#তোমার_নেশায়_আসক্ত
#part:5
#Suraiya
আরিশ আর সানা বাড়ি পৌঁছে যেতেই সানা ঘখন ওর নিজের রূমের দিকে যাচ্ছিল তখন আরিশ সানাকে ডাকলো,,,,,,,,
সানা: ভাইয়া কিছু বলবি?
আরিশ : আজকে তোর ফ্রেন্ড এর গায়ে হলুদ তো তুই তো একটু পরেই যাবি তাই এই প্যাকেটটা তোর ফ্রেন্ড কে দিয়ে দিস ৷
সানা : কিন্তু ভাইয়া তুই এটা কখন কিনলি আর আমাকে তো বলিস নি !
আরিশ : আরে রিং কিনতে গিয়ে মনে পড়ে গেল যে তুই আজকে গায়ে হলুদে যাচ্ছিস তাই খালি হাতে যাওয়া যায় না সেই কারণে এই শাড়িটা নিলাম আর আমার বেশ পছন্দ ও হলো শড়িটা ৷
সানা : ওকে ভাইয়া ৷ আর ভাবীর জন্য?(চোখ মেরে)
আরিশ : তোর ভাবী অনেক special তাই special কিছুই করব 👽 ৷
সানা: ভাবীর সাথে আলাপ করাবি কবে?
আরিশ: পরশু দিন যখন বাড়িতে নিয়ে আসব তখন ই দেখতে পাবি ৷
সানা : কিন্তু পরশু তো আরুর বিয়ে তাহলে আমি তো বাড়ি থকব না ৷
আরিশ: সারপ্রাইজ ৷
সানা: ওকে ,ওয়েটিং ফর ইউর সারপ্রাইজ৷
আরিশ: রহিম চাচা কে বলিস তোকে ঠিক পৌঁছে দেবে টাইমে ৷
সানা: না চিন্তা করিস না , আব্বু মা সকলেই যাবে ৷ তোকেও ইনভাইট করেছিল ,কিন্তু আমি তোকে যাওয়ার জন্য বলিনি,তার কারণ এমনিতে তোকে বললে তুই যেতিস না বেকার বলে আমার মুখ নষ্ট ৷এই বলে সানা শাড়ির প্যাকেটটা হাতে ধরে ঘরের মধ্যে চলে গেল ৷
আরিশ : নিজের বিয়েতে আমার বউ নিজেই আমাকে ইনভাইট করেছে আর তা আমি কি করে না যেয়ে থাকতে পারি ৷
বিয়েটা প্রথমে কেমনজানি খাপছাড়া খাপছাড়া লাগছিল তবে এখন বাবা আর মা যে আজকে যাচ্ছে বিয়েতে টা ফাইনালি ফুলফিল ৷ ডেভিল মার্কা হাসি দিয়ে…..
আরু অনেকবার আহানকে কল করার চেষ্টা করছে, বারবার কল নট রিচেএবেল বলছে ৷ এমনিতেই সকাল থেকে মন খারাপ তার উপরে আহান আসবে না বলেছে, এই ঘটনাটা আরুকে আরো বেশি কষ্ট দিচ্ছে ৷
আরূশী বারবার আহানকে কল করার চেষ্টা করছে তখনই দৌড়ে এসে সানা আরুশির গলা জড়িয়ে ধরলো ৷
আচমকা এমনটা হওয়ার কারণে আরূ বেশ চমকে গেল ৷
সানা: জানু সারপ্রাইজ!
আরূ 🙁 রেগে গিয়ে )একটা থাপ্পর দিব,এটা কোন আসার সময়? আর এরকম করে কেউ ভয় দেখায়? আমি ভয় পেয়ে গেছিলাম, আর কিসের সারপ্রাইজ এটা? তোকে আমি আরো আগে আসতে বলেছিলাম আর তুই এখন আসছিস? বরং উল্টো আমার দুঃখটা বাড়িয়ে দিলি ৷
সানা: সরি জানু, আমি চেষ্টা করেছি তাড়াতাড়ি আসার কিন্তু তুই তো জানিস আম্মু তোকে কত ভালোবাসে তাই তোর জন্য এটা-সেটা বানিয়ে আনতে গিয়ে দেরি হয়ে গেছে , আর তাছাড়া বাপিও অফিসে ছিল তার জন্য ৷ যদিও বা ভাইয়া অফিসে থাকলেও কাজের প্রেসার টা একটু কমেছেও তাও সব টা তো ওর উপর ছেড়ে দেয়া যায় না তাই না!
