প্রয়োজনে প্রিয়জন পর্ব -৩৭+৩৮

#প্রয়োজনে_প্রিয়জন
#পর্ব_৩৭
#তানজিলা_খাতুন_তানু

পরেরদিন, অতসী বেশ খোশমেজাজেই দিনযাপন করতে লাগল। কলেজে আসলেও শাহানার মুখোমুখি হতে হয়নি, কোনো কারন বশত শাহানা কলেজে আসেনি। অতসী মিতুকে ফোন করে জানিয়ে দিয়েছে, আজকে আরুকে একটু তাড়াতাড়ি পড়তে যাবে। মিতুও অমত করেনি। অতসী দুটো ক্লাস করেই বাড়ি ফিরে গিয়েছিল, তারপরে ফ্রেশ হয়ে টিউশনি পড়ানোর জন্য বেড়িয়ে গেল।

অতসী এখন শুধুমাত্র দুজনকেই টিউশনি করায়। আরু আর অন্য একজনকে। অতসী বেড়িয়ে গেল, পরনে একটি সালোয়ার কামিজ। অন্য দিনের তুলনায় অতসী কে একটু অন্যরকম লাগছে, একটু বেশিই ফ্রেশ লাগছে।

আদৃত অফিস থেকে তাড়াতাড়ি ফিরে এসে, ড্রইংরুমেই বসে ছিল‌। কলিংবেলের শব্দ পেয়ে দরজা খুলে অতসী কে দেখে একটু অবাক হলো,

– কি ব্যাপার এত তাড়াতাড়ি আজকে?
– একটু কাজ আছে। (শান্ত কন্ঠে)

আদৃত আর কিছু বলল না।‌ অতসী আরুর রুমের দিকে এগিয়ে গেল। আদৃত অতসীর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে মনে মনে বলল,
– আজকে অতসী একটু হ্যাপি হ্যাপি লাগছে যেন।

অতসী আরুকে পড়িয়ে দিয়ে, বাবার সাথে দেখা করার জন্য বেড়িয়ে গেল। অতসী পোঁছে দেখল, আকরাম খাঁন ইতিমধ্যেই ওইখানে উপস্থিত হয়ে গেছেন। অতসীকে দেখা মাত্রই মিষ্টি হাসি দিয়ে বলল,

– কেমন আছো?
– ভালোই চলছে।
– বসো।

আকরাম খান খাবার অর্ডার দিলেন।

– আমি কিন্তু কিছু খাবো না।
– কেন?
– আপনার টাকাতে আমি পানিও খাবো না।

অতসীর কথাটা শুনে আকরাম খাঁন আহত হলেন। আজকের দিনেও অতসীর মুখে এই কথাটা শুনবেন আশা করেনি। তিনি অনেক আশা নিয়ে এসেছেন যে অতসী এইবার তার সাথে তার বাড়ি ফিরবে।

– অনেক তো‌ হলো, এইবার ফিরে চলো।
– ফিরতে পারি, তবে একটা শর্তে।
– কি শর্ত।
– দিদিভাইকে মেনে নিতে হবে।
– কিন্তু রুহি তো বেঁ/চেই নেই। (ভ্রু কুঁচকে কথাটা বললেন)
– দিদিভাই না থাকলেও, দিদিভাইয়ের স্বামী সন্তান তো আছে। তাদেরকে আপনাকে মেনে নিতে হবে, তবেই আমি ফিরব।
– কখনোই না।
– তাহলে আমিও ফিরব না।
– কেন একটা বাইরের মেয়ের জন্য এত জেদ করছ অতসী।

আকরাম খাঁন প্রচন্ড বিরক্ত হয়ে একরাশ ক্ষোভ নিয়ে কথাটা বলল। কথাটার অর্থ অতসীর ঠিক বোধগম্য হলো‌ না, তাই বিস্ময়ের সাথে জিজ্ঞেস করল,

– দিদিভাই আপনার সন্তান। আর তাকে আপনি বাইরের মেয়ে বলছেন।
– ভুল জানো।
– কি ভুল জানি।

আকরাম খাঁন নিশ্চুপ থাকল। অতসী পুনরায় প্রশ্নটা করতে আকরাম খাঁন একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল,
– রুহি আমার সন্তান নয়।

কথাটা অতসীর কাছে বজ্রাঘাতের মতো লাগল। অবিশ্বাস্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল,

