#নেশাক্ত_ভালোবাসা
#Season_2
#লেখিকাঃ Tamanna Islam
#পর্বঃ ০৯ + ১০
আব্রাহামের এমন খাপছাড়া কথায় আইরাত যেনো সোজা আকাশ থেকে টপকে পরলো। চোখগুলো বড়ো বড়ো করে কপাল কুচকে তাকিয়ে থাকে। পরক্ষণেই তার মনে পরে যে সে হয়তো ভূল কিছু একটা শুনেছে তাই ক্লিয়ার হওয়ার জন্য আবার জিজ্ঞেস করে।
আইরাত;; জ্বি??
আব্রাহাম এবার ডেস্ক থেকে নেমে গিয়ে আইরাতের হাত ধরে নিজের দিকে একটান দেয়, এতে আইরাত সোজা আব্রাহামের বুকে গিয়ে পরে। আব্রাহাম নিজের দুইহাত দিয়ে আইরাতের কোমড়ে জড়িয়ে ধরে। হুট করেই নিজের মাথাটা আইরাতের মাথার সাথে ঠেকিয়ে চোখ বন্ধ করে নেয়। আইরাতের হাত দুটো যেনো আপনা-আপনিই আব্রাহামের বুকের ওপরে চলে যায়। আব্রাহাম তার চোখ দুটো বন্ধ করে নিজের চোয়াল কোঠর করে নিয়ে বলে ওঠে….
আব্রাহাম;; আইরাত বেবিগার্ল, আই লাভ ইউ। অবশেষে বলেই দিলাম। আমি ভালোবাসি তোমাকে। জানি না কীভাবে বাসলাম, কেনো বাসলাম। আমি চাই তোমাকে। মানুষ বলে প্রেমে পরার জন্য নাকি এক সেকেন্ড ই যথেষ্ট। ব্যাপার টা প্রথমে হাস্যকর লাগলেও এখন যেনো এতে দৃঢ় বিশ্বাস কাজ করছে। কারণ আমি তোমাকে চিনি বেশি দিন হবে না। তুমি জানো আমি তোমার জন্য যা ফিল করি তা কখনোই কোনদিন অন্য কারো জন্য ফিল করি নি। আইরাত আমার না খুব রাগ লাগে তুমি অন্য কোন ছেলের সাথে কথা বললে বা অন্য কোন ছেলে তোমাকে নিয়ে কিছু বললে। আমি তোমাকে নিজের করে চাই, তোমাকে আমার লাইফে দরকার। আমি অনেক বেশিই ভালোবাসি তোমাকে। আমার মতো এত্তো ভালো না বাসলেও চলবে তোমার বেবিগার্ল। শুধু আমার দম ফুরানোর আগ পর্যন্ত আমার হাত দুটো ধরে রেখো। আমার একার ভালোবাসাই আমার দুজনের জন্য এনাফ হবে। আইরাত তুমি শুধু আমার আর আমার হয়ে থাকো। আমি না তোমাকে আমার কাছ থেকে দূরে কখনো যেতেই দিবো না। তুমি আমার, সম্পূর্ণই আমার।
আব্রাহামের কথা গুলো শেষ হতেই আইরাত দ্রুত আব্রাহামের কাছ থেকে সরে আসে। কেমন এক অদ্ভুত ভঙ্গীতে তাকিয়ে আছে। আব্রাহামের কথাগুলো তার মন-মস্তিষ্ক সব ভেদ করে গেছে। আব্রাহাম তাকে কখনো এই কথা গুলো বলবে তার বিন্দুমাত্র ধারণাও ছিলো না তার।
আইরাত;; আপ আ আপনি ম মজা কর ক করছেন তাই ন না?
আব্রাহাম;; আমার বেবিগার্লের বিষয়ে তো কখনোই না।
আইরাত;; না না এটা কি করে সম্ভব। আব্রাহাম আপনি নিজে ভেবে দেখুন আপনি আসলে কি বলছেন। আমি কোথায় সিম্পাল একটা মেয়ে আর আপনি কোথায়। আকাশ-পাতাল পার্থক্য।
আব্রাহাম;; হ্যাঁ, তবে এক্ষেত্রে তুমি না হয় হলে আকাশ আর আমি পাতাল।
আইরাত;; আকাশ আর পাতালের একসাথে কখনোই থাকা হয় না।
আব্রাহাম;; কিন্তু তবুও এদের দুজন কে একসাথেই বলা হয়।
আইরাত;; সম্ভব না। কখনোই সম্ভব না। আমি আপনাকে ভালোবাসি না আর না ই কখনোই বাসবো। আপনি ভালোবাসেন বললেন। আগে ভালোবাসা কি তা জানুন। তারপর ভালোবাসার কথা বলুন। যেই মানুষ এইসব খুন-খারাবি তে জড়িত সে আর যাই হোক কাউকে ভালোবাসতে পারে না।
আব্রাহাম;; শেষ কথা নাকি আরো বাকি আছে?
