#প্রেমরোগ-৯
#তাসনিম_তামান্না
সন্ধ্যা বেলা ড্রাইংরুম বসে সকলে গল্প করছে। মেঘা মন খারাপ নিয়ে ও বসে আছে কোনো কথা বলছে না শুধু হুম, আর না ছাড়া। কুয়াশার এ বাড়িতে থাকতে মন চাইছে না। এটা নিয়ে ও নিজের ওপরে মহা বিরক্ত তাও সকলের সাথে হাসি মুখে কথা বলছে। তুতুল বলল
” কি হয়েছে মেঘা মন খারাপ ”
মেঘা সাথে কুয়াশাও চমকে উঠে মেঘা বলল
” কি বলো ভাবিপু আমার আবার কি হবে? ”
” উহুম বলে ফেলো সত্যি করে কি হয়েছে? ”
” কিছু হয় নি আচ্ছা কবে বাসায় যাবো? ”
” কেনো বাসার জন্য মিস করছো? ”
” তা বলতে পারো ”
” বিয়ের পর কি করবে? ”
মেঘা হাসলো। কুয়াশা বলল
” ভাবিপু তুষার ভাইয়া কবে চলে যাবে ”
” বলল তো ৩ মাসের ছুটি নিয়ে আসছে মাত্র তো একমাস হলো এখনো দু’মাস বাকি ”
” ওহ ”
” কেনো কিছু হয়েছে? ”
” না কি হবে? শুনছিলাম উল্টো পাল্টা শুনিয়ে দিলো ”
” আমার ভাইটা ওমনই জানিস ই তো একটু ঘাড় ত্যাড়া। এই দুই মাস চুটিয়ে প্রেম করে নে ”
কুয়াশার খুব বলতে ইচ্ছে হলো ” তোমার ভাই যা আস্ত একটা শ’য়তা’ন প্রেম দূরের কথা স্বাভাবিক কথা বলতে গেলে ধমকের ওপর রাখে আর কিভাবে আমাকে অপমান করা যায় সেই সুযোগে থাকে ” তুতুলের কথায় ভাবনার সুতা ছিঁ’ড়ে বেড়িয়ে আসলো কুয়াশা তুতুল হেঁসে বলল
” কুয়াশা আমার ভাইটা কি রোমান্টিক নাকি রে ”
কুয়াশা সাথে সাথে ভিতরের লজ্জারা ভির জমায় সেদিন রাতের দৃশ্য পট চোখের সামনে ভেসে উঠলো গলায় ফাস্ট চু!মু দিয়ে ছিলো। কুয়াশা তুষারের সম্পর্কটা বৈধ হওয়ার শর্তেও সেই প্রথম তুষার কুয়াশার প্রতি ওমন ফিলিংস প্রকাশ করে। কুয়াশার মনে প্রশ্ন জাগে তুষার কি সত্যি রোমান্টিক?
কুয়াশার মুখে রক্তিম আভা ফুটে উঠে। সেটা দেখে তুতুলের সাথে মেঘা ও না হেসে পারে না। কুয়াশা অস্বস্তিতে পড়ে বলল
” কি সব আজেবাজে কথা বলো ভাবিপু ”
” হুম হুম আমরা বুঝতে ও পারছি আবার দেখতেও পারছি ”
কুয়াশা আমতাআমতা করে বলল
” তেমন কিছু নয় আপু ”
তিশা এসে বলল ” কি রে তোরা কি গল্প করছিস ”
” তেমন কিছু না আম্মু ”
” কি খেতে চাস বল ”
” কিছু করতে হবে না তুমি বসো তো একটু গল্প করি
” কিছু বানিয়ে আনি খেতে খেতে গল্প করার মজায় আলাদা ”
তিশা শুনলেন না রান্নাঘরে চলে গেলো। ঝটপট পিঁয়াজু, বেগুনি বানাতে লাগলো। ততক্ষণে মেঘ আর তুষার ও চলে এসেছে। তুতুল বলল
” শুনেছ কুয়াশা মেঘা বাসার জন্য মিস করছে ”
মেঘ হেসে বলল
” ওরা তো কখনো বাবা-মা কে ছাড়া একা কোথাও যায় নি এটাই প্রথম তাই এমন হচ্ছে ”
