ঘর বাঁধিব তোমার শনে পর্ব -২০+২১

#ঘর_বাঁধিব_তোমার_শনে
#নুসাইবা_ইভানা
পর্ব-২০

উদয় জেলখানার এক কোনে চুপটি করে বসে আছে,কি থেকে কি হয়ে গেলো।কিছুই বুঝতে পারছে না এক বছর ধরে বিনা দোষে বন্দী হয়ে আছে। রাতের পর রাত এসব চিন্তা করেই পার করে দেয়। হঠাৎ চোখে আলো এসে পরলো। উদয় সামনে তাকিয়ে দেখে দুজন হাবিলদার দাঁড়িয়ে আছে। উদয় তাদের দেখেও না দেখার মতো রইলো। একজন হাবিলদার বললো,আপনার সাথে একজন দেখা করতে এসেছে। আমাদের সাথে চল।উদয় এবার মুখে খুলে বলল,কে সে?

– গেলে দেখতে পাবি কথা না বলে চল।

– উদয় উঠে আসলো। সাক্ষাত রুমের চেয়ারে একজন বসে আছে। হাবিলদার উদয়কে বললো,তোর সময় পনেরো মিনিটে যা বলার তাড়াতাড়ি বলবি। বলেই দরজা বন্ধ করে বাহিরে দাঁড়িয়ে রইলো।

উদয় চেয়ারে বসলো। মুখোমুখি বসে আছে দু’জন। দু’মিনিট নিরবতায় কেটে গেলো। লিরা বললো,মিস্টার উদয়।

– উদয় বলে আপিনে কে? আপনাকে তো আমি চিনিনা।

– আমাকে আপনার চেনার কথাও না। আমি লিরা সহকারী গোয়েন্দা বিভাগের কর্মকর্তা। আমি এখন আপনাকে যা, যা প্রশ্ন করবো,তার সঠিক উত্তর দেবেন। তাহলে আমি আপনাকে সাহায্য করতে পারবো।

– আমি মূর্খ নই যে আপনার কথা বিশ্বাস করবো।

– লিরা নিজের পকেটে থেকে একটা কার্ড বের করে উদয়কে দেখালো।

উদয় বলে, আপনি ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার লোক!

– আস্তে বলুন এখন যেনো এটা কেউ জানতে না পারে।এটা বলুন আপনাকে গ্রেফতার করার রিজন কি ছিলো?

– আমি নিজেও জানিনা। বরাবরের মতো অফিস থেকে ফিরে। রান্না করে খাবার খেয়ে। রেস্ট করছিলাম।কখন যেনো চোখ লেগে গেছে বুঝতে পারিনি। ঘুম ভাঙ্গে ফোনের রিং টোনের আওয়াজে। আমি ফোন রিসিভ করতেই একজন বলে, শাফিনকে বাঁচাতে চাইলে এক্ষুনি চলে আসো। ঠিকানা টেক্সট করে দিচ্ছি। আমি দ্রুত উঠে মুখে পানি দিয়ে ওয়ালেট নিয়ে চলে গেলাম। রাত তখন আনুমানিক দু’টো বাজে। আমার বাইক নিয়ে চলে গেলাম সেখানে। দাঁড়িয়ে সেই নাম্বারে কল করছিলাম। এরমধ্যেই পুলিশ আমাকে চরদিক থেকে ঘেরাও করে।একজন অফিসার আমার দিকে ব*ন্ধু*ক তাক করে রাখে। আর দু’জন এসে আমাকে ধরে রাখে। তারপর ওরা আমার সাথে কি করেছে আমার মনে নেই। যখন চোখ খুলেছি তখন নিজেকে জেল খানার চার দেয়ালে বন্দী পেয়েছি।

– কারো কাছে জানতে চাননি কেন গ্রেফতার করা হলো আপনাকে।

– কেউ কিছু বলেনি। শুধু একজন বলেছিলো,আমি নাকি ড্রা*গ*স সাপ্লাইয়ার তার প্রমাণ নাকি শাফিন ওদেরকে দিয়ে গেছে তাই আমাকে গ্রেফতার করেছে।সে আমার জন্য কিছু করতে পারবেনা সবটা নাকি এখন সরকারের হাতে। পরে আমাকে আদালতে হাজির করা হলো। সেখান থেকে তিন দিনের রিমান্ড মনজুর করা হলো। এই তো আছি। জানিনা শাফিন আমার সাথে এটা কেন করলো? কি ক্ষতি করেছিলাম ওর।

