না_চাইলেও_তুমি_আমার পর্ব ২৩+২৪

#না_চাইলেও_তুমি_আমার💞
#লেখিকা_লায়লা_আঞ্জুমান_ইতি
#পার্ট_২৩




রাতের দিকে আমি আর সামিরা বসে গল্প করছি তখনি অফিস থেকে কাব্য আসলো, সামিরা গিয়ে বলল,,,কাব্য ভাইয়া কেমন আছেন।কাব্য বলল
– এই তো ভালো শালিকা
– হুম দেখেই বুঝা যাচ্ছে
– কাল সবাই ঘুরতে যাব কেমন

আমি বললাম,,,কি এমন হঠাৎ করে ঘুরার প্লেন হলো যে।কাব্য বলল,, কাল ছুটির দিন আমরা সবাই মিলে ঘুরতে যাব।সামিরা খুশিতে চেচিয়ে উঠলো,,ইয়েয়য়য়য়।কাব্য বলল,,ও জিহান ও যাবে।আমি বললাম,,,ও জিহান ভাইয়া আজ এসেছিল তোমাকে খুজতে।কাব্য বলল,,হুম জানি আমার সাথে কথা হয়েছে।জিহান ভাইয়া যাবে কথাটা শুনে সামিরা খুব একটা খুশি হতে পারে নিই,সামিরা মুখটা পেচার মতো করে সামনের থেকে চলে যেতে নিলো,তখনি কাব্য বলল,,আরে আপু কি হয়েছে মুখটা ছোট হয়ে গেলো কেন।সামিরা পেচার মতো মুখ করে বলল,,কিছু না এমনি।

বলেই সামনের থেকে চলে গেল,কাব্য আমার দিকে তাকিয়ে বলল,,ওর কি হলো।আমি ওকে তখনকার ঘটনা বললাম,আমার কথা শুনে কাব্য হাসতে হাসতে খুন প্রায়। কাব্য হাসতে হাসতে বলল,,,এই কারণে ওর মুখ ছোট হয়ে গেলো জিহান যাবে বলে।আমি বললাম,,
– হুম
– ওদের ব্যাপার টা বেশ ইন্টারেস্টিং কিন্তু
– আমার কাছেও তাই লাগলো, আর জিহান ভাইয়ার কথাও কেমন পেচানো বলল কিছু বুঝলাম না।
– তোমার ওই মোটা মাথায় ঢুকবেও না গাধী
– কি বললা দাড়াও

বলেই ওকে ইচ্ছে মতো মারতে লাগলাম,ও হাসতে হাসতে বলল,,,আরে আরে ব্যথা পাচ্ছি তো।
আমি বললাম,,,ভালো হয়েছে।বলেই অন্য দিকে মুখ ঘুরিয়ে বসলাম, ও আমার কাছে এসে বলল,,ওরে বাবা আমার বউটা তো ভিশন অভিমানী কিছু বলা যাবে না।আমি কিছু না বলে চুপ হয়ে রইলাম, ও আমার চোখের সামনে এক মুঠো কাচের চুড়ি ধরে বলল।দেখো তো কেমন।আমি তাকিয়ে বললাম,,এই গুলো কার জন্য এনেছো।ও আমার দিকে ভ্রু কুচকে তাকিয়ে থেকে বলল,,আমার অফিসের সুন্দরী পিএ এর জন্য, শুধু শুধু গাধী বলি তোমার ছাড়া কার জন্য আনবো।আমি খুশি হয়ে হাত এগিয়ে দিলাম ও সামন্য হেসে হাতে চুড়ি পড়িয়ে দিল।

সকালে ঘুম ভাঙ্গতেই দেখি কাব্য পাশে নেই, বা দিকে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি সকাল ৯ টা বেজে ৫৬ মিনিট, হায় আল্লাহ আমি এতখন ঘুমিয়ে ছিলাম,কাব্য কোথায় গেলো ইশশ কত কাজ বাকি আছে, তাড়াতাড়ি বিছানা ছেড়ে উঠতে গেলাম তখনি কাব্যের কন্ঠ ভেসে আসলো, রিলেক্স সুইটহার্ট। কথাটার আওয়াজ অনুসরণ করে দেখি কাব্য সামনে হাতে ট্রেয় নিয়ে মুখে মিষ্টি হাসি দিয়ে দাড়িয়ে আছে,আমার কাছে এসে বলল,,,এই নেও তোমার চা।

