#প্রেমময় প্রহর (deewana 2)
Urme prema (sajiana monir)
পর্ব :৮
সায়রা আরসালের বেশ কাছাকাছি রয়েছে সায়রার চোখে মুখে স্পষ্ট ভয়ের ছাপ ।আর অন্যদিকে আরসালের ঠোঁটে দুষ্টুমির হাসি ।
সায়রা ভয়ে ভয়ে বলে
-“আ…আসলে আমি আ…আমি !”
আরসাল ছোট ছোট চোখ করে সায়রার দিকে তাকিয়ে মজা করে বলতে লাগে
-“আসলে তুমি কি হুম ?
আমাকে তুমি খুন করতে চাইছিলে এতটা ঘৃনা কর আমাকে !”
একথা শুনতেই সায়রার মুখ মুহূ্র্তেই কালো হয়ে যায় চোখে জল টুপ টুপ করছে এই বুঝি তা গড়িয়ে পড়বে ।আরসাল তাকে এমনটা বলতে পারলো ? সে কি এতটাই খারাপ যে তাকে খুন করতে চাইবে এইসব ভেবেই তার চোখে জল ভোরে আসছে ।ফেইরি লাইটের আলোতে তা আরসালের চোখে ঠি কই আটকিয়ে যায় আরসাল কিছুটা ভয় পেয়ে যায় সায়রাকে সাথে সাথে জরিয়ে ধরে বলতে লাগে
-“রিলেক্স সায়রা আ’ম জাস্ট কিডিং !”
সায়রা এবার নিজের চোখের জল ছেড়ে দেয় ফুপিয়ে ফুপিয়ে কান্না করতে লাগে যাকে বলে অভিমানের কান্না আরসালের উপর তার বেশ অভিমান জমেছে ইচ্ছে করছে তার চুল টেনে ছিড়ে দিতে কিন্তু তাও তো হবার নয় !
সায়রা আরসালকে জোরে ঢাক্কা দিয়ে দূরে সরিয়ে বলতে লাগে
-”আপনি খুব বাজে খুবই বাজে লোক ।আপনি সবসময় ইচ্ছে করে আমাকে হার্ড করেন ।
আমি তো জাস্ট দেখতে চেয়েছিলাম আপনার আবার জ্বর উঠেছে কিনা
আর আপনি আমাকে যা তা শুনিয়ে দিলেন ?“
আরসাল সায়রাকে আবার নিজের কাছে টেনে নিলো নিজের বুকের মাঝে শক্ত করে জরিয়ে নিয়ে বলতে লাগে
-“বললাম তো আমি মজা করছিলাম !
তুমি যদি কষ্ট পেয়ে থাকো আ’ম সরি ।”
সায়রা আর কোন উত্তর দেয়না চুপটি করে আরসালের বুকের মাঝে নিজের মাথা থেকিয়ে চুপ করে আছে ।
সায়রা কোন কথা বলছেনা চোখ বন্ধ করে এই বুকের হৃদকম্পন শুনছে ।তাকে বেশ শান্তি দিচ্ছে এই শব্দটা ।
কেন জানো আজ প্রথমবার আরসালের এতটা কাছে থেকে সে শান্তি অনুভব করছে ।অদ্ভুদ এক অনুভূতি কাজ করছে তার মাঝে !
আরসাল আগের মতই নিজের সায়রাকে নিজের বুকের মাঝে লুকিয়ে রেখেছে ।তার মাঝেও এক অন্যরকম আকর্ষন কাজ করছে ।এই আকর্ষনটা বড়ই মধুর !
এভাবেই দুজন দুজনার মধ্যে আবদ্ধ থেকে ঘুমিয়ে যায় ।অভিমান রাগ জিদের আড়ালে ভালোবাসায় ডুবে যায় ।
সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে সায়ন বসে আছে পাশেই রিদ্ধি ঘুমাচ্ছে গভীর ঘুমে সায়ন তাকে মন ভরে দেখে যাচ্ছে ।খুব পবিত্র আর মায়াবিনী লাগছে তাকে ।যদিও বিয়ের আগে বিয়েতে তার অমত ছিলো কিন্তু আস্তে আস্তে কি করে যে এতটা ভালোবেসে ফেলেছে সে নিজেও জানেনা ।
এখন তার অস্তিত্ব শুধুই রিদ্ধি রয়েছে ।
তাদের বিয়ের পাচঁ বছর চলছে এই পাচঁটা বছরে অনেক কিছু ঘটে গেছে অনেক কিছুর পরিবর্তন এসেছে ।বিয়ের আগে কারো কোন একটা মৌহ তে সে জরিয়ে ছিলো তাই বিয়েতে তার অমত ছিলো বিয়ের পর অনেক খারাপ ব্যবহার করেছে রিদ্ধির সাথে কিন্তু মেয়েটা সব মুখ বুঝে সয্য করে গেছে কখনো টু শব্দটুকু করেনি না কখনো সায়ন থেকে কোন অধিকার চেয়েছে ।
মেয়েটার মধ্যে অন্যরকম এক অদৃশ্য শক্তি আছে যা দ্বারা সবাইকে আপন করে নিতে পারে ।যেই কেউ তার মায়ায় পড়তে বাদ্ধ হয়ে যায় !
