নারীর_সতীত্ব পর্ব ১৩+১৪

#নারীর_সতীত্ব
#পর্ব_১৩
Wohad Mahmud

_দরজার পাশে দাঁড়িয়ে আমার সব কথা শুনছিল কিন্তু আমি বা কেউ খেয়াল করি নাই। কারণ আমরা যে পজিশনে দাঁড়িয়ে ছিলাম তার ঠিক পিছনে ভাবির ঘরের দরজা। সেই জন্যই আমরা কেউ খেয়াল করি নাই। ভাবির কথা শুনে আমি পিছনে ফিরে তাকালাম। ভাবি আমাকে বলল মাহমুদ কে কোথায় থাকবে কী থাকবে না এটা তোমার কথায় চলবে না। দরকার হলে তোমরা চলে এখান থেকে। বাবা আর মা আমাদের সাথে এখানে থাকবে। বাবা মায়ের প্রতি আমাদের ও অধিকার আছে যতটুকু তোমার আছে।

আমি মুচকি হেসে বললাম ভাবি অধিকার কথাটা ছোট হলেও এর পরিধি অনেক বড়। এতোক্ষণ তো ঘরের মধ্যে তো বেশ ভালোই আরাম করলেন আর মা এখানে একা রান্না করেছিল কই একটু ও এসে সাহায্য করলেন না। কোনো উপায় না পেয়ে আমিই রান্নার কাজে সাহায্য করলাম।

বাসায় তো কাজ করার জন্য আমি একা নেই। আরো দুজন তো আছে। তাঁরাও তো সাহায্য করতে পারে।

আমি হেসে হেসে বললাম আপনার মতো মানুষ থাকতে বাসায় কী আর কেউ শান্তিতে থাকতে পারে। দিলেন তো সাবনাজের হাতটা পুড়িয়ে ইচ্ছা করে,তাহলে কাজটা কীভাবে করবে? আর মাহমুদা তো টিউশনিতে ছিল সে কীভাবে কাজ করবে? আর আপনি বাকি ছিলেন,কাজ করার বাহানা করে শয়তানি বুদ্ধি নিয়ে সাবনাজের হাত পুড়িয়ে দিলেন।

তখন ভাবি বলল আমি ইচ্ছা করে করি নাই। যা হয়েছে সব ভুল করে হয়েছে। সাবনাজের সাথে আমার কিসের শত্রুতা যে তার এতো বড় ক্ষতি করব।

আমি হেসে হেসে বললাম শত্রুতা না, হিংসা। তার সুখের সংসার আপনার সহ্য হয় না‌

কথা কাটাকাটি করতে করতে কলিং বেলের শব্দ শুনতে পেলাম। আমি ইশারায় সবাই কে রুমের ভিতরে চলে যেতে বললাম। কারণ নিশ্চিত বাবা আর শ্বশুর এসেছে। আমি চাই না তারা এসে এসব দেখুক। কারণ বাবা অসুস্থ এমন পরিস্থিতিতে আরো অসুস্থ হয়ে যাবে‌। আর শ্বশুর ও আছে সে দেখলে আরো বেশি সমস্যা সৃষ্টি হবে।

আমার ইশারা বুঝে সাবনাজ আর মাহমুদা রুমে চলে যায়। আর মা রান্না ঘরে গিয়ে খাবার নিয়ে আসে ডাইনিং এ। আর আমি গিয়ে দরজা খুলে দিলাম। বাসায় এসে বাবা আর শ্বশুর ফ্রেশ হয়ে গল্প করছে‌।

আমি গিয়ে বসে বাবাকে বললাম আজ তোমার চেকাপ করাতে নিয়ে যেতে হবে।

বাবা বলল না লাগবে না বাবা আর। এখন অনেকটা ঠিক আছি। ডাক্তারের কাছে যেতে ইচ্ছা করছে না।

তোমার মাঝে মাঝে সব পাগলামি মেনে নিয়েছি। কিন্তু এখন আর না। আজকেই যেতে হবে বিকালে। অবশেষে রাজি করালাম ডাক্তারের কাছে যাওয়ার জন্য।

দুপুরে সবাই খাওয়া দাওয়া করে রেস্ট নিচ্ছিলাম। আমি সাবনাজ কে বললাম। আজ বিচার হবে রাতে। মায়ের সামনে তুমি সব কথা সত্যি সত্যি বলতে পারবে তো?

