তুমি হলেই চলবে পর্ব -০২+৩

#তুমি_হলেই_চলবে
#part_2+3
writer: #Mahira_Megha

সকালে

সবাই ব্রেকফাস্ট করছে। আরিয়ান সোফায় বসে ফোন চাপছে।
আর্শঃ এই রুহি টা তো এখনো এলো না। কলেজে ভর্তি হতে যাবো তো। আমি গিয়ে ডেকে নিয়ে আসি।
আবরারঃ খাওয়া ছেড়ে উঠতে হবে না। আরিয়ান যাও আরুকে ডেকে নিয়ে এসো।

আরিয়ান আবরারের মুখের ওপর কিছু বলতে পারলো না। মনে মনে হাজারো রাগ নিয়ে চলে গেলো আরুহীর রুমে। দরজা খোলা থাকার পর ও দরজায় টোকা দিলো। বাট আরুহীর যা ঘুম, দরজার শব্দ কেনো পুরো দরজা ওর ওপর পরলেও ঘুম ভাঙ্গবে না।

উপায় না পেয়ে আরিয়ান রুমে ঢুকে যায়।আরুহীকে অনেক বার ডাকা শর্তেও আরুহীর কোনো হেলদোল নেই। ঘুমের ঘোরের বলছে আর্শ বিরক্ত করিসনা ঘুমাতে দে। আরিয়ান এবার নিজের রাগ কন্ট্রোল করতে না পেরে এক গ্লাস পানি আরুহীর মুখের ওপর ছুড়ে মারে।
আরুহী ধরফরিয়ে ঘুম থেকে উঠে “আর্শের বাচ্চা “বলেই সামনে তাকায়। চোখে পানি থাকায় সব কিছু ঝাপসা দেখাচ্ছে, হাত দিয়ে পানি মুছে সামনে রাগে লাল হওয়া আরিয়ানকে দেখতে পায়।
আরিয়ান রাগি গলায় বলে ওঠে ” তুমি কি সুস্থ মানুষ নাকি মানসিক সমস্যা আছে? 10 টা বাজে আর এখনো ঘুম থেকে উঠোনি। আমাকে আসতে হলো এখানে। আমি কি করে বললে বুঝতে পারবে সবাই আমি মেয়েদের হেইট করি। আর তুমি তো আলাদা এক পিস। হা করে কি দেখছো?”

আরুহীর কানে কোনো কথায় পোঁছাই নি। আরুহী আরিয়ানকেই দেখছে। মনে মনে “ব্লাক টিশার্টে এত ভালো লাগছে কেনো তোমায় আরিয়ান ভাইয়া। উফফ মনে হচ্ছে চকোবার আইসক্রিম এখনি খেয়ে ফেলি। ”

আরিয়ান কি করবে বুঝতে না পেড়ে জগটা হাতে নিয়ে সব পানি আরুহীর ওপর ফেলে দিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে আসে।

আরুহী মুখে একটা হাসি ফুটিয়ে ” আরিয়ান ভাইয়া কাজ টা খুব ভালোই করলো এবার আমি একবারে গোসল করে নিচে যাবো। হাহাহা এত সুন্দর কেনো তুৃমি। তোমার রুপেই আমি মুগ্ধ।

আর্শ আরুহী কলেজ থেকে ফেরার পথে কয়েকটা ছেলে রাস্তা আটকায় ওদের। আরুহীর দিকে তাকিয়ে ” কি সাহস এই মেয়েটার আমায় মেরেছিলো আজ কি করবি মেরে দেখা আজ 10 জন আছি আমরা। ”

আরুহী একটা হাসি দিয়ে ভাব নিয়ে দাড়ায় ” তোদের মারা আমার বা হাতের খেলা। এমন মার মারবো সোজা হয়ে দাড়াতে পারবি না। ”

