“দ্বিতীয় বাসর’ (গল্প),পর্ব-১০৫
হাসিনা সাঈদ মুক্তা
কক্সবাজারে হোটেল সাইমনে বিলাসবহুল পরিবেশে হোটেল বলরুমে ব্যবস্থা করা হয়েছে সংগীতময় অায়োজন।
মিতালীর বেশ পছন্দ এসব সংগীত পরিবেশনা।
ক্লোজআপ ওয়ান কনটেস্ট থেকে পরে যারা শিল্পী হয়েছেন তারাও এসেছে গান পরিবেশনা করতে।
এছাড়া বিভিন্ন কনটেস্ট এ অংশগ্রহণকারী শিল্পীও আছে।ভারতীয় বাঙালী একজন শিল্পীও এসেছে।
হোটেল বলরুমে প্রধান অতিথি বলতে মিতুরাই।
ওরা তিন ভাইবোন ও জামানের হবু স্ত্রী পারুল। ক্যাপ্টেন জামানের কিছু আর্মি বন্ধু,তার উর্ধ্বতন একজন মেজর যিনি ক্যাপ্টেন জামানের বস।
সমুদ্র সৈকত থেকে খুব কাছে হোটেল সাইমনে রীতিমতো অাড়ম্বর পরিবেশে এসবের আয়োজন করে জামান ও তার বন্ধুরা।
হোটেল অভিমুখে দাঁড়ালেই ওপাশ থেকে অদূরে সমুদ্রের সাই সাই গর্জন শোনা যায়।
এত সুন্দর,প্রানবন্ত পরিবেশ অথচ কোনোদিকেই মন নেই মিতালী মিতুর।দুচোখ এপাশ ওপাশ তাকিয়ে শুধু খুঁজে বেড়ায় যেন অবুঝ শিশুর মতোই।
মিতালী মুখার্জী ও তপন চৌধুরীর সেই চিরচেনা প্রিয় গানটি শোনে এবার মিতু ঐ ভারতীয় বাঙালী মহিলা শিল্পী ও বাংলাদেশী শিল্পীর কন্ঠ থেকে।
“না ফিরে যাবো না
তুমিও যাবে না
আমিও যাবো না
এই মধু চন্দ্রিমা
আর পাবো না …’
সুরের আবেগী মুর্চ্ছনায় হারিয়ে যায় উপস্থিত সবাই।
মিতু আর নিজেকে ধরে রাখতে পারে না।
মনে পড়ে যায় আজ থেকে মাত্র নয়মাস আগের ঘটনা।
সেদিন মিতালীর জীবনে ছিল অনুন্যসাধারন ঘটনা।
তার স্বামীর প্রথম প্রথম আবেগময় তীব্র ভালোবাসার ছোঁয়া, সেই হোটেল লা মেরিডিয়ানে যেখানে তার স্বামী, তার প্রান নাথ তাকে কতনা আনন্দ দিয়ে ভরিয়েছিল!
শুধু তাই নয় বন্ধনের দুচোখে আর ব্যাকুল করা ঠোঁটজোড়ায় কত না শিহরন মিতুকে ঘিরে।
বন্ধনের ঠোঁটের জাদুকরী উষ্ণতায় তার বুকের পাঁজরের সেই বলিষ্ঠ উত্তাপ আর মন ভোলানো ভালবাসার কথা,মিতুকে নিয়ে তার মুগ্ধতা,স্বপ্নময় বাসরের কতশত জাল বোনা…. সেই মধুর স্মৃতি হোকই বা তা অল্প কি করে ভুলবে মিতু?
