তোমার নেশায় পর্ব -২৬ ও শেষ পর্ব

# তোমার_নেশায় !
.
.
(অন্তিম পর্ব)
,
,
কঠিন হৃদয়ের মেয়ে তৃষ্ণা!
.
.
.
রুপাঞ্জন এখন ও রুপশার পায়ের কাছে উপুড় হয়ে বসে আছে। আহসান সাহেব ড্রাইবার থেকে খবর পান রুপক এক্সিডেন্ট করেছে তখনই তিনি হাস্পাতালে ছুটে আসেন। কিন্তু কেবিনে ডুকতেই তার চোখ ছানাবড় হয়ে যায়। রুপাঞ্জন! এখানে??? কিভাবে সম্ভব? আর এ কোন নতুন রুপাঞ্জন? আগের সেই নিষ্ঠুর রুপাঞ্জনের সাথে এখন কার রুপাঞ্জনের আকাশ পাতাল পার্থক্য। আর সে এইভাবে রুপশার পায়ের কাছে কেন বসে আছে? তবে কি সে এতোদিন পর আসল সত্যি জানতে পেরেছে? সেই সত্যি যা এতোগুলা বছর আমি নিজের বুকে আগলে রেখেছিলাম। পারছিলাম না কাউকে বলতে কারন কেউ আমার কথা মানবে না। কিন্তু রুপাঞ্জন সত্যি টা জানলো কি করে? ওই সত্যি শুধু আমি আর কুহু ছাড়া কেউ জানেনা। তবে কি কুহু…….। কুহু সুস্থ হয়ে গেছে। আমার এতো অপেক্ষা অবশেষে শেষ হলো। আমার মেয়েটার সুখের দিন আবার ফিরে এসেছে। রুপাঞ্জন নিজের ভুল বুঝে ফিরে এসেছে। না এখন আমার ভিতরে যাওয়া ঠিক হবেনা। ওদের কে একটু একা থাকতে দেওয়া দরকার। এতোদিনের মান অভিমানের এবার পরিসমাপ্তি ঘটবে। কিন্তু আমার মেয়েটা যে বড্ড অভিমানি।এতো সহজে কি ক্ষমা করবে রুপাঞ্জন কে? আহসান সাহেব কেবিনের সামনে থেকে সরে যান। এদিকে রুপশার গায়ের রক্ত টগবগ করে ফুটছে। ইচ্ছা করছে পারলে এক্ষুনি রুপাঞ্জনকে খুন করতে। ওর এই অনুতাপে কি আমার মা ফিরে আসবে? ওর উপর ভরসা করে বার বার ঠকেছি। আমার জিবন টা সর্বনাশ করে এখন কিসের মায়া দেখাচ্ছে ও! আমি কি করে ভুলে যাবো ওর বাবার কারনেই আজ আমার মা আমার পাশে নেই। সব হারিয়েছি জিবনে এখন আমার বুকের মানিক রুপক কে আকড়ে ধরে যা একটু বাঁচতে চেয়েছি, মানবরুপি পশুটা তাও কেড়ে নিতে চাইবে। রুপশা আর অপেক্ষা না করে এক ঝটকায় সরিয়ে দিল রুপাঞ্জন কে,
,
:– ক্ষমা করে দাও বললেই ক্ষমা করা যায়না রুপাঞ্জন খান! আমি আপনাকে ক্ষমা করে দিলে আপনার বাবা কি আমার মা কে ফিরিয়ে দিতে পারবে??? এখন বলবেন উনি ওনার শাস্তি পেয়েছেন কিন্তু তাতে কি আমি ২৪ বছর মায়ের আদরের জন্য কেঁদেছি সেই আদর ফিরিয়ে দিতে পারবেন আপনি? আমার বাবা, নিজের প্রিয়তমা বন্ধু, স্ত্রীকে হারিয়ে যে কষ্ট পেয়েছেন সে কষ্ট মুছে দিতে পারবেন আপনি?? বলুন! চুপ করে থাকবেন না রুপাঞ্জন খান! আপনার এই ভালো মানুষি রুপ দিয়ে আমায় আর ভুলাতে পারবেন না। আমি আমার ছেলে কে নিয়ে অনেক দুর চলে যাব। যেখানে আপনাদের মতো মানুষখেকো জন্তু থাকবেনা।
রুপাঞ্জন এতোক্ষন যাবৎ নিচের দিকে তাকিয়ে নিরবে চোখের জল ফেলছিল। রুপশার এই ঘৃন্না যে আমার প্রাপ্য! আমি যে শুধু ঘৃন্না পাওয়ার ই যৌগ্য!! কিন্তু আমি তো যথেষ্ট শাস্তি পেয়েছি আমাকে কি একটা বার ক্ষমা করা যায়না। রুপাঞ্জন আবার বলে উঠল,
,
:– প্লিস রুপশা আল্লাহর দরবারে অনেক কেদে তোমাদের ফিরে পেয়েছি। আমাকে আবার তোমাদের থেকে আলাদা করোনা প্লিস!!
