#নিয়তি
#সেলিনা আক্তার শাহারা
#পর্ব—-২০
__________________
নন্দিনি সপ্নার পাশে দারিয়ে আছে, তুর্জ আর সোহাম বেরিয়েছে এয়ারপোর্টের উদ্দেশ্যে,
সপ্না একবারও বাধা দেয় নি, সোহাম একা জেতে নিলে তুর্জো বাধা দিয়ে সোহামের সাথে যায়।
…
ভাবি পারবেন তো ভাইয়াকে ছারা থাকতে??
নন্দিনির পশ্নের উওরে কোন সারা না পেয়ে, আবার তুলিকে এনে ওর মাথায় সপ্নার হাত রেখে বললো এবার বলুন ভাবি পারবেন তো??
ভাইয়াকে ছেরে থাকতে, ভাইয়া কিন্তু ফিরে আসার জন্য যাচ্ছে না,
সপ্নার দুচোখের পাতা বন্ধ হয়ে এসেছে না সে তো পারবেনা থাকতে তার সোহাম কে ছারা,
কেন দূরে জেতে হবে? আমায় কয়দিন সময়তো দিতে পারত নাকি…
হয়তো সময়ের সাথে ঘা টাও শুকাতো…
সপ্নার উওর পেয়ে নন্দিনি বেশ খুশি, সেই খুশিতে নাচতে ইচ্ছা করছে,
তু্র্জকে ফোন দিয়ে সপ্নার হাতে দরিয়ে দিয়েছে,
নিন ভাবি উনার কাছে বলুন ভাইয়াকে ফিরিয়ে আনতে…..
~~~~
চোরের মত দারিয়ে আছে সপ্নার সামনে সোহাম,
সপ্না কি বলবে বুঝতে পারছে না কোথা থেকে শুরু করবে!!!!
সোহাম দৌড়ে এসে সপ্নাকে জরিয়ে ধরে বললো মাফ করে দাও না প্লিজ এজীবনে এমন ভুল দ্বিতিয়টি হবে না,
দাও না সপ্না, আমি তোমায় নিয়ে বাচঁতে চাই,আমাদের যখন বাচ্চা হবে তাকে নিয়ে ঘুরতে চাই ওকে বুকে জরিয়ে ঘুমাতে চাই,দাও না মাফ দাও না।
সপ্নাও তো পারলনা মাফ না দিয়ে থাকতে…..
সম্পর্ক টা ঠিক হওয়াতে সবাই খুশি বিষেশ করে শিলা বেগম,
তুর্জ নন্দিনির কানের কাছে এসে বললো নাও এবার আর চুপি চুপি আমার কাছে আসতে হবে না রুজই তোমার পাশে পাবে…
পাশে পাওয়ার কথা শুনের নন্দিনির কোন রিয়েক্সন নেই,কোন খেয়ালে ডুবেছে কে জানে…
~~~~~~
নন্দিনির ৮ মাস শেষ হয়ে ৯ মাসে পা দিয়েছে।
যা জ্বালাতন করে না মেয়েটা
তুর্জ খুবই জত্ন নেয় নন্দিনির কারন মনের ভিতরের ভয়টা এখনও কাটেনি,
শুধু সেই ভয় সায়মার মত জদি…
মাসে ২ বার ডাক্তারের কাছে নিয়ে সব টেস্ট করিয়ে আনে,
ডক্টর ফারহানা বেশ অবাক এটা কেমন মানুষ এত টেষ্ট কেন করাতে হবে??
এইতো সেই জল্লাদ কিছুদিন আগে কত কষ্ট দিয়েছে, আর এখন দেখো কত প্রেম,
ফারহানা নন্দিনির কাছে শুধু জানতে চায় আপনার স্বামীকে কবে মাথার ডাক্তার দেখাচ্ছেন???
বলেই দুজনে অট্রহাসিতে ফেটে উঠে,
দুজনের মধ্যে বেশ ভালো বন্ধুত্ব হয়েছে,
তুর্জো বাহিরে দারিয়ে আছে,
১ মাস ধরে তুর্জ কোন বেশি কথা বলেনা নন্দিনির সাথে,তবে নন্দিনি ভেবেছে হয়তো উনার সায়মার মত আমার কিছু হয় সেই ভয়ে হয়তো উনাকে গিলে খাচ্ছে!!!
তবে তা নয় বিষয়টা বেশ উল্টো, তুর্জ একজন উকিল,সত্য উদঘাটন করতে তার সময় লাগেনা,
সে বহু কষ্টে লোক লাগিয়ে নিলয়ের বাসার ঠিকানা জোগার করে, এবং সব জানে,নন্দিনি আর নিলয় একে অপরকে ভালোবাসতো কলেজে পড়া কালিন থেকে নিলয়তো ওর জন্য পাগল ছিলো,
আর তাদের বিয়ের ডেট ফিক্সড কার্ডও ছাপানো হয়েছিলো!!!
