“চাঁদ হয়ে রবো”
~খাদিজা বিনতে হক
পর্ব-৭
কাগজের প্যকেটটা পৌষীর চোখেও পরলো শেষ মেষ।
শাড়ীর প্যকেটের ভিতর অনেক গুলি বই।
সেদিনের কথাটা তাহলে তনয় মনে রেখেছে।
ওর জমানো সমাপ্ত টাকা দিয়ে দুটো বই কিনতে দিয়ে ছিলো।ওর ফেবারেট রাইটার দের।
কিন্তু এখানে কিছু বেশিই বই আছে।
নিঃশব্দে ফিরিয়ে দিলো বই গুলো।
উপহার হিসেবে।তনয়কে পরতে বলেছে।
এসব কার হাত দিয়ে আনিয়েছ প্রত্তুতর দিতে গিয়ে তনয়ের নাম আসলে।সেদিনের মতো আবার ঘোলাটে হয়ে জাবে সম্পর্ক গুলো।
থাক না দূরত্ব দিয়েই সম্পর্ক গুলো বজায় থাক।এতে সবাই ভালো থাকলে ও ও থাকবে।স্পেসালি তুষার ভালো থাকবে।
পৌষী তুষারের জন্য সব।সব করতে পারে।
সব মিলিয়ে ওইতো ওর শেষ সম্বল ।
,
সেদিনের পর থেকে আর কথা বলে নি পৌষী তনয়ের সাথে।
তনয় নিজেকে অপরাধী ভাবছে।
বিথী বেস ক্ষেপে আছে তনয়ের উপর।
ছেলেটা বইগুলো লুকনোর কি ছিলো
ভেঙ্চি কেটে তাকালো তনয়ের দিকে।
তনয় ওর চুল টেনে দিয়ে বলল
“তোর ওই ছোটো মাথায় আর কি কি রখবি বল।তার থেকে বরং তুই কুকুর ই রাখ তুই ক্ষেপলে।তোর কুকুর গুলোও ক্ষেপে যাবে।”
তনয় ওকে কি বল সেটা বুজতে ওর সময় লাগলো।
তনয় রুমে যাবার আগে।বিথীকে ক্ষেপাতে বলল
“ভুতী”
বিথী আন মনে হাসলো।
আচ্ছা তনয় ওকে এতো বড় একটা কথা বলল ও হাসছে কেনো।ভাবতে ও শব্দ করে হেসে দিলো ।
,
বিথী খালা মনিকে বলল
“এই নিয়ে দু দু জোরা নুপুর কিনলামা।খালা মনি।
একটাও পাচ্ছি না”
লিজা বেগম চিন্তিত স্বরে।গলা নিচে নামিয়ে।বলল
“দেখ ঘরে তো আমরা আমরাই।বাহিরের বলতে ওই।মেয়েটা।ওই নিয়েছে হয়তো।বাপের জন্মে কিছু দেখছে বলে মনে হয় না।তুই বললে।আমি নিজ দ্বায়িত্তে।ওর ঘর সার্চ করাবো।তাতে তুষারের কোনো আপত্তি থাকবে না।নিশ্চই।”
“তুমি থামবে খালা মনি।ও অমন মেয়ে না”
“কি বলোস।আজ নুপুর গেছে।কাল বড় কিছু নিবে হয় তো”
গলা নামিয়ে নিচু স্বরে বললেও।
কিচেন থেকে।স্পষ্ট শেনা গেলো।
দর দর করে দু গাল বেয়ে উষ্ণ জল গরিয়ে পরলো।
শেষ মেষ এতো কিছুর পর চোর শব্দটা শুনতে হবে ভাবতে পারেনি।পৌষী।
এমন বিসশ্রী সভ্যাব ওর জিবনেও ছিলো না।
সব কথার মাঝে চোর কথাটা ব্রেনে স্ট্রং জায়গাতে গিয়ে লাগলো।মাথার মধ্যে যেনো কিট পোকা কিট কিট করে বলছে।
