“নিজের শরীর দেখিয়ে ছেলেদের আকৃষ্ট করার ইচ্ছা জাগলো নাকি তুহা।”
আচমকা একরকম কথা শুনে তুহা হকচকিয়ে গিয়ে আশেপাশে তাকিয়ে দেখলো ফারাবি দাঁড়িয়ে আছে। ফারাবির দৃষ্টি অনুসরণ করে তাকিয়ে দেখলো,নিজের পায়ের কাপড় অনেকটাই উপরে উঠে গেছে। তাড়াতাড়ি সোজা হয়ে বসলো তুহা। শাড়ি পড়ে পায়ের উপরে পা তুলে বসার কারনে পায়ের কাপড় সরে গেছে। শাড়ি পড়ার অভিজ্ঞতা খুবই কম,আজকে বসন্ত উৎসব তাই,বন্ধুদের চাপে পড়ে পড়তে হয়েছে। এইরকম পরিস্থিতিতে পড়তে হবে জানলে কখনোই শাড়ি পড়তো না তুহা।
তুহা শাড়িটা ঠিক করার পরেই ফারাবি নিজের স্থান ত্যাগ করলো। তার আগে তুহার দিকে একটা কঠিন লুক দিয়ে গেলো,যার অর্থ তুই আজকে শেষ তুহা।
তুহা হাসান। অর্নাস দ্বিতীয় বর্ষ। বাবা মায়ের বড়ো সন্তান। একটা ছোট বোন আছে মিহা। ১১ এ পড়ে।
তুহা সবার কাছেই ছটফটে দুষ্টু স্বভাবের হলেও একজনের কাছে ভীতুর ডিম। আর সেটা হলো ফারাবি। ফারাবি তুহার কলেজের এসিস্ট্যান্ট টিচার হিসাবে জয়েন করেছে। তার পাশাপাশি তুহার সাথে ফারাবির একটা সম্পর্ক আছে,ফারাবি তুহার কাজিন।
ফারাবি চৌধুরী। বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান। বিদেশ থেকে পড়াশোনা করে এসেছে। বাবার বিজনেস জয়েন না করে কলেজে জয়েন করেছে যার কারনটা তুহার অজানা। ফারাবি আর তুহার সম্পর্ক টা সাপে-নেউল টাইপের। দুজন দুজনকে একটুও ছাড়ে না। ফারাবি দেশে ফিরে আসার পর থেকেই তুহাকে অপমান করার কোনো সুযোগ ছাড়ে না। তুহা কখনো মুখের উপরে বলে আবার কখনো ভয়ে চুপ করে যায়। ফারাবির রাগ খুবই ভয়ঙ্কর।
তুহাকে মুখ গোমড়া করে থাকতে দেখে খুশি বললো..
-কি হলো পেত্মীমার্কা মুখ করে আছিস কেন?
খুশির কথাতে তুহার রাগটা তরতর করে বেড়ে গেলো।
-শা/*লি,কু/*ত্তী তোর জন্য আজকে ওই ফারাবির কাছ থেকে আমাকে এতগুলো কথা শুনতো হলো।ওকে তো সামনে পেলে আমি খু*/ন করবো।
তুহার আচমকা আক্রমনে খুশি হতবাক হয়ে গেলো। তুহার রাগের কারনে বুঝতে পারলো কিছু একটা হয়েছে যার জন্য ফারাবির উপরে তুহা ক্ষেপে গেছে।
-বনু কি হয়েছে বলবি তো।
তুহা রাগ নিয়ে সবটা খুশিকে বললো। খুশি মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়ে বললো..
-আমি বুঝি না তোর সাথে স্যারের কি শত্রুতা। সবসময় তোর পেছনেই পড়ে থাকে। তোরা কি আগে থেকে পূর্ব পরিচিত।
খুশির এমন কথা শুনে তুহা হকচকিয়ে গেল। কথাটা ঘোরানোর জন্য বললো..
– মেধা কোথায়।
– আছে কোথাও।হায় তো আসছে।
মেধা এসে দেখলো তার বেষ্টু জানু তুহা মুখ গোমড়া করে রেখেছে। তাই তুহার দিকে চোখ ছোট ছোট করে তাকিয়ে বললো..
– কি হয়েছে তোর?
মেধার কথাতে পাত্তা না দিয়ে তুহা নিজের মতো ফোন টিপতে লাগল।তুহাকে চুপ করে থাকতে দেখে খুশি বললো..
