ক্ষণিকের বসন্ত পর্ব ৫

#ক্ষণিকের_বসন্ত
#পাট:৫
#লেখিকা:Angel Frozen (Ñîşhì)

পরেরদিন সকালে মীরজাফর ঘুম থেকে উঠেই চোখ মেলে তাকিয়ে দেখে সামনে জুরাইন বসে আছে।

জুরাইন :শুভ সকাল চাচাজি!!

মীরজাফর :তুই এতো সকালে আমার রুমে কি করতে আসছিস???

জুরাইন :আপনি কাল রাতে এতো ভাল অসুস্থ হবার নাটক করছেন তার জন্য আমি সংবর্ধনা দিতে আসছি।

মীরজাফর :কী বলছিস এসব তুই??

জুরাইন :থাক চাচাজি আপনাকে এতো নাটক করতে হবে না,,,
এটা আপনার বক্তৃতা দেওয়ার স্থান না যেখানে নাটক করলে ভোট পাবেন।

মীরজাফর :বাহহ আমার সামনে বসে এতো কথার বুলি ফুটছে কি করে???
যার যে কোনোদিন ফাঁসি হবে।

জুরাইন :ভুলে যাবেন না আমি আপনার পথের এমন কাঁটা যাকে না গিলতে পারেন না ফেলতে পারেন।

মীরজাফর :এটাই যদি সমস্যা না হতো তাহলে তোকে সেই কবে মেরে পুঁতে দিতাম।

জুরাইন :চাচাজি আমাকে মারতে আপনি পারবেন না,,,
আমি যদি মরে য়ায় তাহলে আপনার রাজ্যপাটের এখানে সমাপ্তি হবে,,

মীরজাফর :বাবাহহ তুই দেখছি জেলে থেকে অনেক কিছু জেনে আসছিস???

জুরাইন :হুম,, (তোমাকে ধ্বংস করার সব ব্যবস্থা করবো বলে আসছি মনে মনে)

মীরজাফর :আর কিছু বলবি???

জুরাইন :কি আর বলবো রাজনীতিবিদের মতো কাল রাতে নিজে অসুস্থ হবার নাটক করছেন তাকে আর কি বলবো,,,
যে ছেলের পিঠের পেছনে ছুড়ি দিয়ে আঘাত করতে পারে তার থেকে তেমন কিছু আশা করি না।।।নাস্তার টেবিলে আসুন।

মীরজাফর :তুই আমার সোনার হাঁস না মারতে পাড়ি না গিলতে পারি।



এদিকে ঘুম থেকে উঠে ত্বায়িহা খামারবাড়ি যায়।
গিয়ে দেখে ছেলেটা বসে বসে কি জানি ভাবছে।

ত্বায়িহা :তার পাশে গিয়ে বসে বলে,, কি ভাবছিলা এতো??

ছেলেটা :কিছু না,,,আজকের পর তুমি আর এখানে আসবা না।।আর আমার থেকে দূরে থাকবা

ত্বায়িহা :কি বলছো এসব!?!! কেনো আসবোনা,, তুমি আমার বন্ধু তোমার কাছে আসতেই পারি।

ছেলেটা : না বলছি না?? আসবা না,,,আমি চায় না তুমি আমার কাছে আসো,,এখান থেকে চলে যাও বলে জোড়ে ধমক দিলাম।

ত্বায়িহা :এমন ভাবে কষ্ট না দিলেও পারতে।।আমি কান্না করতে করতে বাড়িতে চলে আসি।



বাড়িতে এসে দেখি আজ রান্নাবাড়া হচ্ছে সেই রকমের!! আমি জিরান কে জিজ্ঞাস করি আজ কিসের এতো আয়োজন।

জিরান :আরে ভাবি তুমি এ কেমন প্রশ্ন করছো বলো তো??

