তমিস্র প্রভা পর্ব -০৫

পর্ব-০৫
#তমিস্র_প্রভা🍁
#লেখিকা-লামিয়া_রহমান_মেঘালা
ছায়া হাঁটছে,
আনমনে এক নদীর তিরে,
সেখানে গেলে বেশ ভালো অনুভব হয় ছায়ার,
ভীষণ সুন্দর বাতাস চুল গুলো ছুয়ে গেলে শান্তি লাগে মনের মাঝে,
ছায়া চোখ বন্ধ করে নিজের জীবন সম্পর্কে ভাবছে,
কি থেকে কি হয়ে গেল আর মাত্র কিছু দিন বাকি তার পর নির্ঝর মানের মানুষ টা ছায়াকে নিয়ে যাবে সেই ভয়ানক জাগায়া।
ছায়া তার ভাবনায় মক্ত তখনি ছায়ার ফোনটা বেজে ওঠে,
ছায়ার ধ্যান যায় সেখানে,
তুষা ফোন করেছে,
–হ্যালো,
–আপু তুই কই?
–বাইরে কেন কি হয়েছে?
–বাসায় আয় দরকার,
–কেন?
–আপু মা বাবা ডাকছে তোকে,
–ও আচ্ছা আসছি,
–হুম জলদি আয়,
ছায়া ফোন কেটে দেয়,
ওপাশে,
তুষা বেশ অবাক ছায়া কেমন ঠান্ডা সভাবের হয়ে গেছে কারোর সাথে ভালো করে কথা বলে না ছায়া,
কেমন হয়ে গেছে যেন,
–তুষা।। —
–হ্যাঁ মা।
–কি বলল ছায়া?
–আসছে
–ওহ,
ছায়ার মা চলে যায়,
কিছুক্ষণ পর ছায়া বাসায় আসে,
★★★,
ছায়া বাসায় আসতে ভেতর টা কেমন ভয় ভয় করতে শুরু করে,
সেই অজানা এক সুগন্ধী আর সেই শীতল এক হাওয়া,
ছায়ার মনে
হতে থাকে নির্ঝর ওর আশে-পাশে আছে,
ছায়া একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বাসার ভেতরে প্রবেশ করে,
–ছায়া তুই এসেছিস?
–হ্যাঁ মা কি হয়েছে,
–আয় তোর সাথে কারোর দেখা করায়।
–কে মা?
–আয়,
অনুপমা বোগম মেয়েকে নিয়ে নিজেদের রুমে যায়,
ছায়া রুমে যেতে চোখ পরে রুমের সোফায় বসে থাকা লোকটার উপর,
ছায়ার হাত পা ঠান্ডা হয়ে যেতে থাকে ভয়ে,
— ম মা উ উনি এ এখানে,
–নির্ঝর চৌধুরী,
তুই ওনার সাথে যে রিলেশন এ আছিস সেটা আমাকে বলার প্রয়োজন বোধ করিস নি ছায়া।
মাকে এতো পর মনে হয়,
–ম মা রি রিলেশন!
–আন্টি ও ভয় পাচ্ছিল তাই ত সোজা আমাকে আসতে বলল,
নির্ঝর তার জায়গা থেকে উঠে ছায়ার পাশে দাঁড়ায়,
ছায়ার বাহু ধরে বলে,
–তাই না প্রিন্সেস!
বাকা হেসে
–(জলদি উত্তর দেও প্রিন্সেস, ডোন্ট মেড মি ম্যাড। প্রিন্সেস) ধিরে ধিরে বলল নির্ঝর,
–তোদের জন্য আমি ভীষণ খুশি আপু,
নির্ঝর ভাইয়া সত্যি দারুন।
ছায়া সব কিছু শুধু শুনছে কোন উত্তর তার মাঝে নেই,
–ছায়া আর আমার বিয়ে দিনটা তাহলে ঠিক করে দিন আঙ্কেল,
–কিন্তু বাবা তোমার পরিবারে,
–আঙ্কেল আপনি ত জানেন আমার পরিবারে কেউ নেই আমি থাকি আমার বাড়িতে একা,
–হ্যাঁ কিন্তু দুর দুরন্ত পর্যন্ত কেউ কি নেই?
