#তোর_আসক্তি_পাগল_করেছে_আমায়
#Sabiya_Sabu_Sultana(Saba)
#পর্ব_১৫
..জে কে মিউজিক অ্যান্ড ডান্স গ্রুপ একাডেমী লাস্ট অ্যান্ড ফাইনাল কনট্রেসটেন্ট রেনবো ব্র্যান্ড। হোস্ট মাইকে অ্যানাউন্স করে দেয়।
.
. এদিকে সবাই চিৎকার শুরু করে দিয়েছে। বেলাদের ব্র্যান্ড এর প্রত্যেক এর নাম নিয়ে। আর স্টেজ এর সামনে বসে মুখে মিষ্টি হাসির রেস টেনে রেখেছে দিশা। খানিক পর স্টেজ এর লাইট অফ হয়ে যায়। জ্বলে ওঠে স্পট লাইট।
.
. 🎶 এ লোগ বাড়ে আজিব হে হামারে বেহায়াই কি বাতে হার গালি হার মাকান কারতি হে প্যাহেনকার সাফেদ নাকাব হামে ইউহি বাদনাম কারতে হে হাম সোচতে হে কিউ না এক কাম কারতে হে আজ ইস মেহেফিল মে ক্ষুদ কো সারে আম কারতে হে 🎶
.
. রুহি স্পট লাইট এর নিচে দাঁড়িয়ে প্রত্যেক টা কথার তালে তালে নেচে ওঠে। স্টেজ এর সামনে তাকাতে রুহি হেসে ওঠে। তবুও নিজের এক্সপ্রেসন ঠিক রেখে নিজের পারফরম্যান্স করে যায়। লাইন গুলো শেষ করার পর সরে যায় রুহি। আর স্টেজ এর মাঝে আরো একটা স্পট লাইট পড়ে। সেখানে সাদা পর্দার প্রপস দিয়ে ঢাকা আছে। আসতে আসতে সেটা সরতে থাকে মিউজিক এর তালে তালে। প্রথমে হাত বের করে মুদ্রা দিতে থাকে গান শুরুর সাথে সাথে মাথার ঘোমটা ফেলে দেয়।
.
.আর সাথে সাথে পুরো হল তালি চিৎকার আর সিটি তে ভোরে যায়। চারিদিকে শুধু বেলা বেলা আর বেলা। এই চিৎকারে ভোরে যায়। স্টেজ এর সামনে বসে বসে কেউ এতক্ষণ অধীর আগ্রহে যে বেলার অপেক্ষায় ছিল এখন বেলা কে দেখে তার চোখ আটকে গেছে বেলার ওপর। দম যেনো আটকে আসছে।
.
. বেলা স্টেজ এর সামনে আসতে তার চোখ পড়ে স্টেজ এর বসে থাকা ব্যাক্তির ওপরে যে এক দৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে আছে নেশাময় চোখে। নীল দুটো গভীর চোখ আর নীল স্যুটে তাকে চোখ ধাধানো সুন্দর লাগছে। বেলা নিজের মুখে একটা বাঁকা হাসি ফুটিয়ে তোলে। হ্যাঁ স্টেজ এর সামনে স্পেশাল গেস্ট এর আসনে বসে আছে সাঁঝ রওশন।
.
. সাঁঝ কে দেখে নিয়ে বেলা শুরু করে তার শুরু করে তার কথ্যক ডান্স এর জাদু। বেলার সাথে সাথে রুহি ও এসে যোগ দেয়। পুরো হল শুধু এখন বেলা আর রুহি তে মত্ত হয়ে আছে। আর এদিকে বসে বসে জলে পুড়ে ছাই হয়ে যাচ্ছে।
.
🎶সালামে ইস্ক মেরি জা জারা কবুল কারলো 🎶
.
. প্রত্যেক টা মুভমেন্ট এতটাই স্মুথলি কম্পোজ করেছে যে কেউ চোখ সরাতে পারছে না তাদের ওপর থেকে। আর সাঁঝ সে তো বেলার নাচে এত টাই বিভোর হয়ে আছে যে আশে পাশে কি হচ্ছে সেদিকে তার কোনো হুস নেই। বেলা তার পারফরম্যান্স এর সাথে সাথে কোনা চোখে সাঁঝ এর তন্ময় হয়ে তাকে দেখা তে বাঁকা হাসছে।।
.
. রুহি আর বেলার পারফরম্যান্স শেষ হতে স্টেজ লাইট অফ হয়ে যায়। এবার স্টেজে আসে নিশান আর সাথে বেলা। এবার টাইটানিক মুভি এর টাইটেল ট্র্যাক প্লে করছে বেদ ওম রুহি আর এর সাথে পারফরম্যান্স দিচ্ছে বেলা আর নিশান। এটা ও কথ্যক এ কম্পোজ করা।
.
. বেলা শুধু সাঁঝ এর দিকে তাকিয়ে বাঁকা হাসছে। আর সাঁঝ যে মুগ্ধ হয়ে দেখছিল তার মুখের পরিবর্তন হচ্ছে আসতে আসতে। বেলার আর নিশান এর ডান্স স্টেপ দেখে। কারণ এই সং এর স্টেপ গুলো খুবই ক্লোজ করে কোরিওগ্রাফ ও করেছে। তাই এর জন্য নিশান কে বেলার শরীর স্পর্শ করতে হচ্ছে আর এর জন্য সাঁঝ এর মাথা আসতে আসতে আগুন হতে শুরু করেছে।
.
. এদিকে বেলা সাঁঝ এর ভাব মূর্তি দেখে বাঁকা হাসছে আর নিজে আরো বেশি বেশি করে সাঁঝ কে জ্বালানোর জন্য নিশান এর ক্লোজ হচ্ছে।
.
. নিশান বেলার ডান্স শেষ হতে লাইট অফ হয়ে যায়। আবার লাইট জলে উঠতে এবার বেলা বেদ ওম নিশান রুহি কে এক সাথে দেখা যায় বেলার কাঁধে ঝুলানো গিটার আর বাকি রা তাদের ইন্সট্রুমেন্ট নিয়ে।
.
.তেরে নাম আনপ্লাগড কভার সং মিউজিক টন প্লে করে বেলা আর তার সাথে বেদ ও বাকিরা তাদের ইন্সট্রুমেন্ট গিটার আর কিবোর্ড প্লে করতে থাকে।
.