সবাই হাহা করে হাসছে আরুহীও ওদের সাথ মুখ ভ্যাঙ্গাতে লাগলো।

ছেলেগুলো হাসি থামিয়ে চোখ মুখ শক্ত করে তাকালো।
আরুহীঃ আহা বেচারা ছেলেগুলো কত অবুঝ তাইনা। আর্শ আরুহীর দিকে তাকিয়ে হাসছে দুজন হাইফাই দিলো।
আরুহী পকেটে হাত গুজে ওলে বাবা লে আমার এলাকায় আমায় মারতে এসেছো তাইনা কথাটা এমন ভাবে বললো যেনো ছোট বাচ্চাদের বলছে।
এবার একটু স্টাইল নিয়ে বললো” পেছনে তাকা “।

পেছনে 20 জনের মতো ছেলে হাতে ব্যাট আর স্ট্যাম্প নিয়ে দাড়িয়ে আছে আরুহী একবার বললেই উদোম কেলাবে।

আরুহী স্টাইল করে ” এইটা আমার এলাকা। নতুন বলে ছেড়ে দিলাম আবার যদি লাগতে আসিস, ছমাসে হাসপাতাল থেকে বাড়ি যেতে পারবি না। ”

ছেলেগুলো ভয় পেয়ে চলে যায় ।

আরুহী সবার দিকে তাকিয়ে ” মাঠে দেখা হবে বিকেলে। ”
চল আর্শ বাড়ি যাওয়া যাক।

বাড়ি ফিরে ফ্রেশ হয়ে ছাদে যেতেই আরিয়ানকে দেখতে পায় দোলনায় বসে কফি খাচ্ছে।
আরুহী ওখানেই স্ট্যাচু হয়ে দেখছে সবটা। মুগ্ধ নয়নে আরিয়ানে দিকে তাকাচ্ছে। আরিয়ান কফি মগ দোলনায় রেখে ছাদের রেলিংয়ের কাছে যায়।

আরুহী ওর চেহারা দেখতে না পেয়ে কোমরে হাত গুজে বলে ওঠে ” ভাইয়া ওখানে কেনো দাড়ালে আমি তো তোমায় দেখতেই পাচ্ছি না। ”
আরুহীর কথায় পেছনে ফিরে তাকায় আরিয়ান। আরুহীকে দেখতেই মুখটা নিমিষেই লাল হয়ে যায় আরিয়ানের।

আরিয়ান রাগি ফেসে আরুহীর সামনে এসে দাড়ায়। আরুহী নিজের চোখ বন্ধ করে ফেলে, এই লোকটাকে বিশ্বাস নেই কখন যে কি করে বসে।

তখনি ছাদে আসে আর্শ। আরিয়ান কিছু বলতে চেয়েও বললো না। ছাদ থেকে নেমে যায়।

আরিয়ানকে দেখে যদিও ভয় পেয়ে ছিলো আরুহী বাট ওর চলে যাওয়াতে মনের কোনে কালো মেঘ জমতে শুরু করেছে।
আর্শঃ কিরে স্ট্যাচু হয়ে দাড়িয়ে আছিস কেনো?
আরুহী কোনো কথা না বলে দোলনায় বসে। তারপর আর্শের দিকে তাকিয়ে ” তুই বল আর্শ আমি কি দেখতে খারাপ? ”
আর্শ মুগ্ধ নয়নে কিছুখন তাকিয়ে থেকে মনে মনে বলে ” তুই তো আমার কাছে সবচেয়ে সুন্দর। আমার ফাস্ট লাভ। ”

আরুহীঃ ধুর তোকে কেনো বলছি আমি তো অনেক জোশ। বাট ওই মালটা কেনো এমন করছে আমার সাথে বলতো?

আরুহীর কথায় ঘোর কাটিয়ে আর্শ বলে ওঠে ” কার কথা বলছিস তুই? পাগল হলি নাকি? আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না।”

আরুহীঃ আছে একজন তোকে বলা যাবে না।
-কি এমন কথা যে তুই আমায় বলতে পারবি না। রুহি আমি না তোর বেষ্ট ফ্রেন্ড তুই আমাকেও বলবি না?
ভুলে গেলি আমাদের ডিল কেও কাউকে মিথ্যা বলবো না আর কেউ কারো কাছ থেকে কিছু লুকাবো না। ”