ত্বায়িহা : আমি আবার কেমন প্রশ্ন করছি মানে বুঝলাম না।

জিরান :বোকা ভাবিজান বড় ভাইয়া কাল আসছে না,,,
এতো দিন পর সে বাড়িতে আসছে তাই তার জন্য এতো সব রান্নাবাড়া করা,,
আজ সব তার পছন্দ মতো হবে।।আজ ঈদ মনে করো।

ত্বায়িহা :কথা গুলা শুনে আমি বরফের মতো জমে গেছি কি হচ্ছে এসবা।।
এখনি ওনার আগমণ কি করে সম্ভব। আমি কাউকে ভালবেসে ফেলছি।
তাকে কি করে গ্রহণ করবো এটা কি ভাবে সম্ভব। মনে মনে।

জিরান :ও ভাবী কি হলো?? কোথায় হারিয়ে গেছো তুমি?? ভাইয়ার কথা ভাবছো বুঝি???

ত্বায়িহা :কিছু না,,তা উনি কোথায়??

জিরান :তুমি কার কথা বলছো বলো তো ভাবী??

ত্বায়িহা :আবার কার তোমার বড় ভাই উনি চেনো না??

জিরান :সেটা বলবা তো না হলে ঝুঝবো কি করে।

ত্বায়িহা :না বোঝেন না,,,আমার সাথে ফাইজলামি হচ্ছে তাই না।

তখন হঠাৎ সেখানে জাবিন চৌধুরী এসে বলে কে কার সাথে ফাইজলামি করছে শুনি??

জিরান :আমি বাবা,,,বড় ভাবির সাথে একটু মজা করছি।

জাবিন চৌধুরী :তা মজা করো সমস্যা নাই,,,
তোমারি তো বড় ভাবী , এতো দিন পর সবার মুখে আবার সেই হাসি দেখে খুব ভাল লাগছে।

জিরান :জ্বি বাবা,,ভাইয়া ফিরে আসায় এ বাড়ির প্রাণ যেনো ফিরে আসছে।

জাবিন চৌধুরী :আচ্ছা তোমরা কথা বলো,,আমি আসছি।
তখনি সেখানে আবার জারা চলে আসে।

ত্বায়িহা :আরে জারা কোথায় যাচ্ছে এদিকে??

জারা :বড় ভাইয়ার সাথে দেখা করতে সে বাহিরে আছে,,তার সাথে দরকার।

জিরান :তা তোর কি দরকার ভাইয়া কে জানতে পাড়ি??

জারা :কেনো নয়!! আরে তুমি তো জানো,,এবাড়িতে ছেলেদের সাথে মেয়েরা খাবার টেবিলে বসে না।

ত্বায়িহা :কই এতো দিন তো এক সাথে খেয়েছি,, তাহলে এখন কি সমস্যা??

জিরান :আসলে ভাবি এবাড়ির নিয়ম এটা যে যেখানে চার ছেলে এক সাথে থাকবে সেখানে বাড়ির মেয়ে বউ এক সাথে খেতে পারবে না।

জারা। বড় ভাইয়া এতোদিন ছিলো না,,,এখন আসছে,, সেই নিয়ম শুরু সে যদি আমাদের এক সাথে খাবার টেবিলে এলাউ করতো তাহলে ভাল হতো।

জিরান :তুই পাগল হয়ে গেছিস না কি?? এই নিয়ম ভাইয়া কোনোদিন ভাঙ্গবে না সো নিজের ঘরে যা।

জারা মন খারাপ করে নিজের ঘরে চলে যায়।
জিরান ও বাহিরে চলে যায়।

ত্বায়িহা এসব কিছু শুনে বুঝে তো অবাক আল্লাহ এ কেমন খাটাশ বর দিছো যে এসব নিয়ম মানে,,,এ লোকের সাথে কথা বলার দরকার।


দুপুরবেলা,, রাএিবেলা,,সবাই আলাদাভাবে খাবার খেয়েছে।
এই জন্য কারো সাথে কারো দেখা হয়নি।

জুরাইন ত্বায়িহার পাশের রুমে বসে কি জানি কাজ করছিল।

ত্বায়িহা :বাড়ির কাজের মানুষ দের থেকে জানতে পারে তার পাশের রুমে জুরাইন কাজ করছে।।তাই সে জুরাইনের রুমের উদ্দেশ্য চলে যায়।

