ভার্সিটির সবার সামনে হাসির পাত্র হয়ে দাঁড়িয়ে আছি। চোখ দিয়ে টপটপ করে জল গড়িয়ে পড়ছে। আমার সামনে দাঁড়িয়ে আছে ভার্সিটির সবার ক্রাশ স্পর্শ।আশেপাশে থেকে টিটকারি মারা কথা শুনছি সবাই আমাকে নিয়ে হাসাহাসি করছে। চোখ বন্ধ করে দীর্ঘ শ্বাস ফেললাম।
-তোমার সাহস দেখে আমি হতবাক তুমি কোন সাহসে আমাকে প্রপোজ করো। তুমি আমার মান সম্মান সব ডুবাতে চাও মাএ দুইদিন একটু ভালো ভাবে কথা বলেছি আর মাথায় চলে বসেছো। শুধু মেয়ে তোমার সাথে দুইদিন জাস্ট নাটক করেছি এটা ছিলো একটা বাজি ওকে। আর তুমি কি ভাবলে তোমাকে আমি ভালোবাসি।নো ওয়ে তোমার মতো আনস্মার্ট খ্যেত মেয়েকে আমি ভালোবাসবো হাউ ফানি।এটা তুমি বিলিভ করলে কিভাবে তুমি তো আমার নখের যোগ্য ও না। আমার দিকে একবার তো নিজের দিকে একবার তাকাও দেখো তো কোথায় আমি আর কোথায় তুমি। ভার্সিটির সব থেকে গাইয়া ক্ষেত তুমি আর আমি সব থেকে হান্ডসাম ভার্সিটি ও বাইরে সবার ক্রাশ। সবাই এই স্পর্শকে চায় সে কিনা তোমার মতো মেয়েকে ভালোবাসবে হাহাহাহা এতো বোকা তুমি।
কান্না গলায় এসে আটকে আছে চিৎকার করে কাঁদতে পারছি না। কিন্তু আমার এখন চিৎকার করে কাঁদতে ইচ্ছে হচ্ছে। সবাই মজা নিচ্ছে আর আমি নিজের চোখে জল ফেলছি।
–আর কখনো এমন দূষ্সাহস দেখাতে আসবে না আর দুইদিন তোমার পেছনে ঘুরঘুর করে সত্যি আমি বিরক্ত কি নেকা তুমি প্রথমে তো মানতেই চাইলে না কতো কাডখোর পড়াতে হলো আর এখন একদম দেওয়ানা হয়ে গেল স্টেন্চ।
জল ভরা নয়নে স্পর্শের দিকে তাকালাম আমার জল দেখে যদি একটু তার মায়া হয় কিন্তু না সে বিরক্তি নিয়ে চোখ ফিরিয়ে নিলো। সেও সবার সাথে আমাকে নিয়ে হাসাহাসি করতে লাগলো। এই মানুষটা কে কি করে ভালোবাসলাম কি করে যে কিনা সবার সাথে আমাকে অপমান করছে।
এই দুইদিন এতো এতো পাগলামো করেছে যে আমি তার প্রতি দূর্বল হয়ে পরেছি খুব। তখন তো একবার ও মনে হয়নি এই লোকটা মিথ্যা বলছে তার চোখের দিকে তাকিয়ে তার বলা ভালোবাসি কথাটা একটু ও মিথ্যা মনে হয় নাই। মনে হয়েছে সে আমাকে ভালোবাসে খুব বেশি ভালোবাসে।
কাল রাতেও তাকে ভালোবাসি নি কিন্তু হঠাৎ স্পর্শ এমন কান্ড করলো ভালোবাসি বলতে বাধ্য হলাম।
কাল রাতে আমি রুমে বসে পারছিলাম হঠাৎ আননোন নাম্বার থেকে ফোন আসে। রিসিভ করে দেখি সেটা স্পর্শ।
-সারা জানেমন আই রিয়েলি লাভ ইউ তুমি আমাকে কেন বিলিভ করছো না আজ যদি আমাকে লাভ ইউ না বলো আমি সুসাইড করবো।
এমন কথা শুনার জন্য প্রস্তুত ছিলাম না। ভয় পেয়ে যায় আমি।
-কি বলছেন এসব?