মিতুর আর ভালো লাগে না।ওর মনে হচ্ছে সেই তখন থেকে কেউ যেন তার আশেপাশে,তার খুব কাছে অথচ তাকে আড়াল করে আছে।
নিজেকে ঠিক রাখতে পারে না মিতু, সেতারাকে ওয়াশরুমে যাবার কথা বলে প্রায় দৌড়ে হোটেল ফটকের বাইরে চলে আসে।
দম বন্ধ হয়ে যায় তার, সৈকতের তীর ধরে একা ভ্রমচারিণীর মতো অসহায় মিতালী হেঁঠে এগোয়।
আবারও সেই আগের মতো পেটে হাত দিয়ে একমনে বিড়বিড় করে,
“শোনো ছোটবাবু তোমার মা তোমাকে অনেক ভালোবাসে আর তোমার বাবা বারবার আমাদের ফাঁকি দিয়েছে,এইবার আর তাকে ক্ষমা করবো না আমি,তুমি বলে দিও তাকে…. তোমাকে নিয়ে অনেক অনেক দূরে চলে যাবো…. কেউ আমাদের খুঁজে পাবে না…..। ‘
“কোথায় যাবে মিতু?আমাকে ছেড়ে চলে যাবে তুমি….? ‘
পেছন ফিরে তাকিয়ে হতচকিত মিতু।
সেই চির চেনা আওয়াজ আর প্রিয় সেই মুখখানা।
মানুষটাকে কাছে পেয়েই জাপটে ওর বুকে আছড়ে পড়ে মিতালী ।
হাউমাউ করে কেঁদে ওঠে তাকে পেয়ে…..
অবুঝ শিশুর মতো কান্নার স্রোতধারা যেন কোনোভাবেই তাকে আটকানো যাচ্ছে না।
মানুষটাও যখন তাকে বাহুবন্ধনে জড়িয়ে ধরলো হঠাৎ কি যেন হয়ে গেল মিতুর।
এক ঝটকায় তাকে দূরে সরিয়ে দেয় প্রচণ্ড অভিমানী মিতু।তীব্র ঘৃনার শ্লেষপূর্ণ বাক্য বিনিময় করে এবার।
“খবরদার ছোঁবেন না আমাকে আপনি?’
“আই এম সরি মিতু প্লিজ ….?’
“সরি?জাস্ট সরি বল্লেই সব হয়ে গেলো?কোথায় চলে যান আপনি বারবার আমাকে এভাবে একা ফেলে?কি করে পারেন আপনি?’
“প্লিজ বাবু, আমার কথাটা শোনো? এখন আর ওমন করো না মিতু…..? ‘
“নো, আর কোনো ছলনা আমি শুনবোনা আপনার?আপনার সরি আর প্লিজ আপনার কাছেই রেখে দেন….. আর ছেড়ে চলে যাবার পর, কাউকে ধোকা দেয়ার পর কেমন লাগে এখন থেকে আপনি বুঝবেন….!’
মিতু দ্রুত চলে যায় তার চিরচেনা মানুষটার কাছ থেকে।
অসহায় মানুষটা তার অভিমানী প্রিয় মানুষটার চলে যাওয়া দেখে , ফের পেছনে তাকায় ।আজ অনেকদিন পর ওর বুকটা যেন আরও বেশী ফাঁকা মনে হতে লাগলো।
সমুদ্রের ঢেউ গুলো হঠাৎ গর্জে উঠে একের পর এক আছড়ে পড়ছিল তখন ।
সৈকতে দাঁড়ানো নির্বিকার লোকটার হৃদয়েই যেন আছড়ে পড়ছিল সেই উত্তাল ঢেউগুলো….।
(চলবে)”দ্বিতীয় বাসর’ (গল্প),পর্ব-১০৬
হাসিনা সাঈদ মুক্তা
কক্সবাজারে আসার পর থেকে মিতু আবারও অসুস্থ হয়ে পড়ে।
আসার পর থেকে কয়েকবার বমী করেছে যদিও বিমানে করে এসেছে।এছাড়া আবারও ওর মানসিক সমস্যা দেখা যাচ্ছে নতুন করে।
সাইমন হোটেলে আসা শিল্পীদের গানে আয়োজিত মনোরম পরিবেশে সঙ্গীতানুষ্ঠানও মনোযোগ দিয়ে শুনতে পারেনি। মনটা কেবলই মিতুর উন্মনা ছিল আর বিতৃষ্ণায় ভরা।