তিশা শুনতে পেলো কথাটা তুষার কোনো প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করলো না। তিশা টি-টেবিলে খাবার গুলো রাখতে রাখতে বলল
” আমি আরও ভাবলাম তুতুল চলে গেলো ও তোদের দুইটাকে রেখে দিবো। তা না একরাত থেকে তোরা কান্না কাঠি লাগিয়ে দিলি? ”
মেঘা বলল
” মামনি ভাবিপু তুষার ভাইয়া চলে গেলে আর আংকেল তো সারাদিন অফিসে থাকে তাই বলছিলাম যে আমাদের ওখানে কয়দিন থেকে এসো চল ”
” সে পরে দেখা যাবেক্ষণ নে খেয়ে নে তোরা ”
সন্ধ্যায় ভাজাপোড়া নাশতা খাওয়ায় রাতে কেউ খেতে পারলো না। রাতে আবারও রিদ নামক পোকা মেঘার মাথায় কুটকুট করে কামড়াতে লাগলো। রিদের ছবি বুকে জড়িয়ে কান্না করে দিলো কুয়াশা প্রথম প্রথম মেঘাকে বোঝাতে চাইলেও মেঘা বুঝলো না। কুয়াশা এসব সহ্য করতে না পেরে ছাদে চলে গেলো। মেঘা বিড়বিড় করে বলতে লাগলো
” এখনি আমার রিদের সাথে কথা বলা লাগবে না হলে দম আঁটকে মা’রা যাবো। কিন্তু নম্বর কোথায় পাবো? মেঘ ভাইয়া? না না ভাইয়া সন্দেহ করতে পারে। তাহলে কার কাছ থেকে নিবো? তুষার ভাইয়া? হ্যাঁ হ্যাঁ তুষার ভাইয়া দিতে পারবে ”
মেঘা চোখমুখ মুছে তুষারের রুমে নক করলো তুষার দরজা খুলে মেঘাকে দেখে ভ্রু কুঁচকে বলল
” তুমি এখানে? এতো রাতে কোনো দরকার? ”
মেঘার আবারও কান্না ঠেলে আসতে চাইলো। তবুও ঠোঁট চেপে কান্না সংবরণ করে উপর নিচ মাথা নাড়িয়ে বলল ” হ্যাঁ দরকার ”
তুষার বলল ” হ্যাঁ বলো কি লাগবে? ”
” ভাইয়া রিদ ভাইয়ার নম্বর টা দিবেন প্লিজ ”
তুষারের ভ্রু কুঁচকে গেলো বলল
” রিদের নম্বর নিয়ে তুমি কি করবে? ”
” একটু দরকার ভাইয়ার সাথে ”
তুষারের সন্দেহ হলেও কিছু বলল না নম্বর টা দিয়ে দিলো। রিদের নম্বর পেয়ে মেঘা মন খুশিতে ঝলমলে করে উঠলো। রুমে এসেই রিদ কে ফোন দিলো প্রথম বার না ধরলেও দ্বিতীয় বার ধরলো রিদ হ্যালো বলতেই মেঘার মন ঠান্ডা হয়ে গেলো।
” কেমন আছেন? ”
রিদ চট করে রেগে গেলো মেঘার গলার আওয়াজ শুনে বলল
” তুমি? আমার নম্বর কোথায় পেলে? আর আমাকেই বা ফোন দিয়েছ কেনো? ”
” আমি ফোন দিতে পারি না আপনাকে? ”
” অবশ্যই না ”
মেঘা কেঁদে দিয়ে বলল ” ভালোবাসি আপনাকে। বুঝেন না কেনো? কেনো আমাকে এতো কষ্ট দিচ্ছেন? ”
রিদ কিছুক্ষণ নিরব থেকে বলল ” আমার যা বলার সেদিন রাতেই বলে দিয়েছি আর কিছু বলার নাই তুমি আমাকে আর ফোন দিবে না ”
” আপনি যদি এখন ফোন কাটেন। আমি কিন্তু যা খুশি করে ফেলবো ”
রিদ থমকায় ফোন না কাটলো না শান্ত কন্ঠে বলল
” কি চাচ্ছোটা কি তুমি? ”
” আপনাকে চাই ”
” আচ্ছা। আমার মধ্যে কি আছে যে তোমার আমাকেই লাগবে? ”
