#নষ্ট_গলি
পর্ব-৩১
লেখা-মিম
মায়ার মাথায় পানি ঢালছে সোহান। ঘুমানোর সময় তো ঠিকই ছিলো। জ্বরটা এসেছে ঘন্টাখানেক হবে হয়তো। জ্বরটা কখন এসেছে সেটা জানে না সোহান। খাওয়া শেষে মায়াকে রুমে পাঠিয়ে সালমান আর সোহান মিলে ম্যাচ দেখছিলো টিভিতে। ম্যাচ শেষে রুমে এসে মায়ার মাথার বালিশটা ঠিক করতে গিয়ে ওর কপালের স্পর্শ লেগেছিলো সোহানের হাতে। তখনই টের পেয়েছে মায়ার জ্বর এসেছে। মায়া কি যেনো বিড়বিড় করছিলো। কিছুই বুঝতে পারেনি সোহান। দেরী না করে বাথরুম থেকে আধা বালতি পানি ভর্তি করে নিয়ে এসে মায়ার মাথায় ঢালছে৷ চোখ বন্ধ করে রেখেছে মায়া। কাঁপা গলায় সোহানকে ডাকছে ও।
– এই…..
– খুব কষ্ট হচ্ছে মায়া?
– এই…..
– হুম, শুনছি তো।
– কোথায় আপনি?
– এইতো তোমার মাথার কাছে।
মাথার ওপাশে হাতড়িয়ে সোহানকে স্পর্শ করার চেষ্টা করছে মায়া। সোহানের গেঞ্জির গলায় হাত ঠেকলো। গেঞ্জিতে খামচে ধরে সামনের দিকে টেনে আনলো ও।
– অ্যাই…..
– হুউউম?
– চুমু খাবো।
– হ্যাঁ দিবো। আগে মাথায় পানি ঢালি।
– না। এখনি।
মায়ার কপালে চুমু খেলো সোহান। চোখ মেলে তাকালো মায়া। চোখজোড়া লাল হয়ে আছে। ঠিকমতো চোখ মেলতে পারছে না। তবুও বহু কষ্টে সোহানের দিকে আধখোলা চোখে তাকালো ও।
– চোখ জ্বালা করছে খুব।
– দাঁড়াও পানি দিয়ে দিচ্ছি।
– উহুম। পানি না। চুমু খাবো।
– চুমু খেলে চোখের জ্বালা কমবে?
– হুউম। কমে যাবে।
মনে মনে হাসলো সোহান।
মায়ার চোখজোড়ায় চুমু খেলো সে। সোহানের গেঞ্জি এখনো খামচে ধরে রেখেছে মায়া। গেঞ্জি ধরে ফের টানাটানি করছে।
– আরো চুমু খেতে চাও?
– না। ঘুমাবো।
– আচ্ছা ঘুমাও। আমি মাথায় পানি ঢালি।
– ঢালতে হবে না। খাটে আসেন।
– তারপর?
– আপনি বসে থাকবেন। আমি আপনার কোলে বসে ঘুমাবো।
মায়ার আবদারে প্রচন্ড হাসি পাচ্ছে সোহানের। সেই সাথে ভালোবাসাটাও বাড়ছে। সত্যিই মেয়েটা ছোট। প্রচন্ড আহ্লাদী। এত আহ্লাদী তো ছিলো না। গত একমাস যাবৎ আহ্লাদটা বাড়ছে ওর। ভালোই লাগে সোহানের। খুব উপভোগ করে ব্যাপারটা।
-গেঞ্জিটা ছাড়ো। তোমার মাথাটা মুছে দিতে হবে।
– না, মুছবো না৷ কোলে ঘুমাবো।
– মাথা না মুছলে ঠান্ডা লেগে যাবে তো।
– ওহ তাইতো। আপনি মুছে দিবেন?
– আমি ছাড়া আর কে মুছে দিবে?
– হুম। তাও কথা।
– এখন ছাড়ো।
গেঞ্জিটা ছেড়ে দিলো মায়া। বালতিটা বাথরুমে রেখে বারান্দা থেকে মায়ার তয়লাটা নিয়ে আসলো সোহান। মায়াকে ধরে শোয়া থেকে উঠিয়ে বসালো৷ চুলগুলো খুব যত্ন নিয়ে মুছে দিচ্ছে সে।
– আমাকে কোলে নিবেন না?
– নিবো তো।
– কখন?
– এইতো এখনি।
সোহানের বুকে গা এলিয়ে দিলো মায়া। মায়ার ভেজা চুলের পানিতে সোহানের গেঞ্জি একটু একটু করে ভিজে যাচ্ছে৷ ভেজা চুলে নাক ডুবালো সোহান। এক হাতে চুলের গোঁড়ায় হাতাচ্ছে সে৷ অন্য হাতে মায়াকে জড়িয়ে ধরেছে। মায়াকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে নিলো সোহান। দু’বাহুডোরে মায়াকে বন্দী করে ফেলেছে৷ মায়ার ঠোঁটজোড়া প্রবলভাবে টানছে সোহানকে। মায়ার ঠোঁটে নিজের ঠোঁট স্পর্শ করতেই মনে পড়লো মায়া অসুস্থ। মেয়েটার আজ জ্বর এসেছে৷ খুব দ্রুত সরে এলো সোহান। খাটের বা পাশের বালিশটাতে মায়াকে শুইয়ে দিলো সোহান। ডা পাশের বালিশে নিজে শুয়ে মায়াকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরলো সোহান।
(চলবে)
/