. 🎶 তেরে ইস্ক নে সাথি~~য়া
মেরা হাল কেয়া কার দিয়া
তেরে ইস্ক নে সাথি~~য়া
মেরা হাল কেয়া কার দিয়া 🎶
🎶ন্যায়নো সে ইস্কো কি ধারো মে
হাম নে তুঝকো দেখা চান্দ সিতারো মে
ভিরহা কি আগ্নি মে পাল পাল টাপতি হে
আব তো সাঁসে তেরি মালা জাবতি হে
তেরে লিয়ে তেরে লিয়ে
তেরে লিয়ে
ইস দুনিয়া কা হার সিতাম হে
গাওয়ারা সানাম
হোওওওও
হার সিতাম হে গাওয়ারা সানাম 🎶
.
. গানের প্রত্যেক টা লাইন এর সাথে সাথে বেলার চোখের সামনে আসছে তার করা পাগলামি গুলো সাঁঝ এর জন্য। তার করা অপমান গুলো তার চোখের সামনে প্রতি টা দৃশ্য স্লাইড শো করছে। বেলার চোখের থেকে অবিরাম ধারায় বয়ে চলেছে পানি সাথে বেদ নিশান ওম রুহি প্রত্যেক এর। পুরো হল শান্ত হয়ে গেছে কোথাও কোনো আওয়াজ নেই পুরো হল শুধু বেলার গলার আওয়াজ মেতে আছে। বেলার গান গাওয়ার সময়ে তার চোখ পুরোটা সময়ে সাঁঝ এর ওপর নিবন্ধ ছিল।
.
. সাঁঝ বেলার গানের সাথে তার চোখ ও জ্বলতে শুরু করে তার চোখের কোণে ও পানি জমে যায়। কিন্তু সেটা বাইরে বের হতে দেয়। পানি টা কে চোখের মধ্যে আটকে রেখেছে। সে ও এক দৃষ্টিতে বেলার মুখের দিকে চেয়ে আছে। বেলার গাওয়া প্রত্যেক টা লাইন যে তার জন্য সেটা ও খুব ভালো করে জানে। সাথে সাথে তার চোখের সামনে ভাসতে থাকে সেই গোল্ডেন দিন গুলো।
.
. 🎶জো ভেজি থি দুয়া ও জাকে আসমা সে ইউ টাকরা গ্যায়ি কে আগ্যায়ি হে লটকে সওদা 🎶
🎶কুছ তো হে তুজসে রাবতা 🎶
🎶প্যাহলা নেশা প্যাহলা খুমার 🎶
🎶জারা জারা ব্যাহেক তা হে ম্যাহেক তা হে 🎶
🎶জিনকে লিয়ে হাম রোতে হে বো কিসি ওর কি বাহো মে সোতে হে 🎶
🎶হামারি আধুরি কাহানি 🎶
.
. আজ পুরো প্রোগ্রামে বেলা স্যাডেস্ট সং প্লে করেছে। আর পুরো হল শুধু বেলার কন্ঠের মধ্যে ডুবে গেছে। আর তাদের মধ্যে ও বেলার মত কারোর না কারোর জন্য স্মৃতি ঘুরতে থাকে। বেলার চোখের থেকে পানি গড়িয়ে পড়ছে আর মুখে রয়েছে মিষ্টি হাসি। সাঁঝ ও অপলক ভাবে তার বেলা কে দেখতে রয়েছে। বেলার কষ্ট গুলো তার এই গানের মধ্যে অনুভব করছে।
.
. গান শেষ এবার ওদের লাস্ট পারফরম্যান্স এর জন্য রেডি হয়ে গেছে স্টেজ পুরো গেট আপ চেঞ্জ হয়ে গেছে। এদিকে স্টেজ এর সামনে বসে দিশা ফোন হাতে নিয়ে মেসেজ করতে থাকে। আর তার পর মুখে ফুটে ওঠে শয়তান হাসি।
.
. 🎶 লাভলি 🎶 মাশাল্লাহ্ 🎶দিলবার 🎶ও সাকি সাকি 🎶 রাম লীলা 🎶
.
. এই পাঁচটা সং এর ম্যাশআপ বেলি ডান্স হিপহপ হাউস ওল্ড হাউস মিলিয়ে স্টেপ করবে বেলা। মিউজিক চালু হতে স্পট লাইট জ্বলে ওঠে। আর তার সাথে বেলা এন্টার করে। লং স্কির্ট ও স্কিন টাইট ক্রপ টপ। চুল গুলো পনিটৈইল করা। এই ড্রেসে বেলা কে আরো বেশি আবেদনময়ী ও আকর্ষনীয় লাগছে। সাঁঝ বেলার এই ড্রেস আপ দেখে চোখ লাল করে বসে আছে। বেলার পেট পুরোই উন্মুক্ত যার তার ফোর্সা পেটে নাভির পাশে থাকা তিল টা স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। সাঁঝ হাত মুঠো করে বসে আছে। আর বেলা তার ডান্স মাঝে মাঝে সাঁঝ এর মুখের ভাব দেখে বাঁকা হাসছে।
.
. এদিকে দিশা শয়তানি হাসি হাসছে। বেলা সাঁঝ এর দিকে তাকিয়ে নিজেকে আরো বেশি এগিয়ে দিচ্ছে আরো বেশি ফেলেক্সিবেল ভাবে প্রত্যেক টা মুভমেন্ট করছে। তার বেলি ডান্স প্রত্যেক টা মুভমেন্ট তাক লাগিয়ে দেয়ার মত। আর এর জন্য আরো বেশি রেগে যাচ্ছে সাঁঝ।
.
. বেলা ঘুরে ঘুরে স্টেপ করার সময় হঠাৎ চোখ মুখ খিঁচে ফেলে মুখ থেকে হালকা মৃদু চিৎকার ভেসে আসে। বেলা চোখ চেপে বন্ধ করে নেয় দাঁতে দাঁত চেপে ধরে পা উচু করে তোলে। সাথে সাথে সবাই আতকে ওঠে ।বেলার পায়ের থেকে রক্ত পড়ছে। পায়ে ফুটে আছে পিন। বেলা পা থেকে হাত দিয়ে ফেলে দেয়। আর তারপর আরো উদ্দাম আর বেশি উন্মত্ত হয় তার ডান্স এর মধ্যে। পা যন্ত্রণা নিয়ে তার পারফরম্যান্স করতে থাকে। তার এই রুথবা দেখে সবাই তার প্রতি আকর্ষণ হয়। বেলা সবাই কে নিজের দিকে খিঁচে নেয়।
.
