প্রণয়ে দহন পর্ব -০৯

#প্রণয়ে_দহন
#পর্ব_৯
#writer_Nahida_Islam

শুভ্র একদৃষ্টিতে অহনার দিকে তাকিয়ে আছে।

-আরে কি দেখছেন?

-দেখছি, তুমি যে সিট বেল পড়নি

অহনা চেষ্টা করে ও লাগেতে পারছে না। তাই শুভ্র অহনার দিকে আগাতে ই মিষ্টি একটা স্মেইল, শুভ্রকে সব কিছু ভুলিয়ে দিচ্ছে।

-বেলটা লাগাবেন নাকি ধাক্কা দিবো?

অহনার এমন ঝাঁজালো কন্ঠ শুনে দ্রুত সিট বেল লাগিয়ে সরে আসে।
শুভ্র ড্রাইভ করছে ঠিকই কিন্তু একবার সামনের দিকে তাকালে তিন বার অহনার দিকে তাকায়।
অহনা ব্যাপারটা বুঝতে পেরে বললো,

-আমাকে নামিয়ে দেন।

শুভ্র হুট করে ই গাড়ি থামিয়ে বললো,

-কেনো?

-আপনি আমাকে মারার প্লানিং করে ই গাড়িতে তুলেছেন।

-তোমার মাথা ঠিক আছে,কি বলছো এসব?

-আপনি তো সামনের দিকে তাকিয়ে গাড়ি চালান না। যেকোনো সময় ই এক্সিডেন্টে হতে পারে।

-আমি তো পারি না তাহলে নেও, তুমি চালাও।

-আমি চালাতে পারলে আপনার গাড়িতে উঠতাম নাকি, আমার নিজের ই তো গাড়ি থাকতো।

-না চালাতে পারলে চুপ করে বসো।

অহনা কাঁদো কাঁদো মুখ করে বলে,

-আপনি আমাকে বকা দিলেন কেনো? আমি আজকে শাড়ি পড়ছি না।

-শাড়ি পরলে কি বকা দেওয়া যায় না, এটা কোথায় লিখা আছে আর আমি তোমাকে কোথায় বকাটা দিলাম তা বললো তো?

-জোরে যে বললেন, “গাড়ি না চালাতে পারলে চুপ করে বসো” এটা বকা না।

-হায় আল্লাহ তুমি কাকে আমার গাড়িতে বসালে, এতো প্যারা দেয়।

এই আমি আপনাকে প্যারা দেই তো নিমন্ত্রণ জানিয়ে গাড়িতে উঠিয়েছেন কেনো?

-আমার ভুল হয়ে গেছে এখন ক্ষমা করে দেও প্লিজ,চুপ করে বস।

-এই আপনি আমাকে আবার বকা দিলেন।

অহনা যে ইচ্ছে করে এমন করছে শুভ্রকো রাগানোর জন্য। শুভ্র তা বুঝতে পেরে শুভ্র গান গাওয়া স্টার্ট করলো,

Khwab hai tu,
Neend hun main…
Dono mile,
Raat banein…
Roz yahi,
Maangu dua…
Teri meri, baat banein…
Baat banein…

Main rang sharbaton ka,
Tu meethe ghaat ka paani…
Main rang sharbaton ka,
Tu meethe ghaat ka paani…

Mujhe khud mein ghol de toh,
Mere yaar baat ban jaani…

Rang sharbaton ka,
Tu meethe ghaat ka paani…

Main rang sharbaton ka.
Tu meethe ghaat ka paani…

Mujhe khud mein ghol de toh,
Mere yaar baat ban jaani…

Rang sharbaton ka,
Tu meethe ghaat ka paani…

Main rang sharbaton ka,
Tu meethe ghaat ka paani…

O yaara tujhe pyaar ki,
Baatiyan kya samjhava…
Jaagke ratiyaan roz bitawaan,
Isse aage ab main kya kahun.

O yaara tujhe boldi aakhiyaan,
Sadke jawaan…
Maang le pakiyaan aaj duawaan,
Isse aage ab main kya kahun…

Maine toh dheere se,
Neendon ke dhaage se,
Bandha hai khwab ko tere…
Main na jahaan chahun,
Na aasmaan chahun,
Aaja hisse mein tu mere…

Tu dhang chahaton ka…
Main jaise koi naadani.