ওকে নিয়ে সবার উৎকন্ঠার যেন শেষ নেই।
এজন্যে সেতারা আবারও বন্ধনকে দোষারোপ করল।
কিন্তু হঠাৎ করে একটা দৃশ্য দেখে সবাই রীতিমতো তাজ্জব বনে গেল।
“মিতু, এই মিতু চোখ খোলো লক্ষীটি এই দেখো তোমার বাবু এসেছে তোমার কাছে….চোখটা খোলো সোনা…প্লিজ আর রাগ করোনা। ‘
সৈকতের ধার থেকে হোটেলে কাঁদতে কাঁদতেই দ্রুত বেগে ছুটে আসছিল মিতু।
এসেই মাথা ঘুরে গড়িয়ে পড়েছিল হোটেলের জাঁকজমক ফ্লোরটিতে।
বন্ধনও সাথে সাথে ওর পিছু আসছিল খানিকটা দূরেই ছিল,কিন্তু মিতালী পড়ে যাওয়া মাত্রই ওকে জাপটা ধরলো ওর বুকের কাছে। মিতুর মাথাটা কোলে নিয়ে আদুরে কন্ঠে অনুনয় করে বন্ধন।
এ দৃশ্য হোটেলের সবাই অপলক দৃষ্টিতে মুগ্ধ চিত্তে দেখছিল তখন।সবার চোখেমুখে একটাই জিজ্ঞাসা বন্ধনকে ঘিরে আর কৌতুহল মিতুর চোখ খোলার অপেক্ষায়।
জ্ঞান ফেরার পরও মিতু স্বাভাবিক হতে পারলো না।
দীর্ঘদিন ধরে বন্ধন বাবুর জন্য তার অপেক্ষা, উদ্ভ্রান্তের মতো ওকে খুঁজে ফেরার পরও যখন কোনো কুল কিনারা পাচ্ছিল না মিতু আর নিজেকে ঠিক রাখতে পারেনি।
বিদিশার মতো আচরন মিতুর জ্ঞান ফেরার পর পেটে হাত দিয়ে ধরে, ফের একটা ভয় বাচ্চাটা যেন হারিয়ে না যায় তার…।
সেতারাকে অনুনয় করে খুব…
“আপু প্লিজ আমাকে তুমি তোমার সাথে নিয়ে যাও।তুমি চলে গেলে কেউ আমাকে দেখবে না… বাচ্চাটাকে আবার হারায় ফেলবো আমি..।’
কক্সবাজার শহরের একটি স্থানীয় হাসপাতালে মিতুকে একটি কেবিনে রাখা হয়।প্রয়োজনীয় চেকআপের পর ডাক্তারদের সাথে কথা বলে বন্ধন ও সেতারা।
মিতুর কি হয়েছে জানতে চাইলে,ডক্টর বলেন,
“প্যাশেন্ট খুব রেস্টলেস হয়ে আছেন, এছাড়া মেন্টালি এংজাইটি আছে অনেক।’
“ডক্টর ওর এংজাইটি রিমুভ করার মেডিসিন কি দেয়া যাবে?ঘুমের মেডিসিন?’বন্ধনের উৎকন্ঠা।
“নো এখন সেটা সম্ভব নয়,ঘুমের ওষুধ তো নয়ই,তবে এংজাইটির ওষুধ খুব অল্প মাত্রায় খেতে পারবেন।’
সেতারা ডক্টরকে জানায় যে,মিতু আগে এংজাইটির জন্য যে ওষুধ গুলো খেত সেগুলোকি আবার খেতে পারবে কিনা।
ডক্টর সেগুলোই আবার অল্প মাত্রায় প্রেসক্রাইব করেন।ফের তিনি জানতে চান এবং কিছু কথা বলেন,
“উনি তো কয়েকমাস ধরে এ ওষুধগুলো খাচ্ছেন? ছয়মাস কমপ্লিট হওয়া পর্যন্ত আপনাদের ওয়েট করা উচিত ছিল।এ ওষুধ গুলো চল্লে প্রেগন্যান্সীর জন্য হার্মফুল একটু সাবধানে থাকা দরকার ছিল ।’
বন্ধন কি বলবে ভেবে পায় না।ফের জিজ্ঞেস করে,
“এনি সিরিয়াস প্রবলেম ডক্টর?ইজ ইট হার্মফুল ফর বেবী এন্ড মাদার ওয়াট উইল রেসকিউ দেম?’
