#নারীর_সতীত্ব
#পর্ব_১১
Wohad Mahmud
ভাবি তখন বলে তখন টাকা ছিল না মা। থাকলে অবশ্যই দেয়া হতো।
আমি তখন হাসতে হাসতে বললাম তার পরেই তো বোনের শপিং এর জন্য টাকা দিলেন বিকাশ করে এটাও তো সঠিক, এটা কেন বলছেন না ভাবি মায়ের কাছে?
ভাইয়া কিছু বলতে যাবে ঠিক তখনি মা বলে আমি তোমার থেকে কিছু শুনতে চাই না। এখানে যা বলার মাহমুদা বলবে। আমি জানি মাহমুদা কখনো মিথ্যা বলবে না। কাল রাতে মাহমুদ যা বলেছে সেটা কি সত্যি মাহমুদা?
হ্যাঁ মা আমি বড় ভাইয়ার কাছে গিয়েছিলাম ফর্ম ফিলাপ এর টাকা নিতে কিন্তু, ভাবি মানা করে দেয়, বলে এখন টাকা নেই বাবার থেকে নিতে। কিন্তু বাবাই বড় ভাইয়ার কাছে থেকে নিতে বলেছিল। কিন্তু আমি আবার কীভাবে গিয়ে বাবার থেকে টাকা চাইতে পারি। বাবার কাছে যদি টাকা থাকতো তাহলে বাবাই আমাকে দিয়ে দিত। সে জন্যই আমি বাবার কাছে টাকা চেয়েছিলাম না। মাহমুদ ভাইয়ের কাছে গিয়েছিলাম। আর মাহমুদা ভাইয়া টাকা দিয়েছিল। আর বলেছিল টাকা আমি দিয়েছি এটা যেন, কেউ জানতে না পারে। আমি বলে দিতে চাইলে বলে না, বলতে হবে না। মা বাবা জানলে ভাইয়া আর ভাবি মা বাবার সামনে খারাপ হয়ে যাবে।
ভাবি তখন বলে সব ঠিক আছে তখন টাকা ছিল না। থাকলে অবশ্যই দিতাম। কিন্তু এটা ভুল আমার বোনকে টাকা দিয়েছি শপিং এর জন্য। মাহমুদা ও তো আমার বোনের মতো একদম। কেন আমি তার সাথে এমন করব।
আমি বললাম প্রমাণ ছাড়া কথা বলি না। নিচের গিয়ে ভাইয়া যখন টাকা দেয় তখন আমি দোকানের পাশে বসে চা খাচ্ছিলাম তখন তুমি এসে টাকা পাঠালে আর ভাবি কে ফোন দিয়ে বললে তোমার বোনের শপিং এর টাকা দিয়ে দিছি আর বাসায় যেন এটা কেউ না জানতে পারে । কারণ মাহমুদার টাকা দিতে দাও নাই তুমি কাল এই শপিং এর টাকা দেওয়া কারণে। তারপর অফিসে চলে গেল ভাইয়া। এটাও কি মিথ্যা কথা বললাম আমি?