তাদের love story জানার পর একটা পশ্ন বার বার মনে হয়, তাহলে বিয়েটা বন্ধ হল কেন?
আর সালাম সাহেবই বা নিলয়ের সাথে দেখা করে কি আলাপ করে.?
কিন্তু নন্দিনিকে এবিষয়ে কিছু জানায়নি কেন???
তবে নিলয় কোথায় আছে বিয়েটা কেন হল না তা তুর্জকে বের করতেই হবে, নয়তো সারা জীবন এই বুকের ভিতরে পাথর চাপা নিয়ে বাচঁতে পারবেনা,
পারবেনা সে রুজ নন্দিনিকে হারানোর ভয়ে কাটাতে।
নন্দিনির চেকআপ করে বের হতে গিয়েও পারল না,
বের হওয়ার সময় একটা কেবিনের ভিতরে নজর চলে গেলো, কেবিনের ভিতরে কেউ শুয়ে আছে হাতে স্যালাইন উল্টো দিক শুয়ে থাকার কারনে আর মুখটা দেখা হল না, তবে বেশ কাছের মানুষের গন্ধটা পাচ্ছে,
তুর্জ নন্দিনিকে টেনে সেখান থেকে নিয়ে এলো, মনে হচ্ছে জোর করে আনছে…
~~~~
রাতে সালাম সাহেব খাওয়া দাওয়া শেষ করে নিজের রুমে জাবে তখনই দরজায় কহিনুর বেগমের পাশে চোখ গেলো…
আরে জামাই বাবা যে এত রাতে নন্দিনি ঠিক আছে তো???
তুর্জ মাথায় হ্যা সূচক সমত্তি দিয়ে বললো আপনার সাথে একটা কথা ছিলো একটু কাজের ব্যাপারে আরকি….
কহিনুর বেগম ছাদে দুকাপ চা পাঠিয়ে দিয়ে নিচে বসে রইলো, হয়তো কোন কাজ নিয়ে আলাপ হবে.. তাই এটা নিয়ে এত মাথা না ঘামানোই ভালো… তবে খরব টা মেয়ের কানে ঠিক পৌছে দিয়েছে।
বাবা!!
হুম…
আমি যে এখানে এসেছি তা আপনার মেয়ে জানেনা..
সালাম সাহেব এবার কিছুটা গম্ভির হয়ে চেয়ারটায় বসলেন, কারন তুর্জ এমন কিছু বলতে এসেছে তা নন্দিনিকে জানানো উচিত নয়..
তবে তা কি হয়তো সেটাও আন্দাজ করেছে…
তুর্জ নিজের মনটাকে শক্ত করেই পর্শ্ন করেলো নিলয় কে????
তুর্জের পশ্নে সালাম সাহেব একটুও বিচলিত নয় তিনি জানতেন এমন কিছুই একটা হবে…
নিজের মুখে তুচ্ছ হাসি একে তুর্জের কাধে হাত দিয়ে বললো নিলয় হয় নন্দিনির ভালোবাসা…
বাবা জদি তাই হয় তাহলে আমি কেন মাঝখানে এলাম?
আর নিলয় কোথায়? আপনাকে দেখেছি ওর সাথে জোগাজোগ আছে,
কিন্তু নন্দিনির সাথে জোগাজোগ নেই কেন? আর যে মানুষ দুটো বিয়ে করতে পর্যন্ত এগিয়ে গিয়েছিলো তাদের বিয়েটাই বা বন্ধ হল কেন???
তুর্জের পাশে নিজের চেয়ারটা মুখো মুখি বসে,
সালাম সাহেবের মুখের দিকে চেয়ে আছে তুর্জ, কখন মুখটা নাড়িয়ে ওর সব পশ্নের উওর দেবে!!!!
মেয়ের ইচ্ছাতেই নিলয়ের সাথে বিয়ে ঠিক করি,নিলয় আমার এক বন্ধুর ছেলেও বটে তাই অমত করিনি।
বিয়ের কার্ড ছাপিয়ে জখন সবাইকে নিমন্ত্রন করা হয়ে গেছে তখন আমার কাছে ফোন আসে নিলয় নাকি দেশ ছেরে চলে গেছে,সে নন্দিনিকে বিয়ে করতে চায় না!!!! তবে এগুলো মিথ্যা ছিলো পরে জানতে পারি।
তুর্জ বেশ মন দিয়ে সালাম সাহেবের বুলি শুনছে..