আইরাত;; আমি ভালোবাসি না আপনাকে।
আব্রাহাম;; প্রব্লেম আমার মাফিয়া হওয়াতে নাকি…
আইরাত;; আপনি যাই হোন না কেনো। আমি আপনাকে ভালোবাসতে পারবো না এটাই শেষ কথা।
আব্রাহাম;; আইরাত প্লিজ আমাকে এমন কোন কাজ করতে বাধ্য করবে না যা তোমার জন্য মঙ্গল জনক না।
আইরাত;; _________________________
আব্রাহাম;; যদি ভালো চাও তাহলে ভালো মেয়ের মতো আমার কাছে ধরা দিবে ওকে!
আইরাত;; দেখুন আপনি আমার থেকেও ভালো মেয়ে কে পেয়ে যাবেন। আপনি তো আ……..
আব্রাহাম এক হাতে রিভলবার ঘুড়াচ্ছিলো। এবার যেনো আইরাতের কথায় আব্রাহামের রাগ উঠে গেলো। সে দ্রুত গিয়ে আইরাতের বাহু অত্যাধিক শক্ত করে চেপে ধরে। ব্যাথায় কুকড়ে ওঠে আইরাত। আরেক হাতে রিভল নিয়ে চোখ গরম বলে…
আব্রাহাম;; তোকে চাই আমার বুঝেছিস তুই। তোর মতো কাউকে বা অন্য কাউকে না আমার শুধু তোকে চাই। আর কান খুলে শুনে রাখ তুই আমার। ডু ইউ গেট দ্যাট। তুই আমার আইরাত।
আব্রাহামের চোখে রাগ-জেদ স্পষ্ট। আইরাত বিচলিত ভাবে আব্রাহাম কে দেখে যাচ্ছে। আর আব্রাহাম এবার বুঝে যে সে আইরাত কে বেশ শক্ত ভাবেই ধরে রেখেছে। এটা খেয়ালে আসতেই আব্রাহাম তার চোখজোড়া বন্ধ করে কিছুটা দম ছাড়ে। আইরাতের বাহু ছেড়ে দিয়ে নিজের দুইহাতে তার গালে ধরে নরম সুরেই বলে ওঠে..
আব্রাহাম;; বেবিগার্ল কেনো! কেনো রাগিয়ে দাও আমায় বলতো। তুমি কিছুটা হলেও তো আমার ব্যাপারে জানো তাই না। তাহলে কেনো জেনে বুঝেও রাগিয়ে দাও বলো তো। আমি ভালোবাসি তোমায়। এই কথা আমি আর মনের মাঝে দমিয়ে রাখতে পারি নি তাই বলেই দিলাম। সব করতে পারি আমি তোমার জন্য, তোমাকে পাওয়ার জন্য। তোমার জন্য আমি নিজের জান দিতেও পারি আবার অন্যের জান নিতেও পারি। আর একে তুমি আমার জেদ বা পাগলামো যাই বলো না কেনো। আই লাভ ইউ ড্যাম ইট।
আইরাত নিজের গাল থেকে আব্রাহামের দুইহাত নামিয়ে দেয়।
আইরাত;; ‘ভালোবাসি’ মুখে বলা খুব সহজ কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তা খুব কঠিন। মূল কথা কি জানেন আমি না আপনাকে দেখে ভয় পাই। ভয় লাগে আপনাকে দেখে আমার। কখন যেনো আমাকেও মেরে ফেলেন আপনি।
আইরাত কথা গুলো থেমে থেমেই বলে। আব্রাহাম বুঝলো ভয়ের সংমিশ্রণ রয়েছে। তবে আইরাতের বলা লাস্ট কথা শুনে আব্রাহাম তার চোখগুলো ছোট ছোট করে আইরাতের দিকে ঝুকে বলে..
আব্রাহাম;; আমার কাছ থেকে দূরে যাওয়ার চেষ্টা করলে আমি এমনিতেই মেরে ফেলবো তোমাকে।
আইরাত কি বলবে ভাষা খুঁজে পায় না। আব্রাহাম সোজা হয়ে দুইহাত ভাজ করে দাঁড়ায়। আব্রাহাম ঠিক যে ভাবে আইরাতের দিকে তাকিয়ে থাকে তাতে আইরাতের সাধ্য নেই তার ওই চোখে জোড়ায় নিজের চোখ রাখার। তাই অতি দ্রুত নজর নামিয়ে ফেলে। আইরাত কিছুটা স্বাভাবিক হয়।
আইরাত;; আপনি আমাকে কেনো এখানে ডেকেছেন তা যদি বলতেন!