ভাইয়া আর ভাবি কোনো কথা বলছে না। নিচের দিকে তাকিয়ে আছে লজ্জা মুখ নিয়ে।
মা তখন বড় ভাইয়াকে বলে। তুমি কাকে কী দিবে না কি সেটা তোমার ব্যাপার। কিন্তু যেটা আগে প্রয়োজন সেটা আগে করতে হবে। মনে আছে তুমি যখন চাকরি পেয়েছিলে তখন বলেছিলাম আজ থেকে তোমার ছোট বোনের দায়িত্ব তোমার উপর। তুমিও বলেছিলে আমি কখনো আমার বোন কে অভাব বুঝতে দিব না। কিন্তু তুমি তোমার কথা রাখতে পারনি। নিজের শালি কে শপিং এর টাকা দিতে পারো কিন্তু নিজের বোনের ফর্ম ফিলাপ এর টাকা দিতে পার না। দিতে মানা নেই, কিন্তু শপিং এর টাকা পরে দিতে পারতে। বিয়ের আগে একদম এমন ছিলে না। তুমি তোমার বউয়ের গোলাম হয়ে গিয়েছো। কোনটা সঠিক আর কোনটা ভুল সেটা তোমার মনে নেই।
সত্যিই আমাকে অনেক মর্মাহত করেছো। কিছু বলার নেই আমার। আগে তোমার দুজন আমার কাছে যেমন রত্নের মতো ছিলে এখন আর নেই। মন থেকে তোমাদের প্রতি যেমন ভালোবাসা ছিল সেটা আর এখন থাকবে না। যা থাকবে শুধুমাত্র মানুষ দেখানো। কথাটা শেষ করার সাথে সাথে মায়ের চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়ল। চোখের পানি যাতে কেউ দেখতে না পারে সেজন্য মা উঠে চলে যেতে চাইলো। মায়ের চোখের জল কেউ দেখতে না পারলেও আমি দেখতে পেরেছি।
আমি আর মাহমুদা ও ওখান থেকে উঠে চলে আসলাম। ভাইয়া আর ভাবি চুপ করে বসে আছে লজ্জা মুখ নিয়ে। আর কি বলবে, বলার মতো কোনো মুখ নেই। সব সত্য আজ বাহিরে হয়ে গিয়েছে। সে জন্যই বলে সত্য কখনো চাপা থাকে না। একদিন না একদিন প্রকাশ পাবেই।
রাত হয়ে গিয়েছে আমি রুমে এসে সাবনাজের সাথে কথা বলছিলাম। তখন মাহমুদা আমার রুমে এসে বলে। আজকের বিষয় টা একদিক থেকে যেমন ভালো হয়েছে ঠিক অন্যদিক থেকে খারাপ হয়েছে।
আমি বললাম কেন, আবার কী ভালো হয়েছে আর কী খারাপ হয়েছে?
মাহমুদা বলে আজ সত্য টা মায়ের সামনে চলে এসেছে। আর মা বাবাকেও বলে দিবে ভাইয়া ভাবির এই কথা। এতদিন তোর প্রতি মায়ের যে অবহেলা ছিল সেটা আর থাকবে না।
আর খারাপ হলো এটা জানার পরে মা অনেক কষ্ট পেয়েছে। আজ দ্বিতীয় বার আমি মায়ের চোখে পানি দেখলাম। বাবার হার্ট অ্যাটাক এর সময় আর আর ভাইয়ার এই কথা শোনার পর। আজ আমি অনেক ভালো করেই বুঝতে পারছি কেন সেদিন আমাকে মানা করছিলি এই কথাটা যেন মা বাবা না জানতে পারে।
কিন্তু চিন্তা হচ্ছে। বাবা হার্ট অ্যাটাক করছে একবার। যদি এই কথা শোনার পরে আবার যদি বাবার খারাপ কিছু হয়ে যায় তখন কী হবে?
আমি তখন বললাম চিন্তা করার দরকার নেই বাবার কিছুই হবে না আর কিছুই জানতে পারবে না।
কেন জানতে পারবে না? মা তো অবশ্যই এই কথা বাবাকে বলবে। কারণ মা কোনো কথা বাবার থেকে লুকিয়ে রাখে না।
