#তোলপাড়💓
#সিজন২
#পর্বঃ৩১
#শান্তনা_আক্তার(Writer)
জিসানকে এক প্রকার জোর করে জান্নাতের রুমে প্রবেশ করানো হলো। জিসান ধির পায়ে জান্নাতের দিকে এগিয়ে গেল। জিসানের হাতে ফোন ছিল। সে আচমকাই হাতের ফোনটা বিছানায় ছুড়ে উচ্চশব্দে বলে উঠল,
‘নিজের কার্যসিদ্ধি হাসিল করে কলিজা ঠান্ডা হয়েছে তো তোর?’
জান্নাত মাথার ঘোমটা তুলে থুতুনি উঁচিয়ে চাইলো। বেশ অসহায় ভঙ্গিতে বলল জান্নাত,
‘কার্যসিদ্ধি বলো না তুমি। এটা তোমার প্রতি আমার ভালবাসা।’
জিসান মুষ্টিবদ্ধ করে ফেলল। চোখ ক্রমশই লাল হতে লাগলো। সে নিজ চালে বলল,
‘ভালবাসা! তুইতো শুনেছিলি আমি তিয়াসাকে ভালবাসার প্রপোজাল দিয়েছিলাম। তিয়াসার বয়স খুবই কম বলে ভালবাসা জিনিসটা বুঝতে পারছে না। বুঝলেও মানতে পারেনি। তাইতো ফিরিয়ে দিয়েছিল৷ তবে কিছু সময় পর বুঝতে শিখলে হয়তো মেনে নিত। কিন্তু তুই তার আগেই সব ঘেটে দিলি। কেন করলি বল? জেনে শুনে কেন আমার থেকে সব কেড়ে নিলি?’
‘তুমি আমার দিকটা দেখলে না একটাবার? আমিও তো তোমাকে ভালবাসি। ভালবাসা কি অন্যায়? আমি তো তোমাকে ছাড়া থাকতে পারতাম না কোনভাবেই। আমি মানছি আমি ভুল পদ্ধতি অনুসরণ করেছি৷ কিন্তু তুমি বিশ্বাস করো, ওই মুহুর্তে আমার মাথা কাজ করছিল না। আমি তো সুইসাইড করতে চেয়েছিলামই। আমার উদ্দেশ্য ছিল সুইসাইড। কিন্তু সামান্য রক্ত দেখে সেন্সলেস হয়ে যাই। ফলে আর সুইসাইড করতে পারিনি। মরে গেলে কখনোই তোমার গলার কাটা হতাম না আমি।’
জিসান গিয়ে জান্নাতের গলা টিপে ধরে বলল,
‘তুই মরে গেলেও ভালো হতো। ছুরিটা গলায় কেন বসালি না? তাহলে তো আজ এই দিন দেখতে হতো না। বরং বিয়ে বাড়ির হৈ-হুল্লোড়ের বদলে তোর নামে মরাকান্নার আসর বসত।’
জিসান এখনো জান্নাতের গলা টিপে রেখেছে। শেষে জান্নাত নিশ্বাস না নিতে পেরে জিসানের শেরয়ানি খামছে ধরলো৷ জিসান পরিস্থিতি বুঝে ঝামটা মেরে জান্নাতকে ফেলে দিল বিছানায়। তারপর তুমুল রাগ নিয়ে বেলকনিতে চলে গেল। সেখানে গিয়ে রাগ নিবারণ করতে বসানো চেয়ারে সজোরে এক লাথি মারল। সেখান থেকে উৎপন্ন বিকট শব্দ জান্নাতের কানে গিয়ে ধাক্কা খেল। ভয়ে গুটিশুটি মেরে বিছানায় পড়ে রইলো জান্নাত। চোখ বেয়ে অঝোরে পানি ঝরছে তার। জান্নাত বুঝতে পারলো, ভালবাসা পেতে গিয়ে ভালবাসাকেই বলি দিল সে। এভাবে ভালবাসার মানুষকে পাওয়া যায়না। ভালবাসার মানুষকে পেতে হলে, মনের মিল থাকতে হয়। থাকতে হয় একে অপরের প্রতি সহানুভূতি। যা জান্নাত জিসানের চোখে দেখতে পায়নি। তাইতো ভেঙে চুরমার হয়ে চোখের পানিতে ভাসছে সে।