– দিদিভাই পালিয়ে বিয়ে করেছিল বলে, আপনি তাকে নিজের মেয়ের্ পরিচয় থেকে বঞ্চিত করছেন? ছিঃ এতটা নিষ্ঠুর হতে পারলেন আপনি।

কথাগুলো বলতে বলতে অতসীর চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ে। তার বাবার প্রতি অনেক অভিযোগ থাকলেও তার কাছ থেকে এইটা আশা করেনি।

– অতসী তুমি আমাকে ভুল ভাবছ। আমি একটা কথাও মিথ্যা বলছি না।
– আবার আপনি বলছেন মিথ্যা বলছেন না। দিদিভাই আর দাদাভাই যদি আপনার সন্তান না হয় তাহলে তার পরিচয় কি?
– এই চরম সত্যিটা আমি এতদিন নিজের মধ্যে চেপে রেখেছিলাম। এই কথাটা আজ পর্যন্ত তোমার মাকেও জানতে দিইনি।‌ কিন্তু তুমি রুহিকে নিয়ে যা শুরু করেছ, আজকে আমি কথাগুলো বলতে বাধ্য হচ্ছি। তোমার আর আমার একমাত্র সন্তান তুমি। রুদ্র আর রুহি আমাদের সন্তান নয়।

অতসীর এখনো কথাগুলো বিশ্বাস হচ্ছে না। ওহ ভাবছে ওর বাবা ওকে বোঝানোর জন্য কথাগুলো বলেছেন।

– রুহি ও রুদ্রের সাথে তোমার আমার কিংবা আমাদের পরিবারের কারোর কোনো রক্তের সম্পর্ক নেই। যেই রাতে তোমার মা প্রসব যন্ত্রনায় হসপিটালে ভর্তি হয়, সেইরাতে…

আকরাম খাঁন নিজের স্ত্রীয়ের চিন্তাতে চিন্তিত হয়ে হসপিটালের করিডরে পাইচারি করে চলেছেন, তখনি তার লক্ষ্য পড়ে ওয়ার্ড বয়’রা একজন প্রেসেন্টকে হন্তদন্ত হয়ে নিয়ে আসছে। মহিলাটি যন্ত্রনায় ছটফট করে চলেছে। মহিলাটির দিকে চোখ পড়তে আকরাম খাঁন চমকে উঠলেন। মানুষটা যে তার বড্ড চেনা, তার একসময়ের প্রিয় বান্ধবী। সময়ে গতিতে আগের মতো আর যোগাযোগ হয় না, বান্ধবীও বিয়ে করে সংসার করছে আর উনিও নিজের জীবন নিয়ে ব্যস্ত। আজকে এইভাবে দেখা হয়ে যাবে সেটা বুঝতে পারেনি।

আকরাম খাঁন এগিয়ে আসবে তখনি ডক্টর বেড়িয়ে আসলেন। আর উনি ডক্টরের সাথে কথা বলাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ল।

– ড. আমার স্ত্রী কেমন আছেন।
– বেবির কন্ডিশন ভালো না, যতটা সম্ভব আমরা বেবিটিকে বাঁচাতে পারব না। আপনি সবকিছুর জন্য প্রস্তুত হয়ে নিন।

আকরাম খাঁনের মাথাতে আকাশ ভেঙে পড়ল। স্ত্রী কিংবা প্রথম সন্তানকে হারাতে উনি রাজি নন। কি করবেন বুঝে উঠতে পারলেন না।

আকরাম খাঁন মাথাতে হাত দিয়ে বসে পড়লেন। শশুড় বাড়ির লোক এবং নিজের বাড়ির লোক সকলেই ওনাকে শান্তনা দিতে লাগলেন। হঠাৎ করেই একটা গুঞ্জন শোনা গেল, আকরাম খানের মাথাতে তার বান্ধবীর কথা আসতেই সে এগিয়ে যেতে লাগল। পেছন পেছন তার শশুরমশাই গেলেন।

আকরাম খাঁন এগিয়ে এসে একজন নার্সকে জিজ্ঞেস করলেন,

– কি হয়েছে।
– একজন প্রেসেন্ট এসেছেন, শারিরীক কন্ডিশন ভালো না।
– প্রেসেন্টের নাম কী?
– টুসি।
– ওনার বাড়ির লোক কেউ আসেনি।
– না। যতটা শুনলাম উনি একাই থাকেন, ডির্ভোস হয়ে গেছে অনেক আগে।