সালাম সাহেব নিজের কান্নাকে দমিয়ে আবার বলতে লাগলো,
আমরা বেশ বিপাকে পরে গেছি,নন্দিনি কে সব তো জানাতেই হবে!! তারবপর নিলয়ের বাবা মায়ের সাথে বেশ কথা কাটা কাটিও হয়,
আমি নন্দিকে বলেছিলাম তর ভালোবাসার মূল্য দিতে গিয়ে আমার ইজ্জত হারিয়েছি….
কোথায় তর নিলয় এলোনা তো বিয়ের নাম শুনতেই পালিয়েছে,ভালোই হল বিয়ের পরেতো আর পালায়নি……
নন্দিনিও জেদ ধরে বসে ঐ নির্ধারিত দিনেই সে বিয়ে করবে।
নিলয়কে দেখিয়ে দেবে সংসার করে,আর আমার সাথেও রাগ করেছে আমি তাদের ভালোবাসায় পশ্ন তুলে ইজ্জতের দুহাই দিয়েছিলাম।
( নিলয় নন্দিনিকে কি বলেছে তা আমার জানা নয়)
দুইদিন নন্দিনি বেহুস ছিলো, নিলয়ের জন্য আর সেই পাশন্ডটা কেমন করে এই মিষ্টি মেয়েটাকে ছেরে চলে গেলো…
তখন তোমার মায়ের সাথে আমার দেখা হয় আর তোমার সম্পর্কে সব শুনে আমার বেশ পছন্দ হয়।
তাই রাজি হই আর নন্দিনিও কিছু জানতে চায় নি তোমার বিষয়ে কারন তার ভিতরে কষ্ট আর রাগ দুটোই ছিলো।
…
তুর্জ সব শুনে আরো পশ্ন জাগলো।
তাহলে নিলয়ের বিয়ে না করার কারন টা কি ছিলো?
আর আপনি কেন ওর সাথে জোগাজোগই রাখছেন??
সালাম সাহেব এবারের পশ্নে কিছুটা চিন্তিত,কি বলবে তা ভাবছে,
বাবা বলুন আমি কথা দিচ্ছি সত্যিটা নন্দিনি কখনোই জানবে না।
তুর্জের কথায় সালাম সাহেব কান্নায় ভাসছে, কি করে বলবে তা, দুচোখের পানি মুছে তুর্জের দিকে তাকিয়ে বললো নিলয়ের ব্রেন ক্যান্সার””””
এই একটা শব্দ জেনো সব তুরপরা করে দিচ্ছে কি বললো এখন?
তুর্জের অপলক দৃষ্টিকে ছেদ করে নিজের চেয়ার ছেরে দাড়িয়ে বললো।
নিলয় একজন আর্টিস সে বিদেশে কোন এক বড় আর্টগ্যালারিতে তার পেন্টিক উপস্থাপনের সোজগ পেয়েছিলো,আর সেই সোবাদে মেডিকেল টেস্টও করিয়েছিলো,
বিদেশে পারি দেওয়ার ব্যাপারটা নন্দিনিকে বলে নি চেয়েছিলো বিয়ের পর সারপ্রাইজ হবে।
তবে সেটা উল্টো ওর জন্যই হয়।
রিপোর্ড পেতে পেতে২ দিন লেগে গেলো, তখন বিয়ের সব ঠিক, সে চায়নি এই দুদিনের জন্য নিজের সাথে নন্দিনিকে জরিয়ে ওর জীবনটা নষ্ট করতে।
প্রথমে আমরাও জানতাম না,
বিয়ে ভাংগার জন্য অন্যমেয়ে কে দেখিয়ে বলেছিলো নিলয় তাকে ভালোবাসে এবং বিয়ে করবে,যতটা সম্ভম ভুল বুজিয়েছিলো যাতে ভূলে যায় নিলয় নাকম মানুষটাকে।
এখনও কেও জানেনা শুধু ওর মা বাবা আর আমি তোমার শাশুরিও জানেনা,
নিলয়ের খবর শুনে ওর বাবা স্টোক করে,তাই বন্ধুত্বের টানে ছোটে গিয়েছিলাম, সে দিন তোমাদের বিয়ে ছিলো,
তখন সব জানতে পারি।
কিন্তু কিছুই করার ছিলোনা।
— তুর্জ হতাশ হয়ে আছে কি বলার ছিলো কিছুই হল না কতটা রাগ ছিলো নন্দিনির উপর ভেবেছিলো ওকে ঠকিয়ে আমার কাছে এসেছে ছি ছি কি নিচু মন আমার।
নিজেকে ছোট লাগছে নিলয়ের কাছে কতটা ভালোবাসলে এমন করা যায়??