. এদিকে বেলার এই অবস্থা দেখে সাঁঝ এর বুকে রক্তপাত শুরু হয়। সাঁঝ মুখে যন্ত্রণার ছাপ স্পষ্ট হয়। আর দিশা এবার যেনো পৈশাচিক আনন্দ পায়। বেলা সাঁঝ এর যন্ত্রণাকিল্স্ট মুখ দেখে মুখে বাঁকা হাসি ফুটিয়ে তোলে।
.
. ডান্স শেষ হতেই বেলা ঢোলে পড়ে। সাথে সাথে বেদ ওম রুহি ব্যাক স্টেজ থেকে ছুটে আসে। বেলা কে বেদ তুলে নিয়ে যায় গ্রিন রুমে। এদিকে পুরো হইচই শুরু হয়ে যায়। সাঁঝ চোখ মুখ শক্ত করে উঠে যায়।
.
. গ্রিন রুমে আসতে বেলা কে চেয়ারে বসিয়ে দেয়। তার পা নিয়ে ফার্স্ট এড করতে গেলে তখনই হন্তদন্ত হয়ে ঢোকে সাঁঝ। নিজের গায়ের থেকে কোট খুলে আগে বেলা কে পড়িয়ে দেয়। বেলা চোখে পানি আর মুখে বাঁকা হাসি নিয়ে তাকাতে সাঁঝ ওদের সামনে দিয়ে বেলা কে কোলে তুলে নেয়। আর এদিকে সবাই অবাক হয়ে দেখছে সাঁঝ কে। সাঁঝ মুখে স্পষ্ট রাগ আর যন্ত্রণা ফুটে আছে।
.
–“তোমরা এসো। আমি ওকে নিয়ে যাচ্ছি। সাঁঝ ওম রুহি বেদ নিশান কে বলেই বেলা কে নিয়ে বেরিয়ে যায়।
.
. সাঁঝ কোনো কথা না বলে বেলা কে গাড়িতে নিজের কোলে বসিয়ে নিয়ে ড্রাইভ করতে থাকে। না বেলার দিকে তাকিয়েছে না কোনো কথা বলেছে। চোখ পুরো লাল হয়ে আছে সাঁঝ এর মুখ শক্ত করে রেখেছে কপালের রগ গুলো ফুলে ফুলে আছে। জোরে ড্রাইভ করছে। বেলা ও কোনো কথা না বলে এক দৃষ্টিতে সাঁঝ এর মুখের দিকে তাকিয়ে আছে গলায় জড়িয়ে রেখেছে তার হাত দুটো। পায়ে বাধা সাঁঝ এর রুমাল।
.
. বেলা শুধু সাঁঝ এর যন্ত্রণা ভরা মুখ টা দেখতে আছে। গলায় থেকে একটা হাত সরিয়ে এনে সাঁঝ এর ট্রিম করা দাড়িতে হাত রাখতে সাঁঝ জোরে ব্রেক কষে গাড়ি থামিয়ে ফেলে। বেলা সাঁঝ এর বুকের সাথে ধাক্কা খায়। মুখ তুলে সাঁঝ এর দিকে তাকাতে সাঁঝ বেলার মুখ চেপে ধরে বেলার ঠোঁটে নিজের ঠোঁট মিলিয়ে দেয়। এতক্ষণ ধরে চেপে থাকা রাগ কষ্ট সব কিছু বেলার উপর দিতে থাকে। এক হাত বেলার গায়ে থাকা নিজের কোট সরিয়ে বেলার উন্মুক্ত পেটে শক্ত করে চেপে ধরে। এতে বেলা কিছুটা ব্যাথা পেলে ও কোনও নাড়াচাড়া করেনি। সেই চাই ছিল সাঁঝ যেনো তার এই রাগ এখন ঝেড়ে ফেলে।
.
. মিনিট দশেক পরে বেলার ওপর নিজের সমস্ত রাগ উগরে দিয়ে। বেলার চুলের মুঠী ধরে নিজের মুখের সামনে আনে সাঁঝ। চোখে মুখ আবার ও শক্ত হয়ে আসছে।
.
–“আমাকে জ্বালাতে পোড়াতে কি খুব ভালো লাগে তোমার হ্যাঁ। সাঁঝ দাঁতে দাঁত চেপে বলে ওঠে।
.
–” আমাকে জ্বালাতে গিয়ে দেখ যেনো তুমি নিজে এই আগুনে পুড়ে না যাও। বলে সাঁঝ আবারো বেলা কে বুকে চেপে ড্রাইভ করতে থাকে।
.
. বাড়িতে এসে সাঁঝ বেলা কে কোলে নিয়েই রুমে চলে আসে বেডে বসিয়ে দিয়ে নিজেই বেলার পায়ে মেডিসিন লাগাতে থাকে। বেলা এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে দেখছে সাঁঝ কে। এটা সত্যি তার কেয়ার নাকি লোক দেখানো কিছু সে কি সত্যি বেলার জন্য কিছু ফিল করে। হ্যাঁ করে তার চোখ বলছে সে বেলা কে অতিরিক্ত ভালোবাসে। কিন্তু কি করে ভালোবাসে। যদি ভালোই বাসে তাহলে তাকে এত অপমান করলো কেনো কিসের জন্য। বেলার চোখের সামনে আজকের প্রোগ্রাম এর আগে তার কাছে আসা সেই ছবি গুলো এর এর আগের পুরোনো বিষাক্ত স্মৃতি গুলো ভেসে উঠছে তার চোখের সামনে। এবার বেলার কাছে তার অপমান গুলো বেশি লাগছে। তার অক্ষয় আর সাঁঝ এর চোখের ওই ভালোবাসা চোখে পড়ছে না। তার কাছে এখন এগুলো নাটক মনে হচ্ছে। বেলা হ্যাচকা মেরে নিজের পা সাঁঝ এর হাত থেকে ছাড়িয়ে নেয়। এমন করাতে সাঁঝ বেলার দিকে তাকায়।
.
–“হোয়াট দ্য…। সাঁঝ কে পুরো বলতে না দিয়ে বেলা চিৎকার করে বলে ওঠে।
.
–“আই ডোন্ট নিড ইউর হেল্প। আন্ডারস্টান্ড। বেলা চিৎকার বলে ওঠে।
.
. সাঁঝ অবাক হয়ে তাকাতে বেলা আবার চিৎকার করে বলে ওঠে।
.