____________________
দরজা লাগানোর শব্দে রিমি বুঝে গেল আহসান এসেছে। ঠোঁটের কোণে হাসি ফুটলো রিমির। হার্টবিট কয়েকশ গুন বেড়ে গেল নিমিষেই। নিঃশব্দে আহসানের হাটার শব্দ শুনতে ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়ে রিমি। আহসান ঘোমটা তুললে রিমি কি রিয়েকশন দেবে না দেবে তা ভেবে খুন প্রায়। আরও নানান ভাবনা ভর করলো রিমির মাথায়। তবে রিমির সকল ভাবনা পাল্টে দিয়ে আহসান বলল,
‘ভারী কাপড়গুলো খুলে নরমাল কাপড় পড়ে নাও। আমি বারান্দায় আছি। কিছু কথা আছে তোমার সাথে।’
রিমির কাছে আহসানের কথাটি অতীব বিস্ময়কর ঠেকলো। অবাকের থেকেও বড় কিছু থাকলে সেটাও যেন হার মেনে যেত রিমির ভাব ভঙ্গির কাছে। রিমি কিছু বলল না। চুপচাপ বাধ্য মেয়ের মতো আহসানের নির্দেশ অনুযায়ী ড্রেস চেঞ্জ করতে চলে গেল। মিনিট দশেক পর বেরিয়ে আসলো ওয়াশরুম থেকে। বের হয়ে লেহেঙ্গাটা বিছানার উপর রেখেই বারান্দার দিকে পা বাড়ালো। আহসান দুহাত পেছনে গুজে উল্টো দিক ফিরে দাঁড়িয়ে আছে। আহসানের পড়নে টি-শার্ট আর টাউজার। রিমি গলা খাঁকারি দিলে আহসান পেছন ফিরে তাকাল। সম্পূর্ণ জর্জেটের কালো শাড়ি, হাফ হাতা ব্লাইজ, খোলা চুল সাথে সাদা পাথরের চিকচিক করা নাকের নোলক রিমির সৌন্দর্যে আলাদা প্রভাব ফেলেছে যেন। আহসান মোহিত হয়ে গেল চোখের পলকেই। রিমি আহসানের সামনে গিয়ে গিয়ে নিঁচু স্বরে বলল,
‘কিছু কথা ছিল তোমার। বলতে চেয়েছিলে।’
আহসান ঘোর কাটিয়ে বাস্তবে ফিরল। সঙ্গে সঙ্গে আবারও গম্ভীরতা গ্রাস করে ফেলল আহসানকে। সে বলল,
‘হুম। খুব জরুরি একটা কথা। অন্য ভাবে ডিসকাশন বলা যায়।’
‘ডিসকাশন?’ প্রশ্ন করল রিমি।
‘হুম ডিসকাশন। আমি একটা ঝামেলার মধ্যে তলিয়ে গিয়েছি। তোমার হেল্প চাই। যেহেতু তুমি আমার অর্ধাঙ্গিনী, সেহেতু তুমি আমার প্রতিটি পদক্ষেপের সাথে ওতোপ্রোতো ভাবে জড়িত।’
‘আমি কিছুই বুঝতে পারছি না। আমি কি কিছু ভুল করে ফেলেছি?’
‘না, কেন? ভুল করতে যাবে কেন তুমি?’
‘তাহলে তুমি এরকম অদ্ভুত আচরণ কেন করছো? আমরা এখন হাসবেন্ড-ওয়াইফ। তুমি কি বুঝতে পারছো আহসান?’
‘হুম সব বুঝতে পারছি। আর তোমার বিচলিত হওয়ার কারণ টাও ঠাওরাতে পারছি।’
রিমি আলতো করে আহসানের গালে হাত রেখে বলল,
‘কি হয়েছে তোমার? এত চিন্তিত কেন তুমি?’