সবনাজ বলল কার বিচার আর কিসের বিচার? আমি কিছু বুঝতে পারছি না কী বলছো। একটু বুঝিয়ে বলো প্লিজ মাহমুদ।

আমি বললাম এতো দিন ভাবি তোমার প্রতি যা যা অন্যায় করেছে তার সব বিচার হবে আজ। কিছু না বলে বলে অনেক বেশি বাড় বেড়েছে।

সাবনাজ আমার হাতে ধরে বলল, প্লিজ এমন কিছু করার দরকার নেই। হাজার হলেও সে তোমার বড় ভাবি হয়। এভাবে তার প্রতি এমন করলে সে আরো বেশি জ্বালাতন করবে আমাদের। তার থেকে ভালো হয় যেমন করে চলছে চলুক। এসব সামান্য বিষয় আমি সহ্য করে নিতে পারব। কোনো সমস্যা হবে না।

আমি রাগি কন্ঠে বললাম, তুমি সব সহ্য করে নিতে পারবে কিন্তু আমি পারব না। আমার স্ত্রীর প্রতি যে, অন্যায় অবিচার করবে আমি তাকে একটুও ছাড় দিব না। আর তুমি যদি আমার বিরোধিতা করো আর সব সত্যি কথা মায়ের সামনে না বলো তুই আমার ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত হয়ে যাবে।

আমার কথা শুনে অনেক ভয় পেয়ে যায় সাবনাজ। তারপর বলে আচ্ছা ঠিক আছে তুমি যা বলবে আমি সব শুনব। আর মায়ের সামনে সব সত্য কথা বলব।

বিকালে বাবাকে নিয়ে হাসপাতালে গেলাম আমার সাথে মাহমুদা ও ছিল। আমি নিজে নিজে একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আজ বাবাকে আর বাসায় নিয়ে যাব না। বাবাকে আজ ছোট ফুফির বাসায় দিয়ে আসব। বাবাদের দুই বোনের মধ্যে অনেক মিল। আর দুজন দুজনকে অনেক ভালোবাসে। বাবার এমন পরিস্থিতির কথাও জানে না। বাবা বলতে নিষেধ করেছিল। কারণ বাবার এমন পরিস্থিতি সহ্য করতে পারবে না।

প্রাইভেট হাসপাতাল আর ডাক্তার আমার স্যার ছিল তাই চেকাপ করা অনেক তাড়াতাড়ি হয়েছিল। স্যার আমাকে তার ভিজিটিং কার্ড দিয়ে বলে সামনে মাসে আমার সাথে যোগাযোগ করবে‌।

ডাক্তার দেখানো শেষে মাহমুদা আর বাবাকে নিয়ে ফুফির বাসায় গেলাম আর মাহমুদা কে বললাম। বাবা এখানে থাকবে এক সপ্তাহ মতো সাথে তুই ও থাকবি।

কেন ভাইয়া? আজকেই দেখা করে চলে যাই। এতদিন এখানে অকারণ থেকে কী করব। আর মাকে বলে ও আসি নাই এখানে থাকবো আমার।

আমি যা বলছি তাই কর। বাসার যেই পরিস্থিতি এখানে থাকলে ভালো হবে বাবার জন্য। তোর প্রয়োজনীয় জিনিস আমি দিয়ে সমস্যা নেই। এখানে থেকেই পড়াশোনা কর এক সপ্তাহ।