আমি অবাক হয়ে বললাম,,,তুমি এত সকালে উঠেছো কেন ভুলে গেছো আজ ছুটি। ও বলল,,,দেততত এইসব বাদ দেও চা টা খেয়ে বল কেমন হয়েছে চা টা কিন্তু আমি বানিয়েছি।
আমি ওর দিকে তাকিয়ে সামান্য হেসে বললাম,,আজ ছুটির দিন একটু রেস্ট নিতে।ও বলল,,,তোমার ও তো রেস্ট নেওয়ার দরকার। আমি বললাম,,,আমি তো তেমন কোনো কাজই করি না। ও গাল ফুলিয়ে বলল,,দূর সব মেয়েরা তো এমনি হাসব্যান্ড চায় আর তুমি কি না শুধু প্রশ্ন কর।

আমি ওর এমন কান্ড দেখে হেসে বললাম,,,সরি। ও কোনো কথা না বলে আগের মতো চুপ হয়ে অন্য দিকে ঘুরে রয়েছে, এবার ওর সামনে গিয়ে কান ধরে বললাম,,,এবারের মতো মাফ করে দেও । ও এবার হেসে আমাকে জরিয়ে ধরলো, আমি বললাম,,আরে কি করছো ছাড় কেউ চলে আসবে।ও বলল,,কেউ আসবে না। আমি বললাম,,,দেখো ছাড় আমাকে। ও বলল,,, হুম না ছাড়বো না,বলেই গাইতে লাগলো, আমি ছাড়বো না, ছাড়বো না, ছাড়বো না রে।

ওর এই গান গাওয়া দেখে আমার আর বুঝার বাকি নেই ও আমাকে ভেঙ্গাচ্ছে,ওই রাতে ওর সাথে মজা করে ছিলাম, ওর এমন কান্ড দেখে পেট ফেটে হাসি পাচ্ছে। একটু দুষ্টমি করে পিছন দিকে তাকিয়ে বললাম,,আরে খালা। কাব্য সাথে সাথে আমাকে ছেড়ে পিছন ফিরতে ফিরতে বলল,,খখখ খালা??? এখানে তো কেউ নেই।এই সুযোগে আমি দৌড়ে ওয়াসরুমে ঢুকে গেলাম, ও বাহির থেকে বলতে লাগল,এর ফল তুমি পাবে সুইটহার্ট রেডি থেকো।আমি বললাম,,,ওকে আমি রেডি পাগল কোথাকার।

বিকেল হতেই আমরা রেডি হলাম বাহিরে যাওয়ার জন্য, কাব্য আজ ধূসর রঙের শার্ট পড়েছে অসাধারণ দেখাচ্ছে আমার ডেভিলটাকে সব সময়ের মতো।আজ আমি একটা গোল্ডেন কালারের হাফ সিল্কের শাড়ি পড়েছি, আর সামিরা একটা বেবি পিনক কালারের সালওয়ার কামিজ পড়েছে অনেক কিউট দেখাচ্ছে ওকে।

আমি আয়নার সামনে শাড়ি ঠিক করছিলাম, তখনি পিছন থেকে কাব্য এসে জরিয়ে ধরলো, তারপর বলল,,,ওই তুমি এত ভয়ঙ্কর রুপ দেখাও কেন আমাকে।আমি ভ্রু কুচকে রাগী লুক নিয়ে বলল,,তোমার কাছে আমাকে এখন রাক্ষসীই মনে হবে।

