গ্যাংস্টার পর্ব ১২

#গ্যাংস্টার
#Sabriha_Sadi (সাদিয়া)
পর্ব : ১২
..
রানি কি বলবে না বলবে ভেবে পায় না। ছলছল করা চোখ নিয়ে রাজের দিকে শুধু তাকিয়ে থাকে।

এই মানুষ টাকেই কি সে অবিশ্বাস করে গেল? যে কি না নিঃস্বার্থ ভাবে তাকে ভালোবেসে গেছে। তাকে পাওয়ার জন্যে কত কিছুই না করল। মিথ্যে প্রোফেসর সাজা, তাকে এক দিনেই বিয়ে করে নেওয়া। আর এই মানুষ টা কে কি না সে….

রাজ ল্যাপটপ টা বন্ধ করে পাশের টেবিলে রাখে।

ঘুরতে না ঘুরতে রানি এসে তাকে ঝাপটে ধরে। শক্ত বন্ধনে আবদ্ধ করে নেয় নিজের ভালোবাসা কে।

রাজের চোখ দিয়ে পানি চলে আসে। রানি অঝরে কান্না করতে থাকে। মুহূর্তে মুহূর্তে রাজ কে শক্তে জড়িয়ে নিচ্ছে। রাজও রানি কে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে নিয়ে চোখের পানি ফেলছে।

রাজ একসময় শব্দ করে রানির গলায় নিজের মুখ ডুবিয়ে দিয়ে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কান্না করতে থাকে।

সব মিলিয়ে রানির বুক ক্ষতবিক্ষত হয়ে যাচ্ছে। যেন কেউ তার বুক দুমড়ে মুচড়ে শেষ করে দিচ্ছি। প্রতিনিয়ত আঘাত করছে তার বুকের ভেতরটা কে। রাজের ফুঁপিয়ে কান্না টা যে রানির গহীনে কি প্রভাব ফেলছে আর কত টা যন্ত্রণা দিচ্ছে তা রানি বলে প্রকাশ করতে পারবে না কখনো। মনে হচ্ছে আজরাইল বুঝি এই তার জান কবচ করছে। এখনি মনে হয় তার দেহ থেকে প্রাণ পাখি টা উবে যাবে।

রানির এমন কষ্টে শ্বাস কষ্ট শুরু হয়ে যায়। আস্তে আস্তে তার শরীর যেন নেতিয়ে পড়ে। রাজের বুকে হেলে যায় সে।

রানি কে এই অবস্থায় দেখে রাজ দিশেহারা হয়ে যায়। কষ্ট তার আরো বেড়ে যায়।

রানি কে কোনো রকম কোলে তুলে বিছানায় নিয়ে যায়। চোখ মুখে পানির ঝাপটা দেয়। হাত পা ঠলতে থাকে। কোনো কিছুতেই কাজ হচ্ছে না তার। কোনো রেসপন্স নেই রানির। ক্রমশ শরীর ঠান্ডা হয়ে আসছে। রাজের ভেতর ঘরে ভয় ঝেঁকে বসেছে।

রাজ এবার উপায় না পেয়ে রানির মুখের কাছে যায়। ঠোঁট দুটি হাল্কা ফাঁক করে তার মাঝে নিজের ঠোঁট লাগিয়ে দেয়। নিজের নিশ্বাস টা রানির গহীনে ছেড়ে দেয়।
বার কয়েক রাজ এই প্রথায় অবলম্বন করে। রানি কে অনেক ডাকে। খুব বেশি কান্না করছে সেই সময়ে সে।

“প্লিজ মাই লিটল এঞ্জেল। আমার বউ প্লিজ আমি বাঁচব না তুমি ছাড়া। তাড়াতাড়ি উঠো। রানি উঠে পড়ো প্লিজ আমায় আর একটা কষ্ট দিও না যেটার কারণে আমি উন্মাদ কিংবা মরে যাই। রানি উঠো। আল্লাহ তুমি আমার রানি কে ঠিক করে দাও। দোহাই তোমার আমার বউ কে আমার বুকে ফিরিয়ে দাও। দয়া করে আল্লাহ আমায় একা করে দিও না।”

রানির মুখে আবার নিশ্বাস ছেড়ে দেওয়া হয়। বার কয়েক দেওয়ার পর রানির কাশতে থাকে।
শরীর তার বড্ড ক্রান্ত। রানির মাথা রাজ নিজের বুকের সাথে চেঁপে ধরে কান্না করতে থাকে বাচ্চাদের মতো হাউমাউ করে।