,
:— জাস্ট স্টপ ইট!! রুপাঞ্জন খান। বন্ধ করুন আপনার এই নাটক। প্লিস আমাদের একটু শান্তি তে বাঁচতে দিন, একা ছেড়ে দিন আমাদের। চলে যান আপনি!!!! আমার আর রুপকের জিবনে আপনার কোনো প্রয়োজন নেই।
,
:– কিন্তু আমার জিবনে তোমাকে আর রুপক কে অনেক প্রয়োজন। প্লিস আমায় আবার নিঃস্ব করে দিয়ে যেওনা। আমার ভালবাসা কে একটু বুঝার চেষ্টা করো প্লিস।
,
:– ওহহ আমি ও ঠিক একিভাবে কেঁদেছিলাম আপনার পায়ে পড়েছিলাম একটু ভালোবাসা পাওয়ার জন্য! কত শতবার অনুরোধ করেছিলাম আমায় বাসা থেকে না তাড়াতে। নিজের সবটুকু দিয়ে ভালোবেসে ছিলাম আপনাকে বিনিময় কি পেলাম বলতে পারেন?? প্রাতরনা!!
আর রইল রুপকের কথা, ওর জন্ম হওয়া টা আপনার কাছে একটা এক্সিডেন্ট ছাড়া কিছু না। চলে যান প্লিস!!
,
:– আমি জানি আমি তখন প্রতারনা করেছিলাম তোমার সাথে কিন্তু সেটা তো একটা ভুল ধারনা কে কেন্দ্র করে হয়েছিল।
,
:– প্লিস আপনি আমার সাথে অযথা তর্ক করবেন না। চলে যান নিজের রঙিন দুনিয়ায়। আমি আর যাইহোক কোনো খুনিকে নিজের ছেলের বাবা হতে দেবোনা।
রুপশা দরজার দিকে এগোতে থাকে।
,
:- রুপশা আমার বাবা তোমার মা কে খুন করেনি!!!!!!!!!
,
রুপশা পা আর এগোতে পারেনা। ওখানেই থেমে যায়। কি বলছে লোকটা! রুপশা পিছন ঘুরে জিজ্ঞাস করে,
,
:– মানে????
,
:– মানে টা আমি বলছি মা!!!!
,
রুপশা তাকিয়ে দেখে কেবিনের দরজার সামনে একটা বয়স্ক মহিলা দাড়িয়ে আছেন। উনি গম্ভির মুখে তাকিয়ে আছেন রুপশার দিকে। মহিলা এগিয়ে এসে রুপশার সামনে বসলেন,
,
:– রুপশা মা, তুমি এতোদিন শুধু মাত্র অর্ধেক সত্যি টা জানতে, পুরো সত্যি আজ আমি তোমায় বলবো।
,
রুপশা মাথা কাজ করছেনা। একের পর এক কি ঘটে চলেছে ওর জিবনে। কে এই মহিলা?? আর কি সত্যি বলতে চান? এখন ও কোন সত্যি টা আমি জানিনা। কি হচ্ছে কি আমার সাথে। আমার অবাক হওয়া দেখে মহিলা আবার বললেন,,
,
:– এটাই ভাবছো তো আমি কে??
,
রুপশা কিছুনা বলে আবার মহিলা টার দিকে তাকালো।
,
:– আমি হতভাগিনি সেই হস্পিটালের ই নার্স যে হস্পিটালে তোমার জন্ম হয়। তোমার জন্মের দুইদিন আগে তোমার মা প্রত্যাশা খুব অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাই তোমার বাবা তাকে হস্পিটালে এডমিট করায়। যে ডাক্তারের আন্ডারে তোমার মায়ের ট্রিটমেন্ট চলছিল আমি তার সব থেকে ক্লোজ নার্স ছিলাম বলতে গেলে তার ডান হাত। একদিন ওনার কেবিনে একটা রিপোর্ট নিয়ে যাচ্ছিলাম। তখন দেখলাম একজন ভদ্রলোক হাতে একটা বড় লাগেজ নিয়ে ডাক্তার ম্যেডামের সাথে কিসের যেন তর্ক করছেন। ভালো করে দেখার জন্য দরজা টা সামান্য ফাক করে আড়ি পাতলাম। আর দেখতে পেলাম ব্যেগ ভর্তি টাকা! আড়ি পাতার ফলে তাদের কথাবার্তা শুনতে পাই!
