গল্পের নামঃ- #কৃষ্ণচূড়া😍😍(এখন থেকে গল্পের ঠিকানার সব গল্প পড়তে ভিজিট করুন গল্পের শহর চ্যানেলে। আজ থেকে অন্য চ্যানেলে আর লিংক শেয়ার করা হবে না।তাই প্রতিদিন নজর রাখুন চ্যানেলটিতে যাতে নিত্যনতুন চমৎকার সব গল্প পড়তে পারেন)
লেখিকাঃ- #konika_islam
part:01 + 02
ঐটাকি ডিভোর্স পেপার ছিল? না মানে,,,আপনি কি আমাকে। আদ্র ঠাস করে কাবার্ডটা লাগিয়ে বলে
—- হ্যা সেটাই তোমাকে ডিভোর্স দিয়ে নতুন আরেকটা বউ বিয়ে করে নিয়ে আসব। তারপর সুখে সংসার করব,, । ইস্টুপিট। বলেই রুম থেকে চলে যায়।
এই পর্যন্ত কান্না করতে করতে ২ বক্স টিসু শেষ করেছে শিশির তিন নাম্বারটা হাতে নিয়ে বসে আছে আর চোখের পানি মুছছে। তার শাশুড়ী মা,, চাঁচি শাশুড়ী, ননদ, দেবর সবাই তাকে থামাতে বৃথা চেষ্টা করছে। আদ্রের মা বলে
—- কি হয়েছে মা এভাবে কাদঁছ কেন? শিশির চোখ মুছে নাক টেনে টেনে বলে
—- উনি বলেছেন সে আমাকে ডিভোর্স দিয়ে দিবে। আমাকে ডিভোর্স পেপারে সাইনও করিয়াছে। তখনই বই হাতে রুমে প্রবেশ করে আদ্র,, সবাইকে দেখে অবাক হয় তার থেকে বেশি অবাক হয় শিশিরকে এইভাবে কাঁদতে দেখে। আদ্র ওর চাচতো ভাই নীলকে বলে
—- কি হয়েছে? আদ্রের চাচি বলে
—- তুই শিশিরকে কি বলেছিস তুই নাকি ওকে ডিভোর্স দিবি?,,,কোথায় নাকি সই করিয়েছিস??এইসবের মানে কি আদ্র??,
আদ্র কিছু সময় শিশিরের দিকে তাকিয়ে থেকে বইগুলো রাখে টেবিলে আর হাতের ঘড়ি খুলতে খুলতে বলে
—- এই জন্যই বলেছিলাম,, আমি কোনো পিচ্চি মেয়েকে বিয়ে করবো না,,,। শিশির এইটা শুনে আরো ভ্যা ভ্যা করে কেঁদে দেয়। আদ্রের মা শিশিরকে জড়িয়ে ধরে আদ্রকে ধমক দিয়ে বলে
—- আহহহ আদ্র হচ্ছে টা কি? আদ্র বিরক্ত হয়ে বলে
—- সেটাইতো হয়েছে টাকি? এভাবে কান্না করারা কি আছে। শিশির এবার হালকা রেগে বলে
—- কান্না করার কি আছে মানে? আপনি আমাকে ডিভোর্স দিবেন। আদ্র বলে
—– তোমরা মেয়েরা এতো মাথা মোটা হও কেন? আর আমাকে কম বেশি সবাই চিনে ,,, তাই আমি চাইনা শিশির নিজের পড়ালেখার বারোটা বাজাক আর আমার সম্মানেরও,, । আর ঐটা ভর্তি ফ্রম ছিল,, এখন আশা করি উত্তর পেয়েছ সবাই? আমি এখন ফ্রেশ হয়ে এসে ঘুমাবো। কারো যদি আরো কান্না করার ইচ্ছে হয় তাহলে ড্রয়িং রুমে গিয়ে করতে পারে।
__________________
এই কথা বলেই চলে যায় ওয়াশরুমে। এর মানে ঐটা ভর্তি ফ্রম ছিল? এখনতো শিশিরের আরো কান্না আসছে,,, এই পড়ালেখার জ্বালায় থেকে বাঁচতে এই বিয়ে করেছিল আর এখন এই প্যারাই তাকে সহ্য করতে হবে। তাহলে লাভটা হলো কোথায়? এইতো কিছু ঘন্টা খানিক আগের কথা