আব্রাহাম;; যা বলার তা বলে দিয়েছি। অর্থাৎ আমার কথা আমি বলে দিয়েছি এখন যত দ্রুত সম্ভব তোমাকে নিজের করে নেওয়া বাকি।
আইরাত;; আমি বললাম তো এটা কখনোই সম্ভব না। আমি কখনোই আপনাকে ভালোবাসি না আর বাসবোও না। শুনেছেন আপনি। ভালোবাসা কথা টা বলার আগে এটা কি তা জেনে নিন। পারেন তো শুধু মারতে।
আব্রাহাম আইরাতের দিকে এগিয়ে যায়।
আব্রাহাম;; জানপাখি যদি তোমার প্রব্লেম আমার প্রফেসন থেকে হয়ে থাকে তাহলে সরি টু সে এই প্রব্লেম তোমাকে আজীবনই ভোগ করতে হবে। কারণ আমার কাছে তুমি যেমন মূল্যবান তেমন আমার প্রফেসনও আমার কাছে মূল্যবান। একটাও ছাড়তে পারবো না। এতে তুমি যাই বলো আর হ্যাঁ তুমি তো আমারই। তাতে তুমি রাজি থাকো বা না থাকো। আর অবশ্যই আমি তোমার মত নিচ্ছি না আমার মত দিচ্ছি।
আইরাত রাগে দাঁত কটমট করে সেখান থেকে এসে পরে। তবে আইরাত ঘুড়ে কয়েক কদম চলে আসতে নিলেই তার ওরনা তে টান পরে। এতে আইরাত তার হাত দিয়ে বুকের কাছের ওরনা টুকু কে চেপে ধরে অবাক হয়ে দাঁড়ায়। পেছন থেকে ওরনা তে টান পরেছে তার। আইরাত শুকনো কিছু ঢোক গিলে। মূহুর্তের জন্য তো দমই আটকে গিয়েছে তার। আব্রাহাম কি তার ওরনা টেনে ধরলো নাকি! এই ভেবেই আইরাত লজ্জায় মুখ কুচকে ফেলে। পেছনে আবার ফিরে তাকানোর সাধ্য হচ্ছে না। একি এক বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পরলো সে। এখন সে কিছু বলতেও পারছে না আবার সহ্যও করতে পারছে না। তবুও উপায় না পেয়ে আস্তে আস্তে পেছনে ঘুড়ে আইরাত৷ চোখগুলো নিচে নামিয়ে রেখেছে। লজ্জা লাগছে বেশ। ওরনা এখনো ছাড়ছে না দেখে আস্তে করে চোখ মেলে তাকায়। আর নিজের সামনে তাকাতেই যেনো আরেক দফা অস্বস্তিতে পরলো আইরাত। দেখে আব্রাহাম কিছুই করে নি। সে তো আগের মতো করেই নিজের দুহাত ভাজ করে ডেস্কের সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আইরাতের দিকে তাকিয়ে আছে। আর আইরাতের ওরনা আব্রাহাম ধরে নি, তার ওরনা ডেসের এক কোণাতে লেগে আটকে আছে। সেখান থেকেই টান পরেছে ওরনাতে। আর আইরাত ভেবেছে যে তার ওরনা পেছন থেকে আব্রাহাম টেনে ধরেছে। এবার যেনো লজ্জ আগে থেকে আরো দ্বিগুণ ভাবে পেলো আইরাত। ইশশশ লজ্জা, কি ভাবলো আর কি হলো। আইরাত তার ওরনা টান দিতে ধরবে তবে তার আগেই আব্রাহাম ওরনা টা ছাড়িয়ে দেয়।
আইরাতের নিজের মাথায় নিজেরই এখন বারি মারতে মন চাইছে। আব্রাহাম আইরাতের অবস্থা বুঝতে পেরে মুচকি হেসে গলা খাকাড়ি দিয়ে ওঠে। আইরাত আর সেখানে এক মূহুর্ত না থেকে জলদি পা ফেলে এসে পরে। আব্রাহামের গেস্ট হাউজের বাইরে বের হলে একটা গাড়ি কে দেখতে পায়। সেখানে দু-তিনজন মানুষ দাঁড়িয়ে ছিলো। যদিও আইরাত তাদের চিনে না। এড়িয়ে এসে পরে। সে আর কেউ না আতিক রহমান ছিলো। আতিক আসলে এদিক দিয়েই যাচ্ছিলো রাস্তায় তার গাড়ি খারাপ হয়ে যায়। সে এটাও জানে যে এটা আব্রাহামের গেস্ট হাউজ। আইরাতকে গেস্ট হাউজ থেকে বের হতে দেখে আতিক তার চোখের চশমা খুলে আইরাতের দিকে তাকায়। আইরাতের যেতেই আতিক তার পাশে থাকা একটা চেলা কে জিজ্ঞেস করে….
আতিক;; এই মেয়েটা কে রে?