,
,
:– দেখুন মিঃ আশ্রাফ খান, আমি এমন একটা জঘন্য কাজ কিছুতেই করতে পারবোনা।
,
:– দেখুন কেউ আপনার ব্যেপারে কিছু জানতে পারবেনা আমি সব সামলে নিব। আমি শুধু আমার কাজ টা করে দিন ওই প্রত্যশার জিবনের প্রদীপ নিভিয়ে দিন। ও আমার বোনের সব সুখ কেড়ে নিয়েছে। বিনিময় আপনি যদি আরো টাকা চান আমি আরো দিতে প্রস্তুত।
,
:– প্লিস মিঃ আশ্রাফ খান। আমি একজন ডাক্তার আমার কাজ মানুষকে জিবন দেওয়া মৃতু্্য নয়। আর এই টাকার জন্য আমি আমার ঈমান্দারি বিক্রি করতে পারবোনা।
,
:– কিন্তু ডাক্তার ম্যাডাম।
,
:– প্লিস, আপনি এবার আসতে পারেন।
,
ডাক্তার ম্যেডাম খুব রেগে বেরিয়ে গেলেন। চট করেই আমার মাথায় একটা বুদ্ধি চলে এলো। আমার বুহুদিনের ইচ্ছা ছিল একটা ডুপ্লেক্স বাড়ি হবে আমাদের, আমি আমার বর, আর সন্তান দের নিয়ে থাকবো। যার জন্য দুজনেই আপ্রান চেষ্টা করে টাকা জমাচ্ছিলাম। কিন্তু ঈমান্দারির পথে টাকা জমাতে গেলে জিবন পেরিয়ে যাবে কিন্তু ডুপ্লেক্স বাড়ির সপ্ন পুরন হবেনা আমার। আমার লোভ আমার মানবিকতা কে হত্যা করলো। আশ্রাফ খান টাকার ব্যেগ নিয়ে বেরিয়ে যেতে নিলে আমি তার পথ আটকাই। আর তাকে বুঝিয়ে বলি কাজ টা আমি অতি সহজে করতে পারবো আর কেউ টের পাবেনা। আশ্রাফ খান খুশি হয়ে আমায় টাকার ব্যেগ দিয়ে বেরিয়ে যান। সেদিন রাতেই তোমার জন্ম হয়। তোমাকে গোসল করানোর জন্য আমাকেই দেওয়া হয়েছিল। আমি তোমাকে গোসল করাতে গিয়ে খুবই অবাক হই। এতো সুন্দর ফুটফুটে বাবু আমি এর আগে দেখিনি। তোমার মায়ের কাছে গিয়ে দেখি তুমি অবিকল তোমার মায়ের মতোই সুন্দর হয়েছ। তোমাকে তোমার পাশে রাখতেই তুমি মুচকি হাসো। তোমার হাসি দেখে আমার হৃদয় কেপে উঠে। আমি কি করে এমন একটা মেয়ে থেকে তার মা কে কেড়ে নেব। তখন তোমার অজ্ঞান ছিলেন ওটাই সুযোগ ছিল তাকে হত্যা করার। কিন্তু তোমার হাসি দেখে আমি স্থির থাকতে পারিনি আমার হাত থেকে ইঞ্জেকশান পড়ে যায়। আমি পারিনি ইঞ্জেকশান পুশ করতে। কিন্তু তোমার ভাগ্য খারাপ ছিল মা, তাই তার ঘন্টা খানেক পর তোমার মা অধিক।রক্তক্ষরণ এর ফলে মারা যায়। সেদিন রাতে আমি হস্পিটাল থেকে পালিয়ে যাই। আশ্রাফ খান ভাবে আমি তোমার মা কে হত্যা করেছি। কিন্তু আসল সত্য এটাই আমি সেদিন কিছুই করিনি। আমি টাকাগুলা দিয়ে একটা মনের মতো ডুপ্লেক্স বাড়ি তৈরী করি। কিন্তু কথায় আছে পাপের টাকায় কেনা সুখ ক্ষনস্থায়ী হয়। আমার সুখ ও বেশিদিন টিকেনি। আমার ছেলেরা বড় হওয়ার পর ওদের বউ আসে। প্রথম প্রথম ভালো থাকলে ও পরে তারা আমার উপর অত্যাচার শুরু করে। আমাকে দিয়ে বাড়ির সকল কাজ করায় কিন্তু আমার ছেলেদের কাছে বলে আমি নাকি ওদের গায়ে হাত তুলি। তাই একদিন ছেলেরা আমায় ঘাড় দাক্কা দিয়ে বের করে দেয়। আমি পাগলের মতো রাস্তায় রাস্তায় ঘুরি, কখন ও খাই, কখন ও খাইনা। আমার