– আপনাকে শাফিন কিছু করেনি। আর কিছু বলবে তার আগেই হাবিলদার বললো,আপনাদের টাইম ওভার।
লিরা উদয়কে উদ্দেশ্য করে বললো, চিন্তা করবেন না। খুব তাড়াতাড়ি আবার দেখা হচ্ছে আমাদের। তখন আপনি এই চৌদ্দ শিকের বাইরে থাকবেন।
উদয় কিছু সময় বোকার মতো তাকিয়ে রইলো লিরার চলে যাওয়ার পথে।

______________________________________________
এরিকা চলে যেতেই শাফিন নিজের কাজ শুরু করে দেয়। ঘরের সব আলমারি, কাভার্ড তন্ন তন্ন করে খুঁজেও কিছু পেলো না। আসে পাশে যত ডেক্স ছিলো সেগুলোর ড্রয়ারো ভালো ভাবে চেক করলো, কিছুই পেলো না। ফ্লোরে হাঁটু গেড়ে বসে মাথায় হাত দিয়ে মাথা নিচু করে রেখেছে। তখন চোখ গেলো বেডের নিচে কেমন একটা দরজার মতো। শাফিন বেডটা টেনে অন্য পাশে সরিয়ে রাখলো। সত্যি সত্যি একটা দরজা তবে তালাবদ্ধ। এখন কি করবে। হাতের কাছে ভারি কিছু নেই যা দিয়ে তালা ভাঙ্গা যায়। অনেক খোঁজা খোঁজি করে একটা প্লাস্টিক জাতীয় কিছু পেয়ে সেটা আগুনে পুড়ে নিয়ে কোন ভাবে তালা খুলে ফেললো,সেই দরজা দিয়ে ঢুকে, নিজের পাসপোর্ট সহ আরো কিছু প্রয়োজনিয় ফাইল নিয়ে বের হলো। এখন পালাতে হবে।পুরো বাড়িতে শাফিন একা কিন্তু দরজার বাহিরে গার্ড। শাফিন সব কিছু রেডি করে সোজা চলে আসলো ছাদে। তবে দুঃখের ব্যাপার হলো এখানে একটা বাড়ির মাঝে অন্য বাড়ির বেশ দূরত্ব। কিছু সময় ছাদে বসে ভাবতে লাগলো কি করা যায়। চট করে মাথায় একা বুদ্ধি আসলো। শাফিন আবার নিচে চলে আসলো। গার্ডদের পর্যবেক্ষণ করে সোজা চলে গেলো ছাদে। বাড়িটা আটতলা। এতোটুকু বেয়ে নামা কোন ব্যপার না। তবে অপেক্ষা করতে হবে গভীর রাতের। কিন্তু হাতে তো সময় আছে মাত্র পঁচিশ মিনিট। শাফিন ছাদে বসে ফন্দি আঁটতে লাগলো। কি ভাবে পালাবে।

______________________________________________
নুহাস পুলিশ স্টেশন আসতেই শুনতে পেলো আজ উদয়ের সাথে কেউ দেখা করতে এসেছিলো। বিচলিত হয়ে উদয়ের সেলে এসে উদয়কে জড়িয়ে ধরে বলে,তারমানে মিহি বেঁচে আছে তাইতো?

নুহাসের কথা না বুঝতে পেরে উদয় বলে,সেটা আমি কি করে বলবো।সেটা তো তুই বলতে পারবি।মিহি বেঁচে আছে নাকি ম*রে গেছে।

– তোর সাথে কে দেখা করতে এসেছিলো?

