—–আচ্ছা,শ্রুতি বিয়ের পরে মেয়েদের বাচ্চা হয় কিকরে…..????
বাসর ঘরে সদ্য বিবাহিত স্বামীর মুখে এমন একটা কথা শুনে যেন আকাশ থেকে পড়লো প্রতিশ্রুতি !!!!এটা কার সাথে বাবা মা বিয়ে দিয়েছে ওকে…!!
—কি হলো,কথা বলছো না কেন….তুমি রাগ করলে নাকি….???
—না,রাগ করার কি আছে,আমি রাগ করবো কেন (নিজের সর্বশক্তি কাজে লাগিয়ে চরম অনিচ্ছা সত্ত্বেও একটু মুচকি আসলো প্রতিশ্রুতি…)
—তাহলে বলো না,কিভাবে হয় মেয়েদের বাচ্চা…??
(এই প্রশ্নের কি উত্তর দেবে প্রতিশ্রুতি….??আচ্ছা প্রথম ওর সাথে মজা করছে না তো!দেখতে ভীষণ সহজ সরল ইনোসেন্ট….যেন ভাজা মাছ উল্টে খেতে জানে এমন টাইপের ছেলে সে!ওর সারল্য আর সততা দেখেই বাবা মা সমন্ধটা করে।কিন্তু সরল বলে কোনো মানুষ এতোটাও সরল হতে পারে যে স্বামী স্ত্রীর শারিরীক সম্পর্কের মানে বোঝে না….এটাও কি এ যুগে সম্ভব।স্ত্রীর সাথে মজা করার মতো মানুষ নয় প্রথম এটা খুব ভালো করেই জানে প্রতিশ্রুতি!!)
প্রতিশ্রুতি লক্ষ্য করছে ওর স্বামীর হাত কাঁপছে…
—-কি হলো আপনার হাত কাঁপছে কেন…??আপনি কি কোনোভাবে ভয় পেয়ে আছেন!?
—না না,ভয় পাব কেন…এটা আমার অনেক আগের একটা রোগ বলতে পারেন।
—রোগ….. কিসের রোগ….????
—মেয়েদের কাছাকাছি গেলেই কেন জানি না হাত পা কাঁপে আমার…..জানিনা কেমন হয় এটা….!!
—হাহাহা!!কেন আগেও কাছাকাছি গিয়েছিলেন নাকি কোনো মেয়ের??
(কাছে আসবেই না কেন, এমন গুড লুকিং পুরুষের কাছাকাছি মেয়েরা না এসে থাকতে পারে,ওর সরল ইনোসেন্ট চেহারার ভেতরে একটা দারুণ হট ভাব কাজ করে)
—আরে না,,কি যে বলো না তুমি!!তবে অনেকেই কাছে আসতে চেয়েছিলো….কিন্তু আমার দুরবস্থা দেখে তারা নিজেরাই পালিয়ে যায়… (লজ্জামিশ্রিত হাসি দিয়ে)
(এতো দুঃখের মাঝে স্বামীর গামবাটের মতো কথা শুনে হাসি পাচ্ছে শ্রুতির)
—ওহহহ,,তাই!!আচ্ছা আপনি সত্যিই জানেন না,কিভাবে বাচ্চা হয়…
—না,জানি না!!
—-এই যে ধরুন আমার বিয়ে হয়েছে আপনার সাথে।এখন কিছুদিন পরেও আমিও কোনো বাচ্চার মা হবো…কিন্তু সেটা এমনি এমনি তো হবে না,তার জন্য আপনাকে সাহায্য করতে হবে আমায়!(লজ্জা শরমের মাথা খেয়ে কথাটা বলেই ফেললো শ্রুতি,এমনিতেও ও লাজুক প্রকৃতির মেয়ে নয় মোটেও)
—–সাহায্য…কি রকম সাহায্য…???
শ্রুতি ওর স্বামীর আরো কাছে গেলে… তারপর ওর সাদা শার্টের বোতামের ওপরে হাত দেয়…
—আগে এটাকে খুলতে হবে….
—কেন,এটা খুলতে হবে কেন??
