#প্রতিশোধ
#পার্ট_17 & #শেষ_পার্ট
#জামিয়া_পারভীন
তৃণা কে সাইফ পার্কে দেখা করতে ডাকে, তখন সুযোগ বুঝে তৃণার ফোন অফ করে দেয়। এরপর ওরা অনেক ঘুরাঘুরি শেষ এ সাইফ বলে..
__ আজ আম্মি বলেছে তোমাকে খুব দেখার ইচ্ছা হচ্ছে তার। ( সাইফ)
__ ওহহ তাই তাহলে আজি দেখা করি চলুন ( তৃণা)
__ তুমি সত্যি যাবে? কি বলে যে তোমায় ধন্যবাদ জানাবো? ( মনে মনে শয়তানি হাসি হাসছে সাইফ )
__ আমার হবু শাশুড়ি মা দেখতে চেয়েছে আর আমি যাবোনা? ( তৃণা)
__ হুম, যাবেই তো, আমার লক্ষ্মী বউ বলে কথা। ( শুধু চলোই একবার, মনে মনে) (সাইফ)
__ এভাবে বলিয়েন না, লজ্জা লাগে। ( মুচকি হাসি দিয়ে তৃণা)
তৃণাকে সাইফ বিলাশবহুল একটা বাড়িতে এনে বসিয়ে রাখে। চারিদিকে বাগান করা, আশেপাশে তেমন বাড়িঘর নাই। বিশাল এলাকা জুড়ে বাড়িটা। তৃণা চারিদিকে দেখছে আধুনিকতার ছোঁয়া কোন অংশেই কম নয়। ড্রইং রুমের চারিদিকে দামী দামী সো পিচ আর ফুলদানি তে ভর্তি সব ই তাজা ফুল। ফুলের সুবাসে ঘর টা তে তৃণার থেকে যেতে ইচ্ছা করছে। তখন ই সাইফ এসে বলে সাইফের আম্মি উপরে আছে, পায়ে লেগেছে তাই হাটতে পারছে না। তোমাকে উপরে ডেকেছে। তৃণাকে একটা ঘরে নিয়ে যায় সাইফ সেখানে কেউ নেই দেখে তৃণা অবাক হয়ে সাইফের দিকে তাকায় ততোক্ষণে সাইফ ঘরের দরজা টা বন্ধ করে দেয়।
__ কি ব্যাপার দরজা লাগাচ্ছেন কেনো? ( তৃণা)
__ বুঝতে ই তো পারছো? কি চাইছি ? ( সাইফ)
সাইফ তৃণাকে জড়িয়ে ধরে কিস করতে থাকে তখন তৃণা সাইফের হাতে কাঁমড় দেয়। কিন্তু তাও কোন লাভ হয়না, সাইফ তৃণাকে বেডে ফেলে দেয়। এরপর সাইফ তৃণার উপর ঝাপিয়ে পড়ে, একটা মেয়ের শক্তি পরাজিত হয়, তৃণা কে রেপ করে বিছানায় ফেলে রেখে বাইরে গিয়ে বসে থাকে সাইফ।
তৃণা কোন রকম উঠে বসে কাপড় ঠিক করে কাঁদতে থাকে। সাইফ রুমে এসে বলে
__ একদম ন্যাকামি করবে না, এবার পাশে ওয়াশরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আসো। ( সাইফ রাগী গলায় )
__ তৃণা সাইফের দিকে থুতু দিয়ে বলে তুই একটা জানুয়ার, ছিঃ।
__ একদম ছিঃ ছিঃ করবা না জান ( তৃণার মুখ চেপে ধরে)
এখন থেকে আমি যা বলবো সেটাই অক্ষরে অক্ষরে পালন করবে নইলে ( ফোনে রেকর্ড করা ভিডিও দেখালো তৃণা কে)
এসব দেখে তৃণা নিরবে কাঁদতে থাকে। তখন সাইফ আবার বলে শাওয়ার নিয়ে আসতে। তৃণা সাইফের কথা মানতে বাধ্য হয়। তৃণার মরে যেতে ইচ্ছে হচ্ছে খুব কিন্তু সে মরতে পারেনি বাবার কথা ভেবে।