– আমার গার্লফ্রেন্ড। লিজা।

– তোর গার্লফ্রেন্ড আসলো কোথা থেকে! আগে তো কখনো বলিসনি।

– ছিলো আগে থেকেই তুই জানিস না। ও গ্রামের মেয়ে তো তাই।

– তা গ্রামের মেয়ে প্যান্ট আর লেডিস টিশার্ট পরে বুঝি?
– না পরে না। তবে লিজা আমার জন্য পরে এসেছে। যাতে ওকে সবাই মর্ডান ভাবে।

নুহাস আর কথা না বড়িয়ে বলে, তোকে বেড় করার অনেক চেষ্টা করছি। কিন্তু বুঝতেই তো পারছিস কাজটা এতো সহজ না।
উদয় নুহাসের দিকে তাকিয়ে বলে,অন্তরে বিষ যার মুখে সরলতা। তারচেয়ে অধিক ভালো প্রকাশ্যে শত্রুতা। জানিস তো কথাটা।

– এভাবে কেন বলছিস?

– মনে আসলো তাই বললাম।

নুহাস চলে গেলে চেহারায় তার চিন্তার ভাজ। তার মানে কি? উদয় আমাকে সন্দেহ করছে? আর মেয়েটাই বা কে? হুট করে কোথা থেকে আসলো? খোঁজ নিতে হবে। একবার যখন এসেছে আরো আসবে।
______________________________________________
মিহির আওয়াজ কারো কান অব্দি পৌঁছালো না।
ঘরের মধ্যে ধোঁয়া ছড়িয়ে পরছে। শেহরোজ কাশি দিতে লাগলো। মিহিও কাশছে। আবারো আসলো দরজার সামনে দরজার বাড়ি দিতে লাগলো ফলাফল শুন্য কিন্তু এখন কোন মানুষের আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে না। রুমের মধ্যে ধোঁয়া বাড়তে লগালো। মিহি শেহরোজকে সোফার উপর রেখে। বিছানার চাদর তুলে এনে দরজার নিচে দিয়ে রাখলো,যাতে ধোঁয়া না আসতে পারে। শেহরোজকে কোলে নিয়ে,বারান্দায় চলে আসলো এই মূহুর্তে কি করবে বুঝতে পারছে না মিহি।কিছু সময় বারান্দায় দাঁড়িয়ে থেকে আবার রুমে আসলো রুমে আসতেই।দেখে দরজার সামনের চাদরটায় আগুন লেগে গেছে। মিহি বুঝতে পারছে না কি হচ্ছে এসব। এবার উপায় না পেয়ে টেলিফোন নিয়ে নিচের রিসিপশনে কল করলো।দু’বার রিং হওয়ার পর রিসিভ হলো,।মিহি ব্যস্ত কন্ঠে বললো, রুম নাম্বার ৪২৫ আমরা আটকে পরেছি আমাদেরকে উদ্ধার করুন।

– রিসেপশনে থাকা ছেলেটা বললো,ম্যাম আপনার কি সমস্যা হচ্ছে বলুন আমরা ঠিক করে দিচ্ছি।

– মিহি রাগী কন্ঠে বললো কি সমস্যা হয়েছে মানে? হোটেলে আ*গু*ন লেগে গেছে তাড়াতাড়ি আমাদের উদ্ধার করার ব্যবস্থা করুন।

– ম্যাম এসব আপনি কি বলছেন! হোটেলে আগুন আসলো কোথা থেকে?

– কেন একটু আগেই তো ফায়ার এলার্ম বাজলো সাথে মানুষের চিৎকারের আওয়াজ। কথা বলতে বলতে শ্বাস বন্ধ হয়ে যাচ্ছে মিহির। মিহি কোনমতে বললো তাড়াতাড়ি আসুন।
শেহরোজের অবস্থাও খারাপ হয়ে গেলো চোখ মুখ লাল হয়ে গেছে। আবার চলে আসলো বারান্দায়। দরজা বন্ধ করে জোড়ে জোড়ে নিশ্বাস নিতে লাগলো। ফুটফুটে শিশুর মুখটা কেমন মলিন হয়ে গেছে। মিহি শেহরোজের দিকে তাকিয়ে বলে আমি থাকতে তোর কিচ্ছু হবে না বাবা। নিজের মুখ শেহরোজের মুখের কাছে নিয়ে শেহরোজকে শ্বাস দিতে লাগলো। চাদরে আ*গু*ন লাগাতে এবার সত্যি সত্যি ফায়ার এলার্ম বেজে উঠলো।এর মধ্যেই একজন ভারী কন্ঠে বলে,তোমার গেম ওভার মিস মিহি। মিহি পাশের বারান্দায় কারো ছায়া দেখতে পেলো চিৎকার দিয়ে বলে, কে তুমি?
#ঘর_বাঁধিব_তোমার_শনে
#নুসাইবা_ইভানা
পর্ব২১