ও আমার কথা শুনে আমাকে ছেড়ে দিয়ে বলল,, হায় আল্লাহ এই কার সাথে আছি আমি ওর মাথায় একটু বুদ্ধি দিয়ে দেও প্রশংসাও বোঝে না।ওর কথা শুনে আমি ভ্র কুচকে তাকিয়ে আছি ওর দিকে। ও এসে খপ করে আবার জরিয়ে ধরে বলল,,আমার গাধী বউ।আমি কিছু বলতে যাব তার আগেই সামিরা রুমে এসে আমাদের দেখে আবার উল্টো দিকে ঘুরে বলতে লাগল,,সরি সরি রোং টাইম এতে চলে এসেছি আমি আসছি। বলেই সামিরা চলে গেলো, আমি কিছু বলার আগেই কাব্য দাত কেলিয়ে হেসে বলল,,থ্যাংক ইউ শালিকা।আমি ওর দিকে রাগী ভাবে তাকিয়ে বললাম,,,তুমিও না।

কিছুখন পর আমি, কাব্য, সামিরা বের হলাম বাহিরে যাওয়ার জন্য, গাড়িতে বসে কাব্যকে বললাম,,,জিহান ভাইয়া আসলো না।কাব্য বলল,,ওর নাকি হঠাৎ কাজ পড়ে গেছে কাজ যদি শেষ হয় তাহলে আসবে।সামিরা জোরে ইয়েয়য়য় বলে উঠলো আমি আর কাব্য অবাক হয়ে পিছনে তাকিয়ে বললাম,,,কি হয়েছে।সামিরা জোর পূর্বক হেসে বলল,,,না মানে এমনি ঘুরতে বেড়িয়েছি তো তাই আনন্দে এই আর কি।ওর এতো আনন্দ কিসের সেটা আমার কাব্যের বোঝার বাকি নেই।

আমরা একটা জায়গায় গেলাম গিয়ে আমি কাব্য সামিরা বসলাম,জায়গাটা নদীর কাছে আমি আর কাব্য কয়েকবার এসেছি এখানে, আমি কাব্য আর সামিরা বসে বসে গল্প করছি, তখনি কাব্য বলল,,জিহান তো আসলো না হয় তো কাজ শেষ করতে পারে নিই।আমি বললাম,, হয় তো।সামিরা মনের আনন্দে নদীর দিকে তাকিয়ে খুশি হয়ে বলল,,খুব ভালো।তখনি পিছন থেকে জিাহন ভাইয়া বলল,,কি ভালো।সামিরা জিহান ভাইয়াকে দেখে ভূত দেখার মতো চমকে উঠলো

কাব্য উঠে জিহান ভাইয়ার কাছে গিয়ে একটা হাগ করলো,কাব্য জিহান ভাইয়াকে বলল,,তুই তা হলে আসলি আমরা তো ভেবে ছিলাম আসবি না।জিহান ভাইয়া সামিরার দিকে একবার তাকিয়ে বলল,,,আমি না আসলে হয় তো কেউ খুব মিস করতো আমাকে।

জিহান ভাইয়ার কথা শুনে সামিরা এখন অন্য দিকে তাকালো। আমি জিহান ভাইয়ার কাছে গিয়ে বললাম,,,ভালো হয়েছে এসেছেন। জিহান ভাইয়া বলল,,হুম না এসে তো উপায় নেই।তারপর সবাই আবার গিয়ে বসলাম,তারপর শুরু হলো নানা ধরনের গল্প, জিহান ভাইয়া বলে উঠল,,, কাব্য তোর বিয়ের দিনের কথা মনে আছে যেই দিন ইতিকে জোর করে তুলে নিয়ে বিয়ে করেছিলি।কাব্য হেসে বলল,,,হ্যা এটা কি ভুলার মতো জিনিস কি ভয়টা না পেয়েছিল।

ওদের এমন দাত কেলানো দেখে মেজাজ খারাপ হয়ে যাচ্ছে, সামিরা অবাক হয়ে একবার ওদের দিকে তাকাচ্ছে আরেকবার আমার দিকে তাকাচ্ছে তারপর সামিরা ধিরে ধিরে আমাকে বলল,,,
– আপু কি শুনছি তার মানে তোমাদের এর আগেও একবার বিয়ে হয়েছে
– হুম শুনলি তো
– ওরে বাবা কাব্য ভাইয়া তো ভিশন ভয়ানক
– হুম, ও শুধু এমন না জিহান ভাইয়াও এক গোয়ালের গরু
– তুমি কিভাবে বুঝলা
– দেখতে চাস
– দেখাও