বের হতেই সাইফ একটা লেহেঙ্গা আর গয়না দিয়ে রেডি হতে বলে।
__ এসব এর কি দরকার?
__ দরকার আছে ডার্লিং, আজ তো আমাদের বিয়ে।
__ যদি বিয়েই করার হয় তাহলে এমন করলেন কেনো? ( তৃণা)
__ প্রতিশোধ
__ আমি কি করেছি আপনার সাথে? কেন করলেন এমন?
__ আবির আমার বন্ধু এটা কি জানো?
__ না
__ আবিরের নামে রেপ কেস দিয়েছিলে মনে আছে?
__ ভুল করে ফেলেছিলাম, আবেগের বশে ( ক্ষমা ও চেয়েছি উনার কাছে)
__ এর জন্য কি কি ক্ষতি হয়েছে জানো?
__ ( শুধুই কান্না করছে)
__ এর জন্য তোমার বোন কে আবির রেপ করে, পরে ভুল বুঝে বিয়ে করে। আর এর জন্য আর কি ক্ষতি হয়েছে জানো? জানো না। আমার একমাত্র বোন অনন্যা এর বিয়ে হবার কথা ছিলো আবিরের সাথে, আবির বিয়েটা না করায় অনন্যার বিয়ে ভাঙ্গে। এতে অনন্যার বিয়ে হয় একটা মাতালের সাথে, আমার বোন এর চোখে এতো জলের মূলে ছিলে তুমি। তুমি কি ভেবেছিলে? তোমায় ভালোবাসি। ভালোবাসা মাই ফুট! আমার বোনের চোখের জলের শোধ নিতে প্রথমে সব সত্যি ঘটনা খোঁজ নিই। এই মহান ঘটনার সাক্ষী মিশির হাজবেন্ড কে বন্দী করে সব তথ্য কালেকশন করি এরপর শুরু হয় আসল খেলা । তোমার বাবা কে মারার উদ্দেশ্য সব প্লান সাজানো হয় কিন্তু লক্ষ্যে আসার আগেই তোমার বাবার এক্সিডেন্ট হয় কিভাবে তা বুঝতে পারিনি আজও নইলে পরপারে থাকতো এতোদিন।
__এরপর তুমি পাগল হয়ে গেলে আর নামকরা সাইকোলজিস্টের কাছে আসলে। আমার কাজ গুলি ক্লিয়ার, এখন তুমি আমার হাতের পুতুল। আমার বোন টা যেভাবে কষ্ট পাচ্ছে এখন বিয়ে করে সারাটা জীবন সেইই কষ্ট তুমি পাবে। আর নাটক না করে রেডি হয়ে এসো।
সাইফ জোর করে তৃণা কে বিয়ে করে প্রথমে নিয়ে যায় আবিরের কাছে। প্লান মাফিক আবিরের রেপ করে বিয়ের ঘটনা তৃণা ফাঁস করে সবার সামনে। ( সাইফের ভয়ে এসব করতে বাধ্য হয় তৃণা) এতে আবিরের সম্মান হানি হয় প্রচুর। লোকসমাজে আবিরের নামে ছিঃ ছিঃ পড়ে যায়। সব কিছু তেই অনন্যা খুব খুশি হয়। একটা শাস্তি সে আবির কে দিতে পেরেছে।
আবির বা নিরা কেউই সবার সামনে মুখ দেখাতে পারবেনা বলে চলে যায় বিদেশে কিন্তু কোন দেশে তা কেউ জানেনা আর। সেখানে গিয়েই নিরার সাথে আবির নতুন পরিচয়ে বাঁচতে শুরু করে। আবির সেখানে গিয়ে জব পেয়ে যায়
নিরাও সেইখানে তার পড়াশোনা কমপ্লিট করে জব শুরু করে। আবির আর নিরার কোলজুড়ে আসে ফুটফুটে এক মেয়ে ।
সাইফ আর তৃণা অষ্ট্রেলিয়া চলে যায়, সেখানে গিয়ে সাইফ আরেকটা বিয়ে করে আর তৃণার কপালে জোটে সাইফের ঘৃণা। তৃণার এক মেয়ে হয়। বেচে থাকার একমাত্র সম্বল। তৃণার আর পড়াশোনা করা হয়ে উঠেনি, সাইফ তা চায় না কখনো তাই।
আর তুষার হুইলচেয়ার এ থাকতে থাকতে আদরের দুই মেয়ে কে হারিয়ে পাড়ি জমায় পরপারে। মৃত্যুর আগে কি মনে করে তুষার তৃণার সম্পত্তি ওর মেয়ের নামে লিখে দিয়ে যায়। তবে তৃণা বা নিরা কেউই এসব খোঁজ নেয়নি আর।
সব কিছুই এখন মাসুদের কাছে, সেইই সব দেখাশোনা করে। হেনা এখন ও মাঝরাতে কেঁদে উঠে নিরা আর তৃণার জন্য। মাসুদ ও আজকাল কেমন জানি হয়ে গেছে। মাকে একদম সহ্য ই করতে পারেনা। তাই মা কে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠিয়ে দিয়েছে সেই কবেই। একমাত্র আদরের নাতির কাছ থেকে অনেক দূরে আজ হেনা। বাস্তবতা বড়ই নিষ্ঠুর, আমরা মেনে নিতে পারিনা তাও মেনে নিতে হয়।
শেষ
(
গল্পটা খুব ভালো লাগলো,,,,,,,,কিন্তু আরো কিছু রোমান্টিক মুহুর্ত দিলে,আরেকটু ভালো লাগতো,,,তারপরেও অনেক ভালো হয়েসে,,,
Comment: saif has done the responsibility of a brother but not done the responsibility of a husband. Masud is not good man.We should take care our parents.