#না চাইলেও তুই আমার ( Villan Love’s)
#বৃষ্টি আক্তার (Dr’s Queen)
#পার্ট:৮
উনি ফ্রেশ হয়ে নিচে নেমে আসলেন।আমি ওনার জন্য নাস্তা রেডি করছি।উনি এসে বসে আমাকে ওনার কাছে ডাকলেন।আমি গেলাম।তারপর উনি ওনার কোলে আমাকে বসিয়ে নাস্তা খাইয়ে দিতে লাগলেন।
– আরে কি করছেন! কোলে বসিয়ে কেউ নাস্তা খাওয়ায় নাকি।
– কেউ খাওয়ায় কিনা জানিনা কিন্তু আমি আমার বউকে খাওয়াই।
– এটা কেমন কথা 🙄
– এটা এমন কথা।বেশি কথা না বলে চুপচাপ খাও।
আমি আর কথা না বাড়িয়ে খাচ্ছি।হঠাৎ করে কলেজের কথা মনে পড়লো।উনি কি সত্যি আর আমাকে কলেজে যেতে দিবে না।
– হুম দিবো যেতে ।
– কি দিবেন যেতে?
– কলেজে।
– মানে!আপনি আমার মনের কথা শুনতে পান নাকি!
– হুম শুনতে পাইতো।
– কিন্তু কিভাবে!!!
– ভালোবাসলে প্রিয়জনের মনের কথা শুনতে পাওয়া যায়।
– কিন্তু আমি তো আপনার মনের কথা শুনতে পাইনা।
– তুমি আমাকে ভালোবাসোনা তাই শুনতে পাওনা।
– নিহান আমি যে আপনাকে ভালোবেসে ফেলেছি সেটা কি আপনি আদো বুঝতে পারছেন না!(মনে মনে)
নিধু রানী আমি জানি তুমি আমাকে ভালোবাসো কিন্তু মুখে বলছো না।আমিও এতো সহজে ছাড়বোনা ।তোমার মুখ থেকে ভালোবাসি কথা টা বের করেই ছাড়বো।
– যাও তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে আসো।কলেজে যেতে হবে।
– আচ্ছা।
আমি রেডি হয়ে গাড়িতে উঠে বসলাম।উনি ড্রাইভ করছে।
– নিধু
– জি,,
– কোনো ছেলের সাথে কথা বলবা না।এটাই তোমার ফ্রাস্ট টু লাস্ট ওয়ার্ণিং।এই ভুল যদি আবারো করো তাহলে আমি তোমাকে আর কখনো কলেজে যাওয়ার পারমিশন দিবো না।মাইন্ড ইট।
– আচ্ছা( মাথা নাড়িয়ে)
কলেজে নামিয়ে দিয়ে উনি চলে গেলেন।আমিও কলেজের ভিতরে চলে গেলাম।আমাকে দেখে হৃদয় দৌড়ে আসলো।
হৃদয়: নিধি কেমন আছো?
আমি কোনো কথা না বলে হেঁটে চলে যাচ্ছি।হৃদয় আবার আমার সামনে এসে দাড়ালো।
হৃদয়: কি হলো কথা বলছো না কেনো?
এবার আমি আর চুপ থাকতে পারলাম না।
নিধি: হৃদয় তুমি আমার সাথে প্লিজ কথা বলো না।
হৃদয়:কেনো?
নিধি: এমনি। আমি তোমার সাথে কথা বলতে চাই না।
হৃদয়: কিন্তু নিধি আমি কি করেছি? আমার অপরাধ কি বলো? কেনো কথা বলতে চাওনা?
নিধি: তোমার কোনো অপরাধ নেই।
হৃদয়: তাহলে কেনো কথা বলবে না! রিজন টা কি???
নিধি: আমার হাসব্যান্ড কোনো ছেলের সাথে কথা বলা পছন্দ করেন না।তাই প্লিজ তুমি আমার সাথে আর কথা বলো না।
হৃদয়: কিহ্!! তুমি বিবাহিত!!
নিধি: হুম।
হৃদয়: কিন্তু আগে তো আমাকে জানাও নি।
নিধি : জানানোর প্রয়োজন মনে করিনি।
হৃদয়: ওহ্।ওকে তুমি যেটা চাচ্ছ সেটাই হবে।আমি আর তোমার সাথে কথা বলবো না।ভালো থেকো।
নিধি: হুম,,, তুমিও ভালো থেকো।
সেদিনের পর থেকে হৃদয় আর আমার সামনে এসে নি।এভাবেই দুইটি বছর কেটে গেলো।আমার ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষার ফল প্রকাশ পাবে আজকে।খুব টেনশন হচ্ছে।এই দুই বছরে অনেক কিছু পরিবর্তন হয়েছে শুধু নিহানে রাগ বাদে।ওনার রাগ আগের মতোই রয়ে গেছে।ওনার ভালোবাসা এই দুই বছরে আরো বেড়ে গেছে। আমাকে উনি চোখে হারায় বলতে গেলে।আমি ওনার চোখের আড়াল হলেই নিধু নিধু করে পুরো বাড়ি মাথায় তুলে ফেলে ।ওনার এই ভালোবাসার কাছে আমার রাগ ,জেদ, অভিমান হার মানায়।তাই হয়তো না চাইলেও আমি তার।
– নিধু রানী কি ভাবছো!
– আজকে রেজাল্ট পাবলিস্ট হবে ।
– হুম তো!
– তো মানে!!
