তুই শুধু আমার ভালোবাসা পর্ব -২১+২২

#তুই_শুধু_আমার_ভালোবাসা
#Hridita_Hridi
#পর্ব২১

বর্ষণ সবার দিকে একবার তাকিয়ে জবাব দিলো এটা জানা কি তোমাদের খুব জরুরি? না জানলে হয়না?

রোহিতঃ না না! শালাবাবু কথা ইজ কথা। সবাই সঠিক সঠিক জবাব দিয়েছে তাই তুমিও কোনো ভণিতা না করে সোজা সাপটা উত্তর দেবে।

বর্ষণঃ মাথা চুলকে মাথা নিচু করে মিষ্টি একটা হাসি দিয়ে বললো হুম বাসিতো। একজনকে খুব ভালোবাসি।

বর্ষণের কথা শুনে শুধু নিপু আর রাফসান ছাড়া বাকিরা যেনো আকাশ থেকে ধপাস খেয়ে মাটিতে পরে যায়। এ তারা কোন বর্ষণকে দেখছে!

সবুজঃ তার জন্য তোর মনের ফিলিংসটা কেমন?

বর্ষণঃ এবার সোজা হয়ে বসে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো, তার জন্য আমার কেমন ফিলিংস কাজ করে সেটা আমি কাউকে বলে বোঝাতে পারবোনা। তবে তার পাশে আমি কাউকে সহ্য করতে পারি না। কেউ তার প্রশংসা করবে, তাকে বাহবা দেবে সেটা আমি মানতে পারিনা। সে যদি আমার উপর রাগ করে আমার সাথে কথা না বলে আমার সামনে না আসে তাহলে নিজেকে বড় অসহায় লাগে।খুব কষ্ট হয় যেটা আমি কাউকে বোঝাতে পারবোনা। আমি চাই ওর হাসি ওর আনন্দ সবটার কারণ শুধু আমি হবো শুধু আমি।

ঋতুঃ নাম কি মেয়েটার?

বর্ষণঃ বর্ষার দিকে তাকিয়ে থাকে তারপর ঋতুর দিকে তাকিয়ে বলে পরী।ওর নাম পরী।

সবাই বলে কিইইই এটা আবার কারো নাম হলো?

বর্ষণঃ হুম, আর কারো কাছে নাম হোক বা না হোক সে তো আমার পরী। কে কি বলে ডাকে সেটা ফ্যাক্ট না। আমার কাছে সে কি সেটাই মেইন ফ্যাক্ট।

রাফসান বসে বসে এতোক্ষণ শুনছিলো আর মিটিমিটি হাসছিলো।এখন আর চুপ থাকলোনা বললো, আচ্ছা অনেক প্রশ্ন তো হলো এবার একটা কথা বলার আছে আমার। সেটা হলো- তোর পরীর উদ্দেশ্যে কি তুই কিছু বলতে চাস?

বর্ষণঃ নাহ্ তেমন কিছু না শুধু একটা কথাই বলার আছে তাকে।
কোনো এক চাঁদনী রাতে হাত রেখে হাতে,
পলকহীনভাবে তাকিয়ে,
মন থেকে বলতে চাই ওই পাগলী শোন! #তুই_শুধু_আমার_ভালোবাসা।
আমিও কি ততোটাই তোর কাছে?
যতোটা তুই আমার কাছে?

বর্ষা এতোক্ষণ হা হয়ে, বসে বসে বর্ষণের কথা শুনলেও মনে মনে একটু খারাপ লাগাও ছিলো কারণ বর্ষা আশা করেছিলো পরীর জায়গাটা হয়তো তার হবে।বর্ষা বার বার বর্ষণের দিকে তাকাচ্ছিলো আর ভাবছিলো এই কি সেই বর্ষণ ভাইয়া যাকে এতোদিন ধরে চিনতাম ! সেই বর্ষণ ভাইয়া এতোটা রোমান্টিক কবে থেকে হলো? আর কাকে ই বা পছন্দ করে? পরী নামে কেউ আছে কই এমনটা তো শুনিনি কখনো! কে এই পরী! আমাকে জানতেই হবে।