–আছি আঙ্কেল আমি আছি,
রবি দরজা দিয়ে ভেতরে আসতে আসতে বলে,
রবিকে দেখে নির্ঝর হাসে,
–হ্যাঁ আমার প্রিয় বন্ধু।
–আচ্ছা

ছায়া শুধু দেখতে
থাকে ওর চোখের সামনে দিয়ে সব ঘটে চলেছে,
ওদের বিয়ের দিন ঠিক হয়ে যাচ্ছে,
ছায়া কিছু বলতে পারছে না সইতে পারছে না,
–আন্টি আমি ছায়ার সঙ্গে একটু কথা বলতে চাই ( নির্ঝর)
–ছায়া মা নির্ঝর কে রুমে নিয়ে যাও,
ছায়া মাথা নিচু করে নিজের রুমের দিকে অগ্রসর হয়,
ছায়ার রুমে আসতে,
নির্ঝর ছায়াকে দেয়ালের সাথে চেপে ধরে,
ছায়া মাথা নিচু করে আছে,
–আই মিস উ প্রিন্সেস।
ছায়া চুপ করে আছে,
–কিছু বলবে না ৩ দিন পর তোমার ২ মাসের সময় শেষ আমাদের বিয়ে ভালো হবে না পুরো দুনিয়ার সামনে তুমি আমার স্ত্রী হয়ে আমার সাথে যাবে,
–কেন করছেন এমন।। —
–ভালোবাসি তাই৷
–আমি বাসি না ভালো এটাকে ভালোবাসা বলে না এটাকে জোর বলে,
–প্রিন্সেস এখন বলে কি হবে যা হবার তা ত হবেই,
–লিঙ মি।
প্লিজ লিভ আস,
–ওয়াট এ বিউটিফুল জোক প্রিন্সেস,
ছায়া কেঁদে দেয়,
–বিউটিফুল,
নির্ঝর এর মুখে এমন কথা শুনে ছায়া সামনে তাকায়,
–উহু এই চোখে পানি আসলে তোমায় আরও বেশি সুন্দর লাগে জানো তুমি?
–(লোকটা নির্ঘাত একটা রাক্ষস নাহলে এমন কোন মানুষ করতে পারে না, ছায়া মনে মনে)
–কি ভাবছো?
–ছাড়ুন লাগছে,
–হুম কিছু দিন পর আমি এমনি তোমায় নিয়ে যাবো,
নির্ঝর ছায়ার হাত ছেড়ে দেয়,
নির্ঝর সে দিন চলে যায়,
ছায়া ডিপ্রেসড হয়ে যায়,
খাওয়া বন্ধ হয়ে যায় ওর,
এটা ভেবেই ভয় হতে থাকে কেমন একটা মানুষ এর সাথে তার বিয়ে হতে চলেছে,
২ দিন পর,
সকাল ৫ঃ০০,।
ছায়া বেনারসি পরে দৌড়াচ্ছে এক ঘন জঙ্গলের ভেতর দিয়ে, চারিদিকে শুধু অন্ধকার আর অন্ধকার,
কোথাও কোন আলো নেই,
ছায়া নির্ঝর থেকে ছুটে পালাতে চাইছে,
বড়ো বড়ো শেয়ালের কন্ঠের বিশ্রি সুর ভেসে আসছে বাতাসে,
ছায়া ভয়ে ভয়ে দৌড়াচ্ছে,
হটাৎ কারোর সাথে ধাক্কা খেয়ে ছায়া নিচে পরে যায় সামনে তাকিয়ে নির্ঝর কে দেখতে পায়,
নির্ঝর ছায়ার গালে হাত দিবে তখনি,
ছায়া উঠে যায়,
বড়ো বড়ো শ্বাস নিতে থাকে,
পাশে থাকা পানি খেয়ে নেয় সব টুকু৷
–উফ,
রোজ এই স্বপ্ন টা আমায় তাড়া করে বেড়ায়,
লোকটা আমায় কখনো শান্তি দিবে না,