–“আপনার এই লোক দেখানো ভালোবাসা দেখানোর কোনো দরকার নেই। আপনার করা অপমান গুলো কি খুব কম ছিল যে এত বছর পর ও আবার আমাকে কষ্ট দিতে আপনার জীবনে টেনে এনেছেন। এখন এগুলো করে আপনি কি বোঝাতে চাইছেন যে আপনি আমাকে ভালোবাসেন আমার জন্য চিন্তা করেন। তাহলে ভুল ভাবছেন মিস্টার সাঁঝ রওশন আপনার করা অপমান গুলো আমার জীবনে পুরো দগদগে ঘা এর মত হয়ে আছে। আপনার এই সোকল্ড ভালোবাসা দিয়ে আগের করা অপমান গুলো মুছে ফেলতে পারবেন না। আমি আপনাকে ভালোবেসে ছিলাম আর আপনি কি করলেন আমাকে প্রসট্রিটিউট এর সাথে তুলনা করলেন আমাকে প্রসট্রিটিউট হওয়ার এডভাইস দিলেন। ছিঃ। ভালোবাসতে পারেন অন্তত অসম্মান টা না ও করতে পারতেন। এখন আপনাকে দেখলে আমার ঘৃণা লাগে ঘৃণা। আপনার প্রতি যে ভালোবাসা টা ছিল সেটা এখন ঘৃণাতে পরিনত হয়েছে। আপনাকে আমি ঘৃণা করি। আপনার স্পর্শে আমার দম আটকে আসে। জাস্ট হেট ইউ ।বেলা রাগে অভিমানে চিৎকার করে বলে ওঠে। চোখের থেকে গড়িয়ে পড়ছে অঝর ধারায় পানি।
.
. এদিকে বেলার কথা শুনে সাঁঝ এর মাথা পুরো হ্যং মেরে গেছে। সে বুঝতে পারছে না বেলা কি বলছে এইসব। বেলার কথা শুনে তার বুকে রক্তাক্ত হতে শুরু করেছে। সে তার বেলা কে প্রসট্রিটিউট এর সাথে তুলনা করেছিল। তাকে প্রসট্রিটিউট হওয়ার জন্য এডভাইস দিয়েছে। এটা কি করে সম্ভব। সাঁঝ এর মাথার ভিতরে যন্ত্রণা শুরু হয়েছে। সে এই কথা শুনে আতকে উঠছে। নিজের মাথায় দু হাত দিয়ে চেপে ধরে। বেলার পায়ের ধারে বসে। মাথা টা জোরে দু দিকে নাড়িয়ে নিয়ে বেলার দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে।
.
–“তুমি এইসব কি বলছো। তোমার মাথা ঠিক আছে তো। পাগল হয়ে গেছ নাকি কি সব বকে যাচ্ছ। আমি তোমাকে অপমান করেছি? কি করেছি আমি বল তুমি। কি বলেছি। সাঁঝ করুন ভাবে বলে ওঠে। তার গলার আওয়াজ ফুটে আছে যন্ত্রণা মাখা।
.
–” আমি আপনার সাথে কোনো কথা বলতে চাই না। আপনাকে আমি আমার চোখের সামনে সহ্য করতে পারছি না। প্লিজ আমাকে মুক্ত করে দিন। বলে উল্টো ঘুরে শুয়ে কান্না করতে থাকে।
.
. সাঁঝ বেলার কষ্ট যন্ত্রণা দেখে উঠে বারান্দায় চলে যায়। ফোন কানে নিয়ে বলে ওঠে।
.
–” আজকের ঘটনার পুরো রেজাল্ট আমার চাই। এর পিছনে কে আছে সেটা খুঁজে বের করো।
.
. সাঁঝ ফোন কান থেকে নামিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকে। তার মনের মধ্যে এখন তুমুল ঝড় উঠেছে। বেলার কথা গুলো তার কানে বাজছে। কি বলছিল বেলা ওই সব। প্রসট্রিটিউট? সাঁঝ এর মাথায় এখন হাজারো চিন্তা প্রশ্নের জট পাকিয়ে গেছে। সে কিছু থেকে কিছু উদ্ধার করতে পারছে না। কি করেছে সে। বেলা যে বারবার বলছে। বেলার তাকে বলা কথা টা মাথায় আসতে তার বুকের মধ্যে যেনো কেউ তীব্র গতিতে আঘাত করে চলেছে। তার বেলা তাকে ঘৃণা করে। এটা সে কিছুতেই মানতে পারছে না। এত দিন তো সে শুধু বেলার করা পাগলামি গুলো স্মৃতি হিসাবে চোখের সামনে সাজিয়ে রেখে বেঁচে এসেছে। তাহলে? হ্যাঁ এর মধ্যে নিশ্চয়ই কোনো রহস্য আছে যেটা আমাকে খুঁজে বের করতে হবে। আমি বেলার চোখে আমার জন্য ভালোবাসা দেখেছি। কিন্তু সেটা ওর মাঝে আটকে আছে। আমাকে আমার বেলা কে কষ্টের থেকে বের করতে হবে। সাঁঝ নিজের মনে ভেবে ওঠে।
.
. রুমে এসে দেখে বেলা কাঁদতে কাঁদতে ঘুমিয়ে পড়েছে। বেলার পাশে বসে বেলা কে ঠিক শুইয়ে দেয়। এক দৃষ্টিতে বেলার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে। কান্না করার ফলে চোখ মুখ পুরো ফুলে লাল হয়ে আছে। মুখে চোখের পানির দাগ ফুটে আছে। সাঁঝ বেলার পাশে শুয়ে। বেলা কে বুকের ওপর নিয়ে জড়িয়ে নেয় নিজের সাথে। বেলা ও ঘুমের মধ্যে সাঁঝ কে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে। সাঁঝ এর বুকে মুখ ঘসতে থাকে। বেলার এমন করাতে সাঁঝ এর মাথায় রক্ত উঠে যায়। নিজেকে খুব কষ্টে সংযত করে। শেষে বেলার ঘাড়ে মুখ গুঁজে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করে।
——————
–“বেলা তুই ঠিক আছিস এখন। বেদ চিন্তিত হয়ে বলে ওঠে।
.
–” হুম আমি কাল যা ভয় পেয়ে গেছিলাম তোর পায়ের অবস্থা দেখে। রুহি বলে ওঠে।
.
–“আরে ইয়ার আমি তো এটাই বুঝতে পারছি না যে স্টেজ এর মাঝে পিন কোথায় থেকে আসলো। নিশান বলে ওঠে।
.
–” আরে আমরা যখন ছিলাম স্টেজ তখন তো কিছুই ছিল না। তাহলে? ওম বলে ওঠে।
.