★★★
হঠাৎ করেই আমার আদ্র মানে আমার স্বামী,হাসবেন্ড পাতীদেব রুমে আসে,, বিয়েটা হয়েছে বেশিদিন না সপ্তাহ খানিক হবে। তখন আমি শাওয়ার নিয়ে এসে চুল মুছ ছিলাম। হাতে ছিল তার একটা কাগজ,,, আর একটা কলম। আমাকে এসেই বলে
—- এখানে একটা সাইন কর। আমি তোয়ালেটা সাইডে রেখে বলি
—- এটা কি? আদ্র শুধু বলে
—- চুপচাপ যা বলি কর,,,, সাইন কর।
আমিও হাত থেকে কলমটা নিয়ে সাইনটা করে দেই। আদ্র কাগজটা দেখে রুম থেকে চলে যায় । কি হচ্ছে?!! মানুষটা বরই অদ্ভুত কখন কি বলে বা করে সব মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে। বিয়ের আজ একসপ্তাহ পার হয়ে গেছে তার নামটা ছাড়া আর কিছু জানি না। বিয়ের পরেরদিন থেকে লেব আর কাজ নিয়ে ব্যাস্ত। কথা হয়নি বললেই চলে। বিয়েটা হয়েছে আমাদের পারিবারিক হিসাবে,,,,,,, আদ্রের মা-আর তার চাঁচি গিয়েছিল। আমাকে পছন্দ হওয়াতে তারপর সপিরবার গিয়ে উঠিয়ে নিয়ে আসে। আদ্র একজন ইন্জিনিয়ার,, তার সাথে আমার বয়সের তফাতটাও ভালোই তার ২৭ আর আমার ১৭ প্রায় ১০ বছরের বড় আমার উনি। কিন্তু তখন ভেবে ছিলাম সে সাইনটা আমায় কিসে করালো ? টিভি সিরিয়ালে অনেক দেখেছি,,, বাড়ির সবার চাপে পরে ছেলে বিয়ে করে কিন্তু পরে ডিভোর্স দিয়ে দেয়। কি হচ্ছে এইসব? আমাকে ডিভোর্স দিবেনাতে আম্মু,, । তখনই সে আবার আসে রুমে আমি এবার তাকে কৌতুহল নিয়ে জিজ্ঞেস করি
—- ঐটাকি ডিভোর্স পেপার ছিল? না মানে। আদ্র ঠাস করে আলমারিটা লাগিয়ে বলে
—- হ্যা সেটাই তোমাকে ডিভোর্স দিয়ে নতুন আরেকটা বউ বিয়ে করে নিয়ে আসব। ইস্টুপিট। বলেই রুম থেকে চলে যায়। আদ্রের আম্মু সবাই আমাকে বুঝিয়ে চলে জান।
____________
সন্ধ্যা বেলা জমিয়ে আড্ডা দিয়ে রুমে আসলাম ননদ টা আমার অনেক ভালো,, সমবয়সী হওয়াতে সম্পর্কটা বান্ধবীদের মতো। কিন্তু এমা কি দেখছি এইসব,,, আদ্র রুমে ঢুকতেই বলে
—- সন্ধ্যা কখন হয়েছে? পড়তে বসবে কে? আমি কি বলবো বুঝতে পারছিলাম না কি বলবো। আমাকে চুপ থাকতে দেখে বলে
—- চুপচাপ টেবিলে আসো। কি আর করার বাধ্য হয়েগেলাম। টেবিলে বসার সাথে সাথে সে বলে
—- তোমার এইটের থেকে টেন অব্দি রেজাল্ট কি ছিল?? এইরে। এইটে তো ভালোই গ্রেড ছিল কিন্তু টেনে তো বি মাইনাস। আদ্র আমার চোখের সামনে তুড়ি বাজিয়ে বলে
—- কি হলো? আমি তাকে রেজাল্টের কথা বলতেই সে বই বন্ধ করে আমার মুখের দিকে তাকিয়ে বলে
—- তা স্কুলে যেতে কেন? এই মুখ দেখাতে এইটের রেজাল্ট তো মানা যায়? রেজাল্ট খারাপ হওয়ার কারণ?