সবাই চেঁচিয়ে বলে ওঠে বলিস কি বর্ষণ? এমন কথা তুই বলতে পারিস সেটা কখনো ভাবতে পারিনি!
সবাই তো শুধু বর্ষণের কথাগুলো আলোচনা করছিলো।

রাফসান বললো অনেক আড্ডা হয়েছে, এবার ঘুমোতে চল সবাই। কাল আবার হলুদের আয়োজন আছে।
সবাই যার যার মতো রুমে চলে যায়।

বর্ষার কানে শুধু বর্ষণের কথাগুলো প্রতিধ্বনি হতে থাকে।
বার বার বর্ষণের বলা কথাগুলো ভেবে ভেবে মিটমিটিয়ে হাসছে।

সকালে…

সবার ঘুম থেকে উঠতে অনেক দেরি হয়ে গেছে কারণ রাতে তো কেউ ঘুমায়নি, জেগে আড্ডা দিয়েছে।

ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করে সবাই যে যার মতো ব্যাস্ত হয়ে পরে। কেউ আছে আড্ডা নিয়ে কেউ আছে কাজের ব্যাস্ততায়, কেউ পরে আছে সাজুগুজু নিয়ে।

অবশেষে এলো সেই হলুদ সন্ধ্যা। আসলে হলুদ সন্ধ্যা নয় হলুদ রাত হয়ে গেছে। সবাই শাড়ি পরে সাজুগুজু করে আসতে আসতে রাত দশটা। এখন থেকে হলুদ মাখানো শুরু হবে।
রাফসান বলে দিয়েছে বড়রা আগে হলুদ দিয়ে চলে যেতে পারো কাল তো অনেক ঝামেলা থাকবে তাই অযথা রাত জাগার কোনো মানে হয়না।

রাত ১১ টা বাজতে চললো এখনো হলুদ মাখানো চলছে তবে বড়দের হলুদ মাখানো শেষ তারা চলে গেছে সবাই নিচে। এখন শুধু দু চারজন আছে যারা অল্প বয়সের। আর আছে রাতের পাখিরা মানে, যারা গতরাতে আড্ডায় ছিলো।

রাফসানকে এ বুদ্ধিটা দিয়েছিলো সবুজ। কারণ নিপুর আসেপাশে সবুজকে দেখলে তার মা আবার কখন কি বলে বসে তার ঠিক নেই।

এখন রাফসানকে হলুদ দিতে যাচ্ছে রোহিত আর ঋতু।দুজন রাফসানের দুইপাশে বসে হলুদ মাখালো।

এবার বর্ষার পালা, বর্ষা হলুদ মাখাতে যাবে ঝামেলাটা হলো তখন। কারণ বর্ষা নিপুকে সাথে নিয়ে যাবে হলুদ দিতে তখন পেছন থেকে বর্ষণ বর্ষার হাত চেপে ধরে বলে, R u mad?
বর্ষা তো স্ট্যাচু হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে।

কেনো ভাইয়া কি করেছি আমি?

বর্ষণ বলে কাবাবের হাড্ডি হতে খুব ইচ্ছে করে তোর তাইনা?
বর্ষা কিছু না বুঝে বলে কাবাবের হাড্ডি হতে যাবো কেনো ভাইয়া?
বর্ষণ তখন ফিসফিস করে বলে, তাহলে নিপুকে ডাকছিস কেনো শুনি! ওকে ওর মতো থাকতে দে না।
বর্ষণ বর্ষার হাত চেপে ধরে রেখেছে দেখে নিপু হাসতে হাসতে একাই হলুদ দিতে চলে যায়।

নিপু রাফসানের এক পাশে বসতেই অন্য পাশে সবুজ গিয়ে বসে পরে। সবুজকে দেখে নিপু উঠে আসবে তখনই রাফসান নিপুর হাত ধরে বলে আমার এই ভাইটাকে একবার সুযোগ দিয়ে দেখতে পারো।আমার বিশ্বাস ঠকবেনা।

রাফসানের কথা শুনে নিপু বসে পরে।

এতোক্ষণে বর্ষা বুঝতে পারলো বর্ষণের কথার মানেটা।কাবাবের হাড্ডি কেনো বলেছিলো? বুঝতে পেরে বর্ষা ঠোঁটের কোনায় হাসি ঝুলিয়ে মনে মনে বলে সত্যি তো কাবাবের হাড্ডি হতে যাচ্ছিলাম।