নিলয়তো এক মহা পুরুষ।
সালাম সাহেব তুর্জকে ডেকে বললো বাবা তুমি ওর সাথে দেখা করবে একবার,বার বার আমার কাছে অনুরুধ করে নন্দিনির স্বামীকে দেখার,তবে সত্যটা জানলে জদি নন্দিনির সমস্যা হয় তাই তোমার সামনে আসেনা,
প্রাই চুপি চুপি দেখতে আসে তোমাদের।
সালাম সাহেবের কথায় তুর্জ কিছুটা আইডি করেই বললো তাহলে টুম্পার বিয়েতে নিলয় এসেছিলো???
হ্যা ওকে ফলো করে মার্কেটেও গিয়েছিলো,নন্দিনি নাকি ওকে দেখে ফেলে তাই সেখান থেকে চলে আসে। সালাম সাহেবের কথা শেষ না হতেই আবার প্রশ্ন..
এখন নিলয় কোথায়??
হাসপাতালের বিছানায়!!
ব্রেন ক্যন্সারের লাস্ট স্টেজে ২ মাস খুব হলে বাচঁবে…
আমি দেখা করব বাবা।
সালাম সাহেব বেশ শান্তি পেলো তুর্জকে সবটা বলে কতদিন যে বুকের পাথরটা চাপা দেওয়া ছিলো,
……..~~~~
রাতে বাড়ি ফিরতেই নন্দিনির পশ্নের জবার দিতে দিতে শেষ আপনি আমায় বাড়িতে নিয়ে গেলেন না কেন??
আমিও তো যেতাম..
আরে এত ব্যাস্ত হচ্ছো কেন? বিছানায় বসিয়ে দিয়ে বললো কালকে উনাদের আসতে বলে এসেছি তুমিনা দেখা করবে তাই তো গেলাম,
তুর্জের বুকে মাথা রেখে নন্দিনি চোখ দুটো বন্ধ করে বসে আছে,
কি জেনো খালি খালি লাগছে..
জোরে শ্বাস নিচ্ছে,
কি কষ্ট হচ্ছে??
নন্দিনি তুর্জের দিকে ফেল ফেল করে চেয়ে রয়েছে এই লোকটাকে মেরে একদিন জেলে চলে জাবো,ওফ করলেও উনার মুখটা মলিন হয়ে যায় আর পুলিশের মত জেরাও শুরু হয়।
কি ঔষধ সব খাচ্ছো তো..
নন্দিনি নিজের রাগটা গিলে বললো হুম,
নন্দিনি একা একা নরাচরা করতে পারেনা,
বড্ড ক্লান্ত হয়ে জায়, এই মাসের শেষের দিকে ডেলিভারির ডেট ডাক্তার বলেছে মেয়ে হবে, তুর্জ বেশ খুশি দুটো মেয়ে হবে তার বাবা ডাকে সব ভুলিয়ে দেবে।
তুর্জের কোলে মাথা রেখে শুয়ে শুয়ে ঘুমানোর চেষ্টা করছে নন্দিনি,
তুর্জ পরম আবেশে ওর মাথায় হাত বুলাচ্ছে,
সোহাম আর সপ্নার আগমনে তুর্জের ধ্যান ভাংগে, সপ্না নালিশ নিয়ে এসেছে নন্দিনির কাছে…
নন্দিনি ওদের দেখে উঠে জেতে নিলে সোহাম বাধা দিয়ে বললো আরে শুয়ে থাক আমি তো তর ভাই বলেছিস তাহলে লজ্জা কিসের!!!!
হুম নন্দিনির ভাইয়ের শক পূরন করেছে সোহাম,
নন্দিনি বলেছিলো আমার ভাই নেই আমার ভাইয়া হবেন!!!
সোহাম ও খুশি হয়েছে তারও তো বোন নেই…
তাদের ভাই বোনের মতই সম্পর্ক গরে উঠেছে, সেদিনই যে দিন সপ্নার কাছে মাফ পেয়েছিলো।
সোহামটা বড্ড আদর করে নন্দিনিকে, করবে নাইবা কেন এমন বোন কে না চায়।
তবে এত রাতে আসার উদ্দেশ্য অন্য, সপ্না ঝালমুড়ি খেতে চেয়েছে তা আনতে মনে নেই বলে এখন নন্দিনির কাছে বিচার নিয়ে আসা,
সপ্না মা হবে ৪ মাস চলছে..