রাতের প্রায় মধ্য ভাগ। এতোক্ষণে এলিজা আর এরিকা হয়তো ফিরে এসেছেে।সব জায়গায় খোঁজ করছে শাফিনের। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে নিচে নেমে এসেছে শাফিন। হেঁটে কিছুটা দূর চলে আসলো। কোন যানবাহন চোখে পরছে না। এই রাতে যানবাহন পাওয়ার কথাও না। আরো কিছুটা দূরে আসতেই একটা বার দেখতে পেলো। সাত, পাঁচ না ভেবে বারে ঢুকে পরলো। বাকি রাতটা এখানেই কাটিয়ে দেবে।

এলিজা বাসায় এসে শাফিনকে না দেখতে পেয়ে চিৎকার চেঁচামেচি করে পুরো বাড়ির মাথায় তুলে নেয়। এরিকা বলে তুমি একজন মানুষের জন্য এতো হাইপার কেন হচ্ছ? সে কি তোমার ভালোবাসার মানুষ ছিলো?

এলিজা এরিকার মুখ চেপে ধরে বলে, সব কিছু তোর জন্য হয়েছে। আমার কাছে ভালোবাসার কোন মূল্য নেই। ও ছিলো টাকার মেশিন। এখন আমি কি জবাব দেবো। আর তোকে আমি ছেড়ে দেবো ভাবছিস। কিছুতেই না। একজন কোমায় থাকা মানুষ কি করে পালিয়ে যায়?তার কৈফিয়ত তোকে দিতে হবে এরিকা।

– এটা তো সাধারণ একটা বিষয় তুমি হয়তো জানোনা কোমায় থাকা মানুষ যে কোন সময় ঠিক হয়ে যেতে পারে।

– ওহহ রিয়েলি। তাহলে তোকে যে বলে ছিলাম ভুল মেডিসিন দিতে। তারপরেও ঠিক হয় কি করে?

– তুমি চেক করে দেখো প্রতিদিন আমি ভুল মেডিসিন দিয়েছি তাকে। শুধু আজ রাতের মেডিসিন দেয়া হয়নি। আর তুমি তো জানো আমার টাকা কতো প্রয়োজন?

– তাহলে তুই খুঁজে বের করে দে ওই শাফিনকে। টাকা যা লাগবে তোকে আমি দেবো।

– আমি কোথায় পাবো?

– আমি জানি তুই জানিস ওই শাফিন কোথায় আছে।

– সত্যি বলছি জানিনা। তুমি আমাকে বাসায় যেতে দাও মম বাসায় একা আছে।

– তোর কোথাও যাওয়া হবে না। আজ রাতে তুই আমার সাথেই থাকবি।বলেই এরিকাকে রুমের মধ্যে বন্দী করে রেখে চলে গেলো।

সিসিটিভি ফুটেজ চেক করে সেদিকে খুঁজে চলেছে শাফিনকে।

______________________________________________
পাওয়ার হাউসের শুনশান নীরবতা ভেদ করে ঈশানের কানে ভেসে আসছে কিছু অস্পষ্ট কথা।
একজন গম্ভীর কন্ঠে বলছে, তাহলে ওই কথাই রইলো,আপনারা চলান ঢুকতে সাহায্য করবেন। আর আমরা আপনাদের খুশি থাকতে সাহায্য করবো। আর হ্যাঁ এটা কিন্তু বড় একটা চলান। এক সাথে তিন ট্রাক।আপনারা হ্যান্ডেল করতে পারবেন তো?