কারণ মায়ের কিছুটা হলেও এসব বিষয়ে জ্ঞান আছে। মা জানে এসব শুনলে বাবার অবস্থা আরো খারাপ হয় যাবে। আর সেই জন্যই তো বাবার রুম থেকে বাহির এসে আমাদের সাথে কথা বলল। মা জানে এসব কথা শুনলে বাবা অনেক কষ্ট পাবে আবার হার্ট অ্যাটাক হওয়ার সম্ভাবনা আছে। সেই জন্যই বাবার সামনে কিছু বলে নাই।
মাহমুদার সাথে কথা বলে আমি মায়ের কাছে গেলাম। গিয়ে দেখি বাবা ঘুমিয়ে আছে। আর মা বাবার পাশে বসে নিরবে কান্না করছে।
আমার আসা দেখে তাড়াতাড়ি করে চোখ পানি মুছে বলে আই বাবা এখানে এসে বস।
আমি গিয়ে মায়ের পাশে বসলাম। মায়ের হাত ধরে বললাম তোমার একটা ছেলে দূরে সরে গিয়েছে কী হয়েছে? কিন্তু অন্য একটা ছেলে সর্বদা তোমার পাশে আছে আর থাকবে।আমি জানি তুমি ভাবছো, বড় ভাইয়া বিয়ের আগে এমন ছিল না কিন্তু পরিবর্তন হয়ে গিয়েছে। নিজের বাবা মা আর বোনের কোনো খোঁজ খবর নেই না। ছোট ছেলেও যদি এমন পরিবর্তন হয়ে যায় তখন কী হবে। কিন্তু মা তুমি আমার উপর বিশ্বাস রাখো আমি কোনোদিন পরিবর্তন হবো না। আগে যেমন ছিলাম ঠিক তেমন থাকব।
মা বলে আমার নিজের কোনো চিন্তা নেই। তোর বাবার জন্য চিন্তা হচ্ছে অনেক। আমি চাই এসব বিষয়ে তোর বাবা কিছু না জানুক। কারণ যদি জানে তাহলে অনেক বড় সমস্যা হবে। সব সময় হাসিখুশি থাকতে হবে।
আমি বললাম চিন্তা করার দরকার নেই কিছু হবে না। তুমি এখন ঘুমিয়ে যাও অনেক রাত হয়েছে। কালকে কথা হবে। আমি মায়ের রুমে থেকে এসে ঘুমিয়ে পড়লাম। তারপর সকালে উঠে ফ্রেশ হয়ে বাজারে করতে গেলাম। বাজার থেকে এসে দেখি সাবনাজের বাসা থেকে মানুষ এসেছে। সাবনাজ, সাবনাজের ছোট ভাই আর বাবা এসেছে। আমি কাছে গিয়ে সবাইকে সালাম দিলাম। সাবনাজ বাবার কাছে গিয়ে বসে আছে। আমিও গেলাম আমার সাথে সাবনাজের ভাই ও বাবা যায়। আর মা বাজার নিয়ে রান্না ঘরে যায়।
সাবনাজ বাবার ঔষধ খাওয়াচ্ছে। রান্না ঘরে মা একা আছে। মাহমুদা নেই টিউশনিতে আছে। অন্য সময় হলে ভাবি কে গিয়ে ডেকে নিয়ে আসত কিন্তু কালকের ঘটনার জন্য যায়নি। মা সবার জন্য চা বানিয়ে নিয়ে আসছে। তখন ভাবি এসে বলে আমার কাছে দেন আমি গিয়ে দিয়ে আসছি। মা দুই বার বলল থাক আমি নিয়ে যেতে পারব। কিন্তু এক প্রকার জোর করেই নিয়ে যায়। হাতে নিয়ে বলে মা ‘চা’ তো অনেক ঠান্ডা গরম করে নিয়ে আসি।
মা রাগে রাগে বলে যেটা ভালো মনে হয় সেটা করো।
চা গরম করে নিয়ে এসে একে একে সবাই কে চা দেয়। সাবনাজকে চা দিতে যাবে তখন সাবনাজ বলে থাক আমার চা লাগবে না ভাবি। তাও জোর করে দেওয়ার সময় গরম চা সব হাতের উপরে ফেলে দেয় হাত পুড়ে যাওয়ার মতো হয় আর বাকিটা শাড়িতে পড়ে। তারপর ভাবি ওহ স্যরি স্যরি ভুল করে পড়ে গিয়েছে। সাবনাজ কিছু বলে দৌড়ে বাথরুমে চলে যায়।