. এরা সকাল সকাল রওশন ম্যানসনে চলে এসেছে বেলা কে দেখতে। বেলা সোফায় চুপ চাপ বসে আছে। বেদরা আসতে সাঁঝ নিজে বেলা কে কোলে করে এনে বসিয়ে দিয়ে গেছে।
.
–” আরে মিষ্টি ভাবি কি করে কি হল এই সব। সারা বাড়িতে ঢুকতে ঢুকতে বেলা কে দেখে বলে ওঠে।
.
. সারা কাল তাদের সাথে ছিল না। বাইরে ছিল তাই এইসব কিছুই জানে না।
.
–” আরে এই সব কিছুই না। এসো বসো। বেলা সারা কে বলে ওঠে।
.
–“কিছু না মানে তোমার পায়ে ব্যান্ডেজ কেনো। সারা বলে ওঠে।
.
–“ওহহো ।কিছুই না বেবি। একটু খানি কেটে গেছে। বেলা সারার গাল টেনে দিয়ে বলে ওঠে।
.
–“ইয়ার সারা।
.
. কারোর গলা শুনে সবাই পিছনে তাকাতেই দেখে একটা মেয়ে ল্যাগেজ টানতে টানতে আসছে। মাথা ঝুকিয়ে নিজের পায়ের সাথে বেঁধে যাওয়া ট্রলির লেস ছাড়তে ব্যস্ত। এদিকে ওম নিশান বেদ রুহি বেলা অবাক হয়ে দেখছে মেয়েটার দিকে।
.
–” আরে জাকিয়া বেবি ।তুই ওগুলো ছাড়। ওগুলো কেউ নিয়ে আসবে। এখন তুই এদিকে আয়। সারা বলে ওঠে।
.
. মেয়েটা মাথা উচু করে তোলার সাথে আগে চুল গুলো সরে গিয়ে মুখটা দৃশ্য মান হয়। আর এদিকে ওম এর চোখ থমকে যায়। হার্ট জোরে জোরে বিট করতে থাকে। মেয়েটা তাদের দিকে এগিয়ে আসছে। পরনে একটা অফ সোল্ডার ওয়ান পিস। যেটা হাঁটু পর্যন্ত সীমিত। মুখে লেগে আছে একটা মায়া মায়া ভাব। চোখ গুলো বড় বড় করে তাদের দিকে এগিয়ে আসছে। ওম এর কাছাকাছি আসতে মেয়েটা ও দাঁড়িয়ে যায়। মুখে ফুটে একটা উত্তেজিত হাসি। যেনো হঠাৎ করে কোনো চাওয়া পূর্ণ হয়ে গেছে। ওম ও তাকিয়ে আছে। এখন দুজনের দৃষ্টি একে অপরের দিকে নিবন্ধ।
.
. ওখানে থাকা বাকিরা অবাক হয়ে তাদের দিকে তাকাতে আছে। তাদের দুজনের ভাব মূর্তি লক্ষ করছে সবাই চোখ বড় বড় করে সাঁঝ ও সিঁড়ি দিয়ে নামতে নামতেই ওদের এই দৃশ্য দেখছে অবাক হয়ে।
.
–“ও.. ম। বলেই আসতে আসতে ঢোলে পড়ে ওম এর গায়ে। আর এদিকে ওম ও ওকে ধরে নেয়।
.
.ওদের এই দৃশ্য দেখে চোখ বড় বড় করে একে অপরের দিকে তাকায়।
.
–” প্রেমের ঘন্টা বেজে গেলো। সবাই এক সাথে বলে ওঠে।
.
. #তোর_আসক্তি_পাগল_করেছে_আমায়
#Sabiya_Sabu_Sultana(Saba)
#পর্ব_১৬
..বাড়ির ড্রইং রুমে দাঁড়িয়ে সবাই হা করে সামনে চলতে থাকা দৃশ্য দেখছে। সাঁঝ সিঁড়ি থেকে নেমে বেলার পাশে এসে বসে বেলার দিকে একবার ইশারা জিজ্ঞেস করে কিন্তু কোনো সদুত্তর না পেয়ে আবারো সামনে তাকায়।
.
.ওম এখনও ধরে আছে জাকিয়া বলে মেয়েটা কে। এদিকে বেদ নিশান রুহি সারা ও ওদের চারদিকে ঘিরে দাঁড়িয়ে ওদের দিকে একটু ঝুঁকে ওদের লক্ষ করতে থাকে। কিন্তু একি ওরা তো পুরো পুতুল হয়ে গেছে। সাঁঝ এর গলা খাকারি দিতেই ওম এর ঘোর কেটে যায়। আসে পাশে তাকাতে দেখে সব কোটা ভ্রু কুঁচকে তাদের দিকে তাকিয়ে আছে। এদিকে ওম এর ঘোর কেটে গেলেও জাকিয়া এখনও তার দিকে ড্যাবডেবিয়ে তাকিয়ে আছে। ওম ওকে তুলে সোজা করে দাঁড় করিয়ে দেয়। আর তার পরেই শুরু হয় লাফালাফি।
.
–” ওহ মাই গড ওম আমার সামনে দাঁড়িয়ে আছে আমি বিশ্বাস করতে পারছি না। জাকিয়া লাফিয়ে বলে উঠে।
.
. সবাই এখন প্রশ্ন সূচক চোখে ওম এর দিকে তাকিয়ে আছে।
.
–” ইয়ার সারা আমাকে আগে কেনো বলিস নি যে ওম আমাদের বাড়িতে আছে। হায়ে। বলেই সারার গায়ে হেলান দেয় জাকিয়া।
.
–“ওম! কি রে কি চলে হুম। বেলা গম্ভীর ভাবে বলে ওঠে।
.
. আর সবাই একটাক ঘুরে যাচ্ছে ওম কে। এদিকে ওম তো পুরো ঘাবড়ে যাচ্ছে ওদের চাহনি দেখে।
.
–“ইয়ার বিশ্বাস কর কিচ্ছু চলেনা। ওম অসহায় হয়ে বলে ওঠে।
.
–“না না অনেক কিছু চলে। সত্যি বলছি। জাকিয়া বলে ওঠে।
.
.আবার সবাই তাকাতে ওম এবার ধমকে ওঠে।
.
–“এই কি চলে হ্যাঁ কি চলে। আমি তো তোমাকে চিনি না। তাহলে কিছু চলবে কি করে। ওম বেচারা মুখ করে বলে ওঠে।
.
