“চাঁদ হয়ে রবো”
~খাদিজা বিনতে হক
পর্ব-৮
ওই গল্পটা তুমি শুনেছো।।
পৌষী দু দিকে মাথা নাড়িয়ে জানতে চাইলো কোন গল্প।
ওর মনে এক ঝাক উপহাস।
এটা মজা করার কোনো সময় হলো।
তুষার হেন তেন মজা করার মানুষ না।
তুষার পৌষীকে বুকের সঙ্গে শক্ত করে চেপে ধরে। ওর খোলা চুল গুলোর ভিতর হাত ঢুকিয়ে দিয়ে জরিয়ে রইলো।
,
তুষার বলল।
“মা বলতো।
একজন লোক জঙ্গলে রোজ কাঠা কাঠতে যেতো।
কিন্তু জঙ্গলে থাকতো বিষাক্ত বিষাক্ত সাপ।
একদিন লোকটা কাঠ কাটতে গিয়ে।
একটা বিষ পিঁপড়ে কামর দিলো।
যথা রিতি লোকটা ভাবলো।
তাকে সাপে কামরেছে।
যেহেতু জঙ্গলে বিষাক্ত সাপ থাকে লোকটা ঘাবরে গেলো।
বাড়ী পৌঁছানোর আগেই জঙ্গলের ধারে মরে পরে রইলো।
,
“লোকটা মরলো।।কেনো জানো।”
পৌষী আবারও দু দিকে মাথা নেরে বলল না জানি না।
তুষার বলার অগ্রহ নিয়ে।উত্তেজনা মিশ্রিত কন্ঠে বলল
“বনের বাঘে খায়নি লোকটাকে মনের বাঘে খেয়েছ তাই”
,
এবার কিছুটা হলেও পৌষী বুজেছে।
তুষার ওকে শক্ত হয়ে মনে আকাশ সমান সাহস নিয়ে থাকতে বলছে।যদিও বা অদৃশ্য কিছু হোক বা না হোক।সাহস থাকলে যেকোনো ভয় পার করা যায়।
সাহস মানুষকে যেকোনো পরিস্থিতি সামলাতে সাহায্য করে।
,
সকালে তুষার ব্যপারটা সকলের কাছে খুলে বলল।
তাদের সাথে কিছু দিন যাবত এমনটা হয়।
বাড়ীর আর কারো সাথে হয় নাকি।
বিথীর চোখে মুখে ভয়ের ছাপ স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে।
সে তো খালা মনিকে বলে আজই চলে যাবে।
লিজা বেগম সব বানোয়াট।ভাওতা বাজী।
কালা জাদু জানে।মানে পৌষী।কে ইঙ্গিত করে বলল কথাটা।বিথী ভয়ে চুপসে বলল
“আমি আজই বাড়ী ফিরতে চাই”
লিজা বেগম ধমকানো স্বরে বলল।
“চপ কর।এগুলো তোকে ঘর থেকে বের করে দেবার গুটি সাজাচ্ছে।সবাইকে ভুতের ভয় দেখুয়ে বাড়ী থেকে বেরে করে দিয়ে একা রাজ্যত্বো চালাতে চায়”
,
পৌষীর এতে কিছু শোনার জন্য নিজেকে আগেই তৈরি রেখেছে।হাজার বার বললেও।সত্যিটা পালটে যাবে না।সত্যিই সত্যিই থাকবে।সকলের মন্তব্য করার কাজ করবে।কেউ ভালো করবে কেউ খারাপ তাই বলে।সত্যিটা কার মতামতের কাছে হার মানবে না।সে বৃক্ষের ন্যয় শির উচু করে বাচে।
,
তুষার রাগ করেই উঠে গেলো।
তনয় চুপ করে বসে সব শুনলো।
ওর কি বলা উচিৎ ও নিজেও জানে না।