আমার বুঝতে বাকি রইল না। ভাবি এটা ইচ্ছে করে করছে। কিন্তু প্রমাণ নেই। সবাই ভাবছে এটা ভুল করে হয়েছে। আর এমন ভাবে স্যরি বলছে আর দুঃখ প্রকাশ করছে মনে হচ্ছে ভুল করে হয়েছে। আর যে কেউ বিশ্বাস করে ফেলবে এটা ভুল করে হয়েছে। কারণ আমি এই জল্লাদ মহিলাকে বেশ ভালো করেই চিনি।
সাবনাজের বাবা আর ভাই সাবনাজের পিছনে যেতে চাইলে আমি বলি আপনারা বসেন আমি গিয়ে দেখছি। আমি গিয়ে দেখছি কী হয়েছে। গিয়ে দেখি হাতে পানি ঢেলছে আর যন্ত্রণায় চোখ দিয়ে পানি পড়ছে। আমি তাড়াতাড়ি করে ফ্রিজ থেকে বরফ নিয়ে এসে সাবনাজের হাতে লাগিয়ে দিলাম। তারপর আমার রুমে নিয়ে টেবিল ফেনের নিচে রাখলাম সাবনাজের হাত যাতে যন্ত্রণা কিছুটা হলেও কমে যায়। ঘরে মলম ছিল তারপর হাতে লাগিয়ে দিলাম। চা টা অনেক গরম ছিল হাত ফুলে গিয়েছে আর চামড়া কিছুটা ঝলসে যাওয়া মতো হয়েছে।
এবার আমি বুঝলাম ভাবি কেন তখন বলল চা অনেক ঠান্ডা আর গরম করতে হবে। এই পরিকল্পনা ভাবি মনে আগে থেকেই ছিল ভাবির মনে। কাল রাতের অপমানের বদলা সাবনাজের উপর দিয়ে তুলছে। তারপর চা আরো গরম করে নিয়ে এসে এমন জঘন্য কান্ড ঘটিয়েছে।
শাড়িটা চা পড়ে খারাপ হয়ে গিয়েছে চেঞ্জ করতে হবে কিন্তু সাবনাজ তো চেঞ্জ করতে পারবে না। হাত দিয়ে কিছু ধরতে পারবে না। কোনো উপায় না পেয়ে আমি চেঞ্জ করিয়ে দিলাম। চেঞ্জ করা শেষ হলে আমি বলি তুমি এবার রেস্ট নাও , মলম দিয়ে দিছি ঠিক যাবে তুমি খুব তাড়াতাড়ি। সাবনাজ আমাকে বলে প্লিজ তুমি,,,,,,,
#নারীর_সতীত্ব
#পর্ব_১২
Wohad Mahmud
কাল রাতের অপমানের বদলা সাবনাজের উপর দিয়ে তুলছে। তারপর চা আরো গরম করে নিয়ে এসে এমন জঘন্য কান্ড ঘটিয়েছে।
শাড়িটা চা পড়ে খারাপ হয়ে গিয়েছে চেঞ্জ করতে হবে কিন্তু সাবনাজ তো চেঞ্জ করতে পারবে না। হাত দিয়ে কিছু ধরতে পারবে না। কোনো উপায় না পেয়ে আমি চেঞ্জ করিয়ে দিলাম। চেঞ্জ করা শেষ হলে আমি বলি তুমি এবার রেস্ট নাও , মলম দিয়ে দিছি ঠিক হয়ে যাবে তুমি খুব তাড়াতাড়ি। সাবনাজ আমাকে বলে প্লিজ তুমি বাহিরে গিয়ে ভাবিকে কিছু বলো না। আমিও জানি ভাবি এটা ইচ্ছে করেই করছে। ভাবি চাচ্ছে যে তুমি ঝামেলা সৃষ্টি করো। যাতে আমার বাবা আর ভাইয়ের চোখে তোমরা খারাপ হয়ে যাও।
আমার বাবা আছে ছোট ভাই আছে। আমি চাই না তাদের সামনে কোনো সমস্যা হোক। সবাই ভাবছে এটা ভুল করে হয়েছে। কিন্তু তুমি আমি জানি এটা ইচ্ছে করেই করছে। বাবা ভাইয়া জানতে পারলে সমস্যা সৃষ্টি হবে।