বিজয়;; জ্বি স্যার আমি আসলে জানি না। তবে আপনি চাইলে সব খবর বের করতে পারি।
আতিক;; বের কর।
।
।
আইরাত অবাক হয়ে আছে। একমনে একদিক তাকিয়েই আছে। আব্রাহাম তাকে কি বললো। এটা কি আদৌ সম্ভব। আর যাই হোক একজন গুন্ডা-মাফিয়ার সাথে কেউ নিজের পুরো জীবন পার করতে পারে না। যার বন্দুকের প্রত্যেক টা বুলেটের ওপর যমের ঠিকানা থাকে সে বলছে ভালোবাসার কথা। মানুষ কে ভালোবাসতে হয়, খুন করতে হয় না। আব্রাহাম খুব তেড়া প্রকৃতির মানুষ, ওকে বোঝা বড্ড দায়। আব্রাহামের সাথে সারাজীবন একই ছাদের নিচে থাকা তো দূরেই থাক, যাকে কিনা দূর থেকে দেখলেই কাপাকাপি শুরু হয়ে যায় তার সাথে কি করে সম্ভব। আর যাই হোক সে আব্রাহাম কে কখনোই ভালোবাসতে পারবে না। এই ছেলের ধারে কাছেও নিজেকে ঘেষতে দেওয়া যাবে না। নয়তো কখন তার মাথায় রক্ত চেপে যায় আর কখন সে আইরাতকেই খুন করে বসে কে জানে। সাবধানে থাকতে হবে তাকে এখন থেকেই। এগুলো ভেবে ভেবেই আইরাত তার বাসায় চলে যায়। তবে বাসায় যেতেই দেখে তৌফিক বসে আছে।
আইরাত;; কিরে তুই কখন এসেছিস? আর আমাকে তো বললি না।
তৌফিক;; বলি নি তাই না, ফোন টা চেক করে দেখ তো তোকে কতো গুলো কল করেছি।
আইরাত দ্রুত ব্যাগ থেকে ফোন বের করে দেখে যে সত্যি সত্যি তৌফিক তাকে অনেক বার কল করেছে।
আইরাত;; সরি ইয়ার ফোন সাইলেন্ট করা ছিলো। মানে ক্লাসে সাইলেন্ট করেছিলাম এখনো নরমাল মুড করি নি।
অনামিকা;; আচ্ছা তোরা বোস আমি খাবার জন্য কিছু আনছি।
তৌফিক;; না না আন্টি আমি এখন কিচ্ছু খাবো না। আইরাত কে যে জিনিস টা দিতে এসেছি তা দিয়েই চলে যাবো। বাইরে কাজ আছে আমার।
আইরাত;; কি?
তৌফিক;; এই নে।
তৌফিক আইরাতের দিকে একটা খাম আর কিছু ফাইল এগিয়ে দেয়।
আইরাত;; কি এটা?
তৌফিক;; দেখ।
আইরাত সব চেক করে দেখে তার অফিস অর্থাৎ যেখানে আগে কাজ করতো সেখান থেকে নোটিশ এসেছে। আইরাতের জন্য অফার এসেছে যে সে চাইলে তার আগের জবটা আবার ফিরে পেতে পারে। ফাইল গুলো দেখে বেশ দোটানা নিয়েই আইরাত তৌফিকের দিকে তাকায়। এতো কাহিনী করে আইরাতের চাকরি টা চলেই গেলো এখন আবার ওই চাকরির-ই অফার এসেছে পুনরায় জয়েন করার জন্য।
আইরাত;; আমি তো ভাই কিছুই বুঝলাম না।
তৌফিক;; অফিসের ওনার তোকে আবার অফিসে নিতে চায়, তাই আমাকে দিয়ে পাঠিয়েছে।
আইরাত;; হঠাৎ মত চেঞ্জ কেনো আবার?
তৌফিক;; তা তো আমি জানি না। এখন দেখ চয়েস তোর। তোর ইচ্ছে। ইচ্ছে হলে জয়েন কর আবার না হলে নেই।
আইরাত অনামিকার দিকে একবার ঠোঁট উল্টিয়ে তাকায়।
অনামিকা;; আমি বাবা জানি না কিছুই। তোরাই বোঝাপড়া কর।
এই বলেই অনামিকা উঠে চলে আসেন। আর আইরাত ক্লান্ত দৃষ্টিতে তৌফিকের দিকে তাকায়।
আইরাত;; এখন জয়েন করলেও আমি আর আগের মতো টাইম অফিসে দিতে পারবো না রে। এখন বলতে গেলে পার্ট টাইম দিতে হবে আমায়। কারণ আমি আবার ভার্সিটিতে যাওয়া-আসা শুরু করে দিয়েছি। পড়ায় মন দিয়েছি এখন আর আগের মতো কিছুই হবে না।
তৌফিক;; তাও চলবে। তুই তোর ভার্সিটি টাইম শেষ করে তারপর আয় অফিসে। সমস্যা নেই তো।
আইরাত;; সত্যি?
তৌফিক;; তা নয়তো কি। তবে…
আইরাত;; কি?
তৌফিক;; তোকে আরো একটা জায়গায় যেতে হবে।
আইরাত;; কোথায়?
তৌফিক;; আব্রাহাম স্যারের কাছে।
আইরাতের চোখ বড়ো বড়ো হয়ে যায়।
আইরাত;; কিন্তু কেনো?
তৌফিক;; দেখ আইরু চাকরি টা কি ঝামেলার ফলে তোর হাতছাড়া হয়েছিলো, ট্রাফিকিং রাইট! আর কার জন্য ছাড়া হয়েছিলো আব্রাহাম চৌধুরী তাই না! তো এখন যেহেতু তুই চাকরি টা আবার ফিরে পাচ্ছিস তো এখানে অর্থাৎ ফাইল গুলোতে অবশ্যই আব্রাহাম স্যারের সাইন লাগবে। বুঝলি!