আয়রা মুচকি হেসে বলে, সেটা আমাদের উপর ছেড়েদিন আপনি শুধু ঠিকঠাক মতো টাকাটা আমাদের হাতে তুলে দিন।

লোকটি আয়রার দিকে একটা ব্রিফকেস এগিয়ে দিয়ে বলে,পুরো চার কোটি আছে। কাজটা ঠিকঠাক করতে পারলে আরো চার কোটি পাবেন। টাকা হাতে নিয়ে লোকটাকে বিদায় দিয়ে সামনে ফিরতেই কেউ আয়রার মুখ রুমাল দিয়ে চেপে ধরলো দু’মিনিটে আয়রা অ*চে*ত*ন হয়ে পরলো। ঈশান আয়রাকে কোলে তুলে এনে গাড়িতে রেখে মনের সুখে ড্রাইভিং করছে। আয়রার মাথাটা নিজের কাঁধে এমন ভাবে রাখলো দেখে মনে হবে হ্যাসবেন্ড ওয়াইফ। গাড়ীতে স্লো মোশনে রোমান্টিক গান ছেড়ে রিলাক্সে ড্রাইভ করছে।

কাঙ্ক্ষিত স্থানে পৌঁছে আয়রাকে একটা রুমের মধ্যে রেখে হাত দুটো তালাবদ্ধ করে রেখে অন্য রেমে এসে একটা সি*গা*রে*ট ধ*রা*লো। নি*কো*টি*নে*র ধোঁয়া ছাড়তে ছাড়তে কল করলো লিরা কে। রিসিভ করে লিরা আতংকিত কন্ঠে বলে, স্যার মিহি ম্যামের বিপদ। আপনি আমি কেউ নেই এখন কে বাঁচাবে মিহি ম্যামকে?

ঈশান কল কেটে বলে ওহহ সিট। আমি আবার ভুল করলাম। সাথে সাথে হোটেলে থাকা ঈশানের সহচরীকে কল করে, ওপাস থেকে রিং হয়ে কেটে যাচ্ছে। বেশ কিছু সময় পর রিসিভ হলো। রিসিভ হতেই ঈশান একজনের অট্টহাসির শব্দ শুনতে পেলো। ঈশান বুঝতে পারলো লোকটা শত্রু পক্ষের তাই কাঠকাঠ গলায় বললো,নিজের লাভের জন্য কোন মেয়েকে ডাল বানায় কাপুরুষেরা।

– বিচ্ছিরি ভাবে হেসে অপর পাশ থেকে লোকটা বলে,মিস্টার ঈশান মুখার্জি। রিলাক্স আমি তেমন কিছু করবো না। শুধু সামনের বারান্দায় থাকা মেয়েটাকে আমার বা হাতে থাকা ব*ন্দু*ক থেকে একটা সু*ট করবো।কাপুরষ হই আর সুপুরুষ হই শত্রুর দূর্বলতার খোঁজ ঠিক রাখি। সো মিস্টার লুজার মুখার্জি সকালে আপনার প্রিয়তামর লা*শ*টা বুঝে নিবেন।

ঈশান হা হা করে হেসে উঠলো।

ঈশানের হাসি শুনে লোকটি বললো, মাথা ঠিক আছে তো মিস্টার মুখার্জি? নিজের স্ত্রীর মৃ*ত্যু*র কথা শুনে কেউ এভাবে হাসে?

– তো আপনার কি মনে মিস্টার ঈশান মুখার্জি বিবাহিত। যাকে মা*রা*র প্লানিং করছেন না সে আমার ওয়াইফ, আর না গার্লফ্রেন্ড। সো তাকে মা*র*লো আমার কি?

– তার মানে কি?রিসিপশনে তো হ্যাসবেন্ড ওয়াইফ লেখা।আমি নিজের চোখে দেখেছি।

– চোখের দেখা সব কি সত্য হয়। বাই দ্যা ওয়ে আপনার নামটা জানতে পারি?

– হাসেম নাওয়াজ।

– ঈশান হেসে বলে, আরেহহহ এম,কের চামচিকা নাকি।?