সব শেষে বর্ষণ আর বর্ষা যায় হলুদ দিতে। হলুদ শেষে সবাই ফটো তুলতে ব্যাস্ত হয়ে পরে।

বর্ষা ছবি তোলা শেষে বসে আছে পাশে বসে আছে বর্ষণ, ওদের থেকে একটু দুরে বসে কথা বলছে নিপু আর সবুজ হয়তো তাদের দুজনের মধ্যে বোঝাপরা চলছে।রাফসান ফোনে কথা বলছে ঈশিতার সাথে আর রোহিত ঋতু ফটো তুলছে আর ঝগড়া করছে দুটিতে মিলে।

বর্ষা বর্ষণকে ডেকে বললো ভাইয়া!

বর্ষণঃ হুম কি বলবি বল শুনছি।

বর্ষাঃ তুমি কাকে পছন্দ করো? সে কি দেখতে খুব সুন্দরী? তাকে দেখাবে আমায়?

বর্ষণঃ ঠোঁট বাঁকিয়ে হেসে বলে সুন্দরী তো অবশ্যই। আমার চোখে সে তো পরী।আর তুই তাকে দেখতে চাস তো? দেখবি, দেখবি। সময় হলে ঠিক দেখতে পাবি।

বর্ষা একটু মন খারাপ করে বললো, সে কি আমার থেকেও সুন্দরী?

বর্ষণঃ হয়তোবা তাই।

এবার বর্ষা চুপ করে বসে থেকে কিছুক্ষণ পরে বললো ভাইয়া তোমরা থাকো আমি নিচে যাই।

বর্ষণঃ এখনি যাবি? আর একটু থাকবি না!

বর্ষাঃ নাহ্ আমার খুব ঘুম পেয়েছে আমি রুমে যাবো।

বর্ষণঃ ওকে চল আমিও যাই।
বর্ষাঃ না না ভাইয়া তোমাকে যেতে হবে না, আমি একা যেতে পারবো।
বর্ষণ বুঝতে পেরেছে বর্ষা রাগ করেছে। তাই বললো তোকে কখন বললাম তুই যেতে পারবিনা। আমি বলেছি আমিও যাবো।

বর্ষা বললো হ্যা সেটাই তো বলছি তুমি যাবে কেনো তুমি এখানে থাকো সবার সাথে মজা করো। তোমাকে যেতে হবে না।

বর্ষা বললো ঠিক আছে তুমি যাও আমি যাবো না বলে ছাঁদের একপাশে গিয়ে দাঁড়ায়।
বর্ষণ ও আর কিছু না বলে চুপচাপ বসে থাকে। কিছুক্ষণ পরে উঠে গিয়ে বর্ষার পাশে দাঁড়ায়।
বর্ষা একবার তাকিয়ে মুখ ঘুরিয়ে নেয়।বর্ষার এমন কান্ড দেখে বর্ষণ একটু এগিয়ে গিয়ে বর্ষার পাশ ঘেষে দাঁড়িয়ে বলে কেউ কি আমার উপর রেগে আছে?

বর্ষা বললো রাগ করতে যাবো কোন দুঃখে? বর্ষার এমন স্ট্রেটকাট কথা শুনে বর্ষণ বললো তাহলে অভিমান?

বর্ষা তখন ভ্রু কুচকে বললো অভিমানের জন্য অধিকারের প্রয়োজন।

বর্ষণঃ তারমানে কি কেউ বলতে চাচ্ছে আমার উপর তার কোনো অধিকার নেই? নাকি আমি তার কেউ না?
#তুই_শুধু_আমার_ভালোবাসা
#Hridita_Hridi
#পর্ব২২

বর্ষণঃ তারমানে কি কেউ বলতে চাচ্ছে আমার উপর তার কোনো অধিকার নেই? নাকি আমি তার কেউ না?