“নাথিং সো সিরিয়াস, ডন্ট হ্যাভ এ প্যানিক মিঃ বন্ধন
এসব কেইসে ইউস্যুয়ালি দেখা যায় মায়েদের ভেতর সব ধরনের রোগের সিমটম খানিকটা দেখা যায়,যা সে পূর্বে ভুগেছিল।তাই ফিজিক্যালি হবার আগে সাবধানে থাকার কথা বলা হয় যাতে করে প্রেগন্যান্সীর সময় নতুন করে সেগুলো আবার রিপিট না করে।তবে আবারও যখন উনি মা হতে যাবেন সেটাতেও এমনটা হতে পারে?’
“তাহলে? হাউ উইল বি রিলিফ ফর্ম দিস?’
“ওষুধ চলবে তবে ডোজ আগেরটা নয় মৃদু ডোজ।মিসেস মিতালী রহমান ইনসিকিউর ফিল করছেন সেটা থেকে তাকে রিলিফ দিতে হবে, তাকে মেন্টালী সাপোর্ট আপনাদেরকেই দিতে হবে যেহেতু ফার্স্ট টাইম সি লোস্ট হার বেবী ওয়ানস তাই মেডিকেয়ার করার দায়িত্ব তার ফেমিলির স্পেশালি আপনার মিস্টার বন্ধন বাবু।দ্যাটস দ্যা ওয়ে এন্ড ইউ ডোন্ট ওয়ারি নাউ বিকজ ইউ নিড টু কেয়ার টু ইউর ওয়াইফ।’
“থ্যাংক ইউ সো মাচ ডক্টর।’
সেতারার কোলে মাথা দিয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদে ওঠে মিতালী।সেতারা কি করবে, কি বলবে ভেবে পায় না আর।মিতুর অসহায় মুখটার দিকে তাকিয়ে বন্ধনও ঘাবড়ে যায় এবার।নিজের ভাগ্যকেই বারবার দোষারোপ করে বন্ধন।
কেমন করে আবার সব কিছু মিতুকে ফিরিয়ে দিতে পারবে তাই নিয়ে ভাবনা বন্ধনের,
“বাট আমাকে যে পারতেই হবে,এইবার আর কোনো ভুল হবে না মিতু দেখে নিও তুমি…..। তোমার বন্ধন কি করে এবার তোমার জন্যে। ‘(চলবে)”দ্বিতীয় বাসর’ (গল্প),পর্ব-১০৭
হাসিনা সাঈদ মুক্তা
অবশেষে সেতারার বাংলাদেশ ছাড়ার সময় এসে গিয়েছে। আজ মে মাসের নয় তারিখ।রাতের ফ্লাইট সেতারার।সঙ্গে মেয়ে সিমলাকে নিয়ে রওনা দিবে সে।
বিমান পর্যন্ত এগিয়ে দিয়ে আসে বন্ধন।
বিদায়বেলায় বন্ধনের হাতটা ধরে মিনতি করে সেতারা,
“বন্ধন আমি জানি যা হয়ে গেছে তার পেছনে কোনো কারন অবশ্যই ছিল।কি হয়েছিল, কেন মিতুর সাথে এমন করেছিলেন এসব আমি আর জানতে চাইনা, শুধু বড় বোন হিসেবে একটাই চাওয়া থাকবে দয়া করে এইবার মিতালীকে ছেড়ে যাবেন না ….।’
“আপা,জানি আমি অনেক ভুল করে ফেলেছি,অজান্তে আপনার মনে,মিতুর মনে সবার মনে একটা অস্থিরতা তৈরী করে ফেলেছিলাম,যেটা ইচ্ছাকৃত ভাবে নয়….কিন্তু এরপর এমনটি আর কিছুই হবেনা, আপনি নিশ্চিন্ত থাকুন…কথা দিচ্ছি আপনাকে।’