‘বলছি। তবে তুমি কথা দাও আমাকে ভুল বুঝবে না সব শুনে।’
‘ভুল কেন বুঝবো? বলো তো কি বলতে চাও। আমি আর টেনশন নিতে পারছি না।’
আহসান বিষন্ন ভগ্নহৃদয় নিয়ে বড় এক দীর্ঘশ্বাস ছাড়ল। তারপর এক এক করে স্রুতি আর তার মধ্যকার হওয়া সকল কথোপকথন বলল রিমিকে। সব শুনে রিমির মুখও গম্ভীর হয়ে গেল। রিমি অস্ফুট স্বরে বলল,
‘আমি তোমার পাশে আছি আহসান৷ তিনমাস দেখতে দেখতে কেটে যাবে। তোমার আর আমার পরিচয় মাত্র মাস খানেকের। দেখো আমাদের বিয়ে হয়ে গেল৷ কত তাড়াতাড়ি তোমার সাথে জড়িয়ে গেলাম। আমি আগে জানতাম প্রিয় কিছু পাওয়া মানে এর সঙ্গে কষ্টসাধ্য ব্যাপার জড়িয়ে থাকে। তবে তোমার সাথে দেখা হওয়া, তোমাকে মনের মধ্যে জায়গা দেওয়া, আমাদের বিয়ে সবকিছুই সাধনা ছাড়াই হয়ে গেল। আর যে জিনিস সাধনা ছাড়াই পাওয়া যায়, তা খুবই মূল্যহীন হয়ে দাঁড়ায়। আমি হয়তো তোমাকে বোঝাতে পেরেছি।’
‘তুমি খুব বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিলে তোমার কথার মাধ্যমে। আমি তোমাকে হারাতে চাইনা রিমি। তুমি বলো আমি কি ভুল কিছু করেছি?’
‘না, ভাই হিসেবে তুমি ঠিক করেছো।’
‘আর হাসবেন্ড হিসেবে?’
আহসানের প্রশ্নে রিমির চোখ ছলছল করে ওঠে৷ সাথে সাথে এক দমকা হাওয়ায় এলোমেলো হয়ে গেল রিমির খোলা চুলগুলো। আহসান সম্মোহনী চোখে রিমির অবাধ্য চুলগুলো গুছিয়ে দিতে লাগলো। রিমি তৎক্ষণাৎ আহসানের হাত সরিয়ে অভিমানী গলায় বলল,
‘আমি তোমার পাশে থাকবো শেষ নিশ্বাস পর্যন্ত।’ এতটুকু বলে পুনরায় রুমের মধ্যে ঢুকে গেল রিমি।
আহসান বেশ ভালো করেই বুঝতে পারলো রিমির অভিমানের কারণটা। তবে বুঝেও আজ অবুঝ হয়ে গেল আহসান। আহসান গিয়ে রিমির পাশ দিয়ে শুয়ে পড়ে। কয়েক মিনিট পর পর রিমির দিকে তাকায় সে। কিন্তু রিমির মুখটা সে আর দেখতে পায়না। রিমি উল্টো দিকে ফিরেছে তো ফিরেই আছে। এমনকি সামান্য পরিমাণ নড়চড় অবধি করছে না। আহসান বারবার ব্যর্থ হয়ে চোখ বন্ধ করে নিতে বাধ্য হলো যেন।
#তোলপাড়💓
#সিজন২
#পর্বঃ৩২
#শান্তনা_আক্তার(Writer)
কান্না করতে করতে জান্নাত কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছিল জানে না। খোলা জানালার ফাঁক দিয়ে এক ফালি রোদ জান্নাতের মুখ দখল করতেই ঘুমে বাঁধাগ্রস্ত হওয়ায় সে চোখ খুলতে বাধ্য হয়। আশেপাশে তাকিয়ে নিজের দিকে তাকায় সে। লেহেঙ্গা ও বিয়ের সাজ এখনো গায়ে জড়ানো তার। ঘাড়ে প্রচন্ড ব্যথা অনুভব হচ্ছে জান্নাতের। জোর খাটিয়ে বিছানা ছেড়ে উঠে দাঁড়ালো। দরজা ভেতর থেকে লাগানো। ওয়াশরুমের দরজা খোলা৷ তবে জিসান নেই কোথাও। এরূপ চিন্তাভাবনা করে জান্নাত গুটি গুটি পায়ে বারান্দায় গেল৷ সেখানে এক কোণে হাত পা ছড়িয়ে দেয়ালে মাথা ঠেকিয়ে ঘুমিয়ে আছে জিসান। খানিক বাদে বাদে দেয়ালের সাথে মাথা ঘঁষা খেয়ে পিছলে পড়ে যাচ্ছে সে। পরক্ষনে আবারও সোজা হয়ে যাচ্ছে। জান্নাত বেশ কয়েকবার সেটা খেয়াল করলো। জিসান এখনো চোখ খোলেনি। বেশ গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। তবে ঘুমিয়ে আরাম পাচ্ছে না জিসান।
আবারও মাথা পিছলে গেল জিসানের। জান্নাত দ্রুত গিয়ে জিসানের মাথায় হাত ঠেকিয়ে নিল। চুড়ির শব্দে জিসান নড়েচড়ে ওঠে। ঝাপসা চোখে জান্নাতের মুখ দেখামাত্র পুরোপুরি সজাগ হয়ে গেল জিসান। এরপর চট করে উঠে দাঁড়িয়ে মাথা ঝাকালো। মাথা ঝিমঝিম করছে তার। ঠিক মতো দাঁড়িয়ে থাকতে পারছে না যেন। তাই দেখে জান্নাত জিসানের কাঁধে হাত রেখে বলল,
‘ঘুম হয়নি তোমার। বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়ো।’
মুখশ্রী নিমিষেই বিরক্তিতে ডোবাল জিসান। জান্নাতের হাতটা ঝামটা মেরে সরিয়ে দিল। তারপর অগ্নিমুখ জান্নাতের উপর তাক করে বলল,
‘একদম ছুঁবি না আমাকে। তোর মুখ দেখলে রাগ হচ্ছে আমার। দূরে দূরে থাকবি বলে রাখলাম।’
‘এখন আমি তোমার স্ত্রী জিসান। প্লিজ আমাকে ইগ্নোর করো না তুমি?’