ঘুমের মাঝে মরে যাই না কেন আমি৷
আজ ওর গায়ে হলুদ,
ইতিমধ্যে সব জায়গায় এই ঘোষণা হয়ে গেছে যে ছায়া নির্ঝর এর বিয়ে হতে চলেছে,
ছায়া ঘুম থেকে উঠে তুষাকে পাশে পায়,
–তুষা,
–হুম (ঘুমন্ত শুরে)
–আমি একটু হাঁটতে বের হচ্ছি।
মা খুজলে বলিস,
–ওকে৷
ছায়া চলে এলো বাইরে,
শীতের দিন ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন পরিবেশ,
গাছ পালা কিছু বোঝা যাচ্ছে না,
কিন্তু ছায়া তার মাঝে হাঁটছে
নিরুদ্দেশ এর মতো,
ইচ্ছে হচ্ছে এখান থেকে কোথাও হারিয়ে যেতে যেখানে কেউ নেই৷
শুধু আছে একটু শান্তির নিশ্বাস,
ছায়া কাঁদছে,
–আমার সাথেই এমন হয় শুধু আমার সাথে,
আমি কি করব,
কিভাবে নিজের পরিবার কে বাঁচাবো
আমি ত ওখানে গেলে মরেই যাবো,
আমি রোজ এই বাজে স্বপ্ন দেখি৷
কেন আমি মরে যাচ্ছি না ঘুমের মাঝে,
আমি এমন ভাবে আর বাঁচতে পারবো না৷
ছায়া কাঁদতে কাঁদতে বসে পরে,
–না ভেঙে পরলে চলবে না আমি যদি মরে যাই তাহলে সবাই বেচে যাবে,
হ্যাঁ আমি মরে যাবো,
আমি এভাবে বেঁচে থাকতে পারবো না এর থেকে মরে যাওয়া ভালো,
ছায়া নদীর কাছে এসে দাঁড়ায়,
একে শীত দুই ছায়া ভালো সাতার পারে না,
নদীতে ঝাপ দিলে এমনি মরে যাবে কেউ বাঁচাতে আসবে না এই সকাল বেলা,
ছায়া মন বানিয়ে নিয়েছে সে ঝাপ দিবে,
আর জীবন রাখবে না,
এভাবে কেউ আর যাই হোক বাঁচতে পারে না,
জীবনের সব কিছু একটা বন্দি দশায় পরিনত হয়েছে,
শেষ পরিনতি সত্যি ভিশন বাজে হবে
,
,
,
ছায়া ঝাপ দিবে তখন তার ফোন বেজে ওঠে,।ছায়া ফোন অন করে দেখে নির্ঝর এর ম্যাসেজ,
–উহু প্রিন্সেস ভুলেও এই সিদ্ধান্ত নিও না তুমি না বেঁচে থাকলে তোমার পরিবারের কেউ জীবিত থাকবে না,
তুমি যতো দিন আমার তত দিন সব ঠিক থাকবে,
এমন আর কখনো করার চেষ্টা করো না৷
আর হ্যাঁ আমি আর রিস্ক নিবো না তোমার আমার বিবাহ আজি সম্পূর্ণ হবে।
বাসায় চলে এসো প্রিন্সেস দুই মিনিটের ভেতর নাহলে তুষার বড়ো ক্ষতি হয়ে যাবে,
ছায়া ফোন রেখে জলদি দৌড় দেয়,
বাসার দিকে,
আর যাই হোক তুষার সাথে কিছু ঘটে গেলে নিজেকে ক্ষমা করতে পারবে না,
আর নিজের জন্য পরিবার কে সাফার করাতে পারবে না ছায়া
চলবে
(

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here