আমি বললাম আচ্ছা ঠিক আছে সমস্যা নেই। আমি কিছু বলব না। আমি নিচে গিয়ে বাবার পাশে বসলাম। বসার সাথে সাথে আমাকে বলল সাবনাজ কেমন আছে। আমি বললাম ঠিক আছে সমস্যা নেই। গরম চা হাতে পড়েছে তো তাই একটু জ্বলছে।
সাবনাজের ছোট ভাই এখান থেকে উঠে চলে যায়। আমি বুঝতে পারলাম সাবনাজের কাছে গিয়েছে। আমি মনে মনে ভাবতে থাকলাম সাবনাজের বাবা আর ভাই এখান থেকে যাক তারপর ভাবিকে একটা শিক্ষা দিতে হবে। না হলে এভাবে আর সম্ভব নয়।
আমি রান্না ঘরে গেলাম গিয়ে মাকে সাহায্য করছি। ভাবি এতো জঘন্য একটা কাজ করে নিজের রুমে চলে গিয়েছে। সাবনাজের হাত তো ভালো নেই এখন কাজ করতে পারবে না।আর মাহমুদা টিউশনিতে আছে। অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই চলে আসবে। মেসে থাকতে রান্না করার অভ্যাস আছে তাই আর সমস্যা হলো না। মাহমুদা চলে এসেছে। আমাকে দেখে মাহমুদা হাসতে হাসতে বলে কী রে ভাই আজ থেকে বাসার কাজ করবি নাকি। আমি বললাম তুই উপরে গিয়ে দেখে আই আগে।
মাহমুদা উপর থেকে ঘুরে এসে বলে এটা কীভাবে হয়েছে ভাইয়া। সাবনাজ ভাবির হাত তো অনেকটা পুড়ে গিয়েছে। আমি বললাম সাইমা ভাবি সাবনাজ কে চা দিতে গিয়ে ভুল করে হাতে পড়ে গিয়েছে। তাই এমন হয়েছে।
মাহমুদা কর্কশ গলায় বলে। তোর কি এখনো মনে হয় এটা ভুল করে হয়েছে। এতকিছুর পরে এটা দাঁড়াই যে সাইমা ভাবি এটা ইচ্ছে করেই করেছে। এবার কিছু একটা করতে হবে তাছাড়া এভাবে চলবে না।
আমি বললাম চুপ কর। শান্ত হয়ে যা এতো উত্তেজিত হওয়ার ভালো না। বাসায় মানুষ আছে সাবনাজের বাবা আর ভাইয়া আছে। এই অবস্থায় আমি কোনো ঝামেলা সৃষ্টি চাচ্ছি না। এই বিষয়ে আর কিছু বলবি না। আমার কথা শুনে মাহমুদা রাগে রাগে নিজের রুমে চলে যায়।
সাবনাজের ভাই আমাকে ডেকে বলে একটু এদিকে আসবেন দুলাভাই। তারপর দুজন ছাদে গিয়ে কথা বললাম। সাবনাজের ভাই বলে আমি আপনার কষ্ট টা বুঝতে পারছি। আপনার বাবার হার্ট অ্যাটাকে আপনি অনেক কষ্টের মধ্যে আছেন। আর আপনি আমার বোনকে অনেক ভালোবাসেন এটাও জানি। কিন্তু আপনি আপনার স্ত্রীকে যতটুকু ভালোবাসেন আমিও কিন্তু একটা ভাই হিসেবে আমার বোনকে ততটুকু বা তার থেকে বেশি ভালোবাসি। কিন্তু আমার বোনকে আমি এভাবে এখানে কষ্ট পেতে দেখতে পারি না। নির্যাতিত হতে দেখতে পারি না। তাও আমাদের উপস্থিতিতে
আমি বললাম কেন কী হয়েছে? কে নির্যাতন করলো সাবনাজ কে?
দুলাভাই আপনিও বিষয় টা বেশ ভালো করেই জানেন আপনার বড় ভাবির বিষয়ে।
আমি মনে মনে ভাবলাম হয়তো সাবনাজ কিছু বলছে মনে হয় না হলে জানতে পারলো কীভাবে। আমি বললাম সাবনাজ কী কিছু বলেছে?