Tu dhang chahaton ka….
Main jaise koi naadani.

Mujhe khud se jod de toh,
Mere yaar baat ban jaani…

Rang sharbaton ka,
Tu meethe ghaat ka paani.

Main rang sharbaton ka,
Tu meethe ghaat ka paani.

Tere khayalon se,
Tere khayalon tak,
Mera toh hai aana jaana…

Mera toh jo bhi hai,
Tu hi tha tu hi hai,
Baaki jahaan hai begana…

Tum ek musafir ho,
Main koi raah anjaani…

Tum ek musafir ho,
Main koi raah anjaani…

Mann chah mod de toh,
Mere yaar baat ban jaani…

Rang sharbaton ka,
Tu meethe ghaat ka paani…

Main rang sharbaton ka,
Tu meethe ghaat ka paani.

Mujhe khud mein ghol de toh,
Mere yaar baat ban jaani…

Rang sharbaton ka,
Tu meethe ghaat ka paani…

অহনা মনোযোগ দিয়ে গানটা শোনলো, গান গাওয়া শেষ হওয়ার পর বললো,

-বাহ্ ভালো গান গাইতে পারেন তো আপনি।

-চলে এসেছি, এখন নামতে পারো।

অহনা গাড়ি থেকে নামতে ই দেখে একটা ভুতুড়ে পরিবেশ। অহনা দ্রুত গিয়ে শুভ্রের হাত ধরে,

-আমার এখানে ভয় করতে আসেন চলে যাই।

-কি বলো,ভয়ের কি আছে। হতে পারে গাছপালা একটু বেশি কিন্তু কি সুন্দর পরিবেশ। একদম নিরব।

-না, না মাফ চাই আমি যাব না।

-তাহলে যাও একা একা বাসায় চলে যাও।

-আমি জানি তো ঐ আপনার কাজিন আমাকে ভয় দেখানোর জন্য ই এমন একটা রিসোর্ট বুক করেছে।

-আমার জন্য ভালোই করেছে।

-এই কি বললেন?

-বললাম আমি থাকতে তোমার ভয় কিসের।

অহনা ব্যাঙ্গচি কেটে বললো

-ইসসস আমি থাকতে তোমার ভয় কিসের। নিজে যেমন স্পাইডারম্যান।

কথাটা বলতে ই শুভ্র নিজের হাত থেকে অহনার হাত ছাড়ানোর চেষ্টা করে। কিন্তু অহনা হাত শক্ত করে ধরে রাখে।

-আমার হাত ধরো কেনো যাও স্পাইডার ম্যানের হাত ধরো।

-এটা বলেছি এই জন্য কি আমাকে এখানে একা রেখে চলে যাবেন নাকি।

-হ্যাঁ

শুভ্রের এমন উওর শোনে বললো,

-সরি আমাকে মাফ করে দেন প্লিজ তাও আমাকে ছেড়ে যাবেন না। আপনি যা বলবেন তা ই শোনবো।

-সত্যি তো।

-হ্যাঁ।

-তাহলে কাল থেকে অফিসে যাচ্ছো?

অহনা হাত ছেড়ে দিয়ে বললো

-না।

শুভ্র হেসে বললো, এই জন্য ই ঐদিক থেকে সাদা কাপড় চোখ দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে এমন মহিলা আসতেছে। হাতের নখগুলা তোমার মতো লম্বা লম্বা।

এবার অহনা ভয়ে শুভ্রকে জড়িয়ে ধরে।
–বিশ্বাস করেন আমি কাল থেকে অফিসে যাবো। আপনার সব কথা শুনবো প্লিজ এই মহিলার থেকে আমাকে বাঁচান।

-আচ্ছা তাহলে টাকার দেওয়ার কথা মুখে ও আনবে না আর কখনো।

-হ্যাঁ, টাকার কথা মুখে ও আনবো না সব ভুলে যাবো। এখন প্লিজ আমাকে এখান থেকে নিয়ে চলুন।

নয়না দূর থেকে শুভ্র আর অহনাকে দেখতে পেয়ে দৌড়ে আসলো। অহনা এভাবে শুভ্রলে জড়িয়ে ধরতে দেখে নয়নার গা জ্বলে যাচ্ছে।

-আরে অহনা কি হয়েছে তোমার?