বাবাকে এখানে রাখার মূল কারণ। আজ রাতে কিছু না কিছু একটা হয়ে যাবে বাসায়। হয় বাসায় তারা থাকবে আর না হয় আমরা থাকব। আর এই পরিস্থিতি দেখলে বাবা নিশ্চিত আবার হার্ট অ্যাটাক করবে। আর আমি চাই না ক্ষতি হোক বাবার। সেখানে কয়দিন শান্তি মতো থাকুক। পরিবেশ ঠান্ডা হলে আবার বাড়িতে নিয়ে আসব।

বাসায় ফিরতে ফিরতে রাত হয়ে যাই আমার কিছুটা। বাসায় ফিরে দেখি মা, সাবনাজ আর সাবনাজের বাবা, ভাইয়া বসে গল্প করছে। কিন্তু এটা কীভাবে সম্ভব। সাবনাজের বাবা আর ভাইয়ের তো চলে যাওয়ার কথা কিন্তু এখানে বসে গল্প করছে।মনে হয় সাবনাজ জোর করে রেখে দিয়েছে কারণ আমি যাতে আজ কোনো ঝামেলা সৃষ্টি করতে না পারি।

আমাকে একা এসে দেখে মা বলে–
তোমার বাবা আর মাহমুদা কোথায়?

আমি বললাম ছোট ফুফির বাসায় রেখে আসছি। ওখানে কয়দিন থাকলে ভালো হবে বাবার জন্য। সাথে তো মাহমুদা আছে সমস্যা হবে না।

মা বলল ঠিক করেছিস বাইরে থাকলে মন ভালো হবে। কয়দিন বাইরে থেকে ঘুরে আসুক।

তারপর রাতের খাবার খাওয়ার দাওয়া করলাম কিছুক্ষণ পরে। কিন্তু ভাইয়া আর ভাবি আসল না। মা আমাকে বলল ডেকে আনতে। আমি রুমে গিয়ে ডাক দিলাম খাওয়া দাওয়া করার জন্য। কিন্তু আসল না। বলল যে, খাবে না এই বাড়িতে আর। নিজেরা রান্না করে খাওয়া দাওয়া করবে।

আমি এসে মিথ্যা কথা বললাম। বললাম যে, ভাইয়া অফিস করে অনেক ক্লান্ত একটু পরে খাবে। ডাইনিং এ খেতে ইচ্ছে করছে না।‌ বলল যে ভাত আর কিছু তরকারি দিয়ে আসতে। আমি গুছিয়ে ভাত তারকারি দরজার কাছে রেখে, দরজায় নক নিয়ে আস্তে করে বললাম ভাত তারকারি আমি দিয়ে গেলাম। বাকিটা আপনাদের ইচ্ছা কী করবে।

তারপর রুমে এসে বললাম আজ শুধু তোমার বাবা আর ভাইয়ার জন্য ভাবি বেঁচে গেল। তোমাকে থাপ্পড় মারার কথা, ইচ্ছা করে গায়ে চা ফেলে দেওয়ার কথা। সব কিছু আজ তুলে ধরতাম। আর ভাইয়া ও একটু দেখত তার স্ত্রী কেমন মানুষ। যার একদম বিবেক বুদ্ধি আর মনুষ্যত্ববোধ নেই।

ঘুমিয়ে পড়লাম আমি। তারপর সকালে উঠে আমি রাতের অপেক্ষায় আছি। সাবনাজের বাবা আর ভাইয়া চলে যাবে‌ আজ বিকালে। আমি আর অপেক্ষা করতে পারছি না। কখন ভাবির মুখোশ খুলব আমি। সাবনাজের বাবা আর ভাইয়া চলে যায়। যাওয়ার সময় সাবনাজের ভাই বলে‌। আমার বোন আপনার কাছে আমানত রেখে দিলাম দুলাভাই।

আমি বললাম চিন্তা করো না ভাইয়া আমার জীবনের থেকে তোমার বোনকে আমি ভালোবাসি।

রাতে মাকে বললাম মা তোমার রুমে একটু জেগে থাকো কথা আছে‌। ভাইয়া আর ভাবি ও আসবে।

মা বলল কেন কী হয়েছে?

