#প্রণয়ের_আসক্তি
১৬.
#WriterঃMousumi_Akter
“আসলেই কি কাজ এর জন্য এতটা রিয়্যাক্ট করছো নাকি অন্য কারণ নিরব।কি লুকাচ্ছো তুমি আমার কাছে নিরব।আমার চোখের দিকে তাকাও তুমি।তোমার কোন কাজের জন্য এমন রিয়াকশন করছো তুমি।”
“তোমার কি মনে হয় মেধা আমি কি কিছু লুকিয়ে করার ছেলে।আই নো তুমি সব জেনেই এখানে এসছো।”
“কি জানার কথা বলছো তুমি নিরব।কি জানি আমি।”
এমন সময় চোখে মুখে ভীষণ ভয় নিয়ে নিরবের পেছনে এসে দাঁড়ালো মৃথিলা।ভয়ে মৃথিলার বুক কাঁপছে
হাত পা সমস্ত শরীর থর থর করে কাঁপছে।এমন সিসুয়েশন যে ফেস করতে হবে মৃথিলা সেটা আগেই জানতো।বাট সিসুয়েশন টা এতটা বাজে পর্যায়ে পৌছাবে মৃথিলা ভাবতে পারে নি।নিরবের সাথে প্রথম বিয়ে হলে মৃথিলার কোনো দূর্বলতা ছিলো না তখন মৃথিলা ভেবেছিলো তার আপুর ভালবাসা সে ফিরিয়ে দিতে পারবে।কিন্তু এখন মৃথিলার সে ক্ষমতা নেই।
‘মেধা মৃথিলাকে দেখেই বললো মিথু তুই এখানে নিরবের সাথে শহর ছেড়ে এত দূরে।হুয়াই নিরব মিথু এখানে কেনো?ও না তোমার মায়ের কাছে ছিলো।’
‘নিরব দাঁতে দাঁত চেপে বললো,এবার কি একটু ওভার এক্টিং হয়ে যাচ্ছে না মেধা।মৃথিলা না হয় সহজ সরল মেয়ে তোমাদের মিথ্যা ভালবাসায় অন্ধ তাই বুঝছে না কিছুই।বাট আমাকে এতটা ননসেন্স ভুলেও ভেবো না মেধা।আমাকে বোকা ভাবার মতো বোকামি মোটেও করো না। ‘
‘কিসের এক্টিং তুমি এসব কি বলছো নিরব।রিয়েলি আমি কিছুই বুঝছি না।’
‘মৃথিলা এখানে আছে তুমি জানতে না।তুমি তো সিওর হয়েই এসছো এখানে।তাহলে এখানে এসে নতুন করে নাটক করার মানে কি? মৃথিলা এখানে কেনো এই প্রশ্ন করার মানে কি।আমার ফোনে কাল রাতের কল রেকর্ড আছে মেধা।মৃথিলা যে খাল কেটে কুমির এনেছে সেটা মৃথিলা বুঝে নি। ”
‘কারণ আমি তোমার মুখে জানতে চাই।কেনো আমার কাছে লুকালে নিরব তুমি এসব।আমি জানি কোনো কারণ বশত তুমি বিয়ে করেছো।এমনি এমনি তো তুমি আমার বোন কে বিয়ে করোনি।প্লিজ টেল মি কি এমন হয়েছিলো নিরব।’
‘ইউ আর রাইট মেধা এমনি এমনি বিয়ে করি নি।তখন হয়তো কোনো কারণে বিয়ে করেছিলাম।বাট এখন সে আমার জীবনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটা কারণ।’
‘দেখো নিরব আমার বোন কে তুমি বাঁচিয়েছো তুমি এজন্য ধন্যবাদ তোমাকে।মিথু কে আমি নিয়ে যাবো আমার সাথে।’
‘ও আমার ওয়াইফ ও কোথাও যাবে না।ওর জীবন আমার সাথে জুড়ে গিয়েছে।তুমি এখন আসতে পারো মেধা।’
‘ছিঃনিরব।তুমি কত সহজেই আমার মুখের উপর আমার বোন কে তোমার ওয়াইফ বলছো।তোমার কি বিবেক এ বাধছে না নিরব।আমার কতটা কষ্ট হচ্ছে তুমি বুঝতে পারছো।’
‘না বাধছে না।বিকজ আই লাভ মাই ওয়াইফ। আমি মৃথিলাকে ভালবাসি মেধা।’
‘তুমি আমাকে এইভাবে ঠকাতে পারো না নিরব।’
‘তুমি আমাকে ঠকিয়ে রিলেশন এ এসছিলে তোমার কি বিবেক এ বাঁধে নি।তাই আমার ও বিবেক এ বাঁধছে না।’