ভিতর সবসময় একটা অপরাধ বোধ কাজ করে যে মরার একদিন আগে হলেও আমি যেন তোমার কাছে ক্ষমা চেয়ে মরতে পারি। একদিন অন্যমনস্ক হয়ে রাস্তায় হাটার সময় একটা এক্সিডেন্ট হয় আমার কেউ আমায় হাস্পাতাল নিয়ে যাইনি। কিন্তু রুপাঞ্জন সেদিন সবাইকে সরিয়ে আমায় হস্পিটাল নিয়ে যায়। রাত দিন আমার সেভা যত্ন করে। আমাকে আমার পরিবারের কথা জিজ্ঞাস করলে আমি সব খুলে বলি। তখন ও আমায় জানায় ও তোমার বর। তোমার সাথে যদি কখন ও দেখা হয় তখন তুমি তাকে এটা নিয়ে ভুল বুঝবে। এটা ও জানতো তাই সব সময় আমায় সাথে নিয়ে খুজত তোমায়। এই টুকু বলে মহিলা থামে……
,
রুপশা রুপক কে বেডে শুয়ে দেয়। তারপর নিজে দপাশ করে চেয়ারে বসে পড়ে। আর কত?? আর কতো ভুল বুঝাবুঝি আছে ওর জিবনে?? আর কতো সত্য তার জন্য অপেক্ষা করে আছে? কেন হচ্ছে এমন তার সাথে?
,
মহিলা রুপশার দুইহাত ধরে বলে,
,
:– রুপশা মা এখন তুমি যদি আমার এই ছেলে আর আমাকে ক্ষমা না করো আল্লাহ পাকক কখন ও ক্ষমা করবেন না আমায়! তোমাকে তে মায়ের আদর থেকে বঞ্চিত হতে হয়েছে সেটা আল্লাহর ইচ্ছা। কিন্তু তোমার ছেলেকে তার বাবার আদর থেকে বঞ্চিত করোনা প্লিস!!
তখনই রুপশার বাবা কেবিনে ডুকে আর সাথে রুপাঞ্জনের ফুফি। রুপশা বাবা কে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়ে। ওর কান্না যেন আজ শেষ হচ্ছেনা। মাত্র কয়েকটা ভুল বুঝাবুঝি ওর পুরো জিবন এলোমেলো করে দিয়েছে। আর কত সহ্য করতে আমার?? অনেকক্ষন কান্না করার পর রুপশা বাবার বুক থেকে মাথা উঠিয়ে ফুফির দিকে তাকায়। ফুফি কে আজ প্রথম বার নিজের পায়ে দাড়িয়ে থাকতে দেখছে রুপশা। তার মায়ের সবচেয়ে কাছের বন্ধুর মধ্যে যেন রুপশা নিজের মায়ের প্রতিচ্ছবি দেখতে পাচ্ছে।
ফুফি ছলছল চোখে ওর দিকে তাকিয়ে ডাকলেন,
,
:– রুপশা!!!!
,
রুপশা ঝাপিয়ে পড়ল ফুফির উপর। মন ভরে কাদতে লাগল যেন অনেক বছর সে মন খুলে কাঁদেনি। ফুফি ও ওর মাথায় হাত বুলিয়ে নিজেও কাদতে লাগলেন,
,
:– আর কাদিস না মা! আমার মেয়ে কে এইভাবে কাদতে দেখে আমার যে একটু ও ভালো লাগছনা। এখন যে আমার মেয়ের হাসি খুশি থাকার দিন।
,
:– মা!!!!!!!!!!!!
,
:– হ্যা আমি তোর মা!! সোনা। আমি তোর মা।
,
রুপশা ফুফির হাত টা নিজের বাবার হাতে তুলে দেয়। ফুফি অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে রুপশার দিকে।
,
:– আমি তো একটা মা পেয়ে গেছি। কিন্তু আমার বাবা?? আমার বাবাকে আগলে রাখার জন্য যে তার বন্ধু কে খুব প্রয়োজন। সারাজিবন এইভাবে ধরে রাখতে। আমি যে আমার বাবা কে একা দেখতে চাইনা মা!
,
ফুফি আর আহসান সাহেব হাসি মুখে রুপশার মাথায় হাত রাখলেন। তারপর তারা সবাই রুম থেকে বেরিয়ে গেলেন। এখন কেবিনে শুধু রুপশা, রুপাঞ্জন আর রুপক আছে। রুপশা রুপক কে কোলে নিয়ে বলল,
,
:– রুপক উনি তোমার বাবাই!