আজ নতুন করে কিছু বলতে গেলে কোনো ভাবে তুষার অন্য ইঙ্গিত করলে।তখন।
ব্যপারটা ঘোলাটে হয়ে যাবে ।
,
অফিসের চেয়ারে হ্যলান দিয়ে ফাহাদ ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে।
ফাহাদ সাহেবের দৃষ্টি প্রখর।সে একবার তাকিয়েই বলে দিলো।
“আশিক সাহেব চিন্তা করছেন”
“আপনি কি অন্তর জামি ফাহাদ ভাই”
ফাহাদ সাহেব হাসলো।কলম মুখের কাছে তুলে।দাঁত দিয়ে কামড়া নোর ভঙ্গি করে ।
নামিয়ে রাখলো ডেস্কের উপর।
“আসলে!!আশিক সাহেব আমি অন্তর জামি না।লোকের চোখের ভাব ভঙ্গি বুজতে পারি এই আরকি।এই যেমন ধরুন।আমাদের ডানে যে বসে।ওর মেজাজটা খুব গরম।ওর চোখ দেখে বোজা যায়”
“ওটা তো যে কেউ বজতে পারে।তাই আপনাকে প্রশ্ন করবো না।কিভাবে বুজলে।”
“আপনি কিভাবে বুজলেন”
“প্রতিদিন যেমন দেখি আজ তার থেকে ভিন্ন তাই”
“আমিও ঠিক তেমন করে অথবা আমার বোজার ক্ষমতা আছে তাই বুজি।”
তুষার বোজা বুজির ক্লাসে আর গেলো না।কারণ সে জানে ফাহাদ ভাই।অনেক জ্ঞ্যানি।অথবা মানুষকে বোজার একটা অদৃশ্য শক্তি আছে।
,
তুষার চিন্তিত ভঙ্গিতে বলল।
“ফাহাদ ভাই সব কিছু গোল মিলে লাগছে।”
ফাহাদ সাহেব জানতে চাওয়া উৎসাহ মিশ্রিত কন্ঠে জিজ্ঞাস করলো
“আশিক সাহেব।বলা যাবে কি । কি সমস্যা”
তুষার শান্ত গলায় সবটা খুলে বলল কাল রাতের অপ্রত্যাসিত ঘটনগুলো।
ফাহাদ সাহেব বলল
“আজ কার যাগে দারিয়ে আমি মানতে নারাজ।যে এটা কোনো অতৃপ্ত কোনো শক্তির কাজ।আমি সাইন্সের স্টুডেন্ট তাই এটা কোনো অতৃপ্ত কাজ আমি মানবো না। তবে বলতে পারি মানুষ জাতি যদি পৃথীবিতে থাকে তাহলে তারাও থাকতে পারে।যদিও বা সবাই মানে আমি না।”
তুষার হাসবে নাকি চিন্তা করবে বুজতে পারছে না।ফাহাদ ভাইয়ের মতো লোকের মুখেও কেমন অদভুত কণ্ঠস্বর।তিনিও নিশ্চই ফলাফল দিতে পারছে না।ওর ধরনা সে পারবে।এখন ধরনা মিথ্যে মানতে হবে।
,
তুষার বলল।
“মানে বুজতে পারলাম না”
“অতৃপ্ত হতেও পারে না ও হতে পারে”
“তহলে কি করবো”
“কোনো সাইকেটট্রিসের কাছে যেতে পারেন”
“কিন্তু আমি যেটা দেখেছি”
“ও!! হ্যা!” আপনি জানো কি দেখেছেন”
তুষার দৃষ্টি পরিবর্তন করলো।
মানে জানালা দিয়ে বাহিরে তাকালো।
ব্যস্ত সহরের বিকট যানজট।
অফিসে যে পাশে তুষারের ডেস্ক সেখান থেকে রাস্তা দেখা যায়।পিঁপড়ের মতো।লাইন দুয়ে।
সব গাড়ী গুলো একেক জনের পিছনে।