” আপনার একটা সুন্দর মন আছে ”
” মেঘা পাগলামি করো না। মন দিয়ে কিছু হয় না। আমি এতিম পুলিশের চাকরিটা করে নিজেকে চালায়। তোমার বাবা-মা তোমাকে নিয়ে স্বপ্ন আছে তাদের স্বপ্ন পূরণের দায়িত্ব তোমার। তাই এসব পাগলামো ছেড়ে দাও। পড়াশোনায় কনসানটেশন করো। ”
” আপনি সবার দিকটা দেখতেছেন আমার দিকটা দেখতেছেন না? ”
” মেঘা এভাবে অবুঝের মতো কথা বলছ কেনো? মেঘ জানলে ব্যপারটা আরো খারাপ হবে। তুমি নিজে একটা বার ঠান্ডা মাথায় ভাবো। তোমার আর আমার সম্পর্ক হওয়ার নয় আর যা হওয়ার নয় তা নিয়ে কথা বা সম্পর্ক বাড়ানোর কোনো মানেই হয় না ”
” আপনি একটা বার মেনে নেন আমি নিজে সবাইকে মানিয়ে দিবো ”
” মেঘা তোমার সাথে আমার কথা বলতে ইচ্ছে করছে না রাখছি। আর ফোন দিও না ”
রিদ ফোন কেটে দিতেই মেঘা কাদলো না ফোনের দিকে তাকিয়ে রিদের সবটা কথা প্রথম থেকে ভাবলো।।#প্রেমরোগ-১০ (বোনাস)
#তাসনিম_তামান্না
” আপনি স্মো’ক করেন? ”
তুষারের ভ্রু কুঁচকে গেলো কুয়াশার কথার প্রতিত্তর না করে নিজেই প্রশ্ন করলো ” তুমি এতো রাতে ছাদে কি করো? ভয় লাগে না? ”
” জানি না ”
” সেটা জানবে কিভাবে তুমি তো গাধী ”
কুয়াশা চট করে রেগে গেলো ” হ্যাঁ আমি গাধী তো একটা মানুষ কে বিয়ে করতেন গাধীকে কেনো বিয়ে করলেন? ”
তুষার চুপ থেকে সুখটান দিতে লাগলো। কুয়াশার রাগের মাত্রা বাড়তে লাগলো।
” আমি আপনার কাছে কিছু জিজ্ঞাসা করছি উত্তর দিন ”
” উওর দেওয়ার প্রয়োজন বোধ করছি না ”
এতোক্ষণ শীতল হওয়া ফুলের সুবাস ছিলো। তুষার সিগারেট খেয়ে বায়ু দূষিত করে দিয়েছে সিগারেটে ধোঁয়া। আগে কম থাকলেও তার তীব্রতা ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাচ্ছে। কুয়াশার তুষারের হাত থেকে সিগারেট টা টান দিয়ে ছুঁড়ে ফেলে দিলো। অন্ধকারে সোডিয়ামের আবছা আলোয় কুয়াশার মুখ অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো। কুয়াশা সেটা বুঝতে পেরে বলল
” স্মোক আমার পছন্দ না ”
তুষার গলায় অবাকের রেস টেনে বলল
” তো আমি কি করবো? ”
কুয়াশা দৃঢ় কন্ঠে অধিকারবোধ এনে বলল
” আপনি খাবেন না ”
তুষার অবাকের শীর্ষে চলে গেছে চোখ কপালে তুলে অবিশ্বাস্য কন্ঠে বলল ” কি বললে আবার বলল ”
কুয়াশা বিরক্তি নিয়ে বলল ” সিগারেট খাওয়া আমার পছন্দ না তাই আপনি খাবেন না ”
” তুমি পছন্দ করো না তা আমার কি? আমার সিগারেট খাওয়ার সাথে তোমার পছন্দ অপছন্দের কি আছে? ”
কুয়াশা তাচ্ছিল্যের সাথে হেসে বলল