মেধা মৃথিলাকে ধরে বললো, এই মিথু তুই তো জানিস আমি নিরব কে কতটা ভালবাসি।আমি নিরব কে ছাড়া বাঁচবো না মিথু।তোদের এই বিয়ে টা মিথ্যা তাইনা মিথু বল।তুই কি চাস তোর আপু মারা যাক।
‘মৃথিলার চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ছে।নিজের বোনের প্রতি তার ভালবাসার কোনো কমতি নেই।বোনের দিকে তাকিয়ে বলতে পারছে না সে নিরব কে ভালবাসে।মেধাকে বললো আপু প্লিজ কেঁদো না।উনার সাথে আমার মিথ্যা সম্পর্ক। উনি তোমাকেই ভালবাসে আপু।আমাকে বাঁচাতে উনি এতকিছু করেছেন প্লিজ ভুল বুঝো না।আমাকে তুমি বাড়ি নিয়ে চলো আপু।বাড়ি যাওয়ার পর আমি আর উনার সাথে দেখা করবো না কথাও বলবো না।তোমার ভালবাসা তোমার ই থাকবে।’
‘নিরব অবাক হয়ে মৃথিলার দিকে তাকিয়ে বললো,পাগলামি করো না মিথু।তোমার কি মাথা ঠিক আছে।তুমি এসব কি বলছো।’
‘আমি ঠিক ই বলছি।আপনি আর আপু সুখি হন এই দোয়া রইলো।আমি আজ ই ফিরে যাচ্ছি আপুর সাথে।’
‘আমি তোমাকে কোথাও যেতে দিবো না মৃথিলা।তুমি যেতে চাইলেও যেতে দিবো না।তুমি আমার ওয়াইফ আমার পারমিশন ছাড়া তুমি কোথাও যেতে পারবে না।’
‘কিসের ওয়াইফ।আমাদের বিয়েটা একটা খারাপ সিসুয়েশন এ হয়েছিলো।আমি চাইনা আমার আপু আমার জন্য কষ্ট পাক।’
‘তোমার আপুর কষ্ট টা তোমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ আর আমার কষ্টের কোনো গুরুত্ব নেই তোমার কাছে।’
‘না নেই।আমার আপু অনেক গুরুত্বপূর্ণ আমার কাছে।’
‘আমার দিকে তাকাও মৃথিলা তুমি কি আমায় ভালবাসো না।আমার কি একটুও গুরুত্ব নেই তোমার কাছে।’
‘প্লিজ আমাকে কোনো প্রশ্ন করবেন না।’
‘আমায় ছাড়া থাকতে পারবে না তুমি মৃথিলা।চেষ্টা করলেও পারবে না।যেমন আমিও তোমায় ছাড়া থাকতে পারবো না।তাই বৃথা চেষ্টা করো না, মনের কথা শোনো মৃথিলা।মনের বিরুদ্ধে যেও না প্লিজ।’
‘আমার মনে কিছুই নেই। আপু চলো আমরা আমাদের বাড়িতে যায়।আমাকে ক্ষমা করে দাও আপু।উনাকেও ভুল বুঝো না তুমি।’
মৃথিলা মেধার সাথে বাসা থেকে বেরিয়ে যেতেই নিরব মৃথিলার হাত টেনে ধরে বলে, আর ইউ ম্যাড ড্যামেড।কার সাথে যাচ্ছো তুমি।ও তোমার বোন নয় মৃথিলা।ওই পরিবারের কারো সাথেই তোমার কোনো রিলেশন নেই।তুমি ওদের ফ্যামিলির কেউ না।নিরবের কথা শুনে মৃথিলা ভীষণ অবাক হয়ে মেধার দিকে তাকালো।মেধাও চমকে গেলো কথা টা শুনে।মৃথিলা কি বলবে বুঝতে পারছে না।মৃথিলার ভেতরে শুরু হলো ভীষণ ভূমিকম্পন।মৃথিলা মেধার দিকে তাকিয়ে বললো আপু উনি এসব কি বলছেন।নিরব মৃথিলার হাত শক্ত করে চেপে ধরে বললো,ও কি বলবে মৃথিলা।ও তো এই সব ঘটনায় জানে।কি মেধা চুপ কেনো বলো মৃথিলাকে সত্য টা।আর হ্যাঁ ভুলেও মৃথিলাকে কোনো মিথ্যা বলো না আমার হাতে সব প্রুভ আছে।মেধা বললো, কি প্রুভ নিরব।নিরব নিজের ল্যাপটপ এ দেখালো এই দেখো ডিএনএ টেস্টের রেজাল্ট মেধা।এর কপি রিফাত আমাকে পাঠিয়েছে।তোমার সাথে তোমার মা বাবার ডি এন এ ম্যাচ। বাট মৃথিলার সাথে কারো কোনো ম্যাচ নেই।মৃথিলা তাকিয়ে দেখো আমার মুখের কথা বিলিভ হবে না তাই আমি প্রুভ কালেক্ট করেছি।তুমি এবার বুঝতে পারছো মৃথিলা কেনো তোমার মা এমন অদ্ভুত বিহ্যাভ করেন তোমার সাথে।মা কখনো এমন হয় না মৃথিলা।আরে উনি তো তোমাকে পেটেই ধরে নি তাই তোমাকে নিয়ে তার কোনো অনুভূতি নেই।উনি মেধার মা তাই মেধার প্রতি উনার সব ভালবাসা।