কি বললবো এখন? সত্যি কথা বলতে গণিতে ছিলাম ডাব্বা এইটের পর সব ফ্রেন্ডরা সাইন্স নিয়েছিল সেই চক্করে পরে আমি নিয়েছিলাম। আর সেই চক্করেই রেজাল্টের এই অবস্থা। তাই ভয়ে ভয়ে বলেই দিলাম। আদ্রের ফেস দেখে ঠিক বুজলাম না তার মাথায় চলছে টা কি? যা-খুশি চলুক। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি ১২টা বাজে। ঘুম আসছে হাই আসছে খুব। হঠাৎ করেই আদ্র উঠে রুম থেকে চলে যায়।
আমি কি করব?? আমাকে কাজটাতো দিয়ে যাবে? আচ্ছা উনিকি কথা কম বলে নাকি কথাই বলতে পারে না নাকি উচ্চারণ করতে সমস্যা হয়?? এমন অদ্ভুত বর আল্লাহ তুমি সবাইকে দাও। আমি একা কেন এই জ্বালা সহ্য করব? একটু পরই সে আবার হাজির হাতে কি ঐটা দেখেতে মনে হচ্ছে দুধ জাতীয় কিছু!! গ্লাসটা আমার হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলে
—– ফিনিস কর আর ঘুমাতে যাও। আমি অসহায় ভাব নিয়ে বলি।
—- আমি খাই না এগুলো,,,। আদ্র আমার হাত থেকে গ্লাসটা নিয়ে বলে
—- এটা শেষ না করলে ঘুমাতে হবে না। আমি বলি
—- ঠিক আছে আমি খাবো না। আদ্র আমাকে কিছু পড়া দাগিয়ে দেয় আর বলে
—- এভাবে বসে থাকার মানে হয়না আন্ডারলাইন করা আছে সেগুলো পড়,, আমি ধরব। আমারও তাই ভালো মনে হয় এভাবে বসে থাকার চেয়ে ভালো পড়ি। আদ্রও নিজের লেপটপ নিয়ে বসে পরে। আমাকে তাকিয়ে থাকতে দেখে বলে
—- পড়া কি আমার মুখে? ব্যাটা বজ্জাত একটু সুন্দর করে কথা বলতে পারে না। হিটলারের নানার নানা।
___________
রাত ২ টা বাজে ঘুমে চোখ খুলে রাখা মুসকিল। আদ্র আমার পড়া নিচ্ছে আর আমিও ঘুম ঘুম চোখে পড়া দিচ্ছি। পড়া নেওয়া শেষ হতেই আমি বলি
—- এখন ঘুমাতে যাই? আদ্র বলে
—- আগে গ্লাসে রাখা দুধটা ফিনিশ কর। আমিতো খাবো না দাড়াও ট্রিক কাজে লাগাবো। আমি বললাম
—– ঠিক আছে কিন্তু এটা তো ঠান্ডা হয়েগিয়েছে। আদ্র ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বলে
—- এটাই পানিশমেন্ট তখন গরম ছিল খাওনি কেন? এখন এই ঠান্ডাটাই খাবে।
কথায় আছেনা মানুষ নিজের পায়ে নিজে কুড়াল মারে আমারও ঠিক সেম অবস্থা,,,, আমি আদ্রকে বলি
—- না খেলেকি হয় না?? আদ্র বলে
—- কেন হবে না সারারাত জেগে থাকো। বারণ কে করেছে? আমি এখন ঘুমাবো,, বলেই হাই তুলতে লাগে। একদম জুকের মতো লাগছে আমার সাথে। বাধ্য হয়ে ঠান্ডা দুধটাই খেয়ে নিলাম৷ ওয়াক থু।।। তারপর শুধু আমার এইটুকু মনে আছে। আমি বিছানায় গিয়ে শুয়ে পরি। আর কিছু জানিনা।
চলবে?