” হ্যাঁ সেই তো আপনার কিছু ই না। সব কিছু আপনার মর্জি মতো হবে আপনি যা করবে সব ঠিক আর বাকিরা যা করবে সব ভুল ”
তুষার ভ্রুক্ষেপহীন হয়ে বলল
” হুম সেটাই ”
কুয়াশার রাগে দুঃখের কান্না পেলো কঠিন কন্ঠে বলল ” হ্যাঁ সব ঠিকি ছিলো কিন্তু আমাকে বিয়ে করাটা আপনার ভুল ছিল। জেদের বশে বাজি ধরে না আপনি আমাকে বিয়ে করেছেন ”
” বাজি ধরে বিয়ে করেছি মানে? এসব আজেবাজে কথা কে বলেছে তোমাকে ”
” হ্যাঁ আমি জানি। ”
” ভুল জানো ”
” নিজেকে আপনি পন্ডিত ভাবেন? আমি জানি ছুটির দিনে ফেন্ডদের সাথে ধরতেন। আর সেদিন আপনি হুট করে এসে বাবাকে কিসব বলিয়ে রাজি করিয়ে বিয়ে করে নিলেন আমাকে একটা বার জিজ্ঞাসা করেছিলেন? আমি কি চাই? আমার মতামত কি? আপনারা কেউ প্রয়োজন বোধ করেন নি। ”
” ওহ এসব তোমাকে মেঘ বলেছে তাই না? আমি ই ওকে এসব বলতে বলেছিলাম তুমি পাগলামি করছিলে বলে ”
” আমাকে অবুঝ বাচ্চা মনে হয় আপনারা যখন যে যা বলবেন আমি বিলিভ করে নিবো? ”
” কুয়াশা নিচে যাও ৫ বছর আগের কথা এখন কেনো উঠছে? কেনো অতীত ঘাটছ? ”
” আমার সব প্রশ্নের উত্তর চাই কেনো আপনি আমাকে বিয়ে করলেন? বাবা কেনো সেদিন আপনার সাথে আমার বিয়ে দিতে রাজি হলো? কি হয়েছিলো? এর একটা প্রশ্নের উত্তর না নিয়ে আজ আমি কোথাও যাবো না ”
তুষার কুয়াশাকে ধমক দিয়ে বলল
” এসব পোকা কে নাড়া দিলো? এসব করতে ছাদে আসছ? যাও নিচে যাও ”
কুয়াশা ছাদের কিনারায় চলে যেতে যেতে বলল
” আজ যদি আপনি আমার প্রশ্নের উত্তর না দেন তাহলে আমি এখান থেকে লাফ দিবো ”
তুষার ভয় পেয়ে গেলো দৌড়ে কুয়াশার কাছে যেতে নিলে কুয়াশা বলে উঠলো ” একদম কাছে আসবেন না আমি কিন্তু জাম্প করবো ”
তুষার শান্ত কন্ঠে বলল ” আচ্ছা সবটা বলবো এদিকে আসো বসে ঠান্ডা মাথায় কথা বলি ”
কুয়াশার চোখ ঝলমলে করে উঠলো তুষারের কথা সত্যি ভেবে কাছে আসলো তুষার ঠাস করে কুয়াশার গালে চ-ড় মেরে দিলো। কুয়াশা হতভম্ব হয়ে গালে হাত দিয়ে তুষারের দিকে তাকালো। তুষার কুয়াশাকে বুকে জড়িয়ে ধরে জোরে জোরে শ্বাস নিলো। কুয়াশা তুষারের হৃৎস্পন্দন শুনতে পাচ্ছে। কিছুক্ষণ পর তুষার কুয়াশা কে ছেড়ে দূরত্ব নিয়ে দাড়িয়ে বলল
” বেশি বুঝে গেছিস না তুই? খুব বাড় বেরেছে তোর? নাটক দেখে এসব নাটকবাজী শিখেছিস? ”
তুষার রাগে রীতিমতো হাঁপাচ্ছে। কুয়াশার চোখ ফেটে অশ্রু গড়িয়ে পড়লো। তুষার আবারও বলল
” এই কিছু বললেই চোখ দিয়ে ওনার পানি পড়ে। দিস ইজ টু মার্চ। ডিজগাস্টিং একটা। যা আমার সামনে থেকে যা না হলে আমি যা কিছু করে ফেলবো ”