‘জিসান! ভাইয়া থেকে আমার নাম ধরে ডাকাও শুরু হয়ে গেল?’
‘তুমি আমার হাসবেন্ড। তাহলে নাম ধরে কেন ডাকবো না?’
‘রাতের কথা ভুলে গিয়েছিস তাইনা? আবার মনে করাবো কি?’
জান্নাত জিসানের কথায় মাথানত করে ফেলল। উত্তর দিল না আর। জিসান জান্নাতের থেকে কোনো উত্তর না পেয়ে সামনের দিকে হাঁটা ধরল। পেছন থেকে জান্নাত বলল,
‘কোথায় যাবে এখন?’
জিসান জান্নাতের প্রশ্নের তোয়াক্কা না করে চলে গেল। জান্নাত জিসানের পিছু গিয়ে দেখে জিসান ওয়াশরুমের দিকে যাচ্ছে।
_________________
রিসিপশনের আয়োজন সম্পূর্ণ শেষ। বর-কনের পোশাক যার যার রুমে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। আহসান ও রিমিকে গ্রিন এবং জিসান ও জান্নাতকে পার্পল কালারের পোশাক দেওয়া হয়েছে। ডিজাইন এক তবে রঙের ভিন্নতা। রিমি আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে সাজছে। সবুজ রঙের ভারী কাতানের শাড়িটায় একটু মোটা দেখাচ্ছে রিমিকে। আহসান পেছন থেকে কে না কে ভেবে প্রশ্ন করে,
‘কে আপনি?’
রিমি পেছনে ফিরে বিকৃত মুখ করে বলল,
‘কাকে আশা করেছিলে হুম?’
আহসান ফিক করে হেসে দিল। তা দেখে রিমির রাগ সাত আসতাম পার প্রায়। রিমি কোমড়ে দুহাত গুজে বলল, ‘হাসির কি হলো? আমাকে দেখে হাসলে নাকি?’
‘নাতো। আমি তো স্বাস্থ্যবতী এক মেয়েকে দেখে হাসছি।’
‘ওহ! যেই মোটা শাড়ি, স্বাস্থ্যবতী তো লাগবেই। হাসি থামাও হুম। নইলে পেট ফুটো করে দেব সেইফটিপিন দিয়ে।’
আহসান রিমির কাছে গিয়ে তার ভেজা চুল গুলো ঝাকালো। সাথে সাথে রিমির মুখে পানির ছিটে দিয়ে ভরে গেল। রিমি রেগেমেগে আহসানের পাঞ্জাবির ব্লেজার চেপে ধরে বলে,
‘দিলে তো ভিজিয়ে আমায়!’
আহসান ওর মুখ সামান্য নুইয়ে বলল, ‘গরমকে ঠান্ডা করতে পানির দরকার ছিল।’
‘গরম মানে?’
‘গরম মানে হট।’
‘কিহ!’
