পবিত্রতার_ছোঁয়া পর্ব ৫

গল্প :#_পবিত্রতার_ ছোঁয়া
পর্ব :#5
লেখিকা :#জাবিন _মাছুরা [ছদ্মনাম]

||
তাহসিন বৃষ্টি মধ্যে হাঁটছে। সারা শরীর ভিজে একাকার হয়ে গেছে। কিন্তু তারপর তাহসিন পাগলের মতো হেঁটেই চলছে। ছেলেদের যে কাঁদতে হয় না,,,,,,,

ছেলেদের যে সহজে কান্না আসে না। কিন্তু তাহসিন ভেতরটা শূন্য শূন্য লাগছে। তাহসিন দৌড়েতে দৌড়াতে বাড়িতে ঢুকে পড়েল। ভেজা জামাকাপড় নিয়েই সে মায়ের ঘরে চলে গেল।
||
স্যার কি পৌঁছিয়েছে। ছাতাও তো নিয়ে যায়নি। এত রাতে গাড়ি পেয়েছে। দূর ভালো লাগছে না। মায়ের কাছে যায়। স্যারেকে ফোন দিতে বলি। [ একা বির বির করে]

মায়ের রুমে,

আমি:মা, আসব?

আম্মু :বলার কী আছে, আয়।

আমি :আম্মু,,

আম্মু :বল কি বলবি?

আমি :মা স্যার পৌঁছয়েছে, তুমি ফোন দিয়েছিলে?

আম্মু :না তোর বাবার সাথে কথা বললাম তো। তাই ফোন দিতে ভুলে গেছি।

আমি :এখন দেও তো, মা।

আম্মু :দাড়া, দিতছি।

আম্মু তিন বার স্যারকে ফোন দিল। রিং হলো কিন্তু স্যার ধরল না।

আম্মু :চিন্তা করিস না। তাহসিন ছেলে মানুষ, কিছু হবে না।

আম্মু :মিহু আমার মাথা ব্যাথা করছে। আমি ঘুমোব। তুই ফোন নিয়ে চলে যা।

আমি :ঠিক আছে ।

আমি ফোন নিয়ে আমার ঘরে চলে এলাম। আমার যে এখন খুব চিন্তা হচ্ছে। আমি মোবাইল হাতে নিয়ে শুয়ে পড়লাম। কিন্তু আমার তো ঘুম পাচ্ছে না। মন চাইছে তার কন্ঠে একবার হলেও মিহু ডাকটা শোনার। ভাবতে ভাবতে কিছু সময় পের হয়ে গেল। আমি বার বার ফোনর দিকে তাকাছি। ফোন কি দিব, না দিব না।

||
তাহসিন :বাবা,,

তাহসিননের বাবা:তুই এসেছিস।

তাহসিন :হ্যাঁ বাবা। বাবা আমার মায়ের কী হয়েছে? বল না।

তাহসিনের বাবা:নিজেকে শক্ত রাখ। ডাক্তার দেখছে।

তাহসিন :বাবা কি হয়েছিল মায়ের?

তাহসিনের বাবা:তো মা হঠাৎ করে সিরি থেকে পড়ে গিয়েছে।

তাহসিন : কীভাবে?

ডাক্তার :তামিম ভাই,,

তাহসিনের বাবা:জী?

ডাক্তার :আপনারা কি জানেন না রিনা ভাবি কন্সারে আক্রান্ত?

তাহসিন :কী??

ডাক্তার :হ্যাঁ ।এই যে রিপোর্ট।

তাহসিন :এটা হতে পারেন না। আঙ্কেল মায়ের তো কিছু হবে না?

ডাক্তার :যেকোনো সময় বিপদ ঘটে যেতে পারে। সে মারাও যেতে পারে।

তাহসিনের বাবা: ভাই রিনার চিকিৎসা করার। টাকা পয়সার চিন্তা করবেন না।

তাহসিন :হ্যাঁ আঙ্কেল,,

ডাক্তার :আমি আমার সব টুকু দিয়ে চেষ্টা করব। তোমরা ভাবির সব কথা রাখতে চেষ্টা করবা। তাকে একটুও চিন্তা করতে দেওয়া যাবে না।

তাহসিন :হ্যাঁ আঙ্কেল ।আমি মায়ের সব কথা শুনবো।

ডাক্তার :তাহলে আমি আসি। কালকে ভাবিকে আমার হাসপাতালে নিয়ে যেয়েন।

তাহসিনের বাবা: ঠিক আছে।

ডাক্তার যাওয়ার পর,,

তাহসিন রিনা বেগমের পাশে বসে আছে। তামিম সাহেব ফোনে কথা বলছে। রিনা বেগম আস্তে আস্তে চোখ খুলল।

তাহসিন :মা,,

রিনা:চুপ।

তাহসিন :মা তুমি ক্যান্সারের কথা বলো নি কেন?

রিনা:চিন্তা করিস না।

তাহসিন :মা আমি তোমার কিছু হতে দিব না। একদম টেনশন করবে না।

তাহসিনের বাবা:রিনা তুমি আমকে তো বলতে পারতে।

রিনা:আমি ঠিক হয়ে যাব তো। তাহসিন থাকতে আমার কিছু হবে না।

তাহসিন :হুম।

রিনা:বাবা আমি যা চাইবো তুই কী আমাকে দিতে পারবি ?

তাহসিন :হ্যাঁ মা পারব। একবার চেয়েই তো দেখ,,

রিনা:সত্যিই তো।

তাহসিন :হ্যাঁ মা।

রিনা:তুই রিমিকে বিয়ে কর। মেয়েটা তোকে অনেক ভালোবাসি। না করতে পারবি না। তুই কিন্তু আমাকে বলেছিস যা চাব, তাই দিবি।

তাহসিনের বাবা:কিন্তু এটা তো সম্ভব না।

রিনা :দেখ কোন কথা না।আমার ছেলে তার মায়ের জন্য রিমিকেই বিয়ে করবে।

তাহসিন :নিশ্চুপ,,,

রিনা :দেখ তুই যদি রিমিকে বিয়ে না করিস। তাহলে,,

তাহসিনের বাবা:অসম্ভব। তাহসিনের তো বিয়ে,,, [বলতে যেয়েও বললেন না]

তাহসিন কোন কথা না বলে নিচের দিকে তাকিয়ে নিজের ঘরে চলে এলো। তাহসিনের যে মায়ের কথাটা বুকে গিয়ে বেঁধেছে। তাহসিনের পাগল পাগল লাগছে। সে কি করবে বুঝতে পারছে না। চোখের জল যে আর বাধ মানতে চাইছে না। তার যে নিজেকে বড্ড অসহায় লাগছে।

তাহসিন ভেজা কাপড় না খুলেই, একটা ছবির সামনে চলে এলো।ছবিরটির সামনে হাঁটু ভেঙে বসে পড়ল। আর বলতে লাগল,,,,
চলবে কি?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here