আমি ওদের কথার মাঝে ঢুকে বললাম,,,অনেক তো হলো আমাকে নিয়ে মজা করা, এবার জিহান ভাইয়া আপনি কবে বিয়ে করবেন।কাব্য ও বলল,,হ্যা দোস্ত কবে তোর বিয়েতে অসাধারণ গিফট দেবো যা তুই আমার বিয়েতে দিয়ে ছিলি।

জিহান ভাইয়া মুচকি হেসে বলল,,খুব দ্রুত করে ফেলব।আমি বললাম,,,তো মেয়ে পছন্দ করা আছে নাকি।জিহান ভাইয়া হেসে বলল,,হুম এক জনকে মনে ধরেছে।কাব্য জিহান ভাইয়ার দিকে বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে বলল,,,কি এতো কিছু করে ফেলেছিস আর আমাকে জানালি না নোট ফেয়ার।জিহান ভাইয়া হেসে বলল,,তুই জানিস।

কাব্য ভাবতে লাগল ও কিভাবে জানে, আমি হুট করে বললাম,,,আচ্ছা ভাইয়া ওই মেয়ে কি জানে।উনি বললেন,,, না আর জানায়ও নিই।কাব্য বলল,,,অপেক্ষা কিসের বিয়ে করে ফেল।কাব্য আর জিহানের কথা শুনে সামিরা প্রতিবার শকট খাচ্ছে, আমি বললাম,,,আচ্ছা মেয়েটা যদি বিয়েতে রাজি না হয়।জিাহন ভাইয়া খুব সাভাবিক ভাবে বলে উঠলেন,,,তাহলে আর কি করার তুলে নিয়ে বিয়ে করে ফেলব।সামিরা জিহান ভাইয়ার কথা শুনে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে, আমি ওর দিকে তাকিয়ে ভ্রু একবার নাচিয়ে বললাম,,কি বলেছিলাম না।
#না_চাইলেও_তুমি_আমার💞
#লেখিকা_লায়লা_আঞ্জুমান_ইতি
#পার্ট_২৪




কাব্য আর আমি কখন থেকে বকবক করছি আর সামিরা আর জিহান বসে বসে হজম করছে,সামিরা একটু আর একটু ফাকে জিহানের দিকে তাকাচ্ছে জিহানের চোখ পড়তেই চোখ সরিয়ে ফেলে যেন ওর দিক ও কোনো দিনই তাকায় নিই, জিহান সামিরার কান্ড দেখে মুচকি মুচকি হাসছে,সামিরা চারপাশ তাকিয়ে আবার যখন জিহানের দিকে তাকালো, তখন জিহান দুষ্টুমি করে চোখ মেরে দিল,জিহানের এমন কান্ডে সামিরা হা হয়ে গেলো সাথে সাথে মুখে এক রাশ বিরক্তি নিয়ে অন্যদিকে তাকালো।

জিহান ভাইয়া হঠাৎ করে বললেন,,, আচ্ছা কতখন এভাবে বসে থাকবো চল একটু হাটি।কাব্য বলল,,হুম ঠিক বলেছিস।তারপর সবাই উঠলাম আর হাটতে লাগলাম,আমি আর কাব্য সামনে হাটছি আর জিহান ভাইয়া আর সামিরা পিছন পিছন হাটছে,আমি কাব্যের দিকে তাকিয়ে বললাম,,,ওগো শুনছো।ও কাব্য মুচকি হেসে বলল,,,বল গো।