আইরাত;; কি বলিস!
তৌফিক;; আইরু তুইও না। এটা তো কমন ব্যাপার। স্যারের সাইন তো লাগবেই, মাস্ট।
আইরাত;; আবার সিংহের গুহায় হাত দাও।
তৌফিক;; কি?
আইরাত;; আমার বিয়া।
তৌফিক;; কি সত্যি! কবে, কার সাথে?
আইরাত;; তোর দাদার সাথে হারামি চুপ কর। এখন নাকি আবার গিয়ে উনার সাইনও নিয়ে আসতে হবে হায়রে।
তৌফিক;; উপায় নাই।
আইরাত;; আচ্ছা এগুলো থাক এখানে আমি তোকে কাল-পরশুর মধ্যে জানাবো যে কি করবো ওকে!
তৌফিক;; আচ্ছা, তাহলে এবার আমি চলি।
আইরাত;; হুমম।
তৌফিক চলে যায়। তবে আইরাত পরে যায় আরেক চিন্তায়। এখন আবার আগের জব করবে নাকি নিজের স্টাডিই সামলাবে। অনামিকা কে বললে বলবে যা ভালো লাগে তাই করতে। কিন্তু আইরাত এখন নিজেই কনফিউড।
।
।
রাতে রুমে বসেই নিজের পড়া পড়ছিলো আইরাত তখনই কিছুটা হুড়মুড়িয়ে অনামিকা তার রুমে আসে।
অনামিকা;; আইরাত!
আইরাত;; কি হয়েছে? এতো টেনশনে আছো কেনো?
অনামিকা;; তোর ফুপির হঠাৎ প্রেসার বেড়ে গেছে রে।
আইরাত;; আরে তকে না দেখলাম ভালোই।
অনামিকা;; হুট করেই বেড়ে গেছে রে। আমি একটু যাই।
আইরাত;; শোন গাড়ির চাবি টা ড্রোয়ার থেকে বের করো। আমি তো ড্রাইভ জানিই, আমি দিয়ে আসি।
অনামিকা;; না না আমি ঠিক চলে যেতে পারবো। তুই পড়। ফোনটা কাছে রাখিস যদি পারি তাহলে এসে পরবো নয়তো থেকে যাবো বুঝলি। তুই সাবধানে থাকিস কিন্তু।
আইরাত;; তুমি নিশ্চিন্তে যাও।
অনামিকা চলে যায়। আইরাতের রাতে রুমে থেকে থেকে আর ভালো লাগছিলো না তাই করিডরের দরজা খুলে দিতেই এক দমকা হাওয়া এসে গায়ে বারি দেয়। প্রচুর গরম লাগছে তাই হাটুর নিচ অব্দি একটা থ্রি-কুয়াটার প্যান্ট আর ট-শার্ট পরে নেয়। কিচেনে গিয়ে বেশি করে গুড়া দুধ আর চিনি দিয়ে এক কাপ কফি বানিয়ে আনে। তারপর হুমায়ুন আহমেদ এর “হিমু” নিয়ে গভীর মনোযোগ দিয়ে পড়তে শুরু করে। একহাতে কফি আরেক হাতে বইটা নিয়ে যেই না করিডরে গিয়েছে ওমনই ঘরের বাতিগুলো যেনো সব ঢিপঢিপ করে জ্বলতে লাগলো। একবার জ্বলছে তো আরেকবার নিভছে। এটা দেখেই তো আইরাতের কাদো কাদো ভাব। বাসায় একা, তার ওপর যদি কারেন্ট চলে যায় তাহলে সত্যি আইরাত কেদেই দিবে। অন্ধকার থেকে সে অনেক ভয় পায়। তবে বাতিগুলো কয়েক দফা ঢিপঢিপ করে আবার আগের মতো ঠিকঠাক হয়ে গেলো। আর আইরাত বুকে হাত দিয়ে এক স্বস্থির নিঃশ্বাস ছাড়ে। বই টা হাতে তুলে আবার পড়তে যাবে তখনই আননোন নাম্বার থেকে ফোন। তবে সেটা খেয়াল না করে বই-এর দিকে তাকিয়ে ফোনটা তুলে কানে ধরে…
আইরাত;; হ্যালো।
আব্রাহাম;; হাই বেবিগার্ল।
আইরাত মুখে কফি পুরে নিয়েছিলো আব্রাহামের ডাকটা শুনেই মুখ থেকে একদম কফি ছিটকে পরে। দ্রুত করিডর থেকে ঘরের ভেতরে গিয়ে টিস্যু দিয়ে মুখ চেপে ধরে।
আব্রাহাম;; আহা সাবধানে খাবে তো, কাশি উঠে গেলো।
আইরাত;; আপনি? আপ আ আপনি আমার ফোন নাম্বার কোথা থেকে পেলেন?
আব্রাহাম;; আরে ধুর কি যে বলো না এটা কোন ব্যাপার হলো নাকি আমার জন্য।
আইরাত;; তো কি মনে করে আমাকে ফোন করা?