তাই বায়নাটা বেশ ধরে।
মাটির গন্ধ ভালো লাগে তাই রুমে টব এনে মাটি রেখেছে, নিজে রান্না করে আবার নিজেই গন্ধ বলে ফেলে দেয়।
। আরো জত আজব আজব কান্ডই করে।
সপ্নার নালিশ শুরু দেখোনা নন্দিনি তোমার গুনধর ভাই আমার জন্য সামান্য ঝালমুড়ি আনতে পারল না!!!
নন্দিনি সোহামের দিকে তাকাতেই সোহামের উওর আচ্ছা আমি কিছুক্ষন আগে এসেছি রাস্তায় একটা ঝালমুড়ির দোকান ও পাইনি এত রাতে কি ওরা আমার জন্য দারিয়ে থাকবে নাকি!!!
দুজনের কথাই বুজলাম এখন কারো পক্ষ নিয়ে কথা বলাই চলবে না কারন উল্টো বিপদ হবে…
নন্দিনিও নিজেকে বাচিঁয়ে তুর্জকে ধাক্কা দিয়ে বললো আপনি সমাধান দিন না!!!
সপ্না আর সোহামের নজর তুর্জের দিকে কি সাজা ঘোসনা হবে সেই আশায়…
তুর্জও সেই বিপদেই ভাইয়ার কথাও ঠিক আছে আর ভাবির খেতে ইচ্ছা করছিলো!!!!
কিছু আর খুজে না পেয়ে সমাধান দিলো বাড়িতে বানালে কেমন হয়?
তুর্জের কথায় সবাই অবাক বাড়িতে কিভাবে??
নন্দিনির মাথায় হাত দিয়ে বললো তোমায় এত চিন্তা করতে হবে না আমি দেখছি!!
নন্দিনিকে কোন টেনশনে তুর্জ নিতে চায় না হক না যত ছোট্টই বা দূষ্টুমিতেই, খুব ভালেবাসেতো তার নন্দিনিকে খুব, নিজের প্রতিটা শ্বাসে নন্দিনির নাম লিখা…
সপ্না আর নন্দিনিকে বসিয়ে দুভাই গায়েব,
আধা ঘন্টা পর হাজির হয়েছে নাড়িকেল মুড়ি চানাচুর চিনি পেয়াজ কাচা মরিচ বেশ করে দিয়ে মাখিয়ে এনেছে..
সপ্না তো বেশ খুশি দেখতে খুব লোভনিয়ই লাগছে…
নন্দিনিকে উঠিয়ে বসিয়ে দিয়ে তুর্জ খাইয়ে দিচ্ছে,
সপ্না সোহামকে ইশারা দিয়ে বললো দেখো কত যত্ন নেয়, তোমার মত গরুর মত না চিবিয়ে বৌ কে খাওয়াচ্ছে,কিছুতো নিজের ভাইয়ের কাছ থেকে শিখো…
~~ অনেক রাত আড্ডা দিয়েছে ওরা।
আজ কাল তো এত টেনশন নেয় না সোহামের পি এ একটা পুরুষ রেখেছে আর সেই ভুল টা জাতে না হয়।
শিলা বেগম দিন রাত নামাজের পাটিতে বসে দোয়া করে যাতে দুইছেলে ও তাদের সংসারের সব সালামত থাকে।
তুলিতো আজ কাল বেশ কথা বলে মাম্মার তোমার পেটু এও বলো বলো কেন আমার পেটু তো ছোতো ?
মাম্মাম আমার বোন কবো আতবে??
খুব পাকা হয়েছে,
তুর্জ আজকে জাবে নিলয়কে দেখতে তাই সকাল সকাল রেডি হয়ে গেছে… আজ দেখবে নন্দিনির ভালোবাসার মানুষটাকে..
#নিয়তি
#সেলিনা আক্তার শাহারা
#পর্ব—২১
__________________________
সপ্না আর নন্দিনি দুজন বসে টিভিতে গজল শুনছে এমন সময় এগুলো শুনলে ভালো,শিলা বেগম রুজ ওদের ধরে টিভির সামনে বসিয়ে দেয়,আর অন্য সময় গুলোতে মোবাইলতো আছেই…
দুই ভাই যে যার কাজে, তবে বাড়ির বাহিরে তো কেও গিয়ে দেখেনি…. কে কি কাজ করছে নাকি??
তুর্জ আজ বিরাট একটা কেস জিতেছে, সবাই বাহ বাহ দিচ্ছে কত কজ কত রকমের উপাধি দিচ্ছে,
তার কিছুতেই মন ভুলায়নি ,কারন জীবনের কেসে তো হেরে বসে আছি তাহলে এই কেস গুলো জিতে কি হবে…..