আরিশ অফিসে জয়েন করেছে শুনে আরূ খুব অবাক হল ৷
আরূ আমতা আমতা করে বলল : তোর ভাইয়া অফিস জয়েন করেছে?
সানা : হ্যারে , আমিও বিশ্বাস করতে পারছি না ৷ কত নতুন নতুন পরিবর্তন হচ্ছে ভাইয়ার মধ্যে ৷
প্রথমত ,,,ভাইয়া অফিস যাচ্ছে, আর
দ্বিতীয়তঃ ভাইয়ার একটা গার্লফ্রেন্ড রয়েছে যা এতদিন বাদে আজকে আমি জানতে পারলাম ৷
আর তৃতীয় : ভাইয়া নাকি কালকে কিছু একটা করবে সেটা কি ধামাকা টাইপের হবে ৷
আমি কিছূ জিজ্ঞাসা করতেই আমাকে বলল যে সেটা নাকি সারপ্রাইজ ৷
সানার কথা আরুশি যতই শুনছে ততই যেন বারবার ওর বুকটা মোচড় দিয়ে উঠছৈ ৷ কারণ আরিশ যে সত্যিই বড় কিছু একটা ঘটাবে সেটা আরু বেশ ভালই বুঝতে পারছে ৷
আরুর ভাবনা ভাঙিয়ে সানা বলতে লাগল….
সানা: দেখেছিস তো কথায় কথায় ভাইয়ার দেওয়া গিফটটাই তোকে দিতে ভুলে গেছি ৷ ভাইয়া অনেকবার বলেছে যেন মনে করে ওটা তোকে দিয়ে দিই ৷
আরুশি : কিসের গিফট ?কাঁপা কাঁপা গলায় ৷
সানা : ভাইয়া তোর গায়ে হলুদের জন্য একটা শাড়ি পাঠিয়েছি ৷ অন্য দিন পরে নিস ৷আচ্ছা এবার এটা ধর ৷
আরুর হাতে সানা যখন শাড়িটা দিল আরুশির হাত তখন অলরেডি কাপাকাপি শুরু হয়ে গেছে ৷ শাড়িটা নেওয়ার সাহস পাচ্ছে না কারণ শাড়িটা নিলেই ওকে যে শাড়িটা পরতে হবে সেটা ও ভালোই জানে এটা আরিশের অর্ডার , আর শাড়িটা না পড়লে আরিশ নিজে পরিয়ে দেবে ৷ আর অভ্রের বাড়ির দেওয়া শাড়ি খুলে যদি অন্য শাড়ি পরতে হয় তো সেটা নিয়ে হাজার কথা উঠবে ৷ তবে যা খুশিহয়ে যাক আরু শাড়িটা কোনভাবেই পরবে না….
সানা : তুই একটু ওয়েট কর আমি আম্মুকে ডেকে আনি ৷
আরোশী : আচ্ছা ঠিক আছে যা তবে তাড়াতাড়ি আসবি ৷
সানা: ওকে ৷
____________
আরূ শারিটা নিয়ে বসে বসে ভাবছে যে কি করা যায় এখন ৷ তখনই ওর মাথায় এলো একটা প্ল্যান ৷ কোন রকম আর দেরি না করে টেবিলের উপরে থাকা কাচিটা নিয়ে শাড়িটার ঠিক মাঝখানে এমন একটা অংশে কাটলো যাতে শাড়িটা পড়লে শরীরের বিভিন্ন অংশ দৃশ্যমান হয় ৷
ওর যা ভাবা তাই কাজ ৷
তাড়াতাড়ি শাড়িটা কাটলো কাচি দিয়ে ,অল্প ই কাটল না হলে আরিশ সন্দেহ করবে ওকে ৷
কাটা শাড়ি আরিশ নিশ্চয়ই আরু কে পরতে বলবে না ৷
তখনই আরিশের কাছ থেকে কল এল, ৷ আরিশের থেকে কল আসবে আরু সেটা জানত কিন্তু তা যে তৎক্ষণাৎ আসবে সেটা ও আন্দাজ করতে পারেনি৷
তবুও অনেকটা সাহস নিয়ে ফোনটা ধরল….
