবা মেহের আর মেহেরের আম্মুকে নিয়ে মৈত্রীদের বাড়ি থেকেই ঢাকার পথে বেরিয়েছেন। মেহের অসুস্থতা আর পড়ার প্রেশার দু বাহানা একত্র করেই ফুপিকে মানিয়ে নিয়েছে এদিকে মেহেরের মা’ও যে স্ট্রো’ক এর রোগী এতেই যেন মেহেরের চলে যাওয়াটা সহজ হয়েছিল। মেহের, ময়ূখ দু ভাই বোন একই দরিয়ায় একই য-ন্ত্র-ণায় ডুবে গেছে। একই সময় দুজনেই নিজেকে সামলানোর তাগিদে অন্তরের খুব কাছের মানুষগুলো থেকে দূরত্বের প্রয়োজন অনুভব করছে। বাড়িতে বউ নিয়ে ইরশাদ ফিরেছিলো অনেকটা বিলম্বে। মৈত্রীর কা-ন্না-কাটি থামলেও মন যে ভীষণ খা-রা-প তা বুঝতে পেরেই ইরশাদ তাকে নিয়ে পথেই এক পুলের ওপর গাড়ি থামিয়েছিল। ভাগ্যিস, ড্রাইভারকে না রেখে নিজেই ড্রাইভ করছিলো গাড়ি তাইতো ইচ্ছেমত পথে থামা গেল। পুলের ওপর এবং আশেপাশেও কোথাও কোন বাতি ছিল না। এলাকার খুব কাছাকাছি হওয়াতে বি-প-দমুক্ত জায়গাই ছিলো সেটা। আকাশ জুড়ে অষ্টাদশীর হাস্যজ্জ্বল চাঁদ, প্রকৃতিতে শীতের হাওয়া। আঁধারে জমা পথে নতুন বউকে নিয়ে পুলের ওপর দাঁড়িয়ে থাকাটা ভিন্ন কিছু ছিল ইরশাদের জন্য৷ ভিন্নতা তো মৈত্রীর কাছেও ছিলো কিন্তু সে সকল ভিন্নতাকে গভীর মনযোগে তাকিয়ে ছিলো ইরশাদের দিকে৷ রহস্যময়ী অন্ধকারে শেরওয়ানির রঙটা মিশে গিয়েছিল যেন। গাড়ির হেডলাইটের আলোটাও যে নিভিয়ে রেখেছিল ইরশাদ তাতেই মৈত্রীর সুবিধে হলো ৷ সে সব ভুলে প্রকৃতিতে মিশে গিয়ে ইরশাদকে অনুভব করতে চেষ্টা করলো। তার মনোকামনা যেন ইরশাদের মনেও পৌঁছে গেল নিঃশব্দে। সে হাত বাড়িয়ে মৈত্রীকে টেনে নিলো নিজের পাশে, খুব কাছে যেখানে বাহুতে বাহুর ছোঁয়া লেগে যায় বুঝতে না দিয়ে। মৈত্রী শিউরে ওঠেছিল ক্ষনিকের জন্য। ইরশাদ তা টের পেয়েও জড়িয়ে নিলো নিজের পাশে। ধীরে ধীরে টেনে আনলো বুকের কাছে, একটু সামনে। শীতকে তুচ্ছ করে উষ্ণতায় ছুঁয়ে গেলো নবদম্পতির দুটি দেহ। মৈত্রী চোখ বুঁজে পিঠ এলিয়েছে তার স্বপ্ন মানবের বুকে৷ একটু আগেও ভেতর থেকে যে কান্নার স্রো-ত ঠেলে আসতে চাইছিলো বাইরে তা যেন আচমকাই হাওয়া ভেসে চলে গেল দূর অজানায়। মুহূর্তেই হারাতে চাইলো মৈত্রী অমোঘ আঁধারের বুকে। ইরশাদও সময় দিলো ; মৈত্রীকে জড়িয়ে রাখলো কিছুটা সময় নিজের বুকে। রাস্তা দিয়ে হুট হাট সাঁই চলে যাওয়া দু একটা বাইক, অটোরিকশা আর সি এনজির