আব্রাহাম;; তোমাকে মনে করেই তো তোমাকে ফোন করা।
আইরাত;; মানে?
আব্রাহাম;; মানে এই যে শর্ট”স & টি-শার্টে তোমাকে দারুন মানায় বুঝলে। আসলে বাচ্চা বাচ্চা টাইপ লাগে।
আইরাত;; হ্যাঁ কিন্তু… কি বললেন আপনি? মানে আপনি কি করে জানলেন। আপনি কোথায়?
আব্রাহাম;; করিডরে এসো।
আইরাত দ্রুত করিডরে চলে যায়। আর যেতেই মুখ হা। আইরাত তো তার বাসার করিডর থেকে নিচের দিকে খেয়ালই করে নি। আইরাত জলদি গিয়ে দেখে আব্রাহাম মেইন রোডে অর্থাৎ আইরাতের বাসার ঠিক করিডরের নিচে তার গাড়ির ডিকির ওপর বসে আছে। একহাতে কানে ফোন ধরে আছে আরেকহাতে নিজের জেকেট টা কাধের ওপর ধরে রেখেছে। সেখানেই বসে বসে আইরাতের সাথে কথা বলছে।
আইরাত;; দেখুন আপনি প্লিজ এখানে এভাবে দাঁড়িয়ে থাকবেন না। প্লিজ যান এখান থেকে।
আব্রাহাম;; এই এতো ভয় পাও কেনো তুমি। ন্যাহ, ভালোও বাসবো আবার ভয়ও পাবো। এটা হয় না বেইবি। ভালোবাসা আর ভয় একসাথে থাকতেই পারে না।
আইরাত;; সে আপনি যাই বলুন না কেনো। কিন্তু এখন প্লিজ যান আপনি।
আব্রাহাম;; আচ্ছা লিসেন একটা ইম্পর্ট্যান্ট কথা আছে। অনেক বেশিই ইম্পর্ট্যান্ট কথা। সবথেকে বেশি দরকারি কথা।
আইরাত;; কি?
আব্রাহাম;; আই লাভ ইউ।
আব্রাহাম আইরাতের দিকে সরু দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে।
আব্রাহাম;; আমি এবার যাই জানপাখি। শুধু তোমাকে এক নজর দেখতে এসেছিলাম। দেখা শেষ এবার যাই।
আইরাত কিছু বলে না শুধু ফোন কানে ধরে ওপরে দাঁড়িয়ে আব্রাহামের দিকে তাকিয়ে থাকে। আব্রাহাম কিছুটা ফ্লাইং কিসের মতো আইরাতের দিকে ছুড়ে দিয়ে তারপর গাড়িতে ওঠে সেখান থেকে চলে যায়।
আইরাত;; আমি এ কোন সাইকোর পাল্লায় পরলাম। কখন কি করে বসে। বলা নেই কওয়া নেই মানে যা তা একেবারে।
আইরাত আর করিডরে থাকেই না ঠাস করে দরজা মেরে দিয়ে রুমের ভেতরে চলে আসে।
।
।
পরেরদিন সকালে অনামিকা আসে। অনামিকার কাছে বাসায় ডুপলিকেট চাবি ছিলো তাই দিয়ে এসেছে। সেই এসে আইরাতকে ঘুম থেকে জাগিয়ে তোলে। আইরাত উঠে পরে। ভার্সিটি যেতে হবে আর হয়তো সেখান থেকে আবার আব্রাহামের অফিসেও। হাই তুলতে তুলতে ওয়াশরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নেয়। রেডি হয়ে বের হয়ে পরে। ভার্সিটি গিয়ে প্রায় সবার সাথেই দেখা হয়। ২-১ টা ক্লাস করে আবার এসে পরে৷ এখন আব্রাহামের অফিসে যাবে কিনা তাই ভাবছে।
আইরাত;; যদি চাকরি তে আবার জয়েন করি তাহলে আব্রাহাম খবিশের সাইন দরকার, আর সাইনের জন্য তো যেতেই হবে। ধুর এতো ভেবে ভেবে মাথায় প্রেসার বাড়ানোর চেয়ে চলেই যাই।
যেই ভাবা সেই কাজ। আইরাত সেখান থেকে এসে সোজা আব্রাহামের অফিসে যাওয়ার জন্য রওনা দেয়।
।
।
অন্যদিকে আব্রাহাম অফিসে বসে বসে হাতে একটা পেন্সিল ঘুড়িয়ে যাচ্ছে আর ফাইল চ্যাক করছে। তখনই অয়ন হাতে চকোলেট নিয়ে আসে।
অয়ন;; এইযে ব্যাস্ত মানুষ আসবো কি?
আব্রাহাম;; আয় ভাই আয়, এসে আমায় উদ্ধার কর।
অয়ন;; আগে এটা খা।
আব্রাহাম;; কি?