আরিশ : শাড়িটা পরেছে আরুপাখি ?
আরুশি কিন্তু কিন্তু করে : আসলে হয়েছে কি শাড়িটার না মাঝখানে কাটা আছে , তাই ওটা কোনোভাবেই পরা যাবে না ৷
আরিশ ভ্রু কুঁচকে বললো : ওহ রিয়েলি ! তা আমি যখন কিনে আনলাম তখন তো ছিল না ৷
আরোশী : আপনি বিশ্বাস করছেন না কেন ,শাড়িটা পরা যাবে না ৷
আরিশ: সেটা ছেড়া হোক আর যাই হোক শাড়িটা ভালোই ভালোই পরে নাও না হলে আমি পরালে আশা করি ব্যাপারটা ভালো হবে না ৷
আরিশের সাথে আরু কথা বলছে তখনই তিথি ঘরে ঢুকলো ৷ ঘরে ঢুকতেই আরুকে ফোনে কথা বলতে দেখে তিথি বলে উঠলো,,,,,
তিথি: জিজুর সাথে কথা বলছিস নাকি?
আরিশ ফোনের ওপাশ থেকে আরূকে বলল : তিথিকে বল হ্যাঁ জিজুর সাথেই কথা বলছি ৷
আরূ তাউ কিছু বলছে না চুপ করে আছে দেখে আরিশ জোরে ধমক দিয়ে বলল: বল হ্যাঁ ৷
আরুশি চমকে উঠে তিথির দিকে তাকিয়ে বলল : হ্যাঁ হ্যাঁ !
তিথি : তুই এত ভয় পাচ্ছিস কেন আরূ , আর এরকম ঘামছিস ই বা কেন ?
ফোনের ওপাশ থেকে আরিশ বলল : সত্যিই তো ! তুমি এত ভয় পাচ্ছো কেন ? এখনই ভয় পেয়ে গেলে পরে তো আমার কাছেই আসবে না , তখন তো আমাকে বিবাহিত হয়েও bachelor হয়ে থকতে হবে ৷ বলে হাসতে লাগল ৷
আরু: আমি এখন রাখছি ৷
আরিশ: সে রাখতে চাইলে রাখো ,তবে আমি কিন্তু আসছি ৷ এসে যদি দেখি যে শাড়িটা পরোনি তো খুব খারাপ হবে ৷
আরোশী তাড়াতাড়ি করে ফোনটা কেটে দিলো কারণ তিথি বা সানা যদি আরিশের কথাটা জানতৈ পেরে যাই তো খারাপ একটা ব্যাপার হবে ৷
___________
অনেকক্ষণ ধরেই আরু বসে আছে অভ্রের পাশে ৷ গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান এখনো শুরু হয়নি ৷
অভ্র ফিসফিস করে আরুর কানের কাছে গিয়ে বলল,,,,,
অভ্র : লুকিং সো হট বেবি ৷
আরু : প্লিজ ভদ্রভাবে কথা বললেন ৷(বিরক্তি বোধ করে)
অভ্র: এতে খারাপের কি আছে ? তোমাকে যে রকম লাগছে সেরকমই ই তো বলছি, আর একটা যাসট কমপ্লিমেন্ট ইউ নো ৷
আরু আর কোন কথা বাড়ালো না অভ্রের সাথে ৷ ও জানে অভ্রর সাথে কথা বাড়ালে কথা আরো বাড়বে….