– আরে বুঝিসনা কেন আমাদের ফারাবি স্যারের সাথে ঝগড়া হয়েছে ম্যাডামের।
খুশির কথা শুনে মেধা মাথা চাপড়ে বললো…
– এদের নিয়ে পারি না। আজকেও এরা দুজনে ঝগড়া করেছে।
– আমি আর উনি মোটেও ঝগড়া করিনি।আমার পায়ের কাপড় সরে গিয়েছিলো উনি সেটা বলেছেন। আর মেধা আমি বাড়ি যাবো,তুই কি যাবি।
– এখনি চলে যাবি।
– হুম।আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি।
তুহা বাথরুমে যাবার জন্য পা বাড়ালো। হুট করেই কেউ একজন ওকে অন্ধকার ঘরে টেনে নিয়ে গেলো।
তুহা মনে মনে সাহস জুগিয়ে বললো..
-কে?
ওপাশ থেকে কোনো কন্ঠস্বর শুনতে পাওয়া গেলো না। তুহাকে দেয়ালের সাথে চেপে ধরে ওপাশের মানুষটা তুহার কোমড়ে নিজের হাত ছোঁয়ালো। তুহা শিউরে উঠল। হুট করেই ব্যক্তিটা তুহার কোমড় ধরে তার অনেকটা কাছে নিয়ে এসে গলায় মুখ গুঁজে দিয়ে ঠোঁটের উষ্ণ গরম স্পর্শ দিতে লাগলো। তুহা বারবার মানুষটার স্পর্শে কেঁপে উঠছে। স্পর্শটা ওর খুব চেনা। মানুষটা নিজের নাক দিয়ে তুহার গলায় ঘাড়ে ঘষতে লাগলো। তুহা কেঁপে কেঁপে উঠছে। মানুষটা তুহার কানের কাছে এসে মৃদু স্বরে বললো..
– আমাকে পাগল করার জন্য আর কত কি করবে তাহু পাখি। আমি যে তোমাতেই মাতাল হয়ে যাচ্ছি।দিনকে দিন #তোমার_মাদকতায়_আচ্ছন্ন হয়ে যাচ্ছি।পারবে তো সামলাতে।
মানুষটার মৃদু স্বর, গরম নিঃশ্বাস তুহাকে পাগল করে দিচ্ছে। তুহা নিজের শাড়িটা শক্ত করে চেপে ধরে চোখ বন্ধ করে আছে।
– আমাকে নিজের মাদকতায় আচ্ছন্ন করার জন্য শাস্তি তোমাকে পেতেই হবে। তার জন্য তৈরি হও তাহু পাখি।
তুহার কপালে আলতো করে চুমু হয়ে মানুষটা চলে গেলো। তুহা তার কাছে কাউকে না অনুভব করে পিটপিট করে চোখ খুললো।তুহা রীতিমত হাঁপাচ্ছে।ভয়ের সাথে আলাদা একরকমের অনুভূতি হচ্ছে। এই অনুভূতিটার নাম কি? সামনের মানুষটা কে? সেটা তুহা জানে না তবে এটা জানে,এমন কেউ একজন যে ওকে পাগলের মতো চাই। তুহাকে নিজের জীবন দিয়ে সবসময় আগলে রাখে।সব বিপদ থেকে রক্ষা করে। হয়তো তাই তুহা মানুষটাকে কিছু বলতে পারে না।
তুহা মেধাকে আর খুশিকে কিছু না বলেই চলে যায়। বাড়ি ফিরে নিজের রুমে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়।ঝরনার নীচে দাঁড়িয়ে ফোঁপাতে ফোঁপাতে বললো..
-কেন আমাকে নিজের এতটা কাছে জড়িয়ে নিচ্ছেন। কেন আমাকে নিজের বাঁধনে জড়াচ্ছেন। কেন আমাকে আপনাতেই মত্ত করছেন আমি আর পারছি না আর লুকোচুরি না করে সামনে আসুন।সামনে আসুন প্লিজ।
তুহা আস্তে আস্তে মেঝেতে লুটিয়ে পড়লো। চোখে সূর্যের আলো পড়ায় তুহার ঘুম ভেঙে যায়। শরীরটা কেমন ম্যাজম্যাজ করছে,মাথা ভারি হয়ে গেছে। ও এখানে আসলো কিভাবে ও তো ওয়াশরুমে ছিলো। তুহা কিছুই মনে করতে পারছে না। তখনি ওর মা তহুরা হাসান ভেতরে প্রবেশ করলো..