আলোয় প্রকাশ্য হচ্ছিলো তাদের অস্তিত্ব আর তাই বেশিক্ষণ কা-টানো থাকা সম্ভব হলো না। তবুও মৈত্রীর মনে যে কান্না, বাবাকে ছেড়ে আসার কষ্ট সবটাই যেন লাঘব হলো এই কিয়ৎক্ষণের ভিন্ন আবহে। ইরশাদের মনে হলো রাত বাড়ছে, শীতের তীব্রতা বাড়ছে সেই সাথে অপেক্ষা করছে বাড়ির মানুষজন৷ সে বুকের কাছে থাকা মৈত্রীকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে তার কপালে আলতো স্পর্শে চুমু খেলো। প্রথম চুমু, প্রথম স্পর্শ ইরশাদ দিলো নতুন সম্পর্কের মূল্যায়ন করেই তবে মৈত্রীর কাছে তা ভালোবাসার পরশ ছিল। ইরশাদ ফোনে সময় দেখে মৈত্রীকে নিয়ে বাড়ি ফিরলো অনেকটা দেরি করে। ইরিন একবার প্রশ্ন করবে ভেবেও আর করেননি। ইরশাদের ঘর আগে থেকেই ডেকোরেটেড ছিল সবটা ময়ূখই করিয়েছিল। ইরিন মৈত্রীকে সে ঘরেই বসিয়ে দিলেন। সকল মেহমান বৌভাতে আসবে বলেই বাড়িতে ভীড় কিছুটা কম ছিল। ইরশাদের চাচীরাও সকলে অল্প সময়ের মাঝে চলে গেলেন যার যার ফ্ল্যাটে। এরই মাঝে চাচী শ্বাশুড়িরা তিন জনেই মৈত্রীকে দেখে সালামির নামে চেইন, আংটি আর কানের দুলও দিলেন। এ বাড়িতে নাকি এমনটাই হয়ে আসছে৷ জুয়েনা, সায়রা এমনকি নিপাও তার বিয়েতে এগুলো পেয়েছে শ্বাশুড়িদের কাছ থেকে তাই মৈত্রীর ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম হয়নি। সকল নিয়মনীতির যখন সমাপ্তি হলো তখন ইরশাদ খেয়াল করলো মৈত্রী একদম ঘরোয়া রূপে। গায়ে সুতি শাড়ি, দু হাতে সোনার চুড়ি, গলায় পাতলা চেইন, কানে ছোট দুল। চোখে-মুখে প্রসাধন নামমাত্রও নেই। সারাদিনে একটুও বিছানায় গা এলিয়ে দেওয়ার সুযোগ না পেয়ে এখন কেমন নেতিয়ে গেছে মৈত্রী তা দেখে ইরিন রাতের জন্য স্যুপ দিলেন। এমনিতেও মৈত্রী কিছুই খাবে না বলছিল তাই এমন দিলেন। ইরশাদ অবশ্য প্লেটে করে ভাত নিয়ে বেডরুমেই এসেছিল। মৈত্রীকে দু একবার বলে কয়ে নিজের খাওয়া শেষ করলো সাথে তাড়া দিলো মৈত্রী যেন খাওয়া শেষ করে। মৈত্রী স্যুপটুকু শেষ করে বাটি হাতে দাঁড়িয়ে ছিল তা দেখে ইরশাদ জানতে চাইলো কি হয়েছে? মৈত্রী তার বাটি দেখাতেই বলল, ” কিচেনে রেখে এসো। আমাদের ফ্ল্যাটে এখন আমাদের পরিবার ছাড়া বাইরের কোন মানুষ নেই। যা কাল দেখবে তা আজই দেখো।” মুচকি হাসছে ইরশাদ। মৈত্রী ভীরু পায়ে সত্যিই গেল বাইরে৷ ঘর থেকে বের হতেই