আমি বললাম অপেক্ষা করো জানতে পারবে। তার ভাইয়া আর ভাবিকে ডেকে নিয়ে আসলাম। আমার কিছু বলার আগেই ভাবি বলে আমিও কিছু বলব।

আমি বললাম আচ্ছা ঠিক আছে বলেন আগে আপনি।

এরপর ভাবি যা বলল তাতে ভাবির উপর যতো রাগ ছিল সব পানি হয়ে গেল মায়ের। মা খুশিতে আত্মহারা হয়ে গেল। এতো খুশি আমি অনেকদিন দেখি নাই,,,,
#নারীর_সতীত্ব
#পর্ব_১৪
Wohad Mahmud

আমি বললাম অপেক্ষা করো জানতে পারবে। আমি গিয়ে ভাইয়া আর ভাবিকে ডেকে নিয়ে আসলাম। আমার কিছু বলার আগেই ভাবি বলল, আমিও কিছু বলব আপনাদের সবাইকে। বাবা আর মাহমুদা থাকলে আরো ভালো হতো।

আমি বললাম আচ্ছা ঠিক আছে বলেন আগে আপনি কী বলবেন?

এরপর ভাবি যা বলল তাতে ভাবির উপর যতো রাগ ছিল সব পানি হয়ে গেল মায়ের। মা খুশিতে আত্মহারা হয়ে গেল। এতো খুশি আমি অনেকদিন দেখি নাই,,,,

মা বলল কী হয়েছে তোমার বউমা?

ভাবি বলল মা হতে চলেছি আমি।

মা তখন কাছে গিয়ে হাত ধরে বলল এটাতো ভালো লাগছে আমার যা আমি বলে বলে বোঝাতে পারব না। অনেক খুশির খবর বউমা। এই দিন টা দেখার জন্য আমি অনেক বছর অপেক্ষা করেছি। সত্যি বলতে এতদিন তোমার উপর যে রাগ অভিমান ছিল সব মাটি হয়ে গিয়েছে। তোমার শ্বশুর শুনলে অনেক খুশি হবে।

ভাবি আমার টিকে ট্যারা চোখে তাকিয়ে বলে- মাহমুদ ভাই তুমি যেন, কী বলতে চেয়েছিলে?

না ভাবি তেমন কিছু না। অনেকদিন সবার সাথে কথা বলা হয়নি তাই ভাবলাম সবাই মিলে গল্প করি একটু। আর এতোবড় খুশির সংবাদ টা তাড়াতাড়ি সোনার সৌভাগ্য হলো। আল্লাহ আপনাকে উত্তম প্রতিদান দিক।

মা বলল তোর বাবা আর মাহমুদা কে খুশির সংবাদ টা জানিয়ে দিস। তারাও অনেক খুশি হবে।

আচ্ছা ঠিক আছে মা তুমি চিন্তা করো না। আমি মাহমুদা কে ফোন দিয়ে এখনি জানিয়ে দিচ্ছি।

তারপর আমি আর সাবনাজ রুমে চলে আসলাম। সাবনাজ বলল যাক ভালো হয়েছে। ভাবি মা হতে চলেছেন। কথাগুলো বলো নাই ভালো হয়েছে।

আমি বললাম আমি চাইলে বিষয়গুলো তুলে ধরতাম কিন্তু করি নাই কারণ, মা আজ অনেক খুশি, বাবার এই খারাপ সময়ের মধ্যে মা এই খুশির সংবাদ শুনে একটু স্বস্তি খুঁজে পেয়েছে। এর মধ্যে আমি আর কোনো ঝামেলা সৃষ্টি করে খুশির সময় কে নষ্ট করতে চাই না।