কুয়াশা গেলো না ঠাই দাঁড়িয়ে রইলো একটা কথা জিজ্ঞেসা করেছে সোজাসাপটা উত্তর দিয়ে দিলেই লেটা চুকে যায়। তা-না এভাবে লোহার হাতের চ-ড় খেয়ে হতভম্ব হয়ে দাড়িয়ে আছে। তুষার কুয়াশা কে যেতে না দেখে বলল
” কি হলো যাচ্ছিস না কেনো? ম’রার খুব শখ তোর? চল তোকে কষ্ট করে ম-রতে হবে না আজ আমি ই তোকে ছাদ থেকে ফে-লে দিবো। তারপর নিজে ম-রবো ”
তুষার কুয়াশার বাহু চেপে ছাদের কিনারায় নিয়ে যেতে লাগলো। কুয়াশা কেঁদে হাত ছাড়াতে চাইলো। কান্নারত গলায় বলল
” ছেড়ে দিন প্লিজ আমি আর কখনো এমন করবো না। আমি তো শুধু সত্যি টা জানতে চেয়ে ছিলাম ”
তুষার থেকে গেলো বলল
” তুই যে দিন নিজে ইচ্ছে তে আমার কাছে আসবি সে দিন আমি তোকে নিজে সব টা বলবো। আঙ্কেল বলতে চাই ছিলো কিন্তু আমি ই বলতে বারণ করছি। আর হ্যাঁ তোর ভালোর জন্য সেদিন তোকে আমার সাথে বিয়ে দিয়ে ছিলো ”
তুষার থেমে আবার ও বলল ” নিচে যা-ও। তোমাকে দেখলেই মেজাজ গরম হচ্ছে। আরো কয় টা চ-ড় মা-রলে শান্তি লাগতো ”
কুয়াশা তেজি কন্ঠে বলল
” তো মা-রুন না মে-রে ফেলুন ”
” তোকে মে-রে ফেলায় উচিত বাচিয়ে রেখে কি হবে? ”
কুয়াশা রেগে হাত ঝাড়ি মেরে ছাড়িয়ে চলে গেলো। তুষার কুয়াশার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে মাথার চুল খামছে ধরে জোরে জোরে শ্বাস নিয়ে নিজেকে শান্ত করার প্রয়াস চালাতে লাগলো। নিজে নিজে বলল
” কেনো আমাকে একটু বুঝিস না তুই? সবসময় আমাকে রাগাস। ঠিক ভাবে কথা বলতে গেলে উলটো পালটা কথা বলে রাগিয়ে দিস। এভাবে চলতে থাকলে আমাদের সম্পর্কটা স্বাভাবিক হবে কি ভাবে? ৫টা বছরেও স্বাভাবিক হলো না আমি দূরে থেকেছি না-হয় তুই। অর্নাস এর এক্সাম শেষ হলে আঙ্কেলে বলতে হবে কুয়াশাকে আমি নিজের সাথে নিয়ে যেতে চাই ”
কুয়াশা রুমে এসে দরাম করে দরজা লাগিয়ে মেঘা চমকে উঠে কুয়াশার দিকে তাকালো। কুয়াশাকে দেখেই বুঝে গেলো স্বাভাবিক নয়। কুয়াশা চোখমুখে পানি দিয়ে এসে শুয়ে পড়লো মেঘার সাথে একটা কথাও বলল না। মেঘারও নিরব দর্শনকের ভূমিকা পালন করে সবটা দেখলো। কুয়াশা কে শুয়ে পড়তে দেখে কিছু ক্ষণ পর বলল
” কি হয়েছে বনু? কাঁদছিস কেনো? ”
কুয়াশা ঝাঁঝালো কণ্ঠে বলল
” মন চাইছে তাই এখন দেখছি নিজের মতো কাদাও যাবে না। সবার মন মতো চলতে হবে আমাকে? আমাকে মানুষ মনে হয় না? আমি কি মানুষ না? আমার মন নেই? আমার কষ্ট হয় না? কষ্ট তোদের এককার হয়? ”
মেঘা বুঝলো কুয়াশা খেপে আছে। এখন কিছু না বলায় শ্রেয়।
চলবে ইনশাআল্লাহ
চলবে ইনশাআল্লাহ