নার্স চলে গেল। কিছুক্ষন পর বাচ্চার কান্নার শব্দ পাওয়া গেল। আবারো সেই নার্সটা বেড়িয়ে আসলেন, আকরাম খাঁন তখনো ওইখানে অপেক্ষা করছে। কেন যেন তার মনে হচ্ছে, ওইখানে তো সবাই আছে কিন্তু এই অসহায় মেয়েটার কাছে কেউ নেই তার থাকা উচিত। আকরাম খাঁনের শশুর মশাই সবটা দেখে এগিয়ে এসে আকরাম খাঁনের কাঁধে হাত দিলো।

– বাবা আপনি এইখানে,রিমা ঠিক আছে তো।
– হ্যাঁ। তুমি মেয়েটাকে চেনো?
– হাঁ।
– আচ্ছা। সবাই ওইখানে আছে, তুমি বরং এইখানে থাকো।

আকরাম খাঁন কৃতজ্ঞতার হাসি দিলেন। নার্সটা কিছুক্ষণ পর বেড়িয়ে আসলেন, তাকে দেখা মাত্রই আকরাম খাঁন বললেন,

– নার্স টুসি কেমন আছে?
– কন্ডিশন ভালো না।
– আর বেবি।
– হ্যাঁ ভালো আছে। আর একটা গুড নিউজ আছে, ওনার জমজ সন্তান হয়েছে। একটা ছেলে আর একটা মেয়ে।
– আমি কি ওনার সাথে দেখা করতে পারি।
– আচ্ছা যান।

আকরাম খাঁন কেবিনে ঢুকলেন। টুসি বেডে শুয়ে আছে।
– টুসি।

আকরাম খাঁনকে দেখে উনি উত্তেজিত হয়ে পড়লেন।

– আকরাম তুই এসেছিস।

কথাটা বলতে বলতে কেঁদে দিলেন।

– আরে কাঁদছিস কেন?
– আমি আর বাঁ/চবো না, আমার সন্তানগুলোর কি হবে রে।
– তোর কিছু হবে না।
– নারে আমি বুঝতে পারছি আমার সময় ঘনিয়ে এসেছে। এই বাচ্চার কারনেই আমার জীবনে এতকিছু হয়ে গেল আর সেই বাচ্চা যখন হলো তখন আমার জীবনের সময় শে/ষ হয়ে গেল।

বিয়ের অনেক বছর হয়ে যাবার পর যখন টুসির কখন সন্তান হচ্ছিল না তখন ওনার পরিবার ওর স্বামী ওর থেকে মুখ ফিরিয়ে নেই। সম্পর্কটা ধীরে ধীরে খারাপ হতে হতে শেষ পর্যন্ত ডির্ভোস হয়ে যায়। আর তারপরেই উনি প্রেগন্যান্ট হয়। আর এই কথা পরিবারকে জানানোর পর বাপের বাড়িতেও ওনার ঠাঁই হয় না, সকলেই ভাবেন উনি অন্য সম্পর্কে জড়িয়েছে, অপবাদ দিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেন। কোনোরকমে জীবনযাপন করে আজকে এই অবস্থা।

– আকরাম আমার একটা কথা রাখবি।
– কি বল।
#প্রয়োজনে_প্রিয়জন
#পর্ব_৩৮
#তানজিলা_খাতুন_তানু

– আমার ছেলে মেয়ে দুটোকে দেখে রাখবি প্লিজ।

আকরাম খাঁন কিছু বলতে যাবে তার আগেই টুসির শ্বাস কষ্ট শুরু হয়, আকরাম খাঁন তাড়াতাড়ি করে ডক্টরকে ডাকতে যায় কিন্তু তার আগেই সবকিছু শেষ হয়ে যায়।

আকরাম খাঁন এসে দেখেন টুসি শে/ষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছে। আকরাম খাঁনের মনটা ভীষন খারাপ হয়ে যায়। বাচ্চাগুলোর দিকে তাকিয়ে বলল,

– জন্মানোর সাথে সাথেই তোরা যে অনাথ হয়ে গেলি।

তখনি আকরাম খাঁনের কাঁধে একজন হাত দিলো, পেছনে ফিরে তাকিয়ে দেখল ওনার শশুর মশাই।

– বাবা আপনি।
– আকরাম বাবা একটা খারাপ খবর আছে।
– কি।
– বেবিটাকে বাঁ/চানো যায়নি।

আকরাম খাঁন মাথাতে হাত দিয়ে বসে পড়লেন। একদিকে বান্ধবী আর অন্যদিকে সন্তান হারিয়ে প্রচন্ড রকমের ভেঙে পড়লেন উনি।