–” কিন্তু আমি তো চিনি তোমাকে। ইস আমার কত দিনের স্বপ্ন পূরণ হল। তোমাকে চোখের সামনে দেখতে পেলাম। এতদিন আমি তোমাদের ব্র্যান্ড এর সমস্ত প্রোগ্রাম দেখেছি। জাকিয়া বলে ওঠে।
.
–” ওহ তাই বল। ওম বলে ওঠে।
.
–“দেখলি তো কিছু চলে না বললাম না। ওম এবার বেলার দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে।
.
. সবাই এবার হু হা করে হেসে ওঠে ওম এর বেচারা টাইপ মুখ দেখে। সারা জাকিয়া কে টেনে নিয়ে যায় এবার বেলার কাছে।
.
–“মিষ্টি ভাবি এই হল জাকিয়া আমার কাজিন। আমার পিপিন এর এক মাত্র মেয়ে। ওরা কানাডার থেকে। সারা বলে ওঠে।
.
–” ওয়াও মিষ্টি। তুমি তো খুব সুন্দর দেখতে। ছবির থেকে ও তোমাকে সামনে থেকে খুব সুন্দর লাগে। জাকিয়া বলে ওঠে।
.
–“কিরে জিকু এসেই শুরু হয়ে গেলি। সারিফ সিঁড়ি দিয়ে নামতে নামতেই বলে ওঠে ।
.
–“ভাই ।বলেই দৌড়ায়।
.
–“আমাকে তো কারোর চোখে পড়ে না। সাঁঝ বসে বসে বলে ওঠে।
.
–“তুমি ও তো আমাকে দেখতে পাওনি। জাকিয়া মুখ বেকিয়ে বলে ওঠে।
.
–“তবেরে বলেই দৌড়াতে লাগে সাঁঝ জাকিয়ার পিছন পিছন।
.
–“সাঁঝ বেবি ।
.
. হটাৎ পিছন থেকে ন্যাকা আওয়াজ আসতেই সবাই থমকে যায়। সবাই ঘুরে দেখে দিশা হেলে দুলে দশ ইঞ্চি হাই হিল পরে গটগট করে এগিয়ে আসছে। পরনে শর্ট স্কির্ট ও ক্রপ টপ। যেটা গায়ের সাথে চেপে বসে আছে। তার ওপরে একটা নেট এর লং ওভার কোট চাপানো।
.
. এসেই সাথে সাথে সাঁঝ কে জড়িয়ে ধরে। বেলা ওদের দিকে দেখে একটা তাচ্ছিল্য ভরা হাসি দিয়ে চোখ ঘুরিয়ে নেয়। এটা কারোর চোখে না পড়লে ও আজ ঠিক সাঁঝ এর চোখে পড়ে গেছে। দিশার প্রতি বেলার দৃষ্টি একদম অন্যরকম যেটা আজ খেয়াল করছে সাঁঝ। আসলে কাল রাতের ঘটনার পর থেকে সে খুব সতর্ক থাকছে। তার চোখ কান খোলা রেখেছে বেলার দিকে। সাঁঝ এর ও খুব একটা পছন্দ নয় এই ভাবে দিশার গায়ে পড়া টা। সে যতো টা সম্ভব এড়িয়ে যায়। কিন্তু আজ যেনো বেলার দৃষ্টি তাকে অনেক কিছু ভাবতে বাধ্য করছে।
.
. বাড়ির সবাই কেমন চুপ চাপ হয়ে গেছে। জাকিয়া সারা ও চুপ হয়ে গেছে আর বেদ ওম রুহি নিশান ও কেমন একটা বিরক্ত বোধ করছে দিশা কে নিয়ে। সাঁঝ বেলার সাথে সাথে বেদ নিশান ওদের দিকে তাকাতে ও ওদের চোখ মুখে ও একই রকম প্রতিক্রিয়া দেখতে পাচ্ছে দিশার জন্য কিন্তু কেনো। এটাই মাথার ভিতরে ঘুরছে সাঁঝ এর।
.
–“সারা তুমি জাকিয়া কে নিয়ে রুমে যাও। আমি তোমাদের খাবারের ব্যবস্থা করতে বলছি। বেলা মলিন হেসে বলে ওঠে।
.
. সারা জাকিয়া সবার দিকে একবার দেখে নিয়ে ওপরে চলে যায়।
.
–” বেবি । লেট হয়ে যাচ্ছে আমাদের। চলো এবার আমরা যাই। দিশা সাঁঝ এর হাত জড়িয়ে রেখে বলে ওঠে।
.
–“হুম । বলে সাঁঝ দিশা থেকে হাত ছুটিয়ে নিয়ে বেলার পাশে এসে বসে। বেলা দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে।
.
–“একদম লাফালাফি করবে না শান্ত হয়ে থাকবে। আর ঠিক টাইমে মেডিসিন আর খাবার টা খেয়ে নিবে। বলেই সাঁঝ বেলার কপালে একটা গভীর চুমু খায় সবার সামনে।
.
. বেলা কোনো কথা বলে না। সে শুধু সাঁঝ এর কান্ড কারখানা দেখে যাচ্ছে সে কিনা তাকে দিশা সামনে চুমু খেলো।
.
–” বেদ আমাকে একটু রুমে দিয়ে আয়তো। বেলা বলে ওঠে।
.
. এদিকে সবাই সাঁঝ এর দিকে তাকিয়ে আছে । সাঁঝ কোনো কথা না বলে বেলা কে কোলে তুলে নেয়। বেলা ও কোনও কথা না বলে চুপ করে সাঁঝ এর বুকের সাথে লেগে থাকে। বেলা কে রুমে এনে বিছানায় বসিয়ে দেয়।
.
–” আপনাকে বারবার বলেছি আমার থেকে দূরে থাকুন প্লিজ আমি আপনার স্পর্শ টা নিতে পারি না। বেলা মুখ ঘুরিয়ে বলে ওঠে।
.
. সাঁঝ কোনো কথা না বলে বেলার মুখ নিজের দিকে ঘুরিয়ে এনে বেলার ঠোঁটে নিজের ঠোঁট রাখে। বেলা প্রথমে ছটফট করলে সাঁঝ এর আরো শক্ত করে চেপে ধরতে বেলা চুপ হয়ে যায়। মিনিট দশেক পরে বেলার ঠোঁটের থেকে সরে এসে বেলার কপালে মাথা ঠেকিয়ে বলে ওঠে সাঁঝ।
.