অয়ন;; মিষ্টি।
আব্রাহাম;; এই না না একদম না।
অয়ন কিছুটা জোর করেই আব্রাহামের মুখে সামান্য মিষ্টি পুরে দেয়। কারণ আব্রাহামের ডায়েট চার্ট বিগড়ে যাবে দেখে সে মিষ্টি খুবই কম খায়।
আব্রাহাম;; ওহহ হ্যাপি বার্থডে, বার্থডে বয়।
অয়ন;; থ্যাংক ইউ ব্রো।
ওহ আজ অয়নের জন্মদিন। আর তাই এতো খুশি। তখনই কৌশল আর রাশেদ আসে আব্রাহামের কেবিনে। অয়ন তাদেরও কিছুটা মিষ্টি খাইয়ে দেয়।
কৌশল;; আচ্ছা এতো কাজ মানুষ কীভাবে করে। এতো ওয়ার্কাহলিক কেনো তুই?
আব্রাহাম;; কে আমি?
কৌশল;; না, আমেরিকান মাফিয়া।
আব্রাহাম;; আরে কাজই এমন আমার। এখন কি করবো বল। কাজ তো করতেই হবে। উপায় নেই।
অয়ন;; তবে আজ না। একদিন কাজ একটু কম করলে তোর কোনদিক দিয়ে কম পরবে না ভাই। প্লিজ চল বাইরে যাই।
আব্রাহাম;; আচ্ছা যাচ্ছি তবে এই প্যান্ডিং ফাইল টা চেকাপের পর ওকে।
কৌশল;; না না একটা ফাইলেও আর হাত দিবি না বলে দিলাম। আরে চল না।
সবাই আব্রাহাম কে নিয়ে বাইরে এসে পরে। আর অফিসের হলরুমে এসেই অয়ন একটা কাচের গ্লাস আর একটা স্পুন হাতে নিয়ে নেয়। স্পুন দিয়ে গ্লাসে সামান্য আওয়াজ তুলে সবার উদ্দেশ্যে বলে ওঠে….
অয়ন;; Excuse me everyone,, may i have your attention please!
অয়নের কথায় সবাই যার যার কাজ ফেলে দিয়ে তাদের দিকে তাকায়।
অয়ন;; আজ আমার বার্থডে।
অয়নের কথায় সবাই হেসে খানিক চিল্লিয়ে ওঠে আর উইশ করে।
অয়ন;; আপনারা কি জানেন যে আমাদের বিগ বসের ঠিক কতোগুলো হিডেন ট্যালেন্ট আছে। হয়তো অনেকেই জানেন। তবে আজ আমার বার্থডে উপলক্ষে আমাদের কোম্পানির হ্যাড মিস্টার.আব্রাহাম আহমেদ চৌধুরী আমাদের সবার মাঝে গান গেয়ে শুনাবেন।
আব্রাহাম;; হুয়াট, সিরিয়াসলি ভাই! মানে আমি বলা নেই কওয়া নেই হুট করেই।
আব্রাহাম অয়ন, কৌশল আর রাশেদের সাথে চাপাচাপি করছিলো তখনই অফিসের ভেতরে আইরাত প্রবেশ করে। এসেই দেখে অফিসে কেমন এক জমজমাট ভাব। আইরাত সামনে এগিয়ে যায়। তারপর দেখে সবার সাথে এখানে আব্রাহামও আছে। আইরাত একটা সাইডে গিয়ে দুইহট ভাজ করে দাঁড়িয়ে থেকে পুরো ব্যাপার টা ক্লিয়ার জানার ট্রাই করছে।
আব্রাহাম;; দেখ আজকে না প্লিজ।
অয়ন;; আরে কিসের আজকে না। আমার বার্থডে আর তুই আমাদের সবার এই একটা কথা রাখবি না। প্লিজ ইয়ার।
আব্রাহাম;; তোরা আর তোদের এই ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইল।
রাশেদ দ্রুত গিয়ে একটা ব্লেক+ব্রাউন মিক্সের গিটার এনে আব্রাহামের হাতে দিয়ে দেয়।
রাশেদ;; স্যার এইযে গিটার।
আব্রাহাম এবার কিছু বলতে যাবে তবে তার আগেই সামনে তাকালে আইরাতকে তার নজরে পরে। আইরাত কখন এসেছে আব্রাহাম তা দেখেই নি। যাক ভালোই হলো। আব্রাহাম বাকা হেসে অফিসের হলরুমের বড়ো ডেস্কের ওপরে কিছুটা হেলান দিয়ে এক পা দুলিয়ে বসে পরে। আর সবাই আব্রাহামের চতুর্পাশে দাঁড়িয়ে আছে। যেনো তাদের মাঝে কত্তো আগ্রহ আব্রাহামের গান শোনার। গিটার টা পজিশন মতো ধরে একসময় নীরবতা ভেঙে তাতে টুং টাং আওয়াজ তুলে। আর পরক্ষণেই ছাড়া গলায় এক চঞ্চলমুখর গান ধরে আব্রাহাম….
~“আমি প্রেমিক, আমি কবি
তুমি সিরিয়াস ভাবে দেখো সবই–
আমি গেম খেলে সারারাত জাগি
তুমি পড়ুয়া মেয়ে বেজায় রাগি*
_~আমি বিড়িখোর, আমি আড্ডাবাজ
পড়াশোনা শুধুই তোমার কাজ..