গল্পের নামঃ- #কৃষ্ণচূড়া😍😍
লেখিকাঃ- #konika_islam
part:02
—আমি আইসক্রিম খাবো। আদ্র বলে
—তুমি বাচ্চা? শিশির একটা লম্বা হাসি দিয়ে বলে
—- না আর দুইদিন পর আপনার বাচ্চারা আমাকে আম্মু,,মাম্মা বলে ডাকবে,,। আদ্র বিরক্ত হয়ে বলে
—–হুয়াট ননসেন্স!! কি সব বাজে বকছ? শিশির একটা লম্বা শ্বাস ফেলে বলে
—- দেখুন,,,,, আমি আইসক্রিম খাবো আর হাসবেন্ড হিসাবে এটা আপনার দায়িত্ব,,এবার গিয়ে আইসক্রিম নিয়ে আসুন নয়তো এখন লোক জড়ো করে বলব আপনি আমাকে অহরন করছেন। আদ্র বলে
—– ঐটা অহরন না অপহরণ
বলেই গাড়ি থেকে বেড়িয়ে হাটা দেয় আইসক্রিম পার্লারের দিকে।
আহহহহ কি শান্তি। জ্বালিয়ে মারছে সকাল থেকে,,, এখন আমার পালা,, আমিও জ্বালিয়ে নিলাম। আইসক্রিম জিনিসটা তেমন আমার পছন্দের না শুধু তাকে জ্বালাতে। আল্লাহ দিয়েছে একটা হিটলার নামক হাসবেন্ড এইতো সকালের কথা
________
মানুষ সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে কত সুন্দর ভাবে,,,, হাসবেন্ডর বুক থেকে মাথা উঠিয়ে,,, সকলা শুরু করে,,,, হাসবেন্ড রা মিষ্টি হাসি দিয়ে গুডমর্নিং বলে তারপর সকাল শুরু হয়,,কিন্তু আমার সকাল হয়েছে অন্য ভাবে। এইতো সকালের ঘটনা। হঠাৎ করে মুখে তরল কিছু পরাতে ঘুম থেকে লাফিয়ে উঠি সামনে তাকাতেই দেখা মিলে,,, আদ্রের। যেখানে চোখ মুখে বিরক্তির ছাপঁ আমার থাকার কথা সেখানে সে রেগে আছে হাতে পানির গ্লাস। আমাকে অবাক করে দিয়ে বলে
—- ১০ মিনিট টাইম,,, ফ্রেশ হয়ে যেন বই নিয়ে বসতে দেখি। আমি নিচে যাচ্ছি।
মানে কি হ্যা? আমাকে বিয়ে কেন করছে? এই পড়াইতে? আগে জানলে জীবনে বিয়ে করতাম না। ধ্যাত ভালোলাগে না। ভেবেছিলাম ২/৪টা বাচ্চা কাচ্চা নিয়ে হাসবেন্ডের সাথে সংসার করব৷ কিন্তু তা হলো কই আর। আমার ভাবনা জগৎ থেকে বেড়িয়ে আসতে সাহায্য করে আদ্র সে বলে
—- সময় কিন্তু শুরু হয়েগিয়েছে। মনতো চাচ্ছে সামনে রাখা ফুলদানিটা দিয়ে মাথা ফাটিয়ে দেই। কিন্তু তা তো করা যাবে না। মরলে পরে জেলে যেতে হবে সাথে বিধবা পদবি ফ্রী আর যদি বেঁচে যায়,, তাহলে আমার ইন্না-লিল্লাহ। কি আর করারা হাত মুখ ধুয়ে এসে পড়তে বসলাম।
___________
কিছুসময় যেতেই সে এসে হাজির। হাতে একটা ব্লু কালারের ফাইল সে আমার দিকে একবার তাকিয়ে ফাইলটা নিয়ে চলে যায়,,, মানে কি আমি কি চোর নাকি? যে তার ফাইল নিয়ে ঘাটাঘাটি করব? কিছু করার নাই শিশির তুমি এখন পরেছ একটা হিটলারের পাল্লায়। আচ্ছা সে তো কোনো সিক্রেট মাফিয়া টাফিয়া না আবার!? তখনই আমার ননদী অদ্রিজা এসে বলে