আমি এ ক’দিনে প্রচুর সময় দিয়েছি তোমার ফ্যামিলির ইনফরমেশন নিয়েছি।আমার পুরা টিম কে কাজে লাগিয়েছি।তবে হ্যাঁ অজ্ঞাত কেউ একজন আড়ালে থেকে ডিএনএ টেস্ট এ সাহায্য করেছে।যাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।কে সে সেটাও বেরিয়ে আসবে।সে না থাকলে অনেক কিছুই জানতে পারতাম না।মৃথিলার চোখ বেয়ে পড়ছে বেদনার অশ্রু।একটা মেয়ের কাছে এটা একটা চরম মর্মান্তিক ব্যাপার।কারো পরিচয় মিথ্যা এটা জানার পর সেই মেয়ের সিসুয়েশন টা জীবন মরণের এক পর্যায়ে চলে যায়।যাকে বাবা হিসাবে জানতো সে বাবা না, যাকে বোন ডাকতো সে ও নিজের কেউ না।তাহলে তার ফ্যামিলি কে বা কারা।
মেধা কি বলবে বুঝতে না পেরে বলে মিথু এটা ঠিক তুই আমাদের ফ্যামিলির কেউ নাহ কিন্তু তোকে আমরা সেই ভাবে দেখি নি কখনো।আজ আর তোকে মিথ্যা বলবো না মিথু তুই যাতে কষ্ট না পাস তাই তোকে মা বাবা নিজের সন্তান আর আমাকে কুড়িয়ে পাওয়া সন্তান হিসাবে পরিচয় করিয়েছে।মিথু তুই আমার ই বোন।আমাদের ফ্যামিলর মেয়ে তুই।
মৃথিলার মাথা খুব ঘুরছে।সাগরের উথাল পাথাল ডেউ এর মতো তুফান মৃথিলার মনে বয়ে চলেছে।এতদিন তার মনে থাকা অনেক গুলো প্রশ্নের উত্তর আজ সে পেয়েছে।জীবন টা এত বাজে না হলেও তো পারতো।সবার ই ফ্যামিলি আছে তার কেনো নেই।এই জঘন্য সত্য মৃথিলা মেনে নিতে পারছে না।
–নিরব মেধার দিকে তাকিয়ে বললো তোমরা কি এতই মহান মেধা।একটা কুড়িয়ে পাওয়া মেয়েকে দিলে নিজের মেয়ের সম্মান।আর নিজের মেয়েকে তোমার ফ্যামিলি দিলো কুড়িয়ে পাওয়া মেয়ের পরিচয়।ব্যাপার টা অনেক বেশী সিনেমাটিক শাবানা টাইপ ব্যাপার হলো না।তোমার মা যদি শাবানার মতোই মহৎ হবে তাহলে ঘরের মাঝে মৃথিলার উপর এত মানসিক আর শারিরীক অত্যাচার কেনো করেছে।মৃথিলাকে তোমরা ইউজ করেছো সবাই।তোমার মা বাবার দুইটা মেয়ে এটা বললে কি খুব ক্ষতি হতো।এত এত রহস্য কেনো মেধা।আর তুমি বা কেনো নিজেকে কুড়িয়ে পাওয়া মেয়ে বলে প্রেজেন্ট করো।কি লাভ আছে এতে।
–দেখো নিরব আগে যা করেছি সব মিথুর জন্য আর পরে যা করেছি সেটা তোমাকে পেতে।
–আর নাটক করোনা।জানি এখন কোনো সত্য বলবে না।বাট ঠিক ই বেরিয়ে আসবে সব।
–নিরব এত কিছুর পরেও বলছি আমার ফ্যামিলি অনেক উদার তাই মৃথিলাকে কুড়িয়ে পাওয়া মেয়ের পরিচয় দেয় নি এটাই সত্য।তুমি কি এই অপরাধে আমাকে ছেড়ে যবে।
–মিথ্যা আর চালাকির দ্বারা তৈরি করা রিলেশন কখনো টিকে না মেধা।প্লিজ ফরগিভ মি।আমি মৃথিলাকে ভালবাসি।