রানি হাত দিয়ে ইশারা করে পানি দেওয়ার জন্যে। রাজ পাশ থেকে গ্লাস নিয়ে তার মুখের সামনে ধরে। রানি বেশ খানেক পানি খেয়ে একটু বড় করে নিশ্বাস নেয়।

রাজের কান্না দেখে সে রাজ কে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দেয়।

এবার রাজ শক্ত গলায় বলে,
“ওই আর কাঁদবি না। কাঁদলে এবার মেরেই ফেলব।”

রানি রাজ কে খামছে ধরে। রাজের বুকে মুখ গুঁজে দিয়ে চোখের পানি ফেলে।
রাজ তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে মাথায় গভীর চুমু দেয়।

“প্লিজ বউ কেঁদো না আমার। শরীর খারাপ করবে। কাল সকালে ডাক্তার এসে দেখে যাবো।”
“না।”
“কেন না?”
“ঔষধ!”
“কিসের ঔষধ?”
“আমি ঔষধ খেতে পাড়ি না। ডাক্তার আনতে হবে না।”

রাজ এক গাল হেসেই বলে “পিচ্চি একটা।”

রানি কে কিছু খায়িয়ে দেয়। তারপর একটুু জুস জোর করে খাওয়ায়।

রাজের বুকে মাথা রেখে শুয়ে আছে রানি। রাজ হাত বুলিয়ে দিচ্ছে রানির ঘন কালো লম্বা কেশে। রাজ কে জড়িয়ে ধরে রানি বলে,
“সরি।”
“….
“জনাব শুনছেন? আমি দুঃখিত।”
“….
“জনাব।”
“….
“জনাব বুঝি রাগ করল?”
“হুম।”
“আমি তা ভাঙ্গাতে চাই।”
“তাহলে যে লাগবে।”
“কি লাগবে?”
“মিষ্টি।”
“ওকে আমার বর আপনি বসেন আমি নিয়ে আসছি।”

রানি উঠতে চাইলে রাজ তার হাত টেনে নিজের বুকের উপর ফেলে।
“আমি ওই মিষ্টির কথা বলি নি আমি এই মিষ্টির কথা বলেছি।”

মুহূর্তে রানি নিজের ঠোঁটযোগলে রাজের ঠোঁটের মধ্যভাগে আবিষ্কার করে।

সকালে রাজ মিটমিট করে তাকিয়ে দেখে রানির বুকের গহীনের সে মাথা রেখে তাকে জড়িয়ে রয়েছে। রাজ মুচকি হেসে রানি কে আরো শক্তে নিজের সাথে মিশিয়ে নেয়।

রানির কপালে আলতো একটা চুমু দিয়ে উঠে যায়।

রাজ ফ্রেশ হয়ে এসে দেখে রানি দুই হাত দুই দিকে উঁচু করে হাই তুলছে আর শরীর মুড়ামুড়ি করছে।
রানির এমন করা দেখে রাজ মুচকি হাসে।
“আমার জনাবার ঘুম বুঝি ভাঙ্গল?”
“জ্বি আমার জনাব।”
“শুভ সকাল মাই লিটল এঞ্জেল।”
“আপনাকেই শুভ সকাল মাই ড্রিমবয়।”

রাজ শব্দ করে হেসে দেয়। রানিও শরীর মুড়িয়ে হাসতে থাকে।
“আমার জান টার ঘুম সব টা ভেঙ্গেছে নাকি আরো বাকি আছে।”
“জ্বি না আমার জামাই।”
“বউ তাহলে আপনি যান গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আসেন।”
“আপনার জন্যে নাস্তা বানাতে হবে না?”

