#দায়িত্ব
#পর্ব_১২
#আদরিতা_জান্নাত_জুঁই
শায়েরি তো চোখ দুটো রসোগোল্লার মতো করে ফেলেছে.. হঠাৎ করে যে শ্রেয়ান এমন কিছু করবে আন্দাজ ও করতে পারেনি… শায়েরির গাল দুটো লাল হয়ে গেছে লজ্জায়.. শ্রেয়ান…
” ইশশশ লজ্জা পেলে তোমাকে একদম স্ট্রোবেরি লাগে…ইচ্ছে কর…
এই টুকু বলতেই শ্রেয়ানের ঠোঁটের উপর হাত রেখে শায়েরি…
” নো মোর এ সিঙ্গেল ওয়ার্ড… গুড নাইট…
” হুমমম গুড নাইট তোমার জন্য..আমার জন্য না..।
শ্রেয়ান চোখ বন্ধ করে ভাবছে কিভাবে শায়েরি কে তার মনের কথা জানাবে… শ্রেয়ান চাই খুবব তাড়াতাড়ি শায়েরিকে নিজের করে পেতে.. সুন্দর একটা হ্যাপি ফ্যামিলি গড়তে…যদিও শায়েরি বুঝতেই পারে শ্রেয়ান এর অনুভূতিটা.. তবুও শায়েরি শ্রেয়ানের মুখ থেকেই কথাটা শুনতে চাই প্রোপারলি…শ্রেয়ান ও মনে মনে প্রিপেয়ার তার মনের কথাটা শায়েরিকে জানাবে… ঠিক যেভাবে শায়েরির উইস… সেভাবেই চেষ্টা করবে.. শ্রেয়ান ও জানে শায়েরি অলমোস্ট কনভেস…
।
।
পরেরদিন সকালে শায়েরিরা চলে এসেছে… শ্রেয়ান শায়েরিকে বাড়িতে ড্রপ করে.. তারপর বিন্দুকে কোচিং এ ড্রপ করে দিয়ে অফিস চলে যায়…।
শায়েরি বাড়ি আসতেই তার শাশুড়ি তাকে জড়িয়ে ধরে…
” তোমরা ছিলে না বাড়িটা কেমন ফাকা ফাকা লেগেছে… কিন্তু আমার বিন্দু দিদিভাইকে তো পাবো সেই ১২ টার পর…ওকে ছাড়া বাড়িটা একদম নিস্তব্ধ….।
” হ্যাঁ আমরা চলে এসেছি আর বাড়িটা প্রানোবদ্ধ হয়ে যাবে কেমন…আগে বলো তোমরা সবাই কেমন আছো….
” খুববব ভালো আছি রে মা….
নিলা এগিয়ে এসে…
” কেমন আছে সেটা আবার জিঙ্গেস করতে হয়..? তোমরা ছিলে না বলে তো বাড়িটা নিস্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল…আমরা তো সবাই মরে গিয়েছিলাম…
” ভাবি এভাবে কেনো বলছো…?তুমি যেভাবে ভেবেছো আম্মু আসলে সেভাবে বলতে চাইনি.. বিন্দুর কথা ভেবে বলেছে.. সারাদিন ও চিৎকার চেচামেচি হইচই করে বাড়িটা মাথায় তুলে রাখে তাই… আর যদি নিয়ান এর কথা বলো.. তাহলে বলবো ও অনেকটা ছোট.. কেবল আদো আদো করে কথা বলতে শিখেছে আর গুটি গুটি পায়ে হাটতে শিখেছে… ওর পক্ষে তো আর সারা বাড়ি হইচই করে দৌড়ে মাথায় তুলা সম্ভব নয়…?
” হয়েছে আমাকে আর সাত পাচ তেরো বুঝাতে হবেনা…
” তুমিই একটু অংকে কাচা সোজা হিসাব সাত পাচ যে বারো..তুমি নিজেই সাত পাচ তেরো বুঝে ব্যাপারটা কম্পিলিকেট করতেছো…।
।
।
এভাবেই কেটে গেলো তিনদিন… শ্রেয়ান নানা ভাবে শায়েরিকে এটা ওটা গিফ্ট দিয়ে মনের কথাটা বলার চেষ্টা করেছে…কিন্তু বলে উঠা হয়নি… আর শায়েরি খুব মনোযোগ দিয়ে সংসার করছে..বিন্দুর পড়া লেখা খাওয়া দাওয়া আর শ্রেয়ান এবং বাড়ির দিকটাও সামলাচ্ছে.. সব মিলিয়ে সাংসারিক হয়ে গেছে…শায়েরি সর্বোচ্চ দিয়ে নিজের দায়িত্ব পালন করছে….