– তুহা মামনি তুই ওয়াশরুমে কিভাবে অজ্ঞান হয়ে গেলি। আর কখনই বা বাড়িতে আসলি।মেধা ফোন না করলে তো আমি জানতেই পারতাম না।
তুহা আমতা আমতা করছে কি বলবে। তখনি সেখানে মেধা চলে আসে।
-মামনি কি করছো।
-এই তো বল।
-আমার না খুব খিদে পেয়েছে কিছু খেতে দাও না প্লিজ।
– আচ্ছা তূই বস আমি গেলাম।
তুহার মা ঘরের বাইরে চলে যায়। মেধা তুহার পাশে বসে বললো..
-তুহা রানি তোর কি হয়েছে কাউকে কি না বলে চলে আসলি কতটা চিন্তা করছিলাম জানিস।
তুহা চুপ করে আছে কিছুই বলছে না।
-তুই আর দাদাই যতই ঝামেলা করিস না কেন। তোদের মাঝে আলাদা একটা সম্পর্ক আছে।
-মানে?
– মানে দেখ না আমরা কেউ খেয়াল না করলেও দাদাই ঠিক খেয়াল করেছে তোর দিকে।
-ও।
তুহা আর মেধা খালাতো বোন।আর ফারাবি ওদের মামাতো ভাই। তুহার বাবা ফারাবির বাবাকে পছন্দ করেন না। ওদের মাঝে সম্পর্ক নেয় বললেই চলে। তুহার বাবা ওই বাড়িতে যান না, আর ওনারা আসলেও এই বাড়িতে থাকেন না তুহার বাবা।
– তুহা আমি বুঝিনা আঙ্কেল মামাইকে অপছন্দ করেন কেন?
– সেটা তো আমিও জানি না। সবটাই কেমন রহস্যময়।
#তোমার_মাদকতায়_আচ্ছন্ন
#তানজিলা_খাতুন_তানু
(পর্ব_২)
তুহা আর মেধা আড্ডা দিচ্ছে। ওরা দুজন সমবয়সী হওয়ায় ছোটবেলা থেকেই ওদের মাঝে একটা দারুন সম্পর্ক আছে। দুজন দুজনের বেস্টফ্রেন্ড। খুশির সাথে ওদের বন্ধুত্ব ক্লাস ৯ থেকে সেই থেকেই ওরা তিনজন একসাথে আছে।
তুহার মায়েরা চারভাই বোন। বড়ো মামার (ফারাবির বাবা) একটা সন্তান ফারাবি। সকলের আদরের চোখের মনি। ছোটমামার তিনটে ছেলে মেয়ে কথা,কাব্য আর কুহু। কথা বিবাহিত। কাব্য এম.এ পড়ছে আর কুহু মিহার সববয়সী। তুহার বড়ো খালার দুই মেয়ে, মেধা আর তিশা। তিশার বিয়ে ঠিক আছে আর কয়েকদিন পরেই বিয়ে হবে। আর মেধার কথা তো সবাই জানো।আর বাকি রইল তুহার মায়ের কথা সেটা তো আগেই বলে দিয়েছি। যাই হোক গল্পে ফেরা যাক।
দুজনের আড্ডার মাঝেই মিহা ঘরে প্রবেশ করলো।
-এই দিভাই আর মধুদি তোদের নীচে মা ডাকছে।
– এই মিহা তোকে বলেছি না আমাকে মধু বলবি না আমার নাম মেধা। তুই তো বড়ো হয়ে গেছিস এবার ঠিক করে ডাক।
– আরে মধুদি পুরানো অভ্যাস কি বদলানো যায় বলো। এই দ্যাখো না ফারাবি হ্যান্ডসামকে কি আমি আর দাদাই বলতে পারি বলো।
মেধা আর তুহা ভ্রু কুঁচকে তাকালো মিহার দিকে।তুহা খানিকটা রাগ নিয়ে বললো…
-এই মিহু কি বললি তুই ফারাবি হ্যান্ডসাম।
– তবে নয় তো কি দিভাই ওর মতো একটাও ছেলে দেখাতে পারবি আমার তো ইচ্ছা করে কিস করে দিতে।
মেধা আর তুহার চোখ তো ঠিকরে বেরিয়ে আসার উপক্রম। এই মিহার কি মাথা কি গেছে নাকি।
– ওই মেধা ওর কি মাথা খারাপ হয়ে গেছে। কাজিনকে ওইরকম কেউ বলে।
– আরে দিভাই তুইও যদি একবার মন থেকে ফারাবিকে দেখিস না তাহলে তুইও ওর প্রেমে পড়ে যাবি।
তুহার মায়ের ডাক পড়ায় মিহা ওখান থেকে চলে যায়। তুহার কানে এখনো মিহার বলা কথা গুলো বাজছে। তুহাকে শকে চলে যেতে দেখে মেধা খোঁচা দিয়ে বললো…
-কি তুহারানি দাদাই এর প্রেমে পড়ে গেলি নাকি।
তুহা রাগী লুক নিয়ে বললো..