রাজ রানির কাছে গিয়ে দুই হাতে তার গাল টেনে দিয়ে বলে,
“ওরে আমার পিচ্চি বউ রে। তুমি যাও। ব্রেকফাস্ট টা আজ আমি করে দিচ্ছি।”
“কিন্তু..”
“তুমি তো কিছু পারো না। তবুও কাল থেকে তোমার যা ইচ্ছা করো। আস্তে আস্তে পারবে। জানো তো বউয়ের হাতের রান্নায় বিশেষ স্বাদ আছে।”
“ওরে আমার পাগল জামাইরে।”

রানি দাঁত বের করে হেসে ছুটে ওয়াশরুমে চলে গেল।

রাজ হেসে “পাগলি” বলে কিচেনের দিকে হাটা শুরু করে।
..
দুজন মিলে ব্রেকফাস্ট করে নেয়।

রানির গালের পাশে দুই হাত রেখে নরম সুরে রাজ বলে,
“জান আমার সাবধানে থেকো।”
“কেন?”
“শাহিন জেনেছে যে তার নাটক আমি ধরে ফেলেছি। আই নো ও এখন চুপ থাকবে না। কিছু একটা তো করবেই।”
“….
“কলিজাটা তোমাকে নিয়েই আমার চিন্তা। ভেবেছিলাম আন্টি আঙ্কেলের কাছে তোমায় রেখে আসব। পরে ভেবে দেখলাম সেটা আরো রিস্ক হয়। উনাদের ঝুঁকি বাড়বে। এই বাড়ি তে আমি তোমায় প্রটেকশনে রাখব গার্ড দিয়ে। আল্লাহর রহমতে কিছু হবে না প্রেয়সী চিন্তা করো না।”

রাজ কথা শেষ করে রানির কপালে চুমু দেয়।
“সাবধানে থাকবে। ভালো না লাগলে বা কিছু হলে সাথে সাথে আমায় কল দিবে।”
“তুমিও সাবধানে থেকো।”
“আল্লাহ আমার বউ আমায় তুমি করে বলল। আর আমি সাবধানে না থেকে পাড়ি?”
“না আসলে ইয়ে..”
“পাগলি তোমার মুখে তুমিটা বড্ড শোভা পায়।”

রানি মুচকি হাসে।

রাজ আরেকটা চুমু দিয়ে “সাবধানে থেকো প্রেয়সী” বলেই চলে যায়।

রানি এত বড় বাসায় একা বসে আছে। ভয়ও লাগছে তার। কি করবে না করবে ভেবে পায় না। বুকের ভেতর এক অজানা আতঙ্ক কাজ করছে।
রাজ কি বলল? শাহিন যদি.. সত্যিই যদি এমন কিছু হয় তবে?

ভেবেই রানির ভেতর আত্মা শুকিয়ে চৌচির হয়ে উঠছে।

রানি এত বড় বাড়ি তে একা এদিক ওদিক যাচ্ছে। উপর থেকে নিচের দিকে তাকিয়ে সে দেখতে পায় অনেক গুলি গার্ড বাড়ি বেষ্টন করে রেখেছে। তার সেফটির জন্যে রাজ এমন ব্যবস্থা নিয়েছে। রানি মুচকি হাসি দেয় রাজের ভালোবাসা ময় দায়িত্ব দেখে।

দুপুর তখন ১ টার উপরে। আমেনা আন্টি রান্নাঘরে কাজ করছে রানি সোফায় বসে কার্টুন দেখছে।

হাঠৎ রানি অনুভব করল কেউ একজন পিছন থেকে তার মুখ চেঁপে ধরেছে।
রাজ হলে তো তাকে এত কষ্ট দিয়ে মুখে চাঁপ দিয়ে ধরত না। সে তো আলতো ভাবে রানি কে ধরবে। যেন ব্যথা না লাগে। তাছাড়া রাজের ছুঁয়া সে অনুভব করতে পারে।

রানির খুব কষ্ট হচ্ছে। চিৎকার দিতেও পারছে না। দম টা তার আটকে আসছে। চোখ গুলি ঝাপসা দেখতে শুরু করেছে।

ঝাপসা চোখেই দেখতে পাচ্ছে আমেনা আন্টি হয়তো চিৎকার দিয়ে তার দিকে এগিয়ে আসছে।

রানির আর অবশিষ্ট শক্তি ছিল না। পিটপিট করে চোখের পাতা সে নিমিশেই বন্ধ করে দিল। তারপর বাকি টা আর মনে নেই রানির।

রাজ অফিসে একটার পর একটা মিটিং শেষ করে নিজের রুমে এলো।
চেয়ারে গা এলিয়ে দিল। এমন সময় তার ম্যানেজার এলো ফাইল নিয়ে। ইমপটেন্ট ফাইল তাই সে দেখতে লাগল। কাজের প্রতি রাজ পারফেক্ট। অদম্য সাহস আর মনোবল নিয়ে সে কাজ করে।