~~~~~
দুপুর ২ টা তুর্জ বাড়ি আসেনি নন্দিনিকে বলে দিয়েছে কিছু কাজে আটকে গেছে সে জেনো খেয়ে নেয়….
তবে সে কোন কাজে আটকেছে চলুন দেখি…
হাসপাতালের কেবিনে মরা মানুষের মত পরে আছে একটা জিবন্ত লাশ,সেটা আর কেও নয় নন্দিনির মন কাড়া প্রেমিক নিলয়।
দরজায় নক করতেই নিলয়ের নজর পরল সালাম সাহেব ও তুর্জের দিকে,
এটা যে তার নন্দিনির স্বামী সে চিনে কত বার চুপি চুপি দেখে এসেছে…
শুয়া থেকে উঠে হেলান দিয়ে বসে আছে তুর্জের সামনা সামনি.
তবে দুজনেরই মনে হচ্ছে তারা একে অপরের চোখে অপরাধি,
মাথা নত করে দুজনই বসে আছে…
মুখে কিছু না বললেও ভিতরে বহু কষ্ট জমা পরে আছে..
তুর্জ চোখ তুলে তাকাতে পারছেনা, হিংসা হচ্ছে নিলয়কে দেখে আজ পর্যন্ত নন্দিনির মনের ঘরে জায়গা পাইনি শুধু ওর জন্য, তাই কিছুটা জেলাস ফিল করছে…
তবে নিরবতা তো এক জন কে ভাংতেই হবে!! সালাম সাহেব আজ শুধু নিরব দর্শক আর কিছুই নয়।
কেমন আছেন???
নিলয়ের প্রথম কথাটায় তুর্জ কিছুটা বিচলিত স্বরেই উওর দিলো হ্যা ভালো..
আর আপনি??
হু হু করে হেসে দিয়ে নিলয় বললো আমি কেমন আছি যদি ভালোই থাকতাম তাহলে আপনার সাথে কখনো দেখা হত বলুন?
তুর্জ বেশ অসস্তি বোধ করছে,তবে কেন ডেকেছে তা তো জানতেই হবে নাকি…
নিলয় হাসি থামিয়ে বললো আরে ভাই রাগ হবেন না, জীবনে আর আপনার দেখা হবেনা, কি কারো দেখা মিলে না বা না মিলে তাই একটু রসিকতা করলাম আরকি””
তুর্জ শুধু মাথা নত করে ফ্লোরে চেয়ে আছে।
নন্দিনি ভালো আছেতো?
শুনলাম ও মা হবে……..
তুর্জ মাথা নত করেই উওর দিলো হ্যা ভালো,এ মাসের শেষ ডেট দিয়েছে…..
সব নরমাল আল্লাহ সহায় হলে নরমালেই সব হবে।
নিলয় এবার উঠে পা দুটো নিচে হেলিয়ে বসে তুর্জের কাধে হাত দিয়ে বললো,
হুম মেয়ে হবে শুনলাম সব ঠিকই আছে,তা নাম টা কি রাখবেন ঠিক করেছেন??
তুর্জ হালকা হেসে মাথা নাড়িয়ে না উওর দিলে নিলয় বেশ খুশি হয়ে বললো “” #নিয়তি– জদি কিছু মনে না করেন তাহলে এ নামটা রাখবেন,আর ভালোনা লাগলে সমস্যা নেই।
তবে একটা ইচ্ছা অপূর্ন থেকে জাবে ওর মেয়ের মুখটা দেখতে পাবো না বলে..
না না ডাক্তার তে বললো আরো কিছু দিন সময়…
তুর্জের কথা শেষ করতে না দিয়ে নিলয় আবার বললো হ্যা তা হয়তো তবে আমি চলে জাচ্ছি ইউরুপ!
এখানে থেকে শেষ নিশ্বাস ছারতে ইচ্ছা করবে না, বড্ড লোভ হবে বাচাঁর নন্দিনিকে দেখার, সেই লোভ আমায় মরতে দেবেনা তাই দূরে গিয়ে শেষ নিশ্বাসটা ত্যাগ করবো, ওখানের বাতাসে নন্দিনির শরিলের গন্ধ থাকবেনা থাকবেনা ওর পিছুটান,
আর এখানে সব জায়গায় যেনো ওর গন্ধটাই পাই, তখন তো মরেও শান্তি হবে না আমার,
কি পুরা কপাল আমার নাহ,, যার জন্য মরতে পর্যন্ত রাজি ছিলাম, আজ তাই হল তবে ওতো জানলোই না সারা জীবন আমায় প্রতারক বেঈমান বলেই জানবে…
৬ দিন পর আমার ফ্লাইট আমি সেখানেই চলে জাবো আমার বড় খালার কাছেই থাকব যে কটা দিন বাচিঁ!!!!!!!