না দুলাভাই আপু কিছু বলে নাই। আপু যদি আগে বলতো তাহলে তো ভালোই হতো। কিন্তু সে তো মুখ বোজা নিজের কোনো চিন্তা নেই শুধু অন্যের চিন্তা করেই জীবন পার করে দিল। আজ সকালে যখন আপনার বড় ভাবি সাবনাজের হাতে গরম চা ফেলে দেয় তখন আপনারা কেউ খেয়াল না করলেও আমি তার মুখে খুশির ছাপ স্পষ্ট দেখতে পরেছি মনে হচ্ছে হাজার বছরের লুকানো প্রতিশোধ নিয়েছে আজ। আর আমি আপনার মাহমুদার কাছে থেকে কিছু টা হলেও জানতে পেরেছি আপনার ভাবির বিষয়ে।
আহ মাহমুদা আহ, কী একটা কাজ করছিস তুই। তোর এসব পাগলামির কারণে একটা সংসার ভেঙে যাবে। আমি বললাম তুমি চিন্তা করো না। এই বিষয় টা আমি সামলিয়ে নিব। আর এই কথা তুমি আর কাউকে বলো না।
আচ্ছা ঠিক আছে দুলাভাই আমি কাউকে বলছি না। আমি আপনার সম্পর্কে মাহমুদার কাছে থেকে অনেক কিছু শুনেছি আর আমার বোনকে অনেক ভালোবাসেন। আমি চাই না আমার পরিবার কিছু জানুক তারা যদি জানতে পারে তাহলে অনেক সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। আর আমি এটাও চাই না আপনাদের ভালোবাসা সমাপ্তি ঘটাতে চাই না। আমি ঠিক করে নিব কিন্তু আপু যদি কিছু বলে বাবাকে , তাহলে আমি কিন্তু কিছু করতে পারব না।
তারপর ছাদ থেকে সোজা মাহমুদার রুম চলে এসে বললাম তোর সমস্যা কী?
মাহমুদা বলল কেন ভাইয়া কী হয়েছে?
আমি তোকে বুদ্ধিমান মনে করতাম। আর বাসায় যা হয়েছে তুই সব সাবনাজের ভাইকে বলে দিয়েছিস। এখন যদি সে তার বাসায় সব বলে দেয় তাহলে একটা ঝামেলা সৃষ্টি হবে। ভাগ্য ভালো যে সাবনাজের ভাই তোর মতো বোকা না, আর সেই জন্যই এখনো কিছু বলে নাই।
আমি তো তেমন কিছু বলি নাই ভাইয়া। বড় ভাবির সম্বন্ধে জানতে চেয়েছিল তাই আমি একটু বলেছি। আমি সত্যিই জানতাম না সে কিছু বুঝতে পারবে।
আচ্ছা বাদ দে এখন যা হওয়ার হয়েছে আর কিছু বলার দরকার নেই। সবকিছু আমাদের সমাধান করতে হবে। সাবনাজের বাবা আর ভাইয়া চলে যাক তারপর ভাবি ভাইয়া কে ডেকে সবকিছুর সমাধান করব মায়ের সামনে।
তুই তো আর কিছু জানিস না কী হয়েছে!
আবার কী হয়েছে ভাইয়া?
যেদিন সাবনাজের ফোন কল নিয়ে ঝামেলা সৃষ্টি করে সাইমা ভাবি সেদিন সাবনাজকে থাপ্পড় মেরেছিল ভাবি। কিন্তু আমাকে তখন কিছু বলে নাই সাবনাজ শুধু এই কারণে যে, ওই দিন সাবনাজের পরিবার থেকে মানুষ আসার কথা ছিল আমাদের বাড়িতে। তারা যদি এটা জানতে পারত তাহলে পরিস্থিতি অন্যরকম হতো।
বলিস কী ভাইয়া। আমাকেও তো কিছু বলে নাই। একটা মেয়ে কতটা খারাপ হলে অন্য একটি মেয়ের গায়ে হাত তুলতে পারে তাও আবার অন্য কারণে।
আমি কিন্তু এই কথাগুলো শুধু তোর সাথে বলেছি আর কাউকে বলি নাই। এমনকি মায়ের সাথেও না। বোকার মতো যেন আবার কাউকে বলবি না।
মাহমুদা অনুশোচনা নিয়ে বলে আচ্ছা ঠিক আছে বলব না। প্রথমবার ভুল হয়েছে এবার আর ভুল হবে না। এই ভুলের জন্য তুই আমার প্রতি যেন বিশ্বাস হারিয়ে ফেলিস না প্লিজ। বলেই কান্না করে দেয়।
আমি হাত দিয়ে চোখের পানি মুছিয়ে দিয়ে বলি ধুররর পাগলি বোন আমার। ভুল তো মানুষের দ্বারা হয়। আর খারাপ সময়ে তুই আমার সাথে ছিলি সব সময়। আমি নিজের প্রতি বিশ্বাস হারিয়ে ফেলব তাও তোর প্রতি না।
মাহমুদার কাছে থেকে বাবার রুমে গিয়ে দেখি কেউ নেই রুমে। বাবাও নেই শ্বশুর ও নেই। আমি মাকে গিয়ে বললাম বাবা কোথায় দেখছি না কেন?