আমি পিছন দিকে তাকিয়ে তারপর কাব্যের দিকে তাকিয়ে বললাম,,, কোনো কিছু কি তোমার চোখে পড়ছে।কাব্য পিছনে তাকিয়ে তারপর আমার দিকে তাকিয়ে বলল,,হুম বেশ প্রেম প্রেম গন্ধ ছড়াচ্ছে দাড়াও একটা ব্যবস্থা করি।বলেই কাব্য পিছনে ঘুরলো,তারপর সামিরা আর জিহানের উদ্দেশ্য বলল,,,জিহান শালিকা তোমরা যদি কিছু মনে না কর আমি ইতিকে নিয়ে একটু অন্য দিকে হাটি। সামিরা শুধু জোর পূর্বক হেসে সাই দিল,আর জিহান ভাইয়া রাজ্য জয় হাসি দিয়ে বলল,,,কেন না যা নো প্রবলেম।

এই ডেভিলটা তো ভিশন চালাক ওদের কিভাবে সুযোগ করে দিল, ও আমার দিকে তাকিয়ে বলল,,চল সুইটহার্ট। আমি একটু হাসি দিয়ে ওর সাথে চলা শুরু করলাম।আমি আর কাব্য অন্য দিকে দিয়ে ওদের থেকে দূরে হাটছি আমি কাব্যকে বললাম,,,
– তুমি তো ভালোই চালাক
– তা কেন
– তা নয় তো কি ওদের একান্ত কথা বলার সুযোগ করে দিলে
– কেন কোনো সমস্যা আছে
– না কিন্তু তুমি কিভাবে বুঝলে জিহান ভাইয়া সামিরাকে পছন্দ করেছে
– শুধু পছন্দ করে নিই ভালোবেসে ফেলেছে
– বাবা তুমি কেমন করে জানলে
– জিহান আমার বন্ধু আমি ভালো মতো জানি, ওর কথা বলা নানান কান্ডে আমার কাছে বোঝা সহজ হয়ে গেছে
– হুম সামিরা কি চায়, কে জানে
– তোমার কি মনে হয়
– সামিরা কাল থেকে জিহান ভাইয়ার সাথে করা ঝগড়া নিয়েই ভাবছে, বলতে পারি না
– প্রস্তুত থাক সামনে একটা বিয়ে খাওয়া পড়বে
– সামিরা যদি রাজি না হয় বিয়েতে
– দেখো জিহান যখন ঠিক করে নিয়েছে ওকে বিয়ে করবে তার মানে হলো ওকেই বিয়ে করবেই সামিরা চাক বা না চাক
– এই তোমরা বন্ধু নাকি গুন্ডার দল
– হা হা হা হা হা হা হা

রাতের দিকে, আমি কাব্য সামিরা বসে বসে খাবার খাচ্ছি, না না আমি আর কাব্য শুধু খাচ্ছি আর সামিরা কখন থেকে হাতের আঙ্গুল দিয়ে ভাত নাড়াচাড়া করছে ওর মন ঠিক এখন খাবার টেবিলে নেই, ওর দিকে অনেক খন ধরে আমি আর কাব্য তাকিয়ে আছি কিন্তু ওর কোনো খবর নেই ও ওর দুনিয়া হারিয়ে আছে।

খাবার শেষ করে যে যার রুমে চলে গেছে, আমি সামিরার রুমে গিয়ে দেখি ও বসে আছে আমি ওর কাছে গিয়ে বললাম,,কিরে কি হয়েছে তোর কখন থেকে দেখছি কিছু ভাবছিস।
সামিরা আমার হাত ধরে বলল,,আপু আমি চিন্তায় আছি।আমি বললাম,,কেমন চিন্তা কি হয়েছে। সামিরা বলল,,,তোমরা যখন আলাদা হাটতে গিয়ে ছিলে তখন ওই চোরটা আমাকে কি বলেছে জানো শুনলে তুমি বিশ্বাস করবে না।