লম্বাটে জায়গা পেরিয়ে বসার ঘরের দরজা। মৈত্রী খেয়াল করলো তাদের বাড়ির মত নয় এ বাড়ির বসার ঘরটা। একসাথে তিনটি বেডরুম হাতের বায়ে এবং ডানে যে দেয়াল সেটার ওপাশে পুরোটাই বসার ঘর। ভেতরে না ঢুকেও মৈত্রী বুঝতে পারছে এই বাড়ির পুরো একেকটা তলায় দুটো ফ্ল্যাট সমান জায়গা মিলে একটা ফ্ল্যাট। এত বড় বসার ঘর তো থাকতেও তারা হলুদ নাকি ছাঁদে করেছে! “ওমা, বাটি হাতে কোথায় যাচ্ছো মামনি?” ফখরুল সাহেব বসার ঘরের দরজায় মৈত্রীকে দেখে অবাক হলেন খুব। মৈত্রী আওয়াজ শুনে নিজেও চমকে গেছে তবুও নিজেকে স্বাভাবিক রেখে জানালো সে রান্নাঘর খুঁজছে। পুত্রবধূর কথা শুনেই ফখরুল সাহেব জোরে হাঁক ছেড়ে ইরিনকে ডাকলেন৷ মৈত্রীকেও দেখিয়ে দিলেন হাতের ডানে একদম সামনেই রান্নাঘর। মৈত্রী মাথার আঁচল আরেকটু টেনে মাথা নিচু করে সেদিকে গেল। ইরিনও ততক্ষণে চলে গেছেন মৈত্রীর কাছে। “দেখলে কান্ড ছেলেটার? সারাবছর সব কাজ নিজ হাতে করে আর আজ বউ আসতে না আসতেই তাকে কাজে নামিয়ে দিয়েছে।” বিরক্তির স্বরে বলছেন ইরিন। মৈত্রী নিচু কণ্ঠে বলল, আসলে আন্টি আমিই… “উহুম সাফাই লাগবে না। আমি চিনি তো শাদকে ও প্র্যাকটিক্যাল প্র্যাকটিক্যাল বলে বলে তোমাকে দিয়ে শুরু থেকেই সব করাবে। বাবু তো তার এই স্বভাবের জন্য আগেই বলেছিল, আম্মা ভাই কিন্তু বউকে দিয়ে বিয়ের দিনই কাজ করাবে। দেখলে মৈত্রী বাবুর কথাই সত্যি হলো!” কথাটা বলতে গিয়ে ইরিনের বুঝি একটু মন খা-রা-প হলো। মৈত্রী সিংকে রাকা দু একটা প্লেটসহ নিজের স্যুপের বাটিটা ধুয়ে রাখলো। রাত অনেক হচ্ছে ভেবে মৈত্রীকে আবার ঘরে পাঠিয়ে দিয়েছেন ইরিন। “এক বাটি রাখতেই তো দেখছি রাত অর্ধেক পার করে এলে। আমি তো ভাবছিলাম আমার খাওয়া শেষ হলে এগুলোও নিতে বলব।” মৈত্রী ঘরে ঢুকতেই ইরশাদ মজা করলো। কিন্তু তাকে দ্বিতীয় বাক্য বলতে না দিয়ে মৈত্রী সেগুলোও নিয়ে গেল কিচেনে৷ এবার আর বেশি সময় লাগেনি সে সব ধুয়ে মুছে রেখে এসেছে। ঘরে ঢুকে দেখলো বেলকোনির দরজা খোলা ইরশাদ সেখানে দাঁড়িয়ে আছে। পরনে তার টি শার্ট আর লুঙ্গি। মৈত্রীর মনে পড়ে গেল তাদের বাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসেবে ইরশাদের প্রথম সকাল। বেলকোনিতে দাঁড়িয়ে খাঁচায় তার পোষা পাখিদের খাবার দেওয়া তখনও এমনই পোশাকে ছিল। মৈত্রী