আর সবথেকে বড় কথা একটা মেয়ের জন্য সবথেকে খুশীর মূহূর্ত হলো যখন জানত পারে সে মা হতে চলেছে। কিন্তু কথা হচ্ছে সত্যি বলল না-কি মিথ্যা বলে মা হওয়ার নাটক করছে যাতে এসব অপকর্ম থেকে বাঁচার চেষ্টা করছে।

সাবনাজ আমাকে বলল ছি মাহমুদ কিছু তো লজ্জা করো। কী সব আজেবাজে কথা বলছো। কোনো মেয়ে কি তার সন্তান নিয়ে এসব মিথ্যা কথা বলতে পারে। প্রতিশোধের জন্য তুমি এসব কথা বলছো।

আমি বললাম আচ্ছা ঠিক আছে কী হয় দেখা যাক। কিন্তু আগে কী হয়েছে সব ভুলে যাও আর ভাবির খেয়াল রেখো। ভাবি প্রেগন্যান্ট। ভারি কোনো কাজ করতে দিবে না। মায়ের কাজে তুমি সব সময় সাহায্য করবে। আর ভাবির প্রতি একটু খেয়াল রাখিও। আমি জানি তোমার জায়গায় যদি ভাবি হতে তাহলে কোনোদিন তোমার দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিত না। এটা মনে রাখবে তুমি ভাবির মতো না তুমি তোমার মতো।

আচ্ছা ঠিক আছে চিন্তা করো না তুমি। আমি সবকিছু করব। আমি এটা করব বাচ্চার জন্য। যাতে বাচ্চার কোনো ক্ষতি না হয়। তবে মাহমুদা আর বাবাকে বাসায় নিয়ে আসো। যে কারণে রেখে আসছিলে সেটা তো আর হচ্ছে না। কালকে বাড়িতে নিয়ে চলে আসো। সবাই একসাথে থাকলে খুশি আরো দ্বিগুন বেড়ে যাবে।

আমি বললাম আচ্ছা ঠিক আছে। আগে ফোন দিয়ে দেখি কী বলে।
তারপর মাহমুদা কে ফোন দিয়ে বললাম ভাবি প্রেগন্যান্ট। কিন্তু মাহমুদার কথা শুনে বুঝলাম মাহমুদা ততটা খুশী না। মনে হচ্ছে আমার থেকে মাহমুদার রাগ বেশি ভাবির উপরে।

আমি বললাম তাহলে কী তোদের বাড়িতে নিয়ে আসবো কালকে।

আমি কিছু জানি না কী করবি। বাবার সাথে কথা বলে দেখ যদি যেতে চায় তাহলে এসে নিয়ে যা। আচ্ছা ঠিক আছে। ভাবির কথাটা বাবাকে বলে দিস আর আমি কালকে যাচ্ছি তোদের ওখানে।

পরেরদিন সকালে ফ্রেশ হয়ে খাওয়া দাওয়া করে চলে গেলাম ছোট ফুফিদের বাসায়।‌ আমি গিয়ে বাবাকে বললাম তাহলে আজ বাসায় যাওয়া যাক।

বাবা বলল কেন? এক সপ্তাহ থাকার কথা। এখন বাসায় যাওয়ার কথা বলছিস কেন?

বাবার কথা শুনে আমি বুঝতে পারলাম মাহমুদা বাবাকে কিছু বলে নাই। আমি বললাম একটা খুশির সংবাদ আছে বাবা।

কিসের খুশির সংবাদ।

বড় ভাবি মা হতে চলেছে। ভাবি প্রেগন্যান্ট।

আমার কথা শুনে মা যতটা খুশি হয়েছিল ঠিক ততটাই বাবা খুশি হয়েছে। বাবা বলল তাহলে আজকেই বাসায় যাওয়া যাক। আমি বললাম তাহলে গুছিয়ে নাও তুমি। আমি মাহমুদা কে বলে আসি। মাহমুদা কে গিয়ে বললাম তুই বাবাকে কিছু বলিস নাই কেন?