– আকরাম বাবা একটা কথা বলব।
– কি বাবা বলুন।
– ওই দুটো সন্তানকে নিজের সন্তানের পরিচয় দাও।
– আপনি এইসব কি বলছেন?
– দ্যাখো তোমার বান্ধবীর তো দুই সন্তান হয়েছে আর তোমাদের সন্তান তো নেই। ছেলে মেয়ে দুটোর প্রয়োজন বাবা মা, আর তোমাদের প্রয়োজন সন্তান। এইরকম অবস্থাতে তোমার কি মনে হয় আকরাম। যেটা তোমার মনে হয় সেটাই করো।

আকরাম খাঁনের শশুর মশাই চলে গেলেন। আকরাম খান কি করবে বুঝে উঠতে পারল না। সর্বশেষে অনেক চিন্তা ভাবনা না করে সকলের থেকে সত্যিটা লুকিয়ে রেখে রুহি আর রুদ্রকে নিজের সন্তান বলে পরিচয় দেই।

ছোট থেকে নিজের পরিচয়ে বড়ো করে তুলতে থাকে, কখনোই বুঝতে দেয়নি ওরা ওনার নিজের সন্তান নয়।

সবটা শুনে অতসীর চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি পড়ছে। আকরাম খাঁন নিজের চোখের পানিটা মুছে নিয়ে বলল,

– কখনোই ওদেরকে বুঝতে দিইনি, নিজের সন্তানের মতো বড়ো করে তুলেছি কিন্তু রুহি কি করল আমার মানসম্মান সবটা মাটিতে মিশিয়ে দিয়ে একজনের সাথে পালিয়ে গেল। এইবার তুমি বলো, আমার রাগ করাটা কি স্বাভাবিক নয়।

অতসী কিছু বলল না। চোখ দিয়ে পানি ঝড়ে পড়ছে‌। আকরাম খান অতসী কে জড়িয়ে ধরলেন, অতসীর কান্নার পরিমান বেড়ে গেল।

– কাঁদিস না মা। রুহি আর রুদ্র আমার নিজের সন্তান না হলেও আমি কখনোই তোর সাথে ওদের পার্থক্য করিনি। রুহির প্রতি আমার রাগ থাকলেও আমি কখনোই আমার কোনো কিছু থেকে ওকে বঞ্ছিত করিনি। আমার প্রতিটি জিনিসই তোদের তিন ভাইবোনের নামে। তোর বাবা এতটাও খারাপ মানুষ নয় রে মা।

অতসী বাবাকে আঁকড়ে ধরে ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠল।

– বাবা।

এতদিন পর অতসীর মুখে বাবা ডাকটা শুনে আকরাম খাঁন ইমোশনাল হয়ে গেলেন। খুশিতে চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ল।

– মারে আমার মা।

অতসীকে শান্ত করে আকরাম খাঁন বলল,
– এতদিন পর তোকে কাছে পেয়েছি আমি আর তোকে হারাতে চাই না। তুই যা বলবি তাই মেনে নেব,তবুও ফিরে চল।

অতসী কিছু একটা ভেবে বলল,

– আমি ফিরতে পারি তবে দুটো শর্তে।
– বল।
– প্রথমত, এই চরম সত্যিটা দাদাভাই বা অন্য কেউ না কোনোদিন জানতে পারে। আমি দাদাভাইকে হারাতে পারব না বাবা।
– তুই না বললেও আমি কখনোই কাউকে বলতাম না। আর রুদ্রকে তো কখনোই না। দ্বিতীয় শর্তটা বল।
– আমি বিয়ে করতে চাই।
– এটা তো খুব ভালো খবর। ছেলেটা কে?
– শর্তটা তো‌‌ এইখানেই।
– মানে?
– আমি যাকে বিয়ে করতে চাই আমার‌ বিয়ে তার‌ সাথেই দিতে হবে।‌ কোনোভাবেই না বলা যাবে না।
– ভালো খারাপ কিছু বলতে পারব না
– এতগুলো বছর তো নিজেই নিজের ভালো খারাপ দেখেছি আর একটা দেখি না।

আকরাম খাঁন কিছু বলতে পারলেন না।

– বাবা আমি কিন্তু আমার সাথে হওয়া ঘটনাগুলো কিছুই ভুলিনি। আপনি যদি আমার শর্তে রাজি না নন, তাহলে আমি কিন্তু আবারো হারিয়ে যাবো আর কখনোই আমাকে খুঁজে পাবেন না।
– না।‌ আমি রাজি তোর কথাতে।