নিরব মৃথিলার সামনে হাত জোর করে বললো,
আমি তোমায় জোর করবো না মিথু রিকুয়েষ্ট করছি প্লিজ থেকে যাও আমার জীবনে আমার খুশি হয়ে।আমার জীবনের প্রতিটা খুশি তোমাকে ঘিরে।আমি তোমার প্রতি কোনো সহানুভূতি দেখাচ্ছি না আমি আমার মনের কথা শুনছি মিথু।আমার মন তোমাকে চাই মিথু।আমাকে তুমিহীন নিঃসঙ্গ ভয়ংকর জীবন দিও না।আমার তোমাকে প্রয়োজন মিথু আমার জীবনে তোমার থেকে যাওয়া টা ভীষণ প্রয়োজন আমার ভাল থাকার জন্য।আমার ভেতরে তোমাকে নিয়ে একটু একটু করে জন্ম নিয়েছে ভালবাসার পুরো একটা পৃথিবী। তুমিহীন সেই পৃথিবী মরুভুমি।প্লিজ মিথু এই অযোগ্য কে তোমার জীবনে যোগ্য হিসাবে গড়ে নাও।তোমার মতো ভাল মনের মেয়ে প্রার্থণা আর ভাগ্যর জোরে পাওয়া যায়।আমি চাইলেও তোমার মতো ভাল হতে পারবো না তবে চেষ্টা করবো তোমার খুশি হয়ে থাকার। এই মধ্যবিত্ত ছেলেটা তোমাকে শাহজানের মতো তাজমহল গড়ে দিতে হয় তো পারবে না তবে একমুঠো সুখ তোমার আঙিনায় রোজ ছড়িয়ে দিতে পারবে।ভেবো না তোমার শূন্যতা আমাকে মেধার জীবনে ফিরিয়ে নিতে পারবে।আমার এই জীবনে কেউ কখনো তোমার নাম মুছে নিজের নাম লিখতে পারবে না।তোমার চলে যাওয়া আমি মেনে নিতে পারবো না।তুমি চলে গেলে আমার জীবনের বাকি কয়েক টা যুগ তোমার অপেক্ষায় কেটে পরপারে পাড়ি জমাবে।যারা তোমার কেউ হয় না যারা তোমাকে কখনো ভালবাসে নি সম্পর্কের নামে ভালবাসার নামে মিথ্যা গল্প সাজিয়েছে তাদের জন্য তুমি যাকে ভালবাসো তোমাকে যে ভালবাসে তাকে কষ্ট দিয়ে একা করে যেও না।আই ফিল ইউ মৃথিলা। আই লাভ ইউ।
আচমকা মৃথিলা মাথা ঘুরে পড়ে যায়।নিরব সাথে সাথে ধরে ফেলে।নিরবের কোলে অচেতন ভাবে ঢলে পড়ে মৃথিলা।নিরব ঠিক এই ভয়টায় পাচ্ছিলো।এই সত্য টা মৃথিলা মেনে নিতে পারবে না।নিরব প্রচন্ড ভয় পাচ্ছে মৃথিলার কিছু হবে নাতে।মেধা এগিয়ে আসতেই নিরব মেধাকে থামিয়ে দিয়ে বলে প্লিজ আর অশান্তি করো না।আমি মৃথিলাকে সামলে নিবো।তুমি ফিরে গেলে আমি হ্যাপি হবো।নিরব মৃথিলার গালে মুখে পানি ছিটাছে তবুও অচেতন মৃথিলা।নিরব কোলে তুলে নিচে নেওয়ার সময় শিরিনা মাহমুদ এর সাথে দেখা।মৃথিলাকে অসুস্থ দেখে শিরিনা মাহমুদ ও উত্তেজিত হয়ে পড়ে নিরবের সাথে হসপিটালে গেলো।
নিরব একটা কেবিন বুক করলো। মৃথিলাকে কেবিনে নেওয়া হলো।ডাক্তার এসে দেখে গেলো সেই সাথে স্যালাইন আর ইনজেকশন ও দিলো।ডাক্তার বললো উইকনেস এর জন্য মৃথিলা অচেতন হয়ে আছে।কিছুক্ষণর মাঝেই জ্ঞান ফিরে আসবে।কেবিনে মৃথিলার বেডের পাশে নিরব চোখের পানি ফেলছে।টেনশনে নিজেই অসুস্থ হয়ে পড়েছে।মৃথিলার অচেতন নিরবের মাঝে ভীষণ অস্হিরতা সৃষ্টি করেছে।মৃথিলা কেনো যে কোনো মানুষের পক্ষে এমন একটা নিউজ মেনে নেওয়া সম্ভব নয়।মৃথিলা সুস্থ হবে তো সেই চিন্তায় পাগল নিরব।
চলবে,,
( আগামি পর্বে আরো খানিক ক্লিয়ার হয়ে যাবে রহস্য)