– হুমমমম তোর থেকে আমি লুকাতেও পারবো না।
চোখ বন্ধ করে 1 সেকেন্ডে বলে দিলো,” আর্শ আমি না একজন কে ভালোবাসি। ”

আর্শ দোলনা থেকে উঠে পাগলের মতো হাসছে, “তুই আর ভালোবাসা হাহাহাহা”।

আরুহী আর্শের দিকে তাকিয়ে ” এই একদম এই রকম করবি না। আই এম সিরিয়াস। ”

-তুই এই অব্দি কত জনের ওপর ক্রাশ খেয়েছিস বলতো?
আরুহী মুখ গোমরা করে ” বাট আর্শ ”
পুরো কথা টা শেষ করতে না দিয়ে আর্শ বলে উঠলো “কাউন্ট কর। আরে কর, হাতে কাউন্ট কর। আরে এতো গুলো তো আঙ্গুল ও নেয়। ”

আরুহী আর্শের দিকে তাকিয়ে ” এটা সবার থেকে আদালা। আমি ওকে ফিল করছি আর্শ। ওর সব কিছু আমার ভালোলাগে। আই ফিল ইন লাভ আর্শ। “আর ওগুলো তো শুধু ক্রাশ ছিলো। দেখে ভালো লেগে ছিলো তাই বলেছিলাম। কখনো ফিল করি নি।

-কয়দিন পর সব ভালোবাসা জানালা দিয়ে পালাবে।
-হেসে নে। আমি ও আরুহী। আমি লাইফে ফাস্ট টাইম কারো প্রেমে পড়েছি। তোকে দেখিয়ে দেবো ভালোবাসা কাকে বলে। কথাটা শেষ করে ছাদ থেকে নেমে যাওয়ার জন্য সিড়ির দিকে পা বাড়ালো।

আর্শ হাসতে হাসতেই বললো” নাম কি ছেলেটার। রুহি নাম তো বলে যা। ”

আরুহী থেমে পেছনে ফিরে তাকায়, মুখে এক টুকরো হাসি এনে বলে উঠে ” যেদিন আমাদের বিয়ের ডেট ঠিক হবে সেদিন বলবো। ” কথাটা শেষ করে সিড়ি বেয়ে নামতে লাগলো আরুহী।

আর্শঃ ” পাগল একটা। আবার বিয়ের কথা বলছে। হাহাহা এই পাগল টাকেই আমি সব থেকে বেশি ভালোবাসি। আচ্ছা নিজের ভালোবাসার মুখ থেকে অন্য কারো নাম শুনলে সবার তো কষ্ট হয় তাইনা? তাহলে আমার হাসি কেনো পাচ্ছে?
একটু ভেবে আর্শ বলে ওঠে “কারন আমার রুহি সবার থেকে আলাদা। কখন কি বলে নিজেও জানে না।”

আরিয়ানঃ আই হেইট গার্লস। আমি মেয়েদের সহ্য করতে পারি না। আমি ওই বেহায়া মেয়েটার থেকে যত দুরে থাকতে চায় তত ও আমার কাছে আসে। আমি কি করলে ও বুঝবে আমি শুধু ওকে না আমি কোনো মেয়েকেই সহ্য করতে পারিনা।

আরুহীঃ তুই বিশ্বাস না করলে না কর।বাট আমি জানি আমি সত্যি ভাইয়ার প্রেমে পড়েছি। আমি আগে কখনো এমন ফিল করিনি। ভাইয়ার সবটা মিলিয়ে আমার ওকে ভালো লাগে। যদিও আমার সাথে ভাইয়া সব সময় খারাপ বিহেভ করে। তবুও আমি ওর ওপর রাগ ই করতে পারি না। ওই ফেসটা দেখলেই আমি সব ভুলে যায়। জানি না এ কোন মায়ায় পড়েছি আমি। বাট হ্যাঁ এই অনুভতিটা সব থেকে সুন্দর।

চলবে…….