বর্ষণের কথা শুনে বর্ষা ঘাড় ঘুরিয়ে তাকায়। একটা তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বলে কেউ কি বলতে চাইলো বা না চাইলো তাতে কি এসে যায় বলো? কেউ কি ভাববে কি ভাবতে পারে, কেউ কিছু মনে করবে কি করবেনা এস ভাবনা বাদ দাও। এগুলো ভেবে শুধু শুধু সময় নষ্ট করোনা। বরং সেটুকু সময় তুমি তোমার পরীকে নিয়ে ভাবো৷ আমার মনে হয় সেটাই ভালো এতে তোমার শরীর মন দুই ই ভালো থাকবে।

বর্ষণঃ তুই আমার জন্য এ..তো ভাবিস! আগে জানতাম না তো!

বর্ষাঃ বয়ে গেছে আমার কারও জন্য ভাবতে হুহ্!
আমি শুধু এটাই বলতে চাই আমায় নিয়ে কাউকে ভাবতে হবে না। আর অযথা ভেবে শরীর ও খারাপ করতে হবেনা।

বর্ষণ বুকের বাম পাশে হাত রেখে ব্যাথা পাওয়ার ভান করে বলে আহ! আমায় কেউ এতো কেয়ার করে, আমার শরীর নিয়ে কেউ এতোটা ভাবে, আমার জন্য কেউ এতোটা সিরিয়াস সেটা দেখলে আমার কলিজায় কেমন কেমন একটা টান অনুভূত হয়।

বর্ষণের এমন হেয়ালিপনা কথায় বর্ষার একটু রাগ হলো। এমনিতেই বেচারি কষ্টে আছে। তার উপর আবার বর্ষণের এমন হেয়ালি, বর্ষার সহ্য হলোনা। রাগ দেখিয়ে চলে যেতে নিলেই বর্ষণ তার হাত ধরে এক টান দিয়ে বলে কোথায় যাস পরী?
বর্ষা আচমকা হাতে টান পরায় পরে যেতে নিলেই বর্ষণ আর এক হাত বর্ষার পিঠের নিচে দিয়ে শক্ত করে ধরে রাখে।
বর্ষা কিছুক্ষণ বর্ষণের দিকে তাকিয়ে থাকে বর্ষণও বর্ষার দিকে তাকিয়ে আছে। এমন মুহুর্তটাকে ক্যামেরা বন্দী করে রাখে সবুজ আর নিপু।

বর্ষণ বললো কি হলো তাকিয়ে কি দেখিস?

বর্ষণের কথায় ধ্যান ভাঙে বর্ষার। বর্ষণকে ছেড়ে সোজা হয়ে দাঁড়ায়।
বর্ষণও পান্জাবির হাতাটা ফোল্ড করতে করতে বলে এখনো ব্যালেন্স ঠিক রাখতে শিখিসনি অথচ রাগ টা তো দেখাতে পারিস খুব।

বর্ষা বর্ষণের কথায় কোনো প্রতিত্তোর না দিয়ে উল্টো প্রশ্ন করে বসে, ” তুমি আমায় কি বলে ডাকলে ভাইয়া”!

বর্ষণঃ কই কিছু বলে ডাকিনি তো?

বর্ষাঃ তাহলে যে আমি স্পষ্ট শুনতে পেলাম তুমি আমায়..
বর্ষণঃ ওহ্, ডেকেছে বুঝি! তাহলে হয়তো ডেকেছি বলেই বর্ষণ একটা রহস্যময় হাসি দিয়ে ঋতুদের কাছে চলে যায়।

বর্ষা কিছুই বুঝতে না পেরে তাকিয়ে থাকে।কিছু একটা ভেবে বর্ষা একটা হাসি দিয়ে বলে এ রহস্য তোকেই খুঁজে বের করতে হবে বর্ষা! এবার বাসায় গিয়ে মিশন শুরু করে দে।

তারপর নিপু বর্ষাকে ডেকে নিয়ে সবাই একসাথে নিচে চলে আসে।

বিয়েতে যাওয়ার জন্য সবাই সকাল থেকে খুব এক্সাইটেড শুধু বর্ষা ছাড়া। বর্ষা সকাল থেকে চুপচাপ আছে। বিয়ে বাড়ি যাওয়া নিয়ে তার কোনো মাথা ব্যাথা নেই। তাই সকালের খাবার খেয়ে আবার রুমে গিয়ে ঘুমিয়ে পরে।

এদিকে বেচারা বর্ষণ সারা বাড়িতে তার পরীকে খুঁজে না পেয়ে অস্থির হয়ে আছে। সবাই বিয়ে বাড়ি যাবে বলে রেডি হচ্ছে এদিকে বর্ষার কোনো খবর নেই।
নিপুকে গিয়ে জিজ্ঞেস করলো এই নিপু বর্ষাকে দেখেছিস?