,
:– সত্যি মাম্মাম?? আমার বাবাই??
,
:– হুম।
,
রুপক একলাফে রুপাঞ্জনের কোলে উঠে ওকে জড়িয়ে ধরল। রুপাঞ্জন খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরল নিজের ছেলেকে। যেন কোথাও হারাতে না পারে।
,
:– বাবাই আমার সব ফ্রেন্ডদের বাবাই ওদের চকলেট কিনে দেয়, তুমি ও আমায় চকলেট কিনে দিবে আর অনেক গুলা কিসি দিবে।
,
:– হুম সোনা আমি তোমাকে অনেক গুলা চকলেট কিনে দিব আর অনেক গুলা কিসি দিবে। এই বলে রুপক কে অনেক গুলা চুমু খায় রুপাঞ্জন।
রুপক রুপশার দিকে ফিরে বলে,
,
:– মাম্মাম তুমি কিসি দিচ্ছনা কেন?
,
রুপশা একটু হেসে ওদের কাছে যায় তারপর রুপক কে কিস করতে নিলে রুপক সরে যায় আর কিস টা রুপাঞ্জনের গালে পড়ে। এইটার জন্য কেউ ই প্রস্তুত ছিলনা। রুপশা লজ্জা পেয়ে অন্য দিকে ঘুরে যায়। আর রুপক কোল থেকে নেমে বলে,
:– ইয়ে বাবাই মাম্মাম কে কিসি দিয়েছে!
,
এটা বলে কেবিন থেকে বের হয়ে নানা ভাইয়ের কাছে চলে যায়। রুপাঞ্জন আস্তে আস্তে বলে,
:– সবাই কে আগলে রাখার জন্য মানুষ আছে শুধু আমার জন্যই কার ও দয়া হয়না।
,
এটা বলতে দেরি রুপশা ঝাপিয়ে পড়ল রুপাঞ্জনের বুকে। রুপাঞ্জন ও খুব আদর করে জড়িয়ে নিল নিজের প্রিয়তমা কে। কেউ কোনো কথা বলছেনা। রুপশা খুব ধীরে বলল,
:– এতো অপেক্ষা করালে কেন???
,
:– কি করবো অপেক্ষা যে ভাগ্য লেখা ছিল।
,
তখনই কাশির শব্দে দুজনে সরে দাড়ায়। পিছনে আহসান সাহেব আর ফুফি দাড়িয়ে আছেন আর কোলে রুপক।
,
:– কি ব্যেপার লাভ বার্ডস!! বাকি জিবন কি হাস্পাতালে কাটিয়ে দেওয়ার ইচ্ছা আছে নাকি??
,
ওনার কথা শুনে সবাই হেসে উঠল। সিলেটের সব ঝামেলা মিটিয়ে তারা আবার ঢাকায় ফিরে গেল। কাজি অফিসে আহসান সাহেব আর রুপাঞ্জনের ফুফির বিয়ে সম্পন্ন করে তাদের গাড়িতে উঠিয়ে রুপাঞ্জন, রুপশা রুপক কে নিয়ে নিজেদের বাসায় ফিরে আসে। ছাদে রাতের তারা ভরা আকাশের দিকে তাকিয়ে রুপশা একা দাড়িয়ে আছে। আকাশের সহস্র তারার মাজে একটা তারা ওর মা!!
,
:– মা! তুমি খুশি তো আজ?? আজ আমি তোমার সব থেকে প্রিয় দুইটি মানুষ কে এক করে দিয়েছি। তোমার ও তো এটাই ইচ্ছা ছিল তাইনা মা? তোমার ডাইরিতে লিখিছিলে তুমি। মা! আজ অবশেষে তোমার মেয়ের জিবনে সুখ ফিরে এসেছে। তুমি দোয়া করো আমি যেন আজিবন সুখি থাকতে পারি। পিছন কেউ যেন জড়িয়ে ধরল আমায়। এই স্পর্শ যে খুব প্রিয় আমার। আমার রুপাঞ্জন কানে কানে বলল,
,
:– আমি সুখি থাকতে চাই শুধুমাত্র #তোমার_নেশায়!!!
,
:– আমি মরে যেতে চাই শুধু #তোমার_নেশায়!
,
রুপক লাফিয়ে বলল,
,
:– আমি ডুবে থাকতে চাই শুধু # চকলেটের নেশায়!!!
,
,
,
# সমাপ্ত !!!
,
,
,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here