“ভাই বড় শান্তি পেলাম আপনার এই কথা শুনে। একয়টা মাস মিতালীর কাছে থেকে বুঝেছি, ও যতটা ভালো আপনাকে বাসে আপনিও তার কম বাসেননি।সেদিন হোটেলে আপনাকে দেখে আর মিতুর জন্যে আপনার ব্যাকুলতা দেখে সব রাগ,বেদনা কোথায় চলে গিয়েছিল,বিরাট একটা পাথর সরিয়ে দিয়েছেন আপনি।আর একটা অনুরোধ হয়তো মিতুরও কিছু ভুল ছিল আপনাকে ভুল বুঝেছিল, দূরে সরে যাওয়াটা ওরও ঠিক হয়নি আপনি প্লিজ ওকে ক্ষমা করে দিয়েন।’
“ছিঃ আপা মিতুর কোনো ভুল ছিল না,ওর মতো মেয়ের কোনো ভুল থাকতে পারেনা,যা ছিল সবই আমারই ব্যর্থতা…আমার হতভাগ্য জীবনে যে আশীর্বাদ হয়ে এসেছে তার ভালো করতে গিয়ে আমি ভুল করে ফেলেছি।আমাকে মাফ করে দিয়েন…।’
“অনেক বড় একটা কথা বল্লেন বন্ধন।মিতু আপনার আশীর্বাদ? এরপর আর কোনো কথা থাকতে পারেনা।
তবে আপনিও জানবেন মিতালীর এ পৃথিবীতে এখন আপনিই ওর সব,আমি বা মুহিন যতই ওর কাছে থাকিনা কেন, ও কি আর আমাদের আছে?ওর পৃথিবী জুড়ে আপনিই বসবাস করে আছেন।আপনি ছাড়া আমার বোনটার এখন কেউ নেই এটা মনে রাখবেন বন্ধন…।’
“জ্বী আপা আপনি নিশ্চিন্ত থাকবেন আর আমাদের জন্যে দোয়া করবেন।’
“অবশ্যই,ফিআমানিল্লাহ….আল্লাহহাফেজ।’
“আল্লাহহাফেজ।’
চোখের পানি মুছে ফেলে সেতারা খুব আনন্দ হয় তার, বিমানে উঠে শেষবারের মতো বাংলাদেশকে দেখে নেয়। প্রায় পাঁচটা মাস এখানে থেকেছে।মিতু, মুহিনের জন্যে মনটা যেন কেমন করে ওর….একটা দীর্ঘশ্বাস নিয়ে জানালার দিকে তাকায় ফের।
বিমানবন্দরের মেইনগেটের বাইরে জামানের জীপগাড়ীতে বসা মিতু পারুল ওকে কাঁধে নিয়ে আছে।বোনকে বিদায় দিয়ে শিশুর মতো কেঁদেছে, শরীরটাও অনেক দূর্বল।বন্ধন, মুহিনকে নিয়ে সেতারাকে বিমানে তুলে দেবার জন্য ভেতরে ঢুকে যাবার অনুমতি আগেই নিয়ে রেখেছিল।পারুলকে বলে রাখে মিতুকে নিয়ে গাড়ীতে ওঠার জন্যে।বাইরে থেকে সেই জীপগাড়িটা খোঁজার চেষ্টা করে সেতারা।
দুচোখ আবারও ছাপিয়ে যেতে থাকে তার।
সিমলা অবুঝ চোখে তাকিয়ে তার মাকে সুধায়,
“মামনী তোমার আর খালামনির এতো খারাপ লেগেছে তাহলে খালামনিকে সাথে করে নিয়ে নিলেনা কেন?’
“না সোনা খালামনি যে তার নিজের বাসায় যাবে এবার…।’
“তাহলে তুমি এতো কাঁদছো কেন?’
“ও কিছুনা অনেকদিন ছিলাম তো তাই?একটু পরই ঠিক হয়ে যাবো…।’মেয়েকে জড়িয়ে ধরে সেতারা।
বিমান উড্ডয়নের পরে দূর থেকে মনে হলো সেতারার, সেই জীপগাড়ি যেখানে মিতু বসে আছে। এখনও যায়নি তার প্রানপ্রিয় আপনজনেরা তাকে ছেড়ে।ফের চোখ মোছে মৃদু হাসি সেতারার।
“মিতু সত্যি তুই বড় ভাগ্যবতী….।অনেক কেঁদেছিস বোন আমার…. সুখে থাক মিতু।’ (চলবে)