– তো মানে হচ্ছে এতো চিন্তা করার কি আছে।আমি তো জানি আমার নিধু রানীর রেজাল্ট ভালো হবে।
– আমার খুব চিন্তা হচ্ছে।
– আরেহ চিন্তা করো নাতো।দেখবে ভালো খবরই পাবে।
– তাই যেনো হয়।খুব ভয় লাগছে।
– আরেহ বোকা ভয় পাওয়ার কি আছে।আমি আছি তো।
কিছুক্ষনপর,,,,
– নিধু নিধু এই নিধু কোথায় তুমি!
– কি হয়েছে?
– তুমি A+ পেয়েছো।
– কিহহ সত্যি!!
– হুম সত্যি।
আমি যেনো খুশিতে আত্মহারা হয়ে যাচ্ছি।উনি আমাকে কোলে নিয়ে ঘুরাতে লাগলেন। কিছুক্ষণ পরে উনি আমাকে নিচে নামিয়ে দিয়ে বলেন
– নিধু আমি জানতাম তুমি খুব ভালো রেজাল্ট করবে।
– ☺️☺️☺️
– তোমার জন্য একটা সারপ্রাইজ আছে।
– কি সারপ্রাইজ?
– সেটা পরে দেখতে পাবা।এখন গিয়ে রেডি হয়ে আসো।
– কেনো?
– তোমাকে নিয়ে একটা জায়গায় যাবো।
– কোথায় নিয়ে যাবেন?
– সেটা গেলেই দেখতে পারবে।
– আচ্ছা।
আমি আজ কালো রঙের একটা শাড়ি পরলাম, কপালে ছোট একটা কালো টিপ,চোখে হালকা কাজল, ঠোঁটে হালকা অরেঞ্জ কালার লিপস্টিক,দুই হাত ভরতি কালো চুরি, চুল গুলো খোলা।
আসলে কালো রঙ টা নিহানের খুব পছন্দের। নিহানের যুক্তি অনুযায়ী অন্যান্য রঙ নিজের রূপ বদলায় কিন্তু কালো রঙ কখনো নিজের রূপ বদলায় না।তাই নিহান কালো রঙ টাকে খুব পছন্দ করে।তাই আজ আমি তার পছন্দের রঙে নিজেকে রাঙিয়েছি।
রেডি হয়ে নিচে নেমে আসলাম। উনি আমার দিকে না তাকিয়ে গাড়িতে গিয়ে বসতে বললেন।ওনার এই কথা শুনে আমি তেলে বেগুনে জ্বলে উঠলাম।ওনার জন্য এতো সুন্দর করে সাজলাম আর উনি একটা বারও ফিরে তাকালেন না। যাহ যাবই না।আমি চুপ করে ঐখানে দাড়িয়ে রইলাম।
– কি হলো তোমাকে না গাড়িতে গিয়ে বসতে বললাম।
-…………
– কি হলো
– কিছু না।
– চলো।
– হুম 😒
জীবনেও আর তোর পছন্দের কিছু পড়বো না দেখে নিস😤হনুমান কোথাকার।
উনি ড্রাইভ করছে।একটি বারও আমার দিকে তাকালেন না।খুব কষ্ট লাগছে আমার।আমি চুপ করে রইলাম কোনো কথা বললাম না। উনি গাড়ি থামিয়ে আমাকে নামতে বলেন।আমি নেমে দেখি অনেক সুন্দর একটা জায়গা।চারপাশ টা অনেক সুন্দর।পাশেই একটা ছোট নদী রয়েছে।আমি দৃশ্য টা উপভোগ করতে ব্যাস্ত হয়ে পরলাম।ওনার কথা ভুলেই গেছি।হঠাৎ ওনার কথা মনে পরতেই পেছনে ফিরে তাকালাম। তাকিয়ে দেখি উনি একগুচ্ছ লাল কৃষ্ণচূড়া ফুল হাতে নিয়ে হাঁটু গেড়ে আমার সামনে বসে আছেন।আর বলতে লাগলেন
– জানো নিধু,
“শুনেছি আজকাল সবাই ভালোবাসার মানুষকে কাঠগোলাপের লাল সাদা কিংবা অন্য কোনো রঙ উপহার দেয়,,,,,
কিন্তু আমি তোমাকে কৃষ্ণচূড়ার লাল রঙ দিয়ে রাঙাতে চাই।।।।
সবাই নাকি কাশফুল দেখায় তার কাছের মানুষটাকে,,,,,
কিন্তু আমি তোমাকে সবুজ ভরা মাঠ দেখাতে চাই।যার মেয়াদ সাময়িক নয়।তোমার মন খারাপের সময় যেনো সবুজ ঘাসে খালি পায়ে হাঁটতে পারো।।।।
তোমার মন খারাপের কারণ নয় হাসির কারণ হতে চাই আমি।
ভালোবাসা দিয়ে ভালোবাসার অধিকারে জড়িয়ে রাখবো।তোমার ভালোবাসাতে হৃদয়ের হৃদস্পন্দন থেকে আসক্ত হয়ে থাকবো।খুব যে ভালোবাসি তোমায় নিধু,,,”
I’m addicted to you
I’m to about you
You are my dream
I love you Nidhu ❤️
ওনার কথা শুনে চোখ ভিজে আসছে আমার।না চাওয়া শর্তেও চোখ বেয়ে পানি পড়ছে।আমি ওনার হাতে ধরে দাড় করিয়ে বললাম
– I love you too Nihan ❤️
উনি আমার কপালে আলতো করে ভালোবাসার পরশ দিয়ে জড়িয়ে ধরে বলেন –
খুব ভালোবাসি তোকে,, #না চাইলেও তুই আমার,,,শুধুই আমার।আর আমার হয়েই তোকে থাকতে হবে।।
“বেঁচে থাকুক সকল ভালোবাসা”
সমাপ্ত।।।
”