ইশান কথার তালে হাসেম কে আটকে রাখার চেষ্টা করছে। ঈশানের কাজ শেষ হতেই ঈশান বলে,তোরা যদি চলিস পাতায়, পাতায়, তবে আমি চলি পাতার শিরায় শিরায়। বলেই খট করে কল কেটে দিলো।

হাসেম নাওয়াজ সামনে তাকিয়ে দেখে বারান্দায় কেউ নেই। রাগে হাতের মোবাইলটা ছুড়ে ফেলে দিলো।

কেটে গেলো একটা বিবৎস রাত। ভোরের মিষ্টি রোদ চোখে পরতেই পিটপিট করে চোখ খুললো মিহি। তার পাশেই ঘুমিয়ে আছে শেহরোজ। শেহরোজের কপালে ছোট একটা পাপ্পি দিয়ে উঠে ফ্রেশ হয়ে নিলো। জানালার পর্দা সরিয়ে বাহিরে দৃষ্টি রাখলো। সূর্যের আলো তখন মাত্র তার আলো বিলাতে শুরু করেছে। মিহি সেই নব আলোর দিকে তাকিয়ে মনে মনে বলে, কবে সব অন্ধকার দূর হয়ে আমার জীবনে আসবে এক নব আলো? কবে সব দূরত্ব ঘুছিয়ে আমার প্রিয় মানুষটার সাথে বাঁধবো আমার ঘর?ভাবনার মাঝেই কানে আসলো শেহরোজের কান্নার শব্দ। মিহি দ্রুত শেহরোজকে কোলে তুলে বলে, ওলে আমার বাবাতাহ কাঁদে না।

______________________________________________
জানালার সাদা পর্দা ভেদ করে রোদের ঝলক চোখে পরতেই চোখ মেলে তাকায় আয়রা। আয়রা এপাশ থেকে ওপাশ করবে তখনি দেখতে পায় হাত বাঁধা। সাথে সাথে রুমের চারপাশে চোখ বুলিয়ে আতঙ্কিত হয়ে যায়। একটু ভাবতেই রাতের কথা মনে পরে যায়।কাউকে ডাকবে তার আগেই ঈশান একটা আপেলে কামড় দিতে দিতে একটা চেয়ারে পায়ের উপর পা তুলে বসে বলে,গুড মর্নিং মিসেস মাহমুদ।

আয়রা রেগে বলে, কে আপনি?

– আপনার শুভাকাঙ্ক্ষী। আপেল খাবেন ভিষণ মিষ্টি আপেল। একদম আপনার মতো। এক চোখ টিপে বলে।

– আপনার সাহস দেখে আমি অবাক হচ্ছি! ছেড়ে দিন আমাকে নয়তো এর পরিণাম ভালো হবে না।

– ইশশশ কি ডায়লগ দিলেন, কোথায় বলবোন ছেড়ে দে শয়তান তুই আমার দেহ পাবি মন পাবিনা।

– আমাকে এখানে আটকে রাখার কারণ?

– কুল মিসেস মাহমুদ। এতো হাইপার কেন হচ্ছেন। আমি আপনার দেহ মন কোনটাও চাইছিনা। কারন দুটোই ডাস্টবিনের মতো ঝকঝকে। আমাকে শুধু বলুন শাফিনের বাসা থেকে যে কাগজ পত্রগুলো গায়েব করেছেন সেগুলো কোথায়?

– তো আপনার কি মনে হয় আপনি আমাকে জিজ্ঞেস করবেন আর আমি হরহর করে সব বলে দেবো!

– না তা কেনো বলবেন। আপনাকে তো জামাই আদর থুরি বউ আদর করতে হবে তারপর বলবেন।

কেয়ার টেকার বলে ডাকতেই একজন চলে আসলো। ঈশান বললো, এক কাজ করো ম্যাডামকে বউ আদর করো। কিছু সুদর্শন তেলাপোকা এনে বিছানায় ছেড়ে দাও। কেয়ার টেকার বলল জ্বি স্যার দিচ্ছি।
ঈশান আয়রার দিকে তাকিয়ে বলে, এবার শান্তিতে সুদর্শন তেলাপোকার সাথে বাসর সেরে ফেলুন। টাটা।

– এসবের মানে কি? আমি এসব ভয় পাইনা। আপনি ভুলে যাচ্ছেন আমি কে?

– নো, নো আমি ভালো করে জানি আপনি কে?বলেই বেড়িয়ে গেলো রুম থেকে।

#চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here