নিপুঃ হুম দেখেছি তো। ওর রুমেই আছে ঘুমোচ্ছে।

বর্ষণঃ কিহ্! এখনো ঘুমোচ্ছে মানে টা কি! ডাকিসনি ওকে?

নিপুঃ হুম ডেকেছি। ওঠেনি বলেছে বিয়েতে যাবে না। এখন তুমি পারলে ডেকে তুলো।আমাকে আর এর মধ্যে টেনো না ভাইয়া! তোমরা দুজন যা ভালো বুঝো করো আমি যাই বলেই নিপু ছুট লাগালো।
কারণ নিপু খুব ভালো করে জানে একবার যেহেতু না করে দিয়েছে হাজারবার বলেও ওকে রাজি করানো যাবে না। যদি কেউ রাজি করাতে পারে সে হলো বর্ষণ।

বর্ষণ মাথা চুলকাতে চুলকাতে বলছে যাহ্ বাবা, এদের আজ হয়েছে টা কি? একবার নিপু বলছে যাবোনা আবার পরী বলছে যাবেনা। নিপুর না যাওয়ার কারণ টা তো জেনে ওকে রাজি করালাম কিন্তু পরীর না যাওয়ার কারণ টা কি?
ভাবতে ভাবতেই বর্ষণ বর্ষার রুমে চলে আসে। এসে দেখে এখনো ঘুমোচ্ছে বর্ষা।
ঘুম থেকে টেনে তুলে বসিয়ে দেয় বর্ষাকে।

বর্ষা বসে ঘুম জরানো কন্ঠে বলে কি হলো ভাইয়া ঘুমোতে তো দাও। রাত ধরে জেগে তো তোমার পরীর গল্প শুনেছি এখন আবার কি বলবে?

বর্ষণঃ এখন যেটা বলবো সেটা শুনতে হলে তো আগে ঘুম থেকে জাগতে হবে তোকে।

বর্ষাঃ হুম বলো আমি জেগেই আছি।

বর্ষণঃ ওয়াশরুমে গিয়ে সাওয়ার নিয়ে রেডি হয়ে নে। বিয়ে বাড়ি যেতে হবে।

বর্ষাঃ আমি যাবোনা ভাইয়া তোমরা যাও।

বর্ষার কথা শুনে বর্ষণ বললো যাবিনা কেনো? নিপু তো যেতে চায়নি ঐ খুত খুঁতে চাচির জন্য। কিন্তু তোর কি হলো?

বর্ষাঃকিছু হয়নি আমার, এমনিতেই ভালো লাগছে না তাই যেতে ইচ্ছে করছে না। তোমরা যাও আমি মামনীর কাছে থাকি।

বর্ষণঃ মানেটা কি হুম মামনির কাছে থাকবি মানেটা কি! তোকে রেখে আমি বিয়েতে যাবো? ওখানে গিয়ে সবার সাথে আনন্দ মজা করবো তাও আবার তোকে ফেলে?

বর্ষাঃ কেনো? তোমার পরী কি এটাও বলে দিয়েছে যে আমায় ছাড়া তোমার কোথাও যাওয়া চলবে না। নাকি বলেছে আমাকে এতোটা কেয়ার করতে হু..

বর্ষণঃ হ্যা বলেছে তো! আমার পরী বলেছে তোকে ছাড়া কোথাও না যেতে। যেখানে যাই সেখানেই যেনো নিয়ে যাই।

বর্ষাঃ তাহলে তো আরও ই যাবোনা। তুমি যাও তোমার পরীকে নিয়ে।

বর্ষনঃ সে যাবি কি না যাবি পরে ভাবা যাবে আগে সাওয়ার নিয়ে আয় যা বলে বর্ষণ বিছানায় বসে রইলো।

বর্ষা আর কোনো উপায় না পেয়ে ওয়াশরুমে চলে যায়। সাওয়ার নিয়ে বেরিয়ে আসে। হেয়ার ড্রায়ার দিয়ে চুল শুকিয়ে চিরুনি করছে।
….