সেদিনই জানলো যুবক বয়সী ছেলেরা শুধু প্যান্ট ট্রাউজার নয় লুঙ্গিও পরে। পুরনো কথা মনে পড়তেই হাসি পেল তার। কত বোকা বোকা ভাবনা ছিলো তার! ঘরে মৈত্রী এসেছে টের পেতেই ইরশাদ ফিরে তাকালো। “ওখানে দাঁড়িয়ে কেন এখানে এসো।” মৈত্রী গেল; ইরশাদ তার মুঠো করা ডান হাতটা মৈত্রীর সামনে বাড়িয়ে ধরলো। “বিয়ে, বাসর, সংসার নিয়ে তো সবারই অনেক চাওয়া পাওয়া থাকে। তোমারও নিশ্চয়ই আছে কিন্তু সময় সল্পতায় আমার সেসব জানা হয়নি। তবে আমি চেষ্টা করবো তোমার জন্য সবটা করতে হয়তো সময় লাগবে তাতে তবুও ইনশাআল্লাহ করব। বড় ভাবী বলেছিল বাসর রাতে তোমাকে গিফট দিতে হবে। মানে প্রত্যেক হাজবেন্ডই সাধ্যমত দেয়৷ আমি আগে থেকেই জানি ব্যপারটা কিন্তু এ কয়েকদিনে মাথাতেই ছিল না কথাটা তাই… আসলে এ উদ্দেশ্যে কিছু কেনা হয়নি।” এতটুকু বলেই ইরশাদ তার মুঠো খুলে একটা রূপোর ব্রেসলেট বের করলো। ব্রেসলেটের উপর খোদাই করা ইংরেজি অক্ষরে “ইরশাদ” নামটা লেখা। মৈত্রী হাতে তুলে নিলো সেটা। ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখতে থাকলো চমৎকার জিনিসটা। কিন্তু হাতের সাইজটা যথেষ্ট বড় হওয়ায় মৈত্রীর কব্জি গলিয়ে বেরিয়ে আসে সেটা। “আপাতত এটাকেই উপহার ভেবে নাও আমি কাল কিছু একটা নিয়ে আসব।” “এটা কি একটু ছোট করা যাবে?” ব্রেসলেটটাতে হাত বুলাতে বুলাতে প্রশ্ন করলো মৈত্রী। “হু, স্বর্ণকারের কাছে নিলে করা যাবে। কিন্তু এটা নেহায়েত রূপার তৈরি৷ আমি গোল্ডের মধ্যে কিছু একটা নিয়ে আসবো।” “উহুম, আমি এটাকেই আজকের উপহার হিসেবে গ্রহণ করে নিয়েছি।” মৈত্রীর আবেগ স্পষ্ট চোখের তারায়। ইরশাদ হাত বাড়িয়ে কাছে টেনে আনলো মৈত্রীকে। রাতের আকাশে চাঁদের আলোয় ফকফকা বারান্দার মেঝে। শীতের হাওয়া লেগে গায়ের পশম দাঁড়িয়ে আছে ইরশাদের, ঠান্ডায় কাবু মৈত্রীও। নবদম্পতিরা বাসর রাত কেমন কাটায় জানা নেই তাদের কিন্তু তারা জেনে নিয়েছে আজ রাতে তাদের হবে চন্দ্রবিলাস, হিমেল হাওয়ায় হবে আজ শীতবিলাস সেই সাথে হবে একে অপরকে নিয়ে নতুন এক অনুভূতিবিলাস। আর তাইতো ইরশাদ ঘরের বাতি নিভিয়ে দিলো। মোটা এক কম্বল এনে ছড়িয়ে দিলো বারান্দায় তাতে আরও এক কম্বল জড়িয়ে বসলো মৈত্রীকে নিয়ে৷ নিজের সাথে মৈত্রীকে জড়িয়ে কম্বলে আবৃত করে নিয়েছে নিজেদের । ইরশাদের