-ওই শয়তানের প্রেমে কখনোই না। শয়তান ছেলে আমার পেছনে সবসময় পড়ে থাকে আমি বুঝি না ওনার কি শত্রুতা আমার সাথে।
তুহা রাগ করে রুম থেকে বের হয়ে গেলো। মেধা কিছু একটা ভেবে মুচকি হাসলো।তুহার মা মেধা কে খেতে দেয় আর পাশে তুহা বসে আছে।
-কিরে তুশার কবে বিয়ে হবে।
– খুব তাড়াতাড়ি জিজু দেশে আসলেই বিয়ে হয়ে যাবে।
– আলহামদুলিল্লাহ খুব ভালো খবর।
– কি মজা একটা বিয়ে খাবো।মা দিভাই এর বিয়েটাও দিয়ে দাও না।
– মিহার বাচ্চা।
– সরি দিভাই আমি তহুরা আর মিরাজের বাচ্চা।
-তোকে তো আমি।
মিহার পেছন পেছন তুহা ছুট লাগায়। তুহার মা মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়ে। মেধা হাসতে হাসতে শেষ।
পরেরদিন..
-কিরে তুহা তুই কাউকে কিছু না বলে কাল চলে গেলি কেন?
– আরে খুশি তেমন কিছু না। চুপ কর স্যার আসছে।
ক্লাসটা ফারাবির। ফারাবি ক্লাসে আসতেই মেয়েগুলো চোখ দিয়ে গিলে খাচ্ছে। তুহা বোঝে না মেয়েগুলো ওর মাঝে কি পাই যার জন্য ওইভাবে গিলে খাই।
– গুড মর্নিং স্টুডেন্ট (মুচকি হেসে)
– গুড মর্নিং স্যার।(সবাই একসাথে)
স্যারের মুচকি হাসি দেখে মেয়েরা তো হার্টফেল করে ফেলবে এইরকম ভাব করছে। তুহাকে খুশিকে খোঁচা মেরে বললো..
-ভাই দ্যাখ না ফারাবি স্যারের হাসিটা কি সুন্দর।
খুশির কথা শুনে তুহার মাথায় আগুন ধরে গেছে। দাঁতে দাঁত চেপে বললো..
-এই খুশি আমার সামনে ওই ব্যাটার কিছু বলবি না। মে*রে রেখে দেবো।
খুশি কিছু বলতে যাবে তার আগেই ফারাবি গম্ভীর গলায় বলল…
– তিননম্বর টেবিলের ব্ল্যাক ড্রেস উঠে দাঁড়াও।
তুহা দেখলো সেই কালো ড্রেস পড়ে আছে তার মানে বজ্জাতটা ওকেই দাঁড়াতে বলছে। তুহা কোনো উপায় না দেখে মেধার দিকে করুন চোখে আর খুশির দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে উঠে দাঁড়ালো।
– কি কথা বলছিলে আমাদের ও বলো আমরাও শুনি।(গম্ভীর গলায়)
– স্যার এই খুশি বলছিলো আপনার হাসিটা খুব সুন্দর। আর আমি বলেছি ভালো নয়। ( ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বললো)
ক্লাসের সকলে হা করে তাকিয়ে আছে তুহার দিকে। তুহা মাথা নীচু করে দাঁড়িয়ে আছে। ফারাবির মুখের প্রতিক্রিয়াটা কি সেটা বোঝা যাচ্ছে না। ফারাবি ওদের বেঞ্চের পাশে এসে দাঁড়াল। ভাব নিয়ে মুখের কোনো একটা বাঁকা হাসি ঝুলিয়ে বললো…
– তাই বুঝি এই কথায় হচ্ছিলো। তুই বুঝি আমার হাসিটা খেয়াল করেছিস গভীর ভাবে।(প্রথমের কথাটা জোরে বললেও শেষের কথাটা আসতে বললো ফারাবি।)
ফারাবির কথা শুনে তুহা চোখ বড়ো বড়ো করে ফারাবির দিকে তাকালো। ফারাবি নিজের মুখের গম্ভীরতা ফিরিয়ে এনে বললো..