–“তুমি চাইলে ও তুমি আমার আর তুমি না চাইলে ও তুমি আমার। আর তুমি আমার স্পর্শ না চাইলে ও তোমাকে নিতে হবে। তুমি আমার স্ত্রী। তাই তোমার শরীরে শুধু আমার স্পর্শ রাঙা থাকবে। আমার রঙে রঙিন হবে খুব তাড়াতাড়ি তুমি তৈরী থাকো। এতদিন ছাড় দিলে ও এখন এর তোমাকে কোনো ছাড় দেবো না। তুমি আমার তাই কোনো প্রশ্নই ওঠে না। সাঁঝ এর তীক্ষ্ণ পুরুষালি কন্ঠে বেলা কেঁপে কেঁপে ওঠে।
.
. সাঁঝ এর চোখ রুমের বাইরে পড়ে। দরজার পাশেই কেউ একটা দাঁড়িয়ে ছিল। শুধুমাত্র তার হাত দুটোই দেখা যাচ্ছিল। যেটা সে তীব্র রাগে মুচড়াতে ছিল। সাঁঝ একটা রহস্যময় হাসি দেয়। ততক্ষণে বাকিরা রুমে চলে আসে।
.
–” ওর খেয়াল রাখবে। যেনো রুম থেকে বেরোতে না পারে। সাঁঝ সবার দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে বেরিয়ে যায়।
.
. এদিকে সাঁঝ এর চলে যেতে সবাই বেলার ওপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে। বেলার বিরক্তিকর মুখ টা দেখে সবাই হাসতে থাকে। সবাই মিলে মেতে ওঠে হাসি ঠাট্টাতে
—————–
–” আকাশ কালকের আপডেট কি। কে ছিল ওই ইন্সিডেন্ট এর পিছনে। সাঁঝ গম্ভীর ভাবে বলে ওঠে।
.
–“স্যার ওরা ধরা পড়েছে। ওদের কে হায়ার করা হয়েছিল। নাম জানে না। তাদের কে শুধু ফোন ইন্সট্রাকশন দেয়া হয়েছিলো। আকাশ বলে ওঠে।
.
–“ওদের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ফাইলে মুখ গুঁজে বলে ওঠে সাঁঝ।
.
–“ইয়েস স্যার। আকাশ বলে ওঠে।
.
–” ওকে ।শোনো তোমাকে কিছু ইম্পোর্টেন্ট কাজ সারতে হবে। এটা খুব জরুরী। সাঁঝ বলে ওঠে।
.
–” ওকে বলে বেরিয়ে যায় কেবিন থেকে।
.
. সাঁঝ আকাশ কে বেরিয়ে যেতেই ল্যাপটপ থেকে মুখ তোলে। টেবিলে থাকা গ্লোব টা ঘোরাতে থাকে। তার মাথায় কিছু খিচুড়ি পাকছে। মুখে আছে বাঁকা হাসি। তার মাথায় শুধু এখন একটাই কথা ঘুরছে বেলার বলা কথা গুলো। কি ছিল বেলার কথা গুলো। কিছুতো আছে বেলার কথার মধ্যে। যে মেয়ে তাকে পাগল এর মত ভালোবাসত সে তাকে ঘৃণা করে এটা তো সে মানতে পারছে না কিছুতেই। যা কিছু খিচুড়ি থাকুক না কেনো। আমাকে সব কিছু জানতে হবে।
.
.সাঁঝ ল্যাপটপ অন করে আজকে সকালের ফুটেজ অন করে। এটা পুরো রওশন ম্যানসনের দৃশ্য দেখায়। রওশন ম্যানসনের কোনায় কোনায় হিডেন ক্যামেরা লাগানো আছে। আর এর প্রোগ্রামিং সিস্টেম সাঁঝ তার ল্যাপটপে সেট করে রেখেছে। এখান থেকে সকালের ফুটেজ অন করে। সাথে সাথে চোখে মুখে ফুটে হিংস্র বাঁকা হাসি।
.
–“আমার যা বোঝার বুঝে গেছি। এবার সবাই দেখবে এই সাঁঝ রওশন এর আসল রূপ। কত টা ভয়ঙ্কর কত টা হিংস্র হতে পারে। সাঁঝ দাঁত কিড়মিড় করে বলে ওঠে।
.
–” ঘরওয়ালি এবার তুমি দেখবে তোমার এই সাঁঝ এর পাগলামি। এর আগে আমি তোমার পাগলামি দেখে ছিলাম নিজের জন্য। আর আজ থেকে তুমি দেখবে তোমার জন্য সাঁঝের পাগলামি তার বেলার জন্য।
.
–” ওহহহহো তুমি তো আবার আমাকে জিন্দেগি বল তাই না। এটা আমি জানি। তোমার করা সব পাগলামি গুলো আমি জানতাম। তোমার করা সব কৌশল ও আমি জানতাম। আমি শুধু চুপ করে তোমার পাগলামি গুলো দেখতাম আর মনে মনে হাসতাম।কিন্তু আমি তোমাকে আমার থেকে দূরে করেছিলাম তোমার ওই পাগলামির জন্যই। শুধু তোমার ভালো জন্য। একদিন তুমি সব জানতে পারবে। আমি যেদিন তোমাকে আমার ভালোবাসা আদরে তোমাকে মুড়িয়ে নেবো সেদিন আমি তোমাকে বলব। তার আগে নয়। আমি চাই কোনো পুরোনো কথা জেনে নয়। নতুন করে আমাকে ভালোবেসে আমার কাছে আসো। এর জন্য যতো পাগলামি করতে হোক না কেনো। তোমার জন্য আমার জান ও হাজির জানেমান। সাঁঝ ল্যাপটপ থাকা বেলার ছবির দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে।
————-
–“আরে কি করছেন ছাড়ুন আমাকে। কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন। রুহি নিজেকে ছাড়াতে ছাড়াতে বলে ওঠে।
.
. এদিকে তার কোনো কথা না শুনে সারিফ তাকে রুমে এনে দেয়ালের সাথে চেপে ধরে। তার কোমরে হাত রেখে এক দৃষ্টিতে তার চোখের দিকে তাকিয়ে আছে। আর এদিকে রুহি এদিকে ওদিকে করছে। শেষে সারিফ বিরক্ত হয়ে রুহির গাল চেপে ধরে। এদিকে সারিফ এর এমন করাতে রুহির দম আটকে আসে সোজাসুজি সারিফ এর চোখের দিকে তাকাতে পারছে না।
.
–“এত ছটফট করো কেনো? চুপ করে দাঁড়াতে পার না। মৃদু স্বরে বলে ওঠে রুহির কানের কাছে মুখ নিয়ে গিয়ে।
.