কান্ড কারখানায় মৈত্রীর ভীষণ লজ্জা লাগছিলো তা দেখতেই ইরশাদ আরও এক দুষ্টুমি করে বসল। এক হাতে ফোন বের চাঁদের আবছা আলোয় কম্বল জড়ানোর এক ছবি তুলে নিলো নিজেদের৷ আর মৈত্রী একের পর এক বিষ্ময়ের সাগরে ডুবতে লাগলো। নোরা রাতে একটুও ঘুমাতে পারেনি কাল। থেকে থেকে ময়ূখের কথাই মনে পড়েছে। একটু পর পর ময়ূখকে কল করে কথা বলার কত চেষ্টা করেছে অথচ ময়ূখ একটিবারও তার কল ধরেনি৷ ভোরের দিকেই একটুখানি চোখ লেগেছিলো কিন্তু এখন এই মুহুর্তে বাইরে থেকে প্রচুর হাসাহাসিতে গাঢ় ঘুমটা ভেঙে গেল তার। টি শার্ট গায়ে ঘুমিয়েছিল সে তার ওপরই জ্যাকেট পরে ঘর থেকে বের হলো। দু পা এগিয়ে সামনে আসতেই বুঝতে পারলো সকলে মিলে ভাইয়ের ঘরে ঘাপটি মে-রে-ছে। নোরা সে ঘরের দরজায় দাঁড়াতেই দেখলো ইরশাদ একের পর এক হাঁচি দিয়েই চলছে৷ এদিকে ডিভানে বসে ভাবীরা সকলে মৈত্রীকে কিছু বলছে আর হাসছে। “এত হাসাহাসি!” “ওহহ বিদেশিনী আসো, শোনো তুমিও যোগ দাও।” মজা করছে জুয়েনা আর লজ্জায় লাল হচ্ছে মৈত্রী৷ “ভাবী কি শুরু করলেন সকাল সকাল! আমি ভাইয়াকে কিন্তু এখনই ডাকব।” “ডাকো দেবর সাহেব সেও দেখে একটু শিখুক কিছু। বাসর ঘরে বউকে নিয়ে কত কি বিলাস করা যায় তারও একটু শেখা দরকার।” নোরা সকলের হাসি আর কথা শুনেই কিছু বুঝতে পারছে না। বিরক্ত হয়ে নিপার দিকে তাকালো। “আমি তো কিছু বলবো না নোরা আপু, ভাসুরের বাসর বলে কথা।” ফিসফিসিয়ে বলল নিপা। “ইরশাদ মৈত্রী বাসর করেছে বেলকোনিতে। আর সেই বাসরে স্বর্দির আসর জমেছে আজ তাদের সকাল থেকে। একজন হাঁচি দিচ্ছে অন্যজন কাশি দিচ্ছে।” এবার নোরাও খুব হাসি পেল৷ সে তো বলেই বসলো, ” হাও কিউট ব্রো!” নোরা এ-ক্সা-ই-টেড হয়ে বলল ইরশাদকে। কাল রাতে তারা দুজন কম্বল পেঁচিয়ে অনেকটা সময় গল্প করেছে। গল্প না ঠিক ইরশাদ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেছে মৈত্রীও অনেকটা স্বাভাবিক আলোচনা চালিয়ে গেছে। তাদের কথাবার্তার এক পর্যায়ে ইরশাদ বলেছিল, “মনে হচ্ছে আমরা বহু বছরের পুরনো দম্পতি ! মনে হচ্ছে, যেন কত বছর আগেই আমরা সংসার শুরু করেছিলাম।” মৈত্রীরও তেমনই মনে হয়েছিল কাল। দুজনে একসাথে গল্প করতে করতেই ঘুমিয়ে পড়েছিল সেখানে। চলবে ( এত জঘন্যও কারো বাসর হতে পারে! এটা আমার পক্ষ থেকে মন্তব্য আজকের পর্বের জন্য 🥺)