—আরে খুলুন না,,আমি যা বলবো এখন চুপচাপ তাই করবেন….আর কোনো কথা নয়!
প্রথম তার শরীরের ওপর থেকে শার্ট আর কালো ব্লেজারটা খুলে নিলো!শ্রুতি তাকে একটা টান মেরেই নিজের ওপরে ফেলে দিলো…মূহুর্তেই হকচকিয়ে উঠলো প্রথম।
—আহহ!এটা কি করছো তুমি….???
—খুব লজ্জা করছে তাই না,আচ্ছা নিজের চোখ দুটো বন্ধ করুন।তবে আর লজ্জা করবে না।
এই বলে শ্রুতি প্রথমের জিন্সের বেল্টের ওপরে হাত দিলো…বেল্টটা খুলে নিলে সে…ওর হাতের স্পর্শে সাপের মতো মোচড়াতে লাগলো প্রথম।
এরপরে জিন্সটা নিচে টান দিয়ে খোলার চেষ্টা করতেই শ্রুতির ওপর থেকে লাফ দিয়ে উঠে পড়লো প্রথম!!
—ছি ছি ছি!তোমায় ভালো মেয়ে মনে করেছিলাম আমি।এ কি অসভ্যতা করছো তুমি..!??আমার জামা কাপড় খুলে কি করতে চাইছো এসব…???আমি থাকবোনা এই ঘরে….
(এই বলে ঘর থেকে বেরিয়ে গেলো প্রথম,,শ্রুতি ওর চলে যাবার দিকে চেয়ে রইলো!এমনিতেও সারাটা দিন ভীষণ ঝামেলার ভেতরে পার হয়েছে…প্রচুর ঘুম পাচ্ছে তার।একরাশ হতাশা আর ভারাক্রান্ত মন নিয়ে ঘুমিয়ে পড়লো সে!স্বামীর জন্য আর অপেক্ষা করলো না!আর অপেক্ষা করেই বা কি হবে… এমন হাবাগোবা মানুষের সাথে বাবা মা বিয়ে দিয়েছে ওর,,না জানি ভাগ্যে কি আছে!!)
–
–
–
–
সকাল বেলা ঘুম ভাঙতেই দেখতে পায় প্রথম বিছানায় নেই….ভাবলো হয়তো সে আগেই উঠে গেছে।হঠাৎ বিছানার ওপরে রাখা টিভি রিমোর্টের ওপরে চাপ পড়তেই টিভিটা অন হয়ে গেলো…নিউজ চ্যানেলে একটা লাইভ টেলিকাস্ট হচ্ছে….ঘটনাটা হলো-একটা মেয়েকে গতকাল রাতে ধর্ষণ করা হয়েছে…আর সেটা কোনো সিরিয়াল রেপিস্টের কাজ।যে কিনা প্রতিদিন রাতে সবার আড়ালে মেয়েদের ধর্ষণ করে মেরে ফেলে।পুলিশ এখনো পর্যন্ত তার কোনো হদিস পায় নি।কিন্তু এইবার সেই সিরিয়াল রেপিস্টকে শনাক্ত করা যাবে হয়তো।কারণ মেয়েটার লাশের পাশেই একটা ঘড়ি পাওয়া গেছে।পুলিশের ধারনা এটা ঐ রেপিস্টের ঘড়ি।জুম ক্যামেরায় ঘড়িটা দেখানো হচ্ছে…..
প্রতিশ্রুতি অবাক হয়ে গেলো ঘড়িটা দেখে….
—-হে খোদা!এটা কি দেখছি আমি…. এই ঘড়িটাই তো গতকালকে প্রথমের হাতে দেখেছি আমি…..তবে কি ও…… না না…..সেটা কিকরে সম্ভব…..?????
(নিজেকে নিজে প্রশ্ন করে প্রতিশ্রুতি!!)
চলবে……
#প্রথম_প্রতিশ্রুতি
পর্ব—–০১
মূল ভাবনা। কাহিনী। নির্মাণ : প্রদীপ চন্দ্র তিয়াশ।
সবার ভালো লাগলে গল্পটা কনটিনিউ করবো…