” বাপের জন্মে কিছু দেখছে বলে মনে হয় না”
চোখে ঝাপসা দেখছে।হাতের ছুরি দিয়ে কিছু কাটতে গিয়ে।নিজের হাতই কেটে ফেললো।
এই ব্যথা যেনো কোনো ব্যথাই না।ওই শব্দটার সামনে।নিছক একটা ক্ষুদ্র মরিচিকা।
হাত দিয়ে গলগল করে রক্ত পরছে।
বিথী রান্না ঘরে না আসলে হয়তো।রক্তে ভেসে যেতো।বিথী ধাক্কা দিয়ে সম্মতি ফিরিয়ে।হাতে ব্যান্ডেজ করে দিলো।ওর চোখের জল গুলো বেস শব্দ করে বিথীকে বলছে।
“আমি চোর নই।আমি চোর নই।”
,
তুষার রাতে বাড়ী ফিরলো।হাতে রঙিন একটা সপিং ব্যগ।বিথী উৎসাহ নিয়ে তাকিয়ে রইলো।
বুজতে পেরেছে।এটা পৌষীর।মেয়েটার জন্য কেউ কিছুই আনে না।সেই ঈদে একটা ড্রেস দিয়েছে।
সারাক্ষণ পুরানো কাপড় পরে।
কিছু দিতে চাইলে বলে।থাক আমার আলমারি ভর্তি কাপড় চুপড় ওগুলো শেষ করি তার পর দিবনে।
বিথী জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে যানতে চাওয়া কথার উত্তর বিনা বাক্যে চোখের পাতা ফেলে বলল
,
“হ্যা এটা সেটা তুই যা ভাবছিস।তোদের বাড়ীর ঘর কুনে করে রাখা মেয়েটার জন্য আনলাম।বল মেয়েটা দেখলে খুশি হবে না।ও তো আবার প্রকাস করতে পারে না।ওর প্রকাসের ধরন আলাদা।আমিও তো ওর সে ধরন আলাদা মানুষ।ওর মতো বলা কথা আমার মতো বুজে নিবো”
,
বিথী স্মিত হাসি দিয়ে চলে গেলো।
,
মেয়েটাকে শাড়ীতে দেখার প্রচুর সখ তুষারের।
কিন্তু ওর ফর্সা মেদ দেখা যায়।তাই বারন করে পরতে।
ওর পৌষীকে কেউ দেখবে তা ও মোটেও পছন্দ করে না।তাই নিজে আজ একটা শাড়ী এনেছে।দরজা বন্ধ করে চোখ ভরে দেখবে।
সাদা জামদানির উপর পিংক ছোটো ছোটো ফুলের ডিজাইন।ওকে একদম মেঘ পরি লাগবে।
আথবা হুরপুরের বিদ্যাধর।ভবতেই তুষারের মুখে হাসির রেখা দেখা যাচ্ছে।
রাগ করলে কি সে প্রেম করতে পারে না।
হুমম পারে অন্য সকল সুস্থ্য মস্তিষ্কের মানুষের থেকে ভালো পারে।
এক রাশ আসা নিয়ে ঘরে ঢুকলো তুষার।
অদভুত ভাবে ওর সকল আসায় এক জগ জল ঢেলে দিলো পৌষী।
বিছানায় বেঘোরে ঘুমচ্ছে।
তুষা প্রথমে হাসলো।পরে ওর ইচ্ছে করছে ঘুমন্ত পৌষীকে টেনে বসিয়ে নিজ হাতে শাড়ী পরিয়ে যত্ন করে আবার শুয়িয়ে দিতে।ও করতেও পারে।
তবে পৌষীর ঘুম বরই বিঘট।