মাহমুদা বলল, বাবাকে আবার কী বলব। আর কোন বিষয়ের কথা বলছিস।

কিসের কথা আবার ভাবির কথা।

মাহমুদা বলল মনে নেই বলতে। শরীর ভালো লাগছিল না, তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম বাবার কাছে যাওয়া হয়নি, সে জন্যই বলি নাই।

আমি বললাম আচ্ছা ঠিক আছে সমস্যা নেই। তবে বাসায় গিয়ে শান্ত থাকবি। মা বাবা এখন খুশিতে আছে। মাহমুদা আর বাবাকে নিয়ে বাসায় চলে আসলাম। বাসায় এসে দেখি বড় ভাবির বাসা থেকে মানুষ এসেছে। ভাবির মা আর ভাই এসেছে। ভাবির ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে রাগে রাগে রুমে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয় মাহমুদা। আমি বিষয় টা বুঝতে পারলাম মাহমুদা কেন এমন করলো। আমি গিয়ে দরজায় নক করলাম। কিন্তু তাও দরজা খুলে নাই।

মাহমুদার এমন রিয়েকশন করার কারণ জানতে হলে এক বছর আগে যেতে হবে। প্রায় এক বছর আগে ভাবির ভাই রাকিব পছন্দ করত মাহমুদা কে।‌ কিন্তু মাহমুদার এসব বিষয়ে কোনো ইচ্ছা ছিল। মাহমুদা কে প্রোপজ ও করেছিল সরাসরি বিয়ে করবে এটাও বলেছিল কিন্তু মাহমুদা তখন সুন্দর করে বুঝিয়ে না করে দেয়। কারণ একটা ছেলে একটা মেয়েকে প্রপোজ করতেই পারে, বিয়ের প্রস্তাব দিতেই পারে। এখানে খারাপের কিছু নেই। আর মাহমুদা ও সেই ভাবে বুঝিয়ে দিয়েছিল যে এই প্রস্তাবে রাজি না।

এর কয়েক সপ্তাহ পরে রাকিব তার বাবা মায়ের সাথে করে আমাদের বাসায় আসে রাকিবের সাথে মাহমুদার বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে। বড় ভাবি ও এটাই চেয়েছিল রাকিবের সাথে মাহমুদার বিয়ে হয়ে যাক। কিন্তু আমাদের বাসায় কেউ রাজি ছিল না। শুধু বড় ভাইয়া রাজি ছিল‌। আর বড় ভাইয়ার রাজি থাকার কারণ হলো ভাবি। ভাবি কী সব বুঝিয়ে রাজি করেছিল।

আমি মা বাব রাজি না থাকার কারণ হলো মাহমুদা না করে দিয়েছে তাই। মাহমুদার ইচ্ছা সে পড়াশোনা শেষ করবে ভাইদের মতো হবে। সে এখন পড়াশোনা বাদ দিয়ে বিয়ে দিতে ইচ্ছুক না। আমরা আগে থেকেই জানতাম রাকিব অল্প হলেও নেশা করে। আর কখনো চাইব না, কোনো খারাপ ছেলের হাতে আমার বোনকে তুলে দিতে।

তখন তাদের সম্মানের সাথে না করে দিয়েছিলাম। কিন্তু কয়েকদিন পরে রাকিব আমাদের বাসায় এসে ঝামেলা সৃষ্টি করে আর উল্টো পাল্টা কথা বলে।

আমি তখন থাপ্পড় মেরে বলেছিলাম তোর কানে কথা যায় না। তোকে মাহমুদা না করে দিয়েছে। তাও এসে উল্টা পাল্টা কথা কেন বলিস? তুই শুধু ভাবির ভাই বলে আর কিছু বললাম না। আর কোনোদিন যদি এই বাড়িতে তোকে দেখি তাহলে তোকে আমি মেরে ফেলব। এর পর থেকে আর কোনোদিন এই বাড়িতে আসেনি। আর আজকে এসেছে বোনের সুসংবাদের কথা শুনে। চাইলেও আমি এই বাসা থেকে তাড়িয়ে দিতে পারি না। কারণ পরিস্থিতি এখন অন্যরকম।