সামিরার অবস্থা দেখে হাসি তো পাচ্ছে ভিশন কিন্তু প্রকাশ না করে না বুঝার ভান করে বললাম,,,ও কি বলেছে তোকে।সামিরা বলল,,,জানো আমার এখনো বিশ্বাস হচ্ছে না।আমি এবার রেগে বললাম,,,ওই মূল কথা বলবি নাকি এক কথা বার বার বলতে থাকবি।সামিরা আবার বলল,,,সত্যি আপু আমার এখনো বিশ্বাস হচ্ছে না।এই মেয়ে তো পুরোই পাগল একটু রাগ দেখিয়ে বললাম,,ঠিক আছে তুই নিজেকে বিশ্বাস করাতে থাক আমি আসছি।

সামিরা আমার হাত ধরে আটকে ফেলে আর বলে,,দাড়াও শোনো।আমি বসে বললাম,,হুম বল আমি শুনছি।সামিরা ওর শরীরের ওড়নাটা হাত দিয়ে মোচড়াচ্ছে আর বলছে,,,উনি বললেন উনার নাকি আমাকে খুব ভালো লেগেছে আমাকে উনি বিয়ে করতে চান।
আমি বললাম,,ও।

সামিরা আমার দিকে তাকিয়ে বলল,,তুমি এত সাভাবিক ভাবে নিচ্ছো। আমি বললাম,,,হুম তো তুই কি বললি।সামিরা বলল,,,আরে আগে আমার কথা তো শোনো আমাকে কিছু বলতে দেয় নিই যখন আমি বলতে গেলাম আমাকে থামিয়ে ডেভিল মার্কা স্টাইলে বলল,,,শোনো তুমি বিয়ে করতে চাও নাকি চাও না তা দিয়ে আমার কিছু না আমি যখন ঠিক করেছি আমার আগামী দিন গুলো তোমার সাথে কাটাবো তার মানে তোমার সাথেই কাটাবো সেটা তুমি চাও বা না চাও আর মনে মনে অন্য কাউকে ভালোবেসে থাকলে তা ভুলে যাও।

আমি সামিরার কথা শুনে মোটেও অবাক হই নিই এক ডেভিলের বন্ধুর কাছে ডেভিল গিরি ছাড়া আর কি আশা করা যায়।আমি সামিরাকে বললাম,,,আচ্ছা তাহলে জিহান ভাইয়া তার মনের কথা তোকে বলে দিয়েছে। সামিরা বলল,,এভাবে কেউ কাউকে প্রপোজ করে আমার তো মনে হলো আমাকে থ্রেট দিয়েছে।ওর কথা শুনে আমার হাসতে হাসতে অবস্থা খারাপ, আমার হাসি দেখে সামিরা গাল ফুলিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।

আমি ওর রুমে থেকে নিজের রুমে চলে আসলাম, এসে দেখি কাব্য রুমে নেই কোথায় গেলো ওয়াসরুমে নাকি, আমি বিছানায় গিয়ে একটু শুয়ে পড়লাম, চোখটা বন্ধ করলাম হঠাৎ দরজা আটকবার আওয়াজ আমি চোখ খোলার আগে রুমের লাইট অফ হয়ে গেলো আমার তো এবার ভয় করছে, তাড়াতাড়ি উঠে বলতে লাগলাম,,ককক,কে কাব্য তুমি। তাও কারও আওয়াজ আসছে না এবার ভয়ে গলা শুকিয়ে আসছে, আবার কাপা কাপা গলায় বললাম,,,কক,কাব্য তুমি কথা বলছো না কেন।

হঠাৎ কারও আর্তনাদ শোনা গেলো বিকট শব্দ কানে ভেসে এলো কারও কান্নার আওয়াজ ভয়ে আমার জান পাখি উড়ে গেলো বলে,এবার কানে হাত দিয়ে চোখ বন্ধ করে ফেললাম,,এবার শব্দ টা আমার একদম কাছে চলে এসেছে, সাহস পাচ্ছি না তবুও চোখ ধিরে ধিরে খুলে দেখি কাব্য মোবাইলটা আমার সামনে ধরে রেখে বিশ্ব জয় করার মতো হাসি দিচ্ছে। সেকেন্ডের ভিতরে মেজাজ খারাপ হয়ে গেলো ইচ্ছে মতো মারতে লাগলাম ওকে,,তুমি আসলেই একটা ডেভিল আর একটু হলে তো আমি এখনি হার্ট এ্যাটেক করতাম।