তুর্জ ফেল ফেল করে চেয়ে দেখছে নিলয় কে কত মহান মানুষটা সে,নিজে মরতে চলছে তবুও চায় ভালোবাসার মানুষটা কষ্ট না পাক,
তুর্জের দুইহাত চেপে বিনতির স্বরে নিলয় বললো ভাই কোন দিন জেনো নন্দিনি আমার খবর না জানে কোন দিনই না, জাওয়ার আগে চুপি চুপি ওকে একবার দেখে যাবো বাথা দেবেনা তে?
তুর্জ আগের মতই চেয়ে রয়েছে” সালাম সাহেবের চোখের পানিতে উনার শার্ট ভিজে এসেছে,তুর্জের বেশ কান্না পাচ্ছে তবে কান্না করাটা এখানে বেমানান হবে তো তাই হয়তো চোখ দিয়ে পানি ঝরছে না তবে নিলয়ের প্রতিটা কথায় রক্ত ঝরছে বুকের মাঝখানটায়….
নন্দিনিকে কখনো কষ্ট পেতে দিবেন না কথা দিন না ভাই..
ওর কষ্ট আমার সজৎ হবে না আমি চাই সে সুখে থাকুক ভালো থাকুক,
আমায় সারা জীবন যাই বলুক না কেন, ওর কোন কষ্ট হলে কবরের মাটি সরুক বা নাই সরুক আমার আওা ওর পিছু ছারবেনা…
আপনায় অনেক ধন্যবাদ আমায় দেখা দিয়েছেন বলে, সুখি হন আপনারা নতুন অথিতি নিয়ে আজীবন সুখে থাকুন..
আমার এই কামনা থাকবে..
আরেকটা অনুরুধ আমি চলে জাওয়ার পর মা বাবা তো দেশেই চলে আসবে তখন মাঝে মাঝে উনাদের কাছে গিয়ে একবার দেখা করে আসবেন প্লিজ… আর সাথে আমার মামনি মানে আপনাদের মেয়ে কে নিয়ে যাবেন….
নিলয়ের কথা তো আর সজৎ হচ্ছে না তুর্জের কি করবে ভেবে না পেয়ে নিলয়কে জরিয়ে ধরে বহুক্ষন বসে ছিলো….
~~~~
সন্ধায় বাড়ি ফিরে সোজা ছাদে গিয়ে বসে পরেছে,কি করে এতটা সত্য আমি লোকাবো? হ্যা নিলয় তুমি অনেক মহান মানুষ তোমার দেয়া নামটাই রাখবো আমাদের মেয়ের #নিয়তি
হ্যা নিয়তিই তো সব কি খেলা খেললো বিধাতা সবার সাথে নিলয়টার কি দুষ কি দুষবা নন্দিনিরই আমার কাছ থেকে সায়মাকে নিয়ে নন্দিনিকে দিয়ে দিলে,তবে তার জীবন থেকেও তার ভালোবাসা কেড়ে নিয়ে!!!!
নন্দিনির ছাদে উঠা বারন, তবে তুর্জকে ফোন দিয়ে নিচে নিয়ে এসেছে..
আজ উনাকে এমন দেখাচ্ছে কেন..
উনার শরিল থেকে একটা গন্ধ পাচ্ছি খুব পরিচিত গন্ধ এই গন্ধটায় নিজেকে মাখিয়ে নিতে ইচ্ছা করছে, তাই দেরিনা করে তুর্জকে জরিয়ে ধরে সেই গন্ধ উপভুগ করছে..
এই গন্ধের সাথে পরিচিত নন্দিনি, তুর্জ নন্দিনিকে ছারিয়ে নিয়ে নন্দিনিকে রুমে শুইয়ে দিয়েছে….
নন্দিনি তুর্জের দিকে চেয়ে আছে চোখ গুলো এত ফুলা কেন?
কি হল খাবেন না নাকি??
তুর্জ মিষ্টি হাসি দিয়ে নন্দিনির কপালে চুমু দিয়ে বললো হ্যা খাবো একটু পরে…
তোমার জন্য একটা জিনিস নিয়ে এসেছি!!!
নন্দিনি বেশ খুশি হয়ে আয়েশ করে বসে বললো কি দেখান না…
ড্রেসিং টেবিলের পিছনে লুকিয়ে রাখা একটা পেন্টিং…
নন্দিনির কাছে আনতেই সে হা হয়ে আছে আরে এটা তো আমি আপনি আর আপনার কোলে তুলি,
আমার কোলে ছোট্ট একটা বাচ্চা তবে বাচ্চাটার মুখ আকা নয় কেন????