-কি হলো উত্তর দাও।
– হ্যা ওটাই বলেছি।
– পরের ক্লাসে বসে আমার চর্চা বা অন্য কিছু নিয়ে আলোচনা হলে সবার অবস্থান ক্লাসের বাইরে হবে বলে দিলাম।
ফারাবিকে সকলে পছন্দ করলেও ওর রাগকে সকলেই ভয় পাই। ক্লাস শেষ করে মাঠে বসে আড্ডা দিচ্ছে পিওন এসে বললো..
– তুহা কে ফারাবি স্যার ডাকছে।
তুহা রাগে ফোঁস ফোঁস করে উঠলো এটা নতুন নয় আগেও ডেকে গেছে কিন্তু যায়নি। এই নিয়ে ৫ বার ডাক পড়লো তুহার। মেধা তুহার কানের কাছে ফিসফিস করে বলল..
-বোইন যা না নাহলে দাদাই পরে তোর বারোটা বাজিয়ে দেবে।
তুহা রাগ নিয়ে অন্য দিকে ঘুরে এদিক ওদিক যেতে লাগলো। হুট করেই আরো একবার কেউ ওকে টেনে নিলো।তুহার কানের কাছে ফিসফিসিয়ে বললো…
-তাহু পাখি আমি।
গলাটা শুনে বুঝলো অন্য কেউ নয় তার প্রেমিক পুরুষই তাকে টেনে নিয়ে এসেছে। কিন্তু মনের মধ্যে রাগ হতে লাগলো। রাগে গর্জে ওঠে বললো…
-এই আপনি কি আমাকে ঠিক করে থাকতে দেবেন না নাকি। আর কেন বা আপনি এতটা লুকোচুরি খেলা খেলছেন। সাহস থাকে তো সামনে চলে আসুন।
সামনের ব্যক্তিটা তুহার কোমড় টেনে নিয়ে গলায় মুখ গুঁজে দিয়ে একটা কামড় দিলো। তুহা বুঝলো মানুষটা রেগে গেছে খুব।
– ছাড়ুন আমাকে।
– তুমি আমার থেকে ছাড়া পাবে না তাহু পাখি। তুমি শুধু আমার। আর সামনে আসার কথা,আমি এতটাও কাপুরুষ নয় যে সামনে আসতে ভয় পাবো তবে কিছু কারনে আমি এখনি তোমার সামনে আসতে পারবো না। তবে খুব তাড়াতাড়িই আমি তোমার সামনে আসবো সহ্য করতে পারবে তো আমাকে না আমার রুপ দেখে জ্ঞান হারাবে।( ফিসফিসিয়ে শীতল কন্ঠে)
ব্যক্তিটির কথা শুনে তুহার সারা শরীরে শিহরন বয়ে যাচ্ছে।তুহার কপালে একটা চুমু দিয়ে সে চলে যায়। তুহার মনের কোনো একটা প্রশ্ন আসতেই থাকে কি সেই কারন যেটার জন্য উনি সামনে আসছেন না। একটা কথা মনে আসতেই তুহার রাগ লাগলো।
– অ্যা। রুপ দেখে জ্ঞান হারাবে নাকি। খালি নিজের রুপের অ্যাটিটিউট ফারাবির মতো।
কথাটা বলে তুহা থমকালো। কি বললো ও নিজেই ফারাবির মতো।
-কি সব ভাবছি আমি ওই ব্যাটা তো আমাকে দেখতেই পারে না। আবার নাকি পছন্দ করবে। আস্ত একটা শয়তান দেখবি তোর বউ জুটবে না।আর জুটলেও জল্লাদ বউ হবে, হুঁ।
তুহার ফোন বাজার শব্দ পেয়ে ভাবনা থেকে বের হয়ে আসে। মেধা ফোন ধরেই বললো…
– তুহা তাড়াতাড়ি আয় একটা সারপ্রাইজ আছে।
তুহা কিছু বলার আগেই মেধা ফোন কেটে দিলো। তুহা মেধার কাছে যায়।
-কি বল?
মেধা কিছু একটা জিনিস ইশারায় দেখায় তুহা খুশিতে লাফিয়ে উঠলো।
#চলবে….