না চাইলেও তুই আমার পর্ব ৬

#না চাইলেও তুই আমার ( Villan Love’s)
#বৃষ্টি আক্তার ( Dr’s Oueen)
#পার্ট:৬

হঠাৎ দরজা খোলার শব্দ পেলাম।তাকিয়ে দেখি নিহান আমার দিকে আসছে।আমি দেখেও না দেখার মতো করে বসে ছিলাম।উনি আমার সামনে এসে ফ্লোরে বসে আমার দুগালে আলতো ভাবে দুই হাত রেখে বলেন –

– আমি খুব খারাপ তাইনা নিধু?
– ,,,,,,,,
– আমি তোমাকে অনেক কষ্ট দেই তাইনা?
– ,,,,,,,,
– জানি খুব ঘৃণা করো আমাকে ।কিন্তু কি করবো বলো তোমাকে যে আমি অনেক ভালোবাসি ।তোমাকে হারাতে চাই না আমি।বারবার তোমাকে হারানোর ভয় টা আমার মধ্যে কাজ করে যার জন্য আমি তোমাকে কষ্ট দিয়ে ফেলি। তোমাকে কোনো ছেলের সাথে দেখলে আমার মাথা ঠিক থাকে না।তখন ইচ্ছে করে সব কিছু শেষ করে নিজেও নিঃশেষ হয়ে যাই।কিন্তু বিশ্বাস করো আমি আমার রাগ টা কন্ট্রোল করার অনেক চেষ্টা করি কিন্তু পারিনা।এর জন্য না চাওয়া শর্তেও তোমাকে অনেক কষ্ট দিয়ে ফেলি।আমাকে তুমি ক্ষমা করে দেও নিধু।

উনি অসহায় দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে করুণ সুরে আমাকে কথা গুলো বললেন।কেন জানিনা ওনার আজকের কথা গুলো শুনে আমার খুব মায়া লাগছে।এতো রাগী মানুষটাও আজ আমার কাছে ক্ষমা চাচ্ছে কথা টা ভাবলে কেনো জানি মনে হয় আমি স্বপ্নের রাজ্যে থেকে কথা গুলো শুনছি ।
এই মানুষটার দিকে কখনো ভালো করে তাকিয়ে দেখিনি কিন্তু আজ যেনো তার উপর থেকে চোখ সরাতে পারছি না।দুধে আলতা গায়ের রঙ, গাল ভরতি খোচা খোচা দাড়ি, গোলাপের ন্যায় ঠোঁট সব মিলিয়ে সুদর্শন পুরুষ।তার চুল গুলো কেমন এলোমেলো হয়ে আছে।না চাইতেও বারবার ইচ্ছে করছে আমার হাত দিয়ে চুল গুলো ঠিক করে দিতে।আমি আনমনেই তার চুল গুলো হাত দিয়ে ঠিক করে দিলাম।হঠাৎ ওনার চোখের দিকে তাকিয়ে দেখি পানি।উনি কাদছেন,, কিন্তু কেনো!
হুট করেই উনি আমার জড়িয়ে ধরে বলা শুরু করলেন –

– নিধু সবাই শুধু আমাকে ছেড়ে কেনো চলে যায় বলোনা? কেনো কেউ আমাকে ভালোবাসে না? আমি কি খুব বেশি খারাপ বলোনা নিধু?

উনার এই কথা গুলোর উত্তরে কি জবাব দিবো বুঝতে পারছি না।উনি আবারো জিজ্ঞেস করলেন

– বলোনা নিধু। আচ্ছা নিধু আমাকে কি ভালোবাসা যায় না? আমি কি ভালোবাসা পাওয়ার যোগ্য না!