তুষার হাসলো।আবার দির্ঘশ্বাস ফেললো।
ফাহাদ ভাইর চোখে চোখ রেখে বলল।
“সেদিন।মেয়েটাকে ঘুম পারিয়ে আমার ঘুম আসছিলো না।তন্দ্রা লেগে এলো অনেক ক্ষন পর।চোখের সামনে ধূধূ মরু ভূমী।আমি তৃষ্ণার্থ তেষ্টায় ছাতি ফেটে যাচ্ছে।চোখ খুলে অবাক হলাম।আমি ঘরের ভিতর।মাথার উপর সিলিং এ ফ্যন সো সো করে ঘুরছে।কিন্তু আমি চৈত্রের টাক ফাটা গরমের মতো ঘেমে নেয়ে একা কার।তৃষ্ণার বিন্দু মাত্র লেশ নেই।হার্ট বিড ফার্স্ট।কান তালা লেগে যাচ্ছে কারো কান্নার শব্দে।মেয়েটা আমাকে এতো শক্ত করে জরি রাখলো বুজতে পারছি।খুব ভয় পেয়েছে।ওর পাঁচ আঙুলের নখের দাগ আমার বুকে এখনও স্পষ্ট।দেখবেন।থাক পরে দেখাবো।আগে শুনেন তারপর কি হলো আমার সাথে”
,
ফাহাদ সাহেব এক্সাইটেড নিয়ে তাকিয়ে রইলো।
তুষারের থামায় তার শোনার আগ্রহে ব্যঘাত ঘঠলো।তার স্পষ্ট ছাপ তার চোখে মুখে।
ফাহাদ সাহেব তার এক্সাইটমেন্ট ধাবিয়ে।
মৃধূ স্বরে বলল।
“আশিক সাহেব।আপনি কি আপত্তিকর কিছু দেখেছেন”
“হয়তোবা”
ফাহাদ সাহবের দৃষ্টি তিক্ষণ।
,
“কানে শুধু কারো কান্নার শব্দ।কান্নার শব্দে শুনে বাহিরে বের হলাম।বাহিরে আমার জন্য আরো বরো কিছু অপেক্ষা করছে বুজতে পারিনি।বুজলাম তখন যখন।রুম থেকে বেরিয়ে কয়েক পা সামনে এগেয়ে।গেলাম।একজন বৃদ্ধা মহিলা।কোলে একটা বাচ্চা নিয়ে দারিয়ে।অদভুত না”
ফাহাদ সাহেব বলল
“হুম”
“এতক্ষণ যে কন্না শুনছিলাম।তা কোনো একজনের না কয়েক জনের।”
ফাহাদ সাহেব কিছুটা চমকে গেলো।বন্ধ ঘরের মদ্ধে এগুলো শুনে।
“বাড়ীর মেইন গেট কি খোলা ছিলো”
“না।উফ ফাহাদ ভাই পুরো কথটা শুনেন তারপর যা জিজ্ঞেস করার করবেন”
“ওকে”
“কয়েক জন বলতে বাচ্চারা। কয়েকটা বাচ্চা।পাঁচ থেকে ছয়টা বাচ্চা হবে।বাচ্চরা কান্না করছে।বৃদ্ধা মহিলার কথা মনে করতেই আমার লোমস দাড়ীয়ে যায়।মহিলা হাসছিলো।কি অমায়িক সেই হাসির শব্দ।আমার ঘোর লেগে এলো।হাসির শব্দে।ওদের ডাক দিয়ে কাছে এগো তেই সব উধাও হয়ে গেলো।”
এটুকু বলে একটা দির্ঘস্বাস ফেললো।
“আর কিছু দেখেছেন”
“না।সব শেষ।হাওয়ার সাথে মিসে গেলো।একটা মিষ্টি বাতাস আমার গায়ে এসে লাগলো।”
“আপনি কি এসব নিয়ে চিন্তিত”
“হ্যা আবার না”
তুষার একটু থেমে বলল
“জানেন ফাহাদ ভাই মহিলা আমাকে কিছু বলেছে”
,
,
চলবে,,,,