তোর বাবার আর তোর শ্বশুর একটু নিচে গিয়েছে হাঁটতে। অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই চলে আসবে। সারাদিন শুয়ে থেকে থেকে পিঠে ব্যথা হয়েছে তাই গিয়েছে।
তুমি জানো বাবার অবস্থা খারাপ। হাঁটার দরকার হলে রুমে বা ছাদে হাঁটতে পারত। এখন বাইরে গিয়েছে আবার নিশ্চয়ই সিগারেট খাবে। আমি বাবাকে নিয়ে আর পারিনা। একটা কথাও শুনে না। আর তুমি বাবাকে কিছু না বলে বলে এমন হয়ে গেছে বাবা। তুমি যদি একটু শাসনে রাখতে তাহলে আজ এমন হতো না। আমি তো সিগারেটের গন্ধ একদম সহ্য করতে পারি না। বাবা কীভাবে খায় আল্লাহ জানে।
পিছন ঘুরে দেখি সিঁড়ি দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে নিচে নেমে আসছে সাবধান। আমি বললাম নিচে নেমে আসলে কেন।
উপরে আর ভালো লাগছে না একা একা যন্ত্রণা অনেকটা কমে গিয়েছে। অল্প একটু যন্ত্রণা করছে। মা একা একা রান্না করছে। আমি গিয়ে সাহায্য করছি।
মাহমুদা এসে বলে থাক ভাবি তোমার হাত পুড়ে গিয়েছে কিছু করতে হবে না। আমি আছি সাহায্য করছি। মাহমুদা বলে বাবা তো বাইরে গেছে দেখ আবার সিগারেট খেয়ে আসবে।
সাবনাজ বলে একা একা গিয়েছে না কী কারো সাথে বাইরে গিয়েছে?
আমি বললাম না একা যায়নি তোমার বাবার সাথে গিয়েছে বাইরে।
সাবনাজ হাসতে হাসতে বলে তাহলে আর চিন্তা করার দরকার নেই। আমার বাবা সিগারেট খাওয়া তো দূরের কথা গন্ধ সহ্য করতে পারে না। আশেপাশে কাউকে সিগারেট খাওয়া দেখলে আগে একটু জ্ঞান ঝেড়ে দিবে। আর সাথে কেউ গেলে তাকে খেতে দিবে না সমস্যা নেই। বাবাকেও(শ্বশুর) সিগারেট খেতে দিবে না।
আমি বললাম আমার বাবা যদি তোমার মতো হতো তাহলে অনেক ভালো হতো। একটা জিনিস কী জানো তোমাদের বাড়ির সবকিছু ভালো আমাদের মতো এমন না। তোমার বাড়ির বড় ভাবির আচার আচরণ কত সুন্দর কোনো ঝামেলা সৃষ্টি করে না। আর আমাদের বাড়ির বড় ভাবির দিকে তাকিয়ে দেখো সবসময় অন্যের ক্ষতি করার চিন্তা ভাবনা। সত্যি বলতে তোমাদের বাড়িতে যেই দুইদিন ছিলাম অনেক ভালো সময় কেটেছে। কিন্তু এখানে এসে মনে হচ্ছে শয়তানের আড্ডা খানায় চলে এসেছি। আমি শুধু মা বাবা আর আমার বোনের জন্য এখানে আছি।১৩৮৫
দরজার পাশে দাঁড়িয়ে আমার সব কথা শুনছিল কিন্তু আমি বা কেউ খেয়াল করি নাই। কারণ আমরা যে পজিশনে দাঁড়িয়ে ছিলাম তার ঠিক পিছনে ভাবির ঘরের দরজা। সেই জন্যই আমরা কেউ খেয়াল করি নাই। ভাবির কথা শুনে আমি পিছনে ফিরে তাকালাম। ভাবি আমাকে বলে,,,,,,,,,,
চলবে,,,