অতসী বাঁকা হাসল। খেলা তো এই শুরু হলো, এখনো অনেককিছুই বাকি আছে।

২দিন পর,

বাড়িতে হঠাৎ করেই গেষ্ট আসাতে আদৃতের মা একটু অবাক হয়েছে।‌ আর তার থেকেও অবাক হয়েছে অচেনা মানুষগুলোকে দেখে।

– আপনারা কারা আমি তো‌ ঠিক চিনলাম না।
– দিদি আমি অতসীর বাবা, একটা প্রস্তাব নিয়ে এসেছি।

আদৃতের মা অতসীর বাবা কথাটা শুনে চমকে গেলেন। অতসীর বাবা মানে তো রুহির ওহ বাবা।

– আপনি ভেতরে আসুন।
– বাড়ির বাকিদের ডাকলে একটু সুবিধা হতো।
– আমার ছেলে অফিসে আছে আমি ওকে আসতে বলছি

আদৃত দের মা আদৃতকে তাড়াতাড়ি ফিরতে বলে আকরাম খাঁনকে বসতে বলে নাস্তার ব্যবস্থা করতে লাগল।

আকরাম খাঁন গোটা বাড়িটা দেখছিলেন, বেশ‌ সাজানো গোছানো ঘরবাড়ি। ওনার বাড়ির মতো অনেক বড়ো না‌ হলেও খুব সুন্দর।

আরু বসার‌ ঘরে এসে দেখে একজন লোক বসে আছে। আরুর ভ্রু কুঁচকে যায়, এগিয়ে এসে কোমড়ে হাত দিয়ে জিজ্ঞেস করে,

– আপনি কে?

আচমকা আক্রমনে আকরাম খাঁন চমকে উঠল। কিছু বলতে যাবে তার আগেই আরু বলল,

– তুমি কি ভিলেন?
– কি!

আরুর কথা শুনে আকরাম খাঁনের চোখ বেড়িয়ে আসার উপক্রম। বাচ্চা একটা মেয়ে ওকে ভিলেন বলছে, ওকে কি দেখতে ভিলেনের মতো।

– হ্যাঁ আমি দেখেছি দুষ্টু লোকগুলো এইভাবে হিরোদের বাড়িতে এসে ঝামেলা করে।
– আমাকে কি তোমার দুষ্টু লোক মনে হয়।
– অচেনা মানুষদের সবাইকেই আমার দুষ্টু লোক লাগে।

আকরাম খাঁন কিছু বলতে যাবে তার আগেই আদৃতের মা ওইখানে এসে বলল,

– আরু দিদিভাই কি করছ।
– দিদুন ওই লোকটা কি ভিলেন।

আদৃতের মা চমকে উঠল। সত্যি তো আকরাম খাঁন তো ভিলেনই। তবূও নিজেকে সামলে নিয়েবলল,

– দিদিভাই উনি তোমার দাদু হয়। এইভাবে বড়োদের সাথে কথা বলতে হয়? সরি বলো দাদুকে।
– সরি দাদু।
– আরে না বাচ্চা মানুষ।

আকরাম খাঁন আরুকে কোলে বসিয়ে একটা চুমু দিলেন।

– মিষ্টি একটা মেয়ে।

তখনি কলিংবেলের শব্দ হলো। আদৃতের মা এগিয়ে গিয়ে দরজা খুলে দেখলেন আদৃত এসেছে।

– মা এইভাবে আসতে বললে আমাকে, সবকিছু ঠিক আছে তো।
– হুম।‌ ভেতরে আয়।

আদৃত আকরাম খাঁনকে দেখে চমকে উঠল। কিছু বলতে যাবে তার আগে আরু দৌড়ে বাবা বলে জড়িয়ে ধরল আদৃতকে। আদৃতও আগলে নিলো আরুকে। আকরাম খাঁন আদৃতের মাকে জিজ্ঞেস করল,

– উনি কে?
– আমার ছেলে আদৃত।
– আর বাচ্চাটা?
– আমার মেয়ে। (আদৃত)

আকরাম খাঁন চমকে উঠলেন। অতসীর‌ কাছে যেটা শুনেছে ছেলেটারা এক ভাই আর এক বোন। আরু আদৃতের মেয়ে মানে ওহ কি বিবাহিত, সেই কারনেই কি অতসী শর্ত দিয়েছে।

#চলবে…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here