-হুম তোমার ভালোবাসা না পেলে আমি মরে যাব। তোমার সামনে আজ নিজেকে শেষ করে দেবো। পাঁচ মিনিটের মধ্যে ছাদে আসো আমি ছাদের আছি।
-ছাদে কোন ছাদে।
-তোমাদের ছাদে তারাতারি আসো।
হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসছে আমার। ছোট বোন সিনহা পাশে আছে ওর চোখ ফাঁকি দিয়ে কিভাবে যাবো? কিন্তু যেতে হবেই যদি সত্যি খারাপ কিছু করে ভয় হচ্ছে। আমি পরার টেবিলে থেকে উঠে বসি।
-আপু কোথায় যাচ্ছ।
-আম্মম, আসলে একটু পাশের বাসার নাহার ওর কাছে একটু দরকার ছিলো তুই মাকে বলিস আমি যাব আর আসবো।
-কি দরকার আপু নি।
-আমার তারা আছে বোন এসে বলি হা তুই মাকে বলিস কিন্তু।
ছুটে বেরিয়ে আসি।
দৌড়ে উপরে আসি ছাদ অন্ধকার কিছুই দেখা যাচ্ছে না ভয় পাচ্ছি তাও এক পা এগিয়ে গেলাম হঠাৎ দূরে কাউকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলাম।বুকটা টিপটিপ করছে হাত দিয়ে হাত মোচরিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি।
স্পর্শ আমার দিকে তাকালো তার মুখটা উজ্জ্বল হাসিমাখা দেখাচ্ছিলো আমি যেতেই জরিয়ে ধরে।
তার ছুয়া পেয়ে আমি বরফ হয়ে যাই।
-বলো তুমি আমাকে ভালো বাসো।
আমি চুপ এটা হয়তো সে মানতে পারছে না।
-কি হলো কিছু বলছ না কেন তাহলে কি ধরে নেব আমি ব্যর্থ। আচ্ছা না বললে তোমার ভালোবাসা যেহেতু পাবনা বেঁচে ও থাকবো না।
স্পর্শ চাকু বের করলো আমি এটা দেখেই চমকে উঠলাম। বড় বড় চোখ করে আছি চাকু বের করেছে তার মানে সত্যি।
-এটা দিয়ে কি করবেন?কাঁপা কাঁপা গলায় বললাম।
-তোমাকে না পেলে বেঁচে থেকে কি হবে তাই এটা দিয়ে হাতের রগ কেটে নিজেকে শেষ করে দিবো।
আমি কিছু বলার আগেই হাতে এক টান মারলো ভয়ে আমি চিৎকার করে উঠলাম তারপর আর কিছু না ভেবে স্পর্শকে জরিয়ে ধরলাম। আর কান্না করতে লাগলাম।
-এমন করবেন না প্লীজ। আমি আপনাকে ভালোবাসি।আপনি যে আমাকে এতো ভালবাসেন আমি সত্যি বুঝতে পারিনাই। আপনার সব কিছু আমার ফাজলামি মনে হয়েছে কিন্তু আমি ভুল আপনি সত্যি আমাকে ভালোবাসেন। নিজের ক্ষতি করবেন না প্লীজ।
-আচ্ছা করবো না আগে লাভ ইউ বলো তাহলে।
-আমার লজ্জা লাগছে।
– প্লীজ
-আই লাভ ইউ।
সকাল থেকে আমার মনটা আনন্দিত ছিলো আজকে আমি সেজেও এসেছি হালকা আর এসেই এমন কিছুর সমোক্ষিন হবো জানলে আসতামই না।
কাল রাতে যে ভালোবাসি শুনার জন্য এতো বড় রিস্ক নিয়ে ছিল আজ সে এইভাবে অপমান করছে আর বলছে সে আমাকে ভালোবাসে না।
একবার সবার দিকে তাকিয়ে দৌড়ে ভার্সিটি থেকে দৌড়ে বেরিয়ে এলাম।
#চলবে
#প্রেমের_বৃষ্টি💦
#পার্ট_(১)
লেখা: Sinthiya Sara
( আমার আগের আইডিতে প্রবলেম হয়েছে। এজন্য এখন থেকে নতুন এই আইডি থেকে পোস্ট করবো গল্প)