`তোমার প্রিয় বিড়াল ছানা
আমার প্রিয় কুকুর.,
`~তোমার প্রিয় পাহাড়ি ঝর্ণা
আমার প্রিয় পুকুর~
*~ 🥀গোলাপ ফুলের জায়গায় আমি দিলাম তোমাকে জবা 🌺~বলো তুমি এইবার কি আমার প্রেমিকা হবা!?
~`~🌹গোলাপ ফুলের জায়গায় আমি দিলাম তোমাকে জবা 🌺~বলো তুমি এইবার কি আমার প্রেমিকা হবা!?
_`আমি ফেল করেও বলি ‘প্যারা নাই চিল’
তুমি হায়েস্ট পেয়েও কেঁদে মুখ করো ‘নীল’
আমার বই-খাতা সব ছেড়া-ফাঁড়া
তোমার কলম টাও মলাট করা.,.,
~_আমি বাড়ি ফিরি ম্যালা রাত করে🌛
তুমি রাতে ঘুমিয়ে ওঠো ভোরে ⛅
`_তোমার প্রিয় গরুর গোস্ত, আমার প্রিয় চিকেন
তোমার রুমে দুইটা এসি, আমার রুমে ফ্যান।
*~ 🥀গোলাপ ফুলের জায়গায় আমি দিলাম তোমাকে জবা 🌺~বলো তুমি এইবার কি আমার প্রেমিকা হবা!?
~`~ 🌹গোলাপ ফুলের জায়গায় আমি দিলাম তোমাকে জবা 🌺~বলো তুমি এইবার কি আমার প্রেমিকা হবা!?
‘তোমার গল্পে আমি ভিলেন, আমার তুমি ‘রাণী’ 👑
যখন আমি প্রেমে সিরিয়াস, তোমার কাছে ফানি 🥴
‘তোমার গল্পে আমি ভিলেন, আমার তুমি ‘রাণী’ 👑
যখন আমি প্রেমে সিরিয়াস, তোমার কাছে ফানি 🥴
*~ 🥀গোলাপ ফুলের জায়গায় আমি দিলাম তোমাকে জবা 🌺~বলো তুমি এইবার কি আমার প্রেমিকা হবা!?
~`~ 🌹গোলাপ ফুলের জায়গায় আমি দিলাম তোমাকে জবা 🌺~বলো তুমি এইবার কি আমার প্রেমিকা হবা….!
আব্রাহামের গান শেষ হতেই সবাই হাততালি দিয়ে চিল্লিয়ে ওঠে। গিটারের সুরের সাথে দারুণ মানিয়েছে গানটা। সবাই বেশ অবাক, কেননা সবাই জানতো আব্রাহাম খুব বেশি রাগি-বদমেজাজী আর ইগো ওয়ালা একজন ডেয়ারিং পারসন। তবে আজ সবার ধারণা পুরো পালটে গেছে। আব্রাহামও চাইলে অন্যান্য ছেলে দের মতো হতে পারে। গ্রাম্য ভাষায় কথা বলতে পারে। কেউই ভাবে নি যে আব্রাহাম এখন এই গানটা গাবে। সবার যেমন হাসিও পাচ্ছিলো ঠিক তেমনই সবাই বেশ খুশিও ছিলো। ব্যাসিক্যালি এই মূহুর্তে এই গানটা গাওয়ার একমাত্র কারণ হচ্ছে আইরাত। আইরাত কে দেখেই এই গানের কথাটা আব্রাহামের মাথায় এসেছে আর সে গেয়েও দিয়েছে। গানের মেইন মেইন লাইনে সে আইরাতের দিকে তাকাচ্ছিলো। নিজের প্রেমিকা হয়ে যাওয়ার কথা যেনো সে আইরাত কে এক প্রকার জিজ্ঞেসই করছিলো। আর আইরাত হাবলার মতো দাঁড়িয়ে আছে। আব্রাহাম গিটার টা একজন স্টাফের হাতে দিয়ে দেয়।
রাশেদ;; স্যার, পুরো ফাটিয়ে দিয়েছেন। সত্যি অসম্ভব সুন্দর হয়েছে।
কৌশল;; Honesty তোকে দেখে মনে হচ্ছিলো যেনো কোন ভার্সিটি পড়ুয়া ছেলে তার ভার্সিটি ক্যাম্পাসে বসে বসে গিটায়ে ঝড় তুলেছে এমন।
আব্রাহাম;; হুমম বুঝলাম। এবার সব শেষ। যার যার কাজে মন দেই কেমন!
আব্রাহামের বলাতে সবাই আবার কাজে লেগে পরে। অয়ন-কৌশল-রাশেদও চলে যায়। আইরাত কি করবে ভেবে পায় না তখনই আব্রাহাম গম্ভীর গলায় বলে….
আব্রাহাম;; মিস. আইরাত। কাম টু মাই কেবিন।
এই বলেই আব্রাহাম চলে যায়। আর আইরাতও গুটিগুটি পা ফেলে তার পেছনে চলে যায়।
।
।
।
।
চলবে~~