সায়নের ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে বিয়ের পর আস্তে আস্তে রিদ্ধির প্রতি আকৃষ্ট হতে লাগে তার মায়ায় আটকিয়ে যায় সে আস্তে আস্তে রিদ্ধির মায়ায় গভীর ভাবে আটকিয়ে যায়।এতটাই তাকে ভালেবেসে ফেলে যে তাকে ছাড়া এক মুহূর্ত বেচেঁ থাকার কল্পনাও করতে পারেনা ।
সত্যি সত্যিকারের ভালোবাসায় অনেক শক্তি আছে যে সবধরনের পরিস্তিতীকে হার মানিয়ে নিজের ভালোবাসাকে ঠি কই জয় করে নিতে পারে ।তেমনি রিদ্ধির ভালোবাসাই আজ সায়নকে এতটা দূর্বল করে দিয়েছে আর তাকে ভালোবাসতে বাদ্ধ করেছে !
একা একাই এসব কথা ভেবে যাচ্ছে চোখের সামনে এই পাচঁ বছরের সকল স্মৃতি ফুটে উঠে তাদের বিয়ে থেকে আদির জন্ম নেওয়া আদির বড় হওয়া সবটা ভেসে উঠছে । এই মেয়েটাকে সে খুব ভালোবেসে ফেলেছে এখন তাকে ছাড়া এক মুহূর্ত জন্য ও নিজের অস্তিত্ব চিন্তা করতে পারেনা ।
হঠাৎই রিদ্ধি নড়তেই সায়নের হুস ফিরে সে রিদ্ধির মুখের দিকে ফিরে তাকিয়ে দেখে ছোট ছোট ঘুম ঘুম চোখে তার দিকে তাকিয়ে আছে মুখে বিশ্বজয়ের হাসি !
রিদ্ধি ঘুম ঘুম কন্ঠে বলে
-“গুড মর্নিং !”
সায়ন মুচকি হেসে তাকে বুকে আবদ্ধ করে কপালে নিজের ঠোঁট ছুয়িঁয়ে বলতে লাগে
-“গুড মর্নিং মাই লাভ !”
রিদ্ধি চোখ উচুঁ করে সায়নের দিকে তাকিয়ে বলে
-“কয়টা বাজে ?”
-“উমমম ৯:৩০ টা “
-“কিইইইইই !
৯:৩০ বাজে আর আপনি আমাকে ডাকেননি “
বলতে বলতেই রিদ্ধি তারাহুরো করে বেড থেকো নামতে নেয় ।সায়ন রিদ্ধিকে পিছন থেকে জরিয়ে ধরে বলে
-“রিলেক্স !
এত দুশচিন্তার কি আছে আছে ?
ভুলে যেও না এখন তুমি একা নও সাথে আমাদের বেবীও আছে ।
আমি চাইনা তোমাদের কোন ক্ষতি হোক ।”
রিদ্ধি সায়নের গাল টেনে বলতে লাগে
-“ও হো আপনিও না শুধু শুধু ভয় পাচ্ছেন এমন কিছু হবে না আমি আমাদের খেয়াল রাখবো !”
-“হুম তাই যেন হয় !”
বলেই সায়ন রিদ্ধিকে কোলে করে নিয়ে ওয়াশরুমের দিকে যেতে লাগে ।রিদ্ধি হাত পা ছুড়াছুড়ি করতে করতে বলে
-“সায়ন আপনি কি করছেন
পড়ে যাবো তো নিচে নামান !”
সায়ন মাথা নাড়াতে নাড়াতে বলে
-“উহু একদম না !
আমি নিচে নামাবোনা আজ আমি নিজ হাতে নিজের বউকে রেডি করে দিবো ।”
বলতে বলতে সায়ন ওয়াশরুমে ডুকে পড়ে ।
সন্ধ্যায় বাড়ির বাগানে বড় করে হলুদের আয়োজন করা হয়েছে সকল গেস্ট এসে গেছে ।দুই বাড়ির হলুদ এক সাথে হবে দুই বাড়ির সবাই বাগানে উপস্থিত ।সায়রার বাড়ির লোকজন ও এসেছে সায়রা বাবা মাকে দেখে জরিয়ে ধরে বেশ ইমোশনাল হয়ে যায় যেন কত যুগ পড়ে বাবা মা কে দেখছে ।সবাই নিজেদের মত ইনজয় করছে ।
পুরো অনুষ্ঠানে সায়রা আরসাল থেকে লুকিয়ে লুকিয়ে বেড়াচ্ছে ।আরসালের সামনে আসলেই আরসাল কালকে রাতের ব্যপার নিয়ে তাকে লজ্জা দিচ্ছে সায়রার বার বার রাতের কথা মনে পড়ে যাচ্ছে কাল সারা রাত আরসালের বাহুডোরে সে কাটিয়েছে আরসালো তা নিয়ে বেশ মজা নিচ্ছে কারন সায়রার এই লজ্জা মাখা ফেস যে তার বেশ ভালো লাগে !