চারিদিকে বক্স বাজছে , গান হচ্ছে ৷ তিথি , সানা তার সঙ্গে আরুর সমস্ত কাজিন রাও আছে, আনন্দ করছে সবাই ৷ আর আরিশের মা দূরে দাঁড়িয়ে আরুর মায়ের সঙ্গে কথা বলছেন ৷
আরিশের মা আরূকে খুব ভালবাসেন, নিজের মেয়ের মতোই মনে করেন তিনি আরু কে ৷ আরিশের সাথে আরুর বিয়ের কথাটা উনি ভেবেছিলেন তবে তার আগেই অভ্রের সাথে বিয়েটা পাকা হয়ে যাই ওর ৷
অনুষ্ঠানে এখনো শুরু হয়নি কারণ আরুর বাবা এখনও এসে পৌছালো না ৷
সানা আরু আর অভ্রের হাত ধরে ওদের মাঝখানে নিয়ে আসলো ৷ ওদের সঙ্গে গানের তালে অভ্র নাচতে লাগলো আর আরুকে অনেক জোর করেছে ,কিন্তু কেউ নাচাতে পারেনি ৷ এমনিতেই ওর মন মেজাজ ভালো নেই ৷
হঠাৎ করে নাচের মাঝে অভ্র এসে আরুর পেটে ওর হাতটা স্লাইড করতেই আরু দূরে সরে গেল ,তখন ওয়েটারের সাথে আরূর ধাক্কা লেগে সমস্ত ড্রিংকস আর জুস গুলো আরুর শাড়ির উপরে পড়ে গেল….
ওয়েটার : সরি সরি আপু দেখতে পাইনি ৷
আরুশি: ভাইয়া ইটস ওকে, আর আমিও দেখতে পাইনি আপনি আসছেন ৷
অভ্র: ইটস ওকে মানে ! এই ওয়েটার আপনি কেন ওর গায়ে ফেলবেন জুসটা , দেখে চলতে পারেন না?
অভ্র আরো বাজে কথা ওয়েটারকে সোনাতে লাগল ৷আরু কখনও ভাবতে পারেনি যে অভ্র এরকম একটা আচরন করবে ৷
তবে ওয়েটারটা আশা করি অভ্রের কথায় কিছু মনে করবে না কারন আরিশ আরুর গায়ে জুসটা ফেলার জন্য ওয়েটারকে ভালো আ্যমাউণ্ট এর টাকা দিয়েছে ৷
সানা : আরু তুই ড্রেসটা চেঞ্জ করে আয় ৷
আরূ :হমম ৷
সানা: চল আমি তোর সঙ্গে যাচ্ছি ৷
অভ্র : আমি যাচ্ছি ওর সঙ্গে ৷
আরুর অভ্রের উপর অনেক রাগ রয়েছে ওর সাথে এমন খারপ ব্যবহার করার কারনে ৷ তাই আরু রেগে গিয়ে বলল : কাউকে যেতে হবে না আমি একাই যেতে পারবো ৷বলে আরূ নিজের ঘরের দিকে চলে যেতে লাগলো….
রূমে ঢুকেই দরজা দিতেই দেখল সোফাতে পায়ের উপর পা তূলে আরিশ বসে আছে, আর মুখে সেই হাসি যা আরুর গোটা শরীর জুড়ে শিহরন বইয়ে দেওয়ার জন্যই যথেষ্ট ৷
আরিশকে দেখেই দরজা খুলে পালাতে গেলেই আরিশ খপকরে আরুর হাতটা ধরে কোলে তুলে নিয়ে রুমের মাঝে দাড় করিয়ে দিল ৷
আরুকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে একটানে গা থেকে শাড়িটা খুলে দিল ৷ আরু ভয়ে এখন কাঁপছে, কী করবে ও এখন!
আরিশ আরুর উন্মুক্ত কোমরটা ধরে ওর সাথে আরুকে মিশিয়ে নিল ৷
আরুর মুখের থুতনি টা ধরে আরিশ বলতে লাগল : লজ্জা লাগছে এবার? খুব লজ্জা !
আরু থরথর করে কাঁপছে, কিছু বলবে তার আগে আরিশ ওর ঠোঁটে একটা কামড় বসালো , কাঁমড় বসাতেই আরু আরিশকে ধাক্কা মেরে দূরে সরিয়ে দিল ৷
চলবে,,,,,
বাকিটুকু কালকে বলব😴৷