—- ভাবি নিচে আসো,,, খেতে ডাকছে। আমাকে আর পায়কে,, বই রাখা দিয়ে কথা তাই কিছু না ভেবেই নিচে চলে এলাম। বস আমার কফি হাতে বসে আছে সিঙ্গেল সোফায়। ইস কি এটিটিউড ,,,, ভাব। যেটা আমার মটেও সহ্য হচ্ছিল না। যেমন ঠিক তারও আমার সুখ সহ্য হয়না । খাবর টেবিলে বসার সাথে সাথে বলে
—- খাওয়ার পর সোজা রুমে গিয়ে রেডি হবে তোমাকে নিয়ে আর কলেজে যাবো।
এতটা রাগ হচ্ছিল কি বলব। মনটা চাচ্ছিল ফ্রিজ থেকে গিয়ে সব ডিম নিয়ে এসে তার মাথায় ফাটাই। চুপচাপ মেনে নিলাম। কলেজের সব কাজ মিটিয়ে বাসায় ফিরছিলাম আর তখনই আইসক্রিমের আভির্ভাব ঘটে।
মানে ভাই বুঝি না,, আমার তো স্বপ্ন ছিল একটা রোমান্টিক বর পাবো। তার বদলে পেয়েছি একটা বর নামক টিচার,,, আমাদের মতো রোমান্টিক মেয়েদের কপালেই কি এমন নিরামিষ বর জুটে? তখনই ঠাস করে শব্দ হওয়াতে ভয় পেয়ে যাই।
সামনে তাকাতেই দেখি আদ্র একটা বক্স আর হাতে কোণ। কোণটা আমার দিকে এগিয়ে দেয় আর বক্সটা বেক সিটে রেখে দেয়। ডার্ক চকলেট ফ্লেভারের আইসক্রিম
—- নিজেও যেমন তিতা করল্লা পছন্দ ও ঠিক তেমনই।। কি করার বাধ্য হয়ে এটাই খেতে হচ্ছে।
___________
বাসায় ফিরতে ফিরতে দুপুর হয়ে যায়। আসার পর আইসক্রিমটা অদ্রিজার হাতে ধরিয়ে দিয়ে আদ্র বলে
—- একা একা খেতে খেতে তো XXll হয়ে গিয়ছিস। সবাইকে দিয়ে খাস। বলেই রুমে চলে যায়। আমিও পিছু পিছু যাই। আসার পর বাসায় তেমন কথা হয়নি। তাই আদ্রকে বলেই ফেললাম
—- ফোনটা একটু দিবেন? সে চুপচাপ নিজের ঘড়ি খুলতে ব্যস্ত। কানে শুনে না নাকি? আমি আবারও বললাম।
—- ফোনটা একটু দিবেন? বাসায় আম্মুর কাছে কল দিব একটু। আমার ফোনটা আনা হয়নি। সে আমার দিকে তাকিয়ে বলে
—– বাইরে থেকে এসেছে,, ফ্রেশ হয়ে নাও তারপর ঘুম। পরে এইটা নিয়ে ভাবাবো।
মুহূর্তেই মনটা ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে গেলো। কিন্তু এতে তার কি যায় আসে? ভেবেছিলাম বিয়ের পর আমি মুক্ত,,, মুক্ত আকাশে ডানা মেলে উড়বো। আর সে তো আমার ডানা কি গজাবে হাত-পা গজানোর আগেই খাঁচায় বন্দী করেছে।