( ক্যারেক্টার গুলো নিয়ে কিছু কথা
আরুহী ক্যারেক্টার টা একটা নির্লজ্জ মেয়ে। যে পাড়ার ছেলেদের সাথে ক্রিকেট খেলে আর মারামারি করে। মেয়েটা কোনো কাজ করার আগে বা কিছু বলার আগে কিছু ভাবে না। মনে যা আসে তাই বলে। ওর মধ্যে আছে প্রচুর বাচ্চামি। নিজের আবেগ লুকাতে পারে না।

আর্শ, যে আরুহীর সব বাচ্চামির সঙ্গি,আরুহীর বেষ্ট ফ্রেন্ড। ও সব সময় আরুহীর মুখে হাসি দেখতে চায়। আরুহী কে সব বিপদ থেকে আগলে রাখতে চায়।

আরিয়ান, যে খুব রাগি। মেয়েদের একদম সহ্য করতে পারে না।)

( অনেকের প্রশ্ন, একটা ছেলে সুন্দর বলেই প্রেমে পরে যেতে হবে? প্রথমত আরুহী ওর ওপর ক্রাশ খায় ফাস্ট টাইম দেখে। দ্যান কিছুদিন পর রিয়েলাইজ করে ইটস লাভ। আর লাইফে অনেক ছেলেদের সাথে দেখা হয় অনেকে দেখতে হিরোদের মতো বাট সবার ওপর ফিলিংস আসে না। কোনো নিদিষ্ট একজনের ওপর ই আকৃষ্ট হয়।
আরুহীর সাথে ও তাই হয়েছে আরিয়ানকে প্রথম দেখায় ওর অন্যরকম ফিলিংস হয়েছে যা আগে কখনো হয় নি।
আর লাভ এট ফাস্ট সাইড বলে ও তো কিছু আছে তাই না?)

আশা করছি সবার ভালো লাগবে। হ্যাপি রিডিং।

#তুমি_হলেই_চলবে
#part_3…
writer : #Mahira_Megha

সূর্যের কিরন মুখে পড়তেই ঘুম থেকেই নাক মুখ কুচকে ফেলে আরুহী। হাত পা ছড়িয়ে আড়মোড়া ভেঙ্গে উঠে বসে বিছানার ওপর। চোখ বন্ধ রেখে মুখের কোনে মিষ্টি হাসি ফুটিয়ে তোলে। চোখ গুলো বড় বড় করে খুলে একলাফে নামে বিছানা থেকে। ওয়াশ রুম থেকে বেরিয়ে লাফাতে লাফাতে ড্রইংরুমের দিকে পা বাড়াচ্ছে আরুহী মুখে লেগে আছে মিষ্টি হাসি।

হঠাৎ করেই আরিয়ানে সাথে ধাক্কা খেয়ে একটু পেছনে সরে গেলো আরুহী।
মাথা তুলে সামনে তাকাতেই দেখতে পেলো আরিয়ানের গম্ভীর মুখ। আরুহী চোখ দুটো গোলগোল বানিয়ে পলকহীন ভাবে চেয়ে আছে আরিয়ানের দিকে। সাদা শার্ট পরে আছে হাতে কালো কোট।
আরিয়ানের কাছে সবচেয়ে বিরক্তি কর বিষয় আরুহী।আরুহীর এই বেহায়ার মতো তাকানো। সকাল সকাল আরুহীর সাথে কথা বলে মুড স্পয়েল করার কোনো ইচ্ছাই নেয় আরিয়ানের।
আর এক মূহুর্ত না দাড়িয়ে ড্রইংরুমের দিকে পা বাড়ালো।

আরুহী এখনো ঘোরের মধ্যেই আছে। এ যেনো এক অন্য রকম অনুভূতি যা এই নির্লজ্জ মেয়েটাকে আরো নির্লজ্জ করে দিয়েছে।
আরিয়ান তো সেই কখন চলে গেছে বাট আরুহী এখনো দাড়িয়ে আছে সেম পজিশনে।

আর্শ আরুহীকে এভাবে দেখে ওর সামনে চুটকি বাজিয়ে ” কি রে কি করছিস এখানে একা একা। ”
-দাড়িয়ে আছি দেখতে পারছিস না।
-হুমমম তা তো দেখতেই পাচ্ছি। তা কি ভাবছিলি দাড়িয়ে। ওয়েট ওয়েট তোর ব্যাপার কি বলতো, কয়দিন ধরে দেখছি সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে পড়িস।