পুরো অনুষ্টানে আরসাল সায়রাকে বেশ জ্বালিয়েছে সায়রা উত্তরে শুধু নিজের অগ্নিদৃষ্টি নিক্ষেপ করেছে ।
কিন্তু পুরো অনুষ্টানে কারো এক খারাপ নজর সায়রাকে ফলো করেছে ।কেউ তাকে বাজে নজর দিয়ে সায়রাকে চেকআপ করছে যা সায়রা বেশ বুঝতে পারছে আরসাল ব্যস্থতার জন্য খেয়াল না করলেও সায়রা ঠি কই বুঝতে পারছে তা ।মেয়েদের এক অদ্ভুদ শক্তি আছে কে তাদের দিকে কি নজরে তাকায় তা বুঝবার ক্ষমতা আছে তাদের !
পুরো বাড়িতে কেউ নেই সবাই এখনো বাহিরে সায়রার খারাপ লাগছিলো বলে সে রুমে চলে আসে চেন্জ করতে ।সায়রা নিজের রুমে আয়নার সামনে দাড়িয়ে গহনা খুলছে আরসালের কথা ভাবছে মুখে একা একাই এক অজানা হাসি এসে যায় ।বার বার মনে প্রশ্ন জাগছে এই লোক এমন অদ্ভুদ কেন ?
যাকে বুঝতে গেলে তার সারাজীবন ও কম হয়ে যাবে ।
এসব ভাবতে ভাবতেই সায়রা লাইট অফ করে লেহেঙ্গৈর উড়না খুলে পাশে রাখতেই কেউ তার খালি কমোড়ে নিজের হাত রেখে চেপে ধরে পিছন থেকে সায়রাকে নিজের সাথে চেপে ধরে বাজে ভাবে সায়রাকে স্পর্শ করছে ।সায়রা বেশ বুঝতে পারছে এটা আরসাল না আরসাল কখনো এমন বাজে ভাবে স্পর্শ করেনা ।সায়রা চিৎকার করছে আর নিজেকে তার থেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করছে জোরে জোরে হাত পা ছুড়া ছুড়ি করার চেষ্টা করছে ।কিন্তু পিছনের লোকটি জানোয়ারের মত সায়রাকে বাজে ভাবে স্পর্শ করছে আর নিজের সাথে আরো শক্ত করে চেপে ধরে ।সায়রা কান্না করছে জোরে জোরে চিৎকার করছে কিন্তু কেউ নেই বাড়িতে তাকে সাহায্য করার জন্য ।
সায়রা কোন ভাবে একটু সুযোগে পিছনের লোকটির পেটের মধ্যে নিজের কনুই দিয়ে আঘাত করে লোকটি ব্যথায় কুকঁড়িয়ে যায় ।
আর রাগী কন্ঠে বলতে লাগে
-“হারামযাদী তোকে আজ ছাড়বোনা ।”
সায়রা সুযোগ পেয়ে তারাতারি করে সেখান থেকে পালিয়ে দরজার কাছে আসে দরজা খুলার জন্য যেই দরজা খুলতে নিবে তার আগেই পিছনের লোকটি সায়রার টপসের পিছনের অংশ টান দেয় ফলে পিছনে কিছুটা ছিড়ে যায় ।সায়রা নিজের হাত দিয়ে ঢাকার চেষ্টা করছে আর কান্না করছে ।
ছাড়া পাবার চেষ্টা করছে !
কিন্তু লোকটির শক্তির সাথে পেরে উঠতে পারছেনা সায়রার হাত শক্ত করে চেপে ধরে আছে সায়রা নড়চড় করার চেষ্টা করলে তার গালে স্বজোরে থাপ্পার মারে সায়রার মাথা ফুলদানীতে লেগে রক্ত জোড়তে লাগে শরীরের শক্তি টুকু শেষ হয়ে গেছে উঠতে পারছেনা নিচ থেকে লোকটি আস্তে আস্তে সায়রার দিকে আসছে সায়রা কি করবে কি করে বাচঁবে এই জানোয়ার থেকে বুঝতে পারছেনা !
চলবে……..❤️