আজ অনেক ভেবে চিন্তে শ্রেয়ান ঠিক করেছে শায়েরিকে প্রোপোজ করবে শায়েরির মনের মতো করে… শ্রেয়ান অফিস থেকে আসার সময় গোলাপ আর রজনীগন্ধা ফুল নিয়ে এসেছে… শ্রেয়ান এর প্ল্যান করিডোর হালকা করে সাজিয়ে ঝটফট মনের কথাটা বলে দিবে ব্যাসসস….
যা ভেবেছে ঠিক সেভাবেই করাডোর সাজিয়েছে… শায়েরির চোখ একটা কাপড় দিয়ে বেধে করিডোরে নিয়ে গেলো শ্রেয়ান.. চারপাশটা মোটামুটি সুন্দর করে সাজিয়েছে অল্প সময়ের মধ্যে.. শায়েরির চোখ বন্ধ থাকলেও নাকটা ঠিকি কাজ করছে… কিছু একটার স্মেল পেয়ে শায়েরি….
” আচ্ছা কি করছেন? আর এখানে কিসের স্মেল আসছে..? তাড়াতাড়ি চোখ খুলুন আমার…।
“আহহহ বড্ডো অধর্য্য তো তুমি… একটু ঠিক হয়ে দাড়াও তো….
শায়েরিকে দাড় করিয়ে মোমবাতি গুলো আবার জ্বালিয়ে দিচ্ছে… যদিও আগে জ্বালিয়ে রেখেছিল.. হাওয়া এসে সব নিভিয়ে দিয়ে গেছে…. শ্রেয়ান মোমবাতি জ্বালাতে জ্বালাতে শায়েরির অবস্থা প্রায় নাজেহাল… কারন শায়েরির রজনী গন্ধা ফুলে মারাত্মক এলার্জি… রজনী গন্ধা ফুলের স্মেল নাকে গেলেই শুরু হয় হাচিঁ.. সিভিয়ার পরিমানের হাচি হয়… চোখ মুখ ফুলে যায়…. হঠাৎ শায়েরির এতো হাচি দেয়ার কারন খুজে পেলো না শ্রেয়ান… শ্রেয়ান তাড়াতাড়ি শায়েরির চোখের বাধন খুলে দিলো… আর শায়েরি আশে পাশে তাকিয়ে তো সেই লেভেলের ফায়ার… এটা সারপ্রাইজ নাকি পানিশমেন্ট…? শায়েরি একটু রেগে শ্রেয়ানের দিকে তাকালো.. কিন্তু এভাবে তাকানোর কোনো অর্থই খুজে পেলো না শ্রেয়ান…
” কি হয়েছে এভাবে তাকাচ্ছো কেনো.. তোমার পছন্দ হয়নি সাজানো..?
” আর কোনো ফুল পেলেন না সাজানোর জন্য…
” কেনো তোমার ভালো লগেনি…
” না.. হাচি.. হাচি.. হাচি…. চলতেই আছে তো চলতেই আছে..
শ্রেয়ানের মনটা খারাপ হয়ে গেলো… শায়েরি এভাবে না করে দিল মুখের উপর..যে তার সাজানো পছন্দ হয়নি… কিন্তু সেসব না ভেবে শায়েরি কে রুমে নিয়ে এসে…
“কি হয়েছে তোমার..? হঠাৎ এভাবে হাচি শুরু হলো..?
” এলার্জ..হাচি..হাচি..
“কিহহ…? বুঝলাম না…
“ওফফফ এলার্জি….মেডিসিন আছে..?
“হুমমম আছে… দাড়াও নিয়ে আসছি.. হঠাৎ এভাবে এলার্জি উঠলো? কি খেয়েছো… জানোই যখন এই খাবারে এলার্জি সেটা খেতে গিয়েছো কেনো…?.
“আপনি মেডিসিন আনবেন কি….?
“হুমম হুমম দাড়াও আনছি…
“তো যান না..
শ্রেয়ান মেডিসিন নিয়ে আসতে আসতে শায়েরির চোখ মুখ ফুলে গেছে… শ্রেয়ান মেডিসিন নিয়ে এসে…
“একি তুমি কেদে কেটে চোখ মুখ এমন ফুলিয়ে ফেলেছো কেনো…? কি এমন করেছি আমি.. সাজানোটা পছন্দ হয়নি বলে….
“ওফফফ দয়া করে চুপপপ করেন তো… অসহ্য লাগছে আপনার কথা…
” ঠিক আছে.. আর কথা বলবো না.. মেডিসিনটা খেয়ে নাও… আমি তোমার বিরক্তির কারন হতে চাইনা..
চলবে….