‘কি আবার? যেভাবে গরম চোখে কথা বলছো, মনে হচ্ছে নাক মুখ দিয়ে ফায়ার হচ্ছে তোমার। তাই আগুন লাগার আগেই দমকলকর্মী হয়ে আগুন নিভিয়ে দিলাম। তবে জানি না পেরেছি কিনা।’ কথাটা বলে দাঁত দিয়ে তার ঠোঁট চেপে ধরে আহসান।
রিমি কিছু বলবে কি তার আগে আহসানের চুল থেকে এক ফোঁটা পানি রিমির চোখের পাতায় গিয়ে পড়ে। নিমিষেই রিমির রাগ উবে গিয়ে শিহরণে পাল্টে গেল। রিমি মোহিত চোখে আহসানের দিকে তাকিয়ে আছে। আহসান তাই দেখে ওর কপাল রিমির কপালের সাথে ঠেকিয়ে বলল,
‘এভাবে তাকিয়ে আমাকে বিব্রত করো না বউবতী।’
রিমি ইষৎ ধাক্কা দিয়ে সরে আসলো। তারপর বলল, ‘তুমিও কম কি হুম?’
‘তাই নাকি বউবতী?’
‘জ্বি জনাব। আর এই বউবতী বলা কে শিখিয়েছে হুম?’
‘কেউ না। তুমি কি আমার একটা আবদার রাখবে বউবতী?’
‘কি আবদার?’
‘আমি তোমার চুলগুলো আঁচড়ে দিলে কি রাগ করবে?
‘অদ্ভুত! বউ বলো আর বউয়ের থেকে অনুমতি চাও? কোনো দরকার নেই। আমার কাজ আমিই পারি। অধিকার খাটিয়ে যেদিন বলতে পারবে ওইদিন এসো।’ বলে ভেংচি কেটে আবারও আয়নার সামনে চলে যায় রিমি।
সকলে নতুন জামাই-বউয়ের মুখ দেখে দোয়া উপহার দিচ্ছে। রিমি ও আহসান মুখের হাসিটা চওড়া রাখলেও জান্নাত ও জিসান রাখতে পারছে না। এটা নিয়ে অনেকেই কানাঘুঁষা করেছে। এখনো করছে। তবুও যেন জান্নাত ও জিসানের উপর কোনো প্রভাব পড়েনি।
স্রুতি সহসা রিমির কাছে গিয়ে বলল, ‘এক্সিলেন্ট অ্যাক্টিং রিমি। কিপ ইট আপ।’
রিমি যথাসম্ভব রাগ সংযত করে বলল, ‘ধন্যবাদ তোমাকে।’
‘তোমাকে তো খুব সুন্দর দেখাচ্ছে রিমি! কয়টা পিক তুলে মাইডে না দিলে কিভাবে হয় বলো? আসো তুলি ঝটপট।’
‘হুম তুলতে পারো।’ রিমির সম্মতি পেয়ে স্রুতি রিমির সাথে কয়েকটা পিক তুলল।
‘কোন পিকটা মাইডে দেব রিমি? বুঝতে পারছি না। বেছে দাওনা প্লিজ।’
রিমির মাথায় ফট করে একটা দুষ্ট বুদ্ধি ভর করলো। রিমি আহসানকে ডাক দিল। আহসান এসে বলল, ‘হুম বলো।’
‘আমার ননদিনী মাইডে পিক চাচ্ছে। চলো তোমার আর আমার কাপল একটা পিক তুলি ননদিনীটার ফোনে।’
আহসান বাঁকা হেসে বলল, ‘সিওর। কেন নয়?’
স্রুতি কটমট করে বলল, আমি কি বলেছিলাম তোকে আহসান?’
‘আহসান কি বলবে হ্যাঁ? আহসানের বউ যা বলবে তাই হবে। তবুও আমার ননদিনীর অবগতির জন্য বলছি আমরা সকলের মধ্যে আছি। অগোচরে নেই যে তোমার শর্তের খেলাপ হবে।’ রিমি কথাটা বলতে দেড়ি আহসান বলে ওঠে,
‘চমৎকার! আমার বউটা তো খুব বুদ্ধিমতী! ঠিক বলেছো।’
‘হয়েছে এবার আমাকে নিয়ে পোজ দাও তো। স্রুতি মাইডে দেবে কখন হু?’
আহসান রিমিকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে বলল, ‘এইতো দিলাম পোজ। আমরা রেডি। তুই পিক তুলতে পারিস।’
স্রুতি কোনভাবেই তার রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে রাগে গিজগিজ করতে করতে চলে আসলো সেখান থেকে।
#চলবে,,
#চলবে,