. এদিকে রুহির অবস্থা পুরো মর মর ভাব। তার হাত পা সব হালকা হয়ে যাচ্ছে দম আটকে আসছে মনে হচ্ছে এখুনি ধূপ করে পড়ে টুপ করে মরে যাবে টুক করে ওপরে চলে যাবে।
.
. তার এই ভাবনার মধ্যে হঠাৎ করে নিজের ঠোঁটে হালকা ঠান্ডা ভেজা ঠোঁটের স্পর্শ অনুভব করে আর সাথে সাথে পুরো ফ্রিজ হয়ে যায়। তাকে এই অবস্থায় রেখে সারিফ হাসতে হাসতে বেরিয়ে রুম থেকে। আর এদিকে এখনও রুহি ফ্রিজ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। খানিক পরে ডাকা ডাকি শুনে ঘোর কেটে যায়। আসতে আসতে মিউজিক রুম থেকে গিটার নিয়ে বেলার রুমের দিকে এগিয়ে যায়। আসলে সে গিটার আনতে যাচ্ছিলো আর তার মাঝে সারিফ হামলা করে বসে।
.
. বেলার রুমে ঢুকতে সবাই রুহির এমন রোবট ভাব দেখে মুখ চাওয়া চায়ি করে। বেদ আর নিশান তাকে ধাক্কা দিতে সে স্বাভাবিক হয়। তবে পুরোপুরি নয়। তারা বেলার মন খারাপ দেখে তার মন ভালো করার জন্য বেলার পিছনে লেগে যায়। বেদ নিশান ওম রুহি ওরা সবাই জানে বেলার মন খারাপ কেনো তাই তারা আনন্দে মাতে। ওম গিটার বাজিয়ে গেয়ে ওঠে। আর এদিকে জাকিয়া ঘোরের মত ওম কে দেখতে থাকে।
.
. 🎶কাভি কাভি আদাতে
জিন্দেগি মে ইউহি কই আপনা লাগতা হে
কাভি কাভি আদাতে
বিছাড় জায়ে তো এক স্বপ্না লাগতা হে 🎶
.
. নিশান এবার পাশে থেকে বেলার সামনে বসে মুখ দুটো হাতে টেনে ধরে গেয়ে ওঠে।
.
. 🎶এইসে মে কই কেইসে আপনে
আসুও কো বেহনে সে রোকে
ওউর কেইসে কই সোচ দে
এভরিথিং’স গন্না বি ওকে 🎶
.
. বেলা নিশান এর হাতে থাপ্পড় লাগিয়ে সরিয়ে দিয়ে পা টেনে নিয়ে বিছানা থেকে নামতে যায়। তখনই পিছন থেকে বেদ বেলার হাত টেনে এনে মাঝে বসিয়ে দেয়। আর নিজেও সামনে বসে মুখ টা অসহায় করে বেলার কোলে মাথা রেখে ওপরে দিকে বেলার মুখের দিকে তাকিয়ে গেয়ে ওঠে।
.
. 🎶 কাভি কাভি তো লাগে
জিন্দেগি মে রাহি না খুশি
আউর না মাজা
কাভি কাভি তো লাগে
হার পাল মুস্কিল ওউর
হার পাল সাজা 🎶
.
. এবার পিছন থেকে সারা আর জাকিয়া এসে ও জড়িয়ে ধরে বেলা কে। রুহি বেলা কে কাতুকুতু দিতে দিতে গেয়ে ওঠে।
.
. 🎶এইসে মে কই কেইসে মুসকুরায়ে
কেইসে হাসদে খুস হোকে
ওউর কেইসে কই সোচ দে
এভরিথিং’স গন্না বি ওকে 🎶
.
. সবাই মিলে এমন করতে বেলা হেসে ওঠে। তার এই চার দোসর এর জ্বালায় যে একটু মুখ গোমরা রাখবে সেটার ও উপায় নেই। তার একটু মন খারাপ হতে না হতে চার জন উঠে পড়ে লাগবে তার মন ভালো করার জন্য। আর এখন তাদের সাথে জুটেছে আরো দুজন সারা আর জাকিয়া। হাসি মজা করে গান গেয়ে বেলার মন ভালো করতে লেগে যায় সবাই।
—————
–“তুমি এই ভাবে হাসতে থাকো জান। তোমার এই হাসিতে আমার জান ও কবুল। সত্যি তোমার চার দোসর তোমাকে আগলে রাখে তাই তো আমি ওদের কাছে তোমাকে ছেড়ে এলাম তোমার মন ভালো করার জন্য। সাঁঝ ল্যাপটপ এর চালু থাকা ফুটেজ এর দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে ।যেখানে ওদের সবাই কে দেখাচ্ছে।
.
–“এবার থেকে তোমার মুখের হাসি টা আর যাবে না জান। মুখে থাকবে বিরক্তি আর মনে থাকবে হাসি। তুমি তৈরী হয়ে যাও জান আমার লাভ টর্চার সহ্য করার জন্য। এবার থেকে দেখবে সাঁঝ এর এক নতুন রূপ এক নতুন আসক্তি ভরা পাগলামি। তোমার নেশায় অতিরিক্ত মাতলামি যেটা তুমি সইতে পারবে না। আবার দূরে সরে যেতে ও পারবে না। এবার থেকে দেখতে থাকো আমি কি করি। তৈরী হও। আমার নেশা যুক্ত আসক্তি ভরা হিংস্র অতিরিক্ত ভালোবাসা দেখার জন্য জান। সাঁঝ ল্যাপটপ এর মধ্যে বেলার প্রতিচ্ছবি কে দেখে মুখে বাঁকা হেসে বলে ওঠে।
.
.
.
. 💝💝💝
.
. চলবে….
.
. ভুল ত্রুটি মার্জনা করবেন । সবাই নিজেদের মতামত জানাবেন। 😊 😊 😊
#
.
. 💝💝💝
.
. চলবে….
.
. ভুল ত্রুটি মার্জনা করবেন রি-চেক করা হয়নি। সবাই নিজেদের মতামত জানাবেন।
.
.(2780 টা ওয়ার্ড এর লেখা পোস্ট করেছি। এর থেকে আর বড় করতে পারবো না। আর মাইয়া তোমাকে দিয়ে দিলাম ওম কে। এবার খুশি তো। আজকের পার্ট নিয়ে তোমাদের অভিব্যক্তি জানাও। তোমাদের মন্তব্যের অপেক্ষায় আমি। গুণীত এভরিওয়ান।)
#