ওকে কেউ ঘুম থেকে তুললে।তাকে ঠাস করে একটা চর মারে।একবার ওর সেই অভিগ্যতা হয়েছে।তাই এবার চাঞ্চ নিলো না।
মেয়েটা ঘুমের মধ্যে এতো শক্তি কোত্থেকে সঞ্চালন করে ওই জানে।
খুব শক্তি ওর মনে হয় তখন কিছু তে ওকে ভর করেছে।তুষার ওর কালো কালো ঠোট দাঁত দিয়ে কামরে চেপে ধরে স্মিত হাসলো।ও হাসছে ভেবেও আবার হাসলো।
পৌষীকে শাড়িতে কল্পনা করে হাসলো।
পৌষী যে লজ্জা পেয়ে না যে হাল হবে।
সেটা ভেবেও হাসলো।
তুষারের ওকে পাগল পাগল অথবা সাইকো মনে হচ্ছে।
যে পৌষীকে প্রচন্ড ভালবাসে।
,
পৌষীর আজ ঘুম ভাঙে কারো পায়ের শব্দে।
হিল পায়ে দিয়ে টক টক করে হাটছে।
এপাশ থেকে ওপাশ।
দরজার কাছে এলেই তিব্র শব্দ।
আজ বাহিরে জাবে সে।নিঃশব্দে।
দরজা খুলবে না।
কারণ দরজা খোলা রেখেই ঘুমিয়েছে।
হঠাৎ তুষারের কথা মনে হতে পাশ ফিরে তাকালো।
তুষার।পাশে শোয়া।বেঘোরে ঘুমচ্ছে।
আজ লোকটা টি-শার্ট পরে নি।
উন্মুক্ত বুকটার দিকে তাকিয়ে।
আচ্ছা ছেলেদের বুকে তো লোম থাকে।
ওর নেই কেনো।শুনেছি।পাসান বুক লোম বিহীন তাই।
বাহিরে পায়ের শব্দটা কমে গেলো।
অদভুত ও যখন ইন্টেরেস দেয় তখন সব উধাও।
ও ব্যপারে কান দিলো না।তুষারকে জরিয়ে ধরলো।বড্ডো ভয় করছে ওর।
,
কান্নার শব্দে চমকে উঠলো।
তড়িৎ গতিতে তুষার কে ছেরে।উঠে পরলো।
তুষারও লাফ দিয়ে উঠলো।
কান্নার শব্দে দুজনে দুজনের মুখের দিকে তাকাচ্ছে।
দরজা খুলে তুষার বের হলো।
কিন্তু ততক্ষণে কান্না শব্দ ওখানে সব বাতাসে মিয়িয়ে গেলো।তুষার অবাক হলো।
তার মানে পৌষী যা বলতো কিছুটা হলেও সত্যি।
পৌষীর পাশে গিয়ে বসে।দেখলো ভয়ে কাপছে।রিতি মতো হাত পা ঠান্ডা হয়ে গেছে।
পানি খায়িয়ে।ওকে জরিয়ে ধরলো।পৌষীও ওকে শক্ত করে জরিয়ে।এক ফোটা দূরত্বনেই ওদের মাঝে।তবুও মনের মাধ্যে বেস দূরত্ব।
পৌষী হৃদস্পন্দন দ্রুত বিড করছে।
এক একটা বিড যেনো তুষার গুনতে পারছো।পৌষীর ভয় দেখে তুষার ঘাবরে গেলো ।
তুষার নিজেকে শান্ত রেখে ওকে বুঝাতে শান্ত গলায় বলল
“ভয়।ভয় পেয়েছো!!
মনে সব সময় সাহস রাখবে।
কোনো জিনিস ভয় পেলেই তোমাকে চেপে ধরবে।।সব বিপদ থেকে নিজেকে রক্ষা করতে হলে মনে সাহস রাখবে।অতৃপ্ত হোক বা বাস্তব।সাহস থাকলে কেউ তোমাকে টলাতে পারবে না।
ওই গল্পটা তুমি শুনেছো।।
,
,
চলবে,,