-তুই বুঝবি না। ইটস লাভ।
-লাভ হাহাহাহা তুই তো দেখি লায়লি কেও হার মানাবি। হাসি আটকিয়ে ” শোন রুহি আবেগ কে বেশি বাড়তে দিস না পরে নিজের ওপর ই রাগ হবে।” মাথা থেকে সব ঝেড়ে ফেল কোনো ভালোবাসা নেই সব তোর আবেগ, বুঝলি।

আরুহী মনে মনে বললো “আবেগ, আবেগ কি করে হয় এটা তো ভালোবাসা। লাভ যদি না ই হতো তাহলে কি আমি এত সকালে ঘুম থেকে উঠতাম? আমি সকালে ভাইয়াকে একবার দেখার জন্য উঠি। ভাইয়া যে সকালে অফিসে চলে যায়। ”

আর্শ ওর সামনে চুটকি বাজিয়ে ” কিরে আবার কই হারিয়ে গেলি। ”
আরুহী আর্শের দিকে তাকিয়ে কোনো কথা না বলে এক দৌড়ে ড্রইংরুমে চলে এলো, সোফায় বসে টিভি অন করলো।বাট চোখ শুধু আরিয়ানের দিকে টিভিতো শুধু সবার মাইন্ড ডাইভার্ট করার জন্য।

কেউ লক্ষ্য না করলেও আরিয়ান ঠিকি বুঝতে পারছে।
আরিয়ান খাওয়া বন্ধ করে একবার আরুহীর দিকে তাকালো তারপর মনে মনে বলতে লাগলো “খেতে বসে ও শান্তি নেই। এই বেহায়া মেয়েটার হাত থেকে যে কিভাবে মুক্তি পাবো কে জানে? একটা মেয়ে এতটা নির্লজ্জ কি করে হতে পারে। ”

আর্শ আরুহী রিক্সা করে কলেজ যাচ্ছে। আর্শের বাইকটা হঠাৎ খারাপ হওয়ায় গ্যারাজে রেখে এসেছে।

কলেজে প্রথম দিন আজ ওদের।

সবাই শাড়ি পরে এসেছে বাট আরুহী আর্শের সাথে ম্যাচিং করে শার্ট পরে এসেছে।
তানিয়া মুনিয়া দুই বোন আর্শকে সেই স্কুল লাইফ থেকে লাইক করে। আর করবেই না বা কেনো স্কুলের সবচেয়ে সুন্দর ছেলে হওয়ার পাশাপাশি ফাস্ট বয় ও ছিলো আর্শ। টিচার রাও আর্শকে অনেক স্নেহ করে। আর মেয়েদের কথা তো বাদ ই দিলাম।

আর্শের দিকে এগিয়ে এসে তানিয়া বললো ” আর্শ তোমাকে অনেক সুন্দর লাগছে “।
-থ্যাংকস।
মুনিয়াঃ চলো আর্শ একসাথে অনুষ্ঠান দেখি।
-ওই তোদের সাথে কেনো অনুষ্ঠান দেখবো আমরা। একা দেখতে কি তোদের কষ্ট হয় নাকি রে।
-দেখ আরুহী আমরা কিন্তু ভালোভাবে কথা বলছি। তুই এমন রুডলি বিহেভ কেনো করছিস।
-এখন তো শুধু রুডলি বিহেভ করছি। একটু পর যখন তোর নাকে ঘুসি মেরে নাক ফাটিয়ে দিবো তখন কি করবি?বল বল।
তোদের মতলব বুঝিনা আমি? আর্শের সাথে বন্ধুত্ব করতে চাস তাই না।

-তুই কি নাক ফাটাবি দাড়া আমরা দুজন তোর নাক ফাটাবো।
-তাই নাকি রে আয় তবে, দেখি কেমন পারিস।