জুরাইন :দু বছরে দেখছি চাচাজি অনেক টাকা নষ্ট করছে তার সব কিছুর হিসাব দিতে হবে।আর হিসাব আমি নিবো।বলে সে মীরজাফরের ঘরের দিকে যায়।

ত্বায়িহা :রুমের বাহিরে এসে অনেক সময় নক করে,,কিন্তু ভেতর থেকে কোনো সারা না পেয়ে সে দরজা খুলে ভেতরে গিয়ে দেখে কেউ নেই।
ত্বায়িহা রে তুই যে একটা গবর গণেশ তা আজ প্রমাণিত, নাহলে এতো সময় বুঝে যেতি এ রুমে কেউ নেই😒😒



এদিকে জুরাইন মীরজাফরের ঘরে এসে তার মুখের উপর সব ফাইল পএ ছুঁড়ে দিয়ে বলে,,,
এসব কি??? এতো হিসাবে গড়মিল কেনো?? কি করছেন আমার সব টাকা পয়সাকড়ি??

মীরজাফর :তোকে ধ্বংস করে দেওয়ার সব ব্যবস্থা,,, আর নিজেকে বড় লোক বানানোর সব রাস্তা ক্লিয়ার করছি।

জুরাইন : আমার ব্যবসা ধ্বংস করে আপনি কোনোদিন উপরে উঠতে পারবেন না,,,আপনাকে নিচে নামাতে আমি হাজার বার আসবো।বুজছেন,,এবার দু বছরের হিসাব দিন না হয় পুলিশে দিতে বাদ্ধ হবো আমি?

মীরজাফর :জুরাইন বাবা কি বলছো এসব,,কান্না কান্না ভাব নিয়ে বলে আমি তোমার সব কিছু বুকেন মাঝে জড়িয়ে রেখেছি তোমাকে কবে দিবো তাই তুমি এভাবে আমাকে অবিশ্বাস করতে পারলে,,,???আল্লাহ আমাকে উঠিয়ে নাও

জাবিন চৌধুরী :রুমের মাঝে এসে বড় ভাইকে জড়িয়ে ধরে বলে,,ভাইজান এসব কোন ধরনের কথা।।।
জুরাইন তোমার এতো সাহস হয় কি করে বড় চাচাজির সাথে এমন ভাবে কথা কোন সাহসে বলার???

জুরাইন :(শালা মীরজাফর তুই এখানেও আমাকে ভিলেন বানিয়ে দিলি মনে মন)বাবা তুমি যা ভাবছ তেমন কিছুনা।

জাবিন চৌধুরী :থাক জুরাইন আমি সবটা শুনেছি যা তুমি তোমার চাচাকে বলছো,, আরে উনি ছিলেন তাই এসব কিছু এখনো ঠিক আছে।।তাড়াতাড়ি তার কাছে মাফ চাও

জুরাইন :চাচাজি কি জড়িয়ে ধরে সরি বলে,,আর তার কানে কানে বলে,,,সব জায়গায় নিজের চালাকি খু্ব ভাল মতো কাজে লাগাতে পারেন মীরজাফর।

মীরজাফর :আচ্ছা বাবা থাক আর এসো দুঃখ পেতে হবে না,,এতোদিন দূরে ছিলা তাই এমন হতেই পারে,,জুরাইনের কানের কাছে মুখ এনে বলে এই তো তোমার প্রথম হারের শুরু,,শেষটা আবার জেল খানাতে হবে।

সবাই সবার রুমে চলে যায়।
জুরাইন এভাবে বেশ কিছুদিন মীরজাফরের সত্যি সবার সামনে আনতে চায় পারে না।বার বার বিফলতা পায়।

এমন একদিন দুপুরবেলা খাবার সময় ঘটে এক ঘটনা…
(কি ঘটছে কাল জানতে পারবেন,, সরি দেরী করে গল্প দেওযার জন্য,,একটু টেনশনে আছি ইনশাআল্লাহ কাল থেকে সময় মতো দিতে চেষ্টা করবো)



চলবে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here