শাওয়ার নিয়ে এসে দেখি আদ্র বিছানায় আধো শুয়ে লেপটপে কিছু একটা করছে। এই লেপটপ ই তার বউ,, সারাক্ষণই এই লেপটপ। মনেতো হচ্ছে ভিতরে ঢুকে যাবে। মাথাটা ঝিম ঝিম করছে সকালে ঘুম থেকে অনেক জলদি উঠতে হয়েছে হয়তো তাই। আর লেট না করে শুয়ে পরি আর ঠিক তখনই আদ্র মাঝে কোলবালিশ দিয়ে দেয়। মানে!!! আমি উঠে বসে উনাকে জিজ্ঞেস করলাম
—- মাঝে শতীন কেন? ইয়ে মানে কোলবালিশ কেন? উনি লেপটপের দিকে তাকিয়ে বলে
—- তোমার বাজে স্বভাব রাতে,,, হুটহাট গায়ের উপর পা তুলে জাপ্টে ধরে থাকো,,, একদম জোকের মতো। তাই।
মনতে চাচ্ছে এই কোলবালিশ দিয়ে মুখ চেপে ধরে,,, এই আহাম্মক টাকে বালিশ চাপা দিয়ে ইন্না-লিল্লাহ করিয়ে ফেলি। কিন্তু এটা মরলে আমি বিধবা পদবি পাবো। বরটা এতো কিউট কিন্তু ব্যবহার কি!! ঐ যে কথয়া আছে। চেহারা তো মাশাআল্লাহ কিন্তু ব্যাবহার আসতাগফিরুল্লাহ।। মনে মনে হাজারটা কথা শুনিয়ে পারি দিলাম ঘুমের রাজ্যে। দুপুরে আমরা বাইরে থেকে লান্ঞ্চ এসেছি তাই,,, আর জ্বালায়নি।
_________
ঘুম থেকে উঠে দেখি পাশে আদ্র নেই,,, উঠে বসি। তখনই রুমে আসে অদ্রিজা। অদ্রিজা এসে আমার পাশে বসে পর আর বলে
—- দেখ ভাবি আমি তোকে তুমি করে বলতে পারবো না,,, তুই করেই বলবো। কারণ আমরা সমবয়সী আর একই কলেজ একই ইয়ারে পড়ি। আমিও অদ্রিজাকে বলি
—- বলবা সমস্যা কি। তখনই আদ্র রুমে আসে আর বলে
—- বয়সে এক হলেও সম্পর্কে তোর বড় তাই তুই না আপনি / তুমি ডাকবি। অদ্রিজা ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বলে
—-, চুপ যা,,,, তোর বউকে আমার যা ইচ্ছা হবে ডাকব। আমার এতো ফর্মালিটিস ভালো লাগে না। আমিও বললাম
—- সমস্যা নেই। আমিও তুই ডাকবো। অদ্রিজা আমার হাত ধরে দাড়িয়ে বলে
—- চল নিচে গিয়ে একটু আড্ডা দেই। রুম থেকে শুধু দরজা অব্দি গিয়েছি। তখনই আদ্র বলে
—– সন্ধ্যার আগে যেন পড়ার টেবিলে পাই। এই আদ্রের জন্য আমার চোখের পানি গুলো বাধ্য হয়ে সুসাইড করবে। বিয়ের সময়ও এতো কান্না পায়নি যতটা এখন পাচ্ছে। এই বজ্জাতটাকে কি বলেছি আমি পড়ব!? আদ্র আবার বলে
—– মনে থাকে যেন।
আমি দাঁত চেপে চেপে হাসি দিয়ে বলি
—জ্বি মনে থাকবে এখন যাই। আদ্র বলে
—- আমি বারণ করেছি? মানে নিজের বোনের সামনেও অপমান। এই দিন দিন না বাচ্চা আমারও দিন আসবে তখন বুঝবে। এক একটা মুহূর্তের বদলা নিব তাও গুনে গুনে পাইপাই করে। অদ্রিজার সাথে জমিয়ে আড্ডা দিয়ে সন্ধ্যায় রুমে ঢুকতে যাবো তখনই
চলবে
ভুলত্রুটি ক্ষমার চোখে। 😊