ডাইনিং এ বসে সবাই খাওয়া দাওয়া করছিলাম কিন্তু অনেকবার ডাকার পরেও মাহমুদা আসল না। আমি ডাকলাম তাও আসলো না। সাধারণত আমি কিছু বললে না করে না। কিন্তু এবার এবার কথাও শুনলো না। আমিও বুঝলাম জোর করেও আর কাজ হবে না।
বলল যে খাওয়া দাওয়া করবে না এখন। ক্ষুধা নেই। খাওয়া দাওয়া শেষে আমি মাহমুদার রুমে খাবার নিয়ে গেলাম আর বললাম যে, আগের সব কথা মনে করে নিজেকে কষ্ট কেন দিচ্ছিস? ভুলে যা সব।

কী করে ভুলি সব ভাইয়া। তোর কি মনে নেই আমাদের বাড়িতে এসে আমার নামেই উল্টা পাল্টা বলেছিল আমাকে। চলে কেন যেতে বলছিস না, এখান থেকে। সে যতক্ষন এই বাড়িতে আছে আমি আমি বাহিরে যাব না।

তুই পাগল হয়েছিস এটা কী করে সম্ভব। এক বছর পর এসেছে এখানে। নিজের বোনের খুশির সংবাদ শুনে। আর যদি এটা সম্ভব হতো তাহলে বাবা মা আগেই এমনটা করতো। তার আসাতে বাসায় কেউ খুশি না। কিন্তু কিছু করার নেই পরিস্থিতি মেনে নিতে হবে। তোর বাসা তুই থাকবি তোর মন মতো। কেন তুই বাহিরে যাবি না? লজ্জা তো তার হওয়ার দরকার এতো কিছুর হওয়ার পরেও এখানে এসেছে। মাহমুদার সাথে কথা বলে আমি রুমে চলে গেলাম।

রুমে গিয়ে সাবনাজের পাশে গিয়ে বসলাম। সাবনাজ তখন বলল–

আচ্ছা মাহমুদা বাসায় আসার পর থেকে এমন করছে কেন? ভাবির মা আর ভাইকে দেখে রাগে রাগে রুমে গিয়ে দরজা দিয়ে দিল। আবার খাওয়ার সময় আসল না কেন? আমি কিছু বুঝতে পারছি না।

প্রথমে লুকাতে চাইলাম‌। বললাম কিছু না এমনিতেই এমন করছে। আমি চাই না আর কেউ জানুক এই বিষয়টি। কারণ যত কম মানুষ জানবে ততই ভালো হবে। কিন্তু পরক্ষণেই মনে হলো। সাবনাজ কিছুটা হলেও বুঝতে পেরেছে কোনো সমস্যা আছে। আমি যদি সত্যিটা না বলি তাহলে সে বুঝবে আমি তার উপর বিশ্বাস করি না। আমি তখন সাবনাজ কে সব খুলে বললাম এমন এমন ঘটনা।

সাবনাজের মুখ তখন কিছুটা ফেকাশে হয়ে গেল। আমি কিছু বলতে যাব তখনি ভাবি আমার রুমে ঢুকে,,,,,

চলবে,,,,,,,

বি.দ্র: ভুল ত্রুটি ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখবেন। আগের পর্ব কমেন্টে বক্সে। গল্প ছোট হলেও কিছু করার নেই আমার। অনেক সমস্যার মধ্যে থেকেও প্রতিদিন লেখার চেষ্টা করছি। দুঃখিত
চলবে,,,,

বি.দ্র: ভুল ত্রুটি ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখবেন। আজকের পর্ব একটু খারাপ হয়েছে কারণ অনেক সমস্যার মধ্যে দিয়ে লিখেছি ভুল হলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন কিছু বানান ও ভুল হয়েছে। আগের পর্ব কমেন্টে বক্সে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here