নয়নার কন্ঠ শুনে ই অহনা শুভ্র থেকে দূরে সরে যায়।

-এখানে এমন ভুতুড়ে পরিবেশ কেনো। কেমন জঙ্গল টাইপ।

-আরে এই রিসোর্ট টায় একটু গাছপালা বেশি তাই বলে ভয় পাবে তুমি

শুভ্রের দিকে আংগুল তাক করিয়ে বলে,

-উনি আমাকে আরো বেশি ভয় দেখায়।

-হয়েছে,চলো ভিতরে

নয়না অহনার হাত ধরে আছে যেনো শুভ্রের কাছে না যেতে পারে।

শুভ্রের ইচ্ছে করছে এই নয়নাকে গিয়ে দুইটা থাপ্পড় মারতে। অহনার সাথে কাটানো ভালো সময়গুলো এই মেয়েটার জন্য নষ্ট হল।

রিসোর্টের ভেতরে প্রবেশ করতে ই অহনার ভয় অহনার ভয়টা অনেক দিক থেকে কেটে যায়। অনেক লাইটের কারণে জায়গাটা আলোকিত মনে হচ্ছে।

নয়নার কিছু অনেক গুলো ছেলে ফ্রেন্ড, আর দুইটা মেয়ে ফ্রেন্ড শুধু আছে। অহনার বেশ অস্বস্তি লাগছে এতো ছেলে মানুষ ভালো লাগে না।

নয়না শুভ্রকে অনেক কথা বলে ব্যস্ত রাখার চেষ্টা করছে কিন্তু শুভ্রের খেয়াল বার বার অহনার দিকে। অহনা নয়নার মেয়ে ফ্রেন্ডদের সাথে কথা বলছিলো, মেয়ে ফ্রেন্ড দুইটা হঠাৎ চলে যেতে ই কয়েকটা ছেলে ফ্রেন্ড অহনার সাথে কথা বলার চেষ্টা করছে। এটা দেখে শুভ্র নয়নার থেকে অহনার কাছে গিয়ে হাত ধরে টেনে নিয়ে আসে। এসে ই নয়নাকে বলে,

-নয়না কেক কাটবি না।

-একটু পরে কাটি। এখন তো বেশি রাত হয়নি।

-আমার কাজ আছে আমাকে বিশ মিনিটের ভেতর বের হতে হবে।

কথাটা শুনো নয়না মন খারাপ করে ফেললো, ইচ্ছে না থাকা শর্তে ও নয়না কেক কেটে নিলো।কেক কাটা শেষ হলে নয়না বললো,

-খাবার আসতে একটু লেট হবে। তুমি বস শুভ্র। খাবার অর্ডার দেওয়া তে নয়টার দিকে খাবার আসবে।

শুভ্র ঘড়ির দিকে তাকিয়ে বললো,

-আমার এখন ই বের হতে হবে। অহনা চলো।

-তুমি চলে যাবে আবার অহনাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছো।

-অহনাকে আমি বাসায় ড্রপ করে দিবো। ও একা যেতে পারবে না।

নয়না হাসি মুখে বললো সমস্যা নেই আমও ড্রপ করে দিবো।
অহনা বললো,

-না আমি শুভ্রের সাথে ই যাবো।

এটা বলে অহনা রিসোর্ট থেকে বের হয়ে গেলো। শুভ্র ও নয়নার থেকে বিদায় নিয়ে বের হয়ো গেলো।

গাড়ি স্টার্ট দেওয়ার সাথে সাথে শুভ্র দিকে তাকাতে ই দেখলো শুভ্রের চোখ দুটা লালা হয়ে আছে।

-কি হয়েছে আপনার।

শুভ্র কোনো কথা বললো না।

-কি হয়েছে বলেন না। আমার খুব ভয় করছে।

এবার ও চুপ করে থাকলো।

-বলেন না কি হয়েছে।

এবার শুভ্র গাড়ি থামিয়ে অহনার মুখ চেপে ধরে,

-ঐ ছেলেদের সাথে কি কথা বলতেছিলি….

চলবে,

[ভুলগুলো ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here