কেন জানিনা মন বলছে ওনাকে বলতে,
হ্যাঁ নিহান আপনি ভালোবাসা পাওয়ার যোগ্য। আপনাকে ভালোবাসা যায়।কিন্তু মস্তিস্ক সায় দিচ্ছে না।কেমন জানি দোটানায় আটকে যাচ্ছি।বাবা সবসময় বলতেন, মন যেটা বলে সেটা শুনো।তাই কোনো কিছু না ভেবেই আমি উনাকে হালকা করে জড়িয়ে ধরে বললাম

– হ্যাঁ ভালোবাসা যায় তো আপনাকে।
উনি আমার দিকে তাকিয়ে খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরলেন।

– নিধু কখনো ছেড়ে যেওনা আমাকে। তুমি বিহীন একাকিত্ব আমাকে নিঃশেষ করে দিবে।বড্ড বেশি ভালোবাসি যে তোমায়। তাই #না চাইলেও তুই আমার বলে বারবার দাবি করি।তুমি ছেড়ে গেলে যে দেহ থেকে আমার প্রাণটাই চলে যাবে।

ওনার কথা শুনে কেনো জানি আজ মনে হচ্ছে আপন বলতে এখনো আমার কেউ আছে।আমি একা নই।আমাকে আগলে রাখার মতো আপন মানুষ আছে আমার।তার ভালোবাসার কাছে তার ক্ষণিকের দেওয়া কষ্ট গুলো কেনো জানি আজ আমার কাছে খুব তুচ্ছ মনে হচ্ছে।কেন জানি মন বারবার বলতে চাচ্ছে,

যাবো না নিহান,কখনো আপনাকে ছেড়ে যাবো না। ইচ্ছের বিরুদ্ধে হলেও আজ আমি আপনাকে ভালোবেসে ফেলেছি। কেনো ভালোবেসেছি,?কি কারণে ভালোবেসেছি?কেনো ছেড়ে যাবো না? তার উত্তর যে আমার অজানা।শুধু জানি যে আমিও আপনাকে ভালোবাসি।

– কি হলো নিধু বলোনা কখনো আমাকে ছেড়ে যাবা নাতো?
– না যাবো না।

নিহান এবার আমাকে ছেড়ে একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেন।চোখে মুখে কেমন জানি তার আনন্দের উল্লাস প্রকাশ পাচ্ছে।

– বউ চলো কিছু খেয়ে নিবে।দুপুরে তো তুমি কিছু খাও নি।
ওনার কথায় আমি ভ্রু কুঁচকে বললাম –

– আপনি আমাকে বউ বলছেন কেনো?
– তুমি আমার বউ তাই বউ বলে ডাকলাম🤗
– আপনি আমাকে বিয়ে করলেন কবে🤔
– সেদিন তোমাকে দিয়ে যেই পেপারে সাইন করিয়েছিলাম সেটা আমাদের বিয়ের রেজিস্ট্রি পেপার ছিলো🙄
– কিহহহহহহহহহ😲
– বাবাগো বাবা আমার কানের পদ্দা ফেটে গেছে গো 😑
ষাঁড়ের মতো চেচাচ্ছে কেন!
– কি বললেন আমি ষাঁড় 😠
– নাতো আমি কখন তোমাকে ষাঁড় বললাম 🙄
আমি শুধু বলছি ষাঁড়ের মতো চেচাচ্ছো😁
– তবে রে।

ওনাকে পুরা রুমে তাড়া করে গেলাম।একপর্যায়ে দৌড়ানো বন্ধ করে হাঁপাতে লাগলাম।উনিও এককোনায় হাঁটুর উপর ভর দিয়ে হাঁপাচ্ছে আর বলছে –

– এতো এনার্জি কোথ থেকে পাও তুমি।দৌড়ানি দিতে দিতে আমাকে ট্রায়াড বানিয়ে ফেলছো।
– আপনাকে দৌড়ানি খেতে বলছে কে🙄
না দৌড়িয়ে চুপ করে দাড়িয়ে থেকে আমার হাতের মাইর গুলো খেলেই তো পারতেন।
– তোমার মতো চিকনি আমার মতো বডিবিল্ডার কে মারবে হাহাহাহাহাহাহাহা
– আপনি আমাকে চিকনি বললেন! আমি চিকনি😤
– হ্যাঁ বললাম😂
এই বলে সে ভোঁ দৌড়।আমিও তার পিছু পিছু তাকে তাড়া করে যাচ্ছি।

চলবে,,,

( ভুলত্রুটি হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here