আর্শ বুঝতে পেরেছে এদের এখনি আটকাতে না পারলে প্রথম দিন ই কলেজ থেকে বের করে দিবে। আরুহীর কোমর ধরে টেনে নিয়ে আসে আর্শ আরুহী এগোতে চেয়েও পারে না।

আরুহীঃ ওই আর্শ আমায় এভাবে নিয়ে আসলি কেনো। আমার শত্রু কিনা তোর বন্ধু হতে চায়। এমন মার মারবো।
– বাদ দে তো ওদের কথা।
– না আমি পারছি না।
আর্শ একটু ভেবে ” তোর সেই ক্রাশ বয়ের নাম টায় তো বললি না। ”

-ধুর শুনে কি করবি মাল টাকে আমিই শুধু ভালোবাসি। ও তো আমাকে পাত্তাই দেয় না। আমি যেন ওর জন্মের শত্রু। আমার ফিলিংসের কি কোনো দাম নেয়।

আর্শঃ আমার চোখের দিকে তাকা।
– কি বল।
-ওকে দেখলে তোর কি মনে হয় রুহি।
আরুহী চোখ বন্ধ করে বলে ” কি মনে হয় তা জানি না। বাট অদ্ভুদ একটা অনুভূতি হয়। যা আগে কখনো হয়নি। ওর মুখে না অন্যরকম মায়া আছে। মনে হয় ওর দিকে তাকিয়েই থাকি।

আর্শ একটা ঘোরের মধ্যে চলে যায় নিজের মনেই বলতে থাকে ” সত্যি কি রুহি প্রেমে পরেছে? সত্যি কি ও কাউকে মন থেকে ফিল করতে শুরু করেছে? সত্যি কি ও কারো মায়ায় পরে গেছে? যদি তাই হয় তাহলে আমার কি হবে!আমি যে রুহিকে পাগলের মতো ভালোবাসি।

আরুহী চোখ খুলে “আর্শ ডান্স হচ্ছে তো চল তারাতারি ” বলেই আর্শের হাত ধরে ছুটছে। আর্শ অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে হাতের দিকে। মনে মধ্যে তোলপাড় হচ্ছে।
” তবে কি রুহি সত্যি আমায় একা ফেলে চলে যাবে?”

আরুহীঃ কিরে আর্শ কি ভাবছিস? কেমন যেনো দেখাচ্ছে তোকে।
-না কিছু না। তুই অর্ডার দে না কি খাবি বল।

আরুহী খাচ্ছে তখনি সামনে আরিয়ানকে দেখতে পায়।
হা করে তাকিয়ে আছে আরিয়ানের দিকে।

মুনিয়াঃ কিরে আরুহী কাকে দেখছিস? এই হ্যান্ডসাম ছেলেটাকে?
তানিয়াঃ দেখে আর কি লাভ ওই ছেলেতো ওকে পাত্তাই দেবে না।
মুনিয়াঃ আরে পাত্তা কি বলছিস ও তো কনফিউজ হয়ে যাবে এটা ছেলে নাকি মেয়ে এটা ভেবেই।
বলেই দুজন হাইফাই দিলো।

আর্শ কিছু বলতে গেলে ওকে থামিয়ে দিয়ে আরুহী হাসতে লাগলো।
মুখে দুষ্টু হাসি এনে ” তোরা তো মেয়ে আর খুব সুন্দর ও। তাই না?
একটু স্টাইল নিয়ে ” লাইফে প্রথম তুই ঠিক বললি আরুহী। ”
-তাহলে তোরা যা, কথা বলে দেখা ওই ছেলের সাথে।
-চ্যালেঞ্জ করছিস?
-হ্যা করছি।

তানিয়া মুনিয়া ওভার কনফিডেন্স নিয়ে আরিয়ানে সামনে দাড়ালো।

আরুহীঃ যদি ভাইয়া ওদের সাথে ভালো ভাবে কথা বলে তাহলে বুঝবো আমায় ভাইয়া সহ্য করতে পারে না। আর যদি রুডলি বিহেভ করে তাহলে বুঝবো ভাইয়ার মেয়েতে এ্যালার্জি আছে।

মুনিয়াঃ হাই,,,,,

চলবে…………..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here