এদিকে সবাই রেডি হয়ে ওয়েট করছে বর্ষণ আর বর্ষার জন্য। নিপুকে পাঠালো ওদের দুজনকে ডাকতে।
নিপু এসে বললো ভাইয়া সবাই তোমাদের জন্য ওয়েট করছে নিচে।

বর্ষণ নিপুকে বলে তুই যা আমি আসছি। তারপর বর্ষণ বর্ষার কানের কাছে মুখ নিয়ে বললো শোন, আমি নিচে থেকে ঘুরে এসে যেনো দেখতে পাই তুই রেডি হয়ে গেছিস। আমায় যেনো আর কিছু বলতে না হয় বলেই নিচে চলে যায়।

বর্ষা একটু সময় ভেবে নিয়ে দৌড়ে চলে যায় রেডি হতে।

বর্ষণঃ নিচে গিয়ে রাফসানকে বলে তোরা বেরিয়ে পর আমরা আসছি কিছুক্ষণের মধ্যেই।

রাফসান তখন বললো একসাথেই বের হবো তোরা আয়। আমরা ওয়েট করছি।আমি তোদের ছাড়া একা ওখানে যেতে চাইনা। তোকে আর আর বর্ষাকে ছাড়া তো নয় ই।

বর্ষণঃ দেখ রাফসান তোরা সবাই মিলে বের হতে হতে আমরা রেডি হয়ে যাবো। ভাবিদের বাসায় তোরা পৌঁছোতে পৌঁছোতে আমরাও পৌঁছে যাবো কোনো টেনশন করিস না বেরিয়ে পর।

সবাই বেরিয়ে পরলে বর্ষণ উপরে গিয়ে তো অবাক। বর্ষা রেডি হয়েছে বিয়ে বাড়ি যাওয়ার জন্য।

মেরুন কালারের গাউন পরেছে একপাশে ওড়না দিয়েছে।লম্বা খোলা চুল কিছু সামনে দিয়েছে আর বাঁকি চুলগুলো পিঠের উপর ছেড়ে রাখা চুলের একপাশে লাল গোলাপ গুঁজে রাখা। গলায় সিম্পল ডায়মন্ড নেকলেস।

বর্ষণকে দেখে বর্ষা রুম থেকে বেরিয়ে এসে সোজা গাড়িতে বসে পরে।
বর্ষণ ও হাসতে হাসতে বর্ষার পিছু পিছু গিয়ে গাড়িতে বসে।
বর্ষা সারাটা রাস্তা একটা কথাও বলেনি বর্ষণের সাথে।

লোকেশন দিয়েছে রাফসান। বর্ষণ লোকেশন অনুযায়ী পৌঁছে যায় ঈশিতার বাসায়। গিয়ে দেখে গেটে রাফসানরা সবাই দাঁড়িয়ে আছে। দেখে বোঝা যাচ্ছে এইমাত্রই এসে পৌঁছালো।
গাড়ি থেকে বর্ষণ নামতেই বর্ষাও নেমে দাঁড়ালো। বর্ষণ বললো শোন! দুরে কোথাও যাবিনা একা একা। আশেপাশেই থাকবি।
বর্ষণের কথা শুনে বর্ষা মাথা নেড়ে সায় দিলো।

সবাই ভেতরে গেলো।বর্ষা গেট দিয়ে ঢোকার সময় একটা ছেলে ওর পিছু নেয়। নাম জিজ্ঞেস করে, পরিচয় জিজ্ঞেস করে আর ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে থাকে সেটা দেখে বর্ষার অসস্থি হয় যার কারণে বর্ষা গিয়ে বর্ষণের এক হাত চেপে ধরে হাঁটতে থাকে।

বর্ষার এমন কান্ড দেখে বর্ষণ বর্ষাকে ফিসফিস করে বলে কি করছিস বর্ষা! এমন গায়ে পরে হাঁটছিস কেনো? আমার পরি তোকে সাথে নিয়ে আসতে বলেছে কিন্তু তোকে নিয়ে এভাবে হাঁটতে বলেনি।

চলবে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here