ও আমাকে জাপটে জরিয়ে ধরে বলল,,এত দূর্বল মনের হলে কি হয় এই টুকুতেই ভয় পেয়ে যাও এখন যদি আমি বলি আমি কাব্য না তখন কি হবে।ওর কথা শুনে হ্রদপিন্ড কেপে উঠলো, আর কিছু বলতে না পেরে ঠোট উল্টে কান্না শুরু করে দিলাম, কাব্য আমার কান্না দেখে হাসতে হাসতে বলল,,কাম ওন তুমি এত ভিতু কেন। আমি কান্না করতে করতে বললাম,,,আমাকে এভাবে ভয় দেখাবে আবার বলবে আমি ভিতু কেন তোমার সাথে আমার আর কোনো কথা নেই ভ্যা ভ্যা ভ্যা।কাব্য হাসতে হাসতে বলল,,সরি সরি আর করব না এমন। আমার কান্না দেখে কাব্য আমাকে জরিয়ে ধরে আমার কপালে আলতো করে ভালোবাসা একে দিয়ে বলল,,আই এম সো সরি আর এমন মজা করব না প্লিজ কান্না থামাও।

তারপরের দিন সকালে,,,আমি সামিরার রুমে গিয়ে ওকে ডেকে তুললাম,,,এই সামিরা ওঠ আর কতখন ঘুমাবি।সামিরা চোখ কচলাতে কচলাতে উঠলো উঠে বলল,,কি হয়েছে আপু। আমি বললাম,,কয়টা বাজে দেখেছিস ১১ টা বাজে ওঠ আর এই নে তোর কফি। সামিরা ঘুম ঘুম চোখে বলল,,,ঠিক আছে।

আমি চলে যেতে গিয়ে আমার চোখ পড়লো সামিয়ার হাতের আঙ্গুলের রিংটার দিকে, আমি ওর হাত ধরে বললাম,, কিরে এটা আসলো কোথার থেকে কাল রাতে তো দেখলাম না।সামিরা ঘাবড়ে গেলো তারপর জোর পূর্বক হেসে বলল,,,সত্য বলব নাকি মিথ্যে।

আমি ওর দিকে তাকিয়ে বললাম,,আমাকে মিথ্যে বলে কোনো লাভ নেই সত্য কথা বল এতে লাভ হবে।সামিরা বলল,,কাল রাতে আসলে তুমি যাওয়ার কিছুখন পর আমার মোবাইলে ফোন আসে ফোন রিসিভ করার বুঝতে পারলাম উনি ফোন দিয়েছে আমাকে বলল বাড়ীরর গেটের সামনে যেতে আমি রাজি হই নিই পরে বলে আমি এখন নিচে না আসলে উনি আমার রুমে চলে আসবে তাই আর কথা না বাড়িয়ে নিচে গেলাম, নিচে যাওয়ার পর উনি আমাকে এই রিংটা দিলেন আমি নিতে চাই নিই জোর করে পড়িয়ে দিলেন, আমি আঙ্গুল থেকে সাথে সাথে খুলতে চাইলাম কিন্তু খুলে নিই আটকে গেছে, উনি হেসে বললেন,,, এই রিংটা তোমাকে আমার কথা মনে করিয়ে দেবে যে তুমি অলরেডি আমার হয়ে আছো।বলেই উনি চলে গেলেন।আমি ওর কথা শুনে হা হয়ে গেলাম জিহান ভাইয়া তো দেখি ওই ডেভিলটার কপি। আমি সামিরাকে বললাম,, তো তুই কি জিহান ভাইয়ার বউ হতে চাস নাকি। এর প্রতি উওরে সামিরা মুচকি হাসলো ওর এই মিষ্টি হাসি প্রমাণ করে দিচ্ছে যে ও কি চায়।

চলবে,,,,,,
ভুলক্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন
চলবে,,,,,,
ভুলক্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here