নন্দিনির পশ্নের উওর কি দিবে? এটা দেয়ার জন্যইতো নিলয় ডেকেছিলো, সে তো জানেনা তার নন্দিনির মেয়ে কেমন দেখতে হবে তাই আকাঁ হয় নি!!!
নন্দিনির ধাক্কায় তুর্জের হুস হয়,
নন্দিনির কাছে পেন্টিংটা দেখিয়ে বললো আরে আমাদের মেয়ে দেখতে কেমন হবে তা জানা নেই তো তাই,
আর মেয়ে হলে কি নাম রাখবে??
নন্দিনি হাসি দিয়ে বললো আপনিই বলুন না…
হুম বলবো খুব জলদি বলবো..৷ বলেই রুম ছেরে চলে গেলো,
নন্দিনির হাসির পিছনে লুকিয়ে আছে একটা কষ্ট যা আজ তুর্জকে দেখার পর থেকে পাচ্ছে,উনার শরিলে জেনো অন্য কারো গন্ধ মেখে এসেছে, আর এই পেন্টিংটা দেখলে মনে হবে কেও তার ভালোবাসার সমস্ত অনূভুতি দিয়ে বানিয়েছে। এটার মাঝেও পরিচিত একটা গন্ধ বিরাজ মান,
~~~~~~
তিন দিন হল নিলয়ের সাথে দেখা করেনি আর,
ওর সাথে দেখা করলেই বুকের ভিতরটা কেও জেনো দুমরে মুচরে দেয়।
তবে নিলয়ও আর আসতে বলেনি যে জন্য ডেকেছিলো তা তো দেয়া হয়েই গেছে…
কহিনুর বেগম আজ তিন দিন ধরেই সালাম সাহেবের সাথে কোন কথাই বলে না।
কেন বলবে নিজের স্ত্রী হওয়া সত্বেও এত কিছু কেন লুকিয়েছে আমার কাছ থেকে,
সেদিন ছাদে সালাম সাহেব আর তুর্জের সমস্ত কথা শুনে নিয়েছিলো কহিনুর বেগম,আর তার পর চুপি চুপি হাসপাতালেও গিয়েছিলো সালাম সাহেবের পিছু নিয়ে।
সব টা জেনে উনি বেশ ধাক্কাই খেয়েছে,
এখন যদি কোন ভাবে নন্দিনি জানতে পারে নিলয় কেন এমন করেছিলো তাহলে সব ছেরে নিলয়ের কাছে চলে আসবে তা সে কবরেই থাকুক না কেন?
এত বড় সত্যিটা কেন লুকিয়ে রেখেছে এখন শুধু ভয় নন্দিনিকে নিয়ে সে সব জেনে উল্টা পাল্টা না কিছু করে বসে,
……২ দিন পার হয়ে গেলো আরো।
সালাম সাহেব অফিস যায় না শুধু রুমে বসে থাকে।
সকাল সকাল নন্দিনি আর সপ্না বাহির থেকে হেটে এলো আর গল্প করতে করতেই ভিতরে ঢুকলো,
তুর্জ আজ ঘুম থেকে উঠেনি রুজ তো ওদের সাথেই যায় তবে আজ জাওয়ার ইচ্ছা ছিলেনা,
রাতের ফ্লাইটে নিলয় দেশ ছেরে ইউরুপে পারি দেবে, তার পর কখন জানি ওপারের পারি দেওয়া সময় হয়, আর সবটা কেও জানতেও পারবেনা।
…. তবে সব কিছুই নষ্ট হল একটা ফোন হ্যা একটা কল আসলো,
কলটা রিসিভ করে নন্দিনি শুধু হ্যালো বলেছে বাস আর কিছুই বলা হল না।
তুর্জের কাছে গিয়ে নন্দিনির দাবি আজকেই নাকি সিজার করিয়ে নেবে!!!
তুর্জ বেশ অবাক একেমন কথা সব তো নরমাল তাহলে সিজার কেন?আর কিছু দিন পর না হয়…
নন্দিনির শরিলের সমস্ত জোর দিয়ে চিৎকার করে বললো আজকেই আমার মেয়ে দুনিয়ায় আনতে চাই আজকেই বলে তুর্জের শার্টের কলার চেপে ধরে বললে কি হল দিন না আজ কে আমার মেয়ে আনতে…
তুর্জ কি বলবে তা বুঝতে পারছে না তবে বেশ কিছু একটা আইডিয়া করতে পারছে,জদি তাই হয় তাহলে খুবই খারাপ সংবাদ বয়ে আনবে… আর তার সব সাজানো সংসারটাকে নছনছ করে দেবে….
★(