ফোন বাজলে রাজ ফাইলের দিকে মুখ নিয়ে তা রিসিভ করে।

“কিরে গ্যাংস্টার?”
ওপাশের কন্ঠ শুনে রাজের রাগ উঠে যায়। তার বুঝতে বেশি সময় লাগল না এটা শাহিনের কন্ঠ।

“তুই? তুই আমার কেন কল করেছিস? এত কিছুর পরেও নিজেকে শু..”
“আরে ওয়েট ওয়েট মাই ব্রাদার। গলা এত উঁচু কেন? গলা নামিয়ে কথা বলো।”
“তুই কেন আমার কল..”
“তোমার দুনিয়া আমার কাছে। ইয়েস তোর জানপাখি এখন আমার খাঁচায় বন্ধি।”

রাজ এমন একটা কথা শুনে কি বলবে ভেবে পায় না। হৃদপিন্ড তার কাজ করা যেন বন্ধ করে দিয়েছে। মুহূর্তে তার পৃথিবী আঁধার কালো হয়ে এলো। যেটা ভয় পেয়েছে সেটাই হলে। নিজেকে নিয়ে সে কখনোই চিন্তিত বা ভয়ে থাকে না। তার সব ভয় তার সব চিন্তা শুধু রানি কে নিয়ে। রানি যে তার গুটা দুনিয়া।
রাজের কথা লেগে আসছে। মুখ দিয়ে কি বলবে তাও ভেবে পাচ্ছে না। পায়ের নিচ থেকে মাটি তার যেন সরে যাচ্ছে আস্তে আস্তে।

লেগে আসা গলায় রাজ বলল,
“দে দেখ শাহিন ওকে তুই ছে ছেড়ে দে। ওর সাথে তো তোর ক কোনো শত্রুতা নেই। ওকে ছেড়ে দে।”
“এই প্রথম, জানিস এই প্রথম তোর গলায় আমি ভয় শুনতে পেলাম।”
“…..
“কি যে শান্তি লাগছে না আমার কি বলব তোকে। তোর কন্ঠে ভয়? কিভাবে সম্ভব? আমার এখনো বিশ্বাস হচ্ছে না জানিস।”
“দেখ শাহিন তুই রানি কে ছেড়ে দে।”
“কুল কুল। এত তাড়া কিসের? সবে তো শুরু। মাত্র তোর জানপাখি কে আমার কাছে আনলাম। আরো তো কত কি বাকি।”
“মানে?”
“গলা নামিয়ে। কান টানলে মাথা আসে। যেই এড্রেস দিচ্ছি তাড়াতাড়ি চলে আয়। তোকে আমার খুব দরকার। বেশ কিছু দিন হয়ে গেল তোর সাথে সামনাসামনি কথা হয় না আমার। চলে আয়। আর ভুলেও ফের পুলিশ নিয়ে আসিস না। তাহলে কিন্তু তোর দুনিয়া কালো হয়ে যাবে। মানে তোর রানি কে…”
“শাহিন না। না শাহিন তুই কিছু করবি না। আমি আসছি। রানি কে কিছু ক…”

রাজের কথা শেষ হতে না হতেই ওপাশ থেকে লাইন কেটে যায়।

রাজ দিশেহারা হয়ে যায়। কি করবে তার মাথা কাজ করছিল না। শুধু ছটপট করছিল। রানি কে ঘিরে যে সে বেঁচে আছে। রাজ আর ভেবে সময় নষ্ট না করে বেড়িয়ে পড়ে।

শাহিনের ম্যাসেজ করা এড্রেসের দিকে ছন্নছাড়া হয়ে গাড়ি চালাতে লাগে।
এই মুহূর্ত সে এক দিশেহারা উন্মাদ।

রাজ দ্রুত সেই এড্রেস অনুযায়ী চলে যায়। একটা নিরিবিলি জায়গা। আশপাশে অনেক গাছ। পুরান এক বাড়ির সামনে রাজ তাড়াতাড়ি করে ব্রেক কষে।

দরজার সামনে দুজন রাজ কে চেক করল। তারপর ভেতরে পাঠিয়ে দিল।

রাজ দৌড়ে ভেতরে চলে যায়।
শাহিন তখন বসে বসে ভিলেন হাসি হাসছিল।

রানির হাত পা বাঁধা। মুখের মাঝে কাপড় পেঁচিয়ে রেখেছে। কান্না করার কারণে মেয়েটার চোখের নিচে একটু সময়েই কালো দাগ পড়ে গেছে। চোখ গুলি লাল আর ফোলা। মনে হয় ভয়ে খুব কেঁদেছে।

রাজ কে দেখে রানি হাত পা বাঁধা অবস্থায় চেয়ার থেকে উঠার চেষ্টা করছে। আর বৃথা কথা বলার।
রানির এই অবস্থা দেখে রাজের বুকের ভেতর মুচড় দিয়ে উঠে। ভেতরে পর পর ছুরিকাঘাত করার মতো কষ্ট হচ্ছে। তোলপাড় শুরু হয়ে গেল তার মাঝে। রানির জন্যে ভেতর থেকে শুধু হাহাকার আসছে তার।

“আরে আরে পাখি এত ফরফর করছো কেন? তোমার জানের স্বামী তো সবে এলো। আগে ওকে একটু বিশ্রাম করতে দাও হাহাহা।”

শাহিনের কথায় রাজের খুব রাগ হয়। হাত মুষ্টিবদ্ধ করে নেয়।

“দেখ শাহিন তোর যা করার আমার সাথে কর। প্লিজ ওকে ছেড়ে দে। বাসায় পৌঁছে দিয়ে আয়।”
“বাসায়? হাহা হাহাহা। তোকে ভয় পেতে দেখে না আমার খুবি ভালো লাগছে জানিস? এত বছরেও তোর চোখে এক দিন ভয়ের কোণা পর্যন্ত দেখিনি। আর আজ ওর জন্যে তোর চোখে আছে শুধু ভয়। আর ভয় মুখেও জড়তা। হাহাহা।”
“দেখ শাহিন আমি তোর কাছে রিকোয়েস্ট করছি তোর যা ইচ্ছা আমার সাথে কর। মার ধর যা ইচ্ছা কর। শুধু রানি কে ছেড়ে দে। সেফটলি ওকে বাসায় পৌঁছে দে।”
“আরে দাঁড়া না। তোর বউয়ের সাথে কিছু একটু করতে দে”

এভার রাজ রাগে ফেটে যায়। শাহিনের দিকে তেড়ে আসতে চায়লে শাহিন বাঁধা দেয়।

রানি এখন ভয়ে আরো কাঁদতে থাকে। রাজের দিকে অসহায় দৃষ্টি দেয়। রানির এই চাওনি রাজের ভেতর পর্যন্ত পুড়িয়ে ছাই করে দিচ্ছে। কি করবে বুঝে উঠতে পারছে না। এই মুহূর্তে তার নিজেকে দুনিয়ার সব চেয়ে অসহায় লাগছে।

“এ্যা এ্যা। না এমন ভুল ভুলেও করিস না। ভুলে যাস না তোর রানির জানপাখি কিন্তু আমার হাতের মুঠোয়। শুধু একটা..”

শাহিন গান তাক করে রানির মাথায়। ভয়ে রানির ভেতর টা কেঁপে উঠে। চোখ বন্ধ করে নেয়।

“না শাহিন না। এমন কিছুই করবি না তুই। প্লিজ তোর কাছে রিকোয়েস্ট করছি রানির কিছু করিস না। ওকে ছেড়ে দে তুই।”
“ছেড়ে দিব?”
“শাহিন ওর সাথে তো তোর কিছু শত্রুতা নেই। যা আছে তা আমার সাথে। তাহলে ওর সাথে..”
“ও? ও তো তোর দুনিয়া। তোর পরাণ পাখি। ওকে কষ্ট দিলেই তো তুই কষ্ট পাবি। তোর জান টা যে ওর ভেতর। ওকে শেষ করে দিলেই তুই শেষ হয়ে যাবি।”

রাজ কিছু বলে না। নিজেই নিজেকে একটু সান্ত্বনা দিচ্ছে। নিজেকে ঠিক করে নিচ্ছে। এখন তার রাগ বা মাথা গরম করলে চলবে না। তার একটু ভুলে মারাত্মক কিছু ঘটে যাবে। ঠান্ডা মাথায় সব টা সামাল দিতে হবে।

রাজ আড় চোখে তার ঘড়ির দিকে তাকায়। এখনো ১০ মিনিট বাকি আছে। শাহিন কে এই সময় টা কথার মাঝে ব্যস্ত রাখতে হবে।
রানি কে সেইভ করে যা করার